দন্ড, বদ্ধ পানিতে পেশাব, কবরের উপর বসা হারাম
দন্ড, বদ্ধ পানিতে পেশাব, কবরের উপর বসা হারাম >> রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর কয়েকটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন
দন্ড, বদ্ধ পানিতে পেশাব, কবরের উপর বসা হারাম
পরিচ্ছেদ – ৩৪৭ঃ কবরের উপর বসা হারাম
পরিচ্ছেদ – ৩৪৮ঃ কবর পাকা করা ও তার উপর ইমারত নির্মাণ করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ – ৩৪৯ঃ মনিবের ঘর ছেড়ে ক্রীতদাসের পলায়ন নিষিদ্ধ
পরিচ্ছেদ – ৩৫০ঃ ইসলামী দন্ড বিধান প্রয়োগ না করার জন্য সুপারিশ করা হারাম
পরিচ্ছেদ – ৩৫১ঃ লোকেদের রাস্তা-ঘাটে এবং ছায়াতলে পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ – ৩৫২ঃ অপ্রবহমান বদ্ধ পানিতে পেশাব ইত্যাদি করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ – ৩৫৩ঃ উপহার ও দান দেওয়ার ক্ষেত্রে পিতার এক সন্তানকে অন্য সন্তানের উপর প্রাধান্য দেওয়া মাকরূহ
পরিচ্ছেদ – ৩৫৪ঃ মৃতের জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হারাম। তবে স্ত্রী তার সবামীর মৃত্যুতে চারমাস দশদিন শোক পালন করিবে
পরিচ্ছেদ – ৩৪৭: কবরের উপর বসা হারাম
১৭৭৫. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘কারো অঙ্গারের উপর বসা—যা তার কাপড় জ্বালিয়ে তার চামড়া পর্যন্ত পৌঁছে যায়—কবরের উপর বসা অপেক্ষা তার জন্য উত্তম।’’
(মুসলিম ৯৭১, নাসাঈ ২০৪০, আবু দাঊদ ৩২২৮, ইবনু মাজাহ ১৫৬৬, আহমাদ ৮৮১১, ৯৪৩৯, ১০৪৫১) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৪৮: কবর পাকা করা ও তার উপর ইমারত নির্মাণ করা নিষেধ
১৭৭৬. জাবের রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘নবী সাঃআঃ কবর পাকা করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে বারণ করিয়াছেন।’
(মুসলিম ৯৭০, তিরমিজী ১০৫২, নাসাঈ ২০২৭-২০২৯, আবু দাঊদ ৩২২৫, ইবনু মাজাহ ১৫৬২, ১৫৬৩, আহমাদ ১৩৭৩৫, ১৪১৫৫, ১৪২৩৭, ১৪৮৬২) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৪৯: মনিবের ঘর ছেড়ে ক্রীতদাসের পলায়ন নিষিদ্ধ
১৭৭৭. জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূল সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যে গোলামই মনিবের ঘর ছেড়ে পলায়ন করে, তার ব্যাপারে সব রকম ইসলামী দায়-দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়।’’
(মুসলিম ৬৮-৭০, ৪০৪৯-৪০৫৬, আবু দাঊদ ৪৩৬০, আহমাদ ১৮৬৭৪, ১৮৭২৭, ১৮৭৪০, ১৮৭৫৪) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১৭৭৮. উক্ত রাবী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যখন কোন গোলাম পলায়ন করিবে, তখন তার নামায কবুল হবে না।’’
(মুসলিম ৬৮-৭০, ৪০৪৯-৪০৫৬, আবু দাঊদ ৪৩৬০, আহমাদ ১৮৬৭৪, ১৮৭২৭, ১৮৭৪০, ১৮৭৫৪) অন্য বর্ণনা মতে, ‘‘সে কুফরী করিবে।’’ হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৫০: ইসলামী দণ্ড বিধান প্রয়োগ না করার জন্য সুপারিশ করা হারাম
১৭৭৯. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ
চুরির অপরাধে অপরাধিনী মাখযূম গোত্রের একজন মহিলার ব্যাপার কুরাইশ বংশের লোকদের খুব দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। সাহাবীগণ বললেন, ‘ওর ব্যাপারে আল্লাহর রসূল সাঃআঃ-এর সঙ্গে কে কথা বলতে পারবে?’ তাঁরা বললেন, ‘রসূল সাঃআঃ-এর প্রিয় পাত্র উসামা ইবনে যায়েদ ছাড়া কেউ এ সাহস পাবে না।’ সুতরাং উসামা রসূল সাঃআঃ-এর সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বলে উঠলেন, ‘‘তুমি আল্লাহর এক দণ্ডবিধান (প্রয়োগ না করার) ব্যাপারে সুপারিশ করছ?’’ পরক্ষণেই তিনি দাঁড়িয়ে খুৎবাহ দিলেন এবং বললেন, ‘‘(হে লোক সকল!) নিশ্চয় তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের লোকেরা এ জন্য ধ্বংস হয়েছিল যে, যখন তাদের কোন সম্মানিত ব্যক্তি চুরি করত, তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন তাদের কোন দুর্বল লোক চুরি করত, তখন তার উপর শরীয়তের শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমাও চুরি করত, তাহলে অবশ্যই আমি তার হাতও কেটে দিতাম।’’
(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৬৪৮, ৩৪৭৫, ৩৭৩৩, ৪৩০৪, ৬৭৮৭, ৬৭৮৮, ৬৮০০, মুসলিম ১৬৮৮, তিরমিজী ১৪৩০, নাসাঈ ৪৮৯৫, ৪৮৯৭-৪৯০৩, আবু দাঊদ ৪৩৭৩, ইবনু মাজাহ ২৫৪৭, আহমাদ ২২৯৬৮, ২৪৭৬৯, দারেমী ২৩০২) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৫১: লোকদের রাস্তা-ঘাটে এবং ছায়াতলে পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ
১৭৮০.আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘দু’টি অভিসম্পাত আনয়নকারী কর্ম থেকে দূরে থাক।’’ সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘দু’টি অভিসম্পাত আনয়নকারী কর্ম কী কী?’’ তিনি (উত্তরে) বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি মানুষের রাস্তায় এবং তাদের ছায়ার স্থলে পায়খানা করে (তার এ দু’টি কাজ অভিসম্পাতের কারণ) ।’’
(মুসলিম ২৬৯, আবু দাঊদ ২৫, আহমাদ ৮৬৩৫) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৫২: অপ্রবহমান বন্ধ পানিতে পেশাব ইত্যাদি করা নিষেধ
১৭৮১. জাবের রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
নবী সাঃআঃ বদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করতে নিষেধ করিয়াছেন।
(মুসলিম ২৮১, নাসাঈ ৩৫ ইবনু মাজাহ ৩৪৩, আহমাদ ১৪২৫৮, ১৪৩৬৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৫৩: উপহার ও দান দেওয়ার ক্ষেত্রে পিতার এক সন্তানকে অন্য সন্তানের উপর প্রাধান্য দেওয়া মকরূহ
১৭৮২. নু’মান ইবনে বাশীর রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তাঁর পিতা তাঁকে নিয়ে রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-এর দরবারে হাজির হয়ে বললেন, ‘আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। (কিন্তু এর মা আপনাকে সাক্ষী রাখতে বলে।)’ নবী সাঃআঃ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমার সব ছেলেকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ নবী সাঃআঃ বললেন, ‘‘তাহলে তুমি তা ফেরৎ নাও।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমার সব ছেলের সঙ্গেই এরূপ ব্যবহার দেখিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বললেন, ‘‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা কর। সুতরাং আমার পিতা ফিরে এলেন এবং ঐ সাদকাহ (দান) ফিরিয়ে নিলেন।’’
আর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর রসূল সাঃআঃ বললেন, ‘‘হে বাশীর! তোমার কি এ ছাড়া অন্য সন্তান আছে?’’ তিনি বললেন, ‘জী হ্যাঁ।’ (রসূল সাঃআঃ) বললেন, ‘‘তাদের সকলকে কি এর মত দান দিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘জী না।’ (রসূল সাঃআঃ) বললেন, ‘‘তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে সাক্ষী মেনো না। কারণ আমি অন্যায় কাজে সাক্ষ্য দেব না।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আমাকে অন্যায় কাজে সাক্ষী মেনো না।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘এ ব্যাপারে তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে সাক্ষী মানো।’’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি এ কথায় খুশী হবে যে, তারা তোমার সেবায় সমান হোক?’’ বাশীর বললেন, ‘জী অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে এরূপ করো না।’’
(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৫৮৬, ২৫৮৭, ২৬৫০, মুসলিম ১৬২৩, তিরমিজী ১৩৬৭, নাসাঈ ৩৬৭২-৩৬৮৫, আবু দাঊদ ৩৫৪২, ইবনু মাজাহ ২৩৭৫, ২৩৭৬, আহমাদ ১৭৮৯০, ১৭৯০২, ১৭৯১১, ১৭৯৪৩, মুওয়াত্তা মালিক ১৪৭৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ৩৫৪: মৃতের জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হারাম। তবে স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুতে চারমাস দশদিন শোক পালন করিবে
১৭৮৩. যয়নাব বিন্তে আবু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন শাম (সিরিয়া) থেকে নবী সাঃআঃ-এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহার পিতা আবু সুফয়ান রাঃআঃ-এর মৃত্যু সংবাদ পৌঁছল, তখন আমি তাঁর বাসায় প্রবেশ করলাম। (মৃত্যুর তিনদিন পর) তিনি হলুদ বর্ণ দ্রব্য বা অন্য দ্রব্য মিশ্রিত সুগন্ধি আনালেন। তা থেকে কিছু নিয়ে স্বীয় দাসীকে এবং নিজের দুই গালে মাখলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমার সুগন্ধির কোন প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু আমি আল্লাহর রসূল সাঃআঃ-কে মিম্বরের উপর (খুতবা দান কালে) এ কথা বলতে শুনেছি যে, ‘‘যে স্ত্রীলোক আল্লাহ ও কিয়ামতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে স্বামী ছাড়া অন্য কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা জায়েয নয়। অবশ্য তার স্বামীর জন্য সে চার মাস দশ দিন শোক পালন করিবে।’’ যয়নাব বলেন, তারপর যখন যয়নাব বিন্তে জাহ্শ রাদিয়াল্লাহু আনহার ভাই মারা গেলেন, তখন আমি তাঁর নিকট প্রবেশ করলাম। তিনি সুগন্ধি আনালেন এবং তা থেকে কিছু নিয়ে মাখার পর বললেন; আল্লাহর কসম! আমার সুগন্ধির কোন প্রয়োজন ছিল না, কিন্তু আমি আল্লাহর রসূল সাঃআঃ-কে মিম্বরের উপর (খুতবা দান কালে) এ কথা বলতে শুনেছি যে, ‘‘যে স্ত্রীলোক আল্লাহ ও কিয়ামতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে স্বামী ছাড়া অন্য কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা জায়েয নয়। অবশ্য তার স্বামীর জন্য সে চার মাস দশদিন শোক পালন করিবে।’’
(সহীহুল বুখারী শরীফ ১২৮০, ১২৮১, ১২৮২, ৫৩৩৫, ৫৩৪৫, মুসলিম ১৪৮৬, তিরমিজী ১১৯৫, নাসাঈ ৩৫০২, ৩৫২৭, ৩৫৩৩, ৩৫৪১, আবু দাঊদ ২২৯৯, ইবনু মাজাহ ২০৮৪, আহমাদ ২৬২২৫, ২৬২২৬, মুওয়াত্তা মালিক ১২৬৯, দারেমী ২২৮৪) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply