ওযুর ওয়াজিব হওয়ার কারন সমূহ এর হাদিস
ওযুর ওয়াজিব হওয়ার কারন সমূহ এর হাদিস >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১
- অধ্যায়ঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ
৩০০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যার উযূ ছুটে গেছে তার নামাজ কবুল হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত সে উযূ না করে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৩৫, মুসলিম ২২৫। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাক-পবিত্রতা ছাড়া নামাজ এবং হারাম ধন সম্পদের দান-খায়রাত কবূল হয় না। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ২২৪। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০২. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার অত্যধিক মাযী বের হত। কিন্তু আমি নবী [সাঃআঃ] কন্যার [ফাত্বিমার] স্বামী, তাই এ ব্যাপারে নবী [সাঃআঃ]-কে কিছু জিজ্ঞেস করিতে লজ্জাবোধ করতাম। তাই আমি মাসআলাটি জানার জন্য নবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিতে মিক্বদাদকে বললাম। সে [নাম প্রকাশ ব্যতীত] রসূল [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, এ অবস্থায় সে প্রথমে পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে ও তারপর উযূ করে নিবে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৩২, ১৭৮, ১৬৯, মুসলিম ৩০৩; শব্দবিন্যাস মুসলিমের। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ আগুন দিয়ে পাকানো কোন জিনিস খেলে তোমরা উযূ করে নেবে। {১}
ঈমাম মুহ্য়িয়ুস্ সুন্নাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এ হাদিসের হুকুম ইবনি আব্বাস-এর হাদিস দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
{১} সহীহ : মুসলিম ৩৫২। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বকরীর রানের [পাকানো] গোশ্ত খেয়ে নামাজ আদায় করিলেন কিন্তু উযূ করেননি। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২০৭, মুসলিম ৩৫৪। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৫. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিল, আমরা কি বকরীর গোশ্ত খেলে উযূ করব? তিনি [সাঃআঃ] বললেন, তুমি চাইলে করিতে পার, না চাইলে না কর। সে আবার জিজ্ঞেস করিল, উটের গোশ্ত খাবার পর কি উযূ করব? রসূল [সাঃআঃ] বললেন, হাঁ, উটের গোশ্ত খাবার পর উযূ কর। অতঃপর সে ব্যক্তি আবার জিজ্ঞেস করিল, বকরী থাকার স্থানে কি নামাজ আদায় করিতে পারি? রসূল [সাঃআঃ] বললেন, হ্যাঁ, পারো। তারপর সে ব্যক্তি জিজ্ঞেস করিল, উটের বাথানে কি নামাজ আদায় করব? তিনি [সাঃআঃ] বললেন, না। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ৩৬২। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন তার পেটের মধ্য কিছু [বায়ু] শব্দ পায় এবং এরপর তার সন্দেহ হয় যে, তার পেট হইতে কিছু [বায়ু] বের হয়েছে কিনা, তাহলে সে যেন [উযূ] নষ্ট হয়ে গেছে ভেবে মাসজিদ হইতে বের না হয়, যে পর্যন্ত সে [বায়ু বের হবার দরুন] কোন শব্দ না শুনে বা গন্ধ না পায়। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ৩৬২। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৭. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুধ পান করিলেন । অতঃপর কুলি করিলেন এবং বললেন, দুধের মধ্যে চর্বি থাকে । {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২১১, মুসলিম ৩৫৮। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৮. বুরায়দাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] মাক্কাহ্ বিজয়ের দিন এক উযূতে কয়েক ওয়াক্তের নামাজ আদায় করিলেন এবং মোজার উপর মাসাহ করিলেন। উমার [রাদি.] তাঁকে বললেন, আজ আপনি এমন কিছু করিলেন যা পূর্বে কখনো করেননি। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, হে, উমার! আমি ইচ্ছা করেই এরূপ করেছি। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ২৭৭। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩০৯. সুওয়াইদ ইবনি নুমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে খায়বার যুদ্ধে গিয়েছিলেন। তাঁরা খায়বারের অতি নিকটে সহ্বা নামক স্থানে যখন পৌঁছলেন, তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আস্রের নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর আহার পরিবেশন করিতে বললেন, কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছু পাওয়া গেল না। তিনি নির্দেশ দিলেন। তাই পানি দিয়ে ছাতু নরম করা হল। এ ছাতু তিনি নিজেও খেলেন আমরাও খেলাম। তারপর তিনি [সাঃআঃ] মাগরিবের সলাতের জন্য দাঁড়ালেন এবং শুধু কুলি করিলেন। আর আমরাও কুলি করলাম। এ অবস্থায় তিনি [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিলেন, অথচ নতুনভাবে উযূ করিলেন না। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২০৯। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩১০.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [বায়ু নির্গত হবার] শব্দ কিংবা গন্ধ পেলেই কেবল উযূ করিতে হবে। {১}
{১} সহীহ : আহমাদ ৯৭৪৩, তিরমিজি ৭৪, ইবনি মাজাহ ৫১৫, সহীহুল জামি ৭৫৫২। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩১১. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে মাযী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, মাযীর কারণে উযূ আর মানীর কারণে গোসল করিতে হবে। {১}
{১} সহীহ : তিরমিজি ১১৪। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩১২. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সলাতের চাবি হল উযূ, আর সলাতের তাহরীম হল তাকবীর [অর্থাৎ আল্ল-হু আকবার বলা] এবং তার তাহলীল হল [সলাতের শেষে] সালাম ফিরানো। ১}
{১} হাসান সহীহ : আবু দাউদ ৬১৮, তিরমিজি ৩, আহমাদ ১/১২৯, দারিমী ৭১৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ
৩১৩. আলী ও আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি মাজাহ এ হাদিসটিকে আলী ও আবু সাঈদ [রাদি.] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। {১}
{১} সহীহ : ইবনি মাজাহ ২৭৫, ২৭৬। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩১৪. আলী ইবনি ত্বলক্ব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কারও যখন বায়ু বের হয়, তখন সে যেন আবার উযূ করে নেয়। আর তোমরা নারীদের গুহ্যদ্বারে সঙ্গম করিবে না। {১}
{১} সহীহ : তিরমিজি ১১৬৫, আবু দাউদ ২০৫। শব্দবিন্যাস আত তিরমিজির اَلسَّهُ [আস্ সাহু] হলো নিতম্বের নাম। আর اَلْوِكَاءُ [আল বিকা-উ] হলো মশকের মুযবাধার রশি। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩১৫. মুআবিয়াহ্ ইবনি আবী সুফ্ইয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ চোখ দুটো হল গুহ্যদ্বারের ফিতা-বন্ধন স্বরূপ। সুতরাং চোখ যখন ঘুমায় ফিতা [ঢাকনা] তখন খুলে যায়। {১}
{১} হাসান : আহমাদ ১৬৪৩৭, দারিমী ৭২২, সহীহুল জামি ৪১৪৮। এর সানাদে আবু বাকর ইবনি আবু মারইয়াম [আঃ] নামক একজন দুর্বল রাবী থাকা সত্ত্বেও তার শাহিদ বর্ণনা থাকায় হাসানের স্তরে উন্নীত হয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
৩১৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গুহ্যদ্বারের ফিতা বা ঢাকনা হল চক্ষুদ্বয়। তাই যে ব্যক্তি ঘুমাবে সে যেন উযূ করে। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ২০৩, সহীহুল জামি ৭১১৭। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩১৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর সহাবীগণ ইশার সলাতের জন্যে বসে অপেক্ষা করিতেন। এমনকি ঘুমের আমেজে তাদের মাথা নীচের দিকে ঝুঁকে পড়তো। এরপর তারা নামাজ আদায় করিতেন, অথচ নতুন উযূ করিতেন না। {১} তবে ঈমাম তিরমিজি ইশার সলাতের অপেক্ষায় বসে থাকতেন”-এর জায়গায় “ঘুম যেতেন” শব্দ উল্লেখ করিয়াছেন।
{১} সহীহ : আবু দাউদ ২০০, তিরমিজি ৭৮, মুসলিম ৩৭৬। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩১৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সঃ] বলেছেনঃ নিশ্চয়ই উযূ সে ব্যক্তির জন্যে ওয়াজিব যে কাত হয়ে ঘুমায়। কারণ কাত হয়ে ঘুমালে শরীরের বন্ধনগুলো শিথিল হয়ে পড়ে। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ২০২, তিরমিজি ৭৭, যঈফুল জামি ১৮০৮। কারণ এর সানদে ইয়াযীদ ইবনি খালিদ আদ্ দালানী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে এবং সে হাদিসের মাতানের ক্ষেত্রেও ভুল করে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩১৯. বুসরাহ্ বিনতু সফ্ওয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি স্বীয় পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করে তাহলে তাকে উযূ করিতে হবে । {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৮১, তিরমিজি ৮২, নাসায়ী ৪৪৭, মালিক ৯১, আহমাদ ২৬৭৫১, সহীহুল জামি ৬৫৫৪, ইবনি মাজাহ ৪৭৯, দারিমী ৭৫১। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২০. ত্বলক্ব ইবনি আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করা হল, উযূ করার পর কেউ যদি তার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করে তাহলে এর হুকুম কী? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, সেটা তো মানুষের শরীরেরই একটা অংশবিশেষ। {১}
ঈমাম মুহ্য়িয়ূস সুন্নাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, এ হাদিসটি মানসূখ [রহিত]। কেননা আবু হুরাইরাহ [রাদি.] ত্বল্ক্ব-এর মাদীনাহ্ আগমনের পর ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন।
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৮২, তিরমিজি ৮৫, নাসায়ী ১৬৫। ইবনি মাজাহও অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমাদের কারো হাত নিজের পুরুষাঙ্গের উপর লাগলে এবং হাত ও পুরুষাঙ্গের মধ্যে কোন আবরণ না থাকলে তাকে উযূ করিতে হবে”। {১}
{১} সহীহ : মুসনাদে শাফিঈ ১২ পৃঃ, দারাকুত্বনী ১/১৪৭, সহীহুল জামি ৩৬২। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২২. বুসরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাসায়ী [রাহিমাহুল্লাহ] বুসরাহ্ [রাদি.] থেকে এ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তবে তিনি “হাত ও পুরুষাঙ্গের মধ্যে কোন আবরণ নেই”-এ শব্দগুলো বর্ণনা করেননি। {১}
{১} সহীহুল ইসনাদ : নাসায়ী ৪৪৫ [সহীহ সুনান আন্ নাসায়ী]। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন স্ত্রীকে চুমু দিতেন, এরপর নামাজ আদায় করিতেন, অথচ উযূ করিতেন না। {১}
ঈমাম তিরমিজি বলেছেন, আমাদের হাদিসবেত্তাদের মতে কোন অবস্থাতেই উরওয়ার সানাদ আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে, এমনকি ইবরাহীম আত তায়মী [রাহিমাহুল্লাহ]-এর সানাদও আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে সহীহ হইতে পারে না।
আবু দাউদ বলেছেন, এ হাদিসটি মুরসাল। কারণ ইবরাহীম আত তায়মী [রাহিমাহুল্লাহ] আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে শুনেননি।
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৭৮, তিরমিজি ৮৬, নাসায়ী ১৭০, ইবনি মাজাহ ৫০২, সহীহুল জামি ৪৯৯৭। শব্দবিন্যাস নাসায়ীর। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভেড়ার বাজুর গোশ্ত খেলেন, তারপর আপন হাতকে আপন পায়ের তলায় ঘষে মুছে নিলেন, অতঃপর নামাজ আদায় করিতে দাঁড়িয়ে গেলেন, অথচ [নতুন করে] উযূ করিলেন না। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৮৯, ইবনি মাজাহ ৪৮৮। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২৫. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি নবী [সাঃআঃ]–এর নিকট পাঁজরের ভুনা গোশ্ত পেশ করলাম। তিনি তা থেকে কিছু খেলেন, তারপর সলাতে দাঁড়িয়ে গেলেন, নতুন করে উযূ করেননি। {১}
{১} সহীহ : তিরমিজি ১৮২৯, আহমাদ ২৬০৮২, ইবনি মাজাহ ৪৯১, নাসায়ী পবিত্রতা অধ্যায়। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩২৬. আবু রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি বকরীর পেটের গোশ্ত [কলিজা প্রভৃতি] ভুনা করে দিতাম [তিনি তা খেতেন]। এরপর তিনি নামাজ আদায় করিতেন, কোন উযূ করিতেন না। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ৩৫৭। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২৭. আবু রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তাকে একটি বকরী হাদিয়্যাহ্ দেয়া হল এবং তিনি তা পাতিলে রান্না করিলেন। এমন সময় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-তার কাছে এসে উপস্থিত হলেন। তিনি বললেন, এটা কী, হে আবু রাফি? তিনি বললেন, আমাদেরকে একটি বকরী হাদিয়্যাহ্ হিসেবে দেয়া হয়েছে, হে আল্লাহর রসূল! পাতিলে তা পাক করেছি। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, হে আবু রাফি! আমাকে এর একটি বাজু দাও তো। আমি তাঁকে একটি বাজু দিলাম। এরপর তিনি [সাঃআঃ] বললেন, আমাকে আরো একটি বাজু দাও। অতঃপর আমি তাঁকে আরো একটি বাজু দিলাম। এরপর তিনি [সাঃআঃ] আবার বললেন, আমাকে আরো একটি বাজু দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ রসূল! একটি বকরীর তো দুটি বাজু হয়। এটা শুনে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, আহ! তুমি যদি চুপ থাকতে, তাহলে বাজুর পর বাজু আমাকে দিতে পারতে, যে পর্যন্ত তুমি নিশ্চুপ থাকতে। এরপর রসূল [সাঃআঃ] পানি চাইলেন। তিনি [সাঃআঃ] কুলি করিলেন, নিজের আঙ্গুলের মাথা ধুয়ে নিলেন, অতঃপর সলাতে দাঁড়ালেন এবং নামাজ আদায় করিলেন। এরপর তিনি [সাঃআঃ] আবার তাদের কাছে ফিরে এলেন। এবার তাদের কাছে ঠান্ডা গোশ্ত দেখিতে পেলেন। তিনি [সাঃআঃ] তা খেলেন, এরপর মাসজিদে প্রবেশ করিলেন এবং নামাজ আদায় করিলেন। কিন্তু তিনি [সাঃআঃ] পানি ব্যবহার করিলেন না অর্থাৎ উযূ করিলেন না। {১}
{১} জইফ : আহমাদ ২৬৬৫৪। কারণ এর সানাদে শুরাহবিল বিন সাদ নামে দুর্বল রাবী এবং আবু জাফার আর্ রাযী নামে মতবিরোধপূর্ণ রাবী রয়েছে। তবে শামায়িল-এর তাহ্ক্বীক্বে আল্লামা আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩২৮. আবু উবায়দ হইতে বর্ণীতঃ
দারিমী আবু উবায়দ হইতে এ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু দারিমী অতঃপর তিনি পানি চাইলেন হইতে শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেননি। {১}
{১} সহীহ : দারিমী ১/২২, আহমাদ ৩/৪৮৪-৮৫। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩২৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি, উবাই ইবনি কাব ও আবু ত্বলহাহ্ [রাদি.]-এ তিনজন এক জায়গায় বসে গোশ্ত ও রুটি খেলাম। অতঃপর খাওয়া শেষে আমি উযূ করার জন্য পানি চাইলাম। এটা দেখে তাঁরা {উবাই ইবনি কাব ও আবু ত্বালহাহ্ [রাদি.]] বললেন, তুমি উযূ কেন করিবে? আমি বললাম, এ খাবারের কারণে? তাঁরা উভয়ে বললেন, এ পাক-পবিত্র খেয়েও কি তুমি উযূ করিবে? অথচ তোমার চেয়ে অনেক বেশী উত্তম যিনি ছিলেন তিনি [সাঃআঃ] তাহাঁর আহারের পর উযূ করেননি। {১}
{১} জায়য়িদুল ইসনাদ : আহমাদ ১৫৯৩০। এই হাদিসটির তাহকীকঃ অন্যান্য
৩৩০. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিতেন, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে চুমু দেয়া অথবা তার স্বীয় হাত দিয়ে স্পর্শ করা লামস্-এর মধ্য গণ্য। সুতরাং যে লোক তার স্ত্রীকে চুমু দিবে কিংবা হাত দিয়ে স্পর্শ করিবে তার জন্য উযূ করা ওয়াজিব। {১}
{১} সহীহ : মুয়াত্ত্বা মালিক ৯৭, মুসনাদে শাফিঈ ১১ নং পৃঃ। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩১. ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে চুমু দিলে উযূ করা অত্যাবশ্যক। {১}
{১} সহীহ : মালিক ৯৬, বায়হাক্বী ১/১২৪। ওযুর ওয়াজিব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উমার [রাদি.] বলেছেন, চুমু দেয়া লামস্-এর অন্তর্ভূক্ত। [যা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে]। সুতরাং চুমু দেয়ার পরে তোমরা উযূ করিবে। {১}
{১} জইফ : দারাকুত্বনী ১/১৪৪। কারণ এর সানাদে মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি উসমান যিনি স্মরণশক্তিগত ত্রুটির কারণে দুর্বল প্রমাণিত হয়েছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৩৩.উমার [রাদি.] ইবনি আবদুল আযীয [রাহিমাহুল্লাহ] তামীম আদ্ দারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক প্রবাহমান রক্তের কারণেই উযূ করিতে হবে। {১}
দারাকুত্বনী হাদিস দুটো বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, উমার ইবনি আবদুল আযীয [রাহিমাহুল্লাহ] এ হাদিসটি তামীম আদ্ দারী [রাদি.] হইতে শুনেননি। তিনি তাঁকে দেখেনওনি। অপর রাবী ইয়াযীদ ইবনি খালিদ ও ইয়াযীদ ইবনি মুহাম্মাদ উভয়ই অজ্ঞাত ব্যক্তি। সুতরাং এ হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। {১} জইফ : দারাকুত্বনী ১/১৫৭। হাদীসে উল্লেখিত কারণ ছাড়াও এর দুর্বলতার তৃতীয় একটি কারণ হলো সানাদে বাক্বিয়্যাহ্ ইবনি ওয়ালীদ এর উপস্থিতি যিনি একজন মুদাল্লিস রাবী হিসেবে রিচিত। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply