ওমরা হজের নিয়ম । হজের নিয়ম কানুন ও দোয়া
ওমরা হজের নিয়ম । হজের নিয়ম কানুন ও দোয়া , এই পর্বের হাদীস =১৫৩ টি (৭৩১-৮৮৩) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্ব-১৫ঃ হজ্জ
১৫/১. মুহরিম ব্যক্তির জন্য হাজ্জ অথবা উমরাহ্তে কী কী বৈধ আর কী কী অবৈধ এবং তার জন্য সুগন্ধি জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা হারাম হওয়ার বর্ণনা।
১৫/২. হাজ্জ ও উমরাহর মীকাতসমূহ
১৫/৩. তালবীয়াহ পাঠের গুণাগুণ এবং তার সময়।
১৫/৪. মাদীনাহবাসীদের জন্য মাসজিদে যুল হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনর নিকট থেকে ইহরাম বাঁধার নির্দেশ।
১৫/৫. পশুবাহন যাত্রার প্রস্তুতি নিলে তালবীয়াহ পাঠ।
১৫/৭. ইহরাম বাঁধার সময় মুহরিম ব্যক্তির সুগন্ধি ব্যবহার।
১৫/৮. মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম।
১৫/৯. হারাম শরীফের আওতার ভিতর এবং আওতার বাইরে মুহরিম এবং অন্যান্যদের জন্য যে সমস্ত প্রাণী হত্যা করার অনুমতি আছে।
১৫/১১. মুহরিম ব্যক্তির শিঙ্গা লাগানো বৈধ।
১৫/১৩. মুহরিম ব্যক্তির মাথা এবং শরীর ধৌত করা বৈধ।
১৫/১৪. মুহরিম ব্যক্তি মারা গেলে কী করা হইবে।
১৫/১৫. অসুখ বা অন্য কোন কারণে মুহরিম ব্যক্তির ইহরাম খুলে ফেলার শর্ত করা বৈধ।
১৫/১৭. ইহরামের প্রকারভেদ, আর তা হাজ্জে ইফরাদ এবং তামাত্তু এবং ক্বিরান এবং হাজ্জ ও উমরাহ্কে যুক্ত করা বৈধ এবং হাজ্জ ক্বারেন আদায়কারী কখন তার ইহরাম থেকে হালাল হইবে।
১৫/২১. আরাফাহ্তে অবস্থান করা এবং আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “তখন ঐ স্থান থেকে যাত্রা কর লোকেরা যেখান থেকে যাত্রা করে।” [সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/১১৯]
১৫/২২. ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাওয়ার বিধান রহিত এবং তা পরিপূর্ণ করার নির্দেশ।
১৫/২৩. হাজ্জে তামাত্তু করা বৈধ।
১৫/২৪. হাজ্জ তামাত্তুকারীর উপর কুরবানী করা অপরিহার্য এবং এটা না করিতে পারলে হাজ্জ পালন করা অবস্থায় তিন দিন এবং বাড়ীতে ফিরার পর সাতদিন সওম পালন করিতে হইবে।
১৫/২৫. ইফরাদ হাজ্জকারী যে সময়ে হালাল হয় তার পূর্বে হাজ্জে কিরানকারী হালাল হইতে পারবে না।
১৫/২৭. হাজ্জ ও উমরাহ্তে কিরান ও ইফরাদ।
১৫/২৮. যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বাঁধল তার জন্য কী কী করা অপরিহার্য, অতঃপর তাওয়াফ ও সায়ীর জন্য মাক্কায় আসল।
১৫/২৯. যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বেঁধে মাক্কায় আসল তার জন্য ত্বওয়াফ ও সায়ীতে কী করা অপরিহার্য।
১৫/৩১. হাজ্জের মাসগুলোতে উমরাহ করা।
১৫/৩২. ইহরামের সময় কুরবানীর পশুর গলায় কিলাদা ঝুলানো এবং কোন চিহ্ন দিয়ে দেয়া।
১৫/৩৩. উমরাহ্তে চুল ছাঁটা।
১৫/৩৪. নাবী [সাঃআঃ]-এর ইহরাম বাঁধা এবং তাহাঁর কুরবানী।
১৫/৩৫. নাবী [সাঃআঃ]-এর উমরাহ আদায়ের সংখ্যা এবং তা আদায় করার সময়ের বর্ণনা।
১৫/৩৬. রমাযান মাসে উমরাহ পালনের ফাযীলাত।
১৫/৩৭. মাক্কাহ্তে সানীয়াহ উলিয়াহ দিয়ে প্রবেশ করা এবং এটা [মাক্কাহ] থেকে সানীয়াহ সুফলা দিয়ে বের হওয়া এবং দেশে বিপরীত রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা মুস্তাহাব।
১৫/৩৮. মাক্কাহ্তে প্রবেশের ইচ্ছে করলে যী-তুয়া উপত্যকায় রাত্রি যাপন করা এবং গোসল করে প্রবেশ করা এবং দিনের বেলায় প্রবেশ করা মুস্তাহাব।
১৫/৩৯. উমরার ও ত্বওয়াফে এবং হাজ্জের প্রথম ত্বওয়াফে রমল করা মুস্তাহাব।
১৫/৪০. ত্বওয়াফ করার সময় রুকনে ইয়ামানীদ্বয়কে স্পর্র্শ করা এবং অপর দুটি রুকন স্পর্শ না করা মুস্তাহাব।
১৫/৪১. ত্বওয়াফকালে কালো পাথরে চুম্বন দেয়া মুস্তাহাব।
১৫/৪২. উট বা অন্যান্য যানবাহনে আরোহণ করে তাওয়াফ করা এবং আরোহণকারীর জন্য লাঠি বা অন্য কিছুর মাধ্যমে কালো পাথর স্পর্শ করা বৈধ।
১৫/৪৩. সাফা এবং মারওয়ায় সাঈ [দৌড়াদৌড়ি] করা হাজ্জের রুকন্- এটা পালন না করলে হাজ্জ বিশুদ্ধ না হওয়ার বর্ণনা।
১৫/৪৬. আরাফাহ্র দিন মীনা থেকে আরাফাহ্র ময়দানে যাওয়ার সময় তালবীয়াহ ও তাকবীর পাঠ।
১৫/৪৭. আরাফাহ্ থেকে মুজদালিফা গমন এবং সেই রাত্রিতে মুজদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে পড়া মুস্তাহাব।
১৫/৪৮. কুরবানীর দিন মুজদালিফায় ফাজ্রের সালাত বেশী অন্ধকারে পড়া মুস্তাহাব। ফাজ্র উদিত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করাটাও মুস্তাহাব।
১৫/৪৯. রাত্রির শেষভাগে লোকেদের ভিড়ের পূর্বে দুর্বল এবং বয়স্ক মহিলা ও অন্যদের মুজদালিফা থেকে মিনায় পাঠিয়ে দেয়া মুস্তাহাব এবং অন্যান্যদের ফাজ্রের সালাত আদায় পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা মুস্তাহাব।
১৫/৫০. বাতনে ওয়াদী থেকে জামরাতুল আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপ কালে মাক্কাহ্কে বাম দিকে রাখা এবং প্রত্যেকবার কঙ্কর নিক্ষেপ করার সময় তাকবীর বলা।
১৫/৫৫. চুল ছাঁটার উপর মাথা মুণ্ডন করাকে প্রাধান্য দেয়া এবং চুল ছাঁটার বৈধতা প্রসঙ্গে।
১৫/৫৬. কুরবানীর দিন সুন্নাত কাজ হল সর্বপ্রথম কঙ্কর নিক্ষেপ করা, অতঃপর কুরবানী করা, অতঃপর মাথা মুণ্ডন করা এবং মাথার চুল মুণ্ডন করার ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে শুরু করা।
১৫/৫৭. যে ব্যক্তি কুরবানী করার পূর্বেই মাথা মুণ্ডন করিল অথবা কঙ্কর নিক্ষেপ করার পূর্বেই।
১৫/৫৮. কুরবানীর দিন ত্বওয়াফে ইসলামিক ফাউন্ডেশনযাহ করা মুস্তাহাব হওয়ার বর্ণনা।
১৫/৫৯. প্রস্থান করার দিন মুহাস্সাবে অবতরণ করা এবং সালাত আদায় করা মুস্তাহাব।
১৫/৬০. আইয়ামে তাশরীকের রাত্রিগুলো মীনায় অতিবাহিত করা ওয়াজিব তবে যারা [হাজীদের] পানি পান করায় তাহাদের জন্য এ ব্যাপারে শিথিলতা আছে।
১৫/৬১. কুরবানীর প্রাণীর গোশ্ত, চামড়া ও তার শীতাবরণ সদাকাহ করা।
১৫/৬৩. বুদনা [উট] বেঁধে দাঁড়ান অবস্থায় নাহার করা।
১৫/৬৫. হাজ্জে গমনকারীর জন্য কুরবানীর উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া বুদনার উপর প্রয়োজনে আরোহণ করা জায়িয।
১৫/৬৭. তাওয়াফে বিদা [শেষ তাওয়াফ] ওয়াজিব ও ঋতুবতী মহিলার জন্য এ হুকুম বিলুপ্ত।
১৫/৬৮. হাজী ও অন্যদের কাবায় প্রবেশ করা, সেখানে সালাত আদায় ও তার প্রত্যেক প্রান্তে দুআ করা মুস্তাহাব।
১৫/৬৯. কাবা গৃহ ভেঙ্গে ফেলা ও তার পুনর্নির্মাণ করা।
১৫/৭০. কাবা ঘরের দেয়াল ও তার দরজা।
১৫/৭১. অক্ষম, বৃদ্ধ ও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হাজ্জ।
১৫/৭৩. জীবনে হাজ্জ একবার ফার্য।
১৫/৭৪. মুহরিম [যাদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ] ব্যক্তির সাথে মহিলাদের হাজ্জের জন্য বা অন্য কারণে সফর করা।
১৫/৭৬. হাজ্জ বা অন্য সফর থেকে ফেরার পথে কী বলবে?
১৫/৭৭. হাজ্জ ও উমরাহ্ থেকে ফেরার পথে জুল হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনয় অবস্থান করা এবং সেখানে সালাত আদায়।
১৫/৭৮. কোন মুশরিক হাজ্জ করিবে না ও উলঙ্গ অবস্থায় কেউ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিবে না এবং হাজ্জে আকবার দিনের বর্ণনা।
১৫/৭৯. হাজ্জ, উমরাহ ও আরাফাহ্র দিনের ফাযীলাত।
১৫/৮০. হাজ্জকারীর মাক্কায় অবস্থান ও তার গৃহের উত্তরাধিকার হওয়া।
১৫/৮১. মাক্কাহ্ থেকে হিজরাতকারী ব্যক্তির হাজ্জ ও উমরাহ্ সম্পন্ন করার পর প্রবাসী ব্যক্তির জন্য অনুর্ধ তিনদিন মাক্কায় অবস্থান করা বৈধ।
১৫/৮২. মাক্কাহ্ হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, সেখানকার লতা ও বৃক্ষ কাটা নিষিদ্ধ এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়া ছাড়া সেখানকার পড়ে থাকা জিনিস উঠানো নিষিদ্ধ।
১৫/৮৪. ইহরাম অবস্থায় ছাড়া মাক্কায় প্রবেশ বৈধ।
১৫/৮৫. মাদীনাহ্র মর্যাদা, সেখানকার মাল সম্পদে বারাকাতের জন্য নাবী [সাঃআঃ]-এর দুআ, সে স্থান হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, বৃক্ষ কর্তন করা নিষিদ্ধ এবং এর হারামের সীমারেখা।
১৫/৮৭. মহামারী ও দাজ্জালের প্রবেশ থেকে মাদীনাহ সংরক্ষিত হওয়া।
১৫/৮৯. যে ব্যক্তি মাদীনাহ্বাসীর অনিষ্ট কামনা করিবে আল্লাহ তাআলা তাকে কষ্ট দিবেন।
১৫/৯০. বিভিন্ন শহর বিজিত হলেও মাদীনায় থাকার প্রতি উৎসাহ প্রদান।
১৫/৯১. মাদীনাহ্র অধিবাসীরা যখন মাদীনাহ্কে পরিত্যাগ করিবে।
১৫/৯২. কবর ও মিম্বারের মধ্যবর্তী স্থান হচ্ছে জান্নাতের বাগিচাসমূহের একটি বাগিচা।
১৫/৯৩. উহূদ পাহাড় আমাদেরকে ভালভাসে এবং আমরা তাকে ভালবাসি।
১৫/৯৪. মাক্কাহ ও মাদীনাহ্র দু মাসজিদে সালাতের ফাযীলাত।
১৫/৯৫. তিন মাসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও সফরের প্রস্তুতি নেবে না।
১৫/৯৬. কুবা মাসজিদ ও সেখানে সালাত আদায়ের ফাযীলাত এবং তা যিয়ারাত করা।
১৫/১. মুহরিম ব্যক্তির জন্য হাজ্জ অথবা উমরাহ্তে কী কী বৈধ আর কী কী অবৈধ এবং তার জন্য সুগন্ধি জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা হারাম হওয়ার বর্ণনা।
৭৩১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ্র রসূল! মুহরিম লোক কী কী পোশাক পরবে? আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা [ইহরাম অবস্থায়] জামা, পাগড়ী, পায়জামা, টুপি ও মোজা পরবে না। তবে যে ব্যক্তির জুতা নেই, সে কেবল মোজা পরতে পারবে, কিন্তু উভয় মোজা টাখনুর নীচ থেকে কেটে ফেলবে। আর যাফরান ও ওয়ারস রং যাতে লেগেছে, এমন কাপড় পরবে না।
[বোখারী পর্ব ২৫ : /২১ হাঃ ৫৮০৩, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৩২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে মুহরিমদের উদ্দেশে আরাফাতে ভাষণ দিতে শুনিয়াছি। তিনি বলেছেনঃ যার চপ্পল নেই সে মোজা পরিধান করিবে আর যার লুঙ্গি নেই সে পায়জামা পরিধান করিবে
। [বোখারী পর্ব ২৮ : /১৫ হাঃ ১৮৪১, মুসলিম ১৫/১, হাঃ ১১৭৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৩৩. সাফ্ওয়ান ইবনি ইয়ালা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
ইয়ালা [রাদি.] উমার [রাদি.]-কে বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর ওয়াহী অবতরণ মুহূর্তটি আমাকে দেখাবেন। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] জিরানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন, তাহাঁর সঙ্গে কিছু সংখ্যক সহাবী ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কোন ব্যক্তি সুগন্ধিযুক্ত পোশাক পরে উমরাহর ইহরাম বাঁধলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? নাবী [সাঃআঃ] কিছুক্ষণ নীরব রইলেন। এরপর তাহাঁর নিকট ওহী আসল। উমার [রাদি.] ইয়ালা [রাদি.]-কে ইঙ্গিত করায় তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। তখন একখণ্ড কাপড় দিয়ে নাবী [সাঃআঃ]র উপর ছায়া করা হয়েছিল, ইয়ালা [রাদি.] মাথা প্রবেশ করিয়ে দেখিতে পেলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর মুখমণ্ডল লাল বর্ণ, তিনি সজোরে শ্বাস গ্রহণ করছেন। এরপর সে অবস্থা দূর হলো। তিনি বললেনঃ উমরাহ সম্পর্কে প্রশ্নকারী কোথায়? প্রশ্নকারীকে উপস্থিত করা হলে তিনি বললেনঃ তোমার শরীরের সুগন্ধি তিনবার ধুয়ে ফেল ও জুব্বাটি খুলে ফেল এবং হাজ্জে যা করে থাক উমরাহইতেও তাই কর।
[বোখারী পর্ব ২৫ : /১৭ হাঃ ১৫৩৬, মুসলিম ১৫/১, হাঃ ১১৮০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২. হাজ্জ ও উমরাহর মীকাতসমূহ
৭৩৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ইহ্রাম বাঁধার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন, মাদীনাহবাসীদের জন্য যুল-হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশন, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহ্ফা, নজদবাসীদের জন্য ক্বারনুল-মানাযিল, ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম। উল্লিখিত স্থানসমূহ হাজ্জ ও উমরাহর নিয়্যাতকারী সেই অঞ্চলের অধিবাসী এবং ঐ সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য ইহরাম বাঁধার স্থান এবং মীকাতের ভিতরে স্থানের লোকেরা নিজ বাড়ি হইতে ইহ্রাম বাঁধবে। এমনকি মাক্কাহবাসীগণ মাক্কাহ হইতেই ইহ্রাম বাঁধবে।
[বোখারী পর্ব ২৫ : /৯ হাঃ ১৫২৬, মুসলিম ১৫/২ হাঃ ১১৮১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৩৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেনঃ মাদীনাহবাসীগণ যুল-হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনহ হইতে, সিরিয়াবাসীগণ জুহ্ফা হইতে ও নজদবাসীগণ ক্বারণ হইতে ইহরাম বাঁধবে। আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আমি [অন্যের মাধ্যমে] অবগত হয়েছি, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইয়ামানবাসীগণ ইয়ালামলাম হইতে ইহ্রাম বাঁধবে।
[বোখারী পর্ব ২৫ : /৮ হাঃ ১৫২৫, মুসলিম ১৫/২, হাঃ ১১৮২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩. তালবীয়াহ পাঠের গুণাগুণ এবং তার সময়।
৭৩৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর তালবিয়া নিম্নরূপঃ [অর্থ] আমি হাযির হে আল্লাহ, আমি হাযির, আমি হাযির; আপনার কোন অংশীদার নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও সকল নিআমত আপনার এবং কর্তৃত্ব আপনারই, আপনার কোন অংশীদার নেই।
[বোখারী পর্ব ২৫: /২৬ হাঃ ১৫৪৯, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪. মাদীনাহবাসীদের জন্য মাসজিদে যুল হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনর নিকট থেকে ইহরাম বাঁধার নির্দেশ।
৭৩৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যুল-হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনর মাসজিদের নিকট হইতে ইহরাম বেঁধেছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫ : /২০ হাঃ ১৫৪১, মুসলিম ১৫/৪, হাঃ ১১৮৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫. পশুবাহন যাত্রার প্রস্তুতি নিলে তালবীয়াহ পাঠ।
৭৩৮. উবায়দ ইবনি জুরাইজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-কে বলিলেন, হে আবু আবদুর রহমান! আমি আপনাকে এমন চারটি কাজ করিতে দেখি, যা আপনার অন্য কোন সাথীকে দেখি না। তিনি বলিলেন, ইবনি জুরায়জ, সেগুলো কী? তিনি বলিলেন, আমি দেখি, [১] আপনি তাওয়াফ করার সময় দু রুকনে ইয়ামানী ব্যতীত অন্য রুকন স্পর্শ করেন না। [২] আপনি সিবতী [পশমবিহীন] জুতা পরিধান করেন; [৩] আপনি [কাপড়ে] হলুদ রং ব্যবহার করেন এবং [৪] আপনি যখন মাক্কায় থাকেন লোকে চাঁদ দেখে ইহরাম বাঁধে; কিন্তু আপনি তারবিয়াহর দিন [৮ই যিলহজ্জ] না এলে ইহরাম বাঁধেন না।
আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বললেনঃ রুকনের কথা যা বলেছ, তা এজন্য করি যে আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে ইয়ামানী রুকনদ্বয় ব্যতীত আর কোনটি স্পর্শ করিতে দেখিনি। আর সিবতী জুতা, আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে সিবতী জুতা পরতে এবং তা পরিহিত অবস্থায় উযূ করিতে দেখেছি, তাই আমি তা পরতে ভালবাসি। আর হলুদ রং, আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে তা দিয়ে কাপড় রঙিন করিতে দেখেছি, তাই আমিও তা দিয়ে রঙিন করিতে ভালবাসি। আর ইহরাম,- আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে নিয়ে তাহাঁর সওয়ারী রওনা না হওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে ইহরাম বাঁধতে দেখিনি।
[বোখারী পর্ব ৪ : /৩০ হাঃ ১৬৬, মুসলিম ১৫/৫, হাঃ ১১৮৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭. ইহরাম বাঁধার সময় মুহরিম ব্যক্তির সুগন্ধি ব্যবহার।
৭৩৯. নাবী সহধর্মিণী আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইহরাম বাঁধার সময়* আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর গায়ে সুগন্ধি মেখে দিতাম এবং বায়তুল্লাহ তাওয়াফের পূর্বে ইহরাম খুলে ফেলার সময়ও।
[বোখারী পর্ব ২৫ : /১৮ হাঃ ১৫৩৯, মুসলিম ১৫/৭, হাঃ ১১৮৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি যেন এখনো দেখছি, নাবী [সাঃআঃ]-এর ইহরাম অবস্থায় তাহাঁর সিঁথিতে খুশবুর ঔজ্জ্বল্য রয়েছে।
[বোখারী পর্ব ৫: /১৪ হাঃ ২৭১, মুসলিম ১৫/৭, হাঃ ১১৯০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪১. মুহাম্মদ ইবনি মুনতাশির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আমি আয়েশা [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম এবং আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-এর উক্তি উল্লেখ করলাম,- “আমি এমন অবস্থায় ইহরাম বাঁধা পছন্দ করি না, যাতে সকালে আমার দেহ হইতে সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ে।” আয়েশা [রাদি.] বললেনঃ আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে সুগন্ধি লাগিয়েছি, তারপর তিনি পর্যায়ক্রমে তাহাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন এবং তাহাঁর ইহরাম অবস্থায় সকাল হয়েছে।
[বোখারী পর্ব ৫ : /১৪ হাঃ ২৭০, মুসলিম হাঃ]ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮. মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম।
৭৪২. সাআব ইবনি জাস্সামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি [সাআব ইবনি জাস্সামা] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর জন্য একটি বন্য গাধা হাদিয়া পাঠালেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তখন আবওয়া কিংবা ওয়াদ্দান নামক স্থানে ছিলেন। তিনি হাদিয়া ফেরত পাঠালেন। পরে তার বিষন্ন মুখ দেখে বলিলেন, শুন! আমরা ইহরাম অবস্থায় না থাকলে তোমার হাদিয়া ফেরত দিতাম না।
[বোখারী পর্ব ২৮ : /৬ হাঃ ২৫৭৩, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪৩. আবু কাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাদীনাহ হইতে তিন মারহালা দূরে অবস্থিত কাহা নামক স্থানে আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। নাবী [সাঃআঃ] ও আমাদের কেউ ইহরামধারী ছিলেন আর কেউ ছিলেন ইহরামবিহীন। এ সময় আমি আমার সাথী সাহাবীদেরকে দেখলাম তাঁরা একে অন্যকে কিছু দেখাচ্ছেন। আমি তাকাতেই একটি বন্য গাধা দেখিতে পেলাম। [রাবী বলেন] এ সময় তার চাবুকটি পড়ে গেল। [তিনি আনিয়ে দেয়ার কথা বললে] সকলেই বলিলেন, আমরা মুহরিম। তাই এ কাজে আমরা তোমাকে সাহায্য করিতে পারব না। অবশেষে আমি নিজেই তা উঠিয়ে নিলাম, এরপর টিলার পিছন দিক হইতে গাধাটির কাছে এসে তা শিকার করে সাহাবীদের কাছে নিয়ে আসলাম। তাহাদের কেউ বলিলেন, খাও, আবার কেউ বলিলেন, খেয়ো না। সুতরাং গাধাটি আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট নিয়ে আসলাম। তিনি আমাদের সকলের আগে ছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ খাও, এতো হালাল।
[বোখারী পর্ব ২৮ : /৪ হাঃ ১৮২৩, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪৪. আবদুল্লাহ ইবনি আবু কাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা হুদাইবিয়ার বছর [শত্রুদের তথ্য অনুসন্ধানের জন্য] বের হলেন। নাবী [সাঃআঃ]-এর সহাবীগণ ইহরাম বাঁধলেন কিন্তু তিনি ইহরাম বাঁধলেন না। নাবী [সাঃআঃ]-কে বলা হল, একটি শত্রুদল তাহাঁর সাথে যুদ্ধ করিতে চায়। নাবী [সাঃআঃ] সামনে অগ্রসর হইতে লাগলেন। এ সময় আমি তাহাঁর সহাবীদের সাথে ছিলাম। হঠাৎ দেখি যে, তারা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি করছে। আমি তাকাতেই একটি বন্য গাধা দেখিতে পেলাম। অমনিই আমি বর্শা দিয়ে আক্রমণ করে তাকে ধরাশায়ী করে ফেলি। সঙ্গীদের নিকট সহযোগিতা কামনা করলে সকলে আমাকে সহযোগিতা করিতে অস্বীকার করিল। এরপর আমরা সকলেই ঐ বন্য গাধার গোশত খেলাম। এতে আমরা নাবী [সাঃআঃ] হইতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার আশঙ্কা করলাম। তাই নাবী [সাঃআঃ]-এর সন্ধানে আমার ঘোড়াটিকে কখনো দ্রুত কখনো আস্তে চালাচ্ছিলাম। মাঝ রাতের দিকে গিফার গোত্রের এক লোকের সাথে সাক্ষাৎ হলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, নাবী [সাঃআঃ]-কে কোথায় রেখে এসেছ? সে বললো, তাহিন নামক স্থানে আমি তাঁকে রেখে এসেছি। এখন তিনি সুকয়া নামক স্থানে কায়লূলায় [দুপুরের বিশ্রামে] আছেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সহাবীগণ আপনার প্রতি সালাম পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহর রহমত কামনা করিয়াছেন। তাঁরা আপনার হইতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাই আপনি তাঁদের জন্য অপেক্ষা করুন। অতঃপর আমি পুনরায় বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি একটি বন্য গাধা শিকার করেছি। এখনো তার বাকী অংশটুকু আমার নিকট রয়েছে। নাবী [সাঃআঃ] কাওমের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা খাও। অথচ তাঁরা সকলেই তখন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৮ : /২ হাঃ ১৮২১, মুসলিম ১৫/৮, হাঃ ১১৯৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪৫.আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] হাজ্জে যাত্রা করলে তাঁরাও সকলে যাত্রা করিলেন। তাঁদের হইতে একটি দলকে নাবী [সাঃআঃ] অন্য পথে পাঠিয়ে দেন। তাঁদের মধ্যে আবু কাতাদাহ্ [রাদি.]-ও ছিলেন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা সমুদ্র তীরের রাস্তা ধরে অগ্রসর হইবে আমাদের পরস্পর সাক্ষাৎ হওয়া পর্যন্ত। তাই তাঁরা সকলেই সমুদ্র তীরের পথ ধরে চলতে থাকেন। ফিরার পথে তাঁরা সবাই ইহরাম বাঁধলেন কিন্তু আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] ইহরাম বাঁধলেন না। পথ চলতে চলতে হঠাৎ তাঁরা কতগুলো বন্য গাধা দেখিতে পেলেন। আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] গাধাগুলোর উপর হামলা করে একটি মাদী গাধাকে হত্যা করে ফেললেন। এরপর এক স্থানে অবতরণ করে তাঁরা সকলেই এর গোশত খেলেন। অতঃপর বলিলেন, আমরা তো মুহরিম, এ অবস্থায় আমরা কি শিকার্য জন্তুর গোশত খেতে পারি? তাই আমরা গাধাটির অবশিষ্ট গোশত উঠিয়ে নিলাম। তাঁরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা ইহরাম বেঁধেছিলাম কিন্তু আবু কাতাদাহ [রাদি.] ইহরাম বাঁধেননি। এ সময় আমরা কতকগুলো বন্য গাধা দেখিতে পেলাম। আবু কাতাদাহ [রাদি.] এগুলোর উপর আক্রমণ করে একটি মাদী গাধা হত্যা করে ফেললেন। এক স্থানে অবতরণ করে আমরা সকলেই এর গোশত খেয়ে নিই। এরপর বললাম, আমরা তো মুহরিম, এ অবস্থায় আমরা কি শিকারকৃত জানোয়ারের গোশত খেতে পারি? এখন আমরা এর অবশিষ্ট গোশত নিয়ে এসেছি। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমাদের কেউ কি এর উপর আক্রমণ করিতে তাকে আদেশ বা ইঙ্গিত করেছ? তাঁরা বলিলেন, না, আমরা তা করিনি। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ তাহলে বাকী গোশত তোমরা খেয়ে নাও
। [বোখারী পর্ব ২৮ : /৫ হাঃ ১৮২৪, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯. হারাম শরীফের আওতার ভিতর এবং আওতার বাইরে মুহরিম এবং অন্যান্যদের জন্য যে সমস্ত প্রাণী হত্যা করার অনুমতি আছে।
৭৪৬.আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী এত ক্ষতিকর যে, এগুলোকে হারামের মধ্যেও হত্যা করা যেতে পারে। [যেমন] কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর ও হিংস্র কুকুর।
[বোখারী পর্ব ২৮ : /৭ হাঃ ১৮২৯, মুসলিম ১৫/৯, হাঃ ১১৯৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
হাফসাহ [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী যে হত্যা করিবে তার কোন দোষ নেই। [যেমন] কাক, চিল, ইঁদুর, বিচ্ছু ও হিংস্র কুকুর।
[বোখারী পর্ব ২৮ : /৭ হাঃ ১৮২৮, মুসলিম ১৫/৯, হাঃ ১১৯৯, ১২০০] bওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ইরশাদ করেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করা মুহরিমের জন্য দূষণীয় নয়।
[বোখারী পর্ব ২৮ : /৭ হাঃ ১৮২৬, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/১০. মুহরিম ব্যক্তির মাথা মুণ্ডন করা বৈধ। এর [চুলের] মাধ্যমে যদি কষ্ট পায় এবং তার মাথা মুণ্ডনের কারণে ফিদ্য়াহ দেয়া অপরিহার্য এবং ফিদ্য়াহ আদায়ের পরিমাণের বর্ণনা।
৭৪৯. কাব ইবনি উজরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেন, বোধ হয় তোমার এই পোকাগুলো [উকুন] তোমাকে খুব তাকলীফ দিচ্ছে? তিনি বলিলেন, হাঁ, ইয়া আল্লাহর রসূল! এরপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি মাথা মুণ্ডন করে ফেল এবং তিন দিন সিয়াম পালন কর অথবা ছয়জন মিসকীনকে আহার করাও কিংবা একটা বকরী কুরবানী কর।
[বোখারী পর্ব ২৭ : /৫ হাঃ ১৮১৪, মুসলিম ১৫/১০, হাঃ ১২০১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫০. আবদুল্লাহ ইবনি মাকিল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কাব ইবনি উজরাহ-এর নিকট এই কূফার মাসজিদে বসে থাকাকালে সওমের ফিদ্য়াহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমার চেহারায় উকুন ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় আমাকে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে আনা হয়। তিনি তখন বলিলেন, আমি মনে করি যে, এতে তোমার কষ্ট হচ্ছে। তুমি কি একটি বাক্রী সংগ্রহ করিতে পার? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তুমি তিনদিন সওম পালন কর অথবা ছয়জন দরিদ্রকে খাদ্য দান কর। প্রতিটি দরিদ্রকে অর্ধ সা খাদ্য দান করিতে হইবে এবং তোমার মাথার চুল কামিয়ে ফেল। তখন আমার ব্যাপারে বিশেষভাবে আয়াত অবতীর্ণ হয়। তবে তোমাদের সকলের জন্য এই হুকুম।
[বোখারী পর্ব ৬৫ : /৩২ হাঃ ৪৫১৭, মুসলিম হাঃ] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/১১. মুহরিম ব্যক্তির শিঙ্গা লাগানো বৈধ।
৭৫১. ইবনি বুহাইনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় লাহইয়ে জামাল নামক স্থানে তাহাঁর মাথার মধ্যখানে সিঙ্গা লাগিয়েছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৮/১১ হাঃ ১৮৩৬, মুসলিম পর্ব ১৫/১১, হাঃ ১২০৩ ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/১৩. মুহরিম ব্যক্তির মাথা এবং শরীর ধৌত করা বৈধ।
৭৫২. আবু আইউব আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি হুনায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আব্ওয়া নামক জায়গায় আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] এবং মিসওয়ার ইবনি মাখরামাহ [রাদি.]-এর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল। আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, মুহরিম ব্যক্তি তার মাথা ধুতে পারবে আর মিসওয়ার [রাদি.] বলিলেন, মুহরিম তার মাথা ধুতে পারবে না। এরপর আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] আমাকে আবু আইয়ূব আনসারী [রাদি.]-এর নিকট প্রেরণ করিলেন। আমি তাঁকে কুয়া হইতে পানি উঠানো চরকার দু খুঁটির মধ্যে কাপড় ঘেরা অবস্থায় গোসল করিতে দেখিতে পেলাম। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বলিলেন, কে? বললাম, আমি আবদুল্লাহ ইব্ন হুনায়ন। মুহরিম অবস্থায় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] কিভাবে তাহাঁর মাথা ধুতেন, এ বিষয়টি জিজ্ঞেস করার জন্য আমাকে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] আপনার নিকট প্রেরণ করিয়াছেন। এ কথা শুনে আবু আইয়ুব [রাদি.] তাহাঁর হাতটি কাপড়ের উপর রাখলেন এবং সরিয়ে দিলেন। ফলে তাহাঁর মাথাটি আমি সুস্পষ্টভাবে দেখিতে পেলাম। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তিকে, যে তার মাথায় পানি ঢালছিল, বলিলেন, পানি ঢাল। সে তাহাঁর মাথায় পানি ঢালতে থাকল। অতঃপর তিনি দু হাত দিয়ে মাথা নাড়া দিয়ে হাত দুখানা একবার সামনে আনলেন আবার পেছনের দিকে টেনে নিলেন। এরপর বলিলেন, আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে এরকম করিতে দেখেছি।
[বোখারী পর্ব ২৮/১৪ হাঃ ১৮৪০, মুসলিম পর্ব ১৫/১৩, হাঃ ১২০৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/১৪. মুহরিম ব্যক্তি মারা গেলে কী করা হইবে।
৭৫৩. আবদুল্লাহ্ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আরাফাতে ওয়াকূফ অবস্থায় অকস্মাৎ তার উটনী হইতে পড়ে যায়। এতে তাহাঁর ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবী বলেছেন, তাহাঁর ঘাড় মটকে দিল। [যাতে সে মারা গেল]। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তাঁকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু কাপড়ে তাঁকে কাফন দাও। তাঁকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তাহাঁর মস্তক আবৃত করিবে না। কেননা, কিয়ামাতের দিবসে সে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উত্থিত হইবে।
[বোখারী পর্ব ২৩/২০ হাঃ ১২৬৫, মুসলিম পর্ব ১৫/১৪, হাঃ ১২০৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/১৫. অসুখ বা অন্য কোন কারণে মুহরিম ব্যক্তির ইহরাম খুলে ফেলার শর্ত করা বৈধ।
৭৫৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যুবাআহ বিনতে যুবায়র-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করিলেন- তোমার হাজ্জে যাওয়ার ইচ্ছে আছে কি? সে উত্তর দিল, আল্লাহ্র কসম! আমি খুবই অসুস্থ বোধ করছি [তবে হাজ্জে যাবার ইচ্ছে আছে] তার উত্তরে বলিলেন, তুমি হাজ্জের নিয়্যতে বেরিয়ে যাও এবং আল্লাহ্র কাছে এই শর্তারোপ করে বল, হে আল্লাহ্! যেখানেই আমি বাধাগ্রস্ত হব, সেখানেই আমি আমার ইহ্রাম শেষ করে হালাল হয়ে যাব। সে ছিল মিকদাদ ইবনি আসওয়াদের স্ত্রী।
[বোখারী পর্ব ৬৭/১৫ হাঃ ৫০৮৯, মুসলিম পর্ব ১৫ হাঃ ১২০৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/১৭. ইহরামের প্রকারভেদ, আর তা হাজ্জে ইফরাদ এবং তামাত্তু এবং ক্বিরান এবং হাজ্জ ও উমরাহ্কে যুক্ত করা বৈধ এবং হাজ্জ ক্বারেন আদায়কারী কখন তার ইহরাম থেকে হালাল হইবে।
৭৫৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বিদায় হাজ্জের সময় নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে বের হয়ে উমরাহর নিয়্যাতে ইহরাম বাঁধি। নাবী বললেনঃ যার সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে সে যেন উমরাহর সাথে হাজ্জের ইহ্রামও বেঁধে নেয়। অতঃপর সে উমরাহ ও হাজ্জ উভয়টি সম্পন্ন না করা পর্যন্ত হালাল হইতে পারবে না। {আয়েশা [রাদি.] বলেন} এরপর আমি মাক্কায় ঋতুবতী অবস্থায় পৌঁছলাম। কাজেই বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সায়ী কোনটিই আদায় করিতে সমর্থ হলাম না। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে আমার অসুবিধার কথা জানালে তিনি বললেনঃ মাথার চুল খুলে নাও এবং তা আঁচড়িয়ে নাও এবং হাজ্জের ইহ্রাম বহাল রাখ এবং উমরাহ ছেড়ে দাও। আমি তাই করলাম, হাজ্জ সম্পন্ন করার পর আমাকে নাবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.]-এর সঙ্গে তানঈম-এ প্রেরণ করেন।* সেখান হইতে আমি উমরাহর ইহ্রাম বাঁধি। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এ তোমার [ছেড়ে দেয়া] উমরাহর স্থলবর্তী। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, যাঁরা উমরাহর ইহ্রাম বেঁধেছিলেন, তাঁরা বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী সমাপ্ত করে হালাল হয়ে যান এবং মিনা হইতে ফিরে আসার পর দ্বিতীয়বার তাওয়াফ করেন আর যাঁরা হাজ্জ ও উমরাহ উভয়ের ইহরাম বেঁধেছিলেন তাঁরা একটি মাত্র তাওয়াফ করেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৩১ হাঃ ১৫৫৬, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বিদায় হজ্জের সময় বের হয়েছিলাম। আমাদের কেউ ইহরাম বেঁধেছিল উমরার আর কেউ বেঁধেছিল হজ্জের। আমরা মাক্কায় এসে পৌঁছলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ যারা উমরার ইহরাম বেঁধেছে কিন্তু কুরবানীর পশু সাথে আনেনি, তারা যেন ইহরাম খুলে ফেলে। আর যারা উমরার ইহরাম বেঁধেছে ও কুরবানীর পশু সাথে এনেছে, তারা যেন কুরবানী করা পর্যন্ত ইহরাম না খোলে। আর যারা হজ্জের ইহরাম বেঁধেছে তারা যেন হাজ্জ পূর্ণ করে। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ অতঃপর আমার হায়য শুরু হয় এবং আরাফার দিনেও তা বহাল থাকে। আমি শুধু উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম। নাবী [সাঃআঃ] আমাকে মাথার বেণী খোলার, চুল আঁচড়িয়ে নেয়ার এবং উমরাহর ইহরাম ছেড়ে হজ্জের ইহরাম বাঁধার নির্দেশ দিলেন। আমি তাই করলাম। পরে হাজ্জ সমাধান করলাম। অতঃপর আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.]-কে আমার সাথে পাঠালেন। তিনি আমাকে তানঈম হইতে আমার পূর্বের পরিত্যক্ত উমরার পরিবর্তে উমরাহ পালনের অদেশ করিলেন।
[বোখারী পর্ব ৬/১৮ হাঃ ৩১৯, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা হাজ্জের উদ্দেশেই [মদীনা হইতে] বের হলাম। সারিফ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়য আসলো। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেনঃ কী হলো তোমার? তোমার হায়য এসেছে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তাআলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ ছাড়া হাজ্জের বাকী সব কাজ করে যাও। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হইতে গাভী কুরবানী করিলেন।
[বোখারী পর্ব ৬/১ হাঃ ২৯৪, মুসলিম ১৫/১৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হাজ্জের ইহরাম বেঁধে বের হলাম, হাজ্জের মাসে এবং হাজ্জের কার্যাদি পালনের উদ্দেশ্যে। যখন সারিফ নামক স্থানে অবতরণ করলাম, তখন নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীগণকে বললেনঃ যার সাথে কুরবানীর জানোয়ার নেই এবং সে এই ইহরামকে উমরাহ্য় পরিণত করিতে চায়, সে যেন তা করে নেয় [অর্থাৎ উমরাহ করে হালাল হয়]। আর যার সাথে কুরবানীর জানোয়ার আছে সে এরূপ করিবে না। [অর্থাৎ হালাল হইতে পারবে না]। নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর কয়েকজন সমর্থ সাহাবীর নিকট কুরবানীর জানোয়ার ছিল, তাঁদের হাজ্জ উমরাহ্য় পরিণত হল না। {আয়েশা [রাদি.] বলিলেন} আমি কাঁদছিলাম, এমতাবস্থায় নাবী [সাঃআঃ] আমার নিকট এসে বললেনঃ তোমাকে কিসে কাঁদাচ্ছে? আমি বললাম, আপনি আপনার সাহাবীগণকে যা বলেছেন, আমি তা শুনিয়াছি। আমি তো উমরাহ হইতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে গেছি। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমার কী অবস্থা? আমি বললাম, আমি তো সালাত আদায় করছি না [ঋতুবতী অবস্থায়]। তিনি বললেনঃ এতে তোমার ক্ষতি হইবে না। তুমি তো আদম কন্যাদেরই একজন। তাহাদের অদৃষ্টে যা লেখা ছিল তোমার জন্যও তা লিখিত হয়েছে। সুতরাং তুমি তোমার হাজ্জ আদায় কর। সম্ভবতঃ আল্লাহ তাআলা তোমাকে উমরাহও দান করবেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি এ অবস্থায়ই থেকে গেলাম এবং পরে মিনা হইতে প্রত্যাবর্তন করে মুহাস্সাবে অবতরণ করলাম। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমান {আয়েশা [রাদি.]-এর সহোদর ভাই} [রাদি.]-কে ডেকে বললেনঃ তুমি তোমার বোনকে হারামের বাইরে নিয়ে যাও। সেখান হইতে যেন সে উমরাহর ইহ্রাম বাঁধে। অতঃপর তোমরা তাওয়াফ করে নিবে। আমি তোমাদের জন্য এখানে অপেক্ষা করব। আমরা মধ্যরাতে এলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা কি তাওয়াফ সমাধা করেছ? আমি বললাম, হাঁ। এ সময় তিনি সাহাবীগণকে রওয়ানা হওয়ার ঘোষণা দিলেন। তাই লোকজন এবং যাঁরা ফাজরের পূর্বে তাওয়াফ করেছিলেন তাঁরা রওয়ানা হলেন। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] মাদীনাহ অভিমুখে রওয়ানা হলেন।
[বোখারী পর্ব ২৬/৯ হাঃ ১৭৮৮, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বের হলাম এবং একে হাজ্জের সফর বলেই আমরা জানতাম। আমরা যখন [মাক্কায়] পৌঁছে বাইতুল্লাহ-এর তাওয়াফ করলাম তখন নাবী [সাঃআঃ] নির্দেশ দিলেনঃ যারা কুরবানীর পশু সঙ্গে নিয়ে আসেনি তারা যেন ইহরাম ছেড়ে দেয়। তাই যিনি কুরবানীর পশু সঙ্গে আনেননি তিনি ইহরাম ছেড়ে দেন। আর নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণীগণ ইহরাম ছেড়ে দিলেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি ঋতুবতী হয়েছিলাম বিধায় বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিতে পারিনি। [ফিরতি পথে] মুহাসসাব নামক স্থানে রাত যাপনকালে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! সকলেই উমরাহ ও হাজ্জ উভয়টি সমাধা করে ফিরছে আর আমি কেবল হাজ্জ করে ফিরছি। তিনি বললেনঃ আমরা মাক্কাহ পৌঁছলে তুমি কি সে দিনগুলোতে তওয়াফ করনি? আমি বললাম, জী-না। তিনি বলিলেন, তোমার ভাই-এর সাথে তান্ঈম চলে যাও, সেখান হইতে উমরাহর ইহ্রাম বাঁধবে। অতঃপর অমুক স্থানে তোমার সাথে সাক্ষাৎ ঘটবে। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ কী বললে! তুমি কি কুরবানীর দিনগুলোতে তাওয়াফ করনি! আমি বললাম, হাঁ করেছি। তিনি বললেনঃ তবে কোন অসুবিধা নেই, তুমি চল। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, এরপর নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে এমতাবস্থায় আমার সাক্ষাৎ হলো যখন তিনি মাক্কাহ ছেড়ে উপরের দিকে উঠছিলেন, আর আমি মাক্কাহ্র দিকে অবতরণ করছি। অথবা আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি উঠছি ও তিনি অবতরণ করছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৩৪ হাঃ ১৫৬১, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬০. আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে তাহাঁর সওয়ারীর পিঠে আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে বসিয়ে তানঈম হইতে উমরাহ করানোর নির্দেশ দেন।
[বোখারী পর্ব ২৬/৬ হাঃ ১৭৮৪, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬১. আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্কে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, তাহাঁর সঙ্গে তখন আরো কিছু লোক ছিল। আমরা রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণ শুধু হাজ্জের নিয়তে ইহ্রাম বেঁধেছিলাম। এর সঙ্গে উমরাহ্র নিয়ত ছিল না। বর্ণনাকারী আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, জাবির [রাদি.] বলেছেন, নাবী [সাঃআঃ] যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখ সকাল বেলায় [মাক্কাহয়] আগমন করিলেন। এরপর আমরাও যখন আগমন করলাম, তখন নাবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে ইহ্রাম খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা ইহ্রাম খুলে ফেল এবং স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হও। [রাবী] আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনা করেন, জাবির [রাদি.] বলেছেন, [স্ত্রীদের সঙ্গে যৌন সঙ্গম করা] তিনি তাহাদের উপর বাধ্যতামূলক করেননি বরং মুবাহ্ করে দিয়েছেন। এরপর তিনি অবগত হন যে, আমরা বলাবলি করছি: আমাদের ও আরাফার দিনের মাঝখানে মাত্র পাঁচদিন বাকি, তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা ইহ্রাম খুলে স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হই। তখন তো আমরা পৌঁছব আরাফায় আর আমাদের পুরুষাঙ্গ থেকে মযী ঝরতে থাকিবে। আত্বা বলেন, জাবির [রাদি.] এ কথা বোঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেছিলেন কিংবা হাত নেড়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা জান, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহ্কে অধিক ভয় করি, তোমাদের তুলনায় আমি অধিক সত্যবাদী ও নিষ্ঠাবান। আমার সঙ্গে যদি কুরবানীর পশু না থাকত, আমিও তোমাদের মত ইহরাম খুলে ফেলতাম। সুতরাং তোমরা ইহ্রাম খুলে ফেল। আমি যদি আমার কাজের পরিণাম আগে জানতাম যা পরে অবগত হয়েছি তবে আমি কুরবাণীর পশু সঙ্গে আনতাম না। অতএব আমরা ইহ্রাম খুলে ফেললাম। নাবী [সাঃআঃ]-এর নির্দেশ শুনলাম এবং তাহাঁর আনুগত্য করলাম।
[বোখারী পর্ব ৯৬/১৭ হাঃ ৭৩৬৭, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২৪০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে তাহাঁর কৃত ইহরামের উপর স্থির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুহাম্মাদ ইবনি বাক্র ইবনি জুরাইজ-আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-জাবির [রাদি.] সূত্রে আরও বর্ণনা করেন যে, জাবির [রাদি.] বলেছেনঃ আলী ইবনি আবু ত্বলিব তাহাঁর আদায়কৃত কর খুমুস নিয়ে [মাক্কায়] আসলেন। তখন নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, হে আলী! তুমি কিসের ইহ্রাম বেঁধেছ? তিনি বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] যেটির ইহ্রাম বেঁধেছেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তা হলে তুমি কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দাও এবং ইহ্রাম বাঁধা এ অবস্থায় অবস্থান করিতে থাক। বর্ণনাকারী {জাবির [রাদি.]} বলেন, সে সময় আলী [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর জন্য কুরবানীর পশু পাঠিয়েছিলেন।
[বোখারী পর্ব ৬৪/৬১ হাঃ ৪৩৫২, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ হাজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলেন। নাবী [সাঃআঃ] ও তালহা [রাদি.] ব্যতীত কারো সাথে কুরবানীর পশু ছিল না। আর আলী [রাদি.] ইয়ামান হইতে এলেন এবং তাহাঁর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। তিনি বলেছিলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যে বিষয়ে ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও তার ইহ্রাম বাঁধলাম। নাবী [সাঃআঃ] এ ইহ্রামকে উমরায় পরিণত করিতে এবং তাওয়াফ করে এরপরে মাথার চুল ছোট করে হালাল হয়ে যেতে নির্দেশ দিলেন। তবে যাদের সঙ্গে কুরবানীর জানোয়ার রয়েছে [তারা হালাল হইবে না]। তাঁরা বলিলেন, আমরা মিনার দিকে রওয়ানা হবো এমতাবস্থায় আমাদের কেউ স্ত্রীর সাথে সহবাস করে এসেছে। এ সংবাদ নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেনঃ যদি আমি এ ব্যাপারে পূর্বে জানতাম, যা পরে জানতে পারলাম, তাহলে কুরবানীর জানোয়ার সঙ্গে আনতাম না। আর যদি কুরবানীর পশু আমার সাথে না থাকত অবশ্যই আমি হালাল হয়ে যেতাম। আর আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর ঋতু দেখা দিল। তিনি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত হাজ্জের সব কাজই সম্পন্ন করে নিলেন। রাবী বলেন, এরপর যখন তিনি পাক হলেন এবং তাওয়াফ করিলেন, তখন বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আপনারা তো হাজ্জ এবং উমরাহ উভয়টি পালন করে ফিরছেন, আমি কি শুধু হাজ্জ করেই ফিরব? তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.]-কে নির্দেশ দিলেন তাকে সঙ্গে নিয়ে তানঈমে যেতে। অতঃপর যুলহাজ্জ মাসেই হাজ্জ আদায়ের পর আয়িশাহ্ [রাদি.] উমরাহ আদায় করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] যখন জামরাতুল আকাবায় কঙ্কর মারছিলেন তখন সুরাকা ইবনি মালিক ইবনি জুশুম [রাদি.]-এর নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! এ হাজ্জের মাসে উমরাহ আদায় করা কি আপনাদের জন্য খাস? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ না, এতো চিরদিনের [সকলের] জন্য।
[বোখারী পর্ব ২৬/৬ হাঃ ১৭৮৫, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২১. আরাফাহ্তে অবস্থান করা এবং আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “তখন ঐ স্থান থেকে যাত্রা কর লোকেরা যেখান থেকে যাত্রা করে।” [সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/১১৯]
৭৬৪. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
জাহিলী যুগে হুমস ব্যতীত অন্য লোকেরা উলঙ্গ অবস্থায় [বাইতুল্লাহর] তাওয়াফ করত। আর হুমস্ হলো কুরায়শ এবং তাহাদের ঔরসজাত সন্তান-সন্ততি। হুমসরা লোকেদের সেবা করে সওয়াবের আশায় পুরুষ পুরুষকে কাপড় দিত এবং সে তা পরে তাওয়াফ করত। আর স্ত্রীলোক স্ত্রীলোককে কাপড় দিত এবং এ কাপড়ে সে তাওয়াফ করত। হুমসরা যাকে কাপড় না দিত সে উলঙ্গ অবস্থায় বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করত। সব লোক আরাফা হইতে প্রত্যাবর্তন করত আর হুমসরা প্রত্যাবর্তন করত মুযদালিফা হইতে। রাবী হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার পিতা আমার নিকট আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, এ আয়াতটি হুমস সম্পর্কে নাযিল হয়েছেঃ [আরবীঃ এরপর যেখান হইতে অন্য লোকেরা প্রত্যাবর্তন করে, তোমরাও সেখান হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে] রাবী বলেন, তারা মুযদালিফাহ হইতে প্রত্যাবর্তন করত, এতে তাহাদের আরাফাহ পর্যন্ত যাবার নির্দেশ দেয়া হল।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯১ হাঃ ১৬৬৫, মুসলিম ১৫/২১, হাঃ ১২১৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬৫. জুবাইর ইবনি মুতয়িম [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার একটি উট হারিয়ে আরাফার দিনে তা তালাশ করিতে লাগলাম। তখন আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে আরাফাহ্তে উকূফ করিতে দেখলাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম! তিনি তো কুরায়শ বংশীয়। এখানে তিনি কী করছেন?
[বোখারী পর্ব ২৫/৯১ হাঃ ১৬৬৪, মুসলিম পর্ব ১৫/২১, হাঃ ১২২০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২২. ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাওয়ার বিধান রহিত এবং তা পরিপূর্ণ করার নির্দেশ।
৭৬৬. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বাতহা নামক স্থানে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম। তিনি বললেনঃ হাজ্জ সমাধা করেছ? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বললেনঃ কিসের জন্য ইহরাম বেঁধেছিলে? আমি বললাম, নাবী [সাঃআঃ]-এর মত ইহরাম বেঁধে আমি তালবিয়া পাঠ করেছি। তিনি বললেনঃ ভালই করেছ। যাও বায়তুল্লাহর তাওয়াফ কর এবং সাফা-মারওয়ার সায়ী কর। এরপর আমি বনূ কায়স গোত্রের এক মহিলার নিকট এলাম। তিনি আমার মাথার উকুন বেছে দিলেন। অতঃপর আমি হাজ্জের ইহরাম বাঁধলাম। [তখন হইতে] উমার [রাদি.]-এর খিলাফতকাল পর্যন্ত এ ভাবেই আমি লোকদের [হাজ্জ এবং উমরাহ সম্পর্কে] ফাতাওয়া দিতাম। অতঃপর তাহাঁর সঙ্গে আমি এ বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি বলিলেন, আমরা যদি আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করি তাহলে তা আমাদের পূর্ণ করার নির্দেশ দেয়। আর যদি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সুন্নতের অনুসরণ করি তাহলে তো [দেখি যে], আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] কুরবানীর জানোয়ার যথাস্থানে পৌঁছার আগে হালাল হননি।
[বোখারী পর্ব ২৫/১২৫ হাঃ ১৭২৪, মুসলিম পর্ব ১৫/২২, হাঃ ১২২১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৩. হাজ্জে তামাত্তু করা বৈধ।
৭৬৭. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তামাত্তু এর আয়াত আল্লাহ্র কিতাবে অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তা করছি এবং এর নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কুরআনের কোন আয়াত অবতীর্ণ হয়নি এবং নাবী [সাঃআঃ] ইন্তিকাল পর্যন্ত তা থেকে নিষেধও করেননি। এ ব্যাপারে এক ব্যক্তি নিজের ইচ্ছেনুযায়ী মতামত ব্যক্ত করিয়াছেন।
[বোখারী পর্ব ৬৫/৩৩ হাঃ ৪৫১৮, মুসলিম ১৫/২৩, হাঃ ১২২৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৪. হাজ্জ তামাত্তুকারীর উপর কুরবানী করা অপরিহার্য এবং এটা না করিতে পারলে হাজ্জ পালন করা অবস্থায় তিন দিন এবং বাড়ীতে ফিরার পর সাতদিন সওম পালন করিতে হইবে।
৭৬৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] হাজ্জ ও উমরাহ একসাথে পালন করিয়াছেন। তিনি হাদী পাঠান অর্থাৎ যুল-হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশন হইতে কুরবানীর জানোয়ার সাথে নিয়ে নেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] প্রথমে উমরাহর ইহ্রাম বাঁধেন, এরপর হাজ্জের ইহ্রাম বাঁধেন। সাহাবীগণ তাহাঁর সঙ্গে উমরাহর ও হাজ্জের নিয়্যাতে তামাত্তু করিলেন। সাহাবীগণের কতেক হাদী সাথে নিয়ে চললেন, আর কেউ কেউ হাদী সাথে নেননি। এরপর নাবী [সাঃআঃ] মাক্কাহ্ পৌঁছে সাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ তোমাদের মধ্যে যারা হাদী সাথে নিয়ে এসেছ, তাহাদের জন্য হাজ্জ সমাপ্ত করা পর্যন্ত কোন নিষিদ্ধ জিনিস হালাল হইবে না। আর তোমাদের মধ্যে যারা হাদী সাথে নিয়ে আসনি, তারা বাইতুল্লাহর এবং সাফা-মারওয়ার তাওয়াফ করে চুল কেটে হালাল হয়ে যাবে। এরপর হাজ্জের ইহ্রাম বাঁধবে। তবে যারা কুরবানী করিতে পারবে না তারা হাজ্জের সময় তিনদিন এবং বাড়িতে ফিরে গিয়ে সাতদিন সওম পালন করিবে। নাবী [সাঃআঃ] মাক্কাহ্ পৌঁছেই তাওয়াফ করিলেন। প্রথমে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করিলেন এবং তিন চক্কর রামল করে আর চার চক্কর স্বাভাবিকভাবে হেঁটে তাওয়াফ করিলেন। বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সম্পন্ন করে তিনি মাকামে ইব্রাহীমের নিকট দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন, সালাম ফিরিয়ে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] সাফায় আসলেন এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাত চক্কর সাঈ করিলেন। হাজ্জ সমাধা করা পর্যন্ত যা কিছু হারাম ছিল তা হালাল হয়নি। তিনি কুরবানীর দিনে হাদী কুরবানী করিলেন, সেখান হইতে এসে তিনি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করিলেন। অতঃপর তাহাঁর উপর যা হারাম ছিল সে সব কিছু হইতে তিনি হালাল হয়ে গেলেন। সাহাবীগণের মধ্যে যাঁরা হাদী সাথে নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা সেরূপ করিলেন, যেরূপ আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] করেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১০৪ হাঃ ১৬৯১, মুসলিম পর্ব ১৫/২৪ হাঃ ১২২৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] হাজ্জের সাথে উমরাহ পালন করেন এবং তাহাঁর সঙ্গে সাহাবীগণও তামাত্তু করেন, যেমনি ইব্ন উমার [রাদি.] সূত্রে পূর্বে বর্ণিত হয়েছে [হাদীসঃ ৭৬৮]।
[বোখারী পর্ব ২৫/১০৪ হাঃ ১৬৯২, মুসলিম পর্ব ১৫/২৪, হাঃ ১২২৭, ১২২৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৫. ইফরাদ হাজ্জকারী যে সময়ে হালাল হয় তার পূর্বে হাজ্জে কিরানকারী হালাল হইতে পারবে না।
৭৭০. নাবী সহধর্মিণী হাফসাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল ! লোকদের কী হল, তারা উমরাহ শেষ করে হালাল হয়ে গেল, অথচ আপনি উমরাহ হইতে হালাল হচ্ছেন না? তিনি বললেনঃ আমি মাথায় আঠালো বস্তু লাগিয়েছি এবং কুরবানীর জানোয়ারের গলায় মালা ঝুলিয়েছি। কাজেই কুরবানী করার পূর্বে হালাল হইতে পারি না।
[বোখারী পর্ব ২৫/৩৪ হাঃ ১৫৬৬, মুসলিম ১৫/২৫, হাঃ ১২২৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৬. বাধা প্রাপ্ত ব্যক্তি ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাবে এবং হাজ্জে কিরানের বৈধতা।
৭৭১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
[মাক্কাহ মুকার্রামায়] গোলযোগ চলাকালে উমরাহ্র নিয়ত করে তিনি যখন মাক্কাহর দিকে রওয়ানা হলেন, তখন বলিলেন, বাইতুল্লাহ হইতে যদি আমি বাধাপ্রাপ্ত হই তাহলে তাই করব যা করেছিলাম আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে। তাই তিনি উমরাহ্র ইহরাম বাঁধলেন। কারণ, নাবী [সাঃআঃ]-ও হুদাইবিয়ার বছর উমরাহ্র ইহরাম বেঁধেছিলেন। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] নিজের ব্যাপারে ভেবে চিন্তে বলিলেন, উভয়টিই [হাজ্জ ও উমরাহ] এক রকম। এরপর তিনি তাহাঁর সাথীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলিলেন, উভয়টি তো একই রকম। আমি তোমাদের সাক্ষী করে বলছি, আমি আমার উপর উমরাহ্র সাথে হাজ্জকে ওয়াজিব করে নিলাম। তিনি উভয়টির জন্য একই তাওয়াফ করিলেন এবং এটাই তাহাঁর পক্ষ হইতে যথেষ্ট মনে করেন, আর তিনি কুরবানীর পশু সঙ্গে নিয়েছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৭/৪ হাঃ ১৮১৩, মুসলিম পর্ব ১৫/২৬ হাঃ ১২৩০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
যে বছর হাজ্জাজ ইবনি ইউসুফ আবদুল্লাহ ইবনি যুবাইর [রাদি.]-এর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য মাক্কায় আসেন, ঐ বছর ইবনি উমার [রাদি.] হাজ্জের এরাদা করেন। তখন তাঁকে বলা হলো, [বিবাদমান দু দল] মানুষের মধ্যে যুদ্ধ হইতে পারে। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, আপনাকে তারা বাধা দিবে। তিনি বলিলেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে”- [আহযাব ২১]। কাজেই এমন কিছু হলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যা করেছিলেন আমিও তাই করব। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি উমরাহর সঙ্কল্প করলাম। এরপর তিনি বের হলেন এবং বায়দার উঁচু অঞ্চলে পৌঁছার পর তিনি বলিলেন, হাজ্জ ও উমরাহর বিধান একই, আমি তোমাদের সাক্ষী করে বলছি, আমি উমরাহর সঙ্গে হাজ্জেরও নিয়্যাত করলাম এবং তিনি কুদায়দ হইতে ক্রয় করা একটি হাদী পাঠালেন, এর অতিরিক্ত কিছু করেননি। এরপর তিনি কুরবানী করেননি এবং ইহরামও ত্যাগ করেন নি এবং মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা কোনটাই করেননি। অবশেষে কুরবানীর দিন এলে তিনি কুরবানী করিলেন, মাথা মুণ্ডালেন। তাহাঁর অভিমত হলো, প্রথম তাওয়াফ-এর মাধ্যমেই তিনি হাজ্জ ও উমরাহ উভয়ের তাওয়াফ সেরে নিয়েছেন। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এমনই করিয়াছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৭৭ হাঃ ১৬৪০, মুসলিম ১৫/২৬, হাঃ ১২৩০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৭. হাজ্জ ও উমরাহ্তে কিরান ও ইফরাদ।
৭৭৩. বাক্র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
ইবনি উমার [রাদি.]-এর কাছে এ কথা উল্লেখ করা হল, আনাস [রাদি.] লোকদের কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] হাজ্জ ও উমরার জন্য ইহ্রাম বেঁধেছিলেন। তখন ইবনি উমার [রাদি.] বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] হাজ্জের জন্য ইহ্রাম বেঁধেছেন, তাহাঁর সাথে আমরাও হাজ্জের জন্য ইহ্রাম বাঁধি। যখন আমরা মাক্কায় পৌঁছলাম তিনি বলিলেন, তোমাদের যার সঙ্গে কুরবানীর পশু নেই সে যেন তার হাজ্জের ইহ্রাম উমরার ইহ্রামে পরিণত করে। অবশ্য নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। অতঃপর আলী ইবনি আবু ত্বলিব [রাদি.] হাজ্জের উদ্দেশে ইয়ামান থেকে আসলেন। নাবী [সাঃআঃ] [তাঁকে] জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কিসের ইহ্রাম বেঁধেছ? কারণ আমাদের সাথে তোমার স্ত্রী পরিবার আছে। তিনি উত্তর দিলেন, নাবী [সাঃআঃ] যেটির ইহ্রাম বেঁধেছেন আমি সেটিরই ইহ্রাম বেঁধেছি। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে [এ অবস্থায়ই] থাক, কেননা আমাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে।
[বোখারী পর্ব ৬৪/৬১ হাঃ ৪৩৫৩-৪৩৫৪, মুসলিম পর্ব ১৫/২৭, হাঃ ১২৩১, ১২৩২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৮. যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বাঁধল তার জন্য কী কী করা অপরিহার্য, অতঃপর তাওয়াফ ও সায়ীর জন্য মাক্কায় আসল।
৭৭৪. আমর ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা ইবনি উমার [রাদি.]-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম- যে ব্যক্তি উমরাহর ন্যায় বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করেছে কিন্তু সাফা-মারওয়ায় সাঈ করে নি, সে কি তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করিতে পারবে? তিনি জবাব দিলেন, নাবী [সাঃআঃ] এসে সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিয়াছেন, মাকামে ইবরাহীমের নিকট দুরাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন আর সাফা-মারওয়ায় সাঈ করিয়াছেন। তোমাদের জন্যে আল্লাহ্র রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।
[বোখারী পর্ব ৮/৩০ হাঃ ৩৯৫, মুসলিম পর্ব ১৫/২৮, হাঃ ১২৩৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/২৯. যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বেঁধে মাক্কায় আসল তার জন্য ত্বওয়াফ ও সায়ীতে কী করা অপরিহার্য।
৭৭৫. মুহাম্মদ ইবনি আবদুর রহমান ইবনি নাওফাল কুরাশী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি উরওয়া ইবনি যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে নাবী [সাঃআঃ]-এর হাজ্জ বিষয়ে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর হাজ্জ-এর বিষয়টি আয়িশাহ্ [রাদি.] আমাকে এরূপে বর্ণনা দিয়েছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] মাক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম উযূ করে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন। তা উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। পরে আবু বাকার [রাদি.] হাজ্জ করিয়াছেন, তিনিও হাজ্জের প্রথম কাজ বাইতুল্লাহর তাওয়াফ দ্বারাই শুরু করিতেন, তা উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। তাহাঁরপর উমার [রাদি.]-ও অনুরূপ করিতেন। এরপর উসমান [রাদি.] হাজ্জ করেন। আমি তাঁকেও [হাজ্জের কাজ] বাইতুল্লাহর তাওয়াফ দ্বারাই শুরু করিতে দেখেছি, তাহাঁর এই তাওয়াফও উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। মুআবিয়া এবং আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] [অনুরূপ করেন]। এরপর আমি আমার পিতা যুবাইর ইবনি আওয়াম [রাদি.]-এর সঙ্গে হাজ্জ করলাম। তিনি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হইতেই শুরু করেন, আর তাহাঁর এ তাওয়াফ উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ [রাদি.]-কে আমি এরূপ করিতে দেখেছি। তাহাদের সে তাওয়াফও উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। সবশেষে আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-কেও অনুরূপ করিতে দেখেছি। তিনিও সে তাওয়াফ উমরাহর তাওয়াফ হিসেবে করেননি। ইবনি উমর [রাদি.] তো তাঁদের নিকটেই আছেন তাহাঁর কাছে জেনে নিন না কেন? সাহাবীগণের মধ্যে যাঁরা অতীত হয়ে গেছেন তাঁদের কেউই মাসজিদে হারামে প্রবেশ করে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সমাধান করার পূর্বে অন্য কোন কাজ করিতেন না এবং তাওয়াফ করে ইহ্রাম ভঙ্গ করিতেন না। আমার মা [আসমা] ও খালা [আয়েশা] [রাদি.]-কে দেখেছি, তাঁরা উভয়ে মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম তাওয়াফ সমাধা করেন, কিন্তু তাওয়াফ করে ইহ্রাম ভঙ্গ করেননি।
[বোখারী পর্ব ২৫/৭৮ হাঃ ১৬৪১, মুসলিম পর্ব ১৫/২৯ হাঃ ১২৩৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৭৬. আবু বাক্র [রাদি.]-এর কন্যা আসমা [রাদি.]-এর আযাদকৃত গোলাম আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
যখনই আসমা [রাদি.] হাজ্জূন এলাকা দিয়ে গমন করিতেন তখনই তাঁকে বলিতে শুনেছেন [আরবী] আল্লাহ তাহাঁর রসূলের প্রতি রহমত নাযিল করুন, এ স্থানে আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে অবতরণ করেছিলাম। তখন আমাদের বোঝা ছিল খুব অল্প, যানবাহন ছিল একেবারে নগণ্য এবং সম্বল ছিল খুবই কম। আমি, আমার বোন আয়েশা [রাদি.], যুবাইর [রাদি.] এবং অমুক অমুক উমরাহ আদায় করলাম। তারপর বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করে আমরা সকলেই হালাল হয়ে গেলাম এবং সন্ধ্যাকালে হাজ্জের ইহ্রাম বাঁধলাম
[বোখারী পর্ব ২৬/১১ হাঃ ১৭৯৬, মুসলিম পর্ব ১৫/২৯, হাঃ ১২৩৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩১. হাজ্জের মাসগুলোতে উমরাহ করা।
৭৭৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সাহাবীগণ [যুল হিজ্জার] ৪র্থ তারিখ সকালে [মাক্কায়] আগমন করেন এবং তাঁরা হাজ্জের জন্য তালবীয়া পাঠ করিতে থাকেন। অতঃপর তিনি তাঁদের হাজ্জকে উমরাহ্য় রূপান্তরিত করার নির্দেশ দিলেন। তবে যাঁদের সঙ্গে হাদী[হাজীদের যবহের জন্যে জানোয়ার] ছিল তাঁরা এ নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত নন।
[বোখারী পর্ব ১৮/৩ হাঃ ১০৮৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৩১, হাঃ ১২৪০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৭৮. আবু জামরাহ নাসর ইবনি ইমরান যুবায়ী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি তামাত্তু হাজ্জ করিতে ইচ্ছে করলে কিছু লোক আমাকে নিষেধ করিল। আমি তখন ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি তা করিতে আমাকে নির্দেশ দেন। এরপর আমি স্বপ্নে দেখলাম, যেন এক ব্যক্তি আমাকে বলছে, উত্তম হাজ্জ ও মাকবূল উমরাহ। ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট স্বপ্নটি বললাম। তিনি বলিলেন, তা নাবী [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত। এরপর আমাকে বলিলেন, তুমি আমার কাছে থাক, তোমাকে আমার মালের কিছু অংশ দিব।
রাবী শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি [আবু জামরাহকে] বললাম, তা কেন? তিনি বলিলেন, আমি যে স্বপ্ন দেখেছি সে জন্য।
[বোখারী পর্ব ২৫/৩৪ হাঃ ১৫৬৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৩১ হাঃ ১২৪২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩২. ইহরামের সময় কুরবানীর পশুর গলায় কিলাদা ঝুলানো এবং কোন চিহ্ন দিয়ে দেয়া।
৭৭৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
মুহরিম ব্যক্তি যখন বাইতুল্লাহ তওয়াফ করিল তখন সে তাহাঁর ইহ্রাম থেকে হালাল হয়ে গেল। আমি [ইবনি জুরাইজ] জিজ্ঞেস করলাম যে, ইবনি আব্বাস [রাদি.] এ কথা কী করে বলিতে পারেন? রাবী আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উত্তরে বলেন, আল্লাহ তাআলার এ কালামের দলীল থেকে যে, এরপর তার হালাল হওয়ার স্থল হচ্ছে বাইতুল্লাহ এবং নাবী [সাঃআঃ] কর্তৃক তাহাঁর সাহাবীদের হুজ্জাতুল বিদায় [এ কাজের পরে] হালাল হয়ে যাওয়ার হুকুম দেয়ার ঘটনা থেকে। আমি বললামঃ এ হুকুম তো আরাফাহ-এ উকূফ করার পর প্রযোজ্য। তখন আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর মতে উকূফে আরাফাহ্র পূর্বাপর উভয় অবস্থার জন্য এ হুকুম।
[বোখারী পর্ব ৬৪/৭৭ হাঃ ৪৩৯৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৩২, হাঃ ১২৪৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৩. উমরাহ্তে চুল ছাঁটা।
৭৮০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] ও মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি কাঁচি দিয়ে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর চুল ছোট ছোট করে দিয়েছিলাম।
[বোখারী পর্ব ২৫/১২৭ হাঃ ১৭৩০, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৩, হাঃ ১২৪৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৪. নাবী [সাঃআঃ]-এর ইহরাম বাঁধা এবং তাহাঁর কুরবানী।
৭৮১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী [রাদি.] ইয়ামান হইতে এসে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কী প্রকার ইহ্রাম বেঁধেছ? আলী [রাদি.] বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ আমার সঙ্গে কুরবানীর পশু না থাকলে আমি হালাল হয়ে যেতাম।
[বোখারী পর্ব ২৫/৩২ হাঃ ১৫৫৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৪ হাঃ ১৩৩২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৫. নাবী [সাঃআঃ]-এর উমরাহ আদায়ের সংখ্যা এবং তা আদায় করার সময়ের বর্ণনা।
৭৮২. হাম্মাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] চারটি উমরাহ করিয়াছেন। তন্মধ্যে হাজ্জের মাসে যে উমরাহ করিয়াছেন তা ছাড়া বাকী সব উমরাহই যুল-কাদা মাসে করিয়াছেন। অর্থাৎ হুদাইবিয়াহ্র উমরাহ, পরবর্তী বছরের উমরাহ, জিরানার উমরাহ, যেখানে তিনি হুনাইনের মালে গনীমত বণ্টন করেছিলেন এবং হাজ্জের মাসে আদায়কৃত উমরাহ।
[বোখারী পর্ব ২৬/৩ হাঃ ১৭৮০, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৫ হাঃ ১২৫৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৮৩. আবু ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যায়দ ইবনি আরকামের পাশে ছিলাম। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, নাবী [সাঃআঃ] কয়টি যুদ্ধ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, উনিশটি। আবার জিজ্ঞেস করা হল কয়টি যুদ্ধে তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন? তিনি বলিলেন, সতেরটিতে। বললাম, এসব যুদ্ধের কোন্টি সর্বপ্রথম সংঘটিত হয়েছিল? তিনি বলিলেন, উশায়রাহ বা উশাইর।
[বোখারী পর্ব ৬৪/১ হাঃ ৩৯৪৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৫, হাঃ ১২৫৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৮৪. যায়দ ইবনি আরকাম [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] উনিশটি যুদ্ধে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। আর হিজরাতের পর তিনি হাজ্জ আদায় করেন মাত্র একটি হাজ্জে। এরপর তিনি আর কোন হাজ্জ আদায় করেননি এবং তা হল বিদায় হাজ্জ।
[বোখারী পর্ব ৬৪/৭৭ হাঃ ৪৪০৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৫ হাঃ ১২৫৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৮৫. মুজাহিদ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও উরওয়াহ বিন যুবাইর উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর হুজরার ভিতর হইতে তাহাঁর মিসওয়াক করার আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, হে আম্মাজান, হে উম্মুল মুমিনীন! আবু আবদুর রহমান কী বলছেন, আপনি কি শুনেননি? আয়িশাহ্ [রাদি.] বলিলেন, তিনি কী বলছেন? উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, তিনি বলছেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] চারবার উমরাহ আদায় করিয়াছেন। এর মধ্যে একটি রজব মাসে। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলিলেন, আবু আবদুর রহমানের প্রতি আল্লাহ রহম করুন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এমন কোন উমরাহ আদায় করেননি যে, তিনি তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন না। কিন্তু আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] রজব মাসে কখনো উমরাহ আদায় করেননি।
[বোখারী পর্ব ২৬/৩ হাঃ ১৭৭৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৫, হাঃ ১২৫৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৬. রমাযান মাসে উমরাহ পালনের ফাযীলাত।
৭৮৬. ইবনি আ.স [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূল [সাঃআঃ] এক আনসারী মহিলাকে বললেনঃ আমাদের সঙ্গে হাজ্জ করিতে তোমার বাধা কিসের? ইবনি আব্বাস [রাদি.] মহিলার নাম বলেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গেছি। মহিলা বলিল, আমাদের একটি পানি বহনকারী উট ছিল। কিন্তু তাতে অমুকের পিতা ও তার পুত্র [অর্থাৎ মহিলার স্বামী ও ছেলে] আরোহণ করে চলে গেছেন। আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট যার দ্বারা আমরা পানি বহন করে থাকি। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আচ্ছা, রমাযান এলে তখন উমরাহ করে নিও। কেননা, রমযানের একটি উমরাহ একটি হাজ্জের সমতুল্য। অথবা এরূপ কোন কথা তিনি বলেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৬/৪ হাঃ ১৭৮২, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৬, হাঃ ১২৫৬] ওমরা . জের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৭. মাক্কাহ্তে সানীয়াহ উলিয়াহ দিয়ে প্রবেশ করা এবং এটা [মাক্কাহ] থেকে সানীয়াহ সুফলা দিয়ে বের হওয়া এবং দেশে বিপরীত রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা মুস্তাহাব।
৭৮৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] [হাজ্জের সফরে] শাজারা নামক পথ দিয়ে গমন করিতেন এবং মুআররাস নামক পথ দিয়ে [মাদীনায়] প্রবেশ করিতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৫ হাঃ ১৫৩৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৭ হাঃ ১২৫৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৮৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] সানিয়্যাতুল উলয়া [হারামের উত্তর-পূর্বদিকে কাদা নামক স্থান দিয়ে] মাক্কায় প্রবেশ করিতেন এবং সানিয়্যাহ সুফলা [হারামের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে কুদা নামক স্থান] দিয়ে বের হইতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪০ হাঃ ১৫৭৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৭ হাঃ ১২৫৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৮৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যখন মাক্কায় আসেন তখন এর উচ্চ স্থান দিয়ে প্রবেশ করেন এবং নীচু স্থান দিয়ে ফিরার পথে বের হন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪১ হাঃ ১৫৭৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৭ হাঃ ১২৫৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৯০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] মাক্কাহ্ বিজয়ের বছর কাদা-র পথে [মাক্কায়] প্রবেশ করেন এবং বের হন কুদা-র পথে যা মাক্কাহ্র উঁচু স্থানে অবস্থিত।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪১ হাঃ ১৫৭৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৭ হাঃ ১২৫৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৮. মাক্কাহ্তে প্রবেশের ইচ্ছে করলে যী-তুয়া উপত্যকায় রাত্রি যাপন করা এবং গোসল করে প্রবেশ করা এবং দিনের বেলায় প্রবেশ করা মুস্তাহাব।
৭৯১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ভোর পর্যন্ত যী-তুয়ায় রাত যাপন করেন, অতঃপর মাক্কাহয় প্রবেশ করেন। [রাবী নাফি বলেন] ইবনি উমার [রাদি.]-ও এরূপ করিতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৩৯ হাঃ ১৫৭৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৮ হাঃ ১২৫৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৯২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যূ-তুওয়ায় অবতরণ করিতেন এবং এখানেই রাত যাপন করিতেন আর মাক্কায় আসার পথে এখানেই ফাজরের সালাত আদায় করিতেন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সালাত আদায়ের সেই স্থানটা ছিল একটা বড় টিলার উপরে। যেখানে মাসজিদ নির্মিত হয়েছে, সেখানে নয় বরং তার নীচে একটা বড় টিলার উপর।
[বোখারী পর্ব ৮/৮৯ হাঃ ৪৯১, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৮ হাঃ ১২৫৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৯৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] পাহাড়ের দুটো প্রবেশপথ সামনে রাখতেন যা তার ও দীর্ঘ পাহাড়ের মাঝখানে কাবার দিকে রয়েছে। বর্তমানে সেখানে যে মাসজিদ নির্মিত হয়েছে, সেটিকে তিনি {ইবনি উমার [রাদি.]} টিলার প্রান্তের মাসজিদটির বাম পাশে রাখতেন। কিন্তু নাবী [সাঃআঃ]-এর সালাতের জায়গা ছিল এর নীচের কাল টিলার উপরে। এটি প্রথম টিলা হইতে প্রায় দশ হাত দূরে। অতঃপর যে পাহাড়টি তোমার ও কাবার মাঝখানে পড়বে তার দুপ্রবেশ দ্বারের দিকে মুখ করে তুমি সালাত আদায় করিবে।
[বোখারী পর্ব ৮/৮৯ হাঃ ৪৯২, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৮, হাঃ ১২৫৯, ১২৬০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৩৯. উমরার ও ত্বওয়াফে এবং হাজ্জের প্রথম ত্বওয়াফে রমল করা মুস্তাহাব।
৭৯৪. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বায়তুল্লাহ পৌঁছে প্রথম তাওয়াফ করার সময় প্রথম তিন চক্করে রামল করিতেন এবং পরবর্তী চার চক্করে স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে চলতেন। সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করার সময় উভয় টিলার মধ্যবর্তী নিচু স্থানটুকু দ্রুতগতিতে চলতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৬৩ হাঃ ১৬১৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৯ হাঃ ১২৬১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৯৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] সাহাবাগণকে নিয়ে মাক্কাহ্ আগমন করলে মুশরিকরা মন্তব্য করিল, এমন একদল লোক আসছে যাদেরকে ইয়াস্রিব [মাদীনাহ্]র জ্বর দুর্বল করে দিয়েছে [এ কথা শুনে] নাবী [সাঃআঃ] সাহাবাগণকে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রামল করিতে [উভয় কাঁধ হেলে দুলে জোর কদমে চলতে] এবং উভয় রুকনের মধ্যবর্তী স্থানটুকু স্বাভাবিক গতিতে চলতে নির্দেশ দিলেন, সাহাবীদের প্রতি দয়াবশত সব কটি চক্করে রামল করিতে আদেশ করেননি।
[বোখারী পর্ব ২৫/৫৫ হাঃ ১৬০২, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৯, হাঃ ১২৬৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৯৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] মুশরিকদেরকে নিজ শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশে বাইতুল্লাহর তাওয়াফে ও সাফা ও মারওয়ার মধ্যেকার সাঈতে দ্রুত চলেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৮০ হাঃ ১৬৪৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৯, হাঃ ১২৬৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪০. ত্বওয়াফ করার সময় রুকনে ইয়ামানীদ্বয়কে স্পর্র্শ করা এবং অপর দুটি রুকন স্পর্শ না করা মুস্তাহাব।
৭৯৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন হইতে রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে [তাওয়াফ করার সময়] এ দুটি রুকন ইসতিলাম [চুমু] করিতে দেখেছি, তখন হইতে ভীড় থাকুক বা নাই থাকুক কোন অবস্থাতেই এ দু-এর ইসতিলাম [চুমু] করা বাদ দেইনি।
[বোখারী পর্ব ২৫/৫৭ হাঃ ১৬০৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৪০, হাঃ ১২৬৮, আহমাদ ৪৮৮৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৭৯৮. আবুশ-শাসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কে আছে বায়তুল্লাহর কোন অংশ [কোন রুকনের ইস্তিলাম] ছেড়ে দেয়; মুআবিয়াহ [রাদি.] [চার] রুকনের ইস্তিলাম করিতেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, আমরা এ দুরুকন-এর চুম্বন করি না।
[বোখারী পর্ব ২৫/৫৯ হাঃ ১৬০৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৪০ হাঃ ১২৭২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪১. ত্বওয়াফকালে কালো পাথরে চুম্বন দেয়া মুস্তাহাব।
৭৯৯. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি হাজ্রে আসওয়াদের কাছে এসে তা চুম্বন করে বলিলেন, আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র, তুমি কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ করিতে পার না। নাবী [সাঃআঃ]-কে তোমায় চুম্বন করিতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না।
[বোখারী পর্ব ২৫/৫০ হাঃ ১৫৯৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৪১, হাঃ ১২৭০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪২. উট বা অন্যান্য যানবাহনে আরোহণ করে তাওয়াফ করা এবং আরোহণকারীর জন্য লাঠি বা অন্য কিছুর মাধ্যমে কালো পাথর স্পর্শ করা বৈধ।
৮০০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সময় নাবী [সাঃআঃ]-এর উটের পিঠে আরোহণ করে তাওয়াফ করার সময় ছড়ির মাধ্যমে হাজ্রে আসওয়াদ চুম্বন করেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৫৮ হাঃ ১৬০৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৪২, হাঃ ১২৭২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮০১. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এর নিকট [বিদায় হজ্জে] আমার অসুস্থতার কথা জানালে তিনি বললেনঃ সওয়ার হয়ে লোকদের হইতে দূরে থেকে তওয়াফ কর। আমি তওয়াফ করলাম। আর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বাইতুল্লাহর পাশে [আ-রবী] তিলাওয়াত করে সালাত আদায় করছিলেন।
[বোখারী পর্ব ৮/৭৮ হাঃ ৪৬৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৪২, হাঃ ১২৭৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪৩. সাফা এবং মারওয়ায় সাঈ [দৌড়াদৌড়ি] করা হাজ্জের রুকন্- এটা পালন না করলে হাজ্জ বিশুদ্ধ না হওয়ার বর্ণনা।
৮০২. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বাল্যকালে একদা নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে বললাম, আল্লাহর বাণীঃ “সাফা ও মারওয়াহ আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। সুতরাং যে কাবা গৃহের হাজ্জ কিংবা উমরাহ সম্পন্ন করে এ দুটির মধ্যে সায়ী করিতে চায়, তার কোন গুনাহ্ নেই”- [আল-বাকারাহঃ ১৫৮]। তাই সাফা-মারওয়াহ্র সায়ী না করা আমি কারো পক্ষে অপরাধ মনে করি না। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, বিষয়টি এমন নয়। কেননা, তুমি যেমন বলছ, ব্যাপারটি তেমন হলে আয়াতটি অবশ্যই এমন হতঃ “সাফা ও মারওয়াহ্ আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। সুতরাং যে কাবা গৃহের হাজ্জ কিংবা উমরাহ সম্পন্ন করে এ দুটির মধ্যে সায়ী করে, তার কোন পাপ নেই”- [আল-বাকারাদি. ১৫৮]। অর্থাৎ এ দুটির মাঝে তাওয়াফ করলে কোন পাপ নেই। এ আয়াত তো আনসারদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। কেননা তারা মানাতের জন্য ইহ্রাম বাঁধত। আর মানাত কুদায়দের সামনে ছিল। তাই আনসাররা সাফা-মারওয়া তাওয়াফ করিতে দ্বিধাবোধ করত। এরপর ইসলামের আবির্ভাবের পর তারা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেনঃ সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। সুতরাং যে কাবা গৃহের হাজ্জ কিংবা উমরাহ করিতে চায় তার জন্য এ দুটির মধ্যে সায়ী করায় কোন গুনাহ্ নেই
[বোখারী পর্ব ২৬/১০ হাঃ ১৭৯০, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৩ হাঃ ১২৭৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮০৩. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? “সাফা ও মারওয়াহ আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। কাজেই যে কেউ কাবা ঘরে হাজ্জ বা উমরাহ সম্পন্ন করে, এ দুটির মাঝে যাতায়াত করলে তার কোন দোষ নেই”- [আল-বাকারাহঃ ১৫৮]। [আমার ধারণা যে] সাফা-মারওয়াহর মাঝে কেউ সাঈ না করলে তার কোন দোষ নেই। তখন তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলিলেন, ওহে বোনপো! তুমি যা বললে, তা ঠিক নয়। কেননা, যা তুমি তাফসীর করলে, যদি আয়াতের মর্ম তা-ই হতো, তাহলে আয়াতের শব্দ বিন্যাস এভাবে হতো [আরবী]- “দুটোর মাঝে সাঈ না করায় কোন দোষ নেই।” কিন্তু আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুশাল্লাল নামক স্থানে স্থাপিত মানাত নামের মূর্তির পূজা করত, তার নামেই তারা ইহরাম বাঁধত। সে মূর্তির নামে যারা ইহরাম বাঁধত তারা সাফা-মারওয়াহ সাঈ করাকে দোষাবহ মনে করত। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! পূর্বে আমরা সাফা ও মারওয়া সাঈ করাকে দোষাবহ মনে করতাম [এখন কী করবো?] এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তাআলা [আরবী] অবতীর্ণ করেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, [সাফা ও মারওয়ার মাঝে] উভয় পাহাড়ের মাঝে সাঈ করা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]র বিধান দিয়েছেন। কাজেই কারো পক্ষে এ দুয়ের সাঈ পরিত্যাগ করা ঠিক নয়। [রাবী বলেন] এ বছর আবু বাকার ইবনি আবদুর রহমান [রাদি.]-কে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বলিলেন, আমি তো এ কথা শুনিনি, তবে আয়িশাহ্ [রাদি.] ব্যতীত বহু আলিমকে উল্লেখ করিতে শুনিয়াছি যে, মানাতের নামে যারা ইহরাম বাঁধত তারা সকলেই সাফা ও মারওয়া সায়ী করত, যখন আল্লাহ কুরআনে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা উল্লেখ করিলেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার আলোচনা তাতে হলো না, তখন সাহাবাগণ বলিতে লাগলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমরা সাফা ও মারওয়া সাঈ করতাম, এখন দেখি আল্লাহ কেবল বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা অবতীর্ণ করিয়াছেন, সাফার উল্লেখ করেননি। কাজেই সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ী করলে আমাদের দোষ হইবে কি? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেন¬ [আরবী] আবু বাক্র [রাদি.] আরো বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, আয়াতটি দু প্রকার লোকদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করেই অবতীর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ যারা জাহিলী যুগে সাফা ও মারওয়া সাঈ করা হইতে বিরত থাকতেন, আর যারা তৎকালে সায়ী করত বটে, কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর সায়ী করার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের দ্বিধার কারণ ছিল আল্লাহ বাইতুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার কথা উল্লেখ করেননি? অবশেষে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা আলোচনা করার পর আল্লাহ সাফা ও মারওয়া সাঈ করার কথা উল্লেখ করেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৭৯ হাঃ ১৬৪৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৩, হাঃ ১২৭৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮০৪. আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বললাম, আপনারা কি সাফা ও মারওয়া সাঈ করিতে অপছন্দ করিতেন? তিনি বলিলেন, হাঁ। কেননা তা ছিল জাহিলী যুগের নিদর্শন। অবশেষে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেনঃ
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا
“নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন। কাজেই হাজ্জ বা উমরাহকারীদের জন্য এ দুইয়ের মধ্যে সাঈ করায় কোন দোষ নেই”-
[আল-বাকারাদি. ১৫৮]। [বোখারী পর্ব ২৫/৮০ হাঃ ১৬৪৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৩, হাঃ ১২৭৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪৫. হাজীদের জন্য তালবিয়া পাঠ জারী রাখা মুস্তাহাব এবং কুরবানীর দিন জামরায়ে আকাবায় পাথর নিক্ষেপ পর্যন্ত।
৮০৫. উসামাহ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আরাফাহ হইতে সওয়ারীতে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর পেছনে আরোহণ করলাম। মুযদালিফার নিকটবর্তী বামপার্শ্বের গিরিপথে পৌঁছলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর উটটি বসালেন। এরপর পেশাব করে আসলেন। আমি তাঁকে উযূর পানি ঢেলে দিলাম। আর তিনি হালকাভাবে উযূ করে নিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! সালাত? তিনি বললেনঃ সালাত তোমার আরো সামনে। এ কথা বলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] সওয়ারীতে আরোহণ করে মুযদালিফাহ আসলেন এবং সালাত আদায় করিলেন। মুযদালিফার ভোরে ফযল {ইবনি আব্বাস [রাদি.]} আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর পিছনে আরোহণ করিলেন। কুরাইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] ফযল [রাদি.] হইতে আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] জামরায় পৌঁছা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করিতে থাকতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৩ হাঃ ১৬৬৯, মুসলিম কিতাবুল হাজ্জ ১৫/৪৫, হাঃ ১২৮০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪৬. আরাফাহ্র দিন মীনা থেকে আরাফাহ্র ময়দানে যাওয়ার সময় তালবীয়াহ ও তাকবীর পাঠ।
৮০৬. মুহাম্মদ ইবনি আবু বাক্র সাকাফী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সকাল বেলা মিনা হইতে যখন আরাফাতের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-এর নিকট তালবিয়াহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কিরূপ করিতেন? তিনি বলিলেন, তাল্বিয়াহ পাঠকারী তালবিয়াহ পড়ত, তাকে নিষেধ করা হতো না। তাক্বীর পাঠকারী তাক্বীর পাঠ করত, তাকেও নিষেধ করা হতো না
। [বোখারী পর্ব ১৩/১২ হাঃ ৯৭০, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৬, হাঃ ১২৮৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪৭. আরাফাহ্ থেকে মুজদালিফা গমন এবং সেই রাত্রিতে মুজদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে পড়া মুস্তাহাব।
৮০৭. উসামাহ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আরাফাহর ময়দান হইতে রওনা হলেন এবং উপত্যকায় পৌঁছে নেমে তিনি পেশাব করিলেন। অতঃপর উযূ করিলেন কিন্তু উত্তমরূপে উযূ করিলেন না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! সালাত আদায় করবেন কি? তিনি বললেনঃ সালাতের স্থান তোমার সামনে। অতঃপর তিনি আবার সওয়ার হলেন। অতঃপর মুযদালিফায় এসে সওয়ারী থেকে নেমে উযূ করিলেন। এবার পূর্ণরূপে উযূ করিলেন। তখন সালাতের জন্য ইক্বামাত দেয়া হল। তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর সকলে তাহাদের অবতরণস্থলে নিজ নিজ উট বসিয়ে দিল। পুনরায় ইশার ইকামাত দেয়া হল। অতঃপর তিনি ঈশার সালাত আদায় করিলেন এবং উভয় সালাতের মধ্যে অন্য কোন সালাত আদায় করিলেন না।
[বোখারী পর্ব ৪/৬ হাঃ ১৩৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৫, হাঃ ১২৮০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮০৮. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উসামাহ [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করা হলো, তখন আমি সেখানে উপবিষ্ট ছিলাম, বিদায় হাজ্জের সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যখন আরাফাহ হইতে ফিরতেন তখন তাহাঁর চলার গতি কেমন ছিল? তিনি বলিলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] দ্রুতগতিতে চলতেন এবং যখন পথ মুক্ত পেতেন তখন তার চেয়েও দ্রুতগতিতে চলতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯২ হাঃ ১৬৬৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৭, হাঃ ১২৮৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮০৯. আবু আইয়ুব আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বিদায় হাজ্জের সময় মুযদালিফাহ্য় মাগরিব এবং ইশা একত্রে আদায় করিয়াছেন
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৬ হাঃ ১৬৭৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৭, হাঃ ১২৮৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮১০. সালিম বিন আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যখন দ্রুত সফর করিতেন তখন মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করিতেন।
[বোখারী পর্ব ১৮/১৩ হাঃ ১১০৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৭ হাঃ ৭০৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪৮. কুরবানীর দিন মুজদালিফায় ফাজ্রের সালাত বেশী অন্ধকারে পড়া মুস্তাহাব। ফাজ্র উদিত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করাটাও মুস্তাহাব।
৮১১. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে দুটি সালাত ব্যতীত আর কোন সালাত তার নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত আদায় করিতে দেখিনি। তিনি মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করিয়াছেন এবং ফাজরের সালাত তার ওয়াক্তের আগে আদায় করিয়াছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৯ হাঃ ১৬৮২, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৮, হাঃ ১২৮৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৪৯. রাত্রির শেষভাগে লোকেদের ভিড়ের পূর্বে দুর্বল এবং বয়স্ক মহিলা ও অন্যদের মুজদালিফা থেকে মিনায় পাঠিয়ে দেয়া মুস্তাহাব এবং অন্যান্যদের ফাজ্রের সালাত আদায় পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা মুস্তাহাব।
৮১২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মুযদালিফায় অবতরণ করলাম। মানুষের ভিড়ের আগেই রওয়ানা হওয়ার জন্য সওদা [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে অনুমতি চাইলেন। আর তিনি ছিলেন ধীরগতি মহিলা। নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে অনুমতি দিলেন। তাই তিনি লোকের ভিড়ের আগেই রওয়ানা হলেন। আর আমরা সকাল পর্যন্ত সেখানেই রয়ে গেলাম। এরপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] রওয়ানা হলেন, আমরা তাহাঁর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। সওদার মত আমিও যদি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট অনুমতি চেয়ে নিতাম তাহলে তা আমার জন্য হইতে অধিক সন্তুষ্টির ব্যাপার হতো।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৮ হাঃ ১৬৮১, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৯ হাঃ ১২৯০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮১৩. আসমা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি মুযদালিফার রাতে মুযদালিফার কাছাকাছি স্থানে পৌঁছে সালাতে দাঁড়ালেন এবং কিছুক্ষণ সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর বলিলেন, হে বৎস! চাঁদ কি অস্তমিত হয়েছে? আমি বললাম, না। তিনি আরো কিছুক্ষণ সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর বলিলেন, হে বৎস! চাঁদ কি ডুবেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, চল। আমরা রওয়ানা হলাম এবং চললাম। পরিশেষে তিনি জামরায় কঙ্কর মারলেন এবং ফিরে এসে নিজের অবস্থানের জায়গায় ফজরের সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর আমি তাঁকে বললাম, হে মহিলা! আমার মনে হয়, আমরা বেশি অন্ধকার থাকতেই আদায় করে ফেলেছি। তিনি বলিলেন, বৎস! আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] মহিলাদের জন্য এর অনুমতি দিয়েছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৮ হাঃ ১৬৭৯, মুসলিম ১৫/৪৯, হাঃ ১২৯১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮১৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] মুযদালিফার রাতে তাহাঁর পরিবারের যে সব লোককে এখানে পাঠিয়েছিলেন, আমি তাঁদের একজন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৮ হাঃ ১৬৭৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৯ হাঃ ১২৯৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮১৫. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] তাহাঁর পরিবারের দুর্বল লোকদের আগেই পাঠিয়ে দিয়ে রাতে মুযদালিফাতে মাশআরে হারামের নিকট উকূফ করিতেন এবং সাধ্যমত আল্লাহর যিকর করিতেন। অতঃপর ঈমাম [মুযদালিফায়] উকূফ করার ও রওয়ানা হওয়ার আগেই তাঁরা [মিনায়] ফিরে যেতেন। তাঁদের মধ্যে কেউ মিনাতে আগমন করিতেন ফজরের সালাতের সময় আর কেউ এরপরে আসতেন, মিনাতে এসে তাঁরা কঙ্কর মারতেন। ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন, তাহাদের জন্য রসূল [সাঃআঃ] কড়াকড়ি শিথিল করে সহজ করে দিয়েছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৯৮ হাঃ ১৬৭৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৪৯, হাঃ ১২৯৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫০. বাতনে ওয়াদী থেকে জামরাতুল আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপ কালে মাক্কাহ্কে বাম দিকে রাখা এবং প্রত্যেকবার কঙ্কর নিক্ষেপ করার সময় তাকবীর বলা।
৮১৬. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.] বাতন ওয়াদী হইতে কঙ্কর মারেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, হে আবু আবদুর রহমান! লোকেরা তো এর উচ্চস্থান হইতে কঙ্কর মারে। তিনি বলিলেন, সে সত্তার কসম! যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, এটা সে স্থান, যেখানে সূরা আল-বাকারাহ নাযিল হয়েছে।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৩৫ হাঃ ১৭৪৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৫০, হাঃ ১২৯৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮১৭. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে মিম্বরের উপর এরূপ বলিতে শুনিয়াছি, যে সূরার মধ্যে বাকারাহর উল্লেখ রয়েছে, সে সূরার মধ্যে আলু ইমরানের উল্লেখ রয়েছে এবং যে সূরার মধ্যে নিসা-এর উল্লেখ রয়েছে অর্থাৎ সে সূরা আল-বাকারাহ, সূরা আলু ইমরান ও সূরা আন-নিসা বলা পছন্দ করতো না। বর্ণনাকারী আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ ব্যাপারটি আমি ইবরাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বললাম। তিনি বলিলেন, আমার কাছে আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন যে, জামরায়ে আকাবাতে কংকর মারার সময় তিনি ইবনি মাস্উদ [রাদি.]-এর সঙ্গে ছিলেন। ইবনি মাসউদ [রাদি.] বাতনে ওয়াদীতে গাছটির বরাবর এসে জামরাকে সামনে রেখে দাঁড়ালেন এবং তাকবীর সহকারে কঙ্কর মারলেন। এরপর বলিলেন, সে সত্তার কসম যিনি ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, এ স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি, যাঁর উপর নাযিল হয়েছে সুরা বাকারাহ [অর্থাৎ সূরা বাকারাহ বলা বৈধ]।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৩৮ হাঃ ১৭৫০, মুসলিম পর্ব ১৫/৫০ হাঃ ১২৯৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫৫. চুল ছাঁটার উপর মাথা মুণ্ডন করাকে প্রাধান্য দেয়া এবং চুল ছাঁটার বৈধতা প্রসঙ্গে।
৮১৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] হাজ্জের সময় তাহাঁর মাথা কামিয়েছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১২৭ হাঃ ১৭২৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৫, হাঃ ১৩০৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮১৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
اللهُمَّ ارْحَمِ الْمُحَلِّقِينَ
হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি রহম করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! যারা মাথার চুল ছোট করেছে তাহাদের প্রতিও। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি রহম করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! যারা চুল ছোট করেছে তাহাদের প্রতিও। এবার আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ যারা চুল ছোট করেছে তাহাদের প্রতিও
। [বোখারী পর্ব ২৫/১২৭ হাঃ ১৭২৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৫, হাঃ ১৩০২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮২০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
اللهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُحَلِّقِينَ
হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের ক্ষমা করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, যারা মাথার চুল ছোট করেছে তাহাদের প্রতিও। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদেরকে ক্ষমা প্রদর্শন করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, যারা চুল ছোট করেছে তাহাদের প্রতিও। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কথাটি তিনবার বলিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ যারা চুল ছোট করেছে তাহাদের প্রতিও।
[বোখারী পর্ব ২৫/১২৭ হাঃ ১৭২৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৫, হাঃ ১৩০২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫৬. কুরবানীর দিন সুন্নাত কাজ হল সর্বপ্রথম কঙ্কর নিক্ষেপ করা, অতঃপর কুরবানী করা, অতঃপর মাথা মুণ্ডন করা এবং মাথার চুল মুণ্ডন করার ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে শুরু করা।
৮২১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর মাথা মুণ্ডন করলে আবু তলহা [রাদি.]-ই প্রথমে তাহাঁর চুল সংগ্রহ করেন।
[বোখারী পর্ব ৪/৩৩ হাঃ ১৭১, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৬, হাঃ ১৩০৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫৭. যে ব্যক্তি কুরবানী করার পূর্বেই মাথা মুণ্ডন করিল অথবা কঙ্কর নিক্ষেপ করার পূর্বেই।
৮২২. আবদুল্লাহ ইবনি আমর বিন আস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
বিদায় হাজ্জের সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] [সাওয়ারীতে] অবস্থান করছিলেন, তখন সাহাবীগণ তাঁকে জিজ্ঞেস করিতে লাগলেনঃ একজন জিজ্ঞেস করিলেন, আমি জানতাম না, তাই কুরবানী করার আগেই [মাথা] কামিয়ে ফেলেছি। তিনি ইরশাদ করলেনঃ তুমি কুরবানী করে নাও, কোন দোষ নেই। অতঃপর অপর একজন এসে বলিলেন, আমি না জেনে কঙ্কর মারার পূর্বেই কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি ইরশাদ করলেনঃ কঙ্কর মেরে নাও, কোন দোষ নেই। সেদিন যে কোন কাজ আগে পিছে করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ করে নাও, কোন দোষ নেই।
[বোখারী পর্ব ৩/২৩ হাঃ ১৭৩৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৭ হাঃ ১৩০৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮২৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-কে যবহ করা, মাথা কামান ও কঙ্কর মারা এবং [এ কাজগুলো] আগে-পিছে করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৩০ হাঃ ১৭৩৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৭ হাঃ ১৩০৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫৮. কুরবানীর দিন ত্বওয়াফে ইসলামিক ফাউন্ডেশনযাহ করা মুস্তাহাব হওয়ার বর্ণনা।
৮২৪. আবদুল আযীয ইবনি রুফাই [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী [সাঃআঃ] সম্পর্কে আপনি যা উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছেন তার কিছুটা বলুন। বলুন, যিলহাজ্জ মাসের আট তারিখে যুহর ও আসরের সালাত তিনি কোথায় আদায় করিতেন? তিনি বলিলেন, মিনায়। আমি বললাম, মিনা হইতে ফিরার দিন আসরের সালাত তিনি কোথায় আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, মুহাস্সাবে। এরপর আনাস [রাদি.] বলিলেন, তোমাদের আমীরগণ যেরূপ করিবে, তোমরাও অনুরূপ কর।
[বোখারী পর্ব ২৫/৮৩ হাঃ ১৬৫৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৮, হাঃ ১৩০৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৫৯. প্রস্থান করার দিন মুহাস্সাবে অবতরণ করা এবং সালাত আদায় করা মুস্তাহাব।
৮২৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তা হল একটি মানযিল মাত্র, যেখানে নাবী [সাঃআঃ] অবতরণ করিতেন, যাতে বেরিয়ে যাওয়া সহজতর হয় অর্থাৎ এর দ্বারা আবতাহ বুঝানো হয়েছে।
[বোখারী পর্ব ৩৫/১৪৭ হাঃ ১৭৬৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৯, হাঃ ১৩১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮২৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাস্সাবে অবতরণ করা [হজ্জের] কিছুই নয়। এ তো শুধু একটি মানযিল, যেখানে নাবী [সাঃআঃ] অবতরণ করেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৪৭ হাঃ ১৭৬৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৯, হাঃ ১৩১২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮২৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরবানীর দিনে মিনায় অবস্থানকালে নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আমরা আগামীকাল [ইনশাআল্লাহ] খায়ফে বনী কিনানায় অবতরণ করব, যেখানে তারা কুফরীর উপরে শপথ নিয়েছিল। [রাবী বলেন] খায়ফ বনী কিনানাই হলো মুহাস্সাব। কুরায়শ ও কিনানা গোত্র বনূ হাশিম ও বনূ আবদুল মুত্তালিব-এর বিরুদ্ধে এ বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল, যে পর্যন্ত নাবী [সাঃআঃ]-কে তাহাদের হাতে সমর্পণ না করিবে সে পর্যন্ত তাহাদের সাথে বিয়ে-শাদী ও বেচা-কেনা বন্ধ থাকিবে।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪৫ হাঃ ১৫৯০, মুসলিম পর্ব ১৫/৫৯, হাঃ ১৩১৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬০. আইয়ামে তাশরীকের রাত্রিগুলো মীনায় অতিবাহিত করা ওয়াজিব তবে যারা [হাজীদের] পানি পান করায় তাহাদের জন্য এ ব্যাপারে শিথিলতা আছে।
৮২৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট হাজীদের পানি পান করানোর উদ্দেশে মিনায় অবস্থানের রাতগুলো মাক্কায় কাটানোর অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে অনুমতি দেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/৭৫ হাঃ ১৬৩৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৬০, হাঃ ১৩১৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬১. কুরবানীর প্রাণীর গোশ্ত, চামড়া ও তার শীতাবরণ সদাকাহ করা।
৮২৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তাঁকে নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর নিজের কুরবানীর জানোয়ারের পাশে দাঁড়াতে আর এগুলোর সমুদয় গোশ্ত, চামড়া এবং পিঠের আবরণসমূহ বিতরণ করিতে নির্দেশ দেন এবং তা হইতে যেন কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছুই না দেয়া হয়।
[বোখারী পর্ব ২৫/১২১ হাঃ ১৭১৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৬১ হাঃ ১৩১৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬৩. বুদনা [উট] বেঁধে দাঁড়ান অবস্থায় নাহার করা।
৮৩০. যিয়াদ ইবনি জুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি উমার [রাদি.]-কে দেখেছি যে, তিনি আসলেন এমন এক ব্যক্তির নিকট, যে তার নিজের উটটিকে নহর করার জন্য বসিয়ে রেখেছিল। ইবনি উমার [রাদি.] বলিলেন, সেটি উঠিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় বেঁধে নাও। [এটা] মুহাম্মদ [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত।
[বোখারী পর্ব ২৫/১১৮ হাঃ ১৭১৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৩ হাঃ ১৩২০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬৪. যে ব্যক্তি নিজে যাবে না তার কুরবানী হারাম শরীফে পাঠিয়ে দেয়া মুস্তাহাব এবং এতে মুস্তাহাব হল [কুরবানীর প্রাণীর গলায়] রশি পাকিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া এবং এতে প্রেরণকারী মুহরিম হইবে না ও তার উপর কোন কিছু নিষিদ্ধও হইবে না।
৮৩১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নিজ হাতে নাবী [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর কিলাদা পাকিয়ে দিয়েছি। এরপর তিনি তাকে কিলাদা পরিয়ে ইশআর করার পর পাঠিয়ে দিয়েছেন এবং তাহাঁর জন্য যা হালাল ছিল এতে তা হারাম হয়নি।
[বোখারী পর্ব ২৫/১০৬ হাঃ ১৬৯৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৪, হাঃ ১৩২১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৩২. যিয়াদ ইবনি আবু সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর নিকট পত্র লিখলেন যে, আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরবানীর পশু [মাক্কাহ্] পাঠায় তা যবহ না করা পর্যন্ত তার জন্য ঐ সমস্ত কাজ হারাম হয়ে যায়, যা হাজীদের জন্য হারাম। [বর্ণনাকারিণী] আমরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আয়িশাহ্ [রাদি.] বলিলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] যেমন বলেছেন, ব্যাপার তেমন নয়। আমি নিজ হাতে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর কিলাদা পাকিয়ে দিয়েছি আর তিনি নিজ হাতে তাকে কিলাদাহ পরিয়ে দেন। এরপর আমার পিতার সঙ্গে তা পাঠান। সে জানোয়ার যবহ করা পর্যন্ত আল্লাহ কর্তৃক হালাল করা কোন বস্তুই আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর প্রতি হারাম হয়নি।
[বোখারী পর্ব ২৫/১০৯ হাঃ ১৭০০, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৪ হাঃ ১৩২১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬৫. হাজ্জে গমনকারীর জন্য কুরবানীর উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া বুদনার উপর প্রয়োজনে আরোহণ করা জায়িয।
৮৩৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিতে দেখে বলিলেন, এর পিঠে আরোহণ কর। সে বলিল, এ তো কুরবানীর উট। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, এর পিঠে সওয়ার হয়ে চল। এবারও লোকটি বলিল, এ-তো কুরবানীর উট। এরপরও আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, এর পিঠে আরোহণ কর, তোমার সর্বনাশ! এ কথাটি দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারে বলেছেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১০৩ হাঃ ১৬৮৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৫, হাঃ ১৩২২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৩৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিতে দেখে বলিলেন, এর উপর সওয়ার হয়ে যাও। সে বলিল, এ তো কুরবানীর উট। তিনি বলিলেন, এর উপর সওয়ার হয়ে যাও। লোকটি বলিল, এ তো কুরবানীর উট। তিনি বলিলেন, এর উপর সওয়ার হয়ে যাও। এ কথাটি তিনি তিনবার বলিলেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১০৩ হাঃ ১৬৯০, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৫, হাঃ ১২২৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬৭. তাওয়াফে বিদা [শেষ তাওয়াফ] ওয়াজিব ও ঋতুবতী মহিলার জন্য এ হুকুম বিলুপ্ত।
৮৩৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকেদের আদেশ দেয়া হয় যে, তাহাদের শেষ কাজ যেন হয় বাইতুল্লাহর তাওয়াফ। তবে এ হুকুম ঋতুবতী মহিলাদের জন্য শিথিল করা হয়েছে।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৪৪ হাঃ ১৭৫৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৭, হাঃ ১৩২৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৩৬. নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রসূল ! সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াইয়ের হায়য শুরু হয়েছে। তিনি বললেনঃ সে তো আমাদেরকে আটকে রাখবে। সে কি তোমাদের সঙ্গে তাওয়াফে-যিয়ারত করেনি? তাঁরা জবাব দিলেন, হাঁ করিয়াছেন। তিনি বললেনঃ তা হলে বের হও
[বোখারী পর্ব ৬/২৭ হাঃ ৩২৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৩৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রত্যাবর্তনের রাত এলে সাফিয়্যাহ বিন্তু হুয়াই [রাদি.]-এর ঋতু আরম্ভ হলে তিনি বলিলেন, আমার ধারণা, আমি তোমাদের আটকে ফেললাম। নাবী [সাঃআঃ] তা শুনে আকরা হালকা বলে বিরক্তি প্রকাশ করে বললেনঃ তুমি কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছিলে? সাফিয়্যাহ [রাদি.] বলিলেন, হাঁ। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তবে চল।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৫১ হাঃ ১৭৭১, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬৮. হাজী ও অন্যদের কাবায় প্রবেশ করা, সেখানে সালাত আদায় ও তার প্রত্যেক প্রান্তে দুআ করা মুস্তাহাব।
৮৩৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আর উসামা ইবনি যায়দ, বিলাল এবং উসমান ইবনি তালহা হাজাবী [রাদি.] কাবায় প্রবেশ করিলেন। নাবী [সাঃআঃ]-এর প্রবেশের সাথে সাথে উসমান [রাদি.] কাবার দরজা বন্ধ করে দিলেন। তাঁরা কিছুক্ষণ ভিতরে ছিলেন। বিলাল [রাদি.] বের হলে আমি তাঁকে বললামঃ নাবী [সাঃআঃ] কী করিলেন? তিনি বললেনঃ একটা খুঁটি বাম দিকে, একটা খুঁটি ডান দিকে আর তিনটা খুঁটি পেছনে রাখলেন। আর তখন বায়তুল্লাহ ছিল ছয়টি খুঁটিবিশিষ্ট। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করিলেন।
[বোখারী পর্ব ৮/৯৬ হাঃ ৫০৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৮ হাঃ ১৩২৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৩৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যখন নাবী [সাঃআঃ] কাবায় প্রবেশ করেন, তখন তার সকল দিকে দুআ করিয়াছেন, সালাত আদায় না করেই বেরিয়ে এসেছেন এবং বের হবার পর কাবার সামনে দুরাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন, এবং বলেছেন, এটাই কিবলাহ।
[বোখারী পর্ব ৮/৩০ হাঃ ৩৯৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৮ হাঃ ১৩৩০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৪০. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] উমরাহ করিতে গিয়ে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিলেন ও মাকামে ইবরাহীমের পিছনে দু রাকআত সালাত আদায় করিলেন এবং তাহাঁর সাথে এ সকল সাহাবী ছিলেন যারা তাঁকে লোকদের হইতে আড়াল করে ছিলেন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] কাবার ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন কি-না- এক ব্যক্তি আবু আওফা [রাদি.]-এর নিকট তা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, না।
[বোখারী পর্ব ২৫/৫৩ হাঃ ১৬০০, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৮ হাঃ ১৩৩২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৬৯. কাবা গৃহ ভেঙ্গে ফেলা ও তার পুনর্নির্মাণ করা।
৮৪১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ যদি তোমার গোত্রের যুগ কুফরীর নিকটবর্তী না হত তা হলে অবশ্যই কাবা ঘর ভেঙ্গে ইব্রাহীম [আ]-এর ভিত্তির উপর তা পুনর্নির্মাণ করতাম। কেননা কুরায়শগণ এর ভিত্তি সঙ্কুচিত করে দিয়েছে। আর আমি আরো একটি দরজা করে দিতাম।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪২ হাঃ ১৫৮৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৯ হাঃ ১৩৩৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৪২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ তুমি কি জান না! তোমার কওম যখন কাবা ঘরের পুনর্নির্মাণ করেছিল তখন ইব্রাহীম [আ.] কর্তৃক কাবা ঘরের মূল ভিত্তি হইতে তা সঙ্কুচিত করেছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! আপনি কি একে ইবরাহীমী ভিত্তির উপর পুনঃস্থাপন করবেন না? তিনি বললেনঃ যদি তোমার সম্প্রদায়ের যুগ কুফরীর নিকটবর্তী না হত তা হলে অবশ্য আমি তা করতাম। আবদুল্লাহ [ইবনি উমর] [রাদি.] বলেন, যদি আয়িশাহ্ [রাদি.] নিশ্চিতরূপে তা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] হইতে শুনে থাকেন, তাহলে আমার মনে হয় যে, বায়তুল্লাহ হাতীমের দিক দিয়ে সম্পূর্ণ ইবরাহিমী ভিত্তির উপর নির্মিত না হবার কারণেই আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] [তওয়াফের সময়] হাতীম সংলগ্ন দুটি কোণ স্পর্শ করিতেন না।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪২ হাঃ ১৫৮৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৬৯, হাঃ ১৩৩৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭০. কাবা ঘরের দেয়াল ও তার দরজা।
৮৪৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করলাম, [হাতীমের] দেয়াল কি বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত, তিনি বললেনঃ হাঁ। আমি বললাম, তাহলে তারা বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত করিল না কেন? তিনি বললেনঃ তোমার গোত্রের [অর্থাৎ কুরাইশের কাবা নির্মাণের] সময় অর্থ নিঃশেষ হয়ে যায়। আমি বললাম, কাবার দরজা এত উঁচু হওয়ার কারণ কী? তিনি বললেনঃ তোমার কওমতো এ জন্য করেছে যে, তারা যাকে ইচ্ছে তাকে ঢুকতে দিবে এবং যাকে ইচ্ছে নিষেধ করিবে। যদি তোমার কওমের যুগ জাহিলিয়াতের নিকটবর্তী না হত এবং আশঙ্কা না হত যে, তারা একে ভাল মনে করিবে না, তাহলে আমি দেয়ালকে বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত করে দিতাম এবং তার দরজা ভূমি বরাবর করে দিতাম।
[বোখারী পর্ব ৩০/৪২ হাঃ ১৫৮৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৭০, হাঃ ১৩৩৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭১. অক্ষম, বৃদ্ধ ও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হাজ্জ।
৮৪৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফযল ইবনি আব্বাস [রাদি.] একই বাহনে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর পিছনে আরোহণ করেছিলেন। এরপর খাশআম গোত্রের এক মহিলা উপস্থিত হল। তখন ফযল [রাদি.] সেই মহিলার দিকে তাকাতে থাকে এবং মহিলাটিও তার দিকে তাকাতে থাকে। আর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ফযলের চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিতে থাকেন। মহিলাটি বললো, হে আল্লাহর রসূল ! আল্লাহর বান্দার উপর ফার্যকৃত হাজ্জ আমার বয়োঃবৃদ্ধ পিতার উপর ফার্য হয়েছে। কিন্তু তিনি বাহনের উপর স্থির থাকতে পারেন না, আমি কি তাহাঁর পক্ষ হইতে হাজ্জ আদায় করবো? তিনি বললেনঃ হাঁ [আদায় কর]। ঘটনাটি বিদায় হাজ্জের সময়ের।
[বোখারী পর্ব ২৫/১ হাঃ ১৫১৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৭১, হাঃ ১৩৩৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৪৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের বছর খাসআম গোত্রের একজন মহিলা এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আল্লাহর তরফ হইতে বান্দার উপর যে হাজ্জ ফার্য হয়েছে তা আমার বৃদ্ধ পিতার উপর এমন সময় ফার্য হয়েছে যখন তিনি সওয়ারীর উপর ঠিকভাবে বসে থাকতে সক্ষম নন। আমি তার পক্ষ হইতে হাজ্জ আদায় করলে তার হাজ্জ আদায় হইবে কি? তিনি বললেনঃ হাঁ [নিশ্চয়ই আদায় হইবে]।
[বোখারী পর্ব ২৮/২৩ হাঃ ১৮৫৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৭১, হাঃ ১৩৩৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭৩. জীবনে হাজ্জ একবার ফার্য।
৮৪৬. আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ তোমরা আমাকে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাক, যতক্ষণ না আমি তোমাদের কিছু বলি। কেননা, তোমাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা তাহাদের নাবীদের অধিক প্রশ্ন করা ও নাবীদের সাথে মতবিরোধ করার কারণেই ধ্বংস হয়েছে। তাই আমি যখন তোমাদের কোন বিষয়ে নিষেধ করি, তখন তা থেকে বেঁচে থাক। আর যদি কোন বিষয়ে আদেশ করি তাহলে সাধ্যমত পালন কর।
[বোখারী পর্ব ৯৬/২ হাঃ ৭২৮৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৩ হাঃ ১৩৩৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭৪. মুহরিম [যাদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ] ব্যক্তির সাথে মহিলাদের হাজ্জের জন্য বা অন্য কারণে সফর করা।
৮৪৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মহিলাই যেন মাহরাম পুরুষকে সঙ্গে না নিয়ে তিন দিনের সফর না করে।
[বোখারী পর্ব ১৮/৪ হাঃ ১০৮৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৪ হাঃ ১৩৩৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৪৮. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, চারটি বিষয় যা আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] হইতে শুনিয়াছি যা আমাকে আশ্চর্যান্বিত করে দিয়েছে এবং চমৎকৃত করে ফেলেছে। [তা হল এই], স্বামী কিংবা মাহরাম ব্যতীত কোন মহিলা দুদিনের পথ সফর করিবে না। ঈদুল ফিত্র এবং ঈদুল আযহা- এ দু দিন কেউ সওম পালন করিবে না। আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত এবং ফজরের পর সূর্য উদয় পর্যন্ত কেউ কোন সালাত আদায় করিবে না। আর মাসজিদে হারম [কাবা], আমার মাসজিদ [মাসজিদে নাববী] এবং মাসজিদে আকসা [বাইতুল মাকদিস]- এ তিন মাসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মাসজিদের জন্য সফরের প্রস্তুতি গ্রহণ করিবে না।
[বোখারী পর্ব ২৮/২৬ হাঃ ১৮৬৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৪, হাঃ ১৩৪০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৪৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে মহিলা আল্লাহ্ এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে কোন মাহ্রাম পুরুষকে সাথে না নিয়ে একদিন ও এক রাত্রির পথ সফর করা জায়িয নয়।
[বোখারী পর্ব ১৮/৪ হাঃ ১০৮৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৪, হাঃ ১৩৩৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৫০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন পুরুষ যেন অপর মহিলার সঙ্গে নিভৃতে অবস্থান না করে, কোন স্ত্রীলোক যেন কোন মাহরাম সঙ্গী ছাড়া সফর না করে। এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রসূল ! অমুক যুদ্ধের জন্য আমার নাম লেখা হয়েছে। কিন্তু আমার স্ত্রী হাজ্জযাত্রী। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তবে যাও, তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হাজ্জ কর।
[বোখারী পর্ব ৫৬/১৪ হাঃ ৩০০৬, মুসলিম কিতাবুল হাজ্জ হাঃ ১৩৪১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭৬. হাজ্জ বা অন্য সফর থেকে ফেরার পথে কী বলবে?
৮৫১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] যখন যুদ্ধ, হাজ্জ কিংবা উমরাহ থেকে ফিরতেন, তখন প্রতিটি উঁচু জায়গার উপর তিনবার আল্লাহু আকবার বলিতেন। অতঃপর বলিতেনঃ “আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। তিনি এক, তাহাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব, হাম্দও তাহাঁরই জন্য, তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাহ্কারী, ইবাদাতকারী, আপন প্রতিপালকের প্রশংসাকারী, আল্লাহ তাআলা নিজ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিয়াছেন। তিনি তাহাঁর বান্দাকে সাহায্য করিয়াছেন, আর দুশমনের দলকে তিনি একাই প্রতিহত করিয়াছেন।”
[বোখারী পর্ব ৮০/৫২ হাঃ ৬৩৮৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৬ হাঃ ১৩৪৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭৭. হাজ্জ ও উমরাহ্ থেকে ফেরার পথে জুল হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনয় অবস্থান করা এবং সেখানে সালাত আদায়।
৮৫২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যুল-হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনর বাত্হা নামক উপত্যকায় উট বসিয়ে সালাত আদায় করেন। [রাবী নাফি বলেন] ইবনি উমার [রাদি.]-ও তাই করিতেন।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৪ হাঃ ১৫৩২, মুসলিম পর্ব ১৫/৩৭, হাঃ ১২৫৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৫৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
যুল-হুলাইসলামিক ফাউন্ডেশনহ [আকীক] উপত্যকায় রাত যাপনকালে তাঁকে স্বপ্নযোগে বলা হয়, আপনি বরকতময় উপত্যকায় অবস্থান করছেন। {রাবী মূসা ইবনি উকবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন} সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাদেরকে সাথে নিয়ে উট বসিয়ে ঐ উট বসাবার স্থানটির খোঁজ করেন, যেখানে আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] উট বসিয়ে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর রাত যাপনের স্থানটি খোঁজ করিতেন। সে স্থানটি উপত্যকায় মাসজিদের নীচু জায়গায় অবতরণকারীদের ও রাস্তার একেবারে মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
[বোখারী পর্ব ২৫/১৬ হাঃ ১৫৩৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৭, হাঃ ১৩৪৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭৮. কোন মুশরিক হাজ্জ করিবে না ও উলঙ্গ অবস্থায় কেউ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিবে না এবং হাজ্জে আকবার দিনের বর্ণনা।
৮৫৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের পূর্বে যে হাজ্জে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আবু বকর [রাদি.]-কে আমীর নিযুক্ত করেন, সে হাজ্জে কুরবানীর দিন {আবু বকর [রাদি.]} আমাকে একদল লোকের সঙ্গে পাঠালেন, যারা লোকদের কাছে ঘোষণা করিবে যে, এ বছরের পর হইতে কোন মুশরিক হাজ্জ করিবে না এবং উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিবে না।
[বোখারী পর্ব ২৫/৬৭ হাঃ ১৬২২, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৭, হাঃ ১৩৪৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৭৯. হাজ্জ, উমরাহ ও আরাফাহ্র দিনের ফাযীলাত।
৮৫৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক উমরাহর পর আর এক উমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের [গুনাহের] জন্য কাফফারা। আর জান্নাতই হলো হাজ্জে মাবরূরের প্রতিদান।
[বোখারী পর্ব ২৬/১ হাঃ ১৭৭৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৯, হাঃ ১৩৪৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৫৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি এ ঘরের হাজ্জ আদায় করিল এবং স্ত্রী সহবাস করিল না এবং অন্যায় আচরণ করিল না, সে প্রত্যাবর্তন করিবে মাতৃগর্ভ হইতে সদ্য প্রসূত শিশুর মত হয়ে।
[বোখারী পর্ব ২৭/৯ হাঃ ১৮১৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৭৯, হাঃ ১৩৫০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮০. হাজ্জকারীর মাক্কায় অবস্থান ও তার গৃহের উত্তরাধিকার হওয়া।
৮৫৭. উসামাহ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আপনি মাক্কায় অবস্থিত আপনার বাড়ির কোন্ স্থানে অবস্থান করবেন? তিনি [সাঃআঃ] বললেনঃ আকীল কি কোন সম্পত্তি বা ঘর-বাড়ি অবশিষ্ট রেখে গেছে? আকীল এবং তালিব আবু তালিবের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন, জাফর ও আলী [রাদি.] হননি। কেননা তাঁরা দুজন ছিলেন মুসলমান। আকীল ও তালিব ছিল কাফির।
[বোখারী পর্ব ২৫/৪৪ হাঃ ১৫৮৮, মুসলিম পর্ব ১৫/৮০ হাঃ ১৩৫১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮১. মাক্কাহ্ থেকে হিজরাতকারী ব্যক্তির হাজ্জ ও উমরাহ্ সম্পন্ন করার পর প্রবাসী ব্যক্তির জন্য অনুর্ধ তিনদিন মাক্কায় অবস্থান করা বৈধ।
৮৫৮. আলা ইবনিল হাযরামী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, মুহাজিরদের জন্য তাওয়াফে সদর* আদায় করার পর তিন দিন মাক্কায় থাকার অনুমতি আছে।*
[বোখারী পর্ব ৬৩/৪৭ হাঃ ৩৯৩৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৮১, হাঃ নং ১৩৫২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮২. মাক্কাহ্ হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, সেখানকার লতা ও বৃক্ষ কাটা নিষিদ্ধ এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়া ছাড়া সেখানকার পড়ে থাকা জিনিস উঠানো নিষিদ্ধ।
৮৫৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের দিন নাবী [সাঃআঃ] বলেছিলেনঃ এখন হইতে আর হিজরত নেই, রয়েছে কেবল জিহাদ এবং নিয়ত। সুতরাং যখন তোমাদেরকে জিহাদের জন্য ডাকা হইবে, এ ডাকে তোমরা সাড়া দিবে। আসমান-যমীন সৃষ্টির দিন হইতেই আল্লাহ তাআলা এ শহরকে হারম [মহাসম্মানিত] করে দিয়েছেন। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণেই কিয়ামাত পর্যন্ত এ শহর থাকিবে মহাসম্মানিত হিসেবে। এ শহরে লড়াই করা আমার পূর্বেও কারো জন্য বৈধ ছিল না এবং আমার জন্যও দিনের কিছু অংশ ব্যতীত বৈধ হয়নি। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণে তা থাকিবে কিয়ামাত পর্যন্ত মহাসম্মানিত হিসেবে। এর কাঁটা উপড়ে ফেলা যাবে না, তাড়ানো যাবে না এর শিকার্য জানোয়ারকে, ঘোষণা করার উদ্দেশ্য ব্যতীত কেউ এ স্থানে পড়ে থাকা কোন বস্তুকে উঠিয়ে নিতে পারবে না এবং কর্তন করা যাবে না এখানকার কাঁচা ঘাস ও তরুলতাগুলোকে। আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! ইযখির বাদ দিয়ে। কেননা এ তো তাহাদের কর্মকারদের জন্য এবং তাহাদের ঘরে ব্যবহারের জন্য। বর্ণনাকারী বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হাঁ, ইযখির বাদ দিয়ে।
[বোখারী পর্ব ২৮/১০ হাঃ ১৮৩৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৮১, হাঃ ১৩৫৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬০. আবু শুরায়হ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আমর ইবনি সাঈদ [মদীনার গভর্নর]-কে বলিলেন, যখন তিনি মাক্কায় সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন- হে আমাদের নেতা আমাকে অনুমতি দিলে আপনাকে এমন একটি হাদীস শুনাতে পারি যেটা মাক্কাহ বিজয়ের পরের দিন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছিলেন। আমার দুই কান তা শ্রবণ করেছে, আমার হৃদয় তা আয়ত্ত রেখেছে, আর আমার চোখদুটো তা দেখেছে। তিনি আল্লাহ্র হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেনঃ মাক্কাকে আল্লাহ্ হারাম করিয়াছেন, কোন মানুষ তাকে হারাম করেনি। তাই যে ব্যক্তি আল্লাহ্তে ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে তার জন্য সেখানে রক্তপাত করা, সেখানকার গাছ কাটা বৈধ নয়। কেউ যদি আল্লাহর রাসূলের [সেখানকার] লড়াইকে দলীল হিসেবে পেশ করে তবে তোমরা বলে দাও, আল্লাহ্ তাআলা তাহাঁর রসূল কে এর অনুমতি দিয়েছিলেন ; কিন্তু তোমাদেরকে তা দেন নি। আমাকেও সে দিনের কিছু সময়ের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন। অতঃপর পূর্বের মতই আজ আবার একে তার নিষিদ্ধ হবার মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। উপস্থিতগণ যেন অনুপস্থিতদের নিকট [এ বাণী] পৌঁছে দেয়। অতঃপর আবু শুরায়হ্ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হল, আপনার এ হাদীস শুনে আমর কি বলিলেন? [আবু শুরায়হ্ [রাদি.] উত্তর দিলেন] তিনি বললেনঃ হে আবু শুরায়হ্! [এ বিষয়ে] আমি তোমার চেয়ে অধিক জানি। মাক্কাহ্ কোন বিদ্রোহীকে, কোন খুনের পলাতক আসামীকে এবং কোন চোরকে আশ্রয় দেয় না।
[বোখারী পর্ব ৩/৩৭ হাঃ ১০৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৮২, হাঃ ১৩৫৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা যখন তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-কে মাক্কাহ বিজয় দান করিলেন, তখন তিনি [সাঃআঃ] লোকদের মাঝে দাঁড়িয়ে আল্লাহর হাম্দ ও সানা [প্রশংসা] বর্ণনা করিলেন। এরপর বলিলেন, আল্লাহ তাআলা মাক্কায় [আবরাহার] হস্তি বাহিনীকে প্রবেশ করিতে দেননি এবং তিনি তাহাঁর রসূল ও মুমিন বান্দাদেরকে মাক্কাহ্র উপর আধিপত্য দান করিয়াছেন। আমার আগে অন্য কারোর জন্য মাক্কায় যুদ্ধ করা বৈধ ছিল না, তবে আমার পক্ষে দিনের সামান্য সময়ের জন্য বৈধ করা হয়েছিল, আর তা আমার পরেও কারোর জন্য বৈধ হইবে না। কাজেই এখানকার শিকার তাড়ানো যাবে না, এখানকার গাছ কাটা ও উপড়ানো যাবে না, ঘোষণাকারী ব্যক্তি ব্যতীত এখানকার পড়ে থাকা জিনিস তুলে নেয়া যাবে না। যার কোন লোক এখানে নিহত হয় তবে দুটির মধ্যে তার কাছে যা ভাল বলে বিবেচিত হয়, তা গ্রহণ করিবে। ফিদ্ইয়া গ্রহণ অথবা কিসাস। আব্বাস [রাদি.] বলেন, ইযখিরের অনুমতি দিন। কেননা, আমরা এগুলো আমাদের কবরের উপর এবং ঘরের কাজে ব্যবহার করে থাকি। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন, ইযখির ব্যতীত [অর্থাৎ তা কাটা ও ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হল]। তখন ইয়ামানবাসী আবু শাহ [রাদি.] দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমাকে লিখে দিন। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা আবু শাহকে লিখে দাও। [ওয়ালিদ ইবনি মুসলিম বলেন] আমি আওযায়ীকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল ! আমাকে লিখে দিন তাহাঁর এ উক্তির অর্থ কী? তিনি বলেন, এ ভাষণ যা রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছ হইতে তিনি শুনেছেন, তা লিখে দিন।
[বোখারী পর্ব ৪৫/৭ হাঃ ২৪৩৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৮২, হাঃ ১৩৫৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮৪. ইহরাম অবস্থায় ছাড়া মাক্কায় প্রবেশ বৈধ।
৮৬২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
মাক্কাহ্ বিজয়ের বছর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] লৌহ শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় [মাক্কাহ] প্রবেশ করেছিলেন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] শিরস্ত্রাণটি মাথা হইতে খোলার পর এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলিলেন, ইবনি খাতাল কাবার গিলাফ ধরে আছে। তিনি বললেনঃ তাকে তোমরা হত্যা কর।
[বোখারী পর্ব ২৮/১৮ হাঃ ১৮৪৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৪, হাঃ ১৩৫৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮৫. মাদীনাহ্র মর্যাদা, সেখানকার মাল সম্পদে বারাকাতের জন্য নাবী [সাঃআঃ]-এর দুআ, সে স্থান হারাম হওয়া, সেখানে শিকার করা, বৃক্ষ কর্তন করা নিষিদ্ধ এবং এর হারামের সীমারেখা।
৮৬৩. আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, ইবরাহীম [আ.] মাক্কাহ্কে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন ও তার জন্য দুআ করিয়াছেন। আমি মাদীনাহ্কে হারাম ঘোষণা করেছি, যেমন ইবরাহীম [আ.] মাক্কাহ্কে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন এবং আমি মাদীনাহ্র মুদ ও সাআ এর জন্য দুআ করেছি। যেমন ইবরাহীম [আ.] মাক্কাহ্র জন্য দুআ করেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ৩৪/৫৩ হাঃ ২১২৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৫, হাঃ ১৩৬০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] আবু ত্বলহাকে বলেন, তোমাদের ছেলেদের মধ্য থেকে একটি ছেলে খুঁজে আন, যে আমার খেদমত করিতে পারে। এমনকি তাকে আমি খায়বারেও নিয়ে যেতে পারি। অতঃপর আবু ত্বলহা [রাদি.] আমাকে তার সওয়ারীর পেছনে বসিয়ে নিয়ে চললেন। আমি তখন প্রায় সাবালক। আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর খেদমত করিতে লাগলাম। তিনি যখন অবতরণ করিতেন, তখন প্রায়ই তাকে এই দুআ পড়তে শুনতামঃ হে আল্লাহ! আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার নিকট পানাহ চাচ্ছি। পরে আমরা খায়বারে গিয়ে হাজির হলাম। অতঃপর যখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে দুর্গের উপর বিজয়ী করিলেন, তখন তাহাঁর নিকট সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াই ইবনি আখতাবের সৌন্দর্যের কথা উল্লেখ করা হলো, তিনি ছিলেন সদ্য বিবাহিতা; তাহাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল এবং আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাঁকে নিজের জন্য মনোনীত করিলেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে রওয়ানা দিলেন। আমরা যখন সাদ্দুস্ সাহ্বা নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন সাফিয়্যাহ [রাদি.] হায়েয থেকে পবিত্র হন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] সেখানে তাহাঁর সঙ্গে বাসর যাপন করেন। অতঃপর তিনি চামড়ার ছোট দস্তরখানে হায়সা প্রস্তুত করে আমাকে আশেপাশের লোকজনকে ডাকার নির্দেশ দিলেন। এই ছিল আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সাফিয়্যার বিয়ের ওয়ালিমাহ। অতঃপর আমরা মাদীনাহ্র দিকে রওয়ানা দিলাম। আনাস [রাদি.] বলেন, আমি দেখিতে পেলাম যে, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর পেছনে চাদর দিয়ে সাফিয়্যাহ্কে পর্দা করছেন। উঠানামার প্রয়োজন হলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর উটের কাছে হাঁটু বাড়িয়ে বসতেন, আর সাফিয়্যাহ [রাদি.] তাহাঁর উপর পা রেখে উটে আরোহণ করিতেন। এভাবে আমরা মাদীনাহ্র নিকটবর্তী হলাম। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] উহুদের দিকে তাকিয়ে বলিলেন, এটি এমন এক পর্বত যা আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। অতঃপর মাদীনাহ্র দিকে তাকিয়ে বলিলেন, হে আল্লাহ, এই কঙ্করময় দুটি ময়দানের মধ্যবর্তী স্থানকে আমি হারাম বলে ঘোষণা করছি, যেমন ইব্রাহীম [আ.] মাক্কাহকে হারাম ঘোষণা করেছিলেন। হে আল্লাহ্! আপনি তাহাদের মুদ এবং সাতে বরকত দান করুন।
[বোখারী পর্ব ৭০/২৮ হাঃ ২৮৯৩, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৫ হাঃ ১৩৬৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৫. আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নাবী [সাঃআঃ] কি মাদীনাহ্কে হারাম [সংরক্ষিত এলাকা] হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন? উত্তরে তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, অমুক স্থান থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত। এ এলাকার কোন গাছ কাটা যাবে না, আর যে ব্যক্তি এখানে বিদ্আত সৃষ্টি করিবে তার উপর আল্লাহ্ তাআলা, ফেরেশ্তা ও সকল মানব সম্প্রদায়ের লানাত। আসিম বলেন, আমাকে মূসা ইবনি আনাস বলেছেন, বর্ণনাকারী [আরবী] কিংবা বিদ্আত সৃষ্টিকারীকে আশ্রয় দেয় বলেছেন।
[বোখারী পর্ব ৯৬/৬ হাঃ ৭৩০৬, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৫ হাঃ ১৩৬৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি তাহাদের মাপের পাত্রে বরকত দিন এবং তাহাদের সাআ ও মুদ-এ বরকত দিন অর্থাৎ মাদীনাহ্বাসীদের।
[বোখারী পর্ব ৩৪/৫৩ হাঃ ২১৩০, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৫ হাঃ ১৩৬৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আল্লাহ! মাক্কাহইতে তুমি যে বরকত দান করেছ, মাদীনাহ্তে এর দ্বিগুণ বরকত দাও। উসমান বিন উমার উক্ত হাদীস ইউনুস থেকে বর্ণনার ক্ষেত্রে জারীরের অনুসরণ করিয়াছেন।
[বোখারী পর্ব ২৯/১০ হাঃ ১৮৮৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৫, হাঃ ১৩৬৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৮. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ
একবার আলী [রাদি.] পাকা ইটে নির্মিত একটি মিম্বরে আরোহণ করে আমাদের উদ্দেশে খুত্বা পাঠ করিলেন। তাহাঁর সঙ্গে একটি তরবারী ছিল, যার মাঝে একটি সহীফা ঝুলন্ত ছিল। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! আমাদের নিকট আল্লাহ্র কিতাব এবং যা এই সহীফাতে লিপিবদ্ধ আছে এ ব্যতীত অন্য এমন কোন কিতাব নেই যা পাঠ করা যেতে পারে। অতঃপর তিনি তা খুললেন। তাতে উটের বয়স সম্পর্কে লেখা ছিল এবং লেখা ছিল যে, আয়র [পর্বত] থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত মাদীনাহ হারাম [পবিত্র এলাকা] বলে বিবেচিত হইবে। যে কেউ এখানে কোন অন্যায় করিবে তার উপর আল্লাহ্, ফেরেশ্তাকুল ও সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের অভিসম্পাত। আর আল্লাহ্ তাআলা তার ফার্য ও নফল কোন ইবাদাতই কবূল করবেন না এবং তাতে আরও ছিল যে, এখানকার সকল মুসলিমের নিরাপত্তা একই পর্যায়ের। একজন নিম্ন পর্যায়ের ব্যক্তিও [অন্য কাউকে] নিরাপত্তা প্রদান করিতে পারবে। যদি কোন ব্যক্তি অপর একজন মুসলিমের প্রদত্ত নিরাপত্তাকে লংঘন করে, তাহলে তার উপর আল্লাহ্র, ফেরেশ্তাকুলের ও সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের লানাত [অভিসম্পাত]। আল্লাহ্ তাআলা তার ফার্য ও নফল কোন ইবাদাতই কবূল করবেন না। তাতে আরও ছিল, যদি কোন ব্যক্তি তার [আযাদকারী] মনিবের অনুমতি ব্যতীত অন্য কাউকে নিজের [গোলাম থাকাকালীন সময়ের] মনিব বলে উল্লেখ করে, তাহলে তার উপর আল্লাহ্র, ফেরেশ্তাকুলের ও সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের অভিসম্পাত। আর আল্লাহ্ তাআলা তার ফার্য, নফল কোন ইবাদাতই গ্রহণ করবেন না।
[বোখারী পর্ব ৯২/৫ হাঃ ৭৩০০, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৫ হাঃ ১৩৭০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিতেন, আমি যদি মাদীনাতে কোন হরিণকে বেড়াতে দেখি তাহলে তাকে আমি তাড়াব না। [কেননা] আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মাদীনার প্রস্তরময় পাহাড়ের দু এলাকার মধ্যবর্তী এলাকা হল হারম বা সম্মানিত স্থান
৮৭০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] দুআ করিতেনঃ হে আল্লাহ! আপনি যেভাবে মাক্কাহ্কে আমাদের জন্য প্রিয় করে দিয়েছেন, মাদীনাহ্কেও সেভাবে অথবা এর চেয়ে অধিক আমাদের কাছে প্রিয় করে দিন। আর মাদীনাহ্র জ্বর জুহফা নামক স্থানের দিকে সরিয়ে দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মাপের ও ওযনের পাত্রে বারকাত দিন।
[বোখারী পর্ব ৮০/৪৩ হাঃ ৬৩৭২, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৬ হাঃ ১৩৭৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮৭. মহামারী ও দাজ্জালের প্রবেশ থেকে মাদীনাহ সংরক্ষিত হওয়া।
৮৭১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মাদীনাহ্র প্রবেশ পথসমূহে ফেরেশতা পাহারায় নিয়োজিত আছে। তাই প্লেগ রোগ এবং দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না।
[বোখারী পর্ব ২৯/৯ হাঃ ১৮৮০, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৭, হাঃ ১৩৭৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮৮. মাদীনাহ তার ক্ষতিকর ও যাবতীয় মন্দকে পরিষ্কার করে।
৮৭২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি এমন এক জনপদে হিজরাত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যে জনপদ অন্য সকল জনপদের উপর জয়ী হইবে। লোকেরা তাকে ইয়াসরিব বলে থাকে। এ হল মাদীনাহ। তা অবাঞ্ছিত লোকদেরকে এমনভাবে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে কামারের অগ্নিচুলা লোহার মরিচা দূর করে দেয়।
[বোখারী পর্ব ২৯/২ হাঃ ১৮৭১, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৮, হাঃ ১৩৮২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৭৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন এসে রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর হাতে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করিল। মাদীনায় সে জ্বরে আক্রান্ত হল। তখন সেই বেদুঈন রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহ্র রসূল ! আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] অস্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় এসে বলিল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। তিনি এবারও অস্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় এসে বলিল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। তখন বেদুঈন বেরিয়ে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ মাদীনাহ হল কামারের হাপরের ন্যায়, যে তার মধ্যকার আবর্জনাকে বিদূরিত করে এবং খাঁটিটুকু ধরে রাখে।
[বোখারী পর্ব ৯৩/৪৭ হাঃ ৭২১১, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৮ হাঃ ১৩৮৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৭৪. যায়দ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, এই মাদীনাহ হচ্ছে পবিত্র স্থান, আগুন যেভাবে রৌপ্যের কালিমা বিদূরিত করে এটাও খবীস ও অসৎদেরকে বিদূরিত করে।
[বোখারী পর্ব ৬৫/১৫ হাঃ ৪৫৮৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৮, হাঃ ১৩৮৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৮৯. যে ব্যক্তি মাদীনাহ্বাসীর অনিষ্ট কামনা করিবে আল্লাহ তাআলা তাকে কষ্ট দিবেন।
৮৭৫. সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে কেউ মাদীনাবাসীর সাথে ষড়যন্ত্র বা প্রতারণা করিবে, সে লবণ যেভাবে পানিতে গলে যায়, সেভাবে গলে যাবে।
[বোখারী পর্ব ২৯/৭ হাঃ ১৮৭৭, মুসলিম পর্ব ১৫/৮৯, হাঃ ১৩৮৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯০. বিভিন্ন শহর বিজিত হলেও মাদীনায় থাকার প্রতি উৎসাহ প্রদান।
৮৭৬. সুফইয়ান ইবনি আবু যুহায়র [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ ইয়ামান বিজিত হইবে, তখন একদল লোক নিজেদের সওয়ারী তাড়িয়ে এসে স্বীয় পরিবার-পরিজন এবং অনুগত লোকদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। অথচ মাদীনাহ তাহাদের জন্য উত্তম ছিল, যদি তারা বুঝত। সিরিয়া বিজিত হইবে, তখন একদল লোক নিজেদের সওয়ারী তাড়িয়ে এসে স্বীয় পরিবার-পরিজন এবং অনুগত লোকদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে; অথচ মাদীনাই ছিল তাহাদের জন্য মঙ্গলজনক, যদি তারা জানত। এরপর ইরাক বিজিত হইবে তখন একদল লোক নিজেদের সওয়ারী তাড়িয়ে এসে স্বজন এবং অনুগতদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে; অথচ মাদীনাই তাহাদের জন্য ছিল মঙ্গলজনক, যদি তারা জানত।
[বোখারী পর্ব ২৯/৫ হাঃ ১৮৭৫, মুসলিম পর্ব ১৫/৯০, হাঃ ১৩৮৮] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯১. মাদীনাহ্র অধিবাসীরা যখন মাদীনাহ্কে পরিত্যাগ করিবে।
৮৭৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা উত্তম অবস্থায় মাদীনাহকে রেখে যাবে। আর জীবিকা অন্বেষণে বিচরণকারী অর্থাৎ পশু-পাখি ছাড়া আর কেউ একে আচ্ছন্ন করে নিতে পারবে না। সবশেষে যাদের মাদীনাহ্তে একত্রিত করা হইবে তারা হল মুযায়না গোত্রের দুজন রাখাল। তারা তাহাদের বকরীগুলোকে হাঁক-ডাক দিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশেই মাদীনাহইতে আসবে। এসে দেখবে মাদীনাহ বন্য পশুতে ছেয়ে আছে। এরপর তারা সানিয়্যাতুল-বিদা নামক স্থানে পৌঁছতেই মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে।
[বোখারী পর্ব ২৯/৫ হাঃ ১৮৭৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৯১, হাঃ ১৩৮৯ ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯২. কবর ও মিম্বারের মধ্যবর্তী স্থান হচ্ছে জান্নাতের বাগিচাসমূহের একটি বাগিচা।
৮৭৮. আবদুল্লাহ্ ইবনি যায়দ-মাযিনী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বর-এর মধ্যবর্তী স্থানটুকু জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান
। [বোখারী পর্ব ২০/৫ হাঃ ১১৯৫, মুসলিম ১৫/৯২, হাঃ ১৩৯০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৭৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান আর আমার মিম্বর অবস্থিত [রয়েছে] আমার হাউয [কাউসার]-এর উপরে
[বোখারী পর্ব ২০/৫ হাঃ ১১৯৬, মুসলিম ১৫/৯২, হাঃ ১৩৯১]ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯৩. উহূদ পাহাড় আমাদেরকে ভালভাসে এবং আমরা তাকে ভালবাসি।
৮৮০. আবু হুমাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তাবূক যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে মাদীনাহ্র নিকটবর্তী হলে তিনি বলিলেন, এই মাদীনাহ্র অপর নাম ত্বাবা [পবিত্র] এবং এই উহূদ পাহাড় আমাদের ভালবাসে আর আমরাও তাকে ভালবাসি।
[বোখারী পর্ব ৬৪/৮১ হাঃ ৪৪২২, মুসলিম পর্ব ১৫/৯৩ হাঃ ১৩৯২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯৪. মাক্কাহ ও মাদীনাহ্র দু মাসজিদে সালাতের ফাযীলাত।
৮৮১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মাসজিদুল হারাম ব্যতীত আমার এ মাসজিদে সালাত আদায় করা অপরাপর মাসজিদে এক হাজার সালাতের চেয়ে উত্তম।
[বোখারী পর্ব ২০/১ হাঃ ১১৯০, মুসলিম পর্ব ১৫/৯৩, হাঃ ১৩৯৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯৫. তিন মাসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও সফরের প্রস্তুতি নেবে না।
৮৮২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুর রসূল এবং মাসজিদুল আক্সা [বায়তুল মাক্দিস] তিনটি মাসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মাসজিদে [যিয়ারতের] উদ্দেশে হাওদা বাঁধা যাবে না।
[বোখারী পর্ব ২০/১ হাঃ ১১৮৯, মুসলিম পর্ব ১৫/৯৫ হাঃ ১৩৯৭] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১৫/৯৬. কুবা মাসজিদ ও সেখানে সালাত আদায়ের ফাযীলাত এবং তা যিয়ারাত করা।
৮৮৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আরোহণ করে কিংবা পায়ে হেঁটে কুবা মাসজিদে আসতেন।
[বোখারী পর্ব ২০/৪ হাঃ ১১৯৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৯৭ হাঃ ১৩৯৯] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply