এশার নামাযের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ

এশার নামাযের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ

এশার নামাযের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পরিচ্ছেদ – ৩৩৪ : এশার নামাযের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ

اَلْمُرَادُ بِهَ الْحَدِيْثُ الَّذِيْ يَكُونُ مُبَاحًا فِي غَيْرِ هٰذَا الْوَقْتِ وَفِعْلُهُ وَتَرْكُهُ سَوَاءٌ. فَأَمَّا الْحَدِيْثُ الْمُحَرَّمُ أَوِ الْمَكْرُوهُ فِي غَيْرِ هٰذَا الْوَقْتِ أَشَدُّ تَحْرِيمًا وَكَرَاهَةً، وَأَمَّا الْحَدِيثُ فِي الْخَيْرِ كَمُذَاكَرَةِ الْعِلْمِ وَحِكَايَاتِ الصَّالِحِينَ وَمَكَارِمِ الْأَخْلَاقِ وَالْحَدِيثُ مَعَ الضَّيْفِ وَمَعَ طَالِبِ حَاجَةٍ وَنَحْوَ ذٰلِكَ فَلَا كَرَاهَةَ فِيهِ، بَلْ هُوَ مُسْتَحَبٌّ، وَكَذَا الْحَدِيثُ لِعُذْرٍ وَعَارِضٍ لَا كَرَاهَةَ فِيهِ. وَقَدْ تَظَاهَرَتِ الْأَحَادِيثُ الصَّحِيحَةُ عَلٰى كُّلِّ مَا ذَكَرْتُهُ.

উদ্দেশ্য, যে সব কথাবার্তা অন্য সময়ে বলা মুবাহ [অর্থাৎ যা করা না করা সমান]। নচেৎ যে সব কথাবার্তা অন্য সময়ে হারাম বা মাকরূহ, সে সব এ সময়ে আরও অধিকভাবে হারাম ও মাকরূহ। পক্ষান্তরে কল্যাণমূলক কথাবার্তা; যেমন জ্ঞানচর্চা, নেক লোকদের কাহিনী ও চরিত্র আলোচনা, মেহমানের সঙ্গে বাক্যালাপ, কারো প্রয়োজন পূরণ প্রসঙ্গে কথা ইত্যাদি বলা মকরুহ নয়; বরং তা মুস্তাহাব। অনুরূপভাবে আকস্মিক কোন ঘটনাবশতঃ বা কোন সঠিক ওযরে কথা বলা অ-পছন্দনীয় কাজ নয়। উক্ত বিবৃতির সমর্থনে বহু বিশুদ্ধ হাদিস বিদ্যমান রয়েছে।

1/1755 عَنْ أَبِي بَرْزَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهُ : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَكرَهُ النَّومَ قَبْلَ العِشَاءِ وَالحَدِيثَ بَعْدَهَا . متفقٌ عليه

১/১৭৫৫। আবূ বারযা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাঃআঃ এশার নামাযের আগে ঘুমানো এবং পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করিতেন। [বুখারী ও মুসলিম][1]

2/1756 عَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى العِشَاء فِي آخِرِ حَيَاتِهِ، فَلَمَّا سَلَّمَ قال : «أَرَأَيْتَكُمْ لَيْلَتَكُمْ هَذِهِ ؟ فَإِنَّ عَلَى رَأسِ مِئَةِ سَنَةٍ لاَ يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ علَى ظَهْرِ الأَرْضِ اليَومَ أَحَدٌ». متفق عليه

২/১৭৫৬। ইবনি উমার রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাঃআঃ নিজ জীবনের অন্তিম দিনগুলির কোন একদিন [লোকদেরকে নিয়ে] এশার নামায পড়লেন এবং যখন সালাম ফিরলেন, তখন বলিলেন, ‘‘আচ্ছা বলত। এটা তোমাদের কোন রজনী? [এ কথা] সুনিশ্চিত যে, যে ব্যক্তি আজ ধরা-পৃষ্ঠে জীবিত আছে, একশত বছরের মাথায় সে ব্যক্তি অবশিষ্ট থাকিবে না [অর্থাৎ মারা যাবে]।’’ [বুখারী ও মুসলিম][2]

3/1757 وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عنه: أَنَّهُم انتَظَرُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَجَاءَهُمْ قَرِيباً مِنْ شَطْرِ اللَّيْلِ فَصَلَّى بِهِمْ – يَعْنِي : العِشَاءَ – ثمَّ خَطَبنا فَقَالَ: «أَلاَ إِنَّ النَّاسَ قَدْ صَلَّوا، ثُمَّ رَقَدُوا، وَإِنَّكُمْ لَنْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرْتُمُ الصَّلاَةَ» . رواه البخاري

৩/১৭৫৭। আনাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, একদিন [মসজিদে] সাহাবায়ে কেরাম নবী সাঃআঃ-এর আগমনের প্রতীক্ষায় ছিলেন। অতঃপর তিনি প্রায় অর্ধ রাত্রিতে তাঁদের নিকট আগমন করিলেন এবং তাঁদেরকে নিয়ে নামায অর্থাৎ এশার নামায পড়লেন। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি আমাদের মাঝে বক্তব্য রাখলেন। তাতে তিনি বলিলেন, ‘‘শোন! লোকে নামায সমাধা করে ঘুমিয়ে পড়েছে। আর তোমরা যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযের অপেক্ষা করছিলে, ততক্ষণ পর্যন্ত অব্যাহত-ভাবে নামাযের মধ্যেই ছিলে।’’ [বুখারী] [3]


[1]সহীহুল বুখারী ৫৪১, ৫৪৭, ৫৬৮, ৫৯৯, ৭৭১, মুসলিম ৬৪৭, নাসায়ী ৪৯৫, ৫৩০, ৯৪৪, আবূ দাউদ ৩৯৮, ইবনু মাজাহ ৬৭৪, দারেমী ১৩০০

[2] সহীহুল বুখারী ১১৬, ৫৬৪, ৬০১, মুসলিম ২৫৩৭, তিরমিযী ২২৫১, আবূ দাউদ ৪৩৪৮, আহমাদ ৫৫৮৫, ৫৯৯২, ৬১১৩

[3] ১৭৫৭. সহীহুল বুখারী ৫৭২, ৬০০, ৬৬১, ৮৪৮, ৫৮৬৯, মুসলিম ৬৪০, নাসায়ী ৫৩৯, ৫২০২, ৫২৮৫, ইবনু মাজাহ ৬৯২, আহমাদ ১২৪৬৯, ১২৫৫০, ১২৬৫৬, ১৩৪০৭

Comments

One response to “এশার নামাযের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ”

Leave a Reply