হায়িয ঋতুস্রাব সংক্রান্ত – বুলু গুল মারাম

হায়িয ঋতুস্রাব সংক্রান্ত – বুলু গুল মারাম

 হায়িয ঋতুস্রাব সংক্রান্ত – বুলু গুল মারাম >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় -১০ঃ হায়িয ঋতুস্রাব সংক্রান্ত

পরিচ্ছেদ ১১০. যে মহিলার মাসিক নিয়মিত হয় না তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১১১. ইস্তিহাযা নারীর [হায়েযের রোগীর] গোসল করা ও তার সময় সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
পরিচ্ছেদ ১১২. ইস্তিহাযা নারী দু’সলাত কে একত্রিত করে আদায় করিতে পারবে
পরিচ্ছেদ ১১৩. ইস্তিহাযা নারীর গোসল ও প্রত্যেক সলাতের জন্য ওযূ করার বিধান
পরিচ্ছেদ ১১৪. [ইস্তিহাযার রক্ত] মেটে ও হলদে রং হলে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১১৫. ঋতুমতী মহিলার যে সকল কাজ বৈধ ও অবৈধ
পরিচ্ছেদ ১১৬. ঋতুমতী মহিলার সাথে যৌন সঙ্গম করার কাফ্ফারা [প্রায়শ্চিত্ত]
পরিচ্ছেদ ১১৭. ঋতুমতী মহিলা নামায, রোযা বর্জন করিবে
পরিচ্ছেদ ১১৮. ঋতুমতী মহিলার বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ নিষেধ
পরিচ্ছেদ ১১৯. হায়েয ওয়ালী মহিলার দেহের যতটুকু বৈধ
পরিচ্ছেদ ১২০. নিফাস ওয়ালী মহিলা সলাত ও সওম হতে বিরত থাকার সময়সীমা

পরিচ্ছেদ ১১০. যে মহিলার মাসিক নিয়মিত হয় না তার বিধান

১৩৮- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুবায়সের কন্যা ফাতিমাহ`ইস্তিহাযা’ [প্রদর রোগ] নামক রোগে ভুগতেন। আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন,`অবশ্য হায়িযের রক্ত কালো বর্ণের, তা [সহজেই] চেনা যায়। যখন এমন রক্ত দেখিতে পাবে তখন সলাত বন্ধ করে দিবে। তারপর যখন অন্য রক্ত সেখা দেয় তখন উযু করে সলাত আদায় কর।’ আবূ দাউদ, নাসায়ি হাদিস। ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন; আবূ হাতিম এটিকে মুন্কার হাদিসের মধ্যে গণ্য করিয়াছেন। {১৬৫}

{১৬৫} আবূ দাউদ ২৮৬, না, ১৮৫ ইবনু হিব্বান ১৩৪৮; হাকিম ১৭৪; হাদিসটিকে ইবনু হিব্বান ব্যতীত সকলেই [আরবী] “এটাতো এক শিরা থেকে বয়ে আসা রক্ত” কথাটি বৃদ্ধি করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১১. ইস্তিহাযা নারীর [হায়েযের রোগীর] গোসল করা ও তার সময় সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে

১৩৯- ‘উমাইস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

একটা বড় পানির গামলাতে বসবে। অতঃপর হলদে রং এর রক্ত দেখিতে পাও তবে যুহর ও`আসরের জন্য একবার এবং মাগরিব ও`ইশা সলাতের জন্য একবার গোসল করিবে এবং ফজর সলাতের জন্য একবার করে গোসল করিবে আর এর মাঝে [প্রত্যেক সলাতের জন্য] উযু করিবে। {১৬৬}

{১৬৬} আবূ দাউদ ২৯৬, আসমা বিনতে উমাইস হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহ্‌র রাসূল [সাঃআঃ]! ফাতিমাহ বিনতে হুবাইসের এমন বেশি পরিমাণে হায়য হচ্ছে যে, সে সালাত আদায় করিতে পারছেনা। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সুবহানআল্লাহ! এতো শয়তানের পক্ষ থেকে হয়েছে । সে বসবে…।। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১২. ইস্তিহাযা নারী দু’সলাত কে একত্রিত করে আদায় করিতে পারবে

১৪০- হামনাহ বিনতু জাহাশ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`আমার`ইস্তেহাযা’ নামক ব্যধির জন্য অত্যন্ত কঠিনরুপে রক্তস্রাব হতো। আমি নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এ বিষয়ে ফতোয়ার জন্য এলাম।’ তিনি বলিলেন,`এটা শয়তানের আঘাতজনিত কারনেই [হচ্ছে], তুমি ছয় বা সাত দিন হায়িয পালন করিবে। তারপর হায়িযের গোসল করে পবিত্র হয়ে প্রতি মাসে চব্বিশ বা তেইশ দিন নিয়মমাফিক সলাত আদায় করিবে, সওম পালন করিবে ও সলাত আদায় করিবে, তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট হইবে। এভাবে হায়িযা মহিলার মত প্রতি মাসে করিতে থাকিবে। যদি তোমার পক্ষে সম্ভব হয় তাহলে যুহুরকে পিছিয়ে দিয়ে এবং`আসরকে কিছুটা এগিয়ে নিয়ে গোসল করে দু’ ওয়াক্তের সলাত একসঙ্গে আদায় করিবে। অনুরুপভাবে মাগরিবকে পিছিয়ে ও`ইশাকে এগিয়ে নিয়ে গোসল করে উভয় সলাত আদায় করিবে এবং ফাজর সালাতের জন্য গোসল করে তা আদায় করিবে। [নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন ] আমার নিকটে এটাই অধিক পছন্দ।’ তিরমিজি একে সহীহ্ বলেছেন আর বুখারী একে হাসান বলেছেন। {১৬৭}

{১৬৭} হাসান। আবূ দাউদ ২৭৮; তিরমিজি ১২৮, ইবনু মাজাহ ৬২৭; আহমাদ ৬/ ৪৩৯, হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৩. ইস্তিহাযা নারীর গোসল ও প্রত্যেক সলাতের জন্য ওযূ করার বিধান

১৪১- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

উম্মু হাবিবাহ বিনতু জাহাশ তাহাঁর রক্তস্রাবের সমস্যার বিষয় নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট ব্যক্ত করিলেন। তিনি [সাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন,`তুমি এ সমস্যা দেখা দেয়ার পূর্বে তোমার হায়িযের জন্য যে ক’দিন অপেক্ষা করিতে সে ক’দিন তুমি হায়িযের বিধি নিষেধ মেনে চলবে। তারপর গোসল করিবে। তারপর থেকে উম্মু হাবিবাহ প্রত্যেক সলাতের জন্যেই গোসল করিতেন। {১৬৮}

{১৬৮} মুসলিম ৬৬, ৩৩৪, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৪২- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

বুখারীর বর্ণনায় আছে,`প্রত্যেক সলাতের জন্য ওযু করিবে।’ এ বর্ণনাটি আবূ দাঊদে ও অন্যান্য কিতাবেও এই সানাদে রয়েছে। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৪. [ইস্তিহাযার রক্ত] মেটে ও হলদে রং হলে তার বিধান

১৪৩- উম্মু আতিয়্যাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`আমরা হায়িযের পর হলদে ও মেটে রঙের রক্তকে কিছুই মনে করতাম না।’ এ শব্দ বিন্যাস আবূ দাঊদের। {১৬৯}

{১৬৯} হাদিসটি মাওকূফ । বুখারী ৩২৬; আবূ দাউদ ৩০৭। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৫. ঋতুমতী মহিলার যে সকল কাজ বৈধ ও অবৈধ

১৪৪- আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

ইয়াহুদী লোকেরা তাদের হায়িযা স্ত্রীর সাথে পানাহার করা পরিত্যাগ করতো। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন,`তোমরা [কেবল] যৌন মিলন ছাড়া [যথারীতি] তাদের সঙ্গে সবই করিবে।’ {১৭০}

{১৭০} মুসলিম ৩০২; শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত, ইহুদীদের নারীরা যখন হায়েযা হয়ে পড়ত তখন তারা তাদের সাথে পানাহার করত না, তাদের সাথে একঘরে বসবাস করতো। সাহাবীগণ নবী [সাঃআঃ] কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে [আরবী] “তারা তোমার কাছে হায়িয সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলে দাও যে, তা হল নাপাক। সুতরাং হায়িয অবস্থায় তোমরা মহিলাদের হতে পৃথক থাক…আয়াতটি নাযিল হয়। অতঃপর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন , “তোমরা তোমাদের স্রীদের সাথে সঙ্গম ব্যতীত সবকিছুই করিবে । এ কথাটি ইহুদী্দের কাছে পৌঁছে গেল। ফলে তারা বলিল যে, এ লোকটির উদ্দেশ্য কি যে, আমরা যা করি তার বিপরীত করে বসে। অতঃপর [তাদের এ কথা শুনে] উসাইদ বিন হুযাইর [রাঃআঃ] এবং ইবাদ বিন বাশার [রাঃআঃ] এসে রাসুল [সাঃআঃ] কে বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল [সাঃআঃ] ইহুদী্রা এমন এমন কথা বলেছে; তাহলে আমরা কি আমাদের স্ত্রীদের সাথে এমতাবস্থায় সঙ্গম করবো? তাদের উভয়ের এ কথা শ্রবণ করতঃ রাসূল [সাঃআঃ] এর চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল এমনটি আমরা ধারনা করলাম যে, তিনি [সাঃআঃ] তাদের উপর রাগান্বিত হয়েছেন। তারপর তারা দুজনে সেখান থেকে বের হয়ে গেল। ইতোমধ্যেই রাসূল [সাঃআঃ] এর জন্য দুধ হাদিয়া আসলো । তিনি তাদেরকে ডেকে পাঠালেন । [তারা এলে] তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন তখন তারা বুঝল যে, তিনি [সাঃআঃ] তাদের উপর রাগ করেন নি । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৪৫- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`নাবী [সাঃআঃ] হায়িয চলাকালীন সময়ে আমাকে ইযার [লুঙ্গি বিশেষ] পরতে বলিতেন। আমি তাই করতাম তারপর তিনি আমার সাথে হায়িয অবস্থায় [যৌন মিলন ব্যতীত] প্রেমময় আলিঙ্গন করিতেন।’ {১৭১}

{১৭১} বুখারী ৩০০; মুসলিম ২৯৩ শব্দ বিন্যাস বুখারীর। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৬. ঋতুমতী মহিলার সাথে যৌন সঙ্গম করার কাফ্ফারা [প্রায়শ্চিত্ত]

১৪৬- ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর হায়িয অবস্থায় তার সাথে যৌন মিলন করিবে তার বিধান সম্বন্ধে নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন ,`ঐ ব্যক্তি যেন এক দিনার [স্বর্ণ মুদ্রা] বা অর্ধ দিনার খয়রাত [দান] করে।’ ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদিসটিকে সহীহ্ বলেছেন। আর অন্য মুহাদ্দিসগণ – এর মাওকুফ হওয়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন। {১৭২}

{১৭২} হাফেজ ইবনু হাজার যে শব্দে উল্লেখ করিয়াছেন কেবল সেই শব্দে হাদিসটি মারফূ‘ হিসেবে সহিহ। আবূ দাউদ ২৬৪; নাসায়ি হাদিস ১৫৩; তিরমিজি ১৩৬; ইবনু মাজাহ ৬৪; আহমাদ ১৭২; হা. ১৭৩। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৭. ঋতুমতী মহিলা নামায, রোযা বর্জন করিবে

১৪৭- আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন,`হায়িয চলাকালীন সময়ে মেয়েরা কি সলাত ও সওম থেকে বিরত থাকে না?’ [অর্থাৎ বিরত থাকতে হয়।] এটি দীর্ঘ একটি হাদিসের খন্ডাংশ। {১৭৩}

{১৭৩} বুখারী ৩০৪ পূর্ণাঙ্গ হাদিসটি হচ্ছে- আবূ সা‘ঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। একবার ঈদুল আযহা অথবা ঈদুল ফিতরের সলাত আদায়ের জন্য আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেনঃ হে মহিলা সমাজ! তোমরা সদাক্বাহ করিতে থাক। কারণ আমি দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই অধিক। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেনঃ কী কারণে, হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেনঃ তোমরা অধিক পরিমাণে অভিশাপ দিয়ে থাক আর স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে ত্রুটি থাকা স্বত্ত্বেও একজন সদাসতর্ক ব্যক্তির বুদ্ধি হরণে তোমাদের চেয়ে পারদর্শী আমি আর কাউকে দেখিনি। তাঁরা বললেনঃ আমাদের দ্বীন ও বুদ্ধির ত্রুটি কোথায়, হে আল্লাহ্‌র রসূল? তিনি বললেনঃ একজন মহিলার সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয়? তাঁরা উত্তর দিলেন,`হাঁ’। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে তাদের বুদ্ধির ত্রুটি। আর হায়য অবস্থায় তারা কি সলাত ও সিয়াম হতে বিরত থাকে না? তাঁরা বলিলেন,`হাঁ’। তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে তাদের দ্বীনের ত্রুটি। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৮. ঋতুমতী মহিলার বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ নিষেধ

১৪৮- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`আমরা হজ্জ ব্রত পালন করার উদ্দেশ্যে যখন সারিফা নামক স্থানে গিয়ে পৌঁছলাম তখন আমার ঋতুস্রাব শুরু হলো।’ নাবী [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন,`পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত কা’বা তাওয়াফ্‌ ব্যতীত হাজীরা যা যা করে তুমিও তাই কর।’ এটি দীর্ঘ একটি হাদিসের খন্ডাংশ। {১৭৪}

{১৭৪} বুখারী ৩০৫; মুসলিম ১২০, ১২১১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১৯. হায়েয ওয়ালী মহিলার দেহের যতটুকু বৈধ

১৪৯ – মু‘আয বিন জাবাল [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞেস করিলেন,`হায়িয অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে কি কি কাজ হালাল বা বৈধ?’ তিনি বলিলেন,`পাজামা বা লুঙ্গির মধ্যে শরীরের যে অংশটুকু থাকে তা বাদে সবকিছু বৈধ।’ আবূ দাউদ এটিকে য‘ঈফ [দুর্বল] রূপে বর্ণনা করিয়াছেন। {১৭৫}

{১৭৫} আবূ দাউদ ২১৩। বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [১৪৫] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে সা‘দ বিন আবদুল্লাহ আল আগত্বাস রয়েছে যাকে হাদিস বর্ণনায় লীন [অপরিপক্ক] বলা হয়েছে, অপর একজন বর্ণনাকারী বাকিয়্যাহ ইবনুল ওয়ালীদ, সে আন আন করে হাদিস বর্ণনাকারী মুদাল্লিস। এর সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। তবে আবদুল্লাহ সাদ আল আসনারী থেকে হাসান সনদে এর শাহেদ হাদিস রয়েছে। শাইখ আলবানী উক্ত আবদুল্লাহ সাদ আল আসনারী বর্ণিত হাদিসটিকে সহিহ আবূ দাউদ [২১২] গ্রন্থে সহিহ বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১২০. নিফাস ওয়ালী মহিলা সলাত ও সওম হতে বিরত থাকার সময়সীমা

১৫০- উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`নাবী [সাঃআঃ] -এর যুগে নিফাসের [প্রসবোত্তরস্রাব] জন্য [দীর্ঘ মেয়াদ হিসাবে] মেয়েরা চল্লিশ দিন [সলাত ও সওম ইত্যাদি হতে] অপেক্ষমান থাকতেন।’ শব্দ বিন্যাস আবূ দাঊদের। {১৭৬}

আবূ দাঊদের শব্দে আরও আছে,`নাবী [সাঃআঃ] নিফাসের অবস্থায় সলাত কাযা পড়বার আদেশ তাদের করিতেন না।’ হাকিম হাদিসটি সহিহ বলেছেন। {১৭৭}

{১৭৬} আবূ দাউদ ৩১১; তিরমিজি ১৩৯; ইবনু মাজাহ ৬৪৮; আহমাদ ৬/৩০০; ইমাম তিরমিজি বলেনঃ হাদিসটি`গরীব’। ইমাম বায়হাকী তাহাঁর সুনান আল কুবরা গ্রন্থে [১/৩৪১] বলেন, হাদিসটি মাহফূয বা সংরক্ষিত নয়। ইবনুল কীসরানী তাহাঁর মা‘রিফাতুত তাযকিরাহ [১৮০] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে কাসীর বিন যিয়াদ রয়েছে, সে কিছু হাদিস এলোমেলোভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। পক্ষান্তরে শাইখ আলবানী সহিহ আবূ দাউদ [৩১১] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাহাঁর গায়াতুল মাকসূদ [৩/১৩১] গ্রন্থে ও বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [১৪৫] গ্রন্থে এর শাহেদ থাকার কথা বলেছেন। ইবনুল কাইয়্যিম তাহাঁর যাদুল মা‘আদ [৪/৩৬৯] গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। শাইখ আলবানী ইরওয়াউল গালীল [২০১] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। ইমাম বুখারী তাহাঁর ইলালুল কাবীর [১২৬] গ্রন্থে বলেন, আশাকরি হাদিসটি মাহফূয। {১৭৭} জঈফ। আবূ দাউদ ৩১২; হা. ১৭৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস


by

Comments

Leave a Reply