উহুদ যুদ্ধ

উহুদ যুদ্ধ

উহুদ যুদ্ধ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৩৭. অধ্যায়ঃ উহুদ যুদ্ধ

৪৫৩৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন উহুদ যুদ্ধের দিন কেবল সাতজন আনসার ও দুজন কুরায়শ [মুহাজির] সাথীসহ [শত্রুবাহিনী কর্তৃক] অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং তা তাঁকে [চতুর্দিক থেকে] বেষ্টন করে ফেলে, তিনি বলিলেন, কে আমার পক্ষ থেকে শত্রুদের প্রতিহত করিবে, তার জন্য রয়েছে জান্নাত। অথবা বলিলেন, সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হইবে? তখন আনসারদের মধ্যকার একব্যক্তি অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ শুরু করিলেন এবং পরিশেষে শহীদ হলেন। তারপর পুনরায় তারা তাঁকে ঘেরাও করে ফেললো এবং অনুরূপভাবে লড়াই করিতে করিতে তাঁদের সাতজনই শহীদ হলেন। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সঙ্গীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলিলেন, আমরা [কুরায়শরা] সঙ্গীদের প্রতি সুবিচার করিনি। [আমরা বেঁচে রইলাম, অথচ আনসাররা শহীদ হলেন।]

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯২]

৪৫৩৪. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাঁকে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উহুদ যুদ্ধের দিন আহত হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর [পবিত্র] মুখমণ্ডল যখম করা হয়, তাহাঁর রুবাই {৪০} দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয় এবং তাহাঁর মাথায় লৌহ শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে ঢুকে যায়। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কন্যা ফাতিমাহ্‌ [রাদি.] রক্ত ধুইয়ে দিচ্ছিলেন এবং আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] ঢাল দিয়ে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। ফাতিমাহ্‌ [রাদি.] যখন দেখলেন যে, তাতে রক্তপড়া আরো বেশী বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন তিনি একটি মাদুর খণ্ড পোড়ালেন এবং ছাই হয়ে গেলে তা যখমের উপর চেপে ধরলেন। এতে রক্তপাত বন্ধ হয়ে গেল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯৩]

{৪০} সামনের দুদাঁতের পার্শ্ববর্তী ডান ও বামের দাঁত ।

৪৫৩৫. কুতাইবাহ্‌ ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

সাহ্‌ল ইবনি সাঈদ [রাদি.]-কে যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আহত হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমি অবশ্যই জানি, কে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যখম ধুয়ে দিচ্ছিলেন, কে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন এবং কিসের দ্বারা তাহাঁর চিকিৎসা করা হয়েছিল। তারপর তিনি আবদুল আযীযের মাধ্যমে বর্ণিত পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। অবশ্য তাহাঁর বর্ণনায় এ পার্থক্য রয়েছে : “তাহাঁর মুখমণ্ডল যখম করা হয় এবং [আরবী] এর স্থলে [আরবী] শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আহত হওয়া সংক্রান্ত সাহ্‌ল ইবনি সাদ [রাদি.]-এর এ বর্ণনাটি সামান্য শাব্দিক পরিবর্তনসহ অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯৪]

৪৫৩৬. আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্, যুহায়র ইবনি হারব, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম, ইবনি আবু উমর সকলেই ইবনি উয়াইনাহ্ থেকে এবং আমর ইবনি সাও্ওয়াদ আমিরী, মুহাম্মদ ইবনি সাহল তামীমী সকলেই আবু হাযিম সূত্রে সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি আবু হিলাল-এর হাদীসে আছে, রসূল [সাঃআঃ]-এর মুখমণ্ডলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। আর মুতার্রফ-এর হাদীসে আছে তাহাঁর মুখমণ্ডলে যখম হয়েছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯৫]

৪৫৩৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ওহুদ দিবসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর রুবাইয়াত দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয়, তাহাঁর মাথায় আঘাত করা হয় এবং তিনি তাহাঁর শরীর থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলছিলেন, সে জাতি কিভাবে সাফল্য অর্জন করিবে, যারা তাদের নবীকে আহত করলো এবং তাহাঁর সম্মুখের দুটি দাঁত ভেঙ্গে দিল অথচ তিনি তাদের আল্লাহ্‌র দিকে আহব্বান জানাচ্ছিলেন? তখন আল্লাহ্‌ তাআলা আয়াত নাযিল করিলেন :

 لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَىْءٌ‏

“হে রসূল! এ ব্যাপারে আপনার করণীয় কিছুই নেই”- [সূরা আ-লি ইমরান : ১২৮।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯৬]

৪৫৩৮. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ]-কে দেখিতে পাচ্ছি যে, তিনি এমন একজন নবীর কথা কাহিনীরূপে বর্ণনা করছেন, যাঁকে তাহাঁর সম্প্রদায়ের লোকজন আঘাত করেছে। আর তিনি তাহাঁর নিজের কপাল থেকে রক্ত মুছছেন এবং বলছেন, “প্রভু! আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা কর, কেন না তারা বুঝে না।” আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে সামান্য পার্থক্য সহ অন্য সূত্রেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯৭]

৪৫৩৯. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাহাঁর বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি তাহাঁর কপাল থেকে রক্ত মুছছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৯৮]


Posted

in

by

Comments

One response to “উহুদ যুদ্ধ”

Leave a Reply