উম্মু যার্ই এর হাদীস

উম্মু যার্ই এর হাদীস

উম্মু যার্ই এর হাদীস >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১৪. অধ্যায়ঃ উম্মু যার্ই এর হাদীস

৬১৯৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এগারজন মহিলা একত্রে বসে অঙ্গীকার ও চুক্তিবদ্ধ হলো যে, তারা নিজ নিজ স্বামীর বিষয়ে কিছুই গোপন করিবে না।

প্রথম মহিলা বললোঃ আমার স্বামী দূর্বল উটের গোশতের মতো, যা দূর্গম এক পর্বতের চুঁড়ায় রক্ষিত। না ওখানে আরোহন করা সম্ভব আর না এমন মোটা তাজা যা সংরক্ষণ করা যায়।

দ্বিতীয় মহিলা বললোঃ আমি আমার স্বামীর সংবাদ প্রকাশ করিতে পারব না। আমার আশঙ্কা হয়, আমি তাকে ছেড়ে না দেই। আমি যদি তার বর্ণনা দিতে যাই তবে তার প্রকাশ্য ও গোপনীয় সব ত্রুটিই উল্লেখ করিতে হইবে।

তৃতীয় মহিলা বললোঃ আমার স্বামী খুব লম্বা। ওর ত্রুটি বললে আমি ত্যাজ্য হবো, আর চুপ থাকলে ঝুলে থাকব।

চতুর্থ মহিলা বললোঃ আমার স্বামী তিহামাহ্-এর রাত্রের মতো। নাতিশীতোষ্ণ [গরমও নয় আর ঠাণ্ডাও নয়] ভয়ও নেই, ক্লান্তিও নেই।

পঞ্চম মহিলা বললোঃ আমার স্বামী যখন গৃহে প্রবেশ করে তখন চিতা বাঘ, আর যখন বাইরে যায় তখন সিংহ। সংরক্ষিত ধন-সম্পদ নিয়ে সে কোন প্রশ্ন করে না।

ষষ্ঠ মহিলা বললঃ আমার স্বামী খেতে বসলে সব খেয়ে ফেলে, পান করলে একেবারে শেষ করে ফেলে। আর ঘুমাতে গেলে একেবারে হাত পা গুটিয়ে নেয়। আমার প্রতি হাত বাড়ায় না, যাতে আমার অবস্থা বুঝতে পারে।

সপ্তম মহিলা বললোঃ আমার স্বামী বোকা, অক্ষম ও বোবার মতো। সব ত্রুটিই তার মধ্যে বিদ্যমান। ইচ্ছা করলে তোমার মাথায় আঘাত করিবে কিংবা গায়ে মারবে অথবা উভয়টিই একত্রে সংঘটিত করিবে।

অষ্টম মহিলা বললোঃ আমার স্বামীর যারনাব নামক সুগন্ধির মতো, তার খরগোশের স্পর্শের ন্যায় কোমল।

নবম মহিলা বললোঃ আমার স্বামী এমন যার প্রাসাদের খুঁটিগুলো সুউচ্চ, তারবারির খাপগুলো দীর্ঘ, বাড়ীর উঠোনে অধিক ছাই। মাজলিসের পাশেই তার গৃহ।

দশম মহিলা বললোঃ আমার স্বামী মালিক। আর মালিক-এর কথা কি বলব, আমারা এ প্রশংসার চেয়ে তিনি আরো শ্রেষ্ঠ। তার রয়েছে অনেক উট, উটশালায় উটের সংখ্যা অনেক, তবে চারণভূমিতে তার সংখ্যা কম। উটেরা যখন বাদ্য-বাজনার আওয়াজ শোনে তখন নিজেদের যাবাহের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে পড়ে।

একাদশ মহিলা বললোঃ আমার স্বামীর নাম আবু যারই। কী চমৎকার আবু যারই। অলংকার দিয়ে সে আমার দুকান ঝুলিয়ে দিয়েছে, বাহুদ্বয় ভরপুর করেছে চর্বিতে। আমাকে মর্যাদা দিয়েছে, আমিও নিজেকে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করছি। সে আমাকে পাহাড়ের কিনারায় ভেড়া ও বকরীওয়ালাদের ভিতরে পেয়েছিল। তারপর সে আমাকে উট, ঘোড়া, জমি-জমা ও ফসল ফসলাদির অধিকারী বানিয়েছে। তার নিকট আমি কথা বললে সে তা ফেলে না। আমি শুইলে ভোর পর্যন্ত শুয়ে থাকি আর পান করলে আত্মতৃপ্ত লাভ করি।

আবু যারই-এর মা, কতই না ভালো আবু যারই-এর মা। তাহাঁর সম্পদ-কোষ অনেক বড় আকারের। তাহাঁর কুঠরী প্রশস্ত।

আবু যারই-এর ছেলে, কতো ভালো আবু যারই-এর ছেলে, তার শয্যা যেন তলোয়ারের কোষ। বকরির একটি হাতা খেয়েই সে তৃপ্তি বোধ করে।

আবু যারই-এর মেয়ে, কতই না ভাল আবু যারই-এর মেয়ে। সে তার বাবা মায়ের অনুগত। পোশাক পরিচ্ছদে ভরপুর তার প্রতিবেশীদের ঈর্ষার পাত্র।

আবু যারই-এর দাসী। কতই না ভালো আবু যারই-এর দাসী। আমাদের কথা বলে বেড়ায় না। আমাদের খাদ্য বিনষ্ট করে না, বাড়ী-ঘর ময়লাস্তুপে পরিণত করে না।

উম্মু যারই বলেন, একদিন আবু যারই বাইরে বের হলেন। তখন আমাদের অবস্থা ছিল এই যে, বড় বড় দুধের মাখন উঠিয়ে নেয়া হত। সে সময় জনৈক নারীর সঙ্গে তাহাঁর দেখা হয়। তার সঙ্গে ছিল দুটো শিশু। শিশু দুটো ছিল দুটো চিতার মতো। তারা তার কোলের নীচ দিয়ে দুটি ডালিম নিয়ে খেলা করছিল। তখন আবু যারই আমাকে তালাক দেয় এবং সে মহিলাকে বিবাহ করে। এরপর আমি জনৈক লোককে বিয়ে করলাম। সে ছিল সরদার, খুব ভালো ঘোড় সওয়ার ও বর্শা ধারণকারী। সে আমার আস্তাবলে বহু চতুষ্পদ জন্তু জড়ো করে। প্রত্যেক প্রকার হইতে সে আমাকে একেক জোড়া দান করে এবং সে আমাকে বলে, হে উম্মু যারই! তুমি খাও এং তোমার আপনজনকে বিলিয়ে দাও।

অতঃপর দ্বিতীয় স্বামী আমায় যা কিছু দিয়েছে তার সব যদি জমা করি তবুও আবু যারই-এর ছোট্ট একটি পাত্রের সমতুল্য হইবে না।

আয়িশা [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃতোমার জন্য আমি উম্মু যারই-এর জন্য আবু যারই-এর ন্যায়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬১২৪]

৬২০০. হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উপরোক্ত সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। কিন্তু তাতে নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম এতটুকু রয়েছে যে, …………….। আরো আছে- . . . এবং রয়েছে- …… [অর্থাৎ- তার চাদর হলদে রংয়ের চাদর বিশিষ্ট, অন্যান্য মহিলার মতো ছিল শ্রেষ্ঠ, সতীনের ঈর্ষার পাত্রী এবং বলেছেন- ……. . . অর্থাৎ সে আমাদের খাদ্যদ্রব্য বৃথা নষ্ট করে না। আরো বলেছেন- ……………………. প্রত্যেক উপাদেয় বস্তু হইতে আমাকে একজোড়া দিয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৮৫, ইসলামিক সেন্টার-৬১২৫]

Comments

One response to “উম্মু যার্ই এর হাদীস”

Leave a Reply