উমরার ফযিলত, সংখ্যা, সময্‌ তালবিয়াহ এবং কুরবানী

উমরার ফযিলত, সংখ্যা, সময্‌ তালবিয়াহ এবং কুরবানী

রমাযান মাসের উমরার ফযিলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৩১. অধ্যায়ঃ হাজ্জের মাসসমূহে উমরাহ্‌ পালন করা জায়িয
৩২. অধ্যায়ঃ ইহরাম বাঁধার সময় কুরবানীর পশুর কুঁজের কিছু অংশ ফেঁড়ে দেয়া এবং গলায় মালা পরানো
৩৩. অধ্যায়ঃ উমরায় চুল খাটো করা
৩৪. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর তালবিয়াহ্ পাঠ এবং কুরবানীর জন্তু প্রসঙ্গে
৩৫. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর উমরার সংখ্যা ও সময়
৩৬. অধ্যায়ঃ রমাযান মাসের উমরার ফযিলত

৩১. অধ্যায়ঃ হজ্জের মাসসমূহে উমরাহ্‌ পালন করা জায়িয

২৮৯৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ জাহিলী যুগে লোকেরা হজ্জের মাসসমূহে উমরাহ্ পালন করাকে পৃথিবীর বুকে সর্বাপেক্ষা বড় অপরাধ মনে করত এবং মুহার্রম মাসকে সফর মাস হিসেবে গণনা করত। তারা বলত, যখন উটের পিঠ ভালো হয়ে যাবে, হাজীদের পদচিহ্ন লুপ্ত হয়ে যাবে এবং সফর মাস অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন যে ব্যক্তি উমরাহ্ করিতে চায়, তার জন্য তা করা জায়িয হইবে। নবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ হজ্জের ইহরাম বেঁধে যিলহজ্জের চার তারিখে মাক্কায় পৌঁছলে তিনি তাদের হজ্জের ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিণত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু এ নির্দেশ তাদের কাছে গুরুতর কাজ বলে মনে হল। অতএব তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কিরূপে ইহরামমুক্ত হব? তিনি বলিলেন, সম্পূর্ণরূপে ইহরামমুক্ত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৭৪]

২৯০০. আবুল আলিয়াহ্ আল বার্রা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন : রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন। তিনি যিলহজ্জ মাসের ৪ তারিখের পর [মক্কা] পৌঁছলেন এবং ফজরের নামাজ আদায় করিলেন। নামাজ শেষে তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি এ ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিণত করিতে চায়, সে তা করিতে পারে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৭৫]

২৯০১. শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। রাওহ্ ও ইয়াহ্ইয়া ইবনি কাসীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় নাস্র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর অনুরূপ কথা আছে : “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন।” আবু শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় আছে : “আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম।” তাদের সকলের বর্ণনায় আছে : “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল বাত্বহা নামক স্থানে ফজরের নামাজ আদায় করিলেন।” কিন্তু আল জাহযামী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় এ কথার উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৭৬]

২৯০২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ হজ্জের ইহরাম বেঁধে [যিলহজ্জ মাসের প্রথম] দশ দিনের চারদিন অতিবাহিত হওয়ার পর মাক্কায় উপনীত হন। তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিলেন, তারা যেন এ ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিণত করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৭৭]

২৯০৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যি তুওয়া নামক স্থানে ফজরের নামাজ আদায় করিলেন। যিলহজ্জ মাসের চারদিন অতিক্রান্ত হবার পর [মাক্কায়] পৌঁছলেন এবং তাহাঁর সাহাবীগণের নির্দেশ দিলেন, তারা যেন নিজেদের ইহরামকে উমরায় পরিণত করে- কিন্তু যার সাথে কুরবানীর পশু আছে, সে ব্যতীত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৭৮]

২৯০৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এই সে উমরাহ্ যা থেকে আমরা ফায়দাহ উঠিয়েছি। অতএব যার সাথে কুরবানীর পশু নেই- সে যেন সম্পূর্ণরূপে ইহরাম খুলে ফেলে। কেননা উমরাকে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত হজ্জের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮০, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৭৯]

২৯০৫. আবু জামরাহ্‌ আয্‌ যুবাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি তামাত্তু হজ্জ করলাম। কতিপয় লোক আমাকে তা করিতে নিষেধ করিল। আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে তা করার নির্দেশ দিলেন। এরপর আমি বায়তুল্লাহ্‌তে আসলাম এবং ঘুমালাম।

স্বপ্নে আমার কাছে এক ব্যক্তি এসে বলিল, উমরা কবূল হয়েছে এবং হজ্জও কবূল হয়েছে। আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে এ স্বপ্নের কথা বললাম। তিনি বলিলেন,

 اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার! এতো আবুল ক্বাসিম রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮১, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮০]

৩২. অধ্যায়ঃ ইহরাম বাঁধার সময় কুরবানীর পশুর কুঁজের কিছু অংশ ফেঁড়ে দেয়া এবং গলায় মালা পরানো

২৯০৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুল হুলায়ফাহ্ নামক স্থানে যুহরের নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর নিজের [কুরবানীর] উষ্ট্রী নিয়ে আসতে বলিলেন এবং কুঁজের ডান দিক দিয়ে ফেড়ে দিলেন। ফলে রক্ত প্রবাহিত হল। অতঃপর তিনি এর গলায় দুটি পাদুকার মালা পরিয়ে দিলেন। এরপর নিজের বাহনে আরোহণ করিলেন। অতঃপর তা যখন তাঁকে নিয়ে আল বায়দায় পৌঁছল, তখন তিনি হজ্জের তালবিয়াহ পাঠ করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮২, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮১]

২৯০৭. ক্বাতাদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, অবশ্য তিনি এখানে বলেছেন, যখন নবী [সাঃআঃ] যুল হুলায়ফাহ্‌ এলেন”- তবে “যুহরের নামাজ আদায় করিয়াছেন” এ কথা উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮২]

২৯০৮. ক্বাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু হাস্সান আরাজ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, আল হুযায়ম গোত্রের এক ব্যক্তি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলিল, আপনি এ কী ফাতাওয়া দিচ্ছেন যা নিয়ে লোকেরা জটিলতায় পড়েছে? [তা এই] যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ-এর তাওয়াফ করিবে, সে ইহরামমুক্ত হইতে পারবে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, এটা তোমাদের নবী [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত, তা তোমাদের মনঃপুত হোক বা না হোক।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৩]

২৯০৯. আবু হাস্সান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলা হল, এ ব্যাপারটি লোকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ-এর তাওয়াফ করে, সে হালাল হয়ে যায় এবং তার ইহরাম উমরায় পরিণত হয় [যদিও হজ্জের ইহরাম হয়ে থাকে]। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, এটা তোমাদের নবী [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত যদিও তোমাদের নাক ধূলিমলিন হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৪]

২৯১০. আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিতেন, যে ব্যক্তি [মাক্কায় পৌঁছে] বায়তুল্লাহ-এর তাওয়াফ করিল, সে ইহরামমুক্ত হয়ে গেল- সে হজ্জ পালনকারী হোক অথবা অন্য কিছু [উমরাহ্‌] পালনকারী। আমি [ইবনি জুরায়জ] আত্বাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কিসের ভিত্তিতে এ কথা বলেন? তিনি বলিলেন, আল্লাহর কালামের ভিত্তিতে :

‏ ثُمَّ مَحِلُّهَا إِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيقِ

“অতঃপর এগুলো কুরবানীর স্থান মর্যাদাবান ঘরের নিকট” – [সুরা হজ্জ ২২ : ৩৩]। আমি বললাম, তা তো আরাফাহ্‌ থেকে ফেরার পর। তিনি বলিলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিতেন, [কুরবানীর স্থান সম্মানিত ঘরের নিকট] তা আরাফায় উকূফের পর হোক অথবা পূর্বে। তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর কার্যক্রম থেকে প্রমাণ গ্রহণ করিয়াছেন। নবী [সাঃআঃ] স্বয়ং বিদায় হজ্জের সময়ে ইহরাম খোলার নির্দেশ দেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৫]

৩৩. অধ্যায়ঃ উমরায় চুল খাটো করা

২৯১১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুআবিয়াহ [রাদি.] আমাকে বলিলেন, তুমি কি জান আমি কাঁচি দিয়ে মারওয়াহ্‌ পাহাড়ের নিকট রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার চুল ছেঁটে দিয়েছি? আমি তাঁকে বললাম, এটা আপনার বিরুদ্ধে দলীল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৬]

২৯১২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফ্ইয়ান [রাদি.] তাকে অবহিত করে বলেছেন, আমি মারওয়াহ্ পাহাড়ে একটি কাঁচির সাহায্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার চুল ছেঁটে দিয়েছি। অথবা আমি [অধঃস্তন রাবীর সন্দেহ] মারওয়াহ্ পাহাড়ের উপর কাঁচির সাহায্যে তাহাঁর মাথার চুল ছাঁটতে দেখেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৭]

২৯১৩. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা উচ্চৈঃস্বরে হজ্জের তালবিয়াহ পাঠ করিতে করিতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা মাক্কায় পৌঁছলে তিনি আমাদের তা উমরায় পরিণত করার নির্দেশ দিলেন। তালবিয়ার দিন এলে আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধে মিনার দিকে রওনা হলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৮]

২৯১৪. জাবির [রাদি.] ও আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তারা বলেন, আমরা উচ্চৈঃস্বরে হজ্জের তালবিয়াহ পাঠ করিতে করিতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মাক্কায় উপনীত হলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯০, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৮৯]

২৯১৫. আবু নায্রাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি তার নিকট উপস্থিত হয়ে বলিল, [তামাত্তু হজ্জ ও মুত্আহ্ বিবাহ] সম্পর্কে ইবনি আব্বাস ও ইবনি যুবায়র [রাদি.]-এর মধ্যে মতবিরোধ চলছে। জাবির [রাদি.] বলিলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে তা করেছি। এরপর উমর [রাদি.] আমাদের তা করিতে নিষেধ করেন। অতএব আমরা আর কখনও তা করিনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯১, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯০]

৩৪. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর তালবিয়াহ পাঠ এবং কুরবানীর জন্তু প্রসঙ্গে

২৯১৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আলী [রাদি.] ইয়ামান থেকে আগমন করলে নবী [সাঃআঃ] তাকে জিজ্ঞেস করিলেন : তুমি কিসের ইহরাম বেঁধেছ? তিনি বলিলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ উদ্দেশে ইহরাম বেঁধেছি। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে আমি [উমরাহ্ করার পর] ইহরাম খুলে ফেলতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯২, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯১]

২৯১৭. সালীম ইবনি হাইয়্যান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯২]

২৯১৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এভাবে হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের তালবিয়াহ পাঠ করিতে শুনেছি : “লাব্বায়কা উম্রাতান ওয়া হাজ্জান, লাব্বায়কা উম্রাতান ওয়া হাজ্জান”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৪. ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৩]

২৯১৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি : আমি উমরাহ্ ও হজ্জ উভয়ের ইহরাম বাঁধছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৫. ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৪]

২৯২০. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, সে সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! মারইয়াম পুত্র ঈসা [আঃ] নিশ্চিত রাওহা উপত্যকায় হজ্জ অথবা উমরাহ্‌ অথবা উভয়ের তালবিয়াহ্‌ পাঠ করবেন। {২১}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৬. ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৫]

{২১} এটা বাস্তবায়িত হইবে ক্বিয়ামাতের পূর্বমুহূর্তে যখন ঈসা [আঃ] পুনরায় দুনিয়াতে আসবেন। এ হইতে জানা গেল যে, কুরআনের বিধান ক্বিয়ামাত পর্যন্ত চালু থাকিবে। ঈসা [আঃ] অবশ্যই অবতরণ করবেন এবং এ ইসলামী শারীআত মোতাবেকই আমাল করবেন।

২৯২১. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, “সে সত্তার শপথ! যাঁর হাতে মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর প্রাণ”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৭. ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৬]

২৯২২. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সে সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ… পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৮. ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৭]

৩৫. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর উমরার সংখ্যা ও সময়

২৯২৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চারবার উমরাহ্ করিয়াছেন এবং হজ্জের সাথের উমরাহ্ ব্যতীত সকল উমরাহ্ই যুল ক্বাদায় করেন। [১] হুদায়বিয়াহ্ থেকে বা হুদায়বিয়ার সময়ের উমরাহ্ যুল ক্বাদাহ্ মাসে, [২] পরবর্তী বছরের উমরাহ্ যুল ক্বাদাহ্ মাসে, [৩] জিরানাহ্ থেকে কৃত উমরাহ, যেখানে হুনায়নের গনীমাতের সম্পদ বণ্টন করা হয়েছিল, সে উমরাহ্ যুল ক্বাদাহ্ মাসে এবং [৪] আর একটি উমরাহ্ যা হজ্জের সাথে করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৯৯. ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৮]

২৯২৪. ক্বাতাদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আনাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কতবার হজ্জ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, একবার এবং উমরাহ্‌ করিয়াছেন চারবার।… অবশিষ্ট বর্ণনা হাদ্দাদের হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০০, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৯৯]

২৯২৫. আবু ইসহাক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি যায়দ ইবনি আরক্বাম [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে থেকে কয়বার যুদ্ধ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, সতেরবার। রাবী বলেন, যায়দ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] আমাকে আরও বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঊনিশবার যুদ্ধ করিয়াছেন এবং তিনি হিজরাত করার পরে একবার হজ্জ করিয়াছেন, তা হল বিদায় হজ্জ। আবু ইসহাক্ব আরও বলেন, তিনি মাক্কাহ্ থেকেও একবার হজ্জ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০১, ইসলামিক সেন্টার- ২৯০০]

২৯২৬. উরওয়াহ্‌ ইবনি যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি ও ইবনি উমর [রাদি.] আয়িশা [রাদি.]-এর ঘরে ঠেস দিয়ে বসেছিলাম এবং আমরা মিসওয়াক দিয়ে তার দাঁত মাজার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আবু আবদুর রহমান [ইবনি উমর]! নবী [সাঃআঃ] কি রজব মাসে উমরাহ্‌ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি [উরওয়াহ্‌] বললাম, হে আম্মা! আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন আবু আবদুর রহমান কী বলছেন? তিনি বলিলেন, সে কী বলছে? আমি বললাম, তিনি বলছেন, নবী [সাঃআঃ] রজব মাসে উমরাহ্‌ করিয়াছেন। তিনি বলিলেন, আল্লাহ তাআলা আবু আবদুর রহমানকে ক্ষমা করুন। আমার জীবনের শপথ, তিনি রজব মাসে কখনও উমরাহ্‌ করেননি। আর তিনি যখনই উমরাহ্‌ করিয়াছেন, অবশ্যই আবু আবদুর রহমান তাহাঁর সঙ্গে ছিল।

রাবী বলেন, ইবনি উমর [রাদি.] কথাগুলো শুনছিলেন, কিন্তু তিনি হ্যাঁ-ও বলেননি এবং না-ও বলেননি, বরং নীরব ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০২, ইসলামিক সেন্টার- ২৯০১]

২৯২৭. মুজাহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ও উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র মসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] আয়িশার হুজরায় বসা ছিলেন এবং লোকেরা মসজিদে চাশ্‌তের নামাজ আদায় করছিল। আমরা এদের নামাজ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, তা বিদআত। তাকে উরওয়াহ্ বলিলেন, হে আবু আবদুর রহমান! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কতবার উমরাহ্ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, চারটি উমরাহ্, এর একটি রজব মাসে। আমরা তার কথা অসত্য মনে করা ও তা রদ করা অপছন্দ করলাম। আমরা হুজরাহ থেকে আয়িশা [রাদি.]-এর মিসওয়াক করার শব্দ শুনতে পেলাম। উরওয়াহ্ বলিলেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আবু আবদুর রহমান কী বলেছেন তা কি আপনি শুনছেন না? তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, সে কী বলে? উরওয়াহ্ বলিলেন, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চারবার উমরাহ্ করিয়াছেন, এর একটি ছিল রজব মাসে। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ তাআলা আবু আবদুর রহমানকে রহম করুন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখনই উমরাহ্ করিয়াছেন, সে তার সাথেই ছিল। তিনি কখনও রজব মাসে উমরাহ্ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৯০২]

৩৬. অধ্যায়ঃ রমাযান মাসের উমরার ফযিলত

২৯২৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক আনসারী মহিলাকে বলিলেন যার নাম ইবনি আব্বাস [রাদি.] উল্লেখ করেছিলেন কিন্তু আমি তার নাম ভুলে গেছি- আমাদের সাথে হজ্জ করিতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? মহিলা বলিল, আমাদের পানি বহনকারী মাত্র দুটি উট আছে। আমার ছেলের বাপ [স্বামী] ও তার ছেলে এর একটিতে চড়ে হজ্জ করেন এবং অপরটি আমাদের জন্য রেখে যান পানি বহনের উদ্দেশে। তিনি বলিলেন, রমাযান মাস এলে তুমি উমরাহ্‌ কর। কারণ এ মাসের উমরাহ্‌ একটা হজ্জের সমান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৯০৩]

২৯২৯. ইবনি আব্বাস [রাদি. হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] উম্মু সিনান নাম্নী এক আনসারী মহিলাকে বললেনঃ আমাদের সাথে হজ্জ করিতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? মহিলা বলিল, অমুকের পিতা- তার স্বামীর দুটি পানি বহনকারী উট আছে। এর একটি নিয়ে সে ও তার ছেলে হাজ্জে গিয়েছে। অপরটির সাহায্যে আমাদের গোলাম পানি বহন করছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে রমাযান মাসের উমরাহ্ হজ্জের সমান কিংবা তিনি বলেছেন, আমাদের সঙ্গে একটি হজ্জের সমান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৯০৪]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply