উত্তম শাসক, খলীফা, বাইআত গ্রহন

উত্তম শাসক, খলীফা, বাইআত গ্রহন

উত্তম শাসক ও নিকৃষ্ট শাসক >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৮. অধ্যায়ঃ পাপের কাজ ছাড়া অন্য সব ব্যাপারে শাসকের আনুগত্য আবশ্যক এবং পাপ কাজের ক্ষেত্রে [আনুগত্য] হারাম
৯. অধ্যায়ঃ শাসক যখন আল্লাহ্‌ভীতির আদেশ দেন এবং ন্যায় বিচার করেন তখন তার জন্য পুরস্কার রয়েছে
১০. অধ্যায়ঃ যে খলীফার কাছে প্রথম বাইআত হইবে তাকে অগ্রাধিকার দিবে।
১১. অধ্যায়ঃ শাসকের যুলুম ও অন্যায় পক্ষপাতিত্বের সময় ধৈর্যধারণের আদেশ
১২. অধ্যায়ঃ প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করলেও শাসকদের অনুগত থাকা
১৩. অধ্যায়ঃ ফিতনার যুগে [দাঙ্গা ও দুর্যোগ অবস্থায়] মুসলিমদের জমাআত আঁকড়ে থাকা অত্যাবশ্যক এবং কুফরের দিকে আহবানকারীদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার নির্দেশ
১৪. অধ্যায়ঃ মুসলিম সমাজের ঐক্য বিনষ্টকারী সম্পর্কে হুকুম
১৫. অধ্যায়ঃ দু খলীফার বাইআত গ্রহণ প্রসঙ্গ
১৬. অধ্যায়ঃ শরীআত গর্হিত কাজে আমীরের আনুগত্য ত্যাগ করা ওয়াজিব, তবে যতক্ষণ তারা নামাজ আদায়কারী থাকিবে ততক্ষণ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে না
১৭. অধ্যায়ঃ উত্তম শাসক ও নিকৃষ্ট শাসক
১৮. অধ্যায়ঃ যুদ্ধের অভিপ্রায়কালে ঈমাম কর্তৃক সেনাদলের বাইআত গ্রহন উত্তম এবং বৃক্ষতলে বাইআতে রিযওয়ান প্রসঙ্গ
১৯. অধ্যায়ঃ মুহাজিরের জন্য স্বদেশে বসবাসের উদ্দেশে ফিরে আসা নিষিদ্ধ
২০. অধ্যায়ঃ মাক্কাহ্‌ বিজয়ের পর ইসলাম, জিহাদ ও পুণ্যময় কাজের বাইআত আর বিজয়ের পর হিজরাত নেই[ মাক্কাহ্‌ থেকে মাদীনায়]- এ কথার অর্থ সংক্রান্ত আলোচনা
২১. অধ্যায়ঃ মহিলাদের বাইআত গ্রহণ পদ্ধতি
২২. অধ্যায়ঃ সাধ্যানুসারে মেনে চলা ও আনুগত্য করার বাইআত

৯. অধ্যায়ঃ শাসক যখন আল্লাহ্‌ভীতির আদেশ দেন এবং ন্যায় বিচার করেন তখন তার জন্য পুরস্কার রয়েছে

৪৬৬৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] –এর সুত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈমাম বা শাসক ঢাল সরূপ। তার নেতৃত্বে যুদ্ধ করা হয় এবং শত্রুর ক্ষতি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। সে যদি তাকওয়া বা আল্লাহভীতি ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে শাসনকার্য পরিচালনা করে, তবে তার জন্য সে পুরস্কার হইবে। আর যদি ন্যায় ব্যতীত অন্য কিছু আদেশ করে তবে সে পাপের জন্য দায়ী হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২০, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২১]

১০. অধ্যায়ঃ যে খলীফার কাছে প্রথম বাইআত হইবে তাকে অগ্রাধিকার দিবে।

৪৬৬৭. আবু হাযিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা [রাদি.] –এর সাথে পাঁচ বছর থেকেছি। আমি তার কাছে শুনেছি, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ বানী ইসরাঈলদের পরিচালনা করিতেন নবীগন। তাঁদের মধ্যেকার একজন নবী মৃত্যুবরণ করলে অপর একজন নবী তার স্থলাভিষিক্ত হইতেন। আমার পরে আর কোন নবী নেই বরং খলীফাগণ হইবেন এবং তারা সংখ্যায় প্রচুর হইবেন। তখন সাহাবীগন বললেনঃ তাহলে আপনি [এ ব্যাপারে] আমাদেরকে কি আদেশ করেন? তিনি বলিলেন, যার হাতে প্রথম বাইআত বা অনুগত্যের শপথ করিবে, তাহাঁরই অনুগত্য করিবে এবং তাঁদেরকে তাঁদের হক প্রদান করিবে, আল্লাহ্‌ই তাদেরকে সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তারা কতটুকু দায়িত্ব পালন করেছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২১, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২২]

৪৬৬৮. হাসান ইবনি ফুরাত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

উপরোক্ত বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২২, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৩]

৪৬৬৯. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন, আমার পরে স্বজনপ্রীতি ও তোমাদের অপছন্দনীয় অনেক কিছু ঘটবে। তখন সাহাবাগণ বলিলেন, আমাদের মধ্যকার যাঁরা তা পাবে তাঁদের ব্যাপারে আপনার নির্দেশ কি হে আল্লাহর রসূল? তিনি বলিলেন, তোমাদের উপর আরোপিত দায়িত্ব তোমরা পালন করে যাবে, আর তোমাদের প্রাপ্য হক তোমরা আল্লাহ্‌র কাছে চাইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৩, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৪]

৪৬৭০. আবদুর রহমান ইবনি আবদ রাব্বিল কাবা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি একদা মসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাদি.] কাবার ছায়ায় বসেছিলেন। লোকজন তাকে চারপাশ থেকে ঘিরেছিল। আমি তাদের নিকট গেলাম এবং তাহাঁর পাশেই বসে পড়লাম। তখন তিনি বলিলেন, কোন সফরে আমরা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে ছিলাম। আমরা একটি অবস্থান গ্রহণ করলাম। আমাদের মধ্যেকার কেউ তখন তার তাঁবু ঠিকঠাক করছিল, কেউ তীর ছুঁড়ছিল, কেউ তার পশুপাল দেখাশুনা করছিল। এমন সময় রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নকীব হাঁক দিল নামাযের ব্যবস্থা প্রস্তুত! তখন আমরা গিয়ে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পাশে মিলিত হলাম। তিনি বলিলেন, আমার পূর্বে এমন কোন নবী অতিবাহিত হননি যাঁর উপর এ দায়িত্ব বর্তায়নি যে, তিনি তাদের জন্য যে মঙ্গলজনক ব্যাপার জানতে পেরেছেন তা উম্মাতদেরকে নির্দেশনা দেননি এবং তিনি তার জন্য যে অনিষ্টকর ব্যাপার জানতে পেরেছেন, সে বিষয়ে তাদেরকে সাবধান করেননি। আর তোমাদের এ উম্মাত [উম্মাতে মুহাম্মাদ]-এর প্রথম অংশে তার কল্যাণ নিহিত এবং এর শেষ অংশ অচিরেই নানাবিধ পরীক্ষা ও বিপর্যয়ের এবং এমন সব ব্যাপারের সম্মুখীন হইবে, যা তোমাদের নিকট অপছন্দনীয় হইবে। এমন সব বিপর্যয় একাদিক্রমে আসতে থাকিবে যে , একটি অপরটিকে ছোট প্রতিপন্ন করিবে। একটি বিপর্যয় আসবে তখন মুমিন ব্যক্তি বলবে – এটা আমার জন্য ধ্বংসাত্মক, তারপর যখন তা দূর হয়ে অপর বিপর্যয়টি আসবে তখন মুমিন ব্যক্তি বলবে, আমি তো শেষ হয়ে যাচ্ছি ইত্যাদি। সুতরাং যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে চায় এবং জান্নাতে প্রবেশ করিতে চায় –তার মৃত্যু যেন এমন অবস্থায় আসে যে, সে আল্লাহ্‌ ও আখিরাতের দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এবং সে যেন মানুষের সাথে এমনি আচরণ করে যে আচরণ সে নিজের জন্য পছন্দ করে। আর যে ব্যক্তি কোন ঈমাম [বা নেতার] হাতে বাইআত হয় –আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে তার হাতে হাত দিয়ে এবং অন্তরে সে ইচ্ছা পোষণ করে, তবে সে যেন সাধ্যনুসারে তার অনুগত্য করে যায়। তারপর যদি অপর কেউ তার সাথে [নেতৃত্ব লাভের অভিলাষে] ঝগড়ায় প্রবৃত্ত হয় তবে ঐ পরবর্তী জনের গর্দান উড়িয়ে দেবে। [রাবী বলেন] তখন আমি তাহাঁর নিকটে ঘেঁষলাম এবং তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে আল্লাহ্‌র কসম দিয়ে বলছি সত্যিই আপনি [নিজ কানে] কি তা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট থেকে শুনেছেন? তখন তিনি তাহাঁর দুকান ও অন্তঃকরণের দিকে দুহাত দিয়ে ইশারা করে বলিলেন, আমার দুকান তা শুনেছে এবং আমার অন্তঃকরণ তা সংরক্ষণ করেছে। তখন আমি তাঁকে লক্ষ্য করে বললাম, ঐ যে আপনার চাচাতো ভাই মুআবিয়্যাহ [আল্লাহ্‌ তার প্রতি সন্তুষ্ট হন] তিনি আমাদেরকে আদেশ দেন যেন আমরা আমাদের পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করি আর নিজেদের মধ্যে পরস্পরে হানাহানি করি অথচ আল্লাহ্‌ বলেছেন,  হে মুমিনগণ ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, ব্যবসার মাধ্যমে পারস্পরিক সন্তুষ্টির ভিত্তিতে ব্যতীত এবং তোমরা পরস্পরে হানাহানি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তোমাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান –[সূরা আন নিসা ৪: ২৯]। রাবী বলেন, তখন তিনি কিছুক্ষণের জন্য চুপ থাকলেন। তারপর বলিলেন, আল্লাহ্‌র অনুগত্যের ব্যাপারসমূহে তুমি তার আনুগত্য করিবে এবং আল্লাহ্‌র অবাধ্যতার বিষয়গুলোতে তার অবাধ্যতা করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৪, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৫]

৪৬৭১. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৫, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৬]

৪৬৭২. আব্দুর রহমান ইবনি আবদ রাব্বিল কাবাহ সায়িদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি একদল লোককে কাবার নিকট দেখলাম। অতঃপর আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৬, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৭]

১১. অধ্যায়ঃ শাসকের যুলুম ও অন্যায় পক্ষপাতিত্বের সময় ধৈর্যধারণের আদেশ

৪৬৭৩. উসায়দ ইবনি হুরায়ব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক আনসার রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করলো এবং বললো আপনি ওমুককে যেভাবে কর্মচারী নিযুক্ত করিয়াছেন, সেভাবে আমাকেও কি কর্মচারী নিয়োগ করবেন না? তখন তিনি বলিলেন, আমার পরে তোমরা অনেক পক্ষপাতিত্ব দেখবে তখন তোমরা ধৈর্যধারণ করিবে যে পর্যন্ত না তোমরা হাওয [কাওসার]-এ আমার সাথে মিলিত হও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৭, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৮]

৪৬৭৪. উসায়দ ইবনি হুরায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক আনসার রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করিল। এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৮, ইসলামিক সেন্টার-৪৬২৯]

৪৬৭৫. উবাইদুল্লাহ ইবনি মুআয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতেও উক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাথে একান্তে মিলিত হন বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৮, ইসলামিক সেন্টার-৪৬৩০]

১২. অধ্যায়ঃ প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করলেও শাসকদের অনুগত থাকা

৪৬৭৬. ওয়ায়িল হাযরামী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সালামাহ ইবনি ইয়াযীদ আল জুফী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে এ মর্মে প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহ্‌র নবী! যদি আমাদের উপর এমন শাসকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তারা তাদের হক তো আমাদের কাছে দাবী করে কিন্ত আমাদের হক তারা দেয় না। এমতাবস্থায় আপনি আমাদের কে কি করিতে বলেন? তিনি তার উত্তর এড়িয়ে গেলেন। তিনি আবার তাঁকে প্রশ্ন করিলেন। আবার তিনি এড়িয়ে গেলেন। এভাবে প্রশ্নকারী দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারও একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করিলেন। তখন আশআস ইবনি কায়স [রাদি.] তাকে [সালামাকে] টেনে নিলেন এবং বলিলেন, তোমরা শুনবে এবং মানবে। কেননা তাদের উপর আরোপিত দায়িত্বের বোঝা তাদের উপর বর্তাবে আর তোমাদের উপর আরোপিত দায়িত্বের বোঝা তোমাদের উপর বর্তাবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬২৯, ইসলামিক সেন্টার-৪৬৩১]

৪৬৭৭. সিমাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। এ বর্ণনাতে আছে, “আশ আস ইবনি কায়স তাকে টেনে নিলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা শুনবে ও মানবে। কেননা তাদের দায়িত্বের বোঝা তাদের উপর এবং তোমাদের দায়িত্বের বোঝা তোমাদের উপর বর্তাবে।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩২]

১৩. অধ্যায়ঃ ফিতনার যুগে [দাঙ্গা ও দুর্যোগ অবস্থায়] মুসলিমদের জমাআত আঁকড়ে থাকা অত্যাবশ্যক এবং কুফরের দিকে আহবানকারীদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার নির্দেশ

৪৬৭৮. আবু ইদ্রীস খাওলানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি হুযাইফাহ্ ইবনি ইয়ামান [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি যে, লোকজন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট কল্যাণের বিষয়ে প্রশ্ন করতো আর আমি তাহাঁর নিকট প্রশ্ন করতাম অকল্যাণ সম্পর্কে এ ভয়ে যে, পরে না তা আমাকে পেয়ে বসে। তাই আমি [কোন এক সময়] প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা ছিলাম অজ্ঞতা ও অমঙ্গলের মধ্যে। তারপর আল্লাহ আমাদের জন্য এ কল্যাণ প্রদান করিলেন। এ কল্যাণের পরও কি কোন অকল্যাণ আছে? তিনি বলিলেন, হাঁ। তারপর আমি বললাম, ঐ অকল্যাণের পর কি আবার কল্যাণ আছে? তিনি বলিলেন, হাঁ, তবে তাতে ধুম্রতা আছে। আমি বললাম, কী সে ধুম্রতা? তিনি বলিলেন, তখন এমন একদল লোকের উদ্ভব হইবে যারা আমার প্রবর্তিত পদ্ধতি ছাড়া অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করিবে, আমার প্রদর্শিত হিদায়াতের পথ ছেড়ে অন্যত্র হিদায়াত তুমি খুঁজবে। দেখবে তাদের মধ্যে ভাল মন্দ উভয়টাই। তখন আমি আরয করলাম, এ কল্যাণের পর কি কোন অকল্যাণ আছে? তিনি বলিলেন, হাঁ, জাহান্নামের দরজার দিকে আহ্বানকারীদের উদ্ভব হইবে। যারা তাদের ডাকে সাড়া দেবে তারা তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করিবে। আমি তখন বললাম, হে আল্লাহর রসূল! তাদের পরিচয় ব্যক্ত করুন। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তাদের বর্ণ হইবে আমাদেরই মতো এবং তারা আমাদেরই ভাষায় কথা বলবে। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! যদি সে পরিস্থিতির সম্মুখীন হই তবে আমাদেরকে আপনি কী করিতে বলেন? তিনি বলিলেন, তোমরা মুসলিমদের জামাআত ও ইমামের সাথে আকঁড়ে থাকিবে। আমি বললাম, যদি তাদের কোন জামাআত বা ঈমাম না থাকে? তিনি বলিলেন, তা হল সে সব বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে তুমি আলাদা থাকিবে-যদিও তুমি একটি বৃক্ষমূল দাঁত দিয়ে আকঁড়ে থাক এবং এ অবস্থায়ই মৃত্যু তোমার নাগাল পায়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৩]

৪৬৭৯. হুযাইফাহ্ ইবনি ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন- আমি আরয করলাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা ছিলাম অকল্যাণের মধ্যে; তারপর আল্লাহ আমাদের জন্য কল্যাণ নিয়ে আসলেন। আমরা তাতে অবস্থান করছি। এ কল্যাণের পিছনে কি আবার কোন কল্যাণ আছে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, এ কল্যাণের পিছনে কি আবার কোন অকল্যাণ আছে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ! আমি বললাম, তা কিভাবে? তিনি বলিলেন, আমার পরে এমন সব নেতার উদ্ভব হইবে, যারা আমার হিদায়াতে হিদায়াতপ্রাপ্ত হইবে না এবং আমার সুন্নাতও তারা অবলম্বন করিবে না। অচিরেই তাদের মধ্যে এমন সব ব্যক্তির উদ্ভব হইবে, যাদের আত্মা হইবে মানব দেহে শাইতানের আত্মা। রাবী বলেন, তখন আমি বললাম, তখন আমরা কী করবো হে আল্লাহর রসূল! যদি আমরা সে পরিস্থিতির সম্মুখীন হই? বলিলেন, তুমি আমীরের কথা শুনবে এবং মানবে যদি তোমার পিঠে বেত্রাঘাত করা হয় বা তোমার ধন-সম্পদ কেড়েও নেয়া হয়, তবুও তুমি শুনবে এবং মানবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৪]

৪৬৮০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত, যে ব্যক্তি [আমীরের] আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গেল এবং জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করিল। আর যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন নেতৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করে, গোত্রপ্রীতির জন্য ক্রুদ্ধ হয় অথবা গোত্র প্রীতির দিকে আহ্বান করে অথবা গোত্রের সাহায্যার্থে যুদ্ধ করে [আল্লাহর সন্তুষ্টির কোন ব্যাপার থাকে না] আর তাতে নিহত হয়, সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করে। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের উপর আক্রমণ করে, আমার উম্মাতের ভালমন্দ সকলকেই নির্বিচারে হত্যা করে। মুমিনকেও রেহাই দেয় না এবং যার সাথে সে ওয়াদাবদ্ধ হয় তার ওয়াদাও রক্ষা করে না, সে আমার কেউ নয়, আমিও তার কেউ নই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৫]

৪৬৮১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৬]

৪৬৮২. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গেল এবং জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল এবং মৃত্যুবরণ করলো, সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করলো এবং যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন নেতৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করে, গোত্রের টানে ক্রুদ্ধ হয় এবং গোত্র প্রীতির জন্যেই যুদ্ধ করে। সে আমার উম্মাত নয়। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মাত থেকে বেরিয়ে আমার উম্মাতেরই পূণ্যবান ও পাপাচারী সকলের গর্দান কাটে, মুমিনদেরকেও রেহাই দেয় না এবং যার সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয় তার অঙ্গীকারও পালন করে না, সে আমার উম্মাত নয়।

[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৭]

৪৬৮৩. মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না এবং ইবনি বাশ্শার হইতে বর্ণীতঃ

এ হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। কিন্তু ইবনি মুসান্না তাহাঁর বর্ণনায় নবী [সাঃআঃ]-এর উল্লেখ করেননি।

পক্ষান্তরে ইবনি বাশ্শার তাহাঁর বর্ণনায় “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন” বলে উল্লেখ করিয়াছেন যা উপর্যুক্ত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৮]

৪৬৮৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার আমীরের মধ্যে এমন কোন ব্যাপার দেখে যা সে অপছন্দ করে, তবে সে যেন ধৈর্যের পথ অবলম্বন করে। কেননা যে ব্যক্তি জামাআত থেকে সামান্য পরিমাণ সরে গেল এবং এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিল সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুই বরণ করলো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৩৯]

৪৬৮৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার আমীরের কোন কার্যকলাপ অপছন্দ করে, তার উচিত ধৈর্যধারণ করা। কেননা যে কোন ব্যক্তিই শাসকের থেকে [তার আনুগত্য থেকে] বেরিয়ে গিয়ে বিঘৎ পরিমাণ সরে যাবে এবং তারপর এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিবে, তার মৃত্যু জাহিলিয়্যাতের মৃত্যু হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪০]

৪৬৮৬. জুনদাব ইবনি আবদুল্লাহ বাজালী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন নেতৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করে, গোত্র প্রীতির দিকে আহ্বান জানায় এবং গোত্রপ্রীতির কারণেই সাহায্য করে, তার মৃত্যু জাহিলিয়্যাতের মৃত্যু।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪১]

৪৬৮৭. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] আবদুল্লাহ ইবনি মুতী [রাদি.]-এর নিকট এলেন তখন হার্রা [হৃদয় বিদারক]- এর ঘটনা ঘটেছে এবং যুগটা ছিল ইয়াযীদ ইবনি মুআবিয়ার যুগ। তখন তিনি [ইবনি মুতী] বলিলেন, আবু আবদুর রহমানের জন্য বিছানা পেতে দাও। তখন তিনি বলিলেন, আমি তোমার কাছে বসতে আসিনি, এসেছি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট যে হাদীস শুনেছি তা তোমাকে শুনাতে। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, যে ব্যক্তি [আমীরের] আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নিয়ে মৃত্যুবরণ করে সে কিয়ামাতের দিন আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় মিলিত হইবে যে তার কোন দলীল থাকিবে না। আর যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলো আর তার ঘাড়ে আনুগত্যের কোন চুক্তি নেই তার মৃত্যু জাহিলিয়্যাতের মৃত্যু হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪২]

৪৬৮৮. ইবনি নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৩]

৪৬৮৯. আমর ইবনি আলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত উক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৪]

১৪. অধ্যায়ঃ মুসলিম সমাজের ঐক্য বিনষ্টকারী সম্পর্কে হুকুম

৪৬৯০. আরফাজাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি বলিতে শুনেছি, অচিরেই নানা প্রকার ফিৎনা-ফাসাদের উদ্ভব হইবে। যে ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ উম্মাতের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াস চালাবে, তোমরা তরবারি দিয়ে তার গর্দান উড়িয়ে দেবে, সে যে কেউ হোক না কেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৫]

৪৬৯১. আরফাজা [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে্, তবে তাতে [আরবি] শব্দের স্থলে [আরবি] ব্যবহৃত হয়েছে এবং [আরবি] বা গর্দান মারবে স্থলে [আরবি] তোমরা তাকে হত্যা করিবে ব্যবহৃত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৬]

৪৬৯২. আরফাজা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, তোমাদের এক নেতার অধীনে একতাবদ্ধ থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি এসে তোমাদের শক্তি খর্ব করিতে উদ্যত হয় অথবা তোমাদের ঐক্য বিনষ্ট করিতে চায় তাকে তোমরা হত্যা করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৭]

১৫. অধ্যায়ঃ দু খলীফার বাইআত গ্রহণ প্রসঙ্গ

৪৬৯৩. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি দুখলীফার জন্য বাইআত গ্রহণ করা হয় তবে তাদের শেষোক্ত ব্যক্তিকে হত্যা করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৮]

১৬. অধ্যায়ঃ শরীআত গর্হিত কাজে আমীরের আনুগত্য ত্যাগ করা ওয়াজিব, তবে যতক্ষণ তারা নামাজ আদায়কারী থাকিবে ততক্ষণ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে না

৪৬৯৪. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই এমন কতক আমীরের উদ্ভব ঘটবে তোমরা তাদের চিনতে পারবে এবং অপছন্দ করিবে। যে ব্যক্তি তাদের সরূপ চিনল সে মুক্তি পেল এবং যে ব্যক্তি তাদের অপছন্দ করিল সে নিরাপদ হলো। কিন্তু যে ব্যক্তি তাদের পছন্দ করিল এবং অনুসরণ করিল [সে ক্ষতিগ্রস্ত হল]। লোকেরা জিজ্ঞেস করিল, আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ না, যতক্ষণ তারা নামাজ আদায়কারী থাকিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৪৯]

৪৬৯৫. নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সহধর্মিণী উম্মু সালামাহ্ [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের উপর এরূপ কতিপয় আমীর নিযুক্ত করা হইবে তোমরা তাদের চিনতে পারবে এবং অপছন্দ করিবে। যে তাদের অপছন্দ করিল সে মুক্তি পেল এবং যে প্রত্যাখান করিল সে নিরাপদ হলো। কিন্তু যে [তাঁদের প্রতি] সন্তুষ্ট থাকল এবং অনুসরণ করিল [সে ক্ষতিগ্রস্ত হলো] লোকেরা জানতে চাইল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? তিনি বলিলেন, না, যতক্ষণ তারা নামাজ আদায়কারী থাকিবে। [অপছন্দ করিল] অর্থাৎ, যে অন্তর থেকে তাদের অপছন্দ করিল এবং অন্তর থেকে প্রত্যাখ্যান করলো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫০]

৪৬৯৬. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। তবে এ হাদীসে [আরবি] স্থলে [আরবি] এবং [আরবি] শব্দের স্থলে [আরবি] রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫১]

৪৬৯৭. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: এরপর রাবী ইবনে মুবারক পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করে যান। তবে তিনি ঐ হাদীসে উল্লেখিত [আরবী] বাক্যাংশ উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫০; ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫২]

১৭. অধ্যায়ঃ উত্তম শাসক ও নিকৃষ্ট শাসক

৪৬৯৮. আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের সর্বোত্তম নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ভালবাস আর তারাও তোমাদের ভালবাসে। তারা তোমাদের জন্য দুআ করে, তোমরাও তাদের জন্য দুআ কর। পক্ষান্তরে তোমাদের সর্ব নিকৃষ্ট নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ঘৃণা কর আর তারাও তোমাদের ঘৃণা করে। তোমরা তাদেরকে অভিশাপ দাও আর তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ দেয়। বলা হল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি তাদেরকে তরবারি দ্বারা প্রতিহত করব না? তখন তিনি বলিলেন, না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে নামাজ কায়িম রাখবে। আর যখন তোমাদের শাসকদের মধ্যে কোনরূপ অপছন্দনীয় কাজ দেখবে; তখন তোমারা তাদের সে কাজকে ঘৃণা করিবে; কিন্তু [তাদের] আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নেবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫১; ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৩]

৪৬৯৯. আওফ ইবনি মালিক আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছি যে, তোমাদের সর্বোত্তম নেতা হচ্ছেন তারা যারা তোমাদেরকে ভালবাসে এবং তোমরাও তাদেরকে ভালবাস। তোমরা তাদের জন্য দুআ কর এবং তারাও তোমাদের জন্য দুআ করেন। আর তোমাদের নিকৃষ্ট নেতা হচ্ছে তারা যাদেরকে তোমরা ঘৃণা কর আর যারা তোমাদের ঘৃণা করে এবং তোমরা তাদেরকে অভিশাপ দাও আর তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ দেয়। সাহাবীগন বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল, এ সময় আমরা কি তাদেরকে প্রতিহত করবো না? তিনি বলিলেন, না, যে যাবৎ তারা তোমাদের মধ্যে নামাজ কায়িম রাখবে। তবে যার উপর কোন শাসক নিয়োগ করা হইবে আর সে তাকে আল্লাহর কোন নাফরমানী করিতে দেখবে তখন ঐ শাসক যতক্ষণ আল্লাহর নাফরমানীতে থাকিবে ততক্ষন তাকে ঘৃণা করিতে থাকিবে কিন্তু আনুগত্যের হাত গুটিয়ে নেবে না।

এ হাদীসের একজন রাবী ইবনি জাবির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার কাছে এ হাদীস বর্ণনাকারী রুযায়ককে আমি এ হাদীস বর্ণনাকালে বললাম, আল্লাহর কসম! হে আবু মিকদাম! সত্যিই কি আপনি মুসলিম ইবনি কারযাকে বর্ণনা করিতে শুনেছেন যে, তখন আপনি তাহাঁর দুহাঁটুর উপর ভর করে কিবলামুখী হয়ে গেলেন এবং বলিলেন, সে আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই আমি নিশ্চয়ই মুসলিম ইবনি কারযাকে বলিতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আওফ [রাদি.] কে বলিতে শুনেছি, আমি রসূলুল্লাহকে কে বলিতে শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫২; ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৪]

৪৭০০. আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৩; ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৫]

১৮. অধ্যায়ঃ যুদ্ধের অভিপ্রায়কালে ঈমাম কর্তৃক সেনাদলের বাইআত গ্রহন উত্তম এবং বৃক্ষতলে বাইআতে রিযওয়ান প্রসঙ্গ

৪৭০১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হুদাইবিয়ার দিন আমরা ছিলাম চৌদ্দশ, আমরা তাহাঁর [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর] হাতে বাইআত হলাম। আর উমর [রাদি.] তাহাঁর হাত ধরে [বাইআত গ্রহন করেছিলেন] সামুরা নামক গাছের তলে এবং তিনি বলেছেন, আমরা এ মর্মে তাহাঁর হাতে বাইআত হলাম যে, আমরা পলায়ন করবো না। কিন্তু “আমরা মৃত্যুবরণ করবো” এ শপথ গ্রহন করি নি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৬]

৪৭০২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর হাতে মৃত্যুর শপথ গ্রহন করিনি, আমরা তো তাহাঁর কাছে এ মর্মে শপথ করেছি যে, আমরা পলায়ন করবো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৭]

৪৭০৩. আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি শুনতে পেলেন যে, জাবির এ মর্মে জিজ্ঞেস করা হল, হুদাইবিয়ার দিন সাহাবীর সংখ্যা কত ছিল? তিনি বলিলেন, আমরা সংখ্যায় ছিলাম চৌদ্দশ। আমরা তাহাঁর [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর] হাতে বাইআত হলাম, আর উমর [রাদি.] তাহাঁর হাত ধরে [বাইআত হয়েছিলেন] সামুরাহ নামক গাছের তলে। জাদ ইবনি কায়স আনসারী ছাড়া আমরা সকলেই সেদিন তাহাঁর হাতে বাইআত হয়েছিলাম। আর সে তাহাঁর উটের পেটের নীচে আত্মগোপন করে বসে ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৮]

৪৭০৪. আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি জাবির [রাদি.] এর নিকট শুনতে পেলেন, তাকে এ মর্মে জিজ্ঞেস করা হল যে, নবী [সাঃআঃ] যুল হুলাইফাহ নামক স্থানে বাইআত গ্রহন করেছিলেন কি? তিনি বলিলেন না, বরং তিনি সেখানে নামাজ আদায় করিয়াছেন, আর হুদাইবিয়ার বৃক্ষের নিকট ব্যতীত অন্য কোন বৃক্ষের নিকট তিনি বাইআত গ্রহন করেননি।

রাবী ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে বলেছেন, তিনি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] কে বলিতে শুনেছেন, নবী [সাঃআঃ] হুদাইবিয়ার কূপের নিকট দুআ করেছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৫৯]

৪৭০৫. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হুদাইবিয়ার দিনে আমরা [সংখ্যায়] ছিলাম চৌদ্দশ। তখন নবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে লক্ষ্য করে বলিলেন, আজকের দিন তোমরা গোটা দুনিয়াবাসীর মধ্যে সর্বোত্তম।

জাবির [রাদি.] বলেন, যদি আমি দেখিতে পারতাম তবে তোমাদেরকে অবশ্যই সে গাছটির জায়গা দেখিয়ে দিতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬০]

৪৭০৬. মুহাম্মদ ইবনি মুসান্না ও ইবনি বাশশার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সালিম ইবনি আবু জাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে গাছ তলায় [বাইআতকারী] নবী সহচরদের [সংখ্যা] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তখন তিনি বলিলেন, আমরা যদি [সেদিন] এক লাখও হতাম তবুও [হুদাইবিয়ার কূপের পানি] আমাদের জন্য যথেষ্ট হতো। আমরা সংখ্যায় ছিলাম পনেরশ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬১]

৪৭০৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা যদি সংখ্যায় এক লাখও হতাম [হুদাইবিয়ার কূপের সে বারাকাতপ্রাপ্ত পানি] যথেষ্ট হতো, আমরা সংখ্যায় ছিলাম পনেরশ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬২]

৪৭০৮. সালিম ইবনি আবু জাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম, সেদিন আপনারা সংখ্যায় কত জন ছিলেন? তিনি বলিলেন, চৌদ্দশ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬১; ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৩]

৪৭০৯. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, বৃক্ষতলে বাইআত গ্রহণকারী সাহাবীদের সংখ্যা ছিল তেরশ। আর আসলাম গোত্রীয় লোকদের সংখ্যা ছিল মুহাজিরদের এক অষ্টমাংশ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৪]

৪৭১০. শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৫]

৪৭১১. মাকিল ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নিজেকে বৃক্ষ দিবসে দেখেছি [আমি তথায় উপস্থিত ছিলাম]। আর নবী [সাঃআঃ] তখন লোকদের বাইআত গ্রহণ করছিলেন, এ অবস্থায় আমি তাহাঁর মাথার উপর বৃক্ষের একটি ডাল সরিয়ে রেখেছিলাম। আমরা তখন সংখ্যায় ছিলাম চৌদ্দশ। রাবী বলেন, আমরা তাহাঁর কাছে মৃত্যুর বাইআত গ্রহণ করিনি, বরং আমরা পলায়ন করব না মর্মে শপথ গ্রহণ করেছিলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৬]

৪৭১২. ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৭]

৪৭১৩. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার আব্বা সে বাইআত গ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন, যারা সেদিন গাছের নিচে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর হাতে বাইআত গ্রহন করেছিলেন। তিনি বলেন, পরবর্তী বছর যখন আমরা হাজ্জ করিতে এসে সেখানে গেলাম তখন সে স্থানটি আমাদের কাছে অস্পষ্ট হয়ে গেল। যদি তোমাদের নিকট সে স্থানটি স্পষ্ট হয়ে থাকে তবে তোমরাই ভাল জান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৮]

৪৭১৪. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর পিতা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বৃক্ষবর্ষে [হুদাইবিয়ার বছর] তাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট ছিলেন। তিনি বলেন, পরবর্তী বছর তাঁরা সে স্থানটির অবস্থান ভুলে যান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৬৯]

৪৭১৫. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর পিতা [রাদি.] এর পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি সে স্থানটি দেখেছি, তবে পরে যখন সেখানে গেলাম, তখন আর তা চিনতে পারলাম না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭০]

৪৭১৬. ইয়াযীদ ইবনি আবু উবায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি সালামাহ [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম, হুদাইবিয়ার দিন আপনারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর হাতে কিসের শপথ গ্রহণ করেছিলেন? তিনি বলিলেন, মৃত্যুর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭১]

৪৭১৭. সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭২]

৪৭১৮. আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা জনৈক আগন্তক তাহাঁর কাছে আসল এবং বলিল, ইনি হচ্ছেন হানযালার পুত্র। ইনি লোকের নিকট থেকে বাইআত নিচ্ছেন। জিজ্ঞেস করিলেন, কিসের বাইআত? বলিলেন, মৃত্যুর বাইআত। তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পরে আমরা আর কারো হাতে মৃত্যুর উপর বাইআত নেবো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৩]

১৯. অধ্যায়ঃ মুহাজির এর জন্য স্বদেশে বসবাসের উদ্দেশে ফিরে আসা নিষিদ্ধ

৪৭১৯. সালামাহ্‌ ইবনি আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি একদা হাজ্জাজের দরবারে উপনীত হলেন। সে বলিল, হে আকওয়ার পুত্র! তুমি কি ধর্মত্যাগী [মুরতাদ] হয়ে মরুবাস শুরু করেছো? তিনি বলিলেন, না; বরং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ই আমাকে মরুবাসের [বেদুঈনের জীবন-যাপনের] অনুমতি দিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭৪]

২০. অধ্যায়ঃ মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম, জিহাদ ও পুণ্যময় কাজের বাইআত আর বিজয়ের পর হিজরত নেই[ মক্কা থেকে মাদীনায়]- এ কথার অর্থ সংক্রান্ত আলোচনা

৪৭২০. মুজাশি ইবনি মাসউদ সুলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি নবী [সাঃআঃ]-এর খিদমাতে তাহাঁর নিকট হিজরাতের বাইআত গ্রহণের উদ্দেশে আসলাম। তখন তিনি বলিলেন, হিজরাতের দিন শেষ হয়ে গেছে, তার অধিকারীরা ইতোমধ্যেই তা করে ফেলেছেন। [সে ফযিলত আর কারো পাবার অবকাশ নেই] তবে ইসলাম, জিহাদ ও সৎকাজের উপর অটল থাকার বাইআত হইতে পারে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭৫]

৪৭২১. মুজাশি ইবনি মাসউদ সুলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের পর একদা আমি আমার ভাই আবু মাবাদ [রাদি.]- কে নিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দরবারে আসলাম। তখন আমি আরয করলাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তাকে হিজরাতের বাইআত করান। তিনি তখন বলিলেন, হিজরাতের দিন অতিক্রান্ত, তার যোগ্য পাত্ররা সে সুযোগ নিয়ে নিয়েছে। আমি বললাম, তাহলে কিসের উপর বাইআত নিবেন? তিনি বলিলেন, ইসলাম, জিহাদ ও সৎকাজের বাইআত হইতে পারে।

আবু উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আবু মাবাদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে মুজাশি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর কথা জানালাম। তিনি বলিলেন, সে যথার্থই বলেছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭৬]

৪৭২২. আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

তবে তিনি বলেছেন, আমি তার ভাইয়ের সাথে দেখা করলাম, তখন তিনি বলিলেন, মুজাশি যথার্থ বলেছে, তবে তিনি আবু মাবাদের নাম রিওয়ায়াতে উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭৭]

৪৭২৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিজয় দিবসে তথা মক্কা বিজয়ের দিন বলেছেন, আর হিজরত নেই [হিজরাতের অবকাশ বাকী নেই] বরং এখন আছে জিহাদ আর নেক-নিয়্যাত। আর যখন তোমাদেরকে জিহাদে বের হওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়, তখন তোমরা [জিহাদের উদ্দেশে] বের হয়ে যাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৬,ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭৮]

৪৭২৪. মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৭৯]

৪৭২৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে হিজরত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তখন তিনি বলিলেন, [মক্কা] বিজয়ের পর আর হিজরত নেই, তবে জিহাদ ও নিয়্যাত রয়েছে। যখন তোমাদেরকে জিহাদে বের হওয়ার জন্য ডাক দেয়া হয়, তখন তোমরা বের হয়ে যাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৮০]

৪৭২৬. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা জনৈক বেদুঈন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে হিজরত সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ওহে! তোমার জন্য আফসোস! হিজরাতের অবস্থা তো কঠিন ব্যাপার। তোমার কাছে কি উট আছে? সে বলিল, হ্যাঁ! তিনি বলিলেন, তুমি কি তার যাকাত দিয়ে থাকো? সে বলিল, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, তুমি দরিয়ার ওপার থেকেই আমাল করে যাও, কেননা আল্লাহ তাআলা তোমার কোন আমালই বিফল করে দিবেন না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৮১]

৪৭২৭. আওযাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি [আবদুল্লাহ] বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তোমার কোন আমালই নিষ্ফল হইতে দিবেন না। তিনি এ হাদীসে আরও অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি পানি পান করানোর দিন ওগুলোকে [উটনীগুলোকে] দোহন করে থাকো? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৮২]

২১. অধ্যায়ঃ মহিলাদের বাইআত গ্রহণ পদ্ধতি

৪৭২৮. নবী সহধর্মিণী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুমিন মহিলাগণ যখন হিজরত করে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে [মাদীনায়] আসতেন তখন আল্লাহ তাআলার বানী অনুযায়ী পরীক্ষা করা হতো। [সে বানী হচ্ছে] “হে নবী! যখন মুমিন মহিলাগণ আপনার কাছে এ মর্মে বাইআত হইতে আসে যে তাঁরা আল্লাহর সাথে অপর কাউকে শরীক করিবে না, চুরি করিবে না, ব্যাভিচার করিবে না…”- [সুরা মুমতাহিনাহ্ ৬০: ১২] আয়াতের শেষ পর্যন্ত।

আয়িশা [রাদি.] বলেন, মুমিন মহিলাদের যে কেউ এসব অঙ্গীকারাবদ্ধ হতো এতেই তারা বাইআতের অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়েছে বলে গণ্য হতো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে যখন তারা মৌখিকভাবে এসব অঙ্গীকার করতো তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের বলিতেন, তোমরা চলে যাও, তোমাদের বাইআত গ্রহন করা হয়েছে। আল্লাহর কসম! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাত কোন দিন কোন [অপরিচিত] মহিলার হাতকে স্পর্শ করেনি। তবে তিনি মৌখিকভাবে বাইআত গ্রহণ করিতেন।

আয়িশা [রাদি.] বলেন, আল্লাহর কসম! আল্লাহর নির্দেশিত পথ ছাড়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন দিন মহিলাদের ওয়াদা গ্রহণ করেননি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাত কোন দিন কোন [অপরিচিত] মহিলার হাত স্পর্শ করেনি। তাদের ওয়াদাবদ্ধ হওয়ার পরই তিনি মৌখিকভাবে বলে দিতেন, তোমাদের বাইআত গ্রহণ করলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৮৩]

৪৭২৯. উরওয়াহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আয়িশা [রাদি.] তাঁকে মহিলাদের বাইআত সম্পর্কে অবহিত করিয়াছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন দিন [বেগানা] মহিলাকে স্পর্শ করেননি, তবে তিনি মৌখিকভাবে তাদের বাইআত গ্রহণ করিতেন। আর যখন তিনি তাদের মৌখিক অঙ্গীকার নিয়ে নিতেন তখন [মুখেই] বলে দিতেন, এবার চলে যেতে পার, আমি তোমাদের বাইআত নিয়েছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৬৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৮৪]

২২. অধ্যায়ঃ সাধ্যানুসারে মেনে চলা ও আনুগত্য করার বাইআত

৪৭৩০. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট শ্রবণ করার ও অনুকরণের [আনুগত্যের] বাইআত গ্রহণ করতাম। তিনি আমাদেরকে বলে দিতেন, যতদূর তোমাদের সাধ্যে কুলাবে [তা পালন করিবে]।

[ই.ফা.৪৬৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৬৮৫]

Comments

One response to “উত্তম শাসক, খলীফা, বাইআত গ্রহন”

Leave a Reply