উওয়াইস আল কারানী [রাদি.]-এর ফযিলত
উওয়াইস আল কারানী [রাদি.]-এর ফযিলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৫৫. অধ্যায়ঃ উওয়াইস আল কারানী [রাদি.]-এর ফযিলত
৬৩৮৪. উসায়র ইবনি জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কূফার একটি প্রতিনিধি দল উমর [রাদি.]-এর কাছে আগমন করলো। তাঁদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তিও ছিল, যে উওয়াইস [রাদি.]-কে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত। তখন উমর [রাদি.] বলিলেন, এখানে কারানী গোষ্ঠীর কোন ব্যক্তি আছে কি? তখন সে লোকটি আসলো। এরপর উমর [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামান থেকে এক ব্যক্তি আগমন করিবে, যে উওয়াইস নামে খ্যাত। ইয়ামানে তাহাঁর মা ছাড়া আর কেউ থাকিবে না। তার কুষ্ঠরোগ হয়েছিল। সে আল্লাহর নিকট দুআ করার পরিবর্তে আল্লাহ তাকে কুষ্ঠরোগ দূর করে দেন। কিন্তু কেবল মাত্র এক দীনার কিংবা এক দিরহাম পরিমাণ জায়গা অবশিষ্ট থাকে। তোমাদের মাঝখান থেকে কেউ যদি তাহাঁর দেখা পায় সে যেন নিজের জন্য তাহাঁর নিকট মাগফিরাতের দুআ প্রার্থনা করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩০৮]
৬৩৮৫. উমর ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, অবশ্যই তাবিঈনদের মধ্যে সে লোক শ্রেষ্ঠ যে উওয়াইস নামে খ্যাত। তাহাঁর একমাত্র মা আছেন এবং তাহাঁর কুষ্ঠরোগ হয়েছিল। তোমরা তাহাঁর নিকট অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের মাগফিরাতের জন্য দুআ কামনা করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩০৯]
৬৩৮৬. উসায়র ইবনি জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমর ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-এর অভ্যাস ছিল, যখন ইয়ামানের কোন সাহায্যকারী ফৌজ তাহাঁর নিকট আসত তখন তিনি তাঁদের প্রশ্ন করিতেন, তোমাদের মাঝে কি উওয়াইস ইবনি আমির রয়েছে? পরিশেষে তিনি উওয়াইসকে পান। তখন তিনি বলিলেন, তুমি কি উওয়াইস ইবনি আমির? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি প্রশ্ন করিলেন, মুরাদ গোষ্ঠীর কারান কাওমের? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। জানতে চাইলেন, তোমার কি কুষ্ঠরোগ হয়েছিল এবং তা নিরাময় হয়েছে, শুধুমাত্র এক দিরহাম জায়গা ছাড়া? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। প্রশ্ন করিলেন, তোমার মা আছেন কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তখন উমর [রাদি.] বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ “তোমাদের নিকট মুরাদ গোষ্ঠীর কারান বংশের উওয়াইস ইবনি আমির ইয়ামানের সাহায্যকারী দলের সাথে আসবে। তাহাঁর কুষ্ঠরোগ ছিল। পরে তিনি সুস্থ হয়ে গেছেন। কেবলমাত্র এক দিরহাম ব্যতীত। তাহাঁর মা রয়েছেন। সে তাহাঁর প্রতি অতি সেবাপরায়ণ। এমন লোক আল্লাহর উপর শপথ করে নিলে আল্লাহ তা পূর্ণ করে দেন। সুতরাং তুমি যদি তোমার জন্য তাহাঁর নিকট মাফফিরাতের দুআ প্রার্থনার সুযোগ পাও তাহলে তা করিবে।” কাজেই আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দুআ কামনা করুন। তখন উওয়াইস [রাদি.] তাহাঁর মাগফিরাতের জন্য দুআ প্রার্থনা করিলেন। তারপর উমর [রাদি.] তাকে বলিলেন, তুমি কোথায় যেতে চাও? তিনি বলিলেন, কুফাহ্ অঞ্চলে। উমর [রাদি.] বলিলেন, আমি কি তোমার জন্য কূফার প্রশাসকের নিকট চিঠি লিখে দিব? তিনি বলিলেন, আমি বিনীত ও দারিদ্র-পীড়িত লোকদের মধ্যে অবস্থান করাই পছন্দ করি। রাবী বলেন, পরবর্তী বছরে তাঁদের অভিজাত লোকেদের মাঝে এক লোক হাজ্জ করিতে আসলো এবং উমর [রাদি.]-এর সাথে তাহাঁর দেখা হলো। তখন তিনি তাকে উওয়াইস কারানী [রাদি.]-এর অবস্থা সম্বন্ধে প্রশ্ন করিলেন। সে বলিল, আমি তাঁকে নিঃস্ব দরিদ্র অবস্থায় রেখে এসেছি। তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের নিকট কারান বংশের মুরাদ গোত্রের উওয়াইস ইবনি আমির [রাদি.] ইয়ামানের একদল সাহায্যকারীদের সাথে আসবে। তাহাঁর ছিল কুষ্ঠরোগ। সে তা থেকে নিরাময় লাভ করে, এক দিরহাম জায়গা ছাড়া। তাহাঁর মা আছেন, সে তাহাঁর প্রতি অতি সেবাপরায়ণ। সে যদি আল্লাহর নামে শপথ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তা পূরণ করে দেন। তোমরা নিজের জন্য তাহাঁর নিকট মাগফিরাত-এর দুআ কামনা করুন। তিনি বলিলেন, আপনি তো নেক সফর থেকে সবেমাত্র এসেছেন। কাজেই আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দুআ প্রার্থনা করুন। সে লোক বলিল, আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দুআ কামনা করুন। উওয়াইস [রাদি.] বলিলেন, আপনি সদ্য নেক সফর থেকে এসেছেন, আপনি আমার মাগফিরাতের জন্য দুআ করুন। অতঃপর তিনি প্রশ্ন করিলেন, আপনি কি উমর [রাদি.]-এর দেখা পেয়েছেন? সে বলিল, হ্যাঁ। তখন তিনি তাহাঁর জন্য মাগফিরাতের দুআ কামনা করিলেন। তখন লোকেরা তাহাঁর মর্যাদা সম্বন্ধে অবগত হলেন। এরপর তিনি তাহাঁর সামনে চললেন।
উসায়র বলেন, আমি তাঁকে একটি ডোরাদার চাদর পরিয়ে দিলাম। অতঃপর কোন লোক যখন তাঁকে দেখতো তখন জানতে চাইতো, উওয়াইসের নিকট এ চাদরটি কোত্থেকে আসলো?
[ই.ফা.৬২৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩১০]
Leave a Reply