ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা আযান ইকামত খুত্বা ও কিরাত

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা ও কিরাতের বর্ণনা – ইমাম মালিক

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা ও কিরাতের বর্ণনা – ইমাম মালিক, এই অধ্যায়ে হাদীস = ১৩ টি ( ৪১৪-৪২৬ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ১০ঃ দুই ঈদ

পরিচ্ছেদ ০১- উভয় ঈদে গোসল করা এবং আযান ও ইকামত
পরিচ্ছেদঃ ২ – উভয় ঈদে খুত্বার পূর্বে নামাজ আদায়ের নির্দেশ
পরিচ্ছেদঃ ৩ – প্রভাতে ঈদের পূর্বে আহার গ্রহণের নির্দেশ
পরিচ্ছেদঃ ৪ – উভয় ঈদের নামাযে কিরাআত ও তাকবীরের বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ৫ – উভয় ঈদের আগে ও পরে নামাজ না পড়া
পরিচ্ছেদঃ ৬ – উভয় ঈদের পূর্বে ও পরে নামাজ আদায়ের অনুমতি
পরিচ্ছেদঃ ৭ – ইমামের প্রভাতে ঈদগাহে গমন করা ও খুতবার জন্য অপেক্ষা করা

পরিচ্ছেদ ০১- উভয় ঈদে গোসল করা এবং আযান ও ইকামত

৪১৩ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি অনেক আলিমকে বলিতে শুনেছেন যে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর যুগ হইতে বর্তমান যুগ পর্যন্ত আযান ও ইকামত ছিল না। [বুখারি ৯৬০, মুসলিম ৮৮৬, মারফু সনদে ইবনি আব্বাস ও জাবের [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন] মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এটা এমন একটি সুন্নত যাতে আমাদের মতে কারো দ্বিমত নেই।

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪১৪ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদঃ ২ – উভয় ঈদে খুত্বার পূর্বে নামাজ আদায়ের নির্দেশ

৪১৫ ইবনি শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে খুতবার পূর্বে নামাজ আদায় করিতেন। [বুখারি ৯৬৩, মুসলিম ৮৮৮, তিনি ইবনি ওমর [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন, তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৪১৬ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু বাকর এবং উমার [রাদি.] তাঁরা দুজনেই এরূপ করিতেন।

[মারফু, বুখারি ৯৬২, মুসলিম ৮৮৪, তিনি ইবনি আব্বাস [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মাওকুফ এবং মুনকাতে] ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৪১৭ ইবনি আযহারের মাওলা আবু উবায়দ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি ঈদের নামাযে উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর সাথে শরীক হয়েছি। তিনি ঈদের নামাজ আদায় করালেন, অতঃপর [মিম্বরে] প্রত্যাগমন করলেন এবং লোকের উদ্দেশ্যে খুতবা প্রদান করলেন। খুতবায় তিনি বলিলেন, এ দুটি {ঈদের} দিবস এমন যে, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ উভয় দিবসে রোযা রাখতে নিষেধ করেন, তোমাদের রোযা খোলার [অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের] দিন আর তোমাদের কুরবানীর গোশত আহার করার দিন। [বুখারি ১৯৯০, মুসলিম ১১৩৭]

আবু উবায়দ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, অতঃপর আমি উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]-এর সাথেও ঈদে হাযির হয়েছি। তিনি [ঈদগাহে] আসার পর নামাজ আদায় করলেন, তারপর [মুসল্লা হইতে] ফিরে খুতবা করলেন, আজকের এই দিনে তোমাদের জন্য দুটি ঈদ একত্র হয়েছে [শুক্রবার হওয়ার কারণে।] মদীনার বাহিরের লোকেরা ইচ্ছা করলে জুমআর নামাযের জন্য অপেক্ষা করিতে পারে অথবা ইচ্ছা করলে নিজেদের এলাকায় ফিরেও যেতে পারে, আমি তাদেরকে এ অনুমতি দিলাম।

আবু উবায়দ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আলী ইবনি আবি তালিব [রাদি.]-এর সঙ্গে আমি উপস্থিত ছিলাম, যখন উসমান [রাদি.] অবরুদ্ধ ছিলেন। আলী [রাদি.] আসলেন এবং নামাজ আদায় করলেন, তারপর লোকদের দিকে মুখ করলেন ও খুতবা দিলেন।

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৩ – প্রভাতে ঈদের পূর্বে আহার গ্রহণের নির্দেশ

৪১৮ উরওয়াহ ইবনি যুবায়র [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে আহার গ্রহণ করিতেন।

[সহীহ মারফু, বুখারি ৯৫৩, আনাস [রাদি.] থেকে বর্ণিত] নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪১৯ ইবনি শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] তাহাকে অবগত করেন যে, [তাঁদের যুগে] ঈদুল ফিতরের দিন লোকজন সকালে ঈদে যাওয়ার পূর্বে কিছু আহার করার জন্য নির্দেশিত হত।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, ঈদুল আযহাতে [কুরবানীর ঈদে] লোকের জন্য আমি এটা প্রয়োজন মনে করি না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৪ – উভয় ঈদের নামাযে কিরাআত ও তাকবীরের বর্ণনা

৪২০ উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু ওয়াকিদ লায়সী [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলেন ঈদুর ফিত্র ও ঈদুল আযহাতে রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ কোন কোন সূরা পাঠ করিতেন? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ পাঠ করিতেন

ق وَالْقُرُ اَنِ الْمَجِيْدِ. ةَاقْتَرَبَتِ السَّعَةُ وَالنْشَقَّ الْقَمَرُ.

[সূরা কাফ্ ও ক্বামার], এই দুই সূরা।

[সহীহ, মুসলিম ৮৯১] নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪২১ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবু হুরায়রা [রাদি.]-এর সাথে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে উপস্থিত হয়েছি। তিনি কিরাআতের পূর্বে প্রথম রাকআতে সাতটি তাকবীর ও দ্বিতীয় রাকআতে পাঁচটি তাকবীর বলেছেন। [সহীহ মারফু, ঈমাম আবু দাঊদ আয়েশা [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন আবু দাঊদ [১১৪৯], আল্লামা আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ইরওয়া ৬৩৯]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমাদের কাছে এটাই হুকুম।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তাঁর মতে যে ব্যক্তি ঈদের দিন লোকজনকে নামাজ আদায় করে ফিরবার কালে পায়, সে ব্যক্তির জন্য ঈদগাহ অথবা স্বগৃহে ঈদের নামাজ আদায়ের প্রয়োজন নেই। আর যদি সে ঈদগাহে বা নিজ ঘরে ঈদের নামাজ আদায় করে তাতেও কোন আপত্তি নাই। সে প্রথম রাকআতে কিরাআতের পূর্বে সাত তাকবীর ও দ্বিতীয় রাকআতে কিরাআতের পূর্বে পাঁচ তাকবীর পাঠ করিবে।

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৫ – উভয় ঈদের আগে ও পরে নামাজ না পড়া

৪২২ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায় করিতেন না, ঈদের পূর্বেও না এবং পরেও না। [মারফু, ইবনি আব্বাস [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত, বুখারি ৯৮৯, ৯৬৪, মুসলিম ৮৮৪]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্য উদয়ের পূর্বে প্রত্যুষে ঈদগাহে গমন করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৬ – উভয় ঈদের পূর্বে ও পরে নামাজ আদায়ের অনুমতি

৪২৩ আবদুর রহমান ইবনি কাসিম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

কাসিম [রাহিমাহুল্লাহ] ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪২৪ উরওয়াহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যুবায়র [রাদি.] ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাযের পূর্বে মসজিদে নামাজ আদায় করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৭ – ইমামের প্রভাতে ঈদগাহে গমন করা ও খুতবার জন্য অপেক্ষা করা

৪২৫ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমাদের মধ্যে এই সুন্নত প্রচলিত-যাতে দ্বিমত নেই যে, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিন ঈমাম স্বীয় মনযিল হইতে এমন সময় বের হইবেন, যাতে তিনি নামাযের সময় ঈদগাহে পৌঁছাতে পারেন।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হল এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ঈদুল ফিতরের দিন ইমামের সাথে নামাজ আদায় করেছে। সে খুতবা শোনার পূর্বে প্রত্যাবর্তন করিতে পারে কি? তিনি বলিলেন, না। ঈমাম প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত সে ব্যক্তি প্রত্যাবর্তন করিবে না।

ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা  -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়


by

Comments

One response to “ঈদের নামাজের তাকবীর সংখ্যা আযান ইকামত খুত্বা ও কিরাত”

Leave a Reply