ইহরামধারী ব্যক্তির বিবাহ করা হারাম এবং তার বিবাহের প্রস্তাব দেয়া দূষণীয়

ইহরামধারী ব্যক্তির বিবাহ করা হারাম এবং তার বিবাহের প্রস্তাব দেয়া দূষণীয়

ইহরামধারী ব্যক্তির বিবাহ করা হারাম এবং তার বিবাহের প্রস্তাব দেয়া দূষণীয় >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৫. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তির বিবাহ করা হারাম এবং তার বিবাহের প্রস্তাব দেয়া দূষণীয়

৩৩৩৭. নুবায়হ ইবনি ওয়াহ্‌ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উমর ইবনি উবাইদুল্লাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] শায়বাহ্ ইবনি জুবায়রের কন্যার সাথে নিজ পুত্র ত্বল্‌হার বিবাহ দেয়ার মনস্ত করেন। অতএব তিনি উসমান [রাদি.]-এর পুত্র আবানের কাছে লোক পাঠালেন [তাকে বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগদানের দাওয়াত দেয়ার জন্য]। তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। আর তিনি এ সময় আমীরুল হাজ্জ ছিলেন। আবান বলেন, আমি উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]–কে বলিতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [হাজ্জ বা উমরাহ্‌ পালনের উদ্দেশে] ইহরামধারী ব্যক্তি নিজেও বিবাহ করিবে না, অন্যকেও বিবাহ করাবে না এবং বিবাহের প্রস্তাবও দিবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১০]

৩৩৩৮.নুবায়হ ইবনি ওয়াহ্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উমর ইবনি উবায়দুল্লাহ্ ইবনি মামার আমাকে আবান ইবনি উসমানের নিকট পাঠালেন এ উদ্দেশে যে, তিনি নিজ পুত্রের সাথে শায়বাহ্ ইবনি উসমানের কন্যার বিবাহের প্রস্তাব দেওয়ার মনস্থ করেছিলেন। তিনি [আবান] তখন হাজ্জের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলিলেন, আমি তো তাকে বেদুঈনের মতো আচরণ করিতে দেখেছি।” কারণ [এটাতো সাধারণ জ্ঞানের ব্যাপার যে] ইহরামত বস্ত্র পরিহিত ব্যক্তি না বিবাহ করিতে পারে, না বিবাহ করাতে পারে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এ হাদীস উসমান [রাদি.] আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১১]

৩৩৩৯. উসমান ইবনি আফ্‌ফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]–বলেছেনঃ মুহরিম ব্যক্তি না বিবাহ করিবে, না বিবাহ করাবে, আর না বিবাহের প্রস্তাব দিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১২]

৩৩৪০. উসমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুহরিম ব্যক্তি বিবাহ করিবে না এবং বিবাহের প্রস্তাবও দিবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১৩]

৩৩৪১. নুবায়হ ইবনি ওয়াহ্‌ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উমর ইবনি উবাইদুল্লাহ ইবনি মামার হাজ্জের মৌসুমে শায়বাহ্‌ ইবনি জুবায়রের কন্যার সাথে নিজ পুত্র ত্বলহার বিবাহ দেয়ার মনস্ত করিলেন। এ সময় আবান ইবনি উসমান ছিলেন আমীরুল হাজ্জ। অতএব তিনি [উমর] তার নিকট এ কথা বলে পাঠালেন, আমি ত্বল্‌হাহ্‌ ইবনি উমারের বিবাহ দিতে ইচ্ছা করেছি। অতএব আমি বিবাহ অনুষ্ঠানে আপনার উপস্থিতি কামনা করি। আবান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাঁকে বলিলেন, আমি তো তোমাকে নির্বোধ ইরাকীর মতো আচরণ করিতে দেখছি। নিশ্চিত আমি উসমান ইবনি আফ্‌ফান [রাদি.]–কে বলিতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ইহরামধারী ব্যক্তি বিবাহ করিবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১৪]

৩৩৪২. আবু শাসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি আব্বাস [রাদি.] তাঁকে অবহিত করিয়াছেন যে, নবী [সাঃআঃ] মুহরিম অবস্থায় [মায়মূনাকে] বিবাহ করিয়াছেন।

ইবনি নুমায়রের বর্ণনায় আরো আছে আমি [ইবনি নুমায়র] যুহরীর নিকট এ হাদীস বর্ণনা করলে তিনি বলেন, আমাকে ইয়াযীদ ইবনিল আসাম অবহিত করিয়াছেন যে, “তিনি ইহরামমুক্ত অবস্থায় তাঁকে বিবাহ করিয়াছেন।”{৪৯}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১৫]

{৪৯} আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর বর্ণনার মুকাবিলায় ইয়াযীদ [রাদি.] এবং অন্যান্য সাহাবীগণের বর্ণনা এসেছে; এতে উভয় প্রকার বর্ণনায় বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে আব্বাস [রাদি.]-এর বর্ণনা রহিত হয়েছে। কেননা আব্বাস [রাদি.] বর্ণনার বিপরীতে ক্বওলী হাদীসে রয়েছে; আর ক্বওলী হাদীসের উপর আমাল করা ওয়াজিব। এ বিষয়ে হানাফীদের অভিমত প্রত্যাখ্যাত হয়েছে [হানাফীদের মতে ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করায় কোন দোষ নেই]।

৩৩৪৩. ইবনি আব্বাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরামের অবস্থায় মায়মূনাহ্‌ [রাদি.]-কে বিবাহ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১৬]

৩৩৪৪. ইয়াযীদ ইবনিল আসাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হারিসের কন্যা মায়মূনাহ্‌ [রাদি.] আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম মুক্ত অবস্থায় তাঁকে বিবাহ করেন। তিনি আরও বলেন, তিনি ছিলেন আমার খালা এবং ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এরও খালা।{৫০}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৩১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৩১৭]

{৫০} কোন স্ত্রীলোক ও তার খালাকে একত্র [বিবাহ] করা যাবে না। সকল আলিমদের মতে, কোন ভাইঝিকে তার ফুফুর সাথে এবং বোনঝিকে তার খালার সাথে একত্রিত করা হারাম। ফুফু বা খালা প্রকৃত হোক বা রূপক হোক, প্রকৃত খালা বা ফুফু হল যথাক্রমে, মায়ের বোন এবং বাবার বোন আর রূপক খালা বা ফুফু হল যথাক্রমে নানা বা দাদীর বোন [পিতা বা মাতার দিক থেকে] তা যতই উপরের দিকে যাক না বোন ও দাদা বা পরদাদার বোন তা যতই উপরের দিকে যাক না কেন। আলিমদের ইজমা মতে এদেরকে একত্রিত করা হারাম।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply