ইসলামে উত্তরাধিকার ফারায়েজ মীরাস
ইসলামে উত্তরাধিকার ফারায়েজ মীরাস >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৮৫, উত্তরাধিকার, অধ্যায়ঃ (১-৩১)=৩১টি
৮৫/১. অধ্যায়ঃ
৮৫/২. অধ্যায়ঃ ফারায়েজ বিষয়ক বিদ্যা শিক্ষা দেয়া। উক্বাহ ইবনু আমির (রাদি.) বলেন, যারা আন্দাজে অনুমানে কথা বলে তাদের এমন কথা বলার আগেই তোমরা (ফারায়েজ বিদ্যা) শিখে নাও।
৮৫/৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃ)- এর বাণীঃ আমরা যা কিছু (সম্পদ) ছেড়ে য়াই, কেউ তার ওয়ারিশ হইবে না, সবই সদাকাহ।
৮৫/৪. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃ)- এর বাণীঃ যে ব্যক্তি মাল রেখে যায় তা তার পরিবার-পরিজনের হইবে।
৮৫/৫. অধ্যায়ঃ পিতা-মাতা হইতে সন্তানের উত্তারাধিকার।
৮৫/৬. অধ্যায়ঃ কন্যাদের মীরাস।
৮৫/৮. অধ্যায়ঃ কন্যাদের মীরাসের বর্ণনা।
৮৫/৯. অধ্যায়ঃ পিতা ও ভ্রাতৃবৃন্দের বর্তমানে দাদার উত্তরাধিকার।
৮৫/১০. অধ্যায়ঃ সন্তান ও অন্যান্য ওয়ারিশগণের সাথে স্বামীর উত্তরাধিকার।
৮৫/১১. অধ্যায়ঃ সন্তান ও অন্যান্য ওয়ারিশদের সাথে স্ত্রী ও স্বামীর মীরাস
৮৫/১২. অধ্যায়ঃ কন্যাদের বর্তমানে ভগ্নিরা ওয়ারিশ হইবে আসাবা হিসেবে।
৮৫/১৩. অধ্যায়ঃ ভাই-বোনদের মীরাস।
৮৫/১৪. অধ্যায়ঃ (আল্লাহর বাণী): লোকেরা তোমার নিকট জানতে চায়। বল, আল্লাহ তোমাদেরকে পিতৃ মাতৃহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্পর্কে ফতোয়া দিচ্ছেন তোমাদের বিধান দিচ্ছেন “কালালা” – (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়। (পিতা-মাতা না থাকে) এবং তার এক বোন থাকে তবে সে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ পাবে; সে যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার ওয়ারিস হইবে। তবে যদি বোন দুজন থাকে তাহলে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ পাবে; আর যদি ভাই-বোন কয়েকজন থাকে তবে এক পুরুষের অংশ দুই নারীর অংশের সমান হইবে। তোমরা গুমরাহ হইবে এ আশংকায় আল্লাহ তোমাদের জন্য পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সুরা আন্-নিসা ৪/১৭৬)।
৮৫/১৫. অধ্যায়ঃ দুজন চাচাতো ভাই, এদের একজন বৈপিত্রেয় ভাই আর অন্যজন যদি স্বামী হয়।
৮৫/১৬. অধ্যায়ঃ যাবিল আরহাম।
৮৫/১৭. অধ্যায়ঃ যাদের উপর লিআন করা হয় তাদের মীরাস।
৮৫/১৮. অধ্যায়ঃ বিছানা যার, সন্তান তার-স্ত্রীলোকটি আযাদ হোক আর দাসীই হোক।
৮৫/১৯. অধ্যায়ঃ যে আযাদ করিবে অভিভাবকত্ব হল তার। এবং লা-ওয়ারিশ সন্তানের মীরাস।উমার (রাদি.) বলেন, লাকীত (কুড়িয়ে পাওয়া) ব্যক্তি আযাদ।
৮৫/২০. অধ্যায়ঃ সায়বার মীরাস।
৮৫/২১. অধ্যায়ঃ যে গোলাম তার মনিবদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করে তার পাপ।
৮৫/২২. অধ্যায়ঃ কাফির কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করলে।
৮৫/২৩. অধ্যায়ঃ নারীরাও ওয়ালার ওয়ারিস হয়।
৮৫/২৪. অধ্যায়ঃ কোন কাওমের আযাদকৃ্ত গোলাম তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আর বোনের ছেলে ও ঐ কাওমের অন্তর্ভুক্ত।
৮৫/২৫. অধ্যায়ঃ বন্দীর উত্তারাধিকার।
৮৫/২৬. অধ্যায়ঃ মুসলিম কাফেরের এবং কাফির মুসলিমের উত্তরাধিকারী হয় না। কোন ব্যক্তি সম্পত্তি বণ্টনের পূর্বে মুসলিম হয়ে গেলে সে মিরাস পাবে না।
৮৫/২৭. অধ্যায়ঃ নাসারা গোলাম ও নাসারা মাকাতিবের মিরাস এবং যে ব্যক্তি আপন সন্তানকে অস্বীকার করে তার গুনাহ।
৮৫/২৮. অধ্যায়ঃ যে লোক কাউকে ভাই বা ভাতিজা হবার দাবি করে।
৮৫/২৯. অধ্যায়ঃ যে নিজের পিতা বাদে অন্যকে পিতা বলে দাবি করে।
৮৫/৩০. অধ্যায়ঃ কোন স্ত্রীলোক কাউকে পুত্র হিসাবে দাবি করলে।
৮৫/৩১. অধ্যায়ঃ কায়েফ (অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দেখে বংশ নির্ধারণ)।
৮৫/১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তান-সন্ততির (অংশ) সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, পুরুষ দুই নারীর অংশের সমান পাবে, তবে সন্তান-সন্ততি যদি শুধু দুজন নারীর অধিক হয় তাহলে তাঁরা রেখে যাওয়া সম্পত্তির তিন ভাগের দু ভাগ পাবে, আর কেবল একটি কন্যা থাকলে সে অর্ধেক পাবে এবং তার পিতা-মাতা উভয়ের প্রত্যেকে রেখে যাওয়া সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে যদি তার সন্তান থাকে, আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিশ মাতা-পিতাই হয়, সে অবস্থায় তার মাতার জন্য এক তৃতীয়াংশ, কিন্ত তার ভাই-বোন থাকলে, তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ, (ঐসব বন্টন হইবে) তার কৃত ওয়াসীয়াত অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমরা জান না তোমাদের পিতা এবং সন্তানদের মধ্যে কে তোমাদের পক্ষে উপকারের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটবর্তী। (এ বন্টন) আল্লাহর পক্ষ হইতে নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাশীল। তোমাদের স্ত্রীদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির অর্ধেক তোমাদের জন্য- যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে আর যদি সন্তান থাকে, তবে তোমাদের জন্য তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ, তাদের কৃত ওয়াসীয়াত কিংবা ঋণ পরিশোধের পর এবং তারা তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির সিকি অংশ পাবে যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে, আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের জন্য তোমাদের সম্পত্তির আট ভাগের একভাগ- তোমাদের কৃত ওয়াসীয়ত কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। যদি পিতা-মাতাহীন ও সন্তানহীন কোন পুরুষ বা নারীর শুধু বৈপিত্রেয় একটি ভাই বা একটি ভগ্নি থাকে, তবে প্রত্যেকের জন্য ছ ভাগের এক ভাগ। যদি তারা তার চেয়ে অধিক হয়, তবে সকলেই তৃতীয়াংশে শরীক হইবে কৃত ওয়াসীয়াত কিংবা ঋণ পরিশোধের পরে, যদি কারো জন্য ক্ষতিকর না হয়, এ হল আল্লাহর বিধান, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল। (সুরা আন-নিসা ৪/১১-১২)
৬৭২৩
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি অসুস্থ হলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও আবু বকর (রাদি.) আমার সেবা করিলেন। তাঁরা উভয়েই একবার পায়ে হেঁটে আমার কাছে উপস্থিত হলেন। আমি তখন জ্ঞানশূন্য ছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) অযু করিলেন এবং আমার উপর অযূর পানি ঢেলে দিলেন। আমার জ্ঞান ফিরলে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার সম্পদের ব্যাপারে কী করব। আমার সম্পদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেব? তিনি আমাকে কোন জওয়াব দিলেন না। অবশেষে উত্তরাধিকারের আয়াত অবতীর্ণ হল।(আঃপ্রঃ- ৬২৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৮)
৮৫/২. অধ্যায়ঃ ফারায়েজ বিষয়ক বিদ্যা শিক্ষা দেয়া। উক্বাহ ইবনু আমির (রাদি.) বলেন, যারা আন্দাজে অনুমানে কথা বলে তাদের এমন কথা বলার আগেই তোমরা (ফারায়েজ বিদ্যা) শিখে নাও।
৬৭২৪
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা হইতে বেঁচে থাক, কারণ, ধারণা করা হচ্ছে সবচেয়ে বড় মিথ্যা। কারও দোষ অনুসন্ধান করো না, দোষ বের করার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করো না, একে অন্যের হিংসা করো না, পরস্পরে সম্পর্কচ্ছেদ করো না। ভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ আল্লাহর বান্দাহ হয়ে যাও। [৮৮](আঃপ্রঃ- ৬২৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৯)
হাদীসটি ধারণা বা অনুমানের উপর ভিত্তি করে আমল করার নিষিদ্ধতার ইঙ্গিত বহন করে, হাদীসের সাথে باب এর সমন্বয় হচ্ছে ইলমুন ফারায়িয কোন অনুমানের উপর প্রতিষ্ঠিত বিষয় নয় বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইলমুল ফারাযিয় গ্রহণ করা হয়েছে ইলমের পথ ও পন্থা অবলম্বনে। (ফাতহুল বারী)
৮৫/৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃ)- এর বাণীঃ আমরা যা কিছু (সম্পদ) ছেড়ে য়াই, কেউ তার ওয়ারিশ হইবে না, সবই সদাকাহ।
৬৭২৫
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার ফাতিমাহ ও আব্বাস (রাদি.) আবু বাক্র সিদ্দীক (রাদি.)- এর কাছে আসলেন তাদের ওয়ারিশ চাওয়ার জন্য। তাঁরা তখন তাদের ফাদাকের জমি এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭০)
৬৭২৬
তখন আবু বাক্র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তখন আবু বকর (রাদি.) তাঁদেরকে বলিলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে শুনিয়াছি তিনি বলেছেনঃ আমরা যা কিছু (সম্পদ) ছেড়ে যাই কেউ তার ওয়ারিশ হইবে না, সবই সদাকাহ। এ মাল থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ)- এর পরিবার ভোগ করবেন। আবু বকর (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- কে আমি এতে যেভাবে করিতে দেখেছি, তা সেভাবেই করব, কোন ব্যতিক্রম করব না। রাবী বলেন, অতঃপর থেকে ফাতিমাহ (রাদি.) তাঁকে ত্যাগ করেছিলেন, মৃত্যু পর্যন্ত তার সঙ্গে কথা বলেন নি।(আঃপ্রঃ- ৬২৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭০)
৬৭২৭
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমরা যা কিছু (সম্পদ) রেখে যাই, কেউ তার ওয়ারিশ হয় না, সব সদাকাহ।(আঃপ্রঃ- ৬২৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭১)
৬৭২৮
মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাসান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ ইবনু যুবায়র ইবনু মুতঈম আমার কাছে (মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাসান)-এর পক্ষ থেকে একটি ঘটনা বর্ণনা করিলেন। তিনি বলেন, আমি মালিক ইবনু আউস (রাদি.)-এর কাছে গেলাম এবং ঘটনাটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বলিলেন, আমি উমার (রাদি.)-এর নিকট গিয়েছিলাম। এমন সময় তাহাঁর দারোয়ান ইয়ারফা তাহাঁর কাছে গিয়ে বলিল, আপনি উসমান, আবদুর রাহমান, যুবায়র ও সাদ (রাদি.)-কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি তাঁদেরকে অনুমতি দিলেন। এরপর সে উমার (রাদি.)-এর নিকট এসে বলিল, আপনি আলী ও আববাস (রাদি.)-কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আববাস (রাদি.) বলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আমার এবং এর মাঝে মীগোশতা করে দিন। উমার (রাদি.) বলিলেন, আপনাদেরকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলি-যাঁর হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে- আপনারা কি জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছিলেন, আমরা কাউকে উত্তরাধিকারী করি না, আমরা যা কিছু রেখে যাই সবই সদাকাহ । রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এ দ্বারা নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছিলেন। দলের লোকেরা বলিল, তিনি তাই বলেছেন। এরপর তিনি আলী ও আববাস (রাদি.)-এর দিকে মুখ করে বলিলেন, আপনারা কি জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এ কথা বলেছিলেন? তাঁরা উভয়ে জবাব দিলেন, তিনি তা বলেছেন। উমার (রাদি.) বলিলেন, এখন আমি এ সম্পর্কে আপনাদের কাছে বর্ণনা করছি যে, এ ফায় (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত ধনসম্পদ)-এর ব্যাপারে তাহাঁর রাসুলকে বিশেষত্ব প্রদান করিয়াছেন, যা আর অন্য কাউকে করেননি। (আল্লাহ) বলেনঃ {مَا أَفَاءَ اللهُ عَلٰى رَسُوْلِهِ} থেকে {قَدِيْرٌ} পর্যন্ত তিলাওয়াত করে শোনালেন। এবং বলিলেন, এটা তো ছিল বিশেষ করে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর জন্য। আল্লাহর কসম! তিনি আপনাদের ছাড়া অন্য কারও জন্য এ মাল সংরক্ষণ করেননি। আর আপনাদের ছাড়া অন্য কাউকে এতে প্রাধান্য দেননি। এ মাল তো আপনাদেরই তিনি দিয়ে গিয়েছেন এবং আপনাদের মাঝেই বণ্টন করিয়াছেন। শেষে এ মালটুকু বাকী ছিল। তখন তিনি তাহাঁর পরিবার-পরিজনের বছরের ভরণ-পোষণের জন্য এ থেকে খরচ করিতেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকত তা আল্লাহর মাল হিসেবে (তাহাঁর রাস্তায়) খরচ করিতেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাহাঁর পূর্ণ জীবনকালেই এমন করে গেছেন। আমি আপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, এটা কি আপনারা জানেন? তাঁরা বলিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি আলী (রাদি.) ও আববাস (রাদি.)- কে বলিলেন, আমি আপনাদের দুজনকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, আপনারা কি এ কথাগুলো জানেন? তাঁরা উভয়েই বলিলেন, হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তাহাঁর নাবীর সাঃআঃ-মৃত্যু দিলেন তখন আবু বাকর (রাদি.) বলিলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাঃআঃ-এর ওলী। অতঃপর তিনি উক্ত সম্পদ হস্তগত করিলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ যেভাবে তা কাজে লাগিয়েছিলেন তিনিও তা সেভাবে কাজে লাগালেন। এরপর আল্লাহ আবু বাকর (রাদি.)-এর মৃত্যু দিলেন। তখন আমি বললাম, আমি আল্লাহর রাসূলের ওলীর ওলী। আমি এ সম্পদ হস্তগত করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ও আবু বাকর (রাদি.) এ সম্পদ যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন দুবছর যাবত আমি এ সম্পদ সেভাবেই ব্যবহার করে আসছি। এরপর আপনারা দুজন আমার কাছে আসলেন আর আপনাদের উভয়ের কথা এক এবং ব্যাপারটিও অনুরূপ। (হে আববাস (রাদি.) আপনি আপনার ভাতিজার থেকে আপনার প্রাপ্য অংশ আমার কাছে চাচ্ছেন। আর আলী (রাদি.) আমার কাছে তাহাঁর স্ত্রীর অংশ যা তাহাঁর পিতা থেকে তার প্রাপ্য আমার কাছে চাচ্ছেন। সুতরাং আমি বলছি, আপনারা ইচ্ছে করলে আমি আপনাদেরকে এটা দিয়ে দেব। এরপর কি আপনারা অন্য কোন ফায়সালা আমার কাছে চাইবেন? ঐ আল্লাহর কসম! যাঁর হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে, আমি এ ফায়সালা ছাড়া ক্বিয়ামাত পর্যন্ত অন্য কোন ফায়সালা দিতে পারব না। আপনারা এ সম্পদের ব্যবস্থাপনায় অক্ষম হলে তা আমার কাছে ফিরিয়ে দিবেন, আপনাদের পক্ষ থেকে এ সম্পদের ব্যবস্থাপনায় আমিই যথেষ্ট। [২৯০৪] (আঃপ্রঃ- ৬২৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭২)
৬৭২৯
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আমার রেখে যাওয়া সম্পত্তির দীনার বন্টিত হইবে না। আমার রেখে যাওয়া সম্পত্তি সবই সাদাকা- আমার স্ত্রীদের এবং আমার কর্মচারীদের খরচ বাদ দিয়ে।(আঃপ্রঃ- ৬২৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৩)
৬৭৩০
নাবী (সাঃ)- এর সহধর্মিণী আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃ)- এর মৃত্যুর পর তাহাঁর স্ত্রীগণ আবু বাক্র সিদ্দীক (রাদি.)- এর কাছে নিজেদের প্রাপ্য উত্তরাধিকার চাওয়ার জন্য উসমান (রাদি.)- কে পাঠানোর ইচ্ছা করিলেন। তখন আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কি বলেননি যে, আমরা কাউকে ওয়ারিশ বানাই না, আমরা যা রেখে যাই সবই সাদাকাহ।[৪০৩৪; মুসলিম ৩২/১৬, হাদীস ১৭৫৮, আহমাদ ২৫১৭৯] (আঃপ্রঃ- ৬২৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৪)
৮৫/৪. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃ)- এর বাণীঃ যে ব্যক্তি মাল রেখে যায় তা তার পরিবার-পরিজনের হইবে।
৬৭৩১
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মুমিনদের নিকট তাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। যে ব্যক্তি ঋণের বোঝা নিয়ে মারা যায় আর ঋণ পরিশোধ করার মত সম্পদ রেখে না যায়, তাহলে তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার। আর যে ব্যক্তি সম্পদ রেখে যায়, তা তার উত্তরাধিকারীদের জন্য। [৮৯](আঃপ্রঃ- ৬২৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৫)
ইসলামের প্রাথমিক যুগে যদি কেউ খণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যেত এবং খণ পরিশোধের দায়িত্ব কেউ না নিত, সেক্ষেত্রে রাসুল (সাঃ) তাহাঁর জানাযার সালাত আদায় করিতেন না। কিন্তু যখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিজয় দান করিলেন এবং ইসলামী রাষ্ট্র অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হল তখন তিনি রাষ্ট্রের প্রজাদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন أَنَا أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ ফলে ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব তিনি নিজেই নিয়ে নেন। সুতরাং বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর ভাবা উচিত তাদের উপর রাষ্ট্রের প্রজাদের কী দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। (ফাতহুল বারী)
উল্লেখ্য ইসলামী শারীআতে পিতাকে বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত মেয়ের আর বিয়ের পরে স্বামীকে স্ত্রীর যাবতীয় খরচাদির ব্যয়ভার বহন করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্ত্রীকে কর্ম করিতেই হইবে এরূপ নীতি ইসলাম দেয়নি। অতএব একজন স্ত্রী স্ত্রী হিসেবে তার সারা জীবনে যে পরিমাণ স্বামী কর্তৃক উপার্জিত সম্পদ লাভ ও ভোগ করে থাকে তার পরিমাণ স্বামী বা পুরুষের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির পরিমাণের চেয়ে বহুগুণে বেশী হওয়াই স্বাভাবিক। অতএব যারা সমঅধিকারের দাবী তুলছে আসলে ইসলাম সম্পর্কে তাদের জ্ঞান না থাকার কারণেই তারা অবান্তর ও অবাস্তব কিছু দাবী করছে। যার অন্তরালে আসলে কোন সৎ উদ্দেশ্য নেই বরং নারীদেরকে পথে ঘাটে পণ্যের ন্যায় ব্যবহার করে তাদের সম্মান ও মর্যাদাহানীর হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার মন্দ উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে। আর এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে অনৈসলামিক গোষ্ঠীর হীন স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে তাদের সহযোগী তথাকথিত মুসলিম নামধারী কিছু নারী ও পুরুষ নারী স্বাধীনতার বুলি আওড়িয়ে নারী সমাজকে কুলষিত করিতে প্রাণপণ চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছে।
৮৫/৫. অধ্যায়ঃ পিতা-মাতা হইতে সন্তানের উত্তারাধিকার।
৬৭৩২
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাদি.) সু্ত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সুনির্দিষ্ট অংশের হকদারদের মীরাস পৌছে দাও। অতঃপর যা বাকী থাকবে তা (মৃতের) নিকটতম পুরুষের জন্য। [৬৭৩৫, ৬৭৩৭, ৬৭৪৬; মুসলিম ২৩/১, হাদীস ১৬১৫, আহমাদ ২৮৬২] (আঃপ্রঃ- ৬২৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৬)
৮৫/৬. অধ্যায়ঃ কন্যাদের মীরাস।
৬৭৩৩
সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি মক্কায় এমন অসুস্থ হয়ে পড়লাম যে মরণের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলাম। নাবী (সাঃ) আমার সেবা শুশ্রূষা করার জন্য আমার কাছে আসলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার অনেক ধন-সম্পদ আছে। আর আমার এক মেয়ে ব্যতীত আর কোন উত্তরাধিকারী নেই। আমি কি আমার মালের দুতৃতীয়াংশ দান করে দেব? তিনি বলিলেন, না। আমি বললাম, তাহলে কি অর্ধেক দান করব? তিনি বলিলেনত, না। আমি বললাম, এক-তৃতীয়াংশ কি দান করব? তিনি বললেনঃ এক-তৃতীয়াংশ তো অনেক। তুমি তোমার সন্তানকে সচ্ছল অবস্থায় রেখে যাবে সেটাই উত্তম তাকে এমন অভাবগ্রস্ত রেখে যাওয়ার চেয়ে যে অবস্থায় সে মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষে করিবে। তুমি (পরিবার-পরিজনের জন্য) যা খরচ করিবে তার বিনিময় তোমাকে দেয়া হইবে। এমন কি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও তারও বিনিময় দেয়া হইবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কি আমার হিজরাত (এর পুণ্য) থেকে পেছনে পড়ে যাব? তিনি বললেনঃ তুমি কক্ষনো আমার পেছনে পড়ে থাকবে না, তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে আমলই করিবে তাতে তোমার মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি হইবে। সম্ভবত তুমি আমার পরেও জীবিত থাকবে। এমন কি তোমার দ্বারা অনেক গোত্র উপকৃত হইবে এবং অন্যেরা হইবে ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু সাদ ইবনু খাওলা (রাদি.)- এর জন্য আফসোস! মক্কাতেই তাহাঁর মৃত্যু হয়েছিল। সে কারণে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাহাঁর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। সুফ্ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সাদ ইবনু খাওলা (রাদি.) বনূ আমির ইবনু লুআই সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৭)
৬৭৩৪
আস্ওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুআয ইবনু জাবাল (রাদি.) আমাদের নিকট শিক্ষক অথবা আমীর হিসেবে ইয়ামানে আসলে আমরা তাহাঁর কাছে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, যে এক কন্যা ও এক বোন রেখে মারা গেছে। তিনি কন্যাটিকে অর্ধেক ও বোনটিকে অর্ধেক দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৬২৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৮)
৮৫/৭. অধ্যায়ঃ পুত্রের অবর্তমানে পৌত্রের উত্তরাধিকার।
যায়দ (রাদি.) বলেন, পুত্রের সন্তানাদি পুত্রের স্থলবর্তী, যখন তাকে ব্যতীত আর কোন সন্তান না থাকে। পৌত্ররা পুত্রদের মত, আর পৌত্রীরা কন্যাদের মত। পুত্রদের মত পৌত্ররাও ওয়ারিশ হয়, আবার পুত্ররা যেমন অন্যদেরকে বঞ্চিত করে, পৌত্ররাও তেমনি অন্যদেরকে বঞ্চিত করে। আর পৌত্ররা পুত্রদের বর্তমানে ওয়ারিশ হয় না।
৬৭৩৫
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ সুনির্দিষ্ট অংশের হকদারদের ওয়ারিশ পৌছে দাও। অতঃপর যা বাকী থাকবে তা (মৃতের) নিকটতম পুরুষের জন্য। (আঃপ্রঃ- ৬২৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭৯)
৮৫/৮. অধ্যায়ঃ কন্যাদের মীরাসের বর্ণনা।
৬৭৩৬
হুযায়ল ইবনু শুরাহবীল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আবু মূসা (রাদি.)- কে কন্যা, পুত্রের কন্যা এবং ভগ্নির (মীরাস) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তখন তিনি বলিলেন, কন্যার জন্য অর্ধেক আর ভগ্নির জন্য অর্ধেক। (তিনি বলিলেন) তোমরা ইবনু মাসঊদ (রাদি.)- এর কাছে যাও, তিনিও হয়ত আমার মতই বলবেন। অতঃপর ইবনু মাসঊদ (রাদি.)- কে জিজ্ঞেস করা হল এবং আবু মূসা (রাদি.) যা বলেছেন সে সম্পর্কে তাঁকে জানানো হল। তিনি বলিলেন, (ও রকম সিদ্ধান্ত দিলে) আমি তো পথভ্রষ্ট হয়ে যাব, হেদায়েতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত থাকব না। আমি এ ব্যাপারে ঐ ফায়সালাই দিচ্ছি, যে ফায়সালা নাবী (সাঃ) প্রদান করেছিলেন। কন্যা পাবে অর্ধাংশ। আর পৌত্রী পাবে ষষ্ঠাংশ। এভাবে দুতৃতীয়াংশ পূর্ণ হইবে। বাকী এক তৃতীয়াংশ পাবে বোন। এরপর আমরা আবু মূসা (রাদি.)- এর কাছে আসলাম এবং ইবনু মাসউদ (রাদি.) যা বলিলেন, তা তাকে জানালাম। তখন তিনি বললেনঃ এ অভিজ্ঞ মনীষী যতদিন তোমাদের মাঝে থাকবে ততদিন আমার কাছে কিছু জিজ্ঞেস করো না। (আঃপ্রঃ- ৬২৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮০)
৮৫/৯. অধ্যায়ঃ পিতা ও ভ্রাতৃবৃন্দের বর্তমানে দাদার উত্তরাধিকার।
৬৭৩৭
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সুনির্দিষ্ট অংশের হকদারদের মীরাস পৌঁছে দাও। অতঃপর যা বাকী থাকবে তা (মৃতের) নিকটতম পুরুষের জন্য। (আঃপ্রঃ- ৬২৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮১)
৬৭৩৮
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ আমি এ উম্মাতের কাউকে অন্তরঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করলে তাকে [আবু বাকর (রাদি.)]-কে গ্রহণ করতাম। কিন্তু ইসলামী বন্ধুত্বই সবচেয়ে উত্তম। أَفْضَلُ শব্দ বলেছেন না কি خَيْرٌ এ ব্যাপারে রাবীর সন্দেহ আছে। তিনি (রাসুল সাঃআঃ] তাঁকে (ইবরাহীম আ. কে) পিতৃ মর্যাদা দিয়েছেন অথবা তাঁকে পিতার আসনে বসিয়েছেন। [৪৬৭] (আঃপ্রঃ- ৬২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮২)
৮৫/১০. অধ্যায়ঃ সন্তান ও অন্যান্য ওয়ারিশগণের সাথে স্বামীর উত্তরাধিকার।
৬৭৩৯
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (প্রাথমিক অবস্থায় মৃতের ছেড়ে যাওয়া) মাল ছিল সন্তানাদির জন্য আর ওসিয়াত ছিল পিতামাতার জন্য। অতঃপর আল্লাহ তাত্থেকে কিছু রহিত করে দিয়ে অধিকতর পছন্দনীয়টি প্রবর্তন করিয়াছেন। পুরুষের জন্য দুজন নারীর অংশের সমান নির্ধারণ করিয়াছেন। আর পিতা–মাতার প্রত্যেকের জন্য এক-ষষ্ঠাংশ নির্ধারণ করিয়াছেন। স্ত্রীর জন্য নির্ধারণ করিয়াছেন (সন্তানের বর্তমানে) এক-অষ্টমাংশ এবং (সন্তানের অবর্তমানে) এক-চতুর্থাংশ। আর স্বামীর জন্য (সন্তানের অবর্তমানে-) অর্ধেক আর (সন্তানের বর্তমানে) চার ভাগের একভাগ। (আঃপ্রঃ- ৬২৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৩)
৮৫/১১. অধ্যায়ঃ সন্তান ও অন্যান্য ওয়ারিশদের সাথে স্ত্রী ও স্বামীর মীরাস
৬৭৪০
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনী লিহয়ান গোত্রের এক মহিলার গর্ভটি পতিত হয়েছিল মৃত অবস্থায়। নাবী (সাঃ) একটি গোলাম বা দাসী প্রদানের নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি যে মহিলাটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সে মারা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ফায়সালা দিলেন, তার রেখে যাওয়া সম্পদ তার পুত্রগন ও স্বামীর জন্য। আর দিয়াত পাবে তার নিকটতম আত্মীয়গণ।(আঃপ্রঃ- ৬২৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৪
৮৫/১২. অধ্যায়ঃ কন্যাদের বর্তমানে ভগ্নিরা ওয়ারিশ হইবে আসাবা হিসেবে।
৬৭৪১
আল আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুআয্ ইবনু জাবাল (রাদি.) রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- এর যুগে আমাদের মাঝে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যে, কন্যার জন্য অর্ধেক আর ভগ্নির জন্য অর্ধেক [৯০]।
অতঃপর (রাবী) সুলায়মান বলেন, তিনি (আল আসওয়াদ) আমাদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। তবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)– এর যুগে কথাটি উল্লেখ করেননি।(আঃপ্রঃ- ৬২৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৫)
[৯০] হাদীসটি মহিলাদের মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ। বর্তমান সমাজে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে ছেলে-মেয়ের সমঅধিকারের যে বুলি শোনা যাচ্ছে তা কতটুকু বাস্তব সম্মত? কারণ আল্লাহ প্রদত্ত বন্টন নীতি অনুযায়ী আজও মেয়েদের প্রাপ্য সম্পত্তি দেয়া হয় না। সেখানে সমান দেয়ার আইন করলে কি তাদের হক তাদেরকে দেয়া হইবে? অথচ ভাবা দরকার যে, জাহেলিয়াতের যুগে মেয়েদের কোন সম্পত্তিই দেয়া হত না। ইসলামই তাদের এ অধিকার দিয়েছে। সুতরাং অযথা সমঅধিকারের ধুয়া না তুলে আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃ) কর্তৃক সম্পত্তি বন্টনের নীতি বাস্তবায়নে সচেষ্ট হোন।
উল্লেখ্য ইসলামী শারীআতে পিতাকে বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত মেয়ের আর বিয়ের পর স্বামীকে স্ত্রীর যাবতীয় খরচাদির ব্যয়ভার বহন করার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্ত্রীকে কর্ম করিতেই হইবে এরূপ নীতি ইসলাম দেয়নি। অতএব একজন স্ত্রী স্ত্রী হিসেবে তার সারা জীবনে যে পরিমান স্বামী কর্তৃক উপার্জিত সম্পদ লাভ ও ভোগ করে থাকে তার পরিমাণ স্বামী বা পুরুষের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির পরিমাণের চেয়ে বহুগুণে বেশী হওয়াই স্বাভাবিক। অতএব যারা সমঅধিকারের দাবী তুলছে আসলে ইসলাম সম্পর্কে তাদের জ্ঞান না থাকার কারণেই তারা অবান্তর ও অবাস্তব কিছু দাবী করছে। যার অন্তরালে আসলে কোন সৎ উদ্দেশ্য নেই বরং নারীদেরকে পথে ঘাটে পণ্যের ন্যায় ব্যবহার করে তাদের সম্মান ও মর্যাদাহানীর হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার মন্দ উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে। আর এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে অনৈসলামিক গোষ্ঠীর হীন স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে তাদের সহযোগী তথাকথিত মুসলিম নামধারী কিছু নারী ও পুরুষ নারী স্বাধীনতার বুলি আওড়িয়ে নারী সমাজকে কলুষিত করিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
৬৭৪২
হুযায়ল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন “আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাদি.) বলেছেন, আমি এতে সেই ফায়সালাই দেব যা নাবী (সাঃ) দিয়েছিলেন। অথবা তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেন, কন্যার জন্য অর্ধেক আর পৌত্রীর জন্য ষষ্ঠাংশ। অতঃপর যা বাকী থাকবে তা বোনের জন্য।(আঃপ্রঃ- ৬২৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৬)
৮৫/১৩. অধ্যায়ঃ ভাই-বোনদের মীরাস।
৬৭৪৩
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) আমার কাছে আসলেন আর সে সময় আমি অসুস্থ ছিলাম। তিনি অযূর পানি চাইলেন এবং অযূ করিলেন। তারপর অযূর অবশিষ্ট পানি আমার উপর ছিটিয়ে দিলেন। তাতে আমি প্রাণ ফিরে পেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার বোনেরা আছে। সে সময় ফারায়েজ সংক্রান্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়।(আঃপ্রঃ- ৬২৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৭)
৮৫/১৪. অধ্যায়ঃ (আল্লাহর বাণী): লোকেরা তোমার নিকট জানতে চায়। বল, আল্লাহ তোমাদেরকে পিতৃ মাতৃহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্পর্কে ফতোয়া দিচ্ছেন তোমাদের বিধান দিচ্ছেন “কালালা” – (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়। (পিতা-মাতা না থাকে) এবং তার এক বোন থাকে তবে সে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ পাবে; সে যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার ওয়ারিস হইবে। তবে যদি বোন দুজন থাকে তাহলে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ পাবে; আর যদি ভাই-বোন কয়েকজন থাকে তবে এক পুরুষের অংশ দুই নারীর অংশের সমান হইবে। তোমরা গুমরাহ হইবে এ আশংকায় আল্লাহ তোমাদের জন্য পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সুরা আন্-নিসা ৪/১৭৬)।
৬৭৪৪
বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সর্বশেষ অবতীর্ণ আয়াত হল সুরা নিসার শেষ আয়াতঃ {يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ} । [৪৩৬৪] (আঃপ্রঃ- ৬২৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৮)
৮৫/১৫. অধ্যায়ঃ দুজন চাচাতো ভাই, এদের একজন বৈপিত্রেয় ভাই আর অন্যজন যদি স্বামী হয়।
আলী (রাদি.) বলেন, স্বামীর অংশ অর্ধেক আর বৈপিত্রেয় ভাই-এর অংশ এক-ষষ্ঠাংশ। অবশিষ্টাংশ দুএর মাঝে আধাআধি বন্টিত হইবে।
৬৭৪৫
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি মুমিনদের নিকট তাদের প্রানের চেয়েও প্রিয়। তবে যে ব্যক্তি সম্পদ রেখে মারা যায় তার সম্পদ তার নিকটতম আত্মীয়রা পাবে। আর যে ব্যক্তি ঋণ অথবা নাবালক সন্তানাদি রেখে মারা যায় আমিই তার অভিভাবক। তার জন্য আমাকেই যেন ডাকা হয়।(আঃপ্রঃ- ৬২৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৯)
৬৭৪৬
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সুনির্দিষ্ট অংশের হাকদারকে মীরাস দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা নিকটতম পুরুষ আত্মীয়দের প্রাপ্য। (আঃপ্রঃ- ৬২৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯০)
৮৫/১৬. অধ্যায়ঃ যাবিল আরহাম।
৬৭৪৭
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ} এ আয়াত সম্বন্ধে বলেন, মুহাজিরগণ যখন মদিনা্য় আসলেন, তখন নাবী সাঃআঃ কর্তৃক মুহাজির ও আনসারগণের মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দেয়ার কারণে আনসারগণের সঙ্গে যাদের যাবিল আরহাম-এর সম্পর্ক ছিল তাদের ছাড়াও মুহাজিরগণ আনসারগণের সম্পত্তির উত্তরাধিকার হইতেন। অতঃপর وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ….. الآية- অর্থাৎ যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়েছ আয়াতটি অবতীর্ণ হলে وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ অতঃপর আয়াতের বিধান রহিত হয়ে গেল। [২২৯২] (আঃপ্রঃ- ৬২৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯১)
৮৫/১৭. অধ্যায়ঃ যাদের উপর লিআন করা হয় তাদের মীরাস।
৬৭৪৮
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃ)- এর এক ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর উপর লিআন করেছিল। এবং তার সন্তানটিকেও অস্বীকার করিল। তখন নাবী (সাঃ) তাদের দুজনকে বিচ্ছেদ করে দিলেন এবং সন্তানটি মহিলাকে দিয়ে দিলেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯২)
৮৫/১৮. অধ্যায়ঃ বিছানা যার, সন্তান তার-স্ত্রীলোকটি আযাদ হোক আর দাসীই হোক।
৬৭৪৯
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, উতবাহ তার ভাই সাদকে ওসীয়্যত করিল যে, যামাআ নামক বাঁদীর গর্ভের সন্তানটি আমার। তাই তুমি তাকে তোমার অধিকারে নিয়ে নাও। মাক্কাহ বিজয়ের বছর সাদ তাকে নিজের অধিকারে নিলেন এবং বলিলেন যে, এ আমার ভাতিজা। আমার ভাই এর সম্পর্কে ওসীয়্যত করে গিয়েছিলেন। তখন আবদ ইবনু যামআহ উত্থান করিল এবং বললো, এ তো আমার ভাই। কারণ, এ হল আমার পিতার দাসীর পুত্র। এবং আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম হয়েছে। উভয়েই তাঁদের বিবাদ নাবী (সাঃ – এর কাছে উত্থাপন করিলেন। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ, এ ছেলে তুমিই পাবে। কেননা, শয্যা যার, সন্তান তার। আর ব্যভিচারীর জন্য হল পাথর। এরপর তিনি সাওদা বিনত যামআহকে বললেনঃ এ ছেলে থেকে তুমি পর্দা পালন করিবে। কারণ, তিনি ছেলেটির মাঝে উতবার সাদৃশ্য দেখিতে পেয়েছিলেন। কাজেই সে মৃত্যু পর্যন্ত সাওদা (রাদি.)- কে দেখিতে পায়নি। (আঃপ্রঃ- ৬২৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৩)
৬৭৫০
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সন্তান হল শয্যাধিপতির।[৬৮১৮; মুসলিম ১৭/১০, হাদীস ১৪৫৮, আহমাদ ৭৭৬৭] (আঃপ্রঃ- ৬২৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬২৯৪)
৮৫/১৯. অধ্যায়ঃ যে আযাদ করিবে অভিভাবকত্ব হল তার। এবং লা-ওয়ারিশ সন্তানের মীরাস।উমার (রাদি.) বলেন, লাকীত (কুড়িয়ে পাওয়া) ব্যক্তি আযাদ।
৬৭৫১
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বারীরা (নামক এক দাসীকে)- কে কিনতে চাইলাম। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তুমি তাকে কিনে নাও। কারণ, তার পরিত্যক্ত সম্পদের মালিকানা তার হইবে যে তাকে আযাদ করিবে। বারীরাকে (একদা একটি বক্রী) সদাকাহ দেয়া হল। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ এটি তার জন্য সদাকাহ আর আমাদের জন্য হাদিয়া বা উপঢৌকন। [৯১]
হাকাম বলেন, বারীরার স্বামী ছিল একজন আযাদ ব্যক্তি। আবু আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, হাকামের বর্ণনা মুরসাল। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, আমি তাকে (অর্থাৎ বারীরার স্বামীকে) গোলামরূপে দেখেছি।(আঃপ্রঃ- ৬২৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৫)
[৯১] আট প্রকারের লোক কেবল যাকাত নিতে পারবে (সুরা তাওবাহ্ঃ ৬০), কিন্তু যাকাত-গ্রহীতা দাওয়াত খাওয়ালে যে কোন মানুষ খেতে পারবে।
৬৭৫২
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ দাস-দাসীর পরিত্যক্ত সম্পদের মালিক হইবে যে তাকে আযাদ করিবে।(আঃপ্রঃ- ৬২৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৬)
৮৫/২০. অধ্যায়ঃ সায়বার মীরাস।
৬৭৫৩
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইসলামের ধারক বাহকরা সায়বা বানায় না। জাহিলী যুগের লোকেরা সায়বা বানাত। (আঃপ্রঃ- ৬২৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৭)
৬৭৫৪
আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা (রাদি.) বারীরাকে আযাদ করার উদ্দেশে ক্রয় করিলেন। তখন তার মনিব শর্ত করিল যে বারীরার পরিত্যক্ত সম্পদের মালিকানা বিক্রয়কারীর থাকবে। তখন আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি বারীরাকে আযাদ করার উদ্দেশে কিনতে চাই। কিন্তু তার মনিবরা তার ওয়ালা তাদের কাছে রাখার শর্ত করছে। তিনি বললেনঃ তাকে (কিনে) আযাদ কর। কারন, ওয়ালা হল তার যে আযাদ করে। অথবা তিনি বললেনঃ তার মূল্য দিয়ে দাও। রাবী বলেন, তখন তিনি তাকে ক্রয় করিলেন এবং আযাদ করে দিলেন। রাবী আরও বলিলেন, তাকে তার (স্বামীর সঙ্গে) থাকা না থাকার ব্যাপারে যে কোন একটি গ্রহন করার স্বাধীনতা দেয়া হল। স্বামীর সঙ্গ থেকে নিজের মুক্তিকেই সে গ্রহন করিল এবং বলিল, আমাকে যদি এত এত কিছু দেয়াও হয় তবুও আমি তার সাথী হব না।
আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, তার স্বামী আযাদ ছিল। আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, আসওয়াদ- এর বক্তব্য সূত্র ছিন্ন। ইবনু আব্বাস (রাদি.)- এর বক্তব্য আমি তাকে (বারীরার স্বামীকে) গোলামরূপে দেখেছি অধিকতর শুদ্ধ।(আঃপ্রঃ- ৬২৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৮)
৮৫/২১. অধ্যায়ঃ যে গোলাম তার মনিবদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করে তার পাপ।
৬৭৫৫
ইবরাহীম তামীমীর পিতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী (রাদি.) বলেছেন, কিতাবুল্লাহ ছাড়া আমাদের কাছে আর কোন কিতাব নেই যা আমরা পাঠ করিতে পারি। অবশ্য এ লিপিখানা আছে। রাবী বলেন, এরপর তিনি তা বের করিলেন। দেখা গেল যে, তাতে যখম ও উটের বয়সের ব্যাপারে লেখা আছে। রাবী বলেন, তাতে আরও লিলিবদ্ধ ছিল যে, (মাদীনার) আইর থেকে নিয়ে অমুক স্থানের মধ্যবর্তী স্থান হারাম (বা সম্মানিত)। এখানে যে বিদআত করিবে বা বিদআতীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা, মানুষ এবং সকলের লানাত। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তার কোন ফরয আমল এবং কোন নফল কবূল করবেন না। যে ব্যক্তি মনিবের অনুমতি ব্যতীত কোন গোলামকে আশ্রয় প্রদান করে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশ্তা এবং সমস্ত মানুষের লানাত। তার কোন ফরয বা নফল ক্বিয়ামাতের দিন কবুল করা হইবে না। সমস্ত মুসলিমের দায়িত্ব-কর্তব্য-অঙ্গীকার এক, একজন সাধারণ মুসলিমও তা মেনে চলবে। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের আশ্রয় প্রদানকে বানচাল করে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সকল মানুষের লানাত। ক্বিয়ামাতের দিন তার কোন ফরয ও নফল কবূল করা হইবে না। (আঃপ্রঃ- ৬২৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৯)
৬৭৫৬
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) ওয়ালা (গোলামের পরিত্যক্ত সম্পদের মালিকানা) বিক্রয় এবং হেবা করিতে নিষেধ করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০০)
৮৫/২২. অধ্যায়ঃ কাফির কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করলে।
তবে হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার জন্য ওয়ালার স্বীকৃতি দিতেন না। নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালা তার জন্য যে আযাদ করে। তামীমে দারী (রাদি.) থেকে মারফু হিসাবে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালার জীবন ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে তার আযাদকারী সর্বাধিক প্রধান্যযোগ্য। তবে এ খবরের সত্যতা সম্পর্কে অন্যেরা মতভেদ করিয়াছেন।
৬৭৫৭
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাদি.) একটি বাঁদী ক্রয় করিলেন আবং তাকে মুক্ত করিলেন। তখন তার মালিকরা তাঁকে বলিল যে, আমরা এ বাঁদী আপনার কাছে এ শর্তে বিক্রি করিতে পারি যে, ওয়ালা আমাদের থাকবে। তিনি ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে উল্লেখ করিলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটা তোমার জন্য বাধা হইবে না। কারণ, ওয়ালা তার যে আযাদ করে।(আঃপ্রঃ- ৬২৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০১)
৬৭৫৮
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীরা বাঁদীকে আমি ক্রয় করলাম। তখন তার মালিকেরা তার ওয়ালার শর্ত করিল (যে ওয়ালার মালিক তারাই থাকবে)। ব্যাপারটি আমি নাবী (সাঃ)- এর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আযাদ করে দাও। কেননা, ওয়ালা তার যে মূল্য প্রদান করে। আয়েশা (রাদি.) বলেনঃ আমি তাকে আযাদ করে দিলাম। তিনি বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বারীরাকে ডাকলেন এবং তার স্বামীর (স্ত্রী হয়ে থাকা বা না থাকার) ব্যাপারে তাকে স্বাধীনতা দিলেন। তখন সে বলিল, সে যদি আমাকে এত এত মালও দেয় তবুও আমি তার সংগে রাত্রি যাপন করব না এবং সে নিজেকেই স্বাধীন করে নিল। রাবী বলেন, তার স্বামী স্বাধীন ব্যক্তি ছিল।(আঃপ্রঃ- ৬২৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০২)
৮৫/২৩. অধ্যায়ঃ নারীরাও ওয়ালার ওয়ারিস হয়।
৬৭৫৯
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আয়েশা (রাদি.) বারীরাকে কিনতে চাইলেন। তিনি নাবী (সাঃ)- এর কাছে বলিলেন যে, ওয়ালা তাদেরই থাকবে বলে শর্ত করছে। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তুমি তাকে কিনে নাও। কারণ, ওয়ালা তার, যে আযাদ করে।(আঃপ্রঃ- ৬২৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৩)
৬৭৬০
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালা হল ঐ ব্যক্তির জন্য যে রৌপ্য (মূল্য) প্রদান করে। আর সে নিয়ামতের অধিকারী হয়।(আঃপ্রঃ- ৬২৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৪)
৮৫/২৪. অধ্যায়ঃ কোন কাওমের আযাদকৃ্ত গোলাম তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আর বোনের ছেলে ও ঐ কাওমের অন্তর্ভুক্ত।
৬৭৬১
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন কাওমের (আযাদকৃত) গোলাম তাদেরই অন্তর্ভুক্ত অথবা এ জাতীয় কোন কথা বলেছেন।(আঃপ্রঃ- ৬২৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৫)
৬৭৬২
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন কাওমের বোনের পুত্র সে কাওমেরই অন্তর্ভুক্ত। এখানে مِنْهُمْ বলেছেন অথবা مِنْ أَنْفُسِهِمْ বলেছেন। [৩১৪৬] (আঃপ্রঃ- ৬২৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৬)
৮৫/২৫. অধ্যায়ঃ বন্দীর উত্তারাধিকার।
শুরায়হ (রাদি.) শত্রুদের হাতে বন্দী মুসলিমদেরকে উত্তারাধিকার প্রদান করিতেন এবং বলিতেন, এ বন্দী লোক উত্তারাধিকারের প্রতি অধিক মুখাপেক্ষী। উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, বন্দী ব্যক্তির ওসিয়ত, তাকে আযাদ কর এবং তার মালের ব্যবহারকে জায়েয মনে কর, যতক্ষণ না সে আপন ধর্ম থেকে ফিরে যায়। কেননা, এ হচ্ছে তার মাল। সে এতে যা ইচ্ছা তাই করিতে পারে।
৬৭৬৩
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ধন-সম্পদ রেখে মারা যায় সে ধন-সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য। আর যে ঋণ রেখে (মারা) যায় তা (আদায় করা) আমার যিম্মায়। (আঃপ্রঃ- ৬২৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৭)
৮৫/২৬. অধ্যায়ঃ মুসলিম কাফেরের এবং কাফির মুসলিমের উত্তরাধিকারী হয় না। কোন ব্যক্তি সম্পত্তি বণ্টনের পূর্বে মুসলিম হয়ে গেলে সে মিরাস পাবে না।
৬৭৬৪
উসামাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ মুসলিম কাফেরের উত্তারাধিকারী হয় না আর কাফিরও মুসলিমের উত্তরাধিকারী হয় না।[১৫৮৮; মুসলিম পর্ব ২৩/হাদীস ১৬১৪, আহমাদ ২১৮০৬] (আঃপ্রঃ- ৬২৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৮)
৮৫/২৭. অধ্যায়ঃ নাসারা গোলাম ও নাসারা মাকাতিবের মিরাস এবং যে ব্যক্তি আপন সন্তানকে অস্বীকার করে তার গুনাহ।
৮৫/২৮. অধ্যায়ঃ যে লোক কাউকে ভাই বা ভাতিজা হবার দাবি করে।
৬৭৬৫
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাদি.) ও আবদু ইবনু যামআহ একটি ছেলের ব্যাপারে পরস্পরে কথা কাটাকাটি করেন। সাদ (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ছেলেটি আমার ভাই উতবা ইবনু আবু ওয়াক্কাস- এর পুত্র। তিনি আমাকে ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন যে, এ ছেলেটি তাহাঁর পুত্র। আপনি তাহাঁর চেহারার দিকে চেয়ে দেখুন। আবদ ইবনু যামআহ বললো, এ আমার ভাই, হে আল্লাহর রাসুল! এ আমার পিতার বাঁদীর গর্ভে জন্মেছে। তখন নাবী (সাঃ) তার চেহারার দিকে নযর করিলেন এবং উতবার চেহারার সঙ্গে তার আকৃতির প্রকাশ্য মিল দেখিতে পেলেন। তখন তিনি বলিলেন, হে আবদ! এ ছেলে তুমি পাবে। কেননা সন্তান হল যার বিছানা তারই, আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর। আর হে সাওদা বিনতে জামআহ! তুমি তার থেকে পর্দা কর। আয়েশা (রাদি.) বলেন, অতঃপর সে কখনও সাওদাকে দেখা দেয়নি। (আঃপ্রঃ- ৬২৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৯)
৮৫/২৯. অধ্যায়ঃ যে নিজের পিতা বাদে অন্যকে পিতা বলে দাবি করে।
৬৭৬৬
সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃ)- কে বলিতে শুনিয়াছি, যে অন্যকে নিজের পিতা বলে দাবি করে অথচ সে জানে যে সে তার পিতা নয়, জান্নাত তার জন্য হারাম। [৯২][৪৩২৬; মুসলিম ১/২৭, হাদীস ৬৩, আহমাদ ১৫৫৩] (আঃপ্রঃ- ৬২৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১০)
[৯২] হাদীসটিকে কিতাবূল ফারায়িযে বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হল নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা সম্বোধন করার ফলে উত্তরাধিকারী সাব্যস্ত না হবার প্রতি ইঙ্গিত করা। হাদীসটি হইতে আরো জানা যায়ঃ (১) নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা সম্বোধন করা জঘন্য পাপ। (২) অজ্ঞাত কারণে অন্যকে পিতা সম্বোধন দোষণীয় নয়। যেমন- জন্মের পর পরই যদি কারো তত্ত্বাবধানে থেকে পিতা-পুত্রের পরিচয়ে বড় হইতে থাকে কিন্তু ছেলেটি জানে না যে, সে তার প্রকৃত পিতা নয়। ফলে সে তাকে নিজ পিতার মতই সম্বোধন করে। (ফাতহুল বারী)
৬৭৬৭
সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাবী বলেন, আমি এ কথাটি আবু বকর (রাদি.)- এর নিকটে উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বলিলেন, আমার দুটো কান তা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষণ করে রেখেছে।[৪৩২৭; মুসলিম ১/২৭, হাদীস ৬৩, আহমাদ ১৫৫৩] (আঃপ্রঃ- ৬২৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১০)
৬৭৬৮
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না (অর্থাৎ অস্বীকার করো না)। কারণ যে লোক নিজের পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (অর্থাৎ পিতাকে আস্বীকার করে) তা কুফ্রী।[মুসলিম ১/২৭, হাদীস ৬২, আহমাদ ১৮০১৫] (আঃপ্রঃ-৬২৯৯ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১১)
৮৫/৩০. অধ্যায়ঃ কোন স্ত্রীলোক কাউকে পুত্র হিসাবে দাবি করলে।
৬৭৬৯
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ দুজন স্ত্রীলোকের সাথে তাদের দুটো ছেলে ছিল। বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলেকে নিয়ে গেল। এক মহিলা তার সঙ্গিণীকে বলিল, বাঘ তোমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। অন্যজন বলিল, বাঘ তোমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। তারা দুজন দাউদ (আঃ)-এর কাছে তাদের মামলা পেশ করিল। তিনি বড় স্ত্রীলোকটির পক্ষে রায় দিলেন। তারপর তারা বেরিয়ে দাউদ (আঃ)-এর ছেলে সুলায়মান (আঃ)-এর কাছে গেল আর তারা দুজনেই তাঁকে তাদের ঘটনা জানালো। তখন তিনি বলিলেন, আমার কাছে একটি ছুরি আন কেটে দুজনের মধ্যে ভাগ করে দেব। তখন ছোট স্ত্রীলোকটি বলিল, আপনি এমন করবেন না, আল্লাহ আপনার উপর দয়া করুন। এ ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি ছোট মহিলার বলে রায় দিলেন। আবু হুরাইরাহ (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি سكين শব্দটি ঐ দিনের পূর্বে কখনও শুনিনি । পূর্বে তো আমরা একে مدية বলতাম। [৩৪২৭] (আঃপ্রঃ- ৬৩০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১২)
৮৫/৩১. অধ্যায়ঃ কায়েফ (অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দেখে বংশ নির্ধারণ)।
৬৭৭০
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার কাছে এমন হাসিখুশি অবস্থায় আসলেন যে, তাহাঁর চেহারার রেখাগুলো চমকাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তুমি কি দেখনি যে, মুজাযযিয (চিহ্ন দেখে বংশ নির্ধারণকারী) যায়দ ইবনু হারিসাহ এবং উসামাহ ইবনু যায়দ- এর দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে লক্ষ্য করেছে। এরপর সে বলেছে, তাদের দুজনের পাগুলো পরস্পর থেকে (এসেছে)।[৩৫৫৫; মুসলিম ১৭/১১, হাদীস ১৪৫৯, আহমাদ ২৪৫৮০] (আঃপ্রঃ- ৬৩০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১৩)
৬৭৭১
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার কাছে আসলেন। তিনি ছিলেন হাসি-খুশি। তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! (চিহ্ন দেখে বংশ নির্ধারণকারী) মুদলিজী এসেছে তা কি তুমি দেখেছ? সে উসামাহ এবং যায়দ- এর দিকে লক্ষ্য করেছে। তাদের দুজনের গায়ে চাদর ছিল যা দিয়ে তাদের মাথা ঢেকে রাখা হয়েছিল। আর তাদের পাগুলো ছিল খোলা। তখন সে বলিল, এদের পাগুলো একে অপর থেকে।[৩৫৫৫; মুসলিম ১৭/১১, হাদীস ১৪৫৯] (আঃপ্রঃ- ৬৩০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১৪)
Leave a Reply