ইসলামিক নাম – উপনাম, মিথ্যাচার, যাআমূ, আঙ্গুরকে কারম বলা
ইসলামিক নাম – উপনাম, মিথ্যাচার, যাআমূ, আঙ্গুরকে কারম বলা >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ৪৩, অনুচ্ছেদঃ ৬৯-৮৩=১৫টি
অনুচ্ছেদ-৬৯ঃ নাম পরির্বতন করা
অনুচ্ছেদ-৭০ঃ মন্দ নাম পরিবর্তন করা
অনুচ্ছেদ-৭১ঃ উপনাম সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৭২ঃ আবু ঈসা উপনাম রাখা
অনুচ্ছেদ-৭৩ঃ অন্যের পুত্রকে হে আমার পত্র বলা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৭৪ঃ কারো আবুল ক্বাসিম উপনাম রাখা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৭৫ঃ কারো একই সঙ্গে নাবী [সাঃআঃ]-এর নাম ও উপনাম গ্রহণ ঠিক নয়
অনুচ্ছেদ-৭৬ঃ নাম ও উপনাম উভয়টি একত্রে গ্রহণের অনুমুতি প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-৭৭ঃ সন্তানহীন ব্যক্তির উপনাম
অনুচ্ছেদ-৭৮ঃ নারীদের উপনাম গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৭৯ঃ পরোক্ষ মিথ্যাচার
অনুচ্ছেদ-৮০ঃ কোন ব্যক্তির “যাআমূ” শব্দ ব্যবহার করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৮১ঃ বক্তব্যে আম্মা বাদ শব্দের ব্যবহার
অনুচ্ছেদ-৮২ঃ আঙ্গুরকে কারম বলা এবং বাকসংযত হওয়া
অনুচ্ছেদ-৮৩ঃ দাস/সেবক তার মালিককে আমার রব বলবে না
অনুচ্ছেদ-৬৯ঃ নাম পরির্বতন করা
৪৯৪৮. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন তোমাদেরকে, তোমাদের ও তোমাদের পিতাহাদের নাম ধরে ডাকা হইবে। তাই তোমরা তোমাদের সুন্দর নামকরণ করো। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, বর্ণনাকারী ইবনি আবু যাকরিয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু দারদার [রাদি.] সাক্ষাৎ পাননি।৪৯৪৬
দুর্বলঃ মিশকাত হা/৪৭৬৮, যঈফাহ হা/৫৪৬০। ৪৯৪৬দারিমী, আহমাদ। এর সানাদে বর্ণনাকারী বাদ পড়েছে। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৯৪৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মহামহিম আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো আব্দুল্লাহ এবং আব্দুর রহমান।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫০. আবু ওয়াহব আল্-জিশামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা নাবী-রাসূলগণের নামে নামকরণ করো। আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান। নামের মাঝে হারিস ও হাম্মাম হলো বিশ্বস্ত নাম এবং হারব ও মুররাহ হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাম।
সহিহ, তার এ কথাটি বাদেঃ “তোমরা নাবী-রাসূলগণের নামে নামকরণ করো”।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫১.আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু ত্বালহার [রাদি.] পুত্র আব্দুল্লাহকে তাহাঁর জন্মগ্রহণের পর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট নিয়ে যাই। তখন নাবী [সাঃআঃ] একটি উলের আলখাল্লা পরা ছিলেন এবং তাহাঁর উটের গায়ে তৈল মালিশ করছিলেন। তিনি প্রশ্ন করিলেন, তোমার সঙ্গে কি খেজুর আছে? আমি বলিলাম, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি তাঁকে কয়েকটি খেজুর দিলাম। তিনি ঐ খেজুরগুলো তাহাঁর মুখে দিয়ে চিবালেন এং তাহাঁর মুখ হইতে শিশুর মুখ খুলে তাতে দিলেন। তখন শিশুটি তাহাঁর মুখ নাড়তে শুরু করে এবং খাওয়ার জন্য চেষ্টা করিতে থাকে। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃআনসারদের পছন্দনীয় খাদ্য হলো খেজুর এবং শিশুটির নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭০ঃ মন্দ নাম পরিবর্তন করা
৪৯৫২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উমার [রাদি.] এর কন্যা আসিয়ার নাম পরিবর্তন করে বলেন, তোমার নাম হলো জামীলাহ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫৩. মুহাম্মদ ইবনি আমর ইবনি আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
যাইনাব বিনতু আবু সালামাহ [রাদি.] তাহাকে প্রশ্ন করেন, তোমার মেয়ের কি নাম রেখেছো? তিনি বলিলেন, আমি, তার নাম রেখেছি বাররা [পুণ্যবতী]। অতঃপর তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ ধরনের নাম রাখতে বারণ করেছেন। আমার নামও বাররা রাখা হয়েছিলো। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ “তোমরা নিজেদের পরিশুদ্ধ দাবি করো না। কেননা আল্লাহই ভাল জানেন, তোমাদের মধ্যে কে পুণ্যবান”। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি এর কি নাম রাখবো? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এর নাম রাখো যাইনাব।
এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৪৯৫৪. উসামাহ ইবনি আখদারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আগত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক লোকের নাম ছিল আসরাম [কর্কশ]। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রশ্ন করিলেন, তোমার নাম কি? তিনি বলিলেন, আমি আসরাম। তিনি বলিলেনঃনা, এ নাম ঠিক নয়, বরং তুমি যুরআহ [শস্যদানা]।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫৫. হানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি যখন তার গোত্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আসলেন, তখন তিনি [সাঃআঃ] তার গোত্রের লোকদেরকে তাহাকে আবুল হাকাম উপনামে ডাকতে শুনে তাহাকে ডেকে বলিলেন, আল্লাহই হলেন হাকাম এবং তাহাঁর নিকটই ন্যায়বিচার ও নির্দেশ। তোমার উপনাম কি করে আবুল হাকাম হলো? তিনি বলিলেন, আমার গোত্রের লোকজনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হলে তারা মীমাংসার জন্য আমার নিকট আসে। আমি যে সিদ্ধান্ত দেই তাতে তারা উভয় পক্ষই সন্তুষ্ট হয়ে যায়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ এটাতো খুবই উত্তম কাজ! তোমার কি কোন সন্তান আছে? হানী [রাদি.] বলিলেন, শুরাইহ, মুসলিম ও আব্দুল্লাহ নামে আমার তিনটি ছেলে আছে। তিনি বলিলেন, এদের মধ্যে বড় কে? আমি বলিলাম, শুরাইহ। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি আবু শুরাইহ। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইনি হলেন সেই শুরাইহ [রাদি.] যিনি শিকল ভেঙ্গেছিলেন এবং তুসতার [দুর্গে] প্রবেশ করেছিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, শুরাইহ [রাদি.] তুসতার দুর্গের প্রবেশ পথ ভেঙ্গে ফেলেন এবং একটি সুড়ঙ্গ পথে তাতে প্রবেশ করেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫৬. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়াব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা এবং তার দাদার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে প্রশ্ন করিলেন, তোমার নাম কি? তিনি বলিলেন, হাযন [কর্কশ]। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃতোমার নাম সাহল [সহজ]। তিনি বলিলেন, না, কারণ সহজ-সরলকে পদদলিত করা হয়, অপমান করা হয়। বর্ণনাকারী সাঈদ [রাদি.] বলেন, আমি ধারণা করলাম যে, অচিরেই আমাদের উপর বিপদ বা কঠোরতা নেমে আসতে পারে। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আস [অবাধ্য], আযীয [পরাক্রমশালী], আতলাহ [কর্কশ], শয়তান, হাকাম [বিচারক], গুরাব [কাক] হুবাব [সাপ] ও শিহাব [উল্কা] নামকে পরিবর্তন করে রেখেছেন হিশাম [বিধ্বস্তকারী]। তিনি হারব [যুদ্ধ] এর পরিবর্তে সালাম [শান্তি] মুনবাইস [শয়নকারী] কে মুদতাদি [জাগরিত], আফিরাহ [অনুর্বর] নামক এলাকাকে খাদিরাহ [সবুজ], আদ-দালালাহ [বিপথ] উপত্যকাকে আল-হুদা [হিদায়াতের পথ], বনূ যানিয়াহ [জারজ সন্তান] এর নাম বনূর-রিশদাহ [নির্মল সন্তান] এবং বনু মুগবিয়াহ [বিপথগামী নারীর সন্তান] এর বনূ রিশদা [হিদায়াতপ্রাপ্ত নারীর সন্তান] নামকরণ করেছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫৭. মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলিলেন, তুমি কে? আমি বলিলাম, মাসরূক ইবনিল আজদা। উমার [রাদি.] বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ আল-আজদা হলো একটি শয়তান। {৪৯৫৫}
দুর্বলঃ মিশকাত হা/৪৭৬৭। {৪৯৫৫} ইবনি মাজাহ, আহমাদ, হাকিম। সানাদে মুজালিদ বিন সাঈদ শক্তিশালী নন।এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৯৫৮. সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তুমি তোমার সন্তানের নাম উয়াসার [সম্পদ], রাবাহ [মুনাফা], নাজীহ [সফল] বা আফলাহা [কৃতকার্য] রাখবে না। কারণ তুমি যখন প্রশ্ন করিবে, সে কি এখানে আছে, জবাবদাতা বলবে, না। সামুরাহ [রাদি.] বলেন, চারটি নাম উল্লেখ করা হলো। আমার নিকট এর অতিরিক্ত প্রশ্ন করো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৫৯. সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের দাসদের নামকরণের ক্ষেত্রে চারটি নাম রাখতে বারণ করেছেনঃ আফলাহ, ইয়াসার, নাফি ও রাবাহ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৬০.জাবির হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ইনশাআল্লাহ যদি আমি জীবিত থাকি তবে আমার উম্মাতকে নাফি, আফলাহ, বারকাত এরূপ নামকরণ করিতে বারণ করবো। আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি অবহিত নই যে, তিনি নাফি নামটি উল্লেখ করেছেন কিনা। কারণ কোন লোক এসে যখন প্রশ্ন করে, বরকত এখানে আছে কি? লোকে বলে, না। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবু যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] হইতে নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন, তবে তাতে বারাকাত নাম উল্লেখ করেননি।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৬১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন মহান আল্লাহর নিকট ঐ ব্যক্তির নামই সবচেয়ে নিকৃষ্ট হইবে যার নাম রাখা হয় মালিকুল আমলাক [রাজাধিরাজ]।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭১ঃ উপনাম সম্পর্কে
৪৯৬২. আবু জুরাইরা ইবনিদ দাহহাক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাদের বনী সালিমাহ সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “তোমরা একে অপরকে মন্দ উপাধিতে ডেকো না। কারণ ঈমানের পর মন্দ নামে ডাকা পাপাচারের অন্তর্ভুক্ত” [সূরাহ আল হুজরাতঃ ১১] বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন আমাদের মাঝে আগমন করেন তখন আমাদের প্রত্যেকেরই দুই-তিনটা করে নাম ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] “হে অমুক” এভাবে ডাকলে তারা বলিতেন, হে আল্লাহর রাসূল! থামুন, সে ব্যক্তি এ নামে ডাকলে অসন্তুষ্ট হইবে। অতঃপর এ আয়াত নাযিল হলোঃ “তোমরা একে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডেকো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭২ঃ আবু ঈসা উপনাম রাখা
৪৯৬৩. যায়িদ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উমার [রাদি.] তার এক ছেলে আবু ঈসা উপনাম করায় তাহাকে প্রহার করেন। মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.]-এর উপনাম ছিল আবু ঈসা। উমার [রাদি.] তাহাকে বলিলেন, তোমার উপনাম পাল্টে আবু আব্দুল্লাহ রাখলে কি যথেষ্ট নয়? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে এ উপনাম দিয়েছেন। উমার [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পূর্বাপরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। আর আমরা তো উদ্বিগ্ন আছি। এরপর হইতে মৃত্যু পর্যন্ত তার পদবী আবু আব্দুল্লাহ ছিল। {৪৯৬১}
{৪৯৬১} বায়হাক্বী। এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৭৩ঃ অন্যের পুত্রকে হে আমার পত্র বলা সম্পর্কে
৪৯৬৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে হে আমার পুত্র বলে সম্বোধন করেছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৪ঃ কারো আবুল ক্বাসিম উপনাম রাখা সম্পর্কে
৪৯৬৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখো কিন্তু আমার উপনামে উপনাম রেখো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৫ঃ কারো একই সঙ্গে নাবী [সাঃআঃ]-এর নাম ও উপনাম গ্রহণ ঠিক নয়
৪৯৬৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি আমার নামানুসারে তার নাম রাখবে সে যেন আমার উপনামে তার উপনাম না রাখে। আর যে ব্যক্তি আমার উপনামে উপনাম গ্রহণ করিবে সে যেন আমার নামে তার নাম না রাখে।
৪৯৬৪ তিরমিজি, আহমাদ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
অনুচ্ছেদ-৭৬ঃ নাম ও উপনাম উভয়টি একত্রে গ্রহণের অনুমুতি প্রসঙ্গে
৪৯৬৭. মুহাম্মাদ ইবনিল হানাফিয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আলী [রাদি.] বলিয়াছেন, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল। আপনার ইন্তিকালের পরে আমার যদি কোন পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে আমি কি তার নাম ও উপনাম আপনার নাম ও উপনামে রাখবো? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী আবু বাকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় আমি বলিলাম কথাটি নেই, রয়েছে আলী [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] কে বলিলেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৬৮.আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা এক মহিলা নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল। আমি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েছি এবং তার নাম রেখেছি মুহাম্মাদ আর উপনাম রেখেছি আবুল ক্বালিম। আমাকে বলা হয়েছে, আপনি এরূপ পছন্দ করেন না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ কোন জিনিস আমার নামে নাম রাখাকে হালাল করিবে এবং উপনামকে হারাম করিবে অথবা কোন জিনিস আমার উপনামে উপনাম দেয়াকে হালাল করে এবং আমার নামে নাম রাখাকে হারাম করিবে।
৪৯৬৬ আহমাদ, বায়হাক্বী, ত্বাবারানী। সনদের মুহাম্মাদ বিন ইমরান সম্পর্কে হাফিয বলেন ঃ মাসতূর। ঈমাম যাহাবী বলেনঃ তার মুনকার হাদিস রয়েছে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৭ঃ সন্তানহীন ব্যক্তির উপনাম
৪৯৬৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের কাছে আসতেন। আর আমার একটি ছোট ভাই ছিল তার উপনাম ছিল আবু উমাইর এবং তার একটি ছোট পাখি [নুগার] ছিল। একে নিয়ে সে খেলতো। নুগার মারা গেলে একদিন নাবী [সাঃআঃ] তার নিকট এসে তাহাকে মর্মাহত দেখে বলিলেনঃ তার কি হয়েছে? তারা বলিলেন, তার নুগার [পাখিটি] মারা গেছে। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ ওহে আবু উমাইর। কি হয়েছে তোমার নুগাইর?
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৮ঃ নারীদের উপনাম গ্রহণ
৪৯৭০. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল। আমার প্রত্যেক বান্ধবীর ডাকনাম আছে। আপনি আমার একটি ডাকনাম ঠিক করে দিন। তিনি বলিলেনঃ তুমি তোমার [বোনের] ছেলে আবদুল্লাহর নামানুসারে উপনাম গ্রহণ করো। মুসাদ্দাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, যুবাইর [রাদি.]-র পুত্র আবদুল্লাহ। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি উম্মু আবদুল্লাহ উপনাম গ্রহণ করিলেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৯ঃ পরোক্ষ মিথ্যাচার
৪৯৭১. সুফিয়ান ইবনি আসীদ আল-হাদরামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, সবচেয়ে বড় বিশ্বাঘাতকতা হলো তুমি তোমার কোন ভাইকে কোন কথা বলেছো এবং সে তোমার কথা সত্য বলে বিশ্বাস করে নিয়েছে, অথচ তুমি যা বলেছো তা ছিলো মিথ্যা। ৪৯৬৯
দুর্বল ঃ যঈফাহ হা/১২৫১। ৪৯৬৯ বুখারী আদাবুল মুফরাদ, বায়হাক্বী। সানাদে যুবারাহ বিন মালিক রয়েছে। তিনি অজ্ঞাত। যেমন বলিয়াছেন যাহাবী মীযান গ্রন্থে এবং হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮০ঃ কোন ব্যক্তির “যাআমূ” শব্দ ব্যবহার করা সম্পর্কে
৪৯৭২. আবু ক্বিলাবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আবু মাসউদ [রাদি.] আবু আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে অথবা আবু আব্দুল্লাহ [রাদি.] আবু মাসউদ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিলেন, আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে “যাআমূ” শব্দ সম্পর্কে কী বলিতে শুনেছেন? তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ “যাআমূ” শব্দটি কোন ব্যক্তির নিকৃষ্ট ভারবাহী পশুর ন্যায়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮১ঃ বক্তব্যে আম্মা বাদ শব্দের ব্যবহার
৪৯৭৩. যায়িদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং শুরুতে বলিলেন, আম্ম বাদ [অতঃপর]।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮২ঃ আঙ্গুরকে কারম বলা এবং বাকসংযত হওয়া
৪৯৭৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কেউ যেন [আঙ্গুরকে] কারাম না বলে। কারণ মুসলিমই হলো কারাম [সম্ভ্রান্ত]। কিন্তু তোমরা হাদাইকুল আনাব [আঙ্গুরের বাগান] বলবে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৩ঃ দাস/সেবক তার মালিককে আমার রব বলবে না
৪৯৭৫. আবু হুরাইয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কেউ যেন আমার দাস ও আমার দাসী না বলে এবং অধীনস্থরাও যেন আমার রব, আমার রাব্বাতী না বলে। বরং মনিব তার দাসকে বলবে, ফাতায়া ও ফাতাতী [আমার যুবক ও আমার যুবতী]। আর অধীনস্থ লোকেরাও বলবে, আমার সাইয়িদ আমার সাইয়িদাহ [আমার নেতা ও আমার নেত্রী]। কেননা তোমরা সবাই গোলাম। মহান আল্লাহই হলেন একমাত্র রব।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৭৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবু হুরায়রা [রাদি.] সূত্রে উপরোক্ত হাদিস ভিন্ন সানাদে বর্ণিত। বর্ণনাকারী এতে নাবী [সাঃআঃ] এর উল্লেখ করেননি। এতে রয়েছে ঃ সে যেন বলে, আমার নেতা, আমার নেত্রী।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯৭৭. আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে তার পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা মুনাফিককে নেতা বলবে না। কেননা সে যদি নেতা হয় তাহলে তোমরা তোমাদের মহামহিম আল্লাহকে রাগান্বিত করলে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply