শেষ যামানায় ইল্ম উঠে যাওয়া , অজ্ঞতা ও ফিতনা প্রকাশ পাওয়া প্রসঙ্গে
শেষ যামানায় ইল্ম উঠে যাওয়া , অজ্ঞতা ও ফিতনা প্রকাশ পাওয়া প্রসঙ্গে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১. অধ্যায়ঃ কুরআনের অস্পষ্ট আয়াতের অনুকরণ নিষিদ্ধ হওয়া ও এর অনুসারীদের হইতে সতর্কতা অবলম্বন এবং কুরআনে বর্ণিত বিষয়ে মতভেদ নিষিদ্ধকরণ
২. অধ্যায়ঃ সর্বাপেক্ষা বাক-বিতণ্ডা প্রসঙ্গে
৩. অধ্যায়ঃ ইয়াহূদী-খ্রিস্টানদের আদর্শ অনুকরণ
৪. অধ্যায়ঃ মাত্রাতিরিক্ত চাটুকারিতা ধ্বংস হয়েছে
৫. অধ্যায়ঃ শেষ যামানায় ইল্ম উঠে যাওয়া, অজ্ঞতা ও ফিতনা প্রকাশ পাওয়া প্রসঙ্গে
৬. অধ্যায়ঃ যে লোক কোন সুন্দর নীতি অথবা মন্দ নীতি চালু করে এবং যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে অথবা বিভ্রান্তের দিকে আহ্বান করে
১. অধ্যায়ঃ কুরআনের অস্পষ্ট আয়াতের অনুকরণ নিষিদ্ধ হওয়া ও এর অনুসারীদের হইতে সতর্কতা অবলম্বন এবং কুরআনে বর্ণিত বিষয়ে মতভেদ নিষিদ্ধকরণ
৬৬৬৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিলাওয়াত করলেনঃ “তিনিই তোমার প্রতি এ কিতাবকে অবতীর্ণ করিয়াছেন, যার কতক আয়াত সুস্পষ্ট মজবুত সাংবিধানিক; এগুলো কিতাবের মূলনীতি আর অন্যগুলো অস্পষ্ট। যাদের হৃদয়ে বক্রতা রয়েছে, শুধু তারাই ফিতনাহ্ এবং ভুল ব্যাখ্যার জন্য যা অস্পষ্ট তার অনুকরণ করে। মূলতঃ আল্লাহ ভিন্ন অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না; আর যারা ইল্মে সুগভীর তারা বলে, আমরা এতে বিশ্বাস করি, সবই আমাদের রবের নিকট থেকে সত্য এবং বুদ্ধিমান ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না” – [সূরাহ্ আ-লি ইমরান ৩ : ৭ arbi]। তিনি [আয়িশাহ্] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সেসব লোকদের দেখিতে পাবে যারা অস্পষ্ট আয়াতের অর্থের অনুসরণ করে, এরাই সেসব ব্যক্তি, যাদের কথা আল্লাহ আলোচনা করিয়াছেন, সুতরাং তোমরা তাদের থেকে সতর্ক থাক।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৩, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৮৫]
৬৬৬৯. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন ভোরে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলাম। তিনি বলেন, একদা তিনি কুরআনের একটি আয়াতের ব্যাপারে দু লোকের মতপার্থক্যের আওয়াজ শুনতে পেয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে আসলেন, এ অবস্থায় তাহাঁর চেহারায় রাগের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছিল। তিনি বলিলেন, তোমাদের পূর্ববর্তীরা একমাত্র আল্লাহর কিতাবে দ্বিমত করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৪, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৮৬]
৬৬৭০. জুনদুব ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কুরআন পাঠ করিতে থাকো যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের হৃদয়ে তার প্রতি আকর্ষণ থাকে। আর যখন তোমরা তাতে মতভেদ করিবে তখন উঠে যাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৫, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৮৭]
৬৬৭১. জুনদুব ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের মনের মধ্যে আকর্ষণ থাকে ততক্ষণ কুরআন পাঠ করো। আর যখন [মন] বিকর্ষিত হয়ে পড়ে তখন উঠে যাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৬, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৮৮]
৬৬৭২. আবু ইমরান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ছোটবেলা আমরা কূফাতে ছিলাম। তখন জুনদুব [রাদি.] বলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কুরআন পাঠ করিতে থাকো…… তাঁদের দুজনের হাদীসের ন্যায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৭, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৮৯]
২. অধ্যায়ঃ সর্বাপেক্ষা বাক-বিতণ্ডা প্রসঙ্গে
৬৬৭৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা মন্দ সে লোক, যে সর্বাপেক্ষা বাক-বিতণ্ডাকারী।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৮, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯০]
৩. অধ্যায়ঃ ইয়াহূদী- খ্রিস্টানদের আদর্শ অনুকরণ
৬৬৭৪. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের আগের লোকের নীতি-আদর্শ পুরোপুরিভাবে অনুকরণ করিবে, এক বিঘত এক বিঘতের সঙ্গে ও হাত হাতের সঙ্গে, এমনকি তারা যদি গোসর্পের গর্তে ঢুকে থাকে তবুও তোমরা তাদের অনুকরণ করিবে। আমরা আবেদন করলাম, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! তারা কি ইয়াহূদী ও নাসারা? তিনি বলেন, তবে আর কারা?
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৯, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯১]
৬৬৭৫. যায়দ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
যায়দ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে আমাদের কিছু সংখ্যক সহাবা [রাদি.] এ সূত্রে তার হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৯, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯২]
৬৬৭৬. আতা ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আতা ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে যায়দ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর হুবহু হাদীস উল্লেখ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩৯, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৩]
৪. অধ্যায়ঃ মাত্রাতিরিক্ত চাটুকারিতা ধ্বংস হয়েছে
৬৬৭৭. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অতিরিক্ত চাটুকারীরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেছে। তিনি এ কথাটি তিনবার বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪০, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৪]
৫. অধ্যায়ঃ শেষ যামানায় ইল্ম উঠে যাওয়া , অজ্ঞতা ও ফিতনা প্রকাশ পাওয়া প্রসঙ্গে
৬৬৭৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাতের নিদর্শনসমূহের অন্যতম নিদর্শন হলো ইলম উঠে যাওয়া, অজ্ঞতা সাব্যস্ত হওয়া, মদ্যপান ও যিনার প্রসার ঘটা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪১, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৫]
৬৬৭৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের নিকট এমন একটি হাদীস আলোচনা করব, যা আমি রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি এবং আমার পরে এমন কেউ তা তোমাদের নিকট উল্লেখ করিবে না যিনি তার কাছ থেকে তা শুনতে পেয়েছে? আমি তাহাঁর নিকট শুনেছি যে, কিয়ামাতের নিদর্শনসমূহের অন্যতম হচ্ছে ইলম উঠিয়ে দেয়া, অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ, ব্যভিচার প্রসার হইবে, মদ্যপান প্রচলিত হইবে, পুরুষ [-এর সংখ্যা] হ্রাস পাবে, নারীরা অবশিষ্ট থাকিবে, এমনকি পঞ্চাশজন নারী একজন পুরুষের তত্ত্বাবধানে থাকিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪২, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৬]
৬৬৮০ . আনাস [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আনাস [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] থেকে হুবহু হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। ইবনি বিশ্র ও আব্দাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তা তোমাদের নিকট আমার পরে কেউ উল্লেখ করিবে না। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, ……এরপর তিনি [আবদাহ্] তার হুবহু হাদীস উল্লেখ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৩, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৭]
৬৬৮১. আবু ওয়ায়িল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ও আবু মূসা আশআরী [রাদি.]-এর সাথে বসে ছিলাম। তাঁরা উভয়ে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাতের সন্নিকটকালে এমন কিছু সময় আসবে যখন ইল্ম তুলে নেয়া হইবে। সে সময় অজ্ঞতা নেমে আসবে এবং হার্জ বৃদ্ধি পাবে। হার্জ মানে হত্যা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৪, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৮]
৬৬৮২. আবদুল্লাহ ও আবু মূসা আল আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উভয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমনই বলেছেন।
কাসিম ইবনি যাকারিয়্যা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]…… শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ [রাদি.] ও আবু মূসা আশআরী [রাদি.]-এর সাথে বসে ছিলাম। এহেন মুহূর্তে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তাঁরা উভয়ে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ …… এরপর তারা ওয়াকী ও ইবনি নুমায়র [রাদি.]-এর হাদীসের হুবহু হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৫, ইসলামিক সেন্টার-৬৫৯৯]
৬৬৮৩. আবু মূসা [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আবু মূসা [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৬, ইসলামিক সেন্টার-৬৬০০]
৬৬৮৪. আবু ওয়ায়িল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ [রাদি.] ও আবু মূসা [রাদি.]-এর সাথে বসে ছিলাম। এমন সময় তাঁরা হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তখন আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার হুবহু হাদীস বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৭, ইসলামিক সেন্টার-৬৬০১]
৬৬৮৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাত সন্নিকটবর্তী হলে ইল্ম উঠিয়ে নেয়া হইবে, ফিতনা প্রসার হইবে, কৃপণতা বেড়ে যাবে এবং হার্জ বৃদ্ধি পাবে। লোকেরা বলিল, হার্জ কি? তিনি বলিলেন, কত্ল [হত্যা]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৮, ইসলামিক সেন্টার-৬৬০২]
৬৬৮৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যামানা সন্নিকটবর্তী হইবে, ইলম্ উঠিয়ে নেয়া হইবে। তারপর তার হুবহু হাদীস উল্লেখ করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪৯, ইসলামিক সেন্টার-৬৬০৩]
৬৬৮৭. আবু হুরাইরাহ্ হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেন: যামান সন্নিকটবর্তী হলে ইল্ম তুলে নেয়া হইবে। তারপর মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাঁদের {ইউনুস ও শুআয়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর} হাদীসের হুবহু বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০৪]
৬৬৮৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন, যুহরী হুমায়দ হইতে আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-এর সানাদে বর্ণিত হাদীসের অবিকল। তবে সালিম, হাম্মাম ও আবু ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] [আর-বী] [কৃপণতা বিস্তৃত হয়ে পড়বে] কথাটি উল্লখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০৫]
৬৬৮৯. উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আম্র ইবনিল আস [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি। তিনি বলেন যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা মানুষের হইতে ইল্ম ছিনিয়ে নেবেন না। তবে তিনি আলিম সম্প্রদায়কে কব্য করে ইল্ম উঠিয়ে নিবেন। এমনকি যখন একজন আলিমও থাকিবে না তখন মানুষেরা মূর্খ মানুষদেরকে নেতা বানিয়ে নিবে। মানুষ তাদের নিকট সামাধান চাইবে, এরপর তারা না জেনে ফাতাওয়া প্রদান করিবে। ফলে তারা নিজেরাও গোমরাহ হইবে এবং মানুষদেরও গুমরাহ করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০৬]
৬৬৯০. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
জারীর-এর হাদীসের অবিকল বর্ণিত। হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উমর ইবনি আলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণিত হাদীসে এ অংশটুকু বর্ধিত বলেছেন- এরপর আমি [ইবনি উরওয়াহ্] এক বৎসরের মাথায় [পরে] আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.]-এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে প্রশ্ন করলাম; এরপর তিনি হাদীসটি যেমন বর্ণনা দিয়েছিলেন, আমাকে হুবহু হাদীসটি বর্ণনা করিলেন। তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০৭]
৬৬৯১. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০৮]
৬৬৯২. উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাকে আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, হে আমার বোনের ছেলে! আমার নিকট সংবাদ এসেছে যে, আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] আমাদের সাথে হাজ্জব্রত পালনে এসেছেন। তাহাঁর সাথে তুমি দেখা করে প্রশ্ন করো। কেননা, নবী [সাঃআঃ] থেকে তিনি বহু জ্ঞানার্জন করিয়াছেন।
তিনি [উরওয়াহ্] বলেন, এমন সময় আমি তাহাঁর সাথে দেখা করে এমন বহু ব্যাপারে প্রশ্ন করলাম, যা তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে উল্লেখ করিয়াছেন। উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, যা তিনি আলোচনা করেছিলেন সে সকল বিষয়ের মধ্যে একটি ছিল এই যে, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা মানুষের নিকট থেকে ইল্ম কেড়ে নিবেন না। তবে তিনি আলিমদের উঠিয়ে নিয়ে যাবেন। সুতরাং তাদের সাথে ইল্মও উঠে যাবে। আর মানুষের মধ্যে অবশিষ্ট থাকিবে মূর্খ নেতাকর্মীরা। তারা না জেনে-শুনে মানুষদের ফাতাওয়া দিবে। ফলে তারা পথভ্রষ্ট হইবে এবং তাদেরও পথভ্রষ্ট করিবে।
উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি যখন এ হাদীসটি আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট বর্ণনা করলাম তখন তিনি হাদীসটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করিলেন এবং বিরত্তিভাব প্রকাশ করে বলিলেন, তিনি {আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাযি} কি তোমার কাছে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এটি বলিতে শুনেছেন?
উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, এমনকি পরবর্তী বৎসর হাজ্জের সময় এসে গেলো তখন তিনি তাকে {উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে} বলিলেন, অবশ্যই ইবনি আম্র [রাদি.] [হাজ্জে] গমন করিয়াছেন। তার সাথে দেখা করো। তারপর তাকে তুমি সে হাদীসের ব্যাপারে প্রশ্ন করো ইল্ম সম্পর্কে তিনি তোমার নিকট আলোচনা করিয়াছেন। উরওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, তখন আমি তার সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে প্রশ্ন করলাম। তখন তিনি তা আমার নিকটে আলোচনা করিলেন, যেমন তিনি প্রথমবার আমার কাছে বর্ণনা করেছিলেন।
উরওয়াহ্ বলেন, যখন আমি তাঁকে {আয়িশা [রাদি.]-কে} বিষয়টি অবহিত করলাম তখন তিনি বলিলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.]-কে সত্য কথা বলে এমনটি মনে করি এবং তিনি এ হাদীসে বিন্দুমাত্র বেশি কিংবা কম করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০৯]
৬. অধ্যায়ঃ যে লোক কোন সুন্দর নীতি অথবা মন্দ নীতি চালু করে এবং যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে অথবা বিভ্রান্তের দিকে আহ্বান করে
৬৬৯৩. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক যাযাবর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে আসলো। তাদের পরনে পশমী পোশাক ছিল। তিনি তাদের নিকৃষ্ট অবস্থা দেখলেন। তাদের অভাবে আক্রমণ করেছে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মানুষদের [তাদেরকে] দান-সদাকাহ্ করার জন্যে উৎসাহিত করিলেন। মানুষেরা দান-সদাকাহ্ দিতে ইতস্তত করছিল। এমনকি এর প্রতিক্রিয়া তাহাঁর চেহারায় দেখা গেল।
রাবী বলেন, তারপর একজন আনসারী লোক একটি রূপার [টাকার] ব্যাগ নিয়ে আসলেন। তারপর অন্যজন আসলেন। তারপর পর্যায়ক্রমে আসতে লাগলেন, পরিশেষে তাহাঁর মুখে আনন্দের চিহ্ন দেখা গেল। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যে লোক ইসলামে কোন সুন্নাত চালু করলো এবং পরবর্তীকালে সে অনুসারে আমাল করা হলো তাহলে আমালকারীর প্রতিদানের সমান প্রতিদান তার জন্য লিখিত হইবে। এতে তাদের প্রতিদানে কোন ঘাটটি হইবে না, আর যে লোক ইসলামে কোন অশুভ নীতি চালু করলো এবং তারপর সে অনুযায়ী আমাল করা হলো তাহলে ঐ আমালকারীর খারাপ প্রতিদানের সমান গুনাহ তার জন্য লিখিত হইবে। এতে তাদের পাপ সামান্য ঘাটতি হইবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬১০]
৬৬৯৪. জারীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুতবাহ্ দিলেন এবং মানুষদেরকে দান করার জন্য উৎসাহ প্রদান করিলেন। এরপর জারীর বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনানুযায়ী।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬১১]
৬৬৯৫. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক কোন ভাল কর্মের প্রবর্তন করে না, যা পরবর্তীকালে কাজে পরিণত করা হয়। তারপর তিনি সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬১২]
৬৬৯৬. জারীর [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না, আবু বকর ইবনি আবু শাইবাহ্ ও উবাইদুল্লাহ ইবনি মুআয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. জারীর [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে এ হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬১৩]
৬৬৯৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হইতে সামান্য ঘাটতি হইবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হইবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬১৪]
Leave a Reply