ইয়াজুজ মাজুজ, খারিজ, সিরিয়া, তুর্কী ও কিয়ামাতের আলামাত
ইয়াজুজ মাজুজ, খারিজ, সিরিয়া, তুর্কী ও কিয়ামাতের আলামাত>> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৩১, অনুচ্ছেদঃ (২৩-৫১)=২৯টি
২৩. অনুচ্ছেদঃ ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ
২৪. অনুচ্ছেদঃ মারিকা অর্থাৎ খারিজীদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে
২৫. অনুচ্ছেদঃ স্বজনপ্রীতি, স্বার্থপরতা ও পক্ষপাতিত্ব প্রসঙ্গে
২৬. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাত পর্যন্ত যা ঘটবে, সে প্রসঙ্গে নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের অবহিত করিয়াছেন
২৭. অনুচ্ছেদঃ সিরিয়াবাসীদের প্রসঙ্গে
২৮. অনুচ্ছেদঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানি করে কুফরীতে প্রত্যাবর্তন করো না
২৯. অনুচ্ছেদেঃএমন এক বিপর্যয়কর যুগের আগমন ঘটবে যখন উপবিষ্ট ব্যক্তি দন্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে ভাল [নিরাপদ] থাকিবে
৩০. অনুচ্ছেদঃ অনতিবিলম্বেই অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় বিপর্যয় দেখা দিবে
৩১. অনুচ্ছেদঃ ব্যাপক গণহত্যা চলাকালীন সময়ে ইবাদাত-বন্দিগিতে লিপ্ত থাকা
৩২. অনুচ্ছেদঃ [একবার মারামারি শুরু হলে কিয়ামাত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হইবে না]
৩৩. অনুচ্ছেদঃ বিপর্যয়কালে কাঠের তলোয়ার ধারণ করা
৩৪. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাতের আলামাত প্রসঙ্গে
৩৬. অনুচ্ছেদঃ [যামীন তার অভ্যন্তরস্থ সম্পদ উদগিরণ করে দিবে]
৩৭. অনুচ্ছেদঃ নিকৃষ্ট মানুষেরা দুনিয়াবী সৌভাগ্যের অধিকারী হইবে
৩৮. অনুচ্ছেদঃ আকৃতি পরিবর্তন ও ভূমি ধসের আলামাত অবতীর্ণ হইবে
৩৯. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর বাণীঃ আমার প্রেরণ ও কিয়ামাত এই দুই আঙ্গুলের মত কাছাকাছি
৪০. অনুচ্ছেদঃ তুর্কীদের সাথে যুদ্ধ
৪১. অনুচ্ছেদঃ কিসরার পরাজয়ের পর আর কোন কিসরা ক্ষমতাসীন হইবে না
৪২. অনুচ্ছেদঃ হিজাযের দিক হইতে একটি অগ্নুৎপাত হওয়ার আগ পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না
৪৩. অনুচ্ছেদঃ কিছুসংখ্যক ডাহা মিথ্যাবাদীর [নাবুওয়াতের দাবিদারের] অবির্ভাব হওয়ার পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না
৪৪. অনুচ্ছেদঃ সাকীফ বংশে এক মিথ্যাবাদী ও এক নরঘাতকের জন্ম হইবে
৪৫. অনুচ্ছেদঃ তৃতীয় যুগের বর্ণনা
৪৬. অনুচ্ছেদঃ খালিফাগণ প্রসঙ্গে
৪৭. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তাআলার নিযুক্ত শাসককে যে ব্যক্তি অপমান করিবে
৪৮. অনুচ্ছেদঃ খিলাফাত প্রসঙ্গে
৪৯. অনুচ্ছেদঃ কুরাইশদের মধ্য হইতেই কিয়ামাত পর্যন্ত খালিফা হইবে
৫০. অনুচ্ছেদঃ জাহজাহ্ নামক মুক্তদাসের রাজ্যাধিকারী হওয়া
৫১. অনুচ্ছেদঃ পথভ্রষ্টকারী নেতৃবৃন্দ প্রসঙ্গে
২৩. অনুচ্ছেদঃ ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ
২১৮৭. যাইনাব বিনতু জাহশ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘুম হইতে জাগ্রত হলেন, তখন তাহাঁর মুখমন্ডল রক্তিমবর্ণ ধারণ করেছিল। তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলিতে লাগলেন। তা তিনবার বলার পর তিনি বললেনঃ ঘনিয়ে আসা দুর্যোগে আরবদের দুর্ভাগ্য। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর এতটুকু পরিমাণ ফাঁক হয়ে গেছে। এই বলে তিনি তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলের সাহায্যে দশ সংখ্যার বৃত্ত করে ইঙ্গিত করেন। যাইনাব [রাদি.] বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! আমাদের মধ্যে শতলোক থাকা অবস্থায়ও কি আমরা হবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচারের বিস্তার ঘটবে।
সহিহ, ইবনি মা-জাহ [৩৯৫৩], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসটিকে সুফিয়ান [রঃ] উত্তম বলে মন্তব্য করিয়াছেন। হুমাইদী, আলী ইবনিল মাদিনী এবং আরোও অনেকে মুফ্ইয়ান ইবনি উয়াইনাহ্ হইতে অনূরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। হুমাইদী বলেন, সুফিয়ান ইবনি উয়াইনা বলেছেন, আমি এ হাদীসের সনদে চারজন মহিলার নাম যুহরীর নিকট হইতে মুখস্থ করেছি। যাইনাব বিনতু আবু সালামা ও হাবীবা দুজনই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]এর পত্নীকন্যা [তাহাদের পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত] ছিলেন। উম্মু হাবীবা ও যাইনাব বিনতি জাহশ [রাদি.] হইতে বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁরা দুজন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]এর স্ত্রী ছিলেন। এ হাদীসটি যুহরীর সূত্রে মামার আরোও অনেকে বর্ণনা করিয়াছেন কিন্তু তারা সনদে হাবীবার কথা উল্লেখ করেননি। এই হাদীসটি ইবনি উয়াইনার কোন কোন শিষ্য ইবনি উয়াইনার সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন কিন্তু তারা সনদে উম্মু হাবীবা [রাদি.] নাম উল্লেখ করেননি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪. অনুচ্ছেদঃ মারিকা অর্থাৎ খারিজীদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে
২১৮৮. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শেষ যুগে আবির্ভাব ঘটবে এক সম্প্রদায়ের, যারা বয়সে হইবে নাবীন, বুদ্ধিতে অপরিপক্ক ও নির্বোধ হইবে। তারা কোরআন তিলাওয়াত করিবে কিন্তু তা তাহাদের গলার নিচের হাড়ও অতিক্রম করিবে না। তারা সৃষ্টির সেরা মানুষের কথাই বলবে, কিন্তু তারা এমনভাবে ধর্ম হইতে বেরিয়ে যাবে, যেমনভাবে তীর ধনুক হইতে বেরিয়ে যায়।
হাসান, সহিহ, ইবনি মা-জাহ [১৬৮], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আলী, আবু সাঈদ ও আবু যার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। উক্ত সম্প্রদায়ের ব্যাপারে এ হাদীস ব্যতীত রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]এর আরো হাদীস রয়েছে, যাদের সমন্ধে বলা হয়েছে যে, “তারা কোরআন তিলাওয়াত করিবে, কিন্তু তা তাহাদের গলার হাড়ও অতিক্রম করিবে না, যেমনিভাবে তীর ধনুক হইতে বেরিয়ে যায় তেমনিভাবে তারাও ধর্ম হইতে বেরিয়ে যাবে” তাহাদের প্রসঙ্গে উক্ত হাদীসসমূহে বলা হয়েছে যে, এরা হলো হারূরী প্রভৃতি খারিজী সম্প্রদায়। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৫. অনুচ্ছেদঃ স্বজনপ্রীতি, স্বার্থপরতা ও পক্ষপাতিত্ব প্রসঙ্গে
২১৮৯. উসাইদ ইবনি হুযাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন একদিন একজন আনসারী বলিল, হে আল্লাহ্র রাসুল [সাঃআঃ]! আপনি অমুক ব্যক্তিকে কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ করিয়াছেন অথচ আমাকে নিয়োগ করেননি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা খুব শীঘ্রই আমার পড়ে স্বজনপ্রীতি [স্বার্থপরতা] দেখিতে পাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাউজে কাউসারে আমার সাথে তোমাদের দেখা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করিতে থাক।
সহিহ, আযজিলাল[৭৫২,৭৫৩], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১৯০. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা খুব শীঘ্রই আমার পরে স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্ব ও তোমাদের অপছন্দনীয় অনেক বিষয় দেখিতে পাবে। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! ঐ সময়ে কি করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেন? তিন বললেনঃ তোমাদের উপর তাহাদের যে অধিকার রয়েছে তোমরা তা পূর্ণ করিবে এবং তোমাদের অধিকার আল্লাহ্ তাআলার নিকট প্রার্থনা করিবে।
সহিহ, বুখারী[৭০৫২, ৬/১৬-১৭]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাত পর্যন্ত যা ঘটবে, সে প্রসঙ্গে নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের অবহিত করিয়াছেন
২১৯১. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একসময় রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে একটু বেশি বেলা থাকতেই আসরের নামাজ আদায় করেন, তারপর ভাষণ দিতে দাঁড়ান। উক্ত ভাষণে কিয়ামাত পর্যন্ত যেসব ঘটনা ঘটবে সেই প্রসঙ্গেই তিনি আমাদেরকে জানিয়ে দেন। কেউ সেগুলো মনে রেখেছে কেউ আবার তা ভুলে গেছে। তাহাঁর ভাষণে তিনি যা বলেছিলেন তার মধ্যে ছিলঃ দুনিয়াটা সবুজ-শ্যামল ও সুমিষ্ট [আকর্ষণীয়], আর আল্লাহ্ তাআলা তোমাদেরকে এর উত্তরাধিকার বানিয়েছেন। সুতরাং তোমরা কি করছ তা তিনি লক্ষ্য রাখছেন। শোন! দুনিয়া ও নারীদের ব্যাপারে সাবধান। তিনি আরো বলেনঃ সাবধান! কেউ যখন কোন সত্য কথা জানবে, তখন তাকে মানুষের ভয় যেন সেই সত্য বলা থেকে বিরত না রাখে। রাবী বলেন, এই কথা বলে আবু সাঈদ [রাদি.] কেঁদে ফেলেন এবং বলেন আল্লাহ্ তাআলার কসম! আমরা এরকম কত কাজ হইতে দেখেছি কিন্তু তা বলিতে মানুষকে ভয় করেছি। তিনি আরও বলেনঃ জেনে রাখ! কিয়ামাতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য তার বিশ্বাসঘাতকতার পরিমাণ অনুযায়ী একটি করে পতাকা স্থাপন করা হইবে। মুসলিম রাষ্ট্রনায়কের বিশ্বাসঘাতকতার চাইতে ভীষণ কোন বিশ্বাসঘাতকতা নেই। তার এই পতাকা তার নিতম্বের কাছে স্থাপন করা হইবে। সেদিনের আরও যেসব কথা আমরা মনে রেখেছি তার মধ্যে ছিলঃ শুনে রাখ! আদম-সন্তানদেরকে বিভিন্ন শ্রেণীতে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাহাদের এক দল তো মুমিন অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছে, মুমিন অবস্থায় জীবন যাপন করেছে এবং মুমিন অবস্থাতেই মারা গেছে। তাহাদের অপর দল কাফির অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছে, কাফির অবস্থায় জীবন কাটিয়েছে এবং কাফির অবস্থায়ই মারা গেছে। অপর দল মুমিন অবস্থায় জন্মগ্রহন করিয়াছেন, মুমিন অবস্থায় জীবন যাপন করেছে এবং কাফির অবস্থায় মারা গেছে। অপর দল আবার কাফির অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছে, কাফির অবস্থায় জীবন যাপন করেছে এবং মুমিন অবস্থায় মারা গেছে। জেনে রাখ! মানুষের মধ্যে কারো রাগ আসে দেরিতে এবং চলে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আবার কারো রাগ আসে তাড়াতাড়ি আবার চলেও যায় তাড়াতাড়ি। সুতরাং এর জন্য এই। জেনে রাখ! তাহাদের মধ্যে কারো রাগ আসে খুব তাড়াতাড়ি কিন্তু চলে যায় খুব দেরিতে। জেনে রাখ! তাহাদের মধ্যে উত্তম হল যাদের রাগ আসে দেরিতে এবং চলে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আর তারাই খুব নিকৃষ্ট, যাদের রাগ আসে খুব তাড়াতাড়ি কিন্তু চলে যায় দেরিতে। জেনে রাখ! মানুষের মধ্যে কেউ পাওনা পরিশোধের বেলায়ও ভালো আবার পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রেও ভদ্র। আবার কেউ পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে ভদ্র কিন্তু আদায়ের ক্ষেত্রে অভদ্র। এক্ষেত্রে একটি অপরটির পরিপূরক হয়ে যায়। জেনে রাখ! তাহাদের মধ্যে কারো পাওনা পরিশোধ নিকৃষ্ট এবং সে তাগাদা প্রদানের ক্ষেত্রে অভদ্র। জেনে রেখ সেই সবচেয়ে ভাল, যে পাওনা পরিশোধের বেলায় ভাল এবং পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রেও ভদ্র। জেনে রাখ! তাহাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি খুবই খারাপ যার পাওনা পরিশোধও নিকৃষ্ট এবং যে তাগাদা প্রদানেও অভদ্র। জেনে রাখ! রাগ মানুষের অন্তরের অগ্নিস্ফুলিংগর মত। তোমরা কি লক্ষ্য করনি যে, রাগান্বিত ব্যক্তির চক্ষুদ্বয় রক্তিম বর্ণ ধারণ করে এবং তার ঘাড়ের শিরাগুলো ফুলে উঠে। সুতরাং তোমাদের কেউ এরূপ অনুভব করলে সে যেন মাটিতে লুটিয়ে যায় [তাহলে রাগ কমে যাবে]। রাবী বলেন, আমরা সূর্যের দিকে তাকাতে লাগলাম যে, তা এখনও অবশিষ্ট আছে কি না। রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জেনে রাখ! তোমাদের এই দুনিয়ার যতটুকু অতীত হয়ে গেছে, সেই হিসাবে এতটুকুও আর অবশিষ্ট নেই যতটুকু আজকের এই দিনের অতিবাহিত হয়েছে তার তুলনায় যতটুকু অবশিষ্ট আছে।
যঈফ, রাদ্দুন আলা বালিক [৮৬], কিন্তু এই হাদীসের কিছু অংশ সহীহ, দেখুন হাদীস নং [৪০০০], এবং মুসলিম [৮/১৭২-১৭৩] এই অনুচ্ছেদে হুযাইফা, আবু মারইয়াম [রাদি.] আবু যাইদ ইবনি আখতাব, মুগীরা ইবনি শুবা, হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। তারা বর্ণনা করেন যে, কিয়ামাত পর্যন্ত যেসব ঘটনা সংঘটিত হইবে, রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ] এগুলো তাহাদের নিকট বলেছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান ও সহীহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
২৭. অনুচ্ছেদঃ সিরিয়াবাসীদের প্রসঙ্গে
২১৯২. মুআবিয়া ইবনি কুররা [রঃ] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন সিরিয়াবাসীরা খারাপ হয়ে যাবে তখন তোমাদের আর কোন কল্যাণ থাকিবে না। তবে আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দল সকল সময়েই সাহায্যপ্রাপ্ত [বিজয়ী] থাকিবে। যেসব লোকেরা তাহাদেরকে অপমানিত করিতে চায় তারা কিয়ামাত পর্যন্ত তাহাদের কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারবে না।
সহিহ, ইবনি মা-জাহ [৬]। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [রঃ] বলেন, আলী ইবনিল মাদীনী বলেছেন, সাহায্যপ্রাপ্ত [বিজয়ী] সেই সম্প্রদায়টি হলো হাদীস বিশারদদের জামাআত [আহলুল হাদীস]। আবু ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি হাওয়ালা, ইবনি উমার, যাইদ ইবনি সাবিত ও আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটি হাসান সহিহ। আহমাদ ইবনি মানি-ইয়াযীদ ইবনি হারুন হইতে তিনি বাহয্ ইবনি হাকিম হইতে তিনি তার পিতা হইতে, তিনি তার দাদা হইতে তিনি [বাহযের দাদা] বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! আপনি আমাকে কোথায় থাকতে নির্দেশ দেন? তিনি বলিলেন, এখানে আর হাত দিয়ে সিরিয়ার দিকে ইঙ্গিত করিলেন। বাহয ইবনি হাকীম [রাদি.] হইতে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, [উপরোক্ত হাদীসের বক্তব্য শুনে] আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! আমাকে কোন জায়গায় বসবাসের জন্য আপনি নির্দেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেনঃ এই দিকে। তিনি এই কথা বলে হাত দিয়ে সিরিয়ার দিকে ইশারা করেন। সহিহ, ফাযাইলুশ্শাম হাদীস নং ১৩। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮. অনুচ্ছেদঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানি করে কুফরীতে প্রত্যাবর্তন করো না
২১৯৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি বলেওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমার পরবর্তীতে তোমরা পরস্পর হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তিত করো না।
সহিহ, ইবনি মা-জাহ[৩৯৪২-৩৯৪৩], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ, জারীর, ইবনি উমার, কূরয ইবনি আলকামা ওয়াসিলা ইবনিল আসকা ও আস-সুনাবিহী [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯. অনুচ্ছেদেঃএমন এক বিপর্যয়কর যুগের আগমন ঘটবে যখন উপবিষ্ট ব্যক্তি দন্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে ভাল [নিরাপদ] থাকিবে
২১৯৪. বুসর ইবনি সাঈদ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
খালিফা উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] এর [রাজনৈতিক] বিপর্যয় ও বিদ্রোহকালে সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস [রাদি.]বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অনতি বিলম্বেই এমন এক বিপর্যয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যখন বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির চেয়ে ভাল [নিরাপদ] থাকিবে, দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে ভাল থাকিবে। সাদ [রাদি.] বলেন, আপনি এ ব্যাপারে কি মনে করেন যদি ফিতনাবাজ কোন লোক আমার ঘরে প্রবেশ করে এবং আমাকে খুন করিতে উদ্যত হয়? তিনি বললেনঃ তুমি আদমের ছেলের [হাবিলের] মতো হয়ে যাও।
সহিহ ঃ ইরওয়া [৮/১০৪]। আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরা, খাব্বাব ইবনিল আরাত্তি, আবু বাকরা, ইবনি মাসউদ, আবু ওয়াকিদ, আবু মূসা ও খারাশা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি লাইস ইবনি সাদের সূত্রে কেউ কেউ বর্ণনা করিয়াছেন এবং আরো একজন বর্ণনাকারীর কথা এই সনদে উল্লেখ রয়েছে। এ হাদীসটি অন্য সূত্রেও সাদ [রাদি.] এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩০. অনুচ্ছেদঃ অনতিবিলম্বেই অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় বিপর্যয় দেখা দিবে
২১৯৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় বিপর্যয় আগমনের পূর্বেই তোমরা সৎকাজের প্রতি অগ্রসর হও। ঐ সময় যে ব্যক্তি সকাল বেলায় মুমিন থাকিবে সে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় মুমিন থাকিবে সে সকালে কাফির হয়ে যাবে। মানুষ দুনিয়াবী স্বার্থের বিনিময়ে তার ধর্ম বিক্রয় করে দিবে।
সহিহ, সহীহাহ [৭৫৮], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১৯৬. উম্মু সালামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] একরাতে ঘুম হইতে জাগ্রত হয়ে বললেনঃ
سُبْحَانَ اللَّهِ
সুবহানাল্লাহ! আজ রাতে কতই না বিপর্যয় নাযিল হয়েছে, কতই না অনুগ্রহের ভান্ডার অবতীর্ণ হয়েছে? এরূপ কে আছে যে এই গৃহবাসীদের জাগ্রত করিবে? পৃথিবীতে অনেক পোশাক পরিহিতা, পরকালে থাকিবে উলঙ্গ।
সহিহ, বুখারী। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১৯৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাতের নিকটতম সময়ে অন্ধকার রাতের টুকরার মতো বিপর্যয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তখন যে লোক সকাল বেলায় মুমিন থাকিবে সে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। আর যে লোক সন্ধ্যা বেলায় মুমিন থাকিবে সকালে সে কাফির হয়ে যাবে। একদল লোক দুনিয়াবী স্বার্থের বিনিময়ে তাহাদের ধর্ম বিক্রয় করিবে।
হাসান সহিহ, সহীহাহ [৭৫৮,৮১০]। আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরা, জুনদাব, নুমান ইবনি বাশীর ও আবু মূসা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি উক্ত সূত্রে গারীব। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২১৯৮. হাসান [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এ হাদীসের ব্যাখ্যায় তিনি বলিতেন যে, সেই বিপর্যয়ের সময়ে সকাল বেলায় যে লোক মুমিন অবস্থায় থাকিবে সন্ধ্যায় সে কাফির হয়ে যাবে আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় মুমিন থাকিবে সে সকালে কাফির হয়ে যাবে। কোন লোক তার ওপর ভাইয়ের রক্ত [প্রাণ], সম্মান ও সম্পদ [ধ্বংস করা]-কে সকাল বেলায় অবৈধ মনে করিবে, অথচ সে সন্ধ্যা বেলায় এগুলো নিজের জন্য বৈধ মনে করিবে। আবার এক লোক তার ভাইয়ের রক্ত, সম্মান ও সম্পদকে সন্ধ্যা বেলায় অবৈধ মনে করিবে, অথচ সে সকালে এগুলোকে নিজের জন্য বৈধ মনে করিবে।
হাসান বাসরী হইতে সহিহ সনদে বর্ণিত। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১৯৯. আলকামা ইবনি ওয়াইল ইবনি হুজর [রঃ] হইতে তাহাঁর বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [ওয়াইল] বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি। কোন একজন লোক তাঁকে প্রশ্ন করিলঃ যদি আমাদের নেতারা এরূপ হয় যে, আমাদের প্রাপ্য অধিকার তারা প্রদান করে না কিন্তু তাহাদের প্রাপ্য অধিকার সঠিকভাবে আদায় করে নেয়, এমতবস্থায় আমরা কি করব বলে আপনি মনে করেন? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ [তাহাদের কথা] শ্রবণ কর ও আনুগত্য কর। কেননা, তাহাদেরকে তাহাদের দায়-দায়িত্বের জন্য জবাবদিহি করিতে হইবে এবং তোমাদেরকে তোমাদের দায়-দায়িত্বের জন্য জবাবদিহি করিতে হইবে।
সহিহ, মুসলিম[৬/১৯]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১. অনুচ্ছেদঃ ব্যাপক গণহত্যা চলাকালীন সময়ে ইবাদাত-বন্দিগিতে লিপ্ত থাকা
২২০০. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের পরবর্তীতে এরূপ এক যুগের আগমন ঘটবে, যখন [দ্বীনি] ইলমকে উঠিয়ে নেয়া হইবে এবং হারাজ বৃদ্ধি পাবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! হারাজ কি? তিনি বললেনঃ ব্যাপক গণহত্যা।
সহিহ, সহীহুল জামি [২২২৯]। আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরা, খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ ও মাকিল ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২০১. মাকিল ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ব্যাপক গণহত্যা চলাকালীন সময়ে ইবাদাত করা আমার কাছে হিজরাতের সমতুল্য।
সহিহ, ইবনি মা-জাহ[৩৯৮৫], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহিহ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র হাম্মাদ ইবনি যাইদ হইতে মুআল্লা ইবনি যিয়াদের সূত্রেই জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২. অনুচ্ছেদঃ [একবার মারামারি শুরু হলে কিয়ামাত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হইবে না]
২২০২. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে যখন তলোয়ার রাখা হইবে [পরস্পর হানাহানি শুরু হইবে] তখন হইতে কিয়ামাত পর্যন্ত তা আর তুলে নেয়া হইবে না [হানাহানি বন্ধ হইবে না]।
সহিহ, মিশকাত [৫৪০৬]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ বিপর্যয়কালে কাঠের তলোয়ার ধারণ করা
২২০৩. উদাইসা বিনতু ওহবান সাইফী আল-গিফারী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] আমার বাবার নিকট আসেন এবং তার সাথে যুদ্ধে গমনের আহবান জানান। আমার বাবা তাকে বলিলেন, আমার পরম বন্ধু এবং আপনার চাচাতো ভাই [রসুলুল্লাহ সাঃআঃ] আমাকে উপদেশ দিয়েছেন যে, “মানুষ যখন পরস্পর বিবাদে জড়িয়ে পরে, তখন আমি যেন কাঠের তলোয়ার তৈরী করে নেই [অকেজো তলোয়ার রাখি যাতে যুদ্ধ বা ফিতনায় জড়াতে না হয়]। আমি বর্তমানে তা-ই করেছি। এখন আপনি ইচ্ছা করলে আমি সেটি নিয়েই আপনার সাথে যাত্রা করিতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আলী [রাদি.] তাকে স্বঅবস্থায় রেখে গেলেন।
হাসান সহিহ, ইবনি মা-জাহ[৩৯৬০]। আবু ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি মাসলামা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবদুল্লাহ ইবনি উবাইদের সূত্রেই জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২২০৪. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ফিতনা সম্পর্কে নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এ সময় তোমরা তোমাদের ধনুক ভেঙ্গে ফেল, ধনুকের ছিলা কেটে ফেল, তোমাদের ঘরের কোনে অবস্থান কর এবং আদম [আঃ] এর ছেলের [হাবিল] মতো হয়ে যাও।
সহিহ, ইবনি মা-জাহ [৩৩৬১]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহিহ। আবদুর রাহমান ইবনি সারওয়ান হলেন আবু কাইস আল-আওদী। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাতের আলামাত প্রসঙ্গে
২২০৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এরূপ একটি হাদীস তোমাদেরকে শুনাচ্ছি যা আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-র নিকট শুনিয়াছি। তোমাদের সামনে এ হাদীসটি আমার পরবর্তীতে আর কেউ বর্ণনা করবেন না, যিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাতের নিদর্শন হলোঃ ইলম [দ্বীনি জ্ঞান ] উঠে যাবে, মুর্খতার প্রসার ঘটবে, ব্যাপকহারে জিনা-ব্যভিচার ছড়িয়ে পরবে, মদ্যপান করা হইবে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন তত্ত্বাবধায়ক পুরুষ থাকিবে।
সহিহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আবু মূসা ও আবু হুরাইরা [রাদি.]হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ [বিগত বছরের তুলনায় আগত বছর নিকৃষ্টতর হইবে ]
২২০৬. যুবাইর ইবনি আদী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] এর কাছে এসে তার নিকট অভিযোগ করলাম আমাদের উপর হাজ্জাজের পক্ষ হইতে যে জুলুম-নির্যাতন চলছিল সে প্রসঙ্গে। তিনি বলিলেন, তোমাদের প্রতিটি বছর বিগত বছর অপেক্ষা নিকৃষ্টতর হইবে, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রভুর সাথে মিলিত হও। এ কথা আমি তোমাদের নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-র নিকট শুনিয়াছি।
সহিহ, সহীহাহ [১/১০,১২১৮],বুখারী। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২০৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পৃথিবীতে যখন আল্লাহ্ আল্লাহ্ বলা না হইবে তখন কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না।
সহিহ, সহীহাহ[৩০১৬], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় হাদীস মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না-খালিদ ইবনিল হারিস হইতে, তিনি হুমাইদ হইতে, তিনি আনাস [রাদি.] হইতে এই সূত্রে বর্ণিত আছে। তবে হাদীসটি এই সনদ্সুত্রে মারফুভাবে বর্ণিত হয়নি। আর প্রথমোক্ত রিওয়ায়াতের চাইতে এই রিওয়ায়াত অনেক বেশি সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ [যামীন তার অভ্যন্তরস্থ সম্পদ উদগিরণ করে দিবে]
২২০৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [এমন এক সময়ের আগমন ঘটবে] যখন যামীন তার সোনা-রুপার সমস্ত খনিজভান্ডার কলিজার টুকরার মতো স্তুপাকারে বের করে দিবে। তখন চোর এসে বলবে, এ সম্পদের জন্যই তো আমার হাত কাটা হয়েছে। হত্যাকারী [হন্তা] এসে বলবে, আমি এ সম্পদের জন্যই তো খুন হয়েছি। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী এসে বলবে, আমি তো এ সম্পদের কারণেই আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। তারপর তারা এ সম্পদ ছেড়ে যাবে, তা হইতে কিছুই নেবে না।
সহিহ ঃ মুসলিম [৩/৮৪-৮৫]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব। আমরা হাদীসটি শুধুমাত্র এ সূত্রেই জেনেছি।ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ নিকৃষ্ট মানুষেরা দুনিয়াবী সৌভাগ্যের অধিকারী হইবে
২২০৯. হুযাইফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যতক্ষণ না নিকৃষ্ট লোকের পুত্র নিকৃষ্টরা পৃথিবীতে ভাগ্যবান হইবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না।
সহিহ, মিশকাত তাহকীক ছানী [২৩৬৫]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আমর ইবনি আবু আমরের সূত্রেই জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ আকৃতি পরিবর্তন ও ভূমি ধসের আলামাত অবতীর্ণ হইবে
২২১০. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাত যখন পনেরটি বিষয়ে লিপ্ত হয়ে পড়বে তখন তাহাদের উপর বিপদ-মুসীবত এসে পড়বে। প্রশ্ন করা হল ইয়া রাসূলাল্লাহ! সেগুলো কি কি? তিনি বললেনঃ যখন গানীমতের মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হইবে, আমানাত লুটের মালে পরিণত হইবে, যাকাত জরিমানা রূপে গণ্য হইবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করিবে এবং মায়ের অবাধ্য হইবে, বন্ধুর সাথে ভাল ব্যবহার করিবে কিন্তু পিতার সাথে খারাপ ব্যবহার করিবে, মসজিদে শোরগোল করা হইবে, সবচাইতে খারাপ চরিত্রের লোক হইবে তার সম্প্রদায়ের নেতা, কোন লোককে তার অনিষ্টতার ভয়ে সম্মান করা হইবে, মদ পান করা হইবে, রেশমী বস্ত্র পরিধান করা হইবে, নর্তকী গায়িকাদের প্রতিষ্ঠিত করা হইবে, বাদ্যযন্ত্রসমূহের কদর করা হইবে এবং এই উম্মাতের শেষ যামানার লোকেরা তাহাদের পূর্ব যুগের লোকদের অভিসম্পাত করিবে, তখন তোমরা একটি অগ্নিবায়ু অথবা ভূমিধ্বস অথবা চেহারা বিকৃতির আজাবের অপেক্ষা করিবে।
যঈফ, মিশকাত [৫৪৫১] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উক্ত সূত্রেই এটিকে আলী [রাদি.] বর্ণিত হাদীসরূপে জেনেছি। আল-ফারাজ ইবনি ফাযালা [রঃ] ব্যতীত আর কেউ এই হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ আল-আনসারী [রঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমাদের জানা নেই। কোন কোন হাদীসবেত্তা আল-ফারাজ ইবনি ফাযালার সমালোচনা করিয়াছেন এবং স্মৃতিশক্তির দিক থেকে তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন। ওয়াকী [রঃ] এবং আরও কিছু রাবী তার সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২২১১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন গানীমাতের [যুদ্বলব্দ] মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হইবে, আমানতের মাল লুটের মালে পরিণত হইবে, যাকাতকে জরিমানা মনে করা হইবে, ধর্ম বিবর্জিত শিক্ষার প্রচলন হইবে, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হয়ে যাবে কিন্তু নিজ মায়ের অবাধ্য হইবে, বন্ধু-বান্ধবকে কাছে টেনে নিবে, কিন্তু পিতাকে দূরে ঠেলে দিবে, মসজিদে কলরব ও হট্টগোল করিবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হইবে, নিকৃষ্ট লোক সমাজের কর্ণধার হইবে, কোন মানুষের অনিষ্ট হইতে বাঁচার জন্য তাকে সম্মান দেখানো হইবে, গায়িকা-নর্তকী ও বাদ্য যন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদপান করা হইবে, এই উম্মাতের শেষ যামানার লোকেরা তাহাদের পূর্ববতী মনীষীদের অভিসম্পাত করিবে, তখন তোমরা অগ্নিবায়ু, ভূমিধস, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি ও পাথর বর্ষণরূপ শাস্তির এবং আরো আলামতের অপেক্ষা করিবে যা একের পর এক নিপতিত হইতে থাকিবে, যেমন পুরানো পুঁতিরমালা ছিড়ে গেলে একের পর এক তার পুঁতি ঝরে পড়তে থাকে।
যঈফ, মিশকাত [৫৪৫০] আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আলী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২২১২. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণস্বরূপ আযাব এ উম্মাতের মাঝে ঘনিয়ে আসবে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি প্রশ্ন করিল, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! কখন এসব আযাব সংঘটিত হইবে? তিনি বললেনঃ যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করিবে এবং মদ্যপানের সয়লাব হইবে।
হাসান, সহীহাহ [১৬০৪]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি মুরসালভাবেও আমাশ হইতে আবদুর রাহমান ইবনি সাবিত এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি গারীব। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর বাণীঃ আমার প্রেরণ ও কিয়ামাত এই দুই আঙ্গুলের মত কাছাকাছি
২২১৩. আল-মুস্তাওরিদ ইবনি শাদ্দাদ আল-ফিহ্রী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি তো কিয়ামাতের শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে [কিয়ামাত সংঘটিত হওয়ার নিকটতর সময়ে] প্রেরিত হয়েছি। আমি তার অগ্রে এসেছি মাত্র যেমন এটি ও এটি অর্থাৎ তর্জনী ও মধ্যমার মাঝে যতটুকু দূরত্ব [আমার ও কিয়ামাতের মধ্যে সে রকমই নিকটতর দূরত্ব]।
যঈফ, মিশকাত [৫৫১৩] আবু ঈসা বলেন, আল-মুসতাওরিদ ইবনি শাদ্দাদ [রাদি.]-এর রিওয়ায়াত হিসাবে এ হাদীসটি গারীব। কেননা এই সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২২১৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার প্রেরণ ও কিয়ামাত সংঘটিত হওয়ার মাঝে এতটুকু ব্যবধান, যেমন এ দুটি। আবু দাউদ [রঃ] তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলের মাধ্যমে ইঙ্গিত করে দেখান। এই দুইটির মাঝে খুব একটা ব্যবধান নেই। সহিহ, বুখারী, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪০. অনুচ্ছেদঃ তুর্কীদের সাথে যুদ্ধ
২২১৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইবে যাদের জুতা হইবে চুলের তৈরী। আর কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইবে, যাদের মুখমন্ডল হইবে বহু স্তরবিশিষ্ট ঢালের মতো।
সহিহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আবু বকর সিদ্দীক, বুরইদা, আবু সাঈদ, আমর ইবনি তাগলিব ও মুআবিয়া [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১. অনুচ্ছেদঃ কিসরার পরাজয়ের পর আর কোন কিসরা ক্ষমতাসীন হইবে না
২২১৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [পারস্য সম্রাট] কিসরার পরাজয়ের পর আর কোনো কিসরা ক্ষমতাসীন হইবে না এবং [রোম সম্রাট] কাইসারের পরাজয়ের পরও আর কোন কাইসার ক্ষমতাসীন হইতে পারবে না। সেই মহান সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! এই দুই রাজ্যের সকল ধনভান্ডার আল্লাহ্ তাআলার পথে খরচ করা হইবে।
সহিহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২. অনুচ্ছেদঃ হিজাযের দিক হইতে একটি অগ্নুৎপাত হওয়ার আগ পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না
২২১৭. সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রঃ] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [আবদুল্লাহ] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাতের পূর্বে হাযরামাওত হইতে অথবা হাযরামাওতের সাগরের দিক হইতে শিঘ্রই একটি অগ্নুত্পাত হইবে এবং তা লোকদেরকে একত্র করিবে। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! তখন আমাদেরকে কি করার জন্য নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ তোমরা সিরিয়াতে অবস্থান করিবে।
সহিহ, ফাযাইলুশশাম [১১], মিশকাত [৬২৬৫]। আবু ঈসা বলেন, হুযাইফা ইবনি উসাইদ, আনাস, আবু হুরাইরা ও আবু যার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব সহিহ এবং ইবনি উমার [রাদি.]এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব।ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ কিছুসংখ্যক ডাহা মিথ্যাবাদীর [নাবুওয়াতের দাবিদারের] অবির্ভাব হওয়ার পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না
২২১৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রায় ত্রিশজন ডাহা মিথ্যাবাদী প্রতারকের আবির্ভাবের পূর্বে কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না। তাহাদের সকলে দাবি করিবে যে, সে আল্লাহ্ তাআলার প্রেরিত রাসুল।
সহিহ, সহীহাহ [১৬৮৩], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, জাবির ইবনি সামুরা ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২১৯. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুশরিকদের সাথে আমার উম্মতের কতিপয় গোত্র না মিলিত হওয়া পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না, এমনকি তারা মূর্তিপূজাও করিবে। আমার উম্মতের মধ্যে খুব শীঘ্রই ত্রিশজন ডাহা মিথ্যাবাদীর আবির্ভাব হইবে। এদের সকলেই দাবি করিবে যে সে নাবী। অথচ আমি সর্বো সর্বশেষ নাবী, আমার পরে কোন নাবী নেই।
সহিহ, মিশকাত [৫৪০৬], সহীহাহ [১৬৮৩]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ সাকীফ বংশে এক মিথ্যাবাদী ও এক নরঘাতকের জন্ম হইবে
২২২০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক মিথ্যাবাদী ও এক নরঘাতক সাকীফ বংশে জন্মগ্রহণ করিবে।
সহিহ, মুসলিম[৭/১৯১]। আবু ঈসা আরো বলেন, কথিত আছে যে এ মিথ্যাবাদী ব্যক্তিটি হলো মুখতার ইবনি আবু উবাইদ এবং রক্ত পিপাসু নরঘাতক হলো হাজ্জাজ ইবনি ইউসুফ [এরা দুজনেই সাকীফ বংশের]। উপরোক্ত হাদীসের অনূরূপ হাদীস আবদুর রাহমান ইবনি ওয়াকিদ-শারীক [রঃ] এর সূত্রে বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান ইবনি উমারের বর্ণনা হিসাবে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র শারীকের সূত্রে জেনেছি। শারীক বলেন, বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনি উসম এবং ইসরাঈল বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি ইসমাহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ তৃতীয় যুগের বর্ণনা
২২২১. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ আমার যমানাই হলো সর্বউৎকৃষ্ট যমানা, তারপর এর নিকটবর্তীদের যমানা, তারপর এর নিকটবর্তীদের যমানা। তারপর এমন যুগের আগমন ঘটবে যখনকার লোকেরা হইবে মোটা দেহ বিশিষ্ট এবং তারা মোটা দেহের অধিকারী হইতে পছন্দ করিবে। সাক্ষ্য না চাওয়া হলেও তারা সাক্ষ্য প্রদান করিবে।
সহীহ্ঃ সহীহাহ [১৮৪০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আমাশ-আলী ইবনি মুদরিক হইতে তিনি হিলাল ইবনি ইয়াসাফের সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনি ফুযাইল অনুরুপভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আর একাধিক হাদীস বর্ণনাকারী আমাশ হইতে, তিনি হিলাল ইবনি ইয়াসাফের সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন, তবে তারা বর্ণনাকারী আলী ইবনি মুদরিকের কথা উল্লেখ করেননি। হুসাইন ইবনি হুরাইস [রঃ] ওয়াকী হইতে, তিনি আমাশ হইতে, তিনি হিলাল ইবনি ইয়াসাফ হইতে, তিনি ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনূরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। [তিরমিযী বলেন] আমার মতে মুহাম্মদ ইবনি ফুযাইলের সূত্র অপেক্ষা এ সূত্রটি অনেক বেশি সহিহ। এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত হয়েছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২২২. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি যে যুগে যাদের মাঝে প্রেরিত হয়েছি সেই যুগের আমার উম্মাতই হলো শ্রেষ্ঠ; তারপর তাহাদের পরবর্তী যুগের লোক। বর্ণনাকারী বলেন, তৃতীয় যুগের কথা বলা হয়েছে কিনা তা আমি জানি না। তারপর এমন কিছু মানুষের আগমন ঘটবে যাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া না হলেও তারা সাক্ষ্য প্রদান করিবে। তারা খিয়ানাত করিবে, আমানাত রক্ষা করিবে না এবং তাহাদের মধ্যে মোটা দেহ বিশিষ্ট মানুষের বিস্তার ঘটবে।
সহিহ, সহীহাহ [১৮৪০], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ খালিফাগণ প্রসঙ্গে
২২২৩ জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার পরে বারোজন শাসক হইবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি কি যে বলিলেন, আমি তা বুঝতে পারিনি। তাই আমি আমার কাছের একজন লোককে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলিলেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তাহাদের সকলেই কুরাইশ বংশীয় হইবে।
সহিহ, সহীহাহ [১০৭৫], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। উপরোক্ত হাদীসের মতো বর্ণিত আছে আবু কুরাইব হইতে, তিনি উমার ইবনি উবাইদ হইতে, তিনি তার পিতা হইতে, তিনি আবু বাক্র ইবনি আবী মূসা হইতে, তিনি জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে। জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব। এ হাদীসটিকে আবু মূসা হইতে জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] এর সূত্রে গারীব বলা হয়। ইবনি মাসউদ ও আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তাআলার নিযুক্ত শাসককে যে ব্যক্তি অপমান করিবে
২২২৪. যিয়াদ ইবনি কূসাইব আল-আদাবী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি আমিরের মিম্বরের নিকট আবু বকর [রাদি.]-এর সাথে বসা ছিলাম। সে সময় তিনি সুক্ষ মিহি পোশাক পরিহিত অবস্থায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। আবু বিলাল বলিলেন, তোমরা আমাদের শাসকের প্রতি লক্ষ্য করে দেখ, তিনি গুনাহগারদের অনূরূপ পোশাক পড়েছেন। আবু বকর [রাদি.]বলিলেন, তুমি চুপ থাক, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ দুনিয়াতে আল্লাহ্ তাআলার নিযুক্ত শাসককে যে ব্যক্তি অপমান করিবে, আল্লাহ্ তাআলা তাকে অপমান করবেন।
হাসান, সহীহাহ [২২৯৬]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ খিলাফাত প্রসঙ্গে
২২২৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে বলা হলো, আপনি যদি আপনার পরবর্তী খালিফা [প্রতিনিধি] মনোনীত করে যেতেন। তিনি বলিলেন, আমি যদি পরবর্তী খালীফা মনোনীত করি তাহলে আবু বকর [রাদি.] ও পরবর্তী খালীফা মনোনীত করেছিলেন। আর আমি যদি পরবর্তী খালীফা মনোনীত না করে যাই [তাও যথার্থ হইবে], কেননা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাউকে খালিফা মনোনীত করে যাননি।
সহিহ, সহিহ আবু দাউদ [২৬০৫], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসে আরো দীর্ঘ ঘটনা আছে [যা সহিহ মুসলিমের কিতাবুল ইমারা-এর প্রথমদিকে উল্লেখিত]। এ হাদীসটি সহিহ। এ হাদীসটি ইবনি উমার [রাদি.] হইতে একাধিকসূত্রে বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২২৬. সাঈদ ইবনি জুহমান [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাফিনাহ [রাদি.] আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মতের খিলাফাতের সময়কাল [শাসনকাল] হইবে ত্রিশবছর, তারপর হইবে রাজতন্ত্র।
সহিহ, সহীহাহ [৪৫৯, ১৫৩৪, ১৫৩৫]। তারপর সাফিনাহ [রাদি.] আমাকে বলিলেন, তুমি আবু বকর [রাদি.] এর খিলাফতকাল গণনা কর। তারপর বলিলেন, উমার ও উসমান [রাদি.]-এর খিলাফতকাল গণনা কর। তারপর বলিলেন, আলী [রাদি.]-এর খিলাফতকালও গণনা কর। আমরা গণনা করে এর সময়কাল ত্রিশবছরই পেলাম। সাঈদ [রাদি.] বলিলেন, আমি তাকে বললাম বানু উমাইয়ার জনগণ ও দাবি করে যে, তাহাদের মাঝে ও খেলাফাত বিদ্যমান? তিনি বলিলেন যারকার সন্তানেরা মিথ্যা বলছে, বরং তারা তো নিকৃস্ট রাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত রাজতান্ত্রিক গোষ্ঠী।
আবু ঈসা বলেন, উমার ও আলী [রাদি.]হইতে ও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। তারা বলেন, খিলাফাত প্রসঙ্গে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন অঙ্গীকার করে যাননি। এ হাদীসটি হাসান। অবশ্য এ হাদীসটি সাঈদ ইবনি জুহমান [রঃ] হইতে একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করিয়াছেন। আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে শুধুমাত্র তার রিওয়ায়াত হিসাবেই জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ কুরাইশদের মধ্য হইতেই কিয়ামাত পর্যন্ত খালিফা হইবে
২২২৭. হাবীব ইবনিয যুবাইর [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আবুল হুযাইল [রঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ আমর ইবনিল আস [রাদি.] এর সামনে রাবীআ বংশের কয়েকজন লোক উপস্থিত ছিল। বাকর ইবনি ওয়াইল বংশের কোন একজন লোক বলিল, অবশ্যই অন্যায় কাজ হইতে কুরাইশদের বিরত থাকা উচিত। তা না হলে আল্লাহ্ তাআলা এ [খিলাফাতের] দায়িত্ব আরবদের মাঝে অন্যদেরকে প্রদান করবেন। আমর ইবনিল আস [রাদি.]বলেন, তুমি ভূল বলেছ। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আমি বলিতে শুনিয়াছিঃ কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত কুরাইশগণ ভাল-মন্দ সর্বাবস্থায় জনগনের নেতৃত্ব দিবে।
সহিহ, সহীহাহ [১১৫৫]। আবু ঈসা বলেন, ইবনি মাসউদ ইবনি উমার ও জাবির [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০. অনুচ্ছেদঃ জাহজাহ্ নামক মুক্তদাসের রাজ্যাধিকারী হওয়া
২২২৮ .উমার ইবনিল হাকাম [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরা [রাদি.]কে বলিতে শুনিয়াছি, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জাহজাহ্ নামক কোন এক মুক্তদাস অধিপতি না হওয়া পর্যন্ত দিন-রাতের অবসান [কিয়ামাত] হইবে না।
সহিহ, সহীহাহ[২৪৪১], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫১. অনুচ্ছেদঃ পথভ্রষ্টকারী নেতৃবৃন্দ প্রসঙ্গে
২২২৯. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে পথ্ভ্রষ্টকারী নেতাহাদেরকেই ভয় করি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরো বলেছেনঃ আমার উম্মাতের এক দল লোক আল্লাহ্ তাআলার হুকুম [কিয়ামাত] আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সর্বদা বিজয়ীবেশে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকিবে। যারা তাহাদের অপমানিত করিতে চাইবে তারা তাহাদের ক্ষতি করিতে পারবে না।
সহিহ, সহীহাহ [৪/১১০, ১৯৫৭], মুসলিম ২য় অংশ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈলকে আমি বলিতে শুনিয়াছি, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-র উক্তো হাদীসটি আলী ইবনিল মাদীনীকে এভাবে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছিঃ আমার উম্মাতের এক দল সর্বাবস্থায় সত্যের উপর বিজয়ী থাকিবে। তাহাদের ব্যাপারে আলী [রাদি.] বলেন, এরা হলো আহলুল হাদীস। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply