ইমাম মাহদী প্রসঙ্গ । ইমাম মাহদীর জন্ম কোথায় হবে

ইমাম মাহদী প্রসঙ্গ । ইমাম মাহদীর জন্ম কোথায় হবে

ইমাম মাহদী প্রসঙ্গ । ইমাম মাহদীর জন্ম কোথায় হবে , এই অধ্যায়ে হাদীস (৪২৭৯ – ৪২৯০ = ১২টি)>>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায় – ৩৮ ঃ ঈমাম মাহ্‌দী প্রসঙ্গ, অনুচ্ছেদঃ ১টি, হাদীসঃ (৪২৭৯-৪২৯০)=১২টি

অনুচ্ছেদ-১ঃ ঈমাম মাহ্‌দী প্রসঙ্গ

৪২৭৯. জাবির ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ এ দ্বীন ততদিন প্রতিষ্ঠিত থাকিবে, যতদিন তোমাদের শাসকরূপে বারজন প্রতিনিধির অবির্ভাব না হইবে। তাহাদের প্রত্যেক উম্মাতকে তার পাশে একত্র করিবে। অতঃপর আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর আরেকটি কথা শুনলাম, তবে তা বুঝতে পারিনি। পরে আমার পিতাহাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করায় তিনি বলিলেন, তিনি বলিয়াছেনঃ তাহাদের সবাই কুরাইশ বংশোদ্ভূত হইবে।

ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৮০. জাবির ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ এ দ্বীন [ইসলাম] বারজন প্রতিনিধি আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত অটুট অবস্থায় বিজয়ী থাকিবে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একথা শুনে উপস্থিত লোকেরা অবাক হয়ে আল্লাহ আকবার ধ্বনি দিলো এবং চিৎকার করে উঠলো। অতঃপর তিনি নিম্নস্বরে একটি কথা বলিলেন। আমি আমার পিতাহাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি [সাঃআঃ] কি বলিয়াছেন? তিনি বলিলেন যে, তিনি বলিয়াছেনঃ তাহাদের সবাই কুরাইশ বংশোদ্ভূত হইবে। {মুসলিম, আহমাদ}

ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪২৮১. জাবির ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তবে এই বর্ণনায় আছেঃ পরে যখন তিনি তাহাঁর ঘরে ফিরে যান, কুরাইশদের কয়েকজন এসে তাঁকে প্রশ্ন করলো, তার পরে কি হইবে? তিনি বলিলেনঃ অতঃপর বিপর্যয় সৃষ্টি হইবে।

সহিহ, তবে এ কথাটি বাদেঃ “পরে যখন তিনি তাহাঁর ঘরে ফিরে যান….।” ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪২৮২. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যদি দুনিয়ার মাত্র একদিনও অবশিষ্ট থাকে তবে আল্লাহ সেই দিনকে অত্যন্ত দীর্ঘায়িত করবেন এবং আমার হইতে অথবা আমার পরিজন হইতে একজন লোক আবির্ভূত করবেন, যার নাম ও তার পিতার নাম আমার ও আমার পিতার নামের সঙ্গে হুবহু মিল হইবে। সে পৃথিবীকে ইনসাফে পরিপূর্ণ করিবে যেরূপে তা যুলুমে পরিপূর্ণ ছিল। আর সুফিয়ান বর্ণিত হাদিসে বলেন, ততদিন দুনিয়া ধ্বংস হইবে না, যতদিন পর্যন্ত আমার পরিবারের এক ব্যক্তি আরবে রাজত্ব না করিবে, তার নাম হুবহু আমার নামই হইবে। {৪২৮১}

{৪২৮১} তিরমিজি, আহমাদ। ঈমাম তিরমিজি বলেনঃ হাদিসটি হাসান সহিহ। ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪২৮৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যদি দুনিয়ার একদিনও অবশিষ্ট থাকে তবুও আল্লাহ আমার পরিজন হইতে অবশ্যই এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন। তখনকার দুনিয়া যেরূপে অত্যাচারে ভরে যাবে, সে সেরূপেই তা ন্যায়-ইনসাফে ভরে দিবে।

ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৮৪. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মাহ্দী আমার পরিজন হইতে ফাতিমার সন্তানদের বংশ হইতে আবির্ভূত হইবে। আবদুল্লাহ ইবনি জাফার [রাদি.] বলেন, আমি আবুল মালীহকে আলী ইবনি নুফাইলের প্রশংসা করিতে এবং তার গুণাবলী বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি।

ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৮৫. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমার বংশ হইতে মাহ্দীর আবির্ভাব হইবে, সে হইবে প্রশস্ত ললাট ও উন্নত নাকবিশিষ্ট। তখনকার দুনিয়া যেরূপে যুলুমে ভরে যবে, সে তার বিপরীতে তা ইনসাফে ভরে দিবে, আর সে সাত বছর রাজত্ব করিবে। {৪২৮৪}

{৪২৮৪} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪২৮৬. নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ জনৈক খলীফাহ্র মৃত্যুকালে মতনৈক্য সৃষ্টি হইবে। এ সময় মাদীনাহ্বাসী জনৈক ব্যক্তি পালিয়ে মাক্কাহ্য় চলে যাবে। মাক্কাহবাসীরা তার নিকট এসে তাহাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আসবে এবং তারা রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের মাঝখানে তার হাতে বাইআত করিবে। অতঃপর তার বিরুদ্ধে সিরিয়া হইতে একটি সৈন্যবাহিনী পাঠানো হইবে। এদেরকে মাক্কাহ ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে দেখিতে পাবে, তখন সিরিয়ার ধার্মিক ব্যক্তিগন ও ইরাকবাসীদের কয়েকটি দল তার নিকট এসে রুকন ও মাকামের মাঝখানে তার হাতে বাইআত করিবে। অতঃপর কুরাইশ বংশে জনৈক ব্যক্তির উদ্ভব হইবে, কাল্ব গোত্র হইবে তার মাতুল গোত্র। সে তাহাদের মুকাবিলায় একটি বাহিনী পাঠাবে। যুদ্ধে মাহ্দীর অনুসারীরা কাল্ব বাহিনীর উপর বিজয়ী হইবে। এ সময় যারা কাল্বের গনীমাত নিতে উপস্থিত হইবে না তাহাদের জন্য আফসোস। মাহ্দী গনীমাতের সম্পদ বন্টন করবেন এবং নাবী [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত অনুযায়ী মানুষের মাঝে কার্য পরিচালনা করবেন, আর ইসলাম সারা পৃথিবীতে প্রসারিত হইবে। অতঃপর তিনি সাত বছর অবস্থান করার পর মারা যাবেন। আর মুসলিমরা তার জানাযা সলাত পড়বে। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, কেউ কেউ হিশাম হইতে বর্ণনা করে বলেন, নয় বছর অবস্থান করবেন, আবার কেউ বলেন, সাত বছর। {৪২৮৫}

{৪২৮৫} আহমাদ। এর সানাদে নাম উল্লেখহীন জনৈক ব্যক্তি রয়েছেন। ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪২৮৭. ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উপরে বর্ণিত হাদিস প্রসঙ্গে বলেন, তিনি নয় বছর অবস্থান করবেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, মুআয ছাড়া অন্যরা হিশাম হইতে বর্ণনা করে বলেন, নয় বছর অবস্থান করবেন। {৮২৮৬}

{৪২৮৬} এর পূর্বেরটি দেখুন।ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪২৮৮. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] হইতে উপরে বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। আর মুআযের হাদিসই পরিপূর্ণ। {৪২৮৭}

{৪২৮৭} এর পূর্বেরটি দেখুন। ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪২৮৯. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ধ্বসে যাওয়া সেই বাহিনীর ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ণনা করিলেন। তখন আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! যারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ করিতে বাধ্য হইবে, তাহাদের কি হইবে? তিনি বলিলেনঃ তাহাদেরও ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে; কিন্তু তারা তাহাদের নিয়ত অনুযায়ী ক্বিয়ামাতের দিন পুনরুত্থিত হইবে।

ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৯০.আবু ইসহাক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আলী [রাদি.] বলিয়াছেন, আর তিনি তার ছেলে হাসানের প্রতি দৃষ্টিপাত করে বলিয়াছেন, নিশ্চয়ই আমার এই ছেলেকে নাবী [সাঃআঃ] যেরূপ নেতা আখ্যায়িত করেছেন, অচিরেই তার বংশ হইতে জনৈক ব্যক্তি আবির্ভূত হইবে। তোমাদের নাবী [সাঃআঃ]-এর নামে তার নাম হইবে, স্বভাব-চরিত্রে তাহাঁর মত হইবে; কিন্তু গঠন আকৃতি অনুরূপ হইবে না। অতঃপর ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, সে পৃথিবীকে ন্যায়বিচারে ভরে দিবে। হারুণ [রাদি.] বলেন, আমর ইবনি আবু ক্বাইস পর্যায়ক্রমে মুতাররিফ ইবনি তরীফ, হাসান ও হিলাল ইবনি আমর হইতে বর্ননা করে বলেন, আমি আলী [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নদীর পেছন দিক থেকে জনৈক ব্যক্তি আবির্ভূত হইবে। তাহাকে হারিস ইবনির হাররাস বলে ডাকা হইবে, তার আগে জনৈক ব্যক্তি আসবেন, যার নাম হইবে মানসূর। তিনি মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর পরিজনকে আশ্রয় দিবেন, যেরূপ কুরাইশরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে স্থান দিয়েছিল। সুতরাং প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হইবে তার সাহায্যে এগিয়ে আসা, তার ডাকে সাড়া দেয়া। {৪২৮৯}

{৪২৮৯} আবু দাউদ এটি একক ভাবে বর্ণনা করেছেন। তাবরীযী মিশকাত গ্রন্থে বলেনঃ এর সনদ মুনকাতি। ইমাম মাহদী –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

Comments

One response to “ইমাম মাহদী প্রসঙ্গ । ইমাম মাহদীর জন্ম কোথায় হবে”

Leave a Reply