মুক্তাদির ওপর ইমামের অনুসরণ করা কর্তব্য এবং মাসবুকের হুকুম
মুক্তাদির ওপর ইমামের অনুসরণ করা কর্তব্য এবং মাসবুকের হুকুম >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৮
- অধ্যায়ঃ ২৮. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ২৮. প্রথম অনুচ্ছেদ
১১৩৬. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে সলাত আদায় করতাম। বস্তুতঃ তিনি যখন
سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَه
সামিআল্ল-হু লিমান হামিদাহ পাঠ করিতেন, তখন যে পর্যন্ত তিনি সাজদার জন্য তাহাঁর কপাল মাটিতে না লাগাতেন, আমাদের কেউ নিজ পিঠ ঝুকাতেন না। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৮১১, মুসলিম ৪৭৪। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৩৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে সালাত আদায় করালেন। সালাত শেষে তিনি [সাঃআঃ] আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসলেন এবং বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের ঈমাম। তাই তোমরা রুকু করার সময়, সাজদাহ্ করার সময়, দাঁড়াবার সময়, সালাম ফিরাবার সময় আমার আগে যাবে না, আমি নিশ্চয়ই তোমাদেরকে আমার সম্মুখ দিয়ে পেছন দিক দিয়ে দেখে থাকি। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ৪২৬। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৩৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা ইমামের পূর্বে কোন আমাল করো না। ঈমাম তাকবির দিলে তোমরাও তাকবির দিবে। ঈমাম যখন বলবেন
وَلَا الضَّالّيْنَ
ওয়ালায যোল্লীন, তোমরা বলবে
امِينَ
আমীন। ঈমাম রুকু করলে তোমরাও রুকু করিবে। ঈমাম যখন বলবে
سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَه
সামি আল্ল-হু লিমান হামিদাহ্, তোমরা বলবে
اللّهُمَّ رَبَّنَا لَك الْحَمْدُ
আল্লা- হুম্মা রব্বানা- লাকাল হাম্দু।“ বোখারী, মুসলিম; তবে ঈমাম বোখারী “ওয়াইযা-ক্বা-লা ওয়ালায্ যোল্লীন” উল্লেখ করেননি। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৭৩৪, মুসলিম ৪১৫। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৩৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন: একবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক ভ্রমণের সময় ঘোড়ার উপর আরোহী ছিলেন। ঘটনাক্রমে তিনি নীচে পড়ে গেলেন। ফলে তার ডান পাজরের চামড়া উঠে গিয়ে চরম ব্যথা পেলেন [দাড়িয়ে সলাত আদায় করিতে পারছিলেন না]। তাই তিনি [সাঃআঃ] বসে বসে আমাদেরকে [পাচ বেলা সলাতের] কোন এক বেলা সলাত আদায় করালেন। আমরাও তার পেছনে বসে বসেই সলাত আদায় করলাম। সলাত শেষ করে তিনি আমাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, ঈমাম এ জন্যেই নির্ধারিত করা হয়েছে যেন তোমরা তার অনুকরণ করো। তাই ঈমাম দাড়িয়ে সলাত আদায় করালে তোমরাও দাড়িয়ে সলাত আদায় করিবে। ঈমাম যখন রুকু করিবে, তোমরাও রুকু করিবে। ঈমাম রুকু হইতে উঠলে তোমরাও রুকু হইতে উঠবে। ঈমাম
رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ
সামিআল্ল-হু লিমান হামিদাহ বললে, তোমরা
سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَه
রব্বানা- লাকাল হামদু বলবে। আর যখন ঈমাম বসে সলাত আদায় করাবে, তোমরা সব মুক্তাদী বসে সলাত আদায় করিবে।
ঈমাম হুমায়দী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, ঈমাম বসে সলাত আদায় করালে তোমরাও বসে সলাত আদায় করিবে নবী [সাঃআঃ]-এর এ নির্দেশ, তার প্রথম অসুস্থের সময়ের নির্দেশ ছিল। পরে মৃত্যুশয্যায় [ইস্তিকালের একদিন আগে] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বসে বসে সলাত আদায় করিয়েছেন। মুক্তাদীগণ তার পেছনে দাড়িয়ে সলাত আদায় করিয়াছেন। তিনি তাদেরকে বসে সলাত আদায়ের নির্দেশ দেননি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এ শেষ আমালের ওপরই আমাল করা হয়। এগুলো হলো বোখারীর ভাষা। এর ওপর ঈমাম মুসলিম একমত পোষণ করিয়াছেন। মুসলিমে আরো একটু বেশী বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইমামের বিপরীত কোন আমাল করো না। ঈমাম সাজদাহ করলে তোমরাও সাজদাহ করিবে। ” {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৮৯, ৭৩৩, মুসলিম ৪১৪। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৪০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এমন সময় একদিন বিলাল [রাদি.] সলাত আদায়ের জন্যে রাসূলুল্লাহকে [সাঃআঃ] ডাকতে আসলেন। নবী [সাঃআঃ] বললেন: আবু বকরকে লোকদের সলাত আদায় করাতে বলো। ফলে আবু বাকর ও সে কয়দিনের [সতর বেলা] সলাত আদায় করালেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন একটু সুস্থতা মনে করিলেন। তিনি দু সহাবীর কাধে ভর দিয়ে দুপা মাটির সাথে হেঁচড়িয়ে সলাতের জন্যে মসজিদে আসলেন। মসজিদে প্রবেশ করলে আবু বকর [রাদি.] রসূলের [সাঃআঃ] আগমন টের পেলেন ও পিছু হটতে আরম্ভ করিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা দেখে সেখান থেকে সরে না আসার জন্যে আবু বাকরকে ইঙ্গিত করিলেন। এরপর তিনি আসলেন এবং আবু বাকরের বাম পাশে বসে গেলেন। আর আবু বাকর দাড়িয়ে সলাত আদায় করছিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ৰসে বসে সলাত আদায় করিলেন। আবু বাকর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সলাতের ইকতিদা করছেন। আর লোকেরা আবু বকরের সলাতের ইকতেদা করে চলছেন।” {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৮৭-৭১৩, মুসলিম ৪১৮। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৪১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক ইমামের পূর্বে [রুকু সাজদাহ্ হইতে] মাথা উঠায় সে কি এ বিষয়ের ভয় করে না যে, আল্লাহ্ তাআলা তার মাথাকে পরিবর্তন করে গাধার মাথায় পরিণত করিবেন।{১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৯১, মুসলিম ৪২৭। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ২৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১১৪২. আলী ও মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাঁরা বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কোনও লোক যখন জামাতের সালাতে শরীক হওয়ার জন্য আসবে তখন ঈমাম যে অবস্থায় থাকিবে ও যে কাজ করিবে সেও সে কাজ করিবে। {১}
{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৫৯১, সহীহ আল জামি ২৬১, মুজাম আল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ২০/২৬৭। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৪৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরশাদ করেছেনঃ তোমরা জামাআতে শরীক হওয়ার জন্য সালাতে আসলে আমাদেরকে সাজদাহ্ অবস্থায় পেলে তোমরাও সাজদায় যাও। আর এ সাজদাহকে [কোন রাকআত] হিসেবে গণ্য করিবে না। তবে যে লোক [ইমামের সাথে] এক রাকআত প্রাপ্ত হবে সে সম্পূর্ণ সালাত পেয়ে গেল {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ৮৯৩, দারাকুত্বনী ১৩১৪, মুসতাদরাক আল হাকিম ১০১২, ইরওয়া ৪৯৬। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১১৪৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ যে লোক চল্লিশ দিন পর্যন্ত তাকবীর তাহরীমাসহ আল্লাহ্র জন্য জামাআতে সালাত আদায় করেন তার জন্য দুপ্রকার মুক্তি বরাদ্ধ করা হয়। এক জাহান্নাম থেকে মুক্তি। আর দ্বিতীয় মুনাফিক্বী থেকে মুক্তি। {১}
{১} হাসান লিগায়রিহী : আত তিরমিজি ২৪১, সহীহাহ্ ১৯৭৯, সহীহ আত তারগীব ৪০৯, সহীহ আল জামি ৬৩৬৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান লিগাইরিহি
১১৪৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ যে লোক উযূ করেছে এবং ভালোভাবে সে তার উযূ সমাপ্ত করেছে। তারপর মাসজিদে গিয়েছে। সেখানে লোকদেরকে সালাত আদায় করে ফেলা অবস্থায় পেয়েছে। আল্লাহ্ তাআলা তাকে ঐ সালাত আদায়কারীদের সমান সওয়াব দান করিবেন যারা সেখানে হাজির হয়ে সালাত পুরা করেছে। অথচ তাতে তাদের পুণ্য একটুও কমতি হবে না। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫৬৪, নাসায়ী ৭৫৫, আহমাদ ৮৯৪৭, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৫৪, আস্ সুনান আস্ সুগরা লিল বায়হাক্বী ৫৪৯, সহীহ আত তারগীব ৪১০। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৪৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন এক লোক মাসজিদে এমন সময় আসলেন, যখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সালাত আদায় করে ফেলেছেন। তিনি [তাকে দেখে] বললেন, এমন কোন মানুষ কি নেই যে তাকে সাদক্বাহ্ দিবে তাহাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করে। এ মুহূর্তে এক লোক দাঁড়ালেন এবং তার সঙ্গে সালাত আদায় করিলেন। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫৭৪, আহমাদ ১১৬১৩, দারিমী ১৪০৮, সহীহ আল জামি ২৬৫২, মুজাম আস্ সগীর লিত্ব ত্ববারানী ৬০৬, ৬৬৫, ইবনি হিব্বান ২৩৯৭, ২৩৯৮, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৫৮, সুনান আস্ সগীর লিল বায়হাক্বী ৫৫০, ইরওয়া ৫৩৫, আত তিরমিজি ২২০। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ২৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১১৪৭. উবায়দুল্লাহ [রাদি.] ইবনি আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমি আয়িশাহ [রাদি.]-এর দরবারে হাযির হয়ে বললাম। আপনি কি আমাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অসুস্থ অবস্থার [সলাত আদায় করার ব্যাপারে] কিছু বলবেন না? জবাবে তিনি বললেন, হ্যা! [বলব শুনো]। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লেন সলাতের সময়ের কথা জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি সলাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তারা আপনার অপেক্ষা করছে [এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] বললেন। আমার জন্যে পাত্র ভরে পানি আনো। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমরা তার জন্যে পাত্র ভরে পানি আনলাম। সে পানি দিয়ে গোসল করিলেন। চাইলেন দাঁড়াতে। [কিন্তু দুর্বলতার কারণে] তিনি বেহুশ হয়ে পড়লেন। হুশ ফিরে আসলে তিনি আবার জিজ্ঞেস করিলেন। লোকেরা কি সলাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম না। এখনো পড়েনি। লোকেরা আপনার অপেক্ষায় আছে হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, আমার জন্যে পাত্র ভরে পানি নিয়ে আসো। আয়িশাহ্ [রাদি.] বললেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উঠে বসলেন। আবার গোসল করিলেন। চেয়েছিলেন দাঁড়াতে। কিন্তু [এ সময়] বেহুশ হয়ে পড়লেন, যখন হুশ হয়েছে আবার জিজ্ঞেস করিয়াছেন, লোকেরা কি সলাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, এখনো পড়েনি। লোকেরা আপনার জন্যে অপেক্ষা করছে হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন পাত্র ভরে পানি নিয়ে আসো। আমরা পানি নিয়ে আসলাম। তিনি বসলেন, গোসল করিলেন। তারপর আবার যখন উঠতে চাইলেন বেহুশ হয়ে গেলেন। যখন হুশ ফিরে আসলো তখন বললেন, লোকেরা কি সলাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না; তারা আপনার অপেক্ষায় আছে, হে আল্লাহর রসূল। লোকেরা মসজিদে বসে বসে ঈশার সলাত পড়ার জন্য আপনার জন্যে অপেক্ষা করছে। এরপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাউকে দিয়ে [বিলাল] আবু বকরের নিকট খবর পাঠালেন লোকদের সলাত পড়িয়ে দেয়ার জন্যে। তাই দূত {বেলাল [রাদি.]] তাহাঁর এর নিকট এলেন। বললেন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপনাকে লোকদের সলাত আদায় করার জন্যে আদেশ করিয়াছেন। আবু বাকর ছিলেন কোমলমতি মানুষ। তিনি এ কথা শুনে উমারকে বললেন। উমার! তুমিই লোকদের সলাত পড়িয়ে দাও। কিন্তু উমার [রাদি.] বললেন। আপনিই সলাত আদায় করান এর জন্যে আপনিই সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত। এরপর আবু বকর রসূলের অসুখের এ সময়ে [সতের ওয়াক্ত] সলাত সহাবীদেরকে নিয়ে আদায় করালেন। একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটু সুস্থতাবোধ করলে দুলোকের ওপর ভর করে [এঁদের একজন ইবনি আব্বাস ছিলেন] যুহরের সলাতে [মাসজিদে গমন করিলেন। তখন আবু বাকর সলাত পড়াচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহর আগমন টের পেয়ে আবু বকর পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইশারা দিয়ে তাকে পেছনে সরে আসতে নিষেধ করিলেন। যাদের ওপরে ভর করে তিনি মসজিদে এসেছিলেন তাদের বললেন। আমাকে আবু বাকরের পাশে বসিয়ে দাও। ফলে তারা তাঁকে আবু বাকরের পাশে বসিয়ে দিলেন। তিনি বসে বসে সলাত পড়তে লাগলেন। উবায়দুল্লাহ [এ হাদিসের বর্ণনাকারী] বলেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] থেকে এ হাদিস শুনে আমি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট গেলাম। তাকে আমি বললাম, আমি রাসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] অসুখের সময়ের যে হাদিসটি আয়িশার [রাদি.] নিকট শুনলাম তা-কি আপনার নিকট বর্ণনা করব না? ইবনি আব্বাস [রাদি.] বললেন, হ্যা, শুনাও। তাই আমি তার সামনে আয়িশার নিকট শুনা হাদিসটি বর্ণনা করলাম। ইবনি আব্বাস [রাদি.] এ হাদিসের কোন কথা অস্বীকার করিলেন না। অবশ্য তিনি বললেন, আয়িশাহ্ [রাদি.] তোমাকে এ লোকের নাম বলেননি যিনি ইবনি আব্বাসের সঙ্গে ছিলেন। আমি বললাম, না, বলেননি। ইবনি আব্বাস বললেন। তিনি ছিলেন আলী [রাদি.]।{১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৮৭, মুসলিম ৪১৮। ইমামের অনুসরণ করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৪৮. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যে লোক [সলাতে] রুকু পেয়েছে সে গোটা রাকাআতই পেয়েছে। আর যে লোকের সূরায়ে আল ফাতিহাহ পড়া ছুটে গিয়েছে, অনেক সাওয়াব তার থেকে ছুটে গিয়েছে। {১}
{১} জইফ : মালিক ২৩; কারণ হাদিসটি মুযাল। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১১৪৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যে লোক [রুকু ও সাজদায়] ইমামের পূর্বে নিজের মাথা উঠিয়ে ফেলে অথবা ঝুঁকিয়ে ফেলে তবে মনে করিতে হবে তার কপাল শায়ত্বনের হাতে।{১}
{১} জইফ : মালিক ৩০৬; কারণ এর সানাদটি সমালোচিত।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply