ইহরামের প্রকারভেদ, ইফরাদ , ক্বিরান ও তামাত্তু হজ্জের
ইহরামের প্রকারভেদ, ইফরাদ , ক্বিরান ও তামাত্তু হজ্জের >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১৭. অধ্যায়ঃ ইহরামের প্রকারভেদ, ইফরাদ , ক্বিরান ও তামাত্তু হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা জায়িয, একত্রে উমরাহ ও হজ্জের ইহরাম বাঁধাও জায়িয এবং ক্বিরান হজ্জ পালনকারী কখন ইহরাম মুক্ত হইবে
২৮০০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জের বছর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা উমরার জন্য ইহরাম বাঁধলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, যার সাথে হাদী অর্থাৎ কুরবানীর পশু আছে সে যেন একত্রে উমরার সাথে হজ্জের ইহরাম বাঁধে, অতঃপর উমরাহ ও হজ্জের অনুষ্ঠান শেষ না করে যেন ইহরামমুক্ত না হয়। আয়েশাহ [রাদি.] বলিলেন, আমি হায়য অবস্থায় মাক্কায় পৌঁছলাম। তাই আমি বায়তুল্লাহ ত্বওয়াফ করিতে এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করিতে পারিনি। এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, তোমার চুলের বেণী খুলে ফেল এবং চিরুনী কর, হজ্জের ইহরাম বাঁধ এবং উমরাহ পরিত্যাগ কর। আয়েশাহ [রাদি.] বলেন, আমি তাই করলাম। আমাদের হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত হলে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে [আমার ভাই] আবদুর রহমানের সাথে তানঈম নামক স্থানে পাঠালেন। আমি সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ পালন করি। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, এটা তোমার [ইহরাম বাঁধার] স্থান। যে সব লোক শুধু উমরার ইহরাম বেঁধেছিল, তারা বায়তুল্লাহর ত্বওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া পাহারদ্বয়ের মাঝে সাঈ করার পর ইহরামমুক্ত হয়ে গেল। অতঃপর তারা মিনা থেকে ফিরে এসে পুনরায় তাদের হজ্জের ত্বওয়াফ করিল আর যারা উমরাহ ও হজ্জের জন্য একত্রে ইহরাম বেঁধেছিল, তারা একবার ত্বওয়াফ করিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৭৭, ইসলামিক সেন্টার-২৭৭৫]
২৮০১. নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর সহধর্মিণী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জের বছর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমাদের কেউ শুধু উমরার ইহরাম বাঁধল, আর কেউ শুধু হজ্জের ইহরাম বাঁধল। এভাবে আমরা মাক্কায় পৌঁছলে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, যারা উমরার জন্য ইহরাম বেঁধেছে কিন্তু কুরবানীর পশু আনেনি, তারা যেন ইহরাম খুলে ফেলে। আর যারা উমরার ইহরাম বেঁধেছে এবং সাথে কুরবানীর পশুও এনেছে, তারা কুরবানী করার পরই কেবল ইহরামমুক্ত হইবে। আর যারা হজ্জের ইহরাম বেঁধেছে তারা যেন হজ্জ পূর্ণ করে। আয়েশাহ [রাদি.] বলেন, আমার হায়য শুরু হয়ে গেল এবং আরাফাহ্ দিবস পর্যন্ত চলতে থাকল। আমি উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে মাথার চুল খুলে ফেলতে, তাতে চিরুণী করিতে, হজ্জের ইহরাম বাঁধতে এবং উমরাহ্ পরিত্যাগ করিতে নির্দেশ দিলেন। আমি তাই করলাম এবং হজ্জের অনুষ্ঠানাদি পূর্ণ করলাম। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমার সাথে [আমার ভাই] আবদুর রহমান ইবনি আবু বাকরকে পাঠালেন এবং তিনি আমাকে তানঈম থেকে ইহরাম বেধে উমারাহ করার নির্দেশ দিলেন- যেহেতু আমি উমরার ইহরাম পরিত্যাগ করে হজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলাম; অথচ আমি উক্ত উমরাহ্ সমাপ্ত করিতে পারিনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৭৬]
২৮০২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জের বছর নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমি উমরার ইহরাম বাঁধলাম এবং সাথে কুরবানির পশু নেইনি। নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, যার সাথে কুরবানির পশু আছে, সে যেন তার উমরার সাথে হজ্জের ইহরামও বাঁধে এবং উভয়ের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করার পূর্বে যেন ইহরাম না খুলে। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমার মাসিক ঋতু শুরু হয়ে গেল। আরাফার রাত শুরু হলে আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম, অতএব আমি কিভাবে হজ্জ করব? তিনি বলিলেন, তোমার চুল খুলে ফেল এবং চিরুণী কর, উমরাহ্ স্থগিত রাখ এবং হজ্জের ইহরাম বাঁধ। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি যখন হজ্জ সমাপ্ত করলাম, তখন তিনি [আমার ভাই] আবদূর রহমানকে নির্দেশ দিলেন এবং তিনি তদানুযায়ী আমাকে তার বাহনের পেছন দিকে বসিয়ে তানঈম থেকে উমরাহ্ করালেন- যেহেতু আমি উমরার অনুষ্ঠান পালন থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয়েছিলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৭৭]
২৮০৩. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর সঙ্গে রওনা হলাম। তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি একত্রে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাঁধতে চায়, সে যেন তাই করে। আর যে ব্যক্তি শুধু হজ্জের ইহরাম বাঁধতে চায়, সেও যেন তাই করে। আয়িশা [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শুধুমাত্র হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন এবং তাহাঁর সাথের লোকেরাও তাই করিল। কতিপয় লোক উমরাহ্ ও হজ্জের ইহরাম বাঁধল এবং কতিপয় লোক শুধু উমরার ইহরাম বাঁধল। আমি উমরার উদ্দেশে ইহরামকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮০, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৭৮]
২৮০৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বিদায় হজ্জের বছর যিলহজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উদয়ের কাছাকাছি সময়ে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে [মাক্কাহ্] রওনা হলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উমরার ইহরাম বাধঁতে চায়, সে তা করিতে পারে। আমার সঙ্গে হাদী বা কুরবানীর পশু না থাকলে আমি উমরার ইহরাম বাধঁতাম। আয়েশাহ [রাদি.] বলেন, লোকদের মধ্যে কতক উমরার ইহরাম বাঁধল এবং কতক হজ্জের ইহরাম বাঁধল। তিনি বলিলেন, আমি উমরার উদ্দেশে ইহরামকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমরা রওনা হলাম, অতঃপর মাক্কায় পৌঁছে গেলাম। আরাফাহ্ দিবস পর্যন্ত আমার মাসিক ঋতু অব্যাহত থাকল এবং উমরাহ্ করে ইহরাম খোলার সুযোগ পেলাম না। এ সংকটের বিষয়ে আমি নবী [সাঃআঃ]-কে অবহিত করলে তিনি বলিলেন, তুমি তোমার উমরাহ্ পরিত্যাগ কর, চুলের বাঁধন খুলে ফেল এবং তাতে চিরুণী কর আর হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধ। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি তাই করলাম। অতঃপর যখন মুহাস্সাব-এর রাত হলো এবং আল্লাহ তাআলা আমাদের হজ্জ সমাপন করার তাওফীক্ব দিলেন, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার সাথে আবদুর রহমান ইবনি আবু বকর [রাদি.]-কে পাঠালেন এবং তিনি আমাকে তাহাঁর বাহনের পেছনে বসিয়ে তানঈম নামক স্থানে রওনা হলেন। অতঃপর আমি উমরার ইহরাম বাঁধলাম। এভাবে আল্লাহ তাআলা আমাদের হজ্জ ও উমরাহ্ সমাপনের তাওফীক্ব দান করিলেন।
এজন্য হাদী বা কুরবানী, সদাক্বাহ্ বা সওম কোনটিই পালন করিতে হয়নি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮১, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৭৯]
২৮০৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যিলহজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উদয়ের কাছাকাছি সময়ে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে রওনা হলাম। হজ্জ করা ছাড়া আমাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উমরার ইহরাম বাধঁতে চায়, সে তাই করুক………… হাদীসের অবশিষ্ট অংশ আব্দাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮২, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮০]
২৮০৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যিলহজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উদয়ের কাছাকাছি সময়ে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমাদের মধ্যে কতক উমরার, কতক হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের এবং কতক শুধু হজ্জের ইহরাম বাঁধল। আমি উমরার উদ্দেশে ইহ্রামকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ……অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত [উভয়ের] হাদীসের অনুরূপ। তবে উরওয়াহ্র বর্ণনায় আছে, “আল্লাহ্ তাআলা আয়িশা [রাদি.]-কে তার হজ্জ ও উমরাহ্ সমাপনের তাওফীক্ব দিলেন।” আর হিশামের বর্ণনায় আছে, “এজন্য [উমরার ইহরাম পরিত্যাগ করে হজ্জের ইহরাম বাঁধার কারণে তাকে] হাদী বা কুরবানীও করিতে হয়নি, সওমও পালন করিতে হয়নি, সদাক্বাহ্ও দিতে হয়নি।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮১]
২৮০৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জের বছর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমাদের মধ্যে কতক উমরার উদ্দেশে, কতক হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের উদ্দেশে এবং কতক শুধু হজ্জের উদ্দেশে ইহরাম বাঁধল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কেবল হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন। যারা উমরার জন্য ইহরাম বেঁধেছিল, তারা [উমরাহ্ সমাপনান্তে] ইহরাম খুলে ফেলল। আর যারা শুধু হজ্জের, আর যারা হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের ইহরাম বেঁধেছিল, তারা কুরবানী দিবসের পূর্ব পর্যন্ত ইহরামমুক্ত হইতে পারেনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮২]
২৮০৮. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা একমাত্র হজ্জের উদ্দেশে নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা সারিফ নামক স্থানে বা এর কাছাকাছি পৌঁছলে আমার মাসিক ঋতু শুরু হয়ে যায়। নবী [সাঃআঃ] আমার নিকট এলেন এবং আমি তখন কাঁদছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কি হায়য হয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্ তাআলা এটা আদাম [আঃ]-এর কন্যাদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন। অতএব তুমি হজ্জের যাবতীয় অনুষ্ঠান পূর্ণ কর, শুধু [হায়যকাল শেষ হবার পর] গোসল না করা পর্যন্ত বায়তুল্লাহ ত্বওয়াফ করিবে না। আয়িশা [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সহধর্মিণীগণের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৩]
২৮০৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা কেবল হজ্জের উদ্দেশে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা যখন সারিফ নামক স্থানে পৌঁছলাম, আমার মাসিক ঋতু শুরু হয়ে গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট এলেন এবং আমি তখন কাঁদছিলাম। তিনি বলিলেন, তুমি কাঁদছ কেন? আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি যদি এ বছর হজ্জ করিতে না আসতাম! তিনি বলিলেন, কী হয়েছে তোমার? সম্ভবতঃ তুমি ঋতুবতী হয়েছো? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আল্লাহ তাআলা এটি আদাম [আঃ]-এর কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তুমি হজ্জ পালনকারীগণ যা করে, তাই কর কিন্তু পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত বায়তুল্লাহ ত্বওয়াফ করো না। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি যখন মাক্কায় পৌঁছলাম রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-তাহাঁর সাহাবীগণদের বলিলেন, তোমরা উমরার জন্য ইহরাম বাঁধ। যাদের সাথে হাদী বা কুরবানীর পশু ছিল, তারা ব্যতীত সকলে উমরার ইহরাম বাঁধল। আয়িশা [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বকর [রাদি.], উমর [রাদি.] ও অন্যান্য স্বচ্ছল লোকদের সাথে কুরবানীর পশু [হাদী] ছিল, তারা [ইতোপূর্বে যারা ইহরাম খুলে ফেলেছিল, মিনার দিকে] অগ্রসর হবার প্রাক্কালে পুনরায় [হজ্জের] ইহরাম বাঁধল। তিনি বলেন, আমি কুরবানীর দিন পবিত্র হলাম এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নির্দেশে ত্বওয়াফে ইফাযাহ্ {১৮} করলাম। আমাদের জন্য গরুর গোশ্ত পাঠানো হল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এগুলো কী? তারা বলিল, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সহধর্মিণীদের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করিয়াছেন। যখন হাসবার রাত এলো, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! লোকেরা হজ্জ ও উমরাহ্ পালন করে প্রত্যাবর্তন করছে, আর আমি শুধু হজ্জ করে প্রত্যাবর্তন করছি। রাবী বলেন, তিনি বলেন, তিনি আবদুর রহমান ইবনি আবু বকর [রাদি.]-কে নির্দেশ দিলেন এবং তদনুযায়ী তিনি আমাকে তার উটের পেছন দিকে বসিয়ে রওনা হলেন। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি ছিলাম অল্প বয়স্কা এবং আমার মনে আছে যে, তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে আমার মাথা বারবার পালানের খুঁটির সাথে আঘাত খাচ্ছিল। এভাবে আমরা তানঈম পৌঁছলাম। সেখান থেকে আমি আবার উমরার ইহরাম বাঁধলাম- যা লোকেরা ইতোপূর্বে আদায় করেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৪]
{১৮} ত্বওয়াফে যিয়ারাত, যা ১০ই অন্যথায় ১১ ও ১২ তারিখে আদায় করিতে হয়। এটি ফার্য ও হজ্জের একটি রুকন।
২৮১০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধলাম। আমরা যখন সারিফ নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন আমি ঋতুবতী হলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট এলেন- আমি তখন কাঁদছিলাম…… অবশিষ্ট বর্ণনা [পূর্ববর্তী] মাজিশূনের হাদীসের অনুরূপ। তবে হাম্মাদের বর্ণনায় নিম্নোক্ত কথার উল্লেখ নেই : “নবী [সাঃআঃ], আবু বকর [রাদি.], উমর [রাদি.] ও অন্যান্য স্বচ্ছল লোকদের সাথে [হাদী] কুরবানীর পশু ছিল, তাঁরা অগ্রসর হওয়ার প্রাক্কালে পুনরায় [হজ্জের] ইহরাম বাঁধলেন।” তার বর্ণনায় আয়িশা [রাদি.]-এর নিম্নোক্ত কথার উল্লেখ নেই “আমি ছিলাম অল্প বয়স্কা এবং আমার উত্তমরূপে মনে আছে যে, তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় আমার মাথা বারংবার পালানের খুঁটির সাথে টক্কর খাচ্ছিল।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৫]
২৮১১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- ইফরাদ হজ্জ করেছিলেন। {১৯}
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৬]
{১৯} আয়িশাহ্ এবং ইবনি উমর-এর বর্ণনায় রসূল [সাঃআঃ] হাজ্জে ইফরাদ করিয়াছেন, এর তিনটি অর্থ হইতে পারে- [ক] রসূল [সাঃআঃ] কেবল হজ্জের তালবিয়াহ পাঠ করেছিলেন, [খ] দ্বিতীয় অর্থ এই যে, হজ্জের কার্যে ইফরাদ করিয়াছেন অর্থাৎ হজ্জ ও উমরার জন্য ত্বওয়াফ ও সাঈ একটি করেই করিয়াছেন, [গ] হিজরতের পর একবারই হজ্জ করিয়াছেন, কিন্তু উমরার বিপরীত, কেননা তিনি [সাঃআঃ] জীবনে চারবার উমরাহ্ করিয়াছেন, তিনটির মধ্যে ইফরাদের দ্বিতীয় অর্থই সঠিক এবং ইবনি উমর [রাদি.] এ অর্থই উদ্দেশ্য যে, দুটি কাজ একবার করেই আদায় করিয়াছেন। আর এ অর্থ গ্রহণের মাধ্যমে সব বর্ণনার মধ্যে সামঞ্জস্যও হয়ে যায় এবং রসূল [সাঃআঃ]-এর জন্যও এটা উপযুক্ত যে, তিনি উম্মাতের জন্য সহজ বিধান চান। এজন্যই রসূল [সাঃআঃ] আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে ইরশাদ করেন, তোমাদের এ ত্বওয়াফ [অর্থাৎ ত্বওয়াফে ইফাযাহ্] হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের জন্য যথেষ্ট। [যাদুল মাআদ]
২৮১২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা হজ্জের মাসসমূহে, হজ্জের সময় ও স্থানসমূহে [অথবা হজ্জের সময়কার বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে] এবং হজ্জের রাতসমূহে ইহরাম বেঁধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা যখন সারিফ নামক স্থানে যাত্রা বিরতি করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীগণের নিকট উপস্থিত হয়ে বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যার সাথে কুরবানীর পশু নেই, সে যদি চায় তবে সে এই হজ্জকে উমরায় পরিবর্তিত করে নিক। আর যার সাথে কুরবানীর পশু [হাদী] আছে, সে যেন এরূপ না করে। তাদের মাঝে কিছু সংখ্যক এটা গ্রহণ করিল এবং কিছু সংখ্যক- যাদের সাথে কুরবানীর পশু ছিল না, তারা উমরাহ্ করিল না। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর স্বচ্ছল সাহাবীগণের সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট প্রবেশ করিলেন এবং আমি তখন কাঁদছিলাম। তিনি বলিলেন, তুমি কাঁদছ কেন? আমি বললাম, আমি আপনার সাহাবীগণের উদ্দেশে আপনার কথাবার্তা শুনেছি যে, আপনি উমরাহ্ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আমি তা করিতে পারছি না। তিনি বলিলেন, কেন, তোমার কী হয়েছে? আমি বললাম, আমি নামাজ আদায় করিতে পারছি না। আমার ঋতু দেখা দিয়েছে। তিনি বলিলেন, এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই, তুমি হজ্জের অনুষ্ঠানাদি পালন কর। আশা করি আল্লাহ তাআলা তোমাকে উমরাহ্ পালনের সুযোগ দেবেন। তুমি আদাম [আঃ]-এর কন্যাদের অন্তর্ভুক্ত। তিনি তাদের জন্য যা নির্ধারণ করিয়াছেন, তোমার জন্যও তা নির্ধারণ করিয়াছেন। আয়িশা [রাদি.] বলেন, অতএব আমি হজ্জের জন্য বের হলাম। অবশেষে মিনায় অবতরণ করলাম এবং পাক হয়ে গেলাম। এরপর আমি বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাস্সাবে অবতরণ করিলেন এবং আবদুর রহমান ইবনি আবু বকর [রাদি.]-কে ডেকে বলিলেন, তোমার বোনকে হারাম সীমার বাইরে নিয়ে যাও, সে [সেখানে গিয়ে ] উমরার জন্য ইহরাম বাঁধবে এবং বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করিবে। আমি তোমাদের জন্য এখানে অপেক্ষা করব। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, আমরা রওনা হয়ে [তানঈম] গেলাম এবং [সেখানে] ইহরাম বাঁধলাম, অতঃপর বায়তুল্লাহ ত্বওয়াফ করলাম এবং সাফা-মারওয়াহ্ সাঈ করলাম। অতঃপর আমরা মধ্যরাতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি স্বস্থানেই ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি উমরাহ্ সম্পাদন করে নিয়েছো? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তাহাঁর সাহাবীগণের রওনা হওয়ার জন্য ঘোষণা দিলেন। তিনি রওনা হয়ে বায়তুল্লাহ পৌঁছলেন এবং ফজরের নামাজের পূর্বে তাহাঁর ত্বওয়াফ করিলেন, অতঃপর মাদীনার উদ্দেশে রওনা হলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৭]
২৮১৩. উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কেউ ইফরাদ হজ্জের, কেউ ক্বিরান হজ্জের এবং তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বাঁধল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯০, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৮]
২৮১৪. ক্বাসিম ইবনি মুহামাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আয়িশা [রাদি.] হজ্জ করার জন্য এসেছিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯১, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৮৯]
২৮১৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যিল ক্বদাহ্ মাসের পাঁচদিন অবশিষ্ট থাকতে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। হজ্জ পালন ছাড়া আমাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা মাক্কার নিকটবর্তী হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নির্দেশ দিলেন, যার সাথে কুরবানীর পশু নেই, সে বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করার পর ইহরাম ভঙ্গ করিবে। আয়িশা [রাদি.] বলেন, কুরবানীর দিন কেউ আমদের জন্য গরুর গোশ্ত নিয়ে এলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কী? বলা হল, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সহধর্মিণীদের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করিয়াছেন।
ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি এ হাদীস ক্বাসিম ইবনি মুহাম্মাদের নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ! তিনি [আম্রাহ্] তোমার নিকট হাদীসটি সঠিকভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯২, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯০]
২৮১৬. মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না ও ইবনি আবু উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদেও পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯১]
২৮১৭. উম্মুল মুমিনীন {আয়িশাহ্ [রাদি.]} হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! লোকেরা দুটি ইবাদাতসহ [হজ্জ ও উমরাহ্] প্রত্যাবর্তন করছে, আর আমি একটি মাত্র ইবাদাতসহ [হজ্জ] ফিরে যাচ্ছি। তিনি বলেন, অপেক্ষা কর। তুমি পবিত্র হয়ে যাবার পর তানঈম চলে যাও এবং সেখানে ইহরাম বাঁধ, অতঃপর অমুক অমুক সময় আমাদের সঙ্গে মিলিত হও। রাবী বলেন, আমার মনে হয় তিনি ভোরবেলার কথা বলেছেন এবং তুমি তোমার পরিশ্রম অথবা খরচ অনুযায়ী [এ উমরার সওয়াব পাবে]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯২]
২৮১৮. উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হে আল্লাহর রসূল! লোকেরা দুটি ইবাদাতের সাওয়াব নিয়ে ফিরে যাচ্ছে… অতঃপর অবশিষ্ট হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৩]
২৮১৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, শুধুমাত্র হজ্জের উদ্দেশেই আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা [মাক্কায়] পৌছে বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করলাম। যারা কুরবানীর পশু [হাদী] সাথে আনেনি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদেরকে ইহরাম খোলার নির্দেশ দিলেন। আয়িশা [রাদি.] বলেন, অতএব যারা কুরবানীর পশু সঙ্গে আনেনি, তারা ইহরাম ছেড়ে দিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণীগণ সাথে কুরবানীর পশু আনেননি। তাই তারাও ইহরাম খুলে ফেললেন। আয়িশা [রাদি.] আরও বলিলেন, আমার মাসিক দেখা দিল এবং বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করিতে পারলাম না। হাসবায় অবস্থানের রাতে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! লোকেরা হজ্জ ও উমরাহ্ করে ফিরে যাচ্ছে, আর আমি শুধু হজ্জ করে ফিরছি। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, আমরা যে রাতে মাক্কায় পৌছেছি, তখন তুমি কি বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করনি? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি তোমার ভাইয়ের সাথে তানঈম যাও এবং [সেখানে] উমরার ইহরাম বাঁধ। অতঃপর তুমি অমুক অমুক জায়গায় [আমাদের সাথে] মিলিত হইতে পারবে।
উম্মুল মুমিনীন সফিয়্যাহ্ [রাদি.] বলিলেন, মনে হয় আমি আপনাদের আটকিয়ে রাখব। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, দূর হতভাগী, তোমার সর্বনাশ হোক! তুমি কুরবানীর দিন বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করেছো? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, করেছি। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে কোন অসুবিধা নেই, তুমি অগ্রসর হও।
আয়িশা [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার সাথে সাক্ষাৎ করিলেন, তিনি মাক্কার উচ্চভূমি দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন। আর আমি তা অতিক্রম করে নিম্নভূমিতে নামছিলাম। অথবা তিনি উচ্চভূমি অতিক্রম করে নিম্নভূমির দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন, আর আমি নিম্নভূমি থেকে উচ্চভূমির দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম।
ইসহাক্বের বর্ণনায় আছে, আয়িশা [রাদি.] এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উভয়ে নিম্নভূমি অতিক্রম করছিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৪]
২৮২০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তালবিয়াহ পাঠ করিতে করিতে রওনা হলাম। আমরা সুস্পষ্টভাবে হজ্জ বা উমরাহ্ কোনটিরই উল্লেখ করিনি।……অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৫]
২৮২১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যিলহজ্জ মাসের ৪র্থ অথবা ৫ম দিনে [মাক্কায়] এলেন। এরপর রাগান্বিত অবস্থায় আমার কাছে প্রবেশ করিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! কে আপনাকে রাগান্বিত করিল, আল্লাহ তাকে আগুনে নিক্ষেপ করুন? তিনি বলিলেন, তুমি কি জান না- আমি লোকদের একটি কাজের নির্দেশ দিয়েছিলাম অথচ তারা ইতস্ততঃ করছে? রাবী হাকাম বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন, যেন তারা ইতস্ততঃ করছে। আমি যদি পূর্বেই জানতাম, যে বিষয়ে আমি পরে সম্মুখীন হয়েছি, তবে আমি সাথে করে কুরবানীর পশু আনতাম না; বরং পরে তা কিনে নিতাম এবং আমিও ইহরাম খুলে ফেলতাম যেমন অন্যরা ইহরাম খুলেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৬]
২৮২২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যিলহজ্জ মাসের চার অথবা পাঁচ তারিখে [মাক্কায়] পৌঁছলেন……পূর্বোক্ত গুন্দার-এর হাদীসের অনুরূপ। কিন্তু এ সানাদে তিনি [রাবী] হাকামের উক্তিতে এ সন্দেহ, “তারা ইতস্ততঃ করেছে” উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৭৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৭]
২৮২৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি উমরার ইহরাম বাঁধলেন, এরপর [মাক্কায়] পৌঁছলেন এবং বায়তুল্লাহ ত্বওয়াফ না করিতেই ঋতুবতী হলেন। এরপর তিনি হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন এবং এর যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করিলেন [ত্বওয়াফ ব্যতীত]। নবী [সাঃআঃ] মিনায় অগ্রসর হবার দিন তাকে বলিলেন, তোমার [একবারের] ত্বওয়াফই তোমার হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু তিনি তাতে তৃপ্ত হলেন না। তাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে আবদুর রহমানের সাথে তানঈম পাঠালেন। অতএব তিনি হজ্জের পর [এখান থেকে] ইহরাম বেঁধে উমরাহ্ করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০০, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৮]
২৮২৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি সারিফ নামক স্থানে ঋতুবতী হলেন এবং আরাফাহ্ দিবসে পবিত্র হলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তোমার সাফা-মারওয়াহ্ পাহাড়দ্বয়ের মধ্যকার সাঈ তোমার হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়টির জন্য যথেষ্ট।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০১, ইসলামিক সেন্টার- ২৭৯৯]
২৮২৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! লোকেরা দুটি সাওয়াবসহ প্রত্যাবর্তন করিবে আর আমি কি মাত্র একটি সাওয়াব নিয়ে ফিরে যাব? তখন তিনি [সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আবু বকর [রাদি.]-কে নির্দেশ দিলেন- তাকে নিয়ে তানঈম যাওয়ার জন্য। আয়িশা [রাদি.] বলেন, তিনি তার উটের পিঠে আমাকে তার পিছনে বসিয়ে রওনা হলেন। আমি আমার ওড়না উঠাচ্ছিলাম এবং তা ঘাড় থেকে সরিয়ে রাখছিলাম। তিনি আমার পায়ে আঘাত করছিলেন- যেমন উটকে আঘাত করেন। আমি তাকে বললাম, আপনি এখানে কাউকে দেখিতে পাচ্ছেন কি? তিনি বলেন, আমি [তানঈম পৌঁছে] উমরার ইহরাম বাঁধলাম, অতঃপর [মাক্কায়] ফিরে এসে [ত্বওয়াফ শেষে] হাস্বাহ্ নামক স্থানে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে মিলিত হলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০২, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০০]
২৮২৬. আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে নির্দেশ দিলেন আয়িশা [রাদি.]-কে [বাহনে] তার পিছনে বসিয়ে তানঈম নিয়ে যাবার জন্য- যাতে তিনি তাঁকে [তানঈম থেকে] উমরাহ্ করান।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০১]
২৮২৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা ইফরাদ হজ্জের ইহরাম বেঁধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে [মাক্কার দিকে] অগ্রসর হলাম আর আয়িশা [রাদি.] উমরার ইহরাম বেঁধে আসলেন। আমরা যখন সারিফ নামক স্থানে পৌঁছলাম, আয়িশা [রাদি.]-এর মাসিক ঋতু শুরু হল। অবশেষে আমরা মাক্কায় পৌঁছে কাবাহ্ ঘর ত্বওয়াফ করলাম এবং সাফা-মারওয়াহ্ পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করলাম। আমাদের মধ্যে যাদের সাথে কুরবানীর পশু ছিল না- রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের ইহরাম খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। আমরা বললাম, কী প্রকারে ইহরাম খোলা হইবে? তিনি বলিলেন, “সম্পূর্ণরূপে ইহরামমুক্ত হওয়া।” অতএব আমরা স্ত্রী যৌন সঙ্গম করলাম, সুগন্ধি ব্যবহার করলাম এবং সাধারণ পোশাক পরিধান করলাম। তখন আরাফাহ্ দিবস ও আমাদের মাঝে আর মাত্র চার দিনের ব্যবধান ছিল। অতঃপর তালবিয়াহ দিবসে [৮ই যিলহজ্জ] আমরা পুনরায় ইহরাম বাঁধলাম। এদিকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কী হয়েছে? আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, ব্যাপার এই যে, আমার হায়য দেখা দিয়েছে। লোকেরা ইহরাম খুলেছে কিন্তু আমি ইহরামমুক্ত হইতে পারিনি এবং বায়তুল্লাহ্রও ত্বওয়াফ করিতে পারিনি, আর এখন লোকেরা হজ্জের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এটা এমন একটি ব্যাপার যা আল্লাহ তাআলা আদাম [আঃ]-এর কন্যা সন্তানদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন। অতএব তুমি গোসল কর এবং হজ্জের ইহরাম বাঁধ। তিনি তাই করিলেন এবং হজ্জের স্থানসমূহে অবস্থান করিলেন। অতঃপর তিনি পবিত্র হলেন, কাবাহ্ ঘর ত্বওয়াফ করিলেন এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করিলেন। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এখন তোমার হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়টিই পূর্ণ হল। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার অবস্থা এই যে, হজ্জ না করা পর্যন্ত আমি [উমরার জন্য] বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করিতে পারিনি, কিন্তু হজ্জ আদায় করে নিয়েছি। তিনি বলিলেন, হে আবদুর রহমান! তাকে নিয়ে চলে যাও এবং তানঈম থেকে তাকে উমরাহ্ করাও। এটা ছিল হাসবার রাতের ঘটনা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০২]
২৮২৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আয়িশা [রাদি.]-এর কাছে উপস্থিত হলেন, তখন তিনি কাঁদছিলেন। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ পূর্বোক্ত লায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ। অবশ্য উক্ত হাদীসের প্রথমাংশ এ হাদীসে বর্ণনা করা হয়নি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৩]
২৮২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে হজ্জ উপলক্ষে আয়িশা [রাদি.] উমরার ইহরাম বাঁধলেন… অবশিষ্ট অংশ পূর্বোক্ত লায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ। তবে এ বর্ণনায় আরও আছে- জাবির [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছিলেন নমনীয় স্বভাবের। অতএব আয়িশা [রাদি.] যখনই কোন কিছুর আবদার ধরতেন, তিনি সে আবদার রক্ষা করিতেন। তিনি আয়িশা [রাদি.]-কে আবদুর রহমানের সাথে পাঠালেন এবং তিনি তানঈম থেকে উমরার ইহরাম বাঁধলেন। [অধঃস্তন রাবী] মাত্বার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেনঃ আয়িশা [রাদি.] যখনই হজ্জ করিতেন তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে যেভাবে হজ্জ করিয়াছেন তদানুরূপ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৪]
২৮৩০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হজ্জের ইহরাম বেঁধে রওনা হলাম। আমাদের সাথে মহিলাগণ এবং শিশুরাও ছিল। আমরা মাক্কায় পৌঁছে বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করলাম এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের বলিলেন, যার সাথে কুরবানীর পশু নেই, সে যেন ইহরাম খুলে ফেলে। আমরা বললাম, কী ধরনের ইহরাম ভঙ্গ করব? তিনি বলিলেন, সম্পূর্ণরূপে ইহরাম ভঙ্গ কর। রাবী বলেন, অতএব আমরা আমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন করলাম, [সাধারণ] পোশাক পরলাম এবং সুগন্ধি মাখলাম। তালবিয়ার দিন আমরা হজ্জের ইহরাম বাঁধলাম এবং পূর্বেকার ত্বওয়াফ ও সাঈ আমাদের জন্য যথেষ্ট ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রতিটি কুরবানীর গরু এবং উটে সাতজন করে শারীক হবার জন্য আমাদের নির্দেশ দিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৫]
২৮৩১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা ইহরামমুক্ত হবার পর নবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে [পুনরায়] ইহরাম বাঁধার নির্দেশ দিলেন- যখন আমরা মিনার উদ্দেশে রওনা হলাম। অতএব আমরা আল আব্ত্বাহ নামক স্থান থেকে ইহরাম বাঁধলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৬]
২৮৩২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সাহাবীগণ একবার মাত্র সাফা-মারওয়াহ্ পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করিয়াছেন। মুহাম্মাদ ইবনি আবু বাক্র-এর বর্ণনায় আছে, “তাহাঁর প্রথমবারের ত্বওয়াফ।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮০৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৭]
২৮৩৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণ কেবল হজ্জের ইহরামই বাঁধলাম। রাবী আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, জাবির [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চার যিলহজ্জের ভোরে [মাক্কায়] পৌঁছে আমাদেরকে ইহরাম খোলার নির্দেশ দিলেন। অধঃস্তন রাবী মাত্বারের বর্ণনায় আছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা ইহরামমুক্ত হও এবং স্ত্রীদের কাছে যাও। কিন্তু তাহাঁর এ নির্দেশ বাধ্যতামূলক ছিল না, বরং তাদেরকে স্ত্রী সহবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছিল মাত্র। জাবির [রাদি.] বলেন, আরাফাহ্ দিবসের আর পাঁচদিন মাত্র বাকী। অতএব আমরা এমন অবস্থায় আরাফায় পৌঁছলাম যে, আমরা যেন এইমাত্র স্ত্রী সঙ্গম করেছি। আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, জাবির [রাদি.] তার হাত নেড়ে কথাগুলো বলছিলেন এবং আমি যেন তার হাতের নড়াচড়া দেখিতে পাচ্ছি। জাবির [রাদি.] বলেন, ইত্যবসরে নবী [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন এবং বলিলেন, তোমরা নিশ্চিত জান- আমি তোমাদের তুলনায় আল্লাহকে অধিক ভয় করি, তোমাদের চেয়ে অধিক সত্যবাদী এবং পুণ্যবান। আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে আমি অবশ্যই ইহরাম ভঙ্গ করতাম যেমন তোমরা ভঙ্গ করেছো। আমাকে কী করিতে হইবে তা পূর্বেই জানতে পারলে আমি সাথে করে কুরবানীর পশু আনতাম না, অতএব তোমরা হালাল হও [ইহরাম ভঙ্গ কর]। আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, জাবির [রাদি.] বলেনঃ অতএব আমরা হালাল হলাম, তাহাঁর কথা শুনলাম এবং তাহাঁর আনুগত্য করলাম। জাবির [রাদি.] আরও বলেন, আলী [রাদি.] [ইয়ামানবাসীদের থেকে আদায়কৃত] খারাজ নিয়ে উপস্থিত হলেন। নবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি কোন্ ধরনের ইহরাম বেঁধেছো? তিনি বলিলেন, নবী [সাঃআঃ] যে ধরনের ইহরাম বেঁধেছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি কুরবানী কর এবং ইহরাম অবস্থায় থাক। জাবির [রাদি.] বলেন, আলী [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জন্য কুরবানীর পশু এনেছিলেন। সুরাক্বাহ্ ইবনি মালিক জুশুম [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! এটা কি শুধু এ বছরের জন্য, না সব সমযের জন্য? তিনি বলিলেন, সর্বকালের জন্য।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮১০, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৮]
২৮৩৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হজ্জের ইহরাম বাঁধলাম। আমরা মাক্কায় পৌঁছলে তিনি আমাদেরকে হালাল হওয়ার এবং এ ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিবর্তন করার নির্দেশ দিলেন। আমাদের জন্য তাহাঁর এ নির্দেশ কঠোর মনে হল এবং আমাদের মনোকষ্ট হল। এ খবর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছল। আমাদের জানা নেই তিনি কি ওয়াহীর মাধ্যমে এ খবর পেয়েছেন, না কেউ তাহাঁর কাছে এ কথা পৌঁছিয়েছে? তিনি বলিলেন, হে জনগণ! তোমরা হালাল [ইহরামমুক্ত] হও। আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে আমিও তোমাদের অনুরূপ করতাম। জাবির [রাদি.] বলেন, অতএব আমরা ইহরামমুক্ত হলাম, এমনকি স্ত্রী সঙ্গম এবং স্বাভাবিক অবস্থায় সাধারণত যা করা হয়, তাই করলাম। অতঃপর তালবিয়ার দিন [৮ যিলহজ্জ] আমরা মক্কা ত্যাগ করলাম [মিনা ও আরাফার উদ্দেশে] এবং হজ্জের ইহরাম বাঁধলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮১১, ইসলামিক সেন্টার- ২৮০৯]
২৮৩৫. মূসা ইবনি নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি উমরাসহ তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বেঁধে তালবিয়াহ দিবসের চারদিন পূর্বে [৪ যিলহজ্জ] মাক্কায় পৌঁছলাম। লোকেরা বলিল, এখন তো আপনার হজ্জ মাক্কাবাসীদের অনুরূপ হজ্জ হয়ে যাবে। অতএব আমি আত্বা ইবনি আবু রাবাহ-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তার কাছে মাসাআলাহ্ জিজ্ঞেস করলাম। আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ আল আনসারী [রাদি.] আমাকে বলেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হজ্জ করিয়াছেন- যে বছর তিনি সঙ্গে করে কুরবানীর পশু নিয়েছিলেন এবং তারা কেবল হজ্জের [ইফরাদ হজ্জের] ইহরাম বেঁধেছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা ইহরাম খুলে ফেল, বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ কর, সাফা-মারওয়াহ্ পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ কর, মাথার চুল ছাঁট এবং ইহরামমুক্ত অবস্থায় থাক। যখন তালবিয়ার দিন আসবে- তখন পুনরায় হজ্জের ইহরাম বাঁধ এবং এটা তামাত্তু হজ্জের ইহরামে পরিণত কর। তারা বলিলেন, কিভাবে আমরা তা তামাত্তুতে পরিণত করব, অথচ ইতোপূর্বে আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধেছি? তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের যে নির্দেশ দিচ্ছি, তাই কর। কারণ আমি যদি সাথে করে কুরবানীর পশু না আনতাম তবে তোমাদের যে নির্দেশ দিচ্ছি, আমিও তদ্রূপ করতাম। কিন্তু হাদী যথাস্থানে কুরবানী না করা পর্যন্ত আমার জন্য ইহরাম খোলার সুযোগ নেই। অতএব তারা তাহাঁর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮১২, ইসলামিক সেন্টার- ২৮১০]
২৮৩৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে [মাক্কায়] পৌঁছলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে তা উমরার ইহরামে পরিবর্তন করার এবং [উমরাহ্ পালনের পর] ইহরামমুক্ত হবার নির্দেশ দিলেন। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কুরবানীর পশু থাকায় তিনি নিজের হজ্জের ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিবর্তন করিতে পারেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮১৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৮১১]
Leave a Reply