ইদ্দত পালন শোক প্রকাশ, জরায়ু শুদ্ধিকরণ ইত্যাদির বর্ণনা

ইদ্দত পালন শোক প্রকাশ, জরায়ু শুদ্ধিকরণ ইত্যাদির বর্ণনা

 ইদ্দত পালন শোক প্রকাশ, জরায়ু শুদ্ধিকরণ ইত্যাদির বর্ণনা >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ১১ঃ ইদ্দত পালন শোক প্রকাশ, জরায়ু শুদ্ধিকরণ ইত্যাদির বর্ণনা

পরিচ্ছেদ ০১. গর্ভধারিণীর স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দাত পালন করা
পরিচ্ছেদ ০২. আযাদকৃ্ত দাসীর ইদ্দাত পালন করা
পরিচ্ছেদ ০৩. তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীর ভরণপোষণের ব্যয় এবং বাসস্থানের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৪. স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী শোক প্রকাশের সময় যা করা থেকে বিরত থাকব
পরিচ্ছেদ ০৫. তিন তালাকপ্রাপ্তা নারী ইদ্দাত পালনের সময় নিজ প্রয়োজনে বাহিরে হওয়া জায়েয
পরিচ্ছেদ ০৬. – স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীর ইদ্দাত শেষ হওয়া পর্যন্ত স্বামীগৃহে অবস্থান করা
পরিচ্ছেদ ০৭. তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীর প্রয়োজনে জায়গা স্থানান্তর করা জায়েজ
পরিচ্ছেদ ০৮. উম্মুল ওয়ালাদের [এমন দাসী যার গর্ভে মনিবের সন্তান হয়েছে] ইদ্দাত পালন করা
পরিচ্ছেদ ০৯. “আকরা” শব্দের ব্যাখ্যা
পরিচ্ছেদ ১০. দাসীর ইদ্দাত পালন করা।
পরিচ্ছেদ ১১. অন্যের দ্বারা সঞ্চারিত ভ্রূণ গর্ভে থাকাবস্থায় গর্ভবতীর সঙ্গে সঙ্গম করা হারাম
পরিচ্ছেদ ১২. স্বামী নিরুদ্দেশ হলে স্ত্রীর বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩. গায়রে মাহরাম নারীর সাথে একাকী থাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
পরিচ্ছেদ ১৪. যুদ্ধ বন্দীনীর জরায়ু মুক্ত করা আবশ্যক
পরিচ্ছেদ ১৫. স্ত্রী যার বিছানায় শয়ন করে ঐ স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান তারই হইবে, ব্যভিচারীর নয়

পরিচ্ছেদ ০১. গর্ভধারিণীর স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দাত পালন করা

১১০৩ – মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

সুবায়`আ আসলামীয়া তার স্বামীর মৃত্যুর কয়েকদিন পর সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বিয়ে করার অনুমতি প্রার্থনা করে, তিনি তাকে অনুমতি দেন। তখন সে বিয়ে করে। {১২০৫}

এর মূল হাদিস বুখারি ও মুসলিম –এ রয়েছে ।{১২০৬} তাতে আছে- তিনি তার স্বামীর মৃত্যুর ৪০ রাত পর সন্তান প্রসব করেছিলেন। আর মুসলিমের শব্দে এসেছে- যুহরী [তাবি`ঈ] বলেছেন, রক্তস্রাব হওয়া অবস্থায় বিবাহ হওয়াতে আমি ত্রুটি মনে করিনা, কিন্তু না হওয়া পর্যন্ত স্বামী যেন তার নিকটবর্তী না হয়। {১২০৭}, {১২০৫} বুখারি ৫৩২০, নাসায়ী ৩৫০৬, ইবনু মাযাহ ২০২৯, আহমাদ ১৮৪৩৮, মালেক ১২৫২। {১২০৬} বুখারিতে রয়েছে। নবী [সাঃআঃ]–এর সহধর্মিণী সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিত যে, আসলাম গোত্রের সুবায়`আ নামের এক স্ত্রীলোককে তার স্বামী গর্ভাবস্থায় রেখে মারা যায়। এর পর আবূ সানাবিল ইবনু বা`কাক [রাঃআঃ] তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মহিলা তাকে বিয়ে করিতে অস্বীকার করে। সে [আবূ সানাবিল] বলিল, আল্লাহ্‌র শপথ! দু`টি মেয়াদের মধ্যে দীর্ঘতর মেয়াদ অনুসারে ইদ্দাত পালন না করা পর্যন্ত তোমার জন্য অন্যত্র বিয়ে করা জায়েয হইবে না। এর প্রায় দশ দিনের মধ্যেই সে সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নবী [সাঃআঃ] –এর কাছে আসলে তিনি বললেনঃ এখন তুমি বিয়ে করিতে পার। [বুখারি ৪৯০৯], {১২০৭} মুসলিম ৩৮৮৪। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০২. আযাদকৃ্ত দাসীর ইদ্দাত পালন করা

১১০৪ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বারীরাহ নাম্নী দাসীকে তিন হায়িয ইদ্দত পালনের জন্য হুকুম করা হয়েছিল। -বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য কিন্তু এর সানাদে কিছু সূক্ষ্ম ত্রুটি আছে। {১২০৮}

বারীরা আযাদ হয়ার পর তার দাস স্বামী হইতে বিবাহ বিচ্ছেদ করার অনুমতি লাভ করে এবং সে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলে তাকে স্বাধীনা মেয়েদের ন্যায় তিন ঋতু ইদ্দত পালনের জন্য আদেশ করা হয়।

{১২০৮} ইবনু মাযাহ ২০৭৭। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৩. তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীর ভরণপোষণের ব্যয় এবং বাসস্থানের বিধান

১১০৫ – শা`বী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ফাতিমাহ বিনতে কায়েস [রাঃআঃ] থেকে, তিনি নবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিন তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীর জন্য কোন বাসস্থান ও খোর–পোষের ব্যবস্থা নেই। {১২০৯}

{১২০৯} বুখারি এবং মুসলিমে আরও রয়েছে – তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দু` অথবা তিন বার বলিলেন, না। তিনি আর ও বলিলেন, এতো মাত্র চার মাস দশ দিনের ব্যপার। অথচ জাহিলী যুগে এক মহিলা এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। মুসলিম ১৪৮০, তিরমিজি ১১৩৫, ১১৮০, নাসায়ী ৩২২২, ৩২৩৭, ৩২৪৪, আবূ দাউদ ২২৮৪, ২২৮৮, ২২৮৮, ২২৮৯, ইবনু মাযাহ ১৮৬৯, ২০২৪, ২০৩৫, আহমাদ ২৬৭৭৫, ২৬৭৭৮, মালেক ১২৩৪, দারেমী ২১৭৭, ২২৭৪। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৪. স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী শোক প্রকাশের সময় যা করা থেকে বিরত থাকব

১১০৬ – উম্মু আতীয়্যাহ হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন মহিলা যেন কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক প্রকাশ না করে। তবে স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন শোক প্রকাশ করিতে পারবে এবং রঙ্গিন কাপড় পড়বে না, তবে রঙ্গিন সুতোর কাপড় পরতে পারবে, সুর্মা ব্যবহার করিবে না, সুগন্ধি দ্রব্য লাগাবে না। তবে পবিত্রতা অর্জনের জন্য কিছু কুস্ত বা আযফার সুগন্ধি ব্যবহার করিতে পারবে। এ শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। আবূ দাউদ ও নাসায়ীতে অতিরিক্তভাবে আছে-`খেযাব` [মেহেদী] ব্যবহার করিবে না আর নাসায়ীতে আছে চিরুনি লাগাবে না। {১২১০}

{১২১০} বুখারি ১২৭৮, ১২৭৯, ৫৩৪০, ৫৩৪১, মুসলিম ৯৩৮, নাসায়ী ৩৫৩৪, আবূ দাঊদ ২৩০২, ইবনু মাযাহ ২০৮৭, আহমাদ ২০২৭০,২৬৭৫৯, দারেমী ২২৮৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৭ – উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমার স্বামী আবূ সালামাহর ইনতিকাল হবার পর আমি আমার চোখে `মুসব্বর` লাগিয়ে ছিলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, এতে তো চেহারাকে লাবণ্য দান করে, ফলে তুমি এটা রাত্র ব্যতীত লাগাবে না, আর দিনের বেলায় তাকে অপসারিত করিবে, আর সুগন্ধি দ্বারা কেশ বিন্যাস করিবে না এবং মেহেদী লাগাবে না। কেননা এটা হচ্ছে খিযাব।

উম্মু সালামাহ বলেন, আমি বললাম, তবে আমি কোন্‌ বস্তু দিয়ে চিরুনী করব? তিনি বলিলেন, কুলের পাতা দিয়ে। – এর সানাদ হাসান। {১২১১}

{১২১১} নাসায়ী ৩৫৩৭, আবূ দাঊদ ২৩০৫। শাইখ আলবানী জঈফ নাসায়ী [৩৫৩৯] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। ইমাম যাহাবী তাহাঁর মীযানুল ই`তিদাল [৪/১৬৩] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আল মুগীরা ইবনুয যাহহাক রয়েছেন যার পরিচয় জানা যায় না। ইমাম শওকানী তাহাঁর নাইলুল আওত্বার [৭/৯৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আল মুগীরা ইবনুয যাহহাক রয়েছেন যার সম্পর্কে আবদুল হক ও আল মুনযিরী বলেন, তিনি মাজহুলুল হাল অর্থাৎ তাহাঁর সম্পর্কে কোন কিছু জানা যায় না। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১০৮ – উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

যে কোন এক মহিলা বলিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার মেয়ের স্বামী মারা গেছে। তার চোখে অসুখ। আমি কি তার চোখে সুরমা লাগাতে পারব? তখন রসূলুল্লাহ [স] বলিলেন, না। {১২১২}

{১২১২} বুখারি ৫৩৩৯, ৫৭০৭, মুসলিম ১৪৮৯, ১৪৮৮, তিরমিজি ১১৯৭, ৩৫০১, নাসায়ী ৩৫০১, ৩৫০২। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৫. তিন তালাকপ্রাপ্তা নারী ইদ্দাত পালনের সময় নিজ প্রয়োজনে বাহিরে হওয়া জায়েয

১১০৯ – জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমার খালাকে তালাক্ব দেয়া হলে তিনি তাহাঁর খেজুর গাছের ফল নামাবেন বলে ইচ্ছা করেন। কোন লোক তাঁকে বের হবার জন্য ধমকালেন। ফলে তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর সমীপে আসলেন। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন –হাঁ, তুমি তোমার খেজুর ফল নামাবে। কেননা, তুমি এতে থেকে অচিরেই সাদাকাহ করিবে অথবা সৎ কাজও করিবে। {১২১৩}

{১২১৩} মুসলিম ১৪৮৩, নাসায়ী ৩৫৫০, আবূ দাঊদ ২২৯৭, ইবনু মাযাহ ২০৩৪, আহমাদ ১৪০৩৫, দারেমী ২২৮৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৬. – স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীর ইদ্দাত শেষ হওয়া পর্যন্ত স্বামীগৃহে অবস্থান করা

১১১০ – ফুরাইয়াহ বিনতে মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

স্বামী স্বীয়– পলাতক ক্রীতদাসদের সন্ধানে বের হয়েছিলেন। ফলে তারা তাকে হত্যা করে ফেলে, তিনি বলেছেন, আমি এ ব্যাপারে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম যে আমার পিত্রালয়ে ফিরে যাই। কেননা আমার স্বামী আমার জন্য তাহাঁর মালিকানাধীন বাসগৃহ ও খাদ্যবস্তু রেখে যাননি। তিনি বলেছন- হাঁ রেখে যায়নি, অতঃপর আমি যখন কক্ষে রয়েছি, তিনি আমাকে ডেকে বলিলেন- তুমি তোমার ঘরেই থেকে যাও–যতক্ষন না তোমার ইদ্দতের ধার্য সময় পূর্ণ না হয়। তিনি [ফুরাইয়াহ] বলিলেন- আমি চার মাস দশ দিন তথায় অবস্থান করলাম। তিনি বলেছন- এরূপ ফয়সালা তৃতীয় খলিফা `উসমান [রাঃআঃ] ও করেছিলেন।– তিরমিজি, যুহালী, ইবনু হিব্বান, হাকিম ও অন্যান্যগণ একে সহিহ বলেছন। {১২১৪}

{১২১৪} আবূ দাউদ ২৩০০, তিরমিজি ১২০৪, নাসায়ী ৩৫২৮, ৩৫২৯, ইবনু মাযাহ ৩০৩১, আহমাদ ২৬৫৪৭, ২৬৮১৭, মালেক ১২৫৪, দারেমী ২২৮৭। শাইখ সুমাইর আয যুহাইরী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৭. তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীর প্রয়োজনে জায়গা স্থানান্তর করা জায়েজ

১১১১ – ফাতিমাহ বিনতে কায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার স্বামী আমাকে যথারীতি তিন তালাক দিয়েছেন। আমার ভয় হচ্ছে হয়তো আমার উপর চওড়া হয়ে যেতে পারে। অতঃপর নবী [সাঃআঃ] এর নির্দেশের ফলে তিনি ঐ স্থান পরিবর্তন করে ফেলেন। {১২১৫}

{১২১৫} মুসলিম ১৪৮২, নাসায়ী ৩৫৪৭, ইবনু মাযাহ ২০৩৩। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৮. উম্মুল ওয়ালাদের [এমন দাসী যার গর্ভে মনিবের সন্তান হয়েছে] ইদ্দাত পালন করা

১১১২ – আমর ইবনু আস্‌ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমরা আমাদের সামনে আমাদের নবী [স] মুহাম্মাদ রসূল্লাহ [সাঃআঃ]– এর সুন্নাতকে বিপর্যস্ত করো না। উম্মুল ওয়ালাদের {১২১৬} মুনিবের মৃত্যুতে ইদ্দত চার মাস দশ দিন। -দারাকুতনী হাদিসটিকে মুনকাতে` সানাদ হবার দোষারোপ করিয়াছেন। {১২১৭}

{১২১৬} যে ক্রীতদাসী তার মনীবের সন্তান ভূমিষ্ট করে তাকে উম্মু ওয়ালাদ বলা হয়। যারা মনীবের সন্তান প্রসব করে সেই ক্রীতদাসীকে আর বিক্রি করা যায় না। {১২১৭} ইমাম দারাকুতনী এ হাদিসটিকে ইনতিকার দোষে দুষ্ট করিয়াছেন। ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম ৩/৩১৯ গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসটি কুবাইসাহ বিন যুওয়াইব আমর ইবনুল আস থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। অথচ তিনি তার নিকট থেকে শ্রবণই করেননি। তার মধ্যে দোষ এই রয়েছে যে, তার দ্বারা ইযতিয়ার অর্থাৎ এলোমেলো সংঘটিত হয়েছে। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম ৫/১২৪ গ্রন্থে বলেন, এর মধ্যে দুটি ত্রুটি রয়েছে। শাইখ আলবানী সহিহ ইবনু মাযাহ ১৭০৭ গ্রন্থে, সহিহ আবূ দাঊদ ২৩০৮ গ্রন্থদ্বয়ে একে সহিহ বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৯. “আকরা” শব্দের ব্যাখ্যা

১১১৩ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আকরাআ শব্দের অর্থ হায়িয পরবর্তী পবিত্র কাল। –মালেক, আহদাম এবং নাসায়ী একটি সহীহ্‌ সানাদে কোন এক ঘটনা উপলক্ষে বর্ণনা করিয়াছেন। {১২১৮}

{১২১৮} মুয়াত্তা মালেক ১২২১।ক্ষে বর্ণনা করিয়াছেন। {১২১৮}, হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০. দাসীর ইদ্দাত পালন করা।

১১১৪ – ইবনু `উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ ক্রীতদাসীর জন্য তালাক্ব মাত্র দু`তালাক্ব আর তার ইদ্দত পালন করিতে হইবে দু`হায়িযকাল। –দারাকুতনী মারফূ `সানাদে, তবে তিনি একে যয়ীফ বলেছেন। {১২১৯}

{১২১৯} ইবনু মাযাহ ২০৭৯, দারাকুতনী ৪র্থ খন্ড ৩৮ পৃষ্ঠা। সালিম ও নাফি` সূত্রে ইবনু উমার কর্তৃক বর্ণিত এ হাদিসটি মাউকূফ হিসেবে সহিহ । হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১১৫ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

হাকিম একে সহিহ বলেছেন- অন্যান্য মুহাদ্দিস এতে দ্বিমত করে এর জঈফ হওয়াতে ঐকমত্য পোষণ করিয়াছেন। {১২২০}

{১২২০} তিরমিজি ১১৮২, ইবনু মাযাহ ২০৮০, দারেমী ২২৯৪, ইমাম বুখারি তাহাঁর আত তারীখুস সগীর ২/১১৯ গ্রন্থে বলেন, এতে মাযাহির বিন আসলাম নামক বর্ণনাকারীকে আবূ আসিম দুর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করেছন। ইমাম খাত্তাবী তাহাঁর মাআলিমুস সুনান ৩/২০৭ গ্রন্থে বলেন, আহলুল হাদিসগণ একে দুর্বল বলেছেন, ইমাম শওকানী তাহাঁর আদ দিরায়াহ ২৩৬ গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন, বিন বায তাহাঁর বুলুগুল মারামের হাশিয়া ৬৩৩ গ্রন্থে বলেন, এতে মাযাহের বিন আসলাম আল মাখযুমী আল মুদীনী নামক দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছে। আলবানী জঈফ ইবনু মাযাহ ৪০৫, জঈফ আবূ দাউদ ২১৮৯, যঈফুল জামে ৩৬৫০ গ্রন্থেসমূহে একে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১. অন্যের দ্বারা সঞ্চারিত ভ্রূণ গর্ভে থাকাবস্থায় গর্ভবতীর সঙ্গে সঙ্গম করা হারাম

১১১৬ – রুঅয়ফি` ইবনু সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন পরকালে বিশ্বাসী মুমিন মানুষের জন্য বৈধ হইবে না যে সে নিজের পানি অপরের ক্ষেতের ফসলকে পান করাবে। –ইবনু হিব্বান হাদিসটিকে সহীহ্‌ এবং বায্‌যার হাসান বলেছেন। {১২২১}

{১২২১} আবূ দাউদ ২১৫৮, আহমাদ ১৬৬৪৪, দারেমী ২৪৭৭। গর্ভে যদি পূর্ব স্বামীর ভ্রূণ থাকা নিশ্চিত হয়, সেক্ষেত্রে পরবর্তী স্বামীর গর্ভবতীর সঙ্গে যৌন মিলন বৈধ নয়। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১২. স্বামী নিরুদ্দেশ হলে স্ত্রীর বিধান

১১১৭ – উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নিরূদ্দিষ্ট [দীর্ঘদিন অনুপস্থিত] পুরুষের স্ত্রীকে চার বৎসর কাল অপেক্ষা করার জন্য বলেছেন। অতঃপর সে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করিবে। –মালেক ও শাফিয়ী। {১২২২}

{১২২২} হাদিসটি মাওকুফের ভিত্তিতে সহিহ, তাওযিহুল আহকাম ৫/৫৯৪, হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাওকুফ

১১১৮ – শু`বাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, নিরুদ্দিষ্ট বা দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ব্যক্তির সংবাদ তার স্ত্রীর নিকটে না পৌঁছা পর্যন্ত ঐ স্ত্রী তারই থাকিবে।– দারাকুতনী দুর্বল সানাদে। {১২২৩}

{১২২৩} ইমাম বাইহাকি তাহাঁর সুনান আল কুবরা [৭/৪৪৫] গ্রন্থে বলেন, এটি সম্বলিত হলেও এর সনদে এমন বর্ণনাকারী বিদ্যমান যাদের দ্বারা হাদিস গ্রহণ সিদ্ধ নয়। আল কামাল বিন আল হাক্কাম তাহাঁর শরহে ফতহুল কাদীর [৬/১৩৭] গ্রন্থে বলেন, এর একজন বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ বিন শুরাহবীলকে দুর্বল বলা হয়েছে। ইমাম যঈলয়ী তাহাঁর নাসবুর রায়াহ [৩/৪৭৩] একে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী তাহাঁর সিলসিলা যঈফা গ্রন্থে তাহাঁর সিলসিলা যঈফা [২৯৩১] ও যঈফুল জামে ১২৫৩ গ্রন্থদ্বয়ে একে অত্যন্ত দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। সুমাইর আয যুহাইরী বলেন, এর বর্ণনাকারীগণ হয় মাতরূক না হলে মাজহুল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩. গায়রে মাহরাম নারীর সাথে একাকী থাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা

১১১৯ – জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বিবাহ করেছে এমন পুরুষ অথবা মাহরাম [কখনই বিবাহ বৈধ নয় এমন ব্যক্তি] ব্যতীত কোন পুরুষ যেন কোন মহিলার নিকটে রাত্রে না থাকে। {১২২৪}

{১২২৪} মুসলিম ১২৭১। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২০ – ই্ব্‌নু `আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মাহ্‌রামের বিনা উপস্থিতিতে কোন পুরুষ কোন নারীর সঙ্গে নির্জনে সাক্ষাৎ করিবে না। {১২২৫}

{১২২৫} বুখারি ১৮৬২, ৩০০৬, ৩০০৬, ৩০৬১, মুসলিম ১৩৪১, ইবনু মাযাহ ২৯০০, আহমাদ ১৯৩৫, ৩২২১। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৪. যুদ্ধ বন্দীনীর জরায়ু মুক্ত করা আবশ্যক

১১২১ – আবূ সা`ঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] আওতসের যুদ্ধের যুদ্ধ বন্দিনীরদের সম্বন্ধে বলেছিলেন। গর্ভধারিণীর প্রসব না করা পর্যন্ত এবং গর্ভধারিণী নয় এমন মহিলাদের সাথে এক হায়িয অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত যেন যৌন মিলন করা না হয়।– হাকিম সহিহ বলেছেন। {১২২৬}

{১২২৬} আবূ দাঊদ ২১৫৭, ২১৫৫ মুসলিম ১৪৫৬, তিরমিজি ১১৩২, ৩০১৬, ৩০১৭, নাসায়ী ৩৩৩৩, আহমাদ ১১৩৮৮, দারেমী ২২৯৫। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২২ – আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিত হয়েছে। {১২২৭}

{১২২৭} দারাকুননী ৩৫৭। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ১৫. স্ত্রী যার বিছানায় শয়ন করে ঐ স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান তারই হইবে, ব্যভিচারীর নয়

১১২৩ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, বিছানা যার তার সন্তান আর ব্যভিচারির জন্য পাথর। {১২২৮}

{১২২৮} বুখারি ৬৮১৮, ৬৭৫০, মুসলিম ১৪৫৮, তিরমিজি ১১৫৭, নাসায়ী ৩৪৮২, ৩৪৮৩, ইবনু মাযাহ ২০০৬, আহমাদ ৭২২১,৭২০৫, ৯৬৯২, ৯৭৯৭, দারেমী ২২৩৫। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৪ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

একটি ঘটনা সম্বন্ধে বর্ণিত রয়েছে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৫ – ইবনু মাস`ঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাসায়ীতেও বর্ণিত হয়েছে ।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৬ – উসমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবূ দাঊদে অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। {১২২৯}

{১২২৯} নাসায়ী ৩৪৮৪, ৩৪৮৭, আবূ দাউদ ২২৭৩, ইবনু মাযাহ ২০০৪, মালেক ১৪৪৯, ২২৩৬, ২২৩৭। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


by

Comments

2 responses to “ইদ্দত পালন শোক প্রকাশ, জরায়ু শুদ্ধিকরণ ইত্যাদির বর্ণনা”

Leave a Reply