ইতিকাফ ও রামাযান মাসে রাতের নামাজ
ইতিকাফ ও রামাযান মাসে রাতের নামাজ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় -২ঃ ইতিকাফ ও রামাযান মাসে রাতের নামাজ
পরিচ্ছেদ ০১. রামাযান মাসে রাতের নামাজের তাৎপর্য
পরিচ্ছেদ ০২. রমাযানের শেষ দশ দিনে আমল করার ফযীলত
পরিচ্ছেদ ০৩. ইতিকাফের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৪. ইতিকাফকারী কখন তার ই’তিকাফের স্থানে প্রবেশ করিবে?
পরিচ্ছেদ ০৫. ইতিকাফকারীর মসজিদ হতে বের হওয়া বা শরীরের অঙ্গ বের করার বিধান
পরিচ্ছেদ ০৬. ইতিকাফের বিধানাবলী
পরিচ্ছেদ ০৭. ই’তিকাফের ক্ষেত্রে রোযা রাখা কি শর্ত?
পরিচ্ছেদ ০৮. লাইলাতুল কাদর যে সময়ে অন্বেষণ করিতে হয়
পরিচ্ছেদ ০৯. ২৭ তম রাত্রিকে লাইলাতুল কাদর হিসেবে নির্দিষ্টকরণ
পরিচ্ছেদ ১০. লাইলাতুল কদরের সন্ধান পাওয়া ব্যাক্তি কি দোয়া পড়বে ?
পরিচ্ছেদ ১১. ৩টি মাসজিদের যে কোনটিতে ইতিকাফের উদ্দেশ্যে গমণ বৈধ
পরিচ্ছেদ ০১. রামাযান মাসে রাতের নামাজের তাৎপর্য
৬৯৭ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় তারাবীহর নামাজে দাড়াবে তার পূর্ববতী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হইবে। {৭৪২}
{৭৪২} বুখারী ৩৫, ৩৭, ২০০৯ মুসলিম ৭৬০, তিরমিজি ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৯, ২১৯৮, ২২০০, আবূ দাউদ ১২৭১, ১২৭২, আহমাদ ৭৭২৯, দারেমী ১৭৭৬। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০২. রমাযানের শেষ দশ দিনে আমল করার ফযীলত
৬৯৮ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রমযানের শেষ দশক আসত তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার লুঙ্গি কষে নিতেন [বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন] এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। {৭৪৩}
{৭৪৩} বুখারী ২০২৪, মুসলিম ১১৭৪, তিরমিজি ৭৯৬, নাসায়ী ১৬২৯, আবূ দাউদ ১২৭৬, ইবনু মাজাহ ১৭৬৭, ১৭৬৮, আহমাদ ২২৬১১, ২২৮৫৬, ২২৮২৯। ইতিকাফ হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৩. ইতিকাফের বিধান
৬৯৯ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] রমযানের শেষ দশক ইতিকাফ করিতেন। তার ওফাত পর্যন্ত এই নিয়মই ছিল। এরপর তার সহধর্মিণীগণও [সে দিনগুলোতে] ইতিকাফ করিতেন । {৭৪৪}
{৭৪৪} বুখারী ২০২৬, মুসলিম ১১৭২, তিরমিয়ী ৭৯০, আবূ দাউদ ২৪৬২, আহমাদ ২৩৬১, ২৩৭১৩, মুওয়াত্ত মালেক ৬৯৯।নহাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৪. ইতিকাফকারী কখন তার ই’তিকাফের স্থানে প্রবেশ করিবে?
৭০০ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] যখন ইতিকাফের ইচ্ছা পোষণ করিতেন তখন ফাজরের নামাজ আদায় করে ইতিকাফ স্থলে প্রবেশ করিতেন। {৭৪৫}
{৭৪৫} বুখারী ২০২৪, ২০৩৩, ২০৪১, ২০৪৫, মুসলিম ১১৭৩, তিরমিজি ৭৯১, নাসায়ী ৭০৯, আবূ দাউদ ২৪৬৪, ইবনু মাজাহ ১৭৭১, আহমাদ ২৪০২৩, ২৫৩২৯। বুখারীর বর্ণনায় রহিয়াছে, রমযানের শেষ দশকে নাবী [সাঃআঃ] ইতিকাফ করিতেন। আমি তার তাবু তৈরি করে দিতাম। তিনি ফজরের নামাজ আদায় করে তাতে প্রবেশ করিতেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৫. ইতিকাফকারীর মসজিদ হতে বের হওয়া বা শরীরের অঙ্গ বের করার বিধান
৭০১ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] মাসজিদে থাকাবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ব্যতীত ঘরে প্রবেশ করিতেন না। -শব্দ বুখারীর {৭৪৬}
{৭৪৬} বুখারী ২৪৮, ২৫০, ২৬১, ২০২৯, মুসলিম ২১৬, ২১৯, ২২১, ৩২১, তিরমিয়ী ১৩২, ১৭৫৫, নাসায়ী ২৩১, ২২৩, আবূ দাউদ ৭৭, ২৪২, ২৪৩, ইবনু মাজাহ ৩৭৬, ৬৩৩, আহমাদ ২৩৪৯৪, ২৩৫৬১, ২২৬৪০, মুওয়াত্তা মালেক ১০০, ১২৮, দারেমী ৭৪৮, ১০৩৩, ১০৩৭। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৬. ইতিকাফের বিধানাবলী
৭০২ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইতিকাফকারীর জন্য সুন্নাত বা শরয়ী ব্যবস্থা হচ্ছে তিনি কোন রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখিতে যাবেন না, জানাযায় শামিল হইবেন না, স্ত্রীকে স্পর্শ করিবে না ও তাকে জড়াবে না, প্রয়োজন থাকলেও [মসজিদ হতে] বের হইবেন না তবে যা না হলে মোটেই চলবে না [যেমন পায়খানা ও পেশাব করার জন্যে]; এবং রোযা ব্যতীত ইতিকাফ হয় না এবং জুমুআহ মসজিদ ব্যতীত অন্যত্র ইতিকাফ হয় না- আবূ দাউদ। এর রাবীদের মধ্যে কোন ক্রটি নেই, তবে এর শেষাংশ মওকুফ হওয়াটাই সমিচীন [অর্থাৎ রোযা ব্যতীত ইতিকাফ নেই হতে শেষাংশ রাবীর নিজস্ব কথা]। {৭৪৭}
{৭৪৭} আবূ দাউদ ২৪৭৩। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৭. ই’তিকাফের ক্ষেত্রে রোযা রাখা কি শর্ত?
৭০৩ – ইবনু আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, ইতিকাফকারীর উপর রোযা পালন জরুরী [ফরয] নয়, তবে সে যদি ইচ্ছা করে রাখতে পারে। -এটারও মাওকুফ হওয়া অধিক সঙ্গত [ইবনু আব্বাসের নিজস্ব কথা]।” {৭৪৮}
{৭৪৮} দারাকুতনী ২/১৯৯/৩, হাকিম ১/৪৩৯, মাওকূফ । শাইখ আলবানী যঈফুল জামি’ [৪৮৯৬], সিলসিলা যঈফা [৪৩৩৭৮] গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আসকালানী আদদিরাইয়াহ ১/২৮৮ গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি মওকুফ হওয়াই সঠিক। ইমাম বায়হাকী তাহাঁর সুনান আল কুবর ৪/৩১৯ গ্রছে বলেন, এ হাদিসটি আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন নাসর আর রমলী এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৮. লাইলাতুল কাদর যে সময়ে অন্বেষণ করিতে হয়
৭০৪ – ইবনু উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর কতিপয় সহাবীকে স্বপ্লের মাধ্যমে রমযানের শেষের সাত রাত্রে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়। [এ শুনে] আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ আমাকেও তোমাদের স্বপ্লের অনুরূপ দেখানো হয়েছে।” {৭৪৯} [তোমাদের দেখা ও আমার দেখা] শেষ সাত দিনের ক্ষেত্রে মিলে গেছে। অতএব যে ব্যক্তি এর সন্ধান প্রত্যাশী, সে যেন শেষ সাত রাতে সন্ধান করে। {৭৫০}
{৭৪৯} কেউ কেউ হামযায় পেশ দিয়ে পড়েছেন তাহলে অর্থ হইবে – তথা আমি ধারনা করছি। আবার অনেকেই হামযায় যবর দিয়ে পড়েছেন, তাহলে অর্থ হইবে, আমি জানি।
{৭৫০} বুখারী ২০১৫, ৬৯৯১, মুসলিম ১১৬৫, আহমাদ ৪৪৮৫, ৪৫৩৩, ৪৬৫৭, মুওয়াত্তা মালেক ৭০৬। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৯. ২৭ তম রাত্রিকে লাইলাতুল কাদর হিসেবে নির্দিষ্টকরণ
৭০৫ -মু’আবীয়াহ বিন আবূ সুফইয়ান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] লাইলাতুল কদর সম্বন্ধে বলেছেন, তা ২৭শে রমযানের রাত। আবূ দাউদ এটি বর্ণনা করে মওকুফ হবার ব্যাপারেই অভিমত দিয়েছেন। লাইলাতুল কদরের দিনক্ষণ নির্ণয়ের ব্যাপারে ৪০ প্রকার মতভেদপূর্ণ কওল [কথা] রহিয়াছে। যার উল্লেখ আমি ফতহুল বারীতে [বুখারীর শরায়] করেছি।” {৭৫১}
{৭৫১} আবূ দাউদ ১৩৮৬, হাদিসটি মাওকুফ, তাওযিহুল আহকাম ৩/৫৯০। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ১০. লাইলাতুল কদরের সন্ধান পাওয়া ব্যাক্তি কি দোয়া পড়বে ?
৭০৬ -আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি কদরের রাত পেয়ে যাই তবে তাতে কী বলবো? তিনি বলেন; তুমি বলবে
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউয়্যন তুহিব্বূল আফওয়া ফা’ফু ‘আনী]। “হে আল্লাহ তুমি ক্ষমাকারী, তুমি ক্ষমা করিতেই ভালোবাসো। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও” -তিরমিজি ও হাকিম একে সহিহ বলেছেন। {৭৫২}
{৭৫২} তিরমিজি ৩৫১৩, ইবনু মাজাহ ৩৮৫০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১১. ৩টি মাসজিদের যে কোনটিতে ইতিকাফের উদ্দেশ্যে গমণ বৈধ
৭০৭ -আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন- [সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে সফর কর না] তিনটি মসজিদ ব্যতীতঃ ১. মাসজিদুল হারাম, ২. মাসজিদুল আকসা এবং ৩. আমার মসজিদ। {৭৫৩}
{৭৫৩} বুখারী ৫৮৬, ১১৮৯, ১৮৬৪, মুসলিম ৮২৭, নাসায়ি হাদিস ৫৬৬, ৫৬৭, ইবনু মাজাহ ১২৪৯, ১৪১০, ১৭২১, আহমাদ ১০৬৩৯, ১০৯৫৫, ১১০১৭, দারেমী ১৭৫৩ । ইতিকাফ হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply