ইকামত কিভাবে দিতে হয় এবং আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে পার্থক্য
ইকামত কিভাবে দিতে হয় এবং আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে পার্থক্য >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১০, আযান, অধ্যায়ঃ (১৪-২৮)=১৪টি
১০/১৪. অধ্যায়ঃ আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু ।
১০/১৫. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের জন্য অপেক্ষা করা ।
১০/১৬. অধ্যায়ঃ কেউ ইচ্ছা করলে আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে সালাত আদায় করিতে পারেন
১০/১৭. অধ্যায়ঃ সফরে এক মুয়াজ্জিন যেন আযান দেয় ।
১০/১৮. অধ্যায়ঃ মুসাফিরদের জামাআতের জন্য আযান ও ইকামত দেয়া ।
১০/১৯. অধ্যায়ঃ মুয়াজ্জিন কি (আযানের সময়) ডানে বামে মুখ ফিরাবেন এবং এদিক সেদিক তাকাতে পারবেন?
১০/২০. অধ্যায়ঃ আমাদের সালাত ছুটে গেছে কারো এরূপ বলা ।
১০/২১. অধ্যায়ঃ সালাতের (জামাআতের) দিকে দৌড়ে আসবে না, বরং শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে আসবে ।
১০/২২. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের সময় ইমামকে দেখলে লোকেরা কখন দাঁড়াবে?
১০/২৩. অধ্যায়ঃ তাড়াহুড়া করে সালাতের দিকে দৌড়াতে নেই, বরং শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে দাঁড়াতে হইবে ।
১০/২৪. অধ্যায়ঃ প্রয়োজনে মসজিদ হইতে বের হওয়া যায় কি?
১০/২৫. অধ্যায়ঃ ইমাম যদি বলেন, আমি ফিরে আসা পর্যন্ত তোমরা অপেক্ষা কর, তাহলে মুক্তাদীগণ তার জন্য অপেক্ষা করিবে
১০/২৬. অধ্যায়ঃ আমরা সালাত আদায় করিনি কারো এরূপ বলা ।
১০/২৭. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের পর ইমামের কোন প্রয়োজন দেখা দিলে ।
১০/২৮. অধ্যায়ঃ ইকামত হয়ে গেলে কথা বলা ।
১০/১৪. অধ্যায়ঃ আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু ।
৬২৪. আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল মুযানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে সালাত রয়েছে। একথা তিনি তিনবার বলিলেন, (তারপর বলেন) যে চায় তার জন্য।
৬২৫. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুয়াজ্জিন যখন আযান দিতো, তখন নাবী (সাঃআঃ)-এর সাহাবীগণের মধ্যে কয়েকজন নাবী (সাঃআঃ)-এর বের হওয়া পর্যন্ত (মসজিদের) খুঁটির নিকট গিয়ে দাঁড়াতেন এবং এ অবস্থায় মাগরিবের পূর্বে দু রাকআত সালাত আদায় করিতেন। অথচ মাগরিবের আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে কিছু (সময়) থাকত না। উসমান ইবনু জাবালাহ ও আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করেন যে, এ দুয়ের মধ্যবর্তী ব্যবধান খুবই সামান্য হত।
১০/১৫. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের জন্য অপেক্ষা করা ।
৬২৬. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন মুয়াজ্জিন ফজরের সালাতের প্রথম আযান শেষ করিতেন তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দাঁড়িয়ে যেতেন এবং সুবহে সাদিকের পর ফজরের সালাতের পূর্বে দু রাকআত সালাত সংক্ষেপে আদায় করিতেন, অতঃপর ডান কাতে শুয়ে পড়তেন এবং ইক্বামাতের জন্য মুয়াজ্জিন তাহাঁর নিকট না আসা পর্যন্ত শুয়ে থাকতেন।
(৯৯৪, ১১২৩, ১১৬০, ১১৭০, ৬৩১০) (আ.প্র. ৫৯০, ই.ফা. ৫৯৮)
১০/১৬. অধ্যায়ঃ কেউ ইচ্ছা করলে আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে সালাত আদায় করিতে পারেন
৬২৭. আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে সালাত আদায় করা যায়। তৃতীয়বার এ কথা বলার পর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে। (৬২৪)
(আ.প্র. ৫৯১, ই.ফা. ৫৯৯)
১০/১৭. অধ্যায়ঃ সফরে এক মুয়াজ্জিন যেন আযান দেয় ।
৬২৮. মালিক ইবনু হুয়াইরিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রের কয়েকজন লোকের সঙ্গে নাবী (সাঃআঃ)–এর নিকট এলাম এবং আমরা তাহাঁর নিকট বিশ রাত অবস্থান করলাম। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) অত্যন্ত দয়ালু ও বন্ধু বৎসল ছিলেন। তিনি যখন আমাদের মধ্যে নিজ পরিজনের নিকট ফিরে যাওয়ার আগ্রহ লক্ষ্য করিলেন, তখন তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর, আর তাদের দ্বীন শিক্ষা দিবে এবং সালাত আদায় করিবে। যখন সালাত উপস্থিত হয়, তখন তোমাদের কেউ আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে ইমামত করিবে।
(৬৩০, ৬৩১, ৬৫৮, ৬৮৫, ৮১৯, ২৮৪৮, ৬০০৮, ৭২৪৬; মুসলিম ৫/৫৩, হাদীস ৬৭৪, আহমাদ ১৫৫৯৮) (আ.প্র. ৫৯২, ই.ফা. ৬০০)
১০/১৮. অধ্যায়ঃ মুসাফিরদের জামাআতের জন্য আযান ও ইকামত দেয়া ।
আরাফা ও মুয্দালিফার হুকুমও অনুরূপ এবং প্রচণ্ড শীতের রাতে ও বৃষ্টির সময় মুআয্যিনের এ মর্মে ঘোষণা করা যে, “আবাস স্থলেই সালাত” ।
৬২৯. আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক সফরে নাবী (সাঃআঃ)–এর সাথে ছিলাম। মুয়াজ্জিন আযান দিতে চাইলে তিনি বললেনঃ ঠাণ্ডা হইতে দাও। কিছুক্ষণ পর মুয়াজ্জিন পুনরায় আযান দিতে চাইলে তিনি বলিলেন, ঠাণ্ডা হইতে দাও। অতঃপর সে আবার আযান দিতে চাইলে তিনি আবার বলিলেন, ঠাণ্ডা হইতে দাও। এভাবে বিলম্ব করিতে করিতে টিলাগুলোর ছায়া তার সমান হয়ে গেলো। পরে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ উত্তাপের প্রখরতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ বিশেষ। (৫৩৫)
(আ.প্র. ৫৯৩, ই.ফা. ৬০১)
৬৩০. মালিক ইবনু হুওয়ায়ইরিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দুজন লোক সফরে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করার জন্য নাবী (সাঃআঃ)–এর নিকট এল। নাবী (সাঃআঃ) তাদের বলিলেন, তোমরা উভয়ে যখন সফরে বেরুবে (সালাতের সময় হলে) তখন আযান দিবে, অতঃপর ইকামত দিবে এবং তোমাদের উভয়ের মধ্যে যে বয়সে বড় সে ইমামত করিবে। (৬২৮)
(আ.প্র. ৫৯৪, ই.ফা. ৬০২)
৬৩১. মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সমবয়সী একদল যুবক নাবী (সাঃআঃ)–এর নিকট হাযির হলাম। বিশদিন ও বিশ রাত আমরা তাহাঁর নিকট অবস্থান করলাম। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র স্বভাবের লোক ছিলেন। তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে, আমরা আমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যেতে চাই বা ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে পড়েছি, তখন তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করিলেন, আমরা আমাদের পিছনে কাদের রেখে এসেছি। আমরা তাঁকে জানালাম। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর। আর তাদের (দ্বীন) শিক্ষা দাও, এবং (সৎ কাজের) নির্দেশ দাও। (বর্ণনাকারী বলেন) মালিক (রাদি.) আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন যা আমার মনে আছে বা মনে নেই। অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) বলেছিলেন, তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করিতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করিবে। সালাতের সময় উপস্থিত হলে তোমাদের একজন যেন আযান দেয় এবং যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে যেন ইমামত করে। (৬২৮)
(আ.প্র. ৫৯৫, ই.ফা. ৬০৩)
৬৩২. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রচণ্ড এক শীতের রাতে ইবনু উমর (রাদি.) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আযান দিতে বলিলেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করিতে বলিলেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর।
(৬৬৬; মুসলিম ৬/৩, হাদীস ৬৯৭, আহমাদ ৪৫৮০) (আ.প্র. ৫৯৬, ই.ফা. ৬০৪)
৬৩৩. আবু যুহায়ফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কে আবতাহ নামক জায়গায় দেখলাম, বিলাল (রাদি.) তাহাঁর নিকট আসলেন এবং আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)–কে সালাতের সংবাদ দিলেন। অতঃপর বিলাল (রাদি.) একটি বর্শা নিয়ে বের হলেন। অবশেষে আবতাহে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)–এর সামনে তা পুঁতে দিলেন, অতঃপর সালাতের ইকামত দিলেন। (১৮৭)
(আ.প্র. ৫৯৭, ই.ফা. ৬০৫)
১০/১৯. অধ্যায়ঃ মুয়াজ্জিন কি (আযানের সময়) ডানে বামে মুখ ফিরাবেন এবং এদিক সেদিক তাকাতে পারবেন?
বিলাল (রাদি.) থেকে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি আযানের সময় দুকানে দুটি আঙ্গুল রাখতেন। তবে ইবন উমর (রাদি.) দুকানে আঙ্গুল রাখতেন না। ইবরাহীম (র.) বলেন, বিনা উযূ তে আযান কোন দোষ নেই। আতা (র.) বলেন, (আযানের জন্য) উযূ জরুরী এবং সুন্নাত। আয়েশা (রাদি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সর্বক্ষণ আল্লাহর যিক্র করিতেন।
৬৩৪. আবু যুহায়ফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বিলাল (রাদি.)–কে আযান দিতে দেখেছেন। (এরপর তিনি বলেন) তাই আমি তাহাঁর (বিলালের) ন্যায় আযানের মাঝে মুখ এদিক সেদিক (ডানে-বামে) ফিরাই। (১৮৭)
(আ.প্র. ৫৯৮, ই.ফা. ৬০৬)
১০/২০. অধ্যায়ঃ আমাদের সালাত ছুটে গেছে কারো এরূপ বলা ।
ইবন সীরীন (র.)-এর মতে আমাদের সালাত ফাওত হয়ে গেছে বলা অপছন্দনীয় । বরং আমরা সালাত পাইনি এরূপ বলা উচিৎ । তবে এ ব্যাপারে নাবী (সা.) যা বলেছেন তাই সঠিক ।
৬৩৫. আবু কাতাদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ)–এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়ায শুনতে পেলেন। সালাত শেষে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন তোমাদের কি হয়েছিল? তাঁরা বলিলেন, আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, এরূপ করিবে না। যখন সালাতে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করিবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পূর্ণ করিবে।
(মুসলিম ৫/২৮, হাদীস ৬০৩, আহমাদ ২২৬৭১) (আ.প্র. ৫৯৯, ই.ফা. ৬০৭)
১০/২১. অধ্যায়ঃ সালাতের (জামাআতের) দিকে দৌড়ে আসবে না, বরং শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে আসবে ।
তিনি বলেন, তোমারা ইমামের সঙ্গে যতটুকু পাও আদায় করিবে, আর তোমাদের যা ছুটে যায় তা ( ইমামের সালাম ফিরানোর পর ) পুরা করে নিবে। আবু কাতাদা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে এ কথা বর্ণনা করিয়াছেন।
৬৩৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন তোমরা ইকামত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করিবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করিবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করিবে।
(৯০৮; মুসলিম ৫/২৯, হাদীস ৬০৪, আহমাদ ২২৭১২) (আ.প্র. ৬০০, ই.ফা. ৬০৮)
১০/২২. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের সময় ইমামকে দেখলে লোকেরা কখন দাঁড়াবে?
৬৩৭. আবু ক্বাতাদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সালাতের ইকামত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না।
(৬৩৮, ৯০৯; মুসলিম ৫/২৯, হাদীস ৬০৪, আহমাদ ২২৭১২) (আ.প্র. ৬০১, ই.ফা. ৬০৯)
১০/২৩. অধ্যায়ঃ তাড়াহুড়া করে সালাতের দিকে দৌড়াতে নেই, বরং শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে দাঁড়াতে হইবে ।
৬৩৮. আবু ক্বাতাদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সালাতের ইকামত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না। ধীরস্থিরতার প্রতি লক্ষ্য রাখা তোমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য। আলী ইবনু মুবারক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হাদীস বর্ণনায় শায়বান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন। (৬৩৭)
(আ.প্র. ৬০২, ই.ফা. ৬১০)
১০/২৪. অধ্যায়ঃ প্রয়োজনে মসজিদ হইতে বের হওয়া যায় কি?
৬৩৯. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একদা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) নিজের কক্ষ হইতে সালাতের জন্য তাশরীফ নিয়ে আসলেন। এদিকে সালাতের ইকামত দেয়া হয়েছে এবং কাতার সোজা করে নেয়া হয়েছে, এমন কি তিনি মুসাল্লায় দাঁড়ালেন, আমরা তাক্বীরের অপেক্ষা করছি, এমন সময় তিনি ফিরে গেলেন এবং বলে গেলেন তোমরা নিজ নিজ স্থলে অপেক্ষা কর। আমরা নিজ নিজ অবস্থায় অপেক্ষা করিতে থাকলাম যে পর্যন্ত না তিনি আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলেন। তাহাঁর মাথা হইতে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছিল, তিনি গোসল করেছিলেন। (২৭৫)
(আ.প্র. ৬০৩, ই.ফা. ৬১১)
১০/২৫. অধ্যায়ঃ ইমাম যদি বলেন, আমি ফিরে আসা পর্যন্ত তোমরা অপেক্ষা কর, তাহলে মুক্তাদীগণ তার জন্য অপেক্ষা করিবে ।
৬৪০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একবার) সালাতের ইকামত দেয়া হয়ে গেছে, লোকেরা তাদের কাতার সোজা করে নিয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বেরিয়ে আসলেন এবং সামনে এগিয়ে গেলেন, তখন তাহাঁর উপর গোসল ফরয ছিল। তিনি বললেনঃ তোমরা নিজ নিজ জায়গায় অপেক্ষা কর। অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং গোসল করিলেন, অতঃপর ফিরে আসলেন, তখন তাহাঁর মাথা হইতে পানি টপ্টপ্ করে পড়ছিল। অতঃপর সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করিলেন। (২৭৫)
(আ.প্র. ৬০৪, ই.ফা. ৬১২)
১০/২৬. অধ্যায়ঃ আমরা সালাত আদায় করিনি কারো এরূপ বলা ।
৬৪১. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কসম! আমি সালাত আদায় করিতে পারিনি, এমন কি সূর্য ডুবতে লাগলো, [জাবির (রাদি.) বলেন,] যখন কথা হচ্ছিল তখন এমন সময়, যখন সওম পালনকারী ইফ্তার করে ফেলেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমিও সে সালাত আদায় করিনি। অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) বুতহান নামক উপত্যকায় গেলেন, আমিও তাহাঁর সঙ্গে ছিলাম। সেখানে তিনি উযূ করিলেন এবং সূর্যাস্তের পরে তিনি (প্রথমে) আসর সালাত আদায় করিলেন, অতঃপর তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করিলেন। (৫৯৬)
(আ.প্র. ৬০৫, ই.ফা. ৬১৩)
১০/২৭. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের পর ইমামের কোন প্রয়োজন দেখা দিলে ।
৬৪২. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতের ইকামত হয়ে গেছে তখনও নাবী (সাঃআঃ) মসজিদের এক পাশে এক ব্যক্তির সাথে একান্তে কথা বলছিলেন, অবশেষে যখন লোকদের ঘুম আসছিল তখন তিনি সালাতে দাঁড়ালেন। [১]
(৬৪৩, ৬২৯২; মুসলিম ৩/৩৩, হাদীস ৩৭৬) (আ.প্র. ৬০৬, ই.ফা. [১] ইকামত হয়ে যাওয়ার পরও প্রয়োজনে ইমাম কথা বলিতে পারেন। এতে নতুন করে ইকামত দিতে হইবে না। অন্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ইকামত হয়ে যাবার পর মুসল্লীদের দিকে ফিরে ইমাম মুসল্লীদের কাতার সোজা করার জন্য কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিবে, অতঃপর ইমাম সালাত আরম্ভ করবেন। কিন্তু আমাদের দেশে এ সুন্নাতের বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায় যা বিদআত। (বুখারী ৬৭৬ নং হাদীস দ্রষ্টব্য)
১০/২৮. অধ্যায়ঃ ইকামত হয়ে গেলে কথা বলা ।
৬৪৩. হুমাইদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতের ইকামত হয়ে যাবার পর কোন ব্যক্তি কথা বললে তার সম্পর্কে আমি সাবিত বুনানীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিত একটি হাদীস বর্ণনা করিলেন। তিনি বলেন, সালাতের ইকামত দেয়া হয় এমন সময় এক ব্যক্তি নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এলো এবং ইক্বামাতের পরও তাঁকে কথার মধ্যে ব্যস্ত রাখল। (৬৪২)
(আ.প্র. ৬০৭, ই.ফা. ৬১৫)
Leave a Reply