আয়েশা (রা) এর সঙ্গে নাবী (সাঃ) এর বিবাহ ও আনসারের প্রতিনিধি দল
আয়েশা (রা) এর সঙ্গে নাবী (সাঃ) এর বিবাহ ও আনসারের প্রতিনিধি দল >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬৩, আনসারগণের মর্যাদা, অধ্যায়ঃ (৪৩-৪৪)=২টি
৬৩/৪৩. অধ্যায়ঃ মক্কায় নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট আনসারের প্রতিনিধি দল এবং আকাবার বায়আত।
৬৩/৪৪. অধ্যায়ঃ আয়েশা (রা) এর সঙ্গে নাবী (সাঃ) এর বিবাহ, তাহাঁর মদীনা উপস্থিতি এবং আয়েশা (রাদি.) – এর সঙ্গে তাহাঁর বাসর।
৬৩/৪৩. অধ্যায়ঃ মক্কায় নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট আনসারের প্রতিনিধি দল এবং আকাবার বায়আত।
৩৮৮৯
আবদুল্লাহ ইবনু কাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু কাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যিনি কাব এর পথ প্রদর্শক ছিলেন যখন কাব অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি বলেন, আমি কাব ইবনু মালিক (রাদি.) – কে তাবূক যুদ্ধকালে নাবী (সাঃআঃ) হইতে তাহাঁর পশ্চাতে হইতে যাওয়ার ঘটনাটি সবিস্তারে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি। ইবনু বুকায়র তাহাঁর বর্ণনায় এ কথাটিও বলেন যে, কাব (রাদি.) বলেছেন, আমি আকাবার রাতে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। যখন আমরা ইসলামের উপর দৃঢ় থাকার অঙ্গীকার করেছিলাম। সে রাতের পরিবর্তে বদর যুদ্ধে উপস্থিত হওয়া আমার নিকট অধিক প্রিয় নয়, যদিও বদর যুদ্ধ জনগণের মধ্যে আকাবার চেয়ে বেশি আলোচিত ছিল।
(আঃপ্রঃ ৩৬০২, ইঃফাঃ ৩৬০৭)
৩৮৯০
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আকাবা রাতে আমার দুজন মামা আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন। ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনু উয়ায়না বলেন, দুজন মামান একজন হলেন বারা ইবনু মারূর (রাদি.)।
(আঃপ্রঃ ৩৬০৩, ইঃফাঃ ৩৬০৮)
৩৮৯১
আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যে, জাবির (রাদি.) বলেন, আমি, আমার পিতা আবদুল্লাহ এবং আমার মামা আকাবায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলাম।
(আঃপ্রঃ ৩৬০৪, ইঃফাঃ ৩৬০৯)
৩৮৯২
আবু ইদরীস আইযুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যে, উবাদাহ ইবনু সামিত (রাদি.) যিনি নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে বদর যুদ্ধে এবং আকাবার রাতে উপস্থিত সাহাবীদের মধ্যে ছিলেন – তিনি আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সাহাবীদের একটি দলকে লক্ষ্য করে বলিলেন, এস তোমরা আমার কাছে একথার উপর বায়আত [১] কর যে, তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে কোন কিছুকে শরীক করিবে না, তোমরা চুরি করিবে না, তোমরা ব্যভিচার করিবে না; তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করিবে না, তোমরা অপবাদ আরোপ করিবে না যা তোমরা নিজে হইতে বানিয়ে নাও, তোমরা নেক কাজে আমার নাফরমানী করিবে না, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এসব শর্ত পূরণ করে চলবে সে আল্লাহ তাআলার নিকট তার প্রতিদান অবশ্যই পাবে। আর যে এ সবের কোন কিছুতে লিপ্ত হয় এবং তাকে এ কারণে দুনিয়াতে শাস্তি দেয়া হয়, তবে এ শাস্তি তার প্রতি কাফ্ফারা হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এ সবের কোনটিতে লিপ্ত হল আর আল্লাহ তা গোপন রাখেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ওপর ন্যস্ত। তিনি ইচ্ছা করলে শাস্তি দিবেন আর ইচছা করলে ক্ষমা করবেন। উবাদাহ (রাদি.) বলেন, আমিও এসব শর্তের উপর নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট হাতে বায়আত করেছি।
(আঃপ্রঃ ৩৬০৫, ইঃফাঃ ৩৬১০)
[১] বায়আত শব্দের সাধারণ অর্থ বিক্রি করা। শরঈয়াতের পরিভাষায় এর বিশেষ অর্থ হলোঃ কারো আনুগত্যের অঙ্গীকার করা, কারো কথা পালন করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়া।
৩৮৯৩
উবাদাহ ইবনু সামিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ঐ মনোনীত প্রতিনিধি দলে ছিলাম, যারা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে বায়আত গ্রহণ করেছিল। তিনি আরও বলেন, আমরা তাহাঁর কাছে বায়আত গ্রহণ করেছিলাম জান্নাত লাভের জন্য যদি আমরা এই কাজগুলো করি এই শর্তে যে, আমরা আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকেই শরীক করব না, ব্যভিচার করব না, চুরি করব না। আল্লাহ যাতে হত্যা করা হারাম করিয়াছেন, তাকে না হক হত্যা করব না, লুটতরাজ করব না এবং নাফরমানী করব না। আর যদি আমরা এর মধ্যে কোনটিতে লিপ্ত হই, তাহলে এর ফয়সালা আল্লাহ তাআলার উপর।
(আঃপ্রঃ ৩৬০৬, ইঃফাঃ ৩৬১১)
৬৩/৪৪. অধ্যায়ঃ আয়েশা (রাদি.) এর সঙ্গে নাবী (সাঃআঃ) এর বিবাহ, তাহাঁর মদীনা উপস্থিতি এবং আয়েশা (রাদি.) – এর সঙ্গে তাহাঁর বাসর।
৩৮৯৪
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদীনায় এলাম এবং বনু হারিস গোত্রে অবস্থান করলাম। সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম। এতে আমার চুল পড়ে গেল। পরে যখন আমার মাথার সামনের চুল জমে উঠল। সে সময় আমি একদিন আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চ:স্বরে ডাকলেন। আমি তাহাঁর কাছে এলাম। আমি বুঝতে পারিনি, তার উদ্দেশ্য কী? তিনি আমার হাত ধরে ঘরের দরজায় এসে আমাকে দাঁড় করালেন। আর আমি হাঁফাচ্ছিলাম। শেষে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুটা প্রশমিত হল। এরপর তিনি কিছু পানি নিলেন এবং তা দিয়ে আমার মুখমণ্ডল ও মাথা মাসেহ করে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তাঁরা বলিলেন, কল্যাণময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যমণ্ডিত হোক। আমাকে তাদের কাছে দিয়ে দিলেন। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিক করে দিলেন, তখন ছিল দ্বিপ্রহরের পূর্ব মুহূর্ত। হঠাৎ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে দেখে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাঁরা আমাকে তাহাঁর কাছে তুলে দিল। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা।
৩৮৯৫
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে বলেন, দুবার তোমাকে আমায় স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, তুমি একটি রেশমী কাপড়ে আবৃতা এবং আমাকে বলছে ইনি আপনার স্ত্রী, আমি তার ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম, সে মহিলা তুমিই। তখন আমি ভাবছিলাম, যদি তা আল্লাহর পক্ষ হইতে হয়ে থাকে, তবে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন।
৩৮৯৬
হিশাম এর পিতা হইতে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর মদীনার দিকে বের হওয়ার তিন বছর আগে খাদীজাহ (রাদি.) – এর মৃত্যু হয়। তারপর দুবছর অথবা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করে তিনি আয়েশা (রাদি.) – কে বিবাহ করেন। যখন তিনি ছিলেন ছয় বছরের বালিকা। তারপর নয় বছর বয়সে বাসর উদযাপন করেন।
Leave a Reply