আয়েশাহ (রাদি.)-এর মর্যাদা।
আয়েশাহ (রাদি.)-এর মর্যাদা। >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
৬২/৩০. অধ্যায়ঃ আয়েশাহ (রাদি.)-এর মর্যাদা।
৩৭৬৮
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, হে আয়েশা! জিবরাঈল (আরবী) তোমাকে সালাম বলেছেন। আমি উত্তরে বললাম, “ওয়া আলাইহিস্ সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আপনি যা দেখিতে পান আমি তা দেখিতে পাই না। এ কথা দ্বারা তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বুঝিয়েছেন।
(আঃপ্রঃ ৩৪৮৬, ইঃফাঃ ৩৪৯৪)
৩৭৬৯
আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, পুরুষদের মধ্যে অনেকেই পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়েছে, কিন্তু নারীদের মধ্যে মারইয়াম বিনত ইমরান ও ফিরাউনের স্ত্রী আসিয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ছাড়া অন্য কেউ তাদের মত পূর্ণতাপ্রাপ্ত হননি। আর আয়েশা (রাদি.)-এর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অন্যান্য নারীদের উপর এমন যেমন সারীদ অর্থাৎ গোশ্ত এবং রুটি দ্বারা তৈরী খাদ্য বিশেষ এর মর্যাদা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের উপর।
(আঃপ্রঃ ৩৪৮৭, ইঃফাঃ ৩৪৯৫)
৩৭৭০
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি, আয়েশা (রাদি.)-এর মর্যাদা নারীদের উপর এমন যেমন সারীদের মর্যাদা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের উপর।
(আঃপ্রঃ ৩৪৮৮, ইঃফাঃ ৩৪৯৬)
৩৭৭১
কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাদি.) যখন (মৃত্যু) রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। তখন ইবনু আব্বাস (রাদি.) এসে বলিলেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আপনি প্রথম সত্যবাদী রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ও আবু বকর-এর নিকট যাচ্ছেন।
(আঃপ্রঃ ৩৪৮৯, ইঃফাঃ ৩৪৯৭)
৩৭৭২
আবু ওয়াইল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী (রাদি.) তাহাঁর স্বপক্ষে জিহাদে সাহায্য করার জন্য লোক সংগ্রহের জন্য আম্মার ও হাসান (রাদি.)-কে কুফায় পাঠান। আম্মার (রাদি.) তাহাঁর ভাষণে একদা বলিলেন, এ কথা আমি ভালভাবেই জানি যে, আয়েশা (রাদি.) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর দুনিয়া ও আখিরাতের সম্মানিতা স্ত্রী। কিন্তু এখন আল্লাহ তোমাদেরকে পরীক্ষা করছেন যে তোমরা কি আলী (রাদি.)-এর আনুগত্য করিবে, না আয়েশা (রাদি.)-এর আনুগত্য করিবে?
(আঃপ্রঃ ৩৪৯০, ইঃফাঃ ৩৪৯৮)
৩৭৭৩
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আসমা (রাদি.)-এর নিকট হইতে একটি হার চেয়ে নিয়েছিলেন। পরে হারটি হারিয়ে যায়। এর অনুসন্ধানে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কিছু সাহাবীকে পাঠালেন। ইতোমধ্যে সলাতের সময় হয়ে গেলে তাঁরা পানির অভাবে উযূ ব্যতীতই সলাত আদায় করিলেন। তাঁরা নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে এই বিষয়ে অভিযোগ পেশ করিলেন। তখন তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হল। উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাদি.) বলিলেন, (হে আয়েশা) আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদানে পুরস্কৃত করুন। আল্লাহর কসম! যখনই আপনি কোন সমস্যায় পড়েছেন, তখনই আল্লাহ তাআলা তা থেকে আপনাকে বের করে এনেছেন এবং মুসলিমদের জন্য এর মধ্যে বরকত রেখে দিয়েছেন।
(আঃপ্রঃ ৩৪৯১, ইঃফাঃ ৩৪৯৯)
৩৭৭৪
উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন মৃত্যু রোগে আক্রান্ত তখন সহধর্মিনীদের ঘরে পালাক্রমে থাকতে লাগলেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আয়েশা (রাদি.)-এর ঘরে অবস্থানের ইচ্ছায় এ কথাটি বলিতেন, “আগামীকাল আমি কার ঘরে থাকব? আগামীকাল আমি কার ঘরে থাকব? আয়েশা (রাদি.) বলেন, আমার ঘরে অবস্থানের দিনই তিনি শান্তি লাভ করিলেন।
(আঃপ্রঃ ৩৪৯২, ইঃফাঃ ৩৫০০)
৩৭৭৫
উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকেরা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে হাদীয়া প্রদানের জন্য আয়েশা (রাদি.)-এর গৃহে তাহাঁর অবস্থানের দিন হিসাব করিতেন। আয়েশা (রাদি.) বলেন, একদা আমার সতীনগণ উম্মু সালামাহ (রাদি.)-এর নিকট সমবেত হয়ে বলিলেন, হে উম্মু সালামাহ! আল্লাহর কসম, লোকজন তাদের উপঢৌকনসমূহ প্রেরণের জন্য আয়েশা (রাদি.)-এর গৃহে অবস্থানের দিন গণনা করেন। আয়েশা (রাদি.)-এর মত আমরাও কল্যাণ আকাঙ্ক্ষা করি। আপনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলুন, তিনি যেন লোকদের বলে দেন, তারা যেন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যেদিন যেখানেই অবস্থান করেন সেখানেই তারা হাদীয়া পাঠিয়ে দেন। উম্মু সালামাহ রাযিআল্লাহু তাআলা আনহা বলেন, তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে এ বিষয়ে উল্লেখ করিলেন। উম্মু সালামাহ (রাদি.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমার কথা শুনে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরে আমার গৃহে অবস্থানের জন্য পুনরায় আসলে আমি ঐ কথা তাঁকে বলি। এবারও তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তৃতীয়বারেও আমি ঐ কথা তাঁকে বললাম, তিনি বলিলেন, হে উম্মু সালামাহ! আয়েশা (রাদি.)-এর ব্যাপারে তোমরা আমাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহর কসম, তোমাদের মধ্যে আয়েশা (রাদি.) ছাড়া অন্য কারো শয্যায় শায়িত থাকা কালীন আমার উপর ওয়াহী নাযিল হয়নি।
(আঃপ্রঃ ৩৪৯৩, ইঃফাঃ ৩৫০১)
Leave a Reply