আহার সংক্রান্ত হাদীস

আহার সংক্রান্ত হাদীস

আহার সংক্রান্ত হাদীস >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৭০, আহার সংক্রান্ত, অধ্যায়ঃ (১-৫৯)=৫৯টি

৭০/১. অধ্যায়ঃ ‎আল্লাহ তাআলার বাণীঃ আমি যে রিয্‌ক তোমাদের দিয়েছি তা থেকে পবিত্রগুলো আহার কর- (সুরা ‎আল-বাক্বারাহ ২/১৭২)।. তিনি আরও বলেনঃ তোমাদের উপার্জিত পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর- ‎‎(সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২৬৭)। ‎
৭০/২. অধ্যায়ঃ আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা।
৭০/৩. অধ্যায়ঃ ‎আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা।
৭০/৪. অধ্যায়ঃ ‎সঙ্গীর পক্ষ থেকে কোন অসন্তুষ্টির নিদর্শন না দেখলে পাত্রের সবদিক থেকে খুঁজে খুঁজে খাওয়া।
৭০/৫. অধ্যায়ঃ আহার ও অন্যান্য কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা।
৭০/৬. অধ্যায়ঃ পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৭০/৭. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ অন্ধের জন্য দোষ নেই,……… যাতে তোমরা বুঝতে পার। (সুরা আন্-নূর ২৪/৬১)
৭০/৮. অধ্যায়ঃ নরম রুটি খাওয়া এবং টেবিল ও (চামড়ার) দস্তরখানে খাওয়া।
৭০/৯. অধ্যায়ঃ ছাতু
৭০/১০. অধ্যায়ঃ কোন খাবারের নাম বলে চিনে না নেয়া পর্যন্ত নাবী (সাঃআঃ) আহার করিতেন না।
৭০/১১. অধ্যায়ঃ একজনের খাবার দুজনের জন্য যথেষ্ট।
৭০/১২. অধ্যায়ঃ মুমিন ব্যক্তি এক পেটে খায়।
৭০/১৩. অধ্যায়ঃ হেলান দিয়ে আহার করা।
৭০/১৪. অধ্যায়ঃ ভুনা গোশ্‌ত সম্বন্ধে
৭০/১৫. অধ্যায়ঃ খাযীরা সম্পর্কে
৭০/১৬. অধ্যায়ঃ পনির প্রসঙ্গে
৭০/১৭. অধ্যায়ঃ সিলক ও যব প্রসঙ্গে
৭০/১৮. অধ্যায়ঃ গোশত দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে এবং তুলে নিয়ে খাওয়া
৭০/১৯. অধ্যায়ঃ বাহুর গোশত খাওয়া।
৭০/২০. অধ্যায়ঃ চাকু দিয়ে গোশ্‌ত কাটা
৭০/২১. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কখনো কোন খাবারে দোষ-ত্রুটি ধরতেন না।
৭০/২২. অধ্যায়ঃ যবের আটায় ফুঁক দেয়া।
৭০/২৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) ও তাহাঁর সহাবীগণ যা খেতেন।
৭০/২৪. অধ্যায়ঃ তালবীনা প্রসঙ্গে
৭০/২৫. অধ্যায়ঃ সারীদ প্রসঙ্গে
৭০/২৬. অধ্যায়ঃ ভুনা বক্‌রী এবং স্কন্ধ ও পার্শ্বদেশ
৭০/২৭. অধ্যায়ঃ পূর্ববর্তী মনীষীগণ তাঁদের বাড়ীতে ও সফরে গোশ্‌ত এবং অন্যান্য যেসব খাদ্য সঞ্চিত রাখতেন।
৭০/২৮. অধ্যায়ঃ হায়স প্রসঙ্গে
৭০/২৯. অধ্যায়ঃ রৌপ্য খচিত পাত্রে আহার করা
৭০/৩০. অধ্যায়ঃ খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৭০/৩১. অধ্যায়ঃ তরকারী প্রসঙ্গে
৭০/৩২. অধ্যায়ঃ হাল্‌ওয়া ও মধু
৭০/৩৩. অধ্যায়ঃ কদু প্রসঙ্গে
৭০/৩৪. অধ্যায়ঃ ভাইদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা
৭০/৩৫. অধ্যায়ঃ কাউকে খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে নিজে অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া
৭০/৩৬. অধ্যায়ঃ শুরুয়া প্রসঙ্গে
৭০/৩৭. অধ্যায়ঃ শুকনা গোশ্‌ত প্রসঙ্গে
৭০/৩৮. অধ্যায়ঃ একই দস্তরখানে সাথীকে কিছু এগিয়ে দেয়া বা তার নিকট হইতে কিছু নেয়া
৭০/৩৯. অধ্যায়ঃ তাজা খেজুর ও কাঁকুড় প্রসঙ্গে
৭০/৪০. অধ্যায়ঃ রদ্দি খেজুর প্রসঙ্গে
৭০/৪২. অধ্যায়ঃ খেজুর গাছের মাথী খাওয়া প্রসঙ্গে
৭০/৪৩. অধ্যায়ঃ আজওয়া খেজুর প্রসঙ্গে
৭০/৪৪. অধ্যায়ঃ এক সঙ্গে মিলিয়ে একাধিক খেজুর খাওয়া
৭০/৪৫. অধ্যায়ঃ কাঁকুড় প্রসঙ্গে
৭০/৪৬. অধ্যায়ঃ খেজুর বৃক্ষের বারাকাত
৭০/৪৭. অধ্যায়ঃ একই সঙ্গে দুরকম খাদ্য বা সুস্বাদের খাদ্য খাওয়া
৭০/৪৮. অধ্যায়ঃ দশজন দশজন করে মেহমান ভিতরে ডাকা এবং দশজন দশজন করে খেতে বসা ।
৭০/৫০. অধ্যায়ঃ কাবাছ-পিলু গাছের পাতা প্রসঙ্গে
৭০/৫১. অধ্যায়ঃ আহারের পর কুলি করা
৭০/৫২. অধ্যায়ঃ রুমাল দিয়ে মুছে ফেলার আগে আঙ্গুল চেটে ও চুষে খাওয়া
৭০/৫৩. অধ্যায়ঃ রুমাল প্রসঙ্গে
৭০/৫৪. অধ্যায়ঃ খাওয়ার পর কী পড়বে?
৭০/৫৫. অধ্যায়ঃ খাদিমের সঙ্গে আহার করা
৭০/৫৬. অধ্যায়ঃ কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল সিয়াম পালনকারীর মতোএ ব্যাপারে আবু হুরাইরা (রাদি.) থেকে নাবী (সাঃআঃ)-এর একটি হাদিস বর্ণিত আছে।
৭০/৫৮. অধ্যায়ঃ রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে জলদি করিবে না।
৭০/৫৯. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “খাওয়া শেষ হলে তোমরা চলে যাবে।” (সুরা আল-আহযাব ৩৩: ৫৩)

৭০/১. অধ্যায়ঃ ‎আল্লাহ তাআলার বাণীঃ আমি যে রিয্‌ক তোমাদের দিয়েছি তা থেকে পবিত্রগুলো আহার কর- (সুরা ‎আল-বাক্বারাহ ২/১৭২)।. তিনি আরও বলেনঃ তোমাদের উপার্জিত পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর- ‎‎(সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২৬৭)। ‎

তিনি আরও বলেনঃ পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর এবং সৎ কর্মশীল হও। তোমরা যা করছ আমি তা ‎জানি- ‎‎(সুরা আল-মুমিনূন ২৩/৫১)।

৫৩৭৩

আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবীসাঃআঃবলেছেনঃ তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়াও, রোগীর শুশ্রুষা করো এবং বন্দীকে মুক্ত করো। সুফ্ইয়ান বলেছেন, وَالْعَانِي অর্থ বন্দী। [৩০৪৬] আঃপ্রঃ- ৪৯৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯ম খন্ড/৪৮৬৯)

৫৩৭৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-এর পরিবার তাহাঁর ইনতিকাল পর্যন্ত একনাগাড়ে তিনদিন পরিতৃপ্তির সঙ্গে আহার করিতে পাননি। [মুসলিম পর্ব ৫৩/হাদীস ২৯৭৬] (আ.প্র. ৪৯৭৪, ই.ফা. ৯ম/৪৮৭০)

৫৩৭৫

আরেকটি বর্ণনায় আবু হাযিম আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, একদা আমি প্রচণ্ড ক্ষুধা অনুভব করি। তখন উমার ইবনু খাত্তাবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং মহান আল্লাহর (কুরআনের) একটি আয়াতের পাঠ তার থেকে শুনতে চাইলাম। তিনি আয়াতটি পাঠ করে নিজ গৃহে প্রবেশ করিলেন। এদিকে আমি কিছু দূর চলার পর ক্ষুধার প্রচন্ডতায় উপুড় হয়ে পড়ে গেলাম। একটু পরে দেখি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার মাথার কাছে দাড়ানো। তিনি বললেনঃ হে আবু হুরাইরা! আমি লাব্বাইকা ওয়া সাদাইকা (হে আল্লাহর রাসুল আমি হাযির, হে আল্লাহর রাসুল, আপনার সমীপে) বলে সাড়া দিলাম। তিনি আমার হাত ধরে তুললেন এবং আমার অবস্থা বুঝতে পারলেন। তিনি আমাকে বাড়ীতে নিয়ে গেলেন এবং আমাকে এক পেয়ালা দুধ দেওয়ার জন্য আদেশ করিলেন। আমি কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ আবু হুরাইরা! আরো পান কর। আবার পান করলাম। তিনি আবার বললেনঃ আরো। আমি আবার পান করলাম। এমনি কি আমার পেট তীরের মত সমান হয়ে গেল। এরপর আমি উমারের সাথে সাক্ষাৎ করে আমার অবস্থার কথা তাঁকে জানালাম এবং বললামঃ হে উমার! আল্লাহ তাআলা এমন একজন লোকের মাধ্যমে এর বন্দোবস্ত করিয়াছেন যিনি এ ব্যাপারে তোমার চেয়ে অধিক উপযুক্ত। আল্লাহর কসম! আমি তোমার কাছে আয়াতটি পাঠ শুনতে চেয়েছি অথচ আমি তোমার চেয়ে তা ভাল পাঠ করিতে পারি। উমার (রাদি.) বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাকে আপ্যায়ন করিতে পারলে তা আমার নিকট লাল বর্ণের উটের চেয়েও অধিক প্রিয় হত। [৬২৪৬, ৬৪৫২; মুসলিম ৩৬/১৩, হাদীস ২০২২, আহমাদ ১৬৩৩২] (আ.প্র. ৪৯৭৪, ই.ফা. ৯ম/৪৮৭০)

৭০/২. অধ্যায়ঃ আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা।

৫৩৭৬

 উমার ইবনু আবু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি ছোট ছেলে অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর খিদমাতে ছিলাম। খাবার বাসনে আমার হাত ছুটাছুটি করত। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে বললেনঃ হে বৎস! বিসমিল্লাহ বলে ডান হাতে আহার কর এবং তোমার কাছের থেকে খাও। এরপর থেকে আমি সব সময় এ নিয়মেই খাদ্য গ্রহন করতাম। যার যার কাছের থেকে আহার করা। [৫৩৭৭, ৫৩৭৮] (আ.প্র. ৪৯৭৫, ই.ফা. ৪৮৭১)

৭০/৩. অধ্যায়ঃ ‎আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা।

আনাস (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা বিসমিল্লাহ বলবে এবং ‎প্রত্যেকে তার কাছের থেকে আহার করিবে।

৫৩৭৭

আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ উমার ইবনু আবু সালামা (রাদি.) ‎ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহর পুত্র ছিলেন। তিনি বলেনঃ একদিন আমি ‎রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে খাবার খেলাম। আমি পাত্রের সব দিক থেকে খেতে লাগলাম। ‎রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে বললেনঃ নিজের কাছের দিক থেকে খাও। ‎(আঃপ্রঃ- ৪৯৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭২)

৫৩৭৮

আবু নুআইম (রাদি.) ‎ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে একদা কিছু খাবার আনা হলো, তাহাঁর সঙ্গে ‎ছিলেন তার পোষ্য উমার ইবনু আবু সালামা। তিনি বললেনঃ বিসমিল্লাহ বল এবং নিজের কাছের দিক থেকে খাও। ‎(আঃপ্রঃ- ৪৯৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৩)

৭০/৪. অধ্যায়ঃ ‎সঙ্গীর পক্ষ থেকে কোন অসন্তুষ্টির নিদর্শন না দেখলে পাত্রের সবদিক থেকে খুঁজে খুঁজে খাওয়া।

৫৩৭৯

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.)‎ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার এক দর্জি কিছু খাদ্য প্রস্তুত করে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে দাওয়াত ‎করিল। আনাস (রাদি.) বলেনঃ আমিও রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে গেলাম। খেতে বসে ‎দেখলাম, তিনি পাত্রের সবদিক হইতে কদুর টুকরা খুঁজে খুঁজে বের করছেন, সেদিন হইতে আমি কদু পছন্দ করিতে ‎থাকি।(আঃপ্রঃ- ৪৯৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৪)

৭০/৫. অধ্যায়ঃ আহার ও অন্যান্য কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা।

৫৩৮০

আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) পবিত্রতা অর্জন, জুতা পরিধান ‎এবং চুল আঁচড়ানোতে সাধ্যমত ডান দিক থেকে শুরু করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৫)

৭০/৬. অধ্যায়ঃ পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।

৫৩৮১

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু ত্বলহা (রাদি.) উম্মু সুলাইমকে বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর দুর্বল কণ্ঠসুর শুনে বুঝতে পারলাম তিনি ক্ষুধার্ত। তোমার নিকট (খাবার) কিছু আছে কি? তখন উম্মু সুলাইম কয়েকটি যবের রুটি বের করিলেন। তারপর তার ওড়না বের করে এর একাংশ দ্বারা রুটিগুলো পেঁচিয়ে আমার কাপড়ের মধ্যে গুঁজে দিলেন এবং অন্য অংশ আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে আমাকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট পাঠালেন। আনাস (রাদি.) বলেনঃ আমি এগুলো নিয়ে গেলাম এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে মাসজিদে পেলাম। তাহাঁর সঙ্গে অনেক লোক। আমি তাঁদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আবু ত্বলহা তোমাকে পাঠিয়েছে? আমি বললামঃ হাঁ। তখন তিনি বললেনঃ খাবার জন্য? আমি বললামঃ হাঁ। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার সাথীদেরকে বললেনঃ ওঠ। তারপর তিনি চললেন। আমিও তাদের আগে আগে চলতে লাগলাম। অবশেষে আবু ত্বলহার কাছে এসে পৌঁছলাম। আবু ত্বলহা বললেনঃ হে উম্মু সুলাইম! রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তো অনেক লোক নিয়ে এসেছেন। অথচ আমাদের কাছে এ পরিমাণ খাবার নাই যা তাদের খাওয়াব। উম্মু সুলাইম বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল-ই ভাল জানেন। আনাস (রাদি.) বলেনঃ তারপর আবু ত্বলহা গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন। তারপর আবু তালহা ও রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এসে ঘরে প্রবেশ করিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) উম্মু সুলাইমকে ডেকে বললেনঃ তোমার কাছে যা আছে তা নিয়ে আস। উম্মূ সুলাইম ঐ রুটি নিয়ে আসলেন। তিনি আদেশ করলে তা টুকুরা করা হলো। উম্মু সুলাইম (ঘি বা মধুর) পাত্র নিংড়িয়ে তাকেই ব্যঞ্জন বানালেন। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাশাআল্লাহ, এতে যা পড়ার পড়লেন। এরপর বললেনঃ দশজনকে আসতে অনুমতি দাও। তাদের আসতে বলা হলে তারা তৃপ্ত হয়ে আহার করিল এবং তারা বেরিয়ে গেলা। আবার বললেনঃ দশজনকে অনুমতি দাও। তাদের অনুমতি দেওয়া হলো। তারা আহার করে তৃপ্ত হলো এবং চলে গেল। এরপর আরো দশজনকে অনুমতি দেওয়া হলো। সকলেই আহার করিল এবং তৃপ্ত হলো। তারা মোট আশি জন লোক ছিল।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৬)

৫৩৮২

 আবদুর রহমান ইবনু আবু বাক্‌র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার আমরা একশ ত্রিশ জন লোক নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমাদের কারো কাছে কিছু খাবার আছে কি? দেখা গেল, জনৈক ব্যক্তির কাছে প্রায় এক সা পরিমাণ খাবার আছে। এগুলো গুলিয়ে খামীর করা হলো। তারপর দীর্ঘ দেহী, দীর্ঘ কেশী এক মুশরিক ব্যক্তি একটা বক্‌রী হাঁকিয়ে নিয়ে আসল। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এটা কি বিক্রির জন্য, না উপঢৌকন অথবা তিনি বললেনঃ দানের জন্য? লোকটি বললোঃ না, আমি বরং বিক্রি করব। তিনি তার নিকট হইতে সেটি কিনে নিলেন। পরে সেটি যবহ করে বানানো হল। নাবী (সাঃআঃ)-এর কলিজা ইত্যাদি ভুনা করার আদেশ দিলেন। আল্লাহর শপথ! তিনি একশ ত্রিশজনের প্রত্যেককেই এক টুকরা করে কলিজা ইত্যাদি দিলেন। যারা হাযির ছিল তাদের তো দিলেনই। আর যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের জন্যও তিনি টুকরাগুলো উঠিয়ে রাখলেন। তারপর খাবারগুলো দুটো পাত্রে রাখলেন। আমরা সকলে তৃপ্তিসহ আহার করলাম। এরপরও দু পাত্রে খাবার অবশিষ্ট থাকল। আমি তা উটের পিঠে তুলে নিলাম। কিংবা রাবী যা বলেছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৭)

৫৩৮৩

 আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর ইন্তেকাল হল। সে সময় আমরা দুটি কালো জিনিস খেজুর ও পানি খেয়ে তৃপ্ত হলাম।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৮)

৭০/৭. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ অন্ধের জন্য দোষ নেই,……… যাতে তোমরা বুঝতে পার। (সুরা আন্-নূর ২৪/৬১)

৫৩৮৪

সুওয়ায়দ ইবনু নুমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে খাইবারের দিকে বের হলাম। আমরা সাহবা (খাইবারের এক মঞ্জিল দূরে অবস্থিত) নামক স্থানে পৌঁছলে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) খাবার আনতে বলিলেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত আর কিছুই আনা হলো না। আমরা তা-ই গুলে খেলাম। তারপর তিনি পানি আনতে বলিলেন এবং তিনি কুলি করিলেন, আমরাও কুলি করলাম। তারপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সলাত আদায় করিলেন; আর তিনি অযূ করিলেন না। সুফিয়ান বলেনঃ আমি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের কাছে হাদীসটি শুরু হইতে শেষ পর্যন্ত শুনিয়াছি।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৯)

৭০/৮. অধ্যায়ঃ নরম রুটি খাওয়া এবং টেবিল ও (চামড়ার) দস্তরখানে খাওয়া।

৫৩৮৫

ক্বাতাদাহ (রাঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা আনাস (রাদি.)-এর কাছে ছিলাম। তাহাঁর সঙ্গে তাহাঁর বাবুর্চিও ছিল। তিনি বললেনঃ নাবী (সাঃআঃ) আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পাতলা নরম রুটি এবং ভূনা বক্‌রীর গোশ্‌ত খাননি।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮০)

৫৩৮৬

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) কখনও সুকুর্‌জা অর্থাৎ ছোট ছোট পাত্রে আহার করিয়াছেন, তার জন্য কখনও নরম রুটি বানানো হয়েছে কিংবা তিনি কখনো টেবিলের উপর আহার করিয়াছেন বলে আমি জানি না। ক্বাতাদাহকে জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে তাঁরা কিসের উপর আহার করিতেন। তিনি বললেনঃ দস্তরখানের উপর।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮১)

৫৩৮৭

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) সফীয়্যাহর সঙ্গে বাসর করার জন্য অবস্থান করিলেন। আমি তাহাঁর ওলীমার জন্য মুসলিমদের দাওয়াত করলাম। তাহাঁর নির্দেশে দস্তরখান বিছানো হলো। তারপর তার উপর খেজুর, পনির ও ঘি ঢালা হলো। আমর আনাস (রাদি.) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সঙ্গে বাসর করিলেন এবং চামড়ার দস্তরখানে হায়স (ঘি, খেজুর ইত্যাদি মিশিয়ে বানানো খাবার) তৈরী করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮২)

৫৩৮৮

ওয়াহব ইবনু কায়সান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সিরিয়াবাসীরা ইবনু যুবায়রকে ইবনু যাতান নিতাকায়ন বলে লজ্জা দিত। আসমা (রাদি.) তাকে বললেনঃ হে আমার প্রিয় পুত্র! তারা তোমাকে নিতাকায়ন বলে লজ্জা দিয়েছে? তুমি কি নিতাকায় (দু কোমরবন্দ) সমন্ধে কিছু জান? আসলে তা ছিল আমারই কোমরবন্দ যা দুভাগ করে আমি এক অংশ দিয়ে (হিজরাতের সময়) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর খাবারের থলি মুখ বেঁধে দিয়েছিলাম। আর অপর অংশ দস্তরখান বানিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে সিরিয়া বাসীরা যখনই তাঁকে নিতাকায়ন বলে লজ্জা দিতে চাইত, তিনি বলিতেনঃ তোমরা সত্যই বলছ। আল্লাহর শপথ! এটি এমন এক অভিযোগ যা তোমা থেকে লজ্জা আরো দূর করে দেয়।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৩)

৫৩৮৯

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর খালা হাফীদ বিনত হারিস ইবনু হায্‌ন (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) -কে ঘি, পনির এবং যব্ব হাদিয়া দিলেন। তিনি এগুলো তাহাঁর কাছে আনতে বলিলেন। তারপর এগুলো তার দস্তরখানে খাওয়া হলো। তিনি অপছন্দনীয় মনে করে যব্বগুলো খেলেন না। এগুলো হারাম হলে নাবী (সাঃআঃ)-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হতো না। আর তিনি এগুলো খাওয়ার অনুমতিও দিতেন না।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৪)

৭০/৯. অধ্যায়ঃ ছাতু

৫৩৯০

সুওয়ায়দ ইবনু নুমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা একদা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সাহবা নামক স্থানে উপস্থিত ছিলেন। সাহবা ছিল খায়বার থেকে এক মনযিলের দূরত্বে। সলাতের সময় হলে তিনি খাবার আনতে বলিলেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত আর কিছুই পেলেন না। তিনি তাই মুখ নাড়াচাড়া করিলেন, আমরাও তাহাঁর সঙ্গে মুখে নাড়াচাড়া করলাম। তারপর তিনি পানি আনালেন এবং কুলি করে সলাত আদায় করিলেন। আমরাও তাহাঁর সঙ্গে সলাত আদায় করলাম। আর তিনি ওযু করিলেন না।(আঃপ্রঃ- ৪৯৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৫)

৭০/১০. অধ্যায়ঃ কোন খাবারের নাম বলে চিনে না নেয়া পর্যন্ত নাবী (সাঃআঃ) আহার করিতেন না।

৫৩৯১

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাদি.) যাঁকে সাইফুল্লাহ বলা হতো তাহাঁর কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে মাইমূনাহ (রাদি.) এর গৃহে প্রবেশ করিলেন। মাইমূনাহ (রাদি.) তাহাঁর ও ইবনু আব্বাসের খালা ছিলেন। তিনি তাহাঁর কাছে একটি ভুনা যব্ব দেখিতে পেলেন, যা নজ্‌দ থেকে তাহাঁর (মাইমূনাহর) বোন হুদাইফা বিনত হারিস নিয়ে এসে ছিলেন। মাইমূনাহ (রাদি.) যব্বটি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সামনে হাজির করিলেন। তাহাঁর অভ্যাস ছিল, কোন খাদ্যের নাম ও বর্ণনা বলে না দেয়া পর্যন্ত তিনি খুব কমই তার প্রতি হাত বাড়াতেন। তিনি যব্বের দিকে হাত বাড়ালে উপস্থিত মহিলাদের মধ্যে একজন বললঃ তোমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সামনে যা পেশ করেছ সে সম্বন্ধে তাঁকে অবহিত কর। বলা হলঃ হে আল্লাহর রাসুল! ওটা যব্ব। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর হাত উঠিয়ে নিলেন। খালিদ বিন ওয়ালীদ (রাদি.) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! যব্ব খাওয়া কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। কিন্তু যেহেতু এটা আমাদের এলাকায় নেই। তাই এটি খাওয়া আমি পছন্দ করি না। খালিদ (রাদি.) আমি সেটা টেনে নিয়ে খেতে থাকলাম। আর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। [৩৬][৫৪০০, ৫৫৩৭; মুসলিম ৩৪/৭, হাদীস ১৯৪৫, ১৭৪৬, আহমাদ ১৬৮১৫] আঃপ্রঃ- ৪৯৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৬)

[৩৬] (আরবী) (যব্ব) নামক গুই সাপের মত (কিন্তু গুই সাপ নয় এমন) এক রকম জীব মরুভূমিতে পাওয়া যায় যা খাওয়া হালাল। আল্লাহ তাআলা নানাবিধ হালাল বস্তু আমাদেরকে দিয়েছেন খাওয়ার জন্য। হালাল খাদ্য যার যেটা রুচি ও পছন্দ সেটা সে খাবে, কোনটা রুচি না হলে খাবে না। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যব্ব খাওয়া হারাম করেননি। কিন্তু অন্যেরা তাহাঁর সামনে তা খেয়েছেন যদিও রুচি হয়নি বলে বলে নিজে তিনি তা খাননি। অরুচির কারনে হালাল জিনিসকে হারাম বলা যাবে না।

৭০/১১. অধ্যায়ঃ একজনের খাবার দুজনের জন্য যথেষ্ট।

৫৩৯২

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ দুজনের খাদ্য তিনজনের জন্য যথেষ্ট এবং তিনজনের খাদ্য চারজনের জন্য যথেষ্ট। [মুসলিম ৩৬/৩৩, হাদীস ২০৫৮, আহমাদ ৭৩২৪] আঃপ্রঃ- ৪৯৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৭)

৭০/১২. অধ্যায়ঃ মুমিন ব্যক্তি এক পেটে খায়।

এ সম্পর্কে নাবী (সাঃআঃ) হইতে আবু হুরাইরা এর হাদীস

৫৩৯৩

মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্‌শার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু উমার (রাদি.) ততক্ষণ পর্যন্ত আহার করিতেন না যতক্ষণ না তাহাঁর সঙ্গের খাওয়ার জন্য একজন মিসকীনকে ডেকে আনা হতো। একদা আমি তাহাঁর সঙ্গে বসে খাওয়ার জন্য এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসলাম। লোকটি খুব অধিক আহার করিল। তিনি বললেনঃ নাফি! এমন মানুষ কে আমার কাছে নিয়ে আসবে না। আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি, মুমিন এক পেটে খায়। আর কাফির সাত পেটে খায়।[৫৩৯৪; মুসলিম ৩৬/৩৪, হাদীস ২০৬০, আহমাদ ১৫২২০] আঃপ্রঃ- ৪৯৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৮)

৫৩৯৪

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুমিন এক পেটে খায় আর কাফির অথবা বলেছেন, মুনাফিক; রাবী বলেন, এ দুটি শব্দের মধ্যে আমার সন্দেহ আছে যে, বর্ণনাকারী কোনটি বলেছেন- উবাইদুল্লাহ বলেনঃ সাত পেটে খায়।

ইবনু বুকাইর বলেন, মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সূত্রে ইবনু উমার থেকে এবং তিনি নাবী (সাঃআঃ) থেকে একই রকম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৯)

৫৩৯৫

 আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু নাহীক খুব বেশী ভোজনকারী লোক ছিলেন। ইবনু উমার (রাদি.) তাঁকে বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কাফির সাত পেটে খায়। আবু নাহীক বললেনঃ আমি তো আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের প্রতি ঈমান পোষণ করি। [৫৩৯৪; মুসলিম ৩৬/৩৪, হাদীস ২০৬০, ২০৬১, আহমাদ ১৫২২০] আঃপ্রঃ- ৪৯৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯০)

৫৩৯৬

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুমিন এক পেটে খায় আর কাফির সাত পেটে খায়। [৩৭][৫৩৯৭; মুসলিম ৩৬/৩৫, হাদীস ২০৬২, ২০৬৩, আহমাদ ৭৭৭৭] আঃপ্রঃ- ৪৯৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯১)

[৩৭] বর্তমানে বারবার একথার উপর জোর দেয়া হছে যে, কম আহার করুন বেশী দিন বাঁচতে পারবেন। আর জনসাধারণকে বারবার এ কথার উপকারীতা বর্ণনা করা হচ্ছে। বেশী খেলে যে সকল রোগ সৃস্টি হয় তার একটি তালিকা প্রণয়ন করিয়াছেন প্রফেসার রিচার বার্ড। নিম্নে তা দেয়া হলঃ

১। মস্তিষ্কের ব্যাধি। ২। চক্ষু রোগ। ৩। জিহ্বা ও গলার রোগ। ৪। বক্ষ ও ফুসফুসের ব্যাধি। ৫। হৃদ রোগ। ৬। যকৃত ও পিত্তের রোগ। ৭। ডায়াবেটিস। ৮। উচ্চ রক্ত চাপ। ৯। মস্তিষ্কের শিরা ফেটে যাওয়া। ১০। দুশ্চিন্তাগ্রস্ততা। ১১। অর্ধাঙ্গ রোগ। ১২। মনস্তাত্ত্বিক রোগ। ১৩। দেহের নিম্নাংশ অবশ হয়ে যাওয়া। (“সান” উইকলি সুইডেন)

গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, এই তালিকা প্রকৃত পক্ষে মৃত্যুর তালিকা, যা প্রফেসার সাহেব গভীর চিন্তা ও গবেষণার পর প্রকাশ করিয়াছেন। কিন্তু অপর দিকে নাবী (সাঃআঃ)-এর বর্ণনার প্রতি দৃষ্টিপাত করুন।

নাবী (সাঃআঃ) বলেন পেটের এক তৃতীয়াংশ ভাগ আহারের জন্য, এক তৃতীয়াংশ ভাগ পানির জন্য আর এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য। [হাদীসটি ইবনু মাজাহ বর্ণনা করিয়াছেন, হাদীসটি সহীহ, “সহীহ ইবনু মাজাহ” (৩৩৪৯)]।

একজন দার্শনিকের নিকট যখন রসূলের এ নির্দেশ শুনান হল তখন সে বলিতে লাগল, এর থেকে উত্তম ও শক্তিশালী কথা আমি আজ পর্যন্ত শ্রবণ করিনি।

পেটের এক তৃতীয়াংশ পানি দিয়ে পূর্ণ করিতে বলার কারণ, পানির মধ্যেও বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে

পানির উপকারীতা নিম্নরূপঃ

* শরীরে পানির অভাব পূরন করা, * রক্তের তরলতা বজায় রাখা, * শরীর হইতে অপ্রয়োজনীয় দূষিত জিনিষ নির্গত করিতে সাহায্য করা, * খাদ্য দ্রব্য হজম করিতে সাহায্য করা, * শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, * শরীরের অম্ল-ক্ষারের স্বাভাবিকতা ঠিক রাখা, * হরমোন তৈরী করিতে অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করা।

৫৩৯৭

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

এক লোক খুব বেশী পরিমাণে আহার করত। লোকটি মুসলিম হলে অল্প আহার করিতে লাগল। ব্যপারটি নাবী (সাঃআঃ) এক কাছে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেনঃ মুমিন এক পেটে খায়, আর কাফির খায় সাত পেটে।[৫৩৯৯; মুসলিম ৩৬/৩৫, হাদীস ৬০৬৩, ৬০৬৪, আহমাদ ৭৭৭৭] আঃপ্রঃ- ৪৯৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯২)

৭০/১৩. অধ্যায়ঃ হেলান দিয়ে আহার করা।

৫৩৯৮

আবু জুহাইফাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি হেলান দিয়ে খাদ্য গ্রহন করি না। [৩৮](আঃপ্রঃ- ৪৯৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৩)

[৩৮] ইসলাম হেলান দিয়ে বসে খানা খেতে নিষেধ করেছে। কেননা হেলান দিয়ে খাবারের মধ্যে তিনটি অপকারিতা রয়েছে।

১। সঠিক ভাবে খাবার চিবানো যায় না, ফলে যে পরিমাণ লালা খাদ্যের সাথে মিশ্রিত হওয়ার কথা ছিল তা হয় না যার কারণে পাকস্থলীতে মাড় বিশিষ্ট খাবার হজম হয় না, ফলে হজম প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

২। হেলান দিয়ে বসলে পাকস্থলি প্রশস্ত হয়ে যায় যার ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার পেটে গিয়ে হজম প্রক্রিয়াতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

৩। হেলান দিয়ে খাবারের ফলে অন্ত্র এবং যকৃতের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একথা অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত। (সুন্নাতে রাসুল (সাঃআঃ) ও আধুনিক বিজ্ঞান- ডাঃ মুহাম্মাদ তারেক মাহমুদ)

৫৩৯৯

আবু জুহাইফাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে ছিলাম। তিনি তাহাঁর নিকট উপবিষ্ট জনৈক ব্যক্তিকে বললেনঃ আমি হেলান দিয়ে খাবার খাই না।(আঃপ্রঃ- ৪৯৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৪)

৭০/১৪. অধ্যায়ঃ ভুনা গোশ্‌ত সম্বন্ধে

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “সে এক কাবাব করা বাছুর নিয়ে আসল।” (হূদ ১১ : ৬৯) —- অর্থাৎ ভূনা ‎করা।

৫৪০০

খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট ভুনা যবব আনা হলে তিনি তা খাওয়ার উদ্দেশে হাত বাড়ালেন। তখন তাঁকে বলা হলোঃ এটাতো যবব, এতে তিনি হাত গুটিয়ে নিলেন। খালিদ জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। যেহেতু এটা আমাদের এলাকায় নেই তাই আমি এটা খাওয়া পছন্দ করি না। তারপর খালিদ তা খেতে থাকলেন, আর রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) দেখছিলেন। মালিক, ইবনু শিহাব হইতে بِضَبٍّ مَشْوِيٍّ এর স্থলেبِضَبٍّ مَحْنُوذٍ বলেছেন। [৫৩৯১] (আঃপ্রঃ- ৪৯৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৫)

৭০/১৫. অধ্যায়ঃ খাযীরা সম্পর্কে

নায্‌র বলেছেনঃ খাযীরা ময়দা দিয়ে এবং হারীরা দুধ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়।

৫৪০১

ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইতবান ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এক বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী আনসান সাহাবীদের একজন। একবার তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে বলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমি আমার গোত্রের লোকদের নিতে সলাত আদায় করি। কিন্তু বৃষ্টি হলে আমার ও তাদের মধ্যকার উপত্যকায় পানি প্রবাহিত হয়। তখন আমি তাদের মসজিদে আসতে পারি না যে, তাদের নিয়ে সলাত আদায় করব। তাই হে আল্লাহর রাসুল! আমার আকাঙ্ক্ষা, আপনি এসে যদি আমার ঘরে সলাত আদায় করিতেন, তাহলে আমি সে স্থান সলাতের জন্য নির্ধারণ করে নিতাম। তিনি বললেনঃ ইনশাআল্লাহ আমি শীঘ্রই তা করব। ইতবান (রাদি.) বলেনঃ পূর্ণরূপে সূর্য কিছু উপরে উঠলে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ও আবু বকর (রাদি.) আসলেন। নাবী (সাঃআঃ) অনুমতি চাইলেন। আমি তাকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই সঙ্গে সঙ্গেই ঘরে প্রবেশ করে আমাকে বললেনঃ তোমার ঘরের কোন স্থানে আমার সলাত আদায় করা তোমার পছন্দ? আমি ঘরের এক দিকে ইশারা করলাম। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলিলেন। আমরা কাতার বাঁধলাম। তিনি দুরাকআত সলাত আদায় করে সালাম ফিরালেন। আমরা যে হাযীরা প্রস্তুত করেছিলাম তা খাওয়ার জন্য তাঁকে বসালাম। তাহাঁর মহল্লার বহু সংখ্যক লোক প্রবেশ করিতে লাগল। তারপর তারা সমবেত হলে তাদের একজন বলিল, মালিক ইবনু দুখশান কোথায়? আরেকজন বললঃ সে মুনাফিক? অন্য একজন বললঃ সে মুনাফিক, সে আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) -কে ভালবাসে না। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এমন কথা বলো না। তুমি কি জান না, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়েছে? লোকটি বললঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল-ই ভাল জানেন। সে আবার বললঃ কিন্তু আমরা যে মুনাফিকদের সঙ্গে তাহাঁর সম্পর্ক ও তাদের প্রতি শুভ কামনা দেখিতে পাই? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তো জাহান্নামকে ঐলোকের জন্য হারাম করে দিয়েছেন যে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করিবে। ইবনু শিহাব বলেনঃ এরপর আমি হুসাইন ইবনু মুহাম্মাদ আনসারী, যিনি ছিলেন বানূ সালিমের একজন নেতৃস্থানীয় লোক, তাকে মাহমূদের এ হাদীসের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি এর সত্যতা স্বীকার করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫০০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৬)

৭০/১৬. অধ্যায়ঃ পনির প্রসঙ্গে

হুমায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি আনাস (রাদি.) কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী (সাঃআঃ) সফীয়্যাহ্র সঙ্গে বাসর যাপন করিলেন। তারপর তিনি (দস্তরখানে) খেজুর, পনির এবং ঘি রাখলেন। আমর ইবনু আমর আনাস থেকে বর্ণনা করেনঃ নাবী (সাঃআঃ) (সেগুলোর মিশ্রণ করে) হায়স তৈরী করেন।

৫৪০২

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমার খালা কয়েকটি যব্ব, কিছু পনির এবং দুধ নাবী (সাঃআঃ) -কে হাদিয়া দিলেন এবং দস্তরখানে যব্ব রাখা হয়। যদি তা হারাম হতো তার দস্তরখানে তা রাখা হতো না। তিনি (শুধু) দুধ পান করিলেন এবং পনির খেলেন। [২৫৭৫; মুসলিম ৩৪০/৭, হাদীস ১৯৪৭] আঃপ্রঃ- ৫০০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৭)

৭০/১৭. অধ্যায়ঃ সিলক ও যব প্রসঙ্গে

৫৪০৩

সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জুমুআর দিন আসলে আমরা খুবই খুশী হতাম। এক বৃদ্ধা আমাদের জন্য সিলক (শালগম জাতীয় এক প্রকার সুস্বাদু সবজী)-এর মূল তুলে তা তাহাঁর হাঁড়িতে চড়িয়ে দিতেন। তারপর এতে অল্প কিছু যব ছেড়ে দিতেন। [৩৯] সলাতের পর আমরা তাহাঁর সঙ্গে দেখা করিতে গেলে তিনি এ খাবার আমাদের সম্মুখে হাজির করিতেন। এ কারণেই জুমুআহর দিন আসলে আমরা খুব খুশী হতাম। আমরা সকালে আহার ও বিশ্রাম গ্রহণ করতাম না জুমুআহর পর ব্যতীত। আল্লাহর কসম! সে খাদ্যে কোন চর্বি থাকত না।(আঃপ্রঃ- ৫০০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৮)

[৩৯] যব খাওয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্যঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর যুগে সাধারণ যবের রুটি খাওয়া হত, আর সেই রুটির শক্তি দ্বারা সাহাবায়ে কেরাম সমগ্র বিশ্বে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করিয়াছেন।

আধুনিক গবেষণা অনুযায়ী যব এক প্রকার বলবর্ধক খাদ্য। এটা পুরাতন আমাশয় রোগ ও কোষ্ট কাঠিন্য নিঃশেষ করে। প্রশান্তি দান করে। দুধে পাকালে উন্নত মানের বল বর্ধক খাবারে পরিণত হয়। আমেরিকাতে হৃদ রুগীদেরকে শুধু যবের খাদ্য পরিবেশন করা হয়, এবং বিয়ার নামক বন্ধ কৌটার মধ্যে এটা সচরাচর পাওয়া যায়।

শিশু রোগ বিশেষ করে শিশুদের লিভার ফেল হয়ে গেলে তার যবের খাদ্য খুবই উপরারী। গ্রীসে যখন অলিম্পিক খেলা আরম্ভ হত তখন খেলোয়াড়দের শক্তি বৃদ্ধির জন্য বিশেষ খাবার হিসেবে “যব” কে নির্বাচন করা হত।

৭০/১৮. অধ্যায়ঃ গোশত দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে এবং তুলে নিয়ে খাওয়া

৫৪০৪

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) একটি স্কন্ধের গোশত দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে খেলেন। [৪০] তারপর তিনি উঠে গিয়ে (নতুনভাবে) অযূ না করেই সলাত আদায় করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫০০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৯)

[৪০] সাধারণতঃ পাশ্চাত্যবাসীরা খাবার গ্রহণের সময় ছুরি, কাটা চামচ ইত্যাদি ব্যবহার করে। এটা আমাদের নাবী (সাঃআঃ) পছন্দ করিতেন না। দাঁত দিয়ে মাংস কাটলে মুখে প্রচুর পরিনাণ লালা গ্রন্থি হইতে লালা নির্গত হয়। উক্ত লালাতে যথেষ্ট পরিনাণ টায়ালিন, মিউসিন ও স্যালিভারী এমাইলেস নামক হজমের এনাজাইম বিদ্যমান থাকে এবং তা খাদ্য দ্রব্য হজমে সাহায্য করে। তাছাড়া খাদ্য দ্রব্য চিবাতে ও গিলতে ঐ লালা খাদ্য নালীকে পিচ্ছিল করে। এটা হলো আধুনিক শরীর বিজ্ঞানের গবেষণার ফল। অথচ দেড় হাজার বছর পূর্বে নাবী (সাঃআঃ) বলে গেছেন যে, দাঁত দ্বারা ছিঁড়ে খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং তিনি নিজেও তা পালন করিয়াছেন। খাদ্য দ্রব্য ভাল করে চিবাতে হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যে খাদ্য দ্রব্য ৩২ বার চিবাতে হয়। (A Hand Book of Social and Preventive Medicine. Yash Pal Bedi, Delhi, 1982, p-215)

৫৪০৫

অন্য সনদে আইয়ুব ও আসিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইকরামাহর সূত্রে ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ নাবী (সাঃআঃ) হাঁড়ি থেকে একটি গোশত যুক্ত হাড় বের করে তা খেলেন। তারপর (নতুন) অযূ না করেই সলাত আদায় করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫০০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৯)

৭০/১৯. অধ্যায়ঃ বাহুর গোশত খাওয়া।

৫৪০৬

আবু ক্বাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে মাক্কাহ অভিমুখে রওয়ানা হলাম।(আঃপ্রঃ- ৫০০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০০)

৫৪০৭

আবু ক্বাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার আমি মক্কার পথে কোন এক মনযিলে নাবী (সাঃআঃ)-এর কিছু সংখ্যক সাহাবীর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের সামনেই অবস্থান করছিলেন। আমি ব্যতীত দলের সকলেই ছিলেন ইহরাম অবস্থায়। আমি আমার জুতা সেলাই করিতে ব্যস্ত ছিলাম। এমন সময় তারা একটি বন্য গাধা দেখিতে পেল। কিন্তু আমাকে জানাল না। তবে তারা আশা করছিল, যদি আমি ওটা দেখতাম! তারপর আমি চোখ ফেরাতেই ওটা দেখে ফেললাম। এরপর আমি ঘোড়ার কাছে গিয়ে তার পিঠে জিন লাগিয়ে তার উপর আরোহণ করলাম। কিন্তু চাবুক ও বর্শার কথা ভুলে গেলাম। কাজেই আমি তাদের বললাম, চাবুক ও বর্শাটি আমাকে তুলে দাও! তারা বললঃ না, আল্লাহর কসম! এ কাজে তোমাকে আমরা কিছুই সাহায্য করব না। এতে আমি রাগান্বিত হলাম এবং নীচে নেমে ওদুটি নিয়ে পুনরায় সাওয়ার হলাম। তারপর আমি গাধাটির পেছনে দ্রুত তাড়া করে তাকে ঘায়েল করে ফেললাম। তখন সেটি মরে গেল এবং আমি তা নিয়ে এলাম (পাকানোর পর) তাড়া সকলে এটা খাওয়া শুরু করিল। তারপর ইহরাম অবস্থায় এটা খাওয়া নিয়ে তারা সন্দেহে পড়ল। আমি সন্ধ্যার দিকে রওনা হলাম এবং এর একটি বাহু লুকিয়ে রাখলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ তোমাদের কাছে এর কিছু আছে? এ কথা শুনে আমি বাহুটি তাহাঁর সামনে পেশ করলাম। তিনি মুহরিম অবস্থায় তা খেলেন, এমন কি এর হাড়ের সঙ্গে সংলগ্ন গোশ্‌তও দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেলেন।

ইবনু জাফর বলেছেনঃ যায়দ ইবনু আসলাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আত্বা ইবনু ইয়াসার-এর সূত্রে আবু ক্বাতাদাহ (রাদি.) থেকে এরকম হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৫০০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০০)

৭০/২০. অধ্যায়ঃ চাকু দিয়ে গোশ্‌ত কাটা

৫৪০৮

 আমর ইবনু উমাইয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ) -কে (রান্না করা) বকরীর কাঁধের গোশ্‌ত নিজ হাতে খেতে দেখেছেন। সলাতের জন্য তাঁকে ডাকা হলে তিনি তা এবং যে চাকু দিয়ে কাটছিলেন সেটিও রেখে দেন। অতঃপর উঠে গিয়ে সলাত আদায় করেন। অথচ তিনি (নতুনভাবে) অযূ করেননি। (আঃপ্রঃ- ৫০০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০১)

৭০/২১. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কখনো কোন খাবারে দোষ-ত্রুটি ধরতেন না।

৫৪০৯

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) কখনো কোন খাবারের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেননি। ভালো লাগলে তিনি খেতেন এবং খারাপ লাগলে রেখে দিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫০০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০২)

৭০/২২. অধ্যায়ঃ যবের আটায় ফুঁক দেয়া।

৫৪১০

আবু হাযিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি সাহল (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনারা কি নাবী (সাঃআঃ)-এর যুগে ময়দা দেখেছেন? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ আপনারা কি যবের আটা চালুনিতে চালতেন? তিনি বললেনঃ না। আমরা ওকে ফুঁক দিতাম।(আঃপ্রঃ- ৫০০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৩)

৭০/২৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) ও তাহাঁর সহাবীগণ যা খেতেন।

৫৪১১

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) একদিন তাহাঁর সাহাবীদের মধ্যে কিছু বণ্টন করে দিলেন। তিনি প্রত্যেককে সাতটি করে খেজুর দিলেন। আমাকেও সাতটি খেজুর দিলেন। তার মধ্যে একটি ছিল খারাপ। তবে সাতটি খেজুরের মধ্যে এটিই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। কারণ, এটি চিবাতে আমার কাছে খুব শক্ত লাগছিল। (তাই এটি বেশি সময় ধরে আমার মুখে ছিল।)(আঃপ্রঃ- ৫০০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৪)

৫৪১২

সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ছিলাম নাবী (সাঃআঃ)-এর সহাবীদের মধ্যে (ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে) সপ্তম। হুবলা (কাঁটা যুক্ত গাছ) বা হাবলা (এক জাতীয় গাছ) ব্যতীত আমাদের খাওয়ার আর কিছুই ছিল না। এমনকি আমাদের কেউ কেউ বকরীর মত মলত্যাগ করত। এরপরও বনূ আসাদ আমাকে ইসলামের ব্যাপারে তিরস্কার করছে? তাহলে তো আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছি আর আমি পণ্ডশ্রম।(আঃপ্রঃ- ৫০০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৫)

৫৪১৩

আবু হাযিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সাহল (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলামঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কি ময়দা খেয়েছেন? সাহল (রাদি.) বললেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন থেকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে পাঠিয়েছেন তখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ময়দা দেখেননি। তিনি আবার তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর যুগে কি আপনাদের চালুনি ছিল? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর পাঠানোর পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি চালুনিও দেখেননি। আবু হাযিম বলেন, আমি বললামঃ তাহলে আপনারা না চেলে যবের আটা কিভাবে খেতেন? তিনি বললেনঃ আমরা যব পিষে তাতে ফুঁক দিতাম, এতে যা উড়ার তা উড়ে যেত, আর যা বাকী থাকত তা মথে নিতাম, তারপর তা খেতাম।(আঃপ্রঃ- ৫০১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৬)

৫৪১৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি একদল লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন যাদের সামনে একটি ভুনা বক্‌রী। তারা তাঁকে (খেতে) ডাকল। তিনি খেতে অস্বীকার করিলেন এবং বললেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) পৃথিবী থেকে চলে গেছেন অথচ তিনি কোন দিন যবের রুটিও পেট ভরে খাননি।(আঃপ্রঃ- ৫০১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৭)

৫৪১৫

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কখনো খিওয়ান (টেবিলের মত উঁচু স্থানে)-এর উপর খাবার রেখে আহার করেননি এবং ছোট ছোট বাটিতেও তিনি আহার করেননি। আর তাহাঁর জন্য কখনো পাতলা রুটি তৈরী করা হয়নি। ইউনুস বলেন, আমি কাত্বাদাহকে জিজ্ঞেস করলামঃ তাহলে তাঁরা কিসের উপর আহার করিতেন? তিনি বললেনঃ দস্তরখানের উপর। [৪১](আঃপ্রঃ- ৫০১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৮)

[৪১] প্যাথলজী এর এক প্রফেসার এ রহস্য উদঘাটন করিয়াছেন যে, যদি সকলে মিলে একত্রে খাবার খায় তাহলে সকল খাবার গ্রহণকারীদের জীবাণু মিলিত হয়ে যায়, যা অন্য সকল রোগ জীবাণুকে নিঃশেষ করে দেয়, এভাবে ঐ খাবার দূষণমুক্ত হয়ে যায়। আবার কখনো খাবারে রোগ আরোগ্যের জীবাণু মিলিত হয়ে সমগ্র খাবারকে আরোগ্য বানিয়ে দেয়, যা পাকস্থলীর রোগের জন্য খুবই উপকারী।

৫৪১৬

কুতাইবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মদিনায় আসার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাহাঁর পরিবারের লোকেরা এক নাগাড়ে তিন রাত গমের রুটি পেট পুরে খাননি।(৬৪৫৪; মুসলিম পর্ব ৫৩/হাদীস ২৯৭০, আহমাদ ২৬৪২৭] আঃপ্রঃ- ৫০১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৯)

৭০/২৪. অধ্যায়ঃ তালবীনা প্রসঙ্গে

৫৪১৭

নাবী (সাঃআঃ)-এর স্ত্রী আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর পরিবারের কোন ব্যক্তি মারা গেলে মহিলারা এসে জড় হলো। তারপর তাহাঁর আত্মীয়রা ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহিলারা ব্যতীত বাকী সবাই চলে গেলে, তিনি ডেগে তালবীনা (আটা, মধু ইত্যাদি দিয়ে তৈরী খাবার) পাক করিতে বলিলেন। তা পাকানো হলো। এরপর সারীদ (গোশতের মধ্যে রুটির টুকরো দিয়ে তৈরী খাবার) প্রস্তুত করা হলো এবং তাতে তালবীনা ঢালা হলো। তিনি বললেনঃ তোমরা এ থেকে খাও। কারণ, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তালবীনা রুগ্ন ব্যক্তির হৃদয়ে প্রশান্তি আনে এবং শোক দুঃখ কিছুটা দূর করে। [৪২][৫৬৮৯, ৫৬৯০; মুসলিম ৩৯/৩০, হাদীস ২২১৬, আহমাদ ২৫২৭৪] আঃপ্রঃ- ৫০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১০)

[৪২] আধুনিক গবেষণা এবং নাবী (সাঃআঃ)-এর হাদীস অনুযায়ী যবের উপকারীতাসমূহ অপরিসীম। পাকস্থলী এবং অস্ত্রতে আলসারের রুগীদেরকে সকালের নাস্তায় নাবীর (সাঃআঃ) যামানায় উন্নত মানের ব্যবস্থা পত্র স্বরূপ তালবীনা প্রদান করা হত (যব পিষিয়ে, দুধে পাকিয়ে তাতে মধু মিশ্রিত করলে তাকে তালবীনা বলা হয়) এতে আলসারের প্রতিটি রুগী ২/৩ মাসের মধ্যে আরোগ্য লাভ করত। প্রসাবের সাথে রক্ত ও পূঁজ পড়া রুগীদের, তা যে কারণেই হোক না কেন, উপযুক্ত চিকিৎসার সাথে যবের পানি যদি মধুর সাথে মিশ্রণ করে পান করান যায় তাহলে এ রোগ পনের দিনের মধ্যে নিঃশেষ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আবার কখনো এ পদ্ধতি পেটের পাথর বের করার জন্যও খুব কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। পুরাতন কোষ্ট কাঠিন্যের জন্য যবের দলিয়া থেকে উত্তম কোন ঔষধ পাওয়া মুশকিল।

৭০/২৫. অধ্যায়ঃ সারীদ প্রসঙ্গে

৫৪১৮

আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কামেল হইতে পেরেছে। কিন্তু স্ত্রীলোকদের মধ্য ইমরান কন্যা মারইয়াম এবং ফিরাউন পত্নী আসিয়া ছাড়া অন্য কেউই কামেল হইতে পারেনি। স্ত্রী লোকদের মধ্যে আয়েশাহর মর্যাদাও তেমন, খাদ্যের মধ্যে যেমন সারীদের মর্যাদা।(আঃপ্রঃ- ৫০১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১১)

৫৪১৯

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সমস্ত স্ত্রী লোকদের মধ্যে আয়েশাহর মর্যাদা তেমন, খাদ্যের মধ্যে যেমন সারীদের মর্যাদা। (আঃপ্রঃ- ৫০১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১২)

৫৪২০

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে তাহাঁর এক দর্জি গোলামের বাড়ীতে গেলাম। সে তাহাঁর সম্মুখে সারীদের পেয়ালা হাজির করিল এবং নিজের কাজে লেগে গেল। আনাস (রাদি.) বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) কদু বেছে নিতে শুরু করলে আমি কদুর টুকরাগুলো বেছে তাহাঁর সামনে দিতে লাগলাম এবং তখন থেকে আমি কদু পছন্দ করিতে শুরু করি।(আঃপ্রঃ- ৫০১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৩)

৭০/২৬. অধ্যায়ঃ ভুনা বক্‌রী এবং স্কন্ধ ও পার্শ্বদেশ

৫৪২১

ক্বাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আনাস ইবনু মালিকের কাছে গেলাম। তাহাঁর বাবুর্চি সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি বললেনঃ আহার কর! নাবী (সাঃআঃ) আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হবার পূর্ব পর্যন্ত পাতলা রুটি দেখেছেন বলে আমার জানা নেই এবং তিনি ভুনা বকরী কখনও চোখে দেখেননি।(আঃপ্রঃ- ৫০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৪)

৫৪২২

 আমর ইবনু উমাইয়্যাহ যামরী (রাদি.) তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) -কে বকরীর ঘাড় থেকে গোশ্‌ত কাটতে দেখেছি। তিনি তা থেকে আহার করিলেন। তারপর যখন সলাতের দিকে আহ্বান করা হল, তখন তিনি উঠলেন এবং চাকুটি রেখে দিয়ে সলাত আদায় করিলেন। অথচ তিনি (নতুন করে) অযূ করেননি।(আঃপ্রঃ- ৫০১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৫)

৭০/২৭. অধ্যায়ঃ পূর্ববর্তী মনীষীগণ তাঁদের বাড়ীতে ও সফরে গোশ্‌ত এবং অন্যান্য যেসব খাদ্য সঞ্চিত রাখতেন।

আবু বাক্‌রের কন্যা আয়েশা ও আসমা (রাদি.) বলেনঃ আমরা নাবী (সাঃ) ও আবু বাক্‌রের জন্য (হিজরতের প্রাক্কালে) পথের খাবার তৈরি করে দিয়েছিলাম।

৫৪২৩

 আবিস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী (সাঃআঃ) কি কুরবানীর গোশ্‌ত তিন দিনের অধিক সময় খেতে নিষেধ করিয়াছেন? তিনি বললেনঃ সেই বছরেই কেবল নিষেধ করেছিলেন, যে বছর মানুষ অনাহারের কবলে পড়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন যেন ধনীরা গরীবদের খাওয়ায়। আমরা তো বকরীর পায়াগুলো তুলে রাখতাম এবং পনের দিন পর তা খেতাম। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলঃ কিসে আপনাদের এগুলো খেতে বাধ্য করত? তিনি হেসে বললেনঃ মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হবার পূর্ব পর্যন্ত তাহাঁর পরিবার পরিজন এক নাগাড়ে তিনদিন তরকারীসহ গমের রুটি পেট ভরে খাননি। অন্য সনদে ইবনু কাসীর বলেছেন, সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবদুর রহমান ইবনু আবিস সূত্রে উক্ত হাদীসটি আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫০২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৬)

৫৪২৪

জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর যুগে আমরা কুরবানীর গোশ্‌ত মাদীনাহ পর্যন্ত সফরের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতাম। মুহাম্মাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু উয়াইনাহ থেকে এরকমই বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনু জুরাইয বলেন, আমি আত্বাকে জিজ্ঞেস করলাম, জাবির (রাদি.) কি এ কথা বলেছেন যে, এমন কি আমরা মাদীনাহ পর্যন্ত এলাম। তিনি বললেনঃ না।(আঃপ্রঃ- ৫০২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৭)

৭০/২৮. অধ্যায়ঃ হায়স প্রসঙ্গে

৫৪২৫

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আবু ত্বলহাকে বললেনঃ তোমাদের ছেলেদের মধ্য থেকে একটি ছেলে খুঁজে আন, যে আমার খেদমত করিবে। আবু ত্বলহা আমাকেই তার সাওয়ারীর পেছনে বসিয়ে নিয়ে আসলেন। তাই আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর খিদমত করিতে থাকলাম। যখনই তিনি কোন মনযিলে অবতরণ করিতেন, আমি তাকে প্রায়ই বলেত শুনতাম, আয় আল্লাহ! আমি তোমার কাছে, অস্বস্তি, দুশ্চিন্তা, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা ঋণের ভার এবং মানুষের আধিপত্য থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি সর্বদা তাহাঁর খিদমতে নিয়োজিত ছিলাম। এই অবস্থায় আমরা খাইবার থেকে প্রত্যাবর্তন করলাম। তিনি [রাসুল (সাঃআঃ) ] গনীমত হিসাবে প্রাপ্ত সফিয়্যা বিনত হুয়ায়কে সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি তাহাঁর সাওয়ার করিলেন। এভাবে যখন আমর সাহবা নামক স্থানে হাজির হলাম, তখন তিনি চামড়ার দস্তরখানে হাইস তৈরী করিলেন। তারপর তিনি আমাকে পাঠালেন। আমি লোকজনকে দাওয়াত করলাম। (তারা এসে) আহার করিল। এই ছিল তাহাঁর সঙ্গে তাহাঁর বাসর যাপন। তারপর তিনি এগিয়ে চললেন। ওহুদ পর্বত নজরে পড়ল, তিনি বললেনঃ এ পর্বতটি আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালোবাসি। [৪৩] তারপর যখন মাদীনাহ তার নজরে পড়ল, তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ! আমি এর দু পর্বতের মধ্যবর্তী এলাকাকে হরম (সম্মানিত) বলে ঘোষণা করছি, যেভাবে ইবরাহীম (আরবী) মাক্কাহকে হরম (সম্মানিত) বলে ঘোষণা করেছিলেন। হ্যাঁ আল্লাহ! এর অধিবাসীদের মুদ ও সা এর মধ্যে বারাকাত দাও।[৩৭১; মুসলিম ১৫/৮৫, হাদীস ১৩৬৫, আহমাদ ১২৬১২] আঃপ্রঃ- ৫০২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৮)

[৪৩] অনেক ভাবতে পারেন যে, “ আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কথা উহুদ পাহাড় আমাদের ভালবাসে- এ আবার কেমন কথা? এই মাটি, পাথর ঘরবাড়ী এদের আবার ভালবাসা, ঘৃণা, হাসি-কান্না আছে নাকি?

জবাবে বলা যায় অবশ্যই আছে। আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তাআলা আল-কুরআনে ঘোষণা করেছেনঃ

আকাশমন্ডলীতে আর যমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর মহানত্ব বর্ণনা করছে। এবং এমন কিছু নেই যা তাহাঁর মহানত্ব ও পবিত্রতা আর মহিমা বর্ণনা করে না; কিন্তু তাদের প্রবিত্রতা ও মহানত্ব বর্ণনা তোমরা অনুধাবন করিতে পার না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ। (সুরা ইসরা ১৭:৪৪)

এ আয়াত প্রমাণ করছে যে, এমন কোন কিছু নেই [তা শুকনা হোক আর কাঁচা হোক] যা আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করে না।

আমরা পশু, পাখী, কীট পতঙ্গের ভাষা বুঝতে পারি না, কিন্তু আল্লাহ তাআলা এ সবগুলোর ভাষা বুঝার ক্ষমতা দিয়েছিলেন সোলায়মান (আঃ) -কে। হুদহুদ পাখী তাহাঁর নির্দেশে সাবার রাণী বিলকিসের নিকট তার পত্র প্রত্যর্পন করেছিল। পিঁপড়াদের কথা শুনে সোলায়মান (আঃ) হেসেছিলেন। জড় পদার্থের আবেগ অনুভূতির আরো একটি বড় প্রমাণ এই যে, আমাদের প্রিয় নাবী (সাঃআঃ)-এর জন্য একটি নতুন মিম্বর নির্মিত হলে সেটির উপর খুৎবা দেয়ার জন্য দাঁড়ালেন। তখন সেই খুটিঁটি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল যাতে হেলান দিয়ে রাসুল (সাঃআঃ) এতদিন খুৎবা দিয়ে আসছিলেন। দুনিয়াতে আমরা মুখ দিয়ে কথা বলছি, কিন্তু হাত, পা, কান চোখ কথা বলিতে পারে না। কিয়ামাতের দিনে আল্লাহর নির্দেশে আমাদের এই হাত-পাগুলোই কথা বলবে দুনিয়ায় আমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে।

৭০/২৯. অধ্যায়ঃ রৌপ্য খচিত পাত্রে আহার করা

৫৪২৬

 আবদুর রহমান ইবনু আবু লাইলা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার তাঁরা হুযাইফাহ (রাদি.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পানি পান করিতে চাইলে এক অগ্নি উপাসক তাঁকে পানি এনে দিল। সে যখনই পাত্রটি তাহাঁর হাতে রাখল, তিনি সেটি ছুঁড়ে ফেললেন এবং বলিলেন, আমি যদি একবার বা দুবারের অধিক তাকে নিষেধ না করতাম, তাহলেও হতো। অর্থ্যাৎ তিনি বলিতে চাইলেন, তা হলেও আমি এমন করতাম না। কিন্তু আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা রেশম বা রেশম জাত কাপড় পরিধান করো না এবং সোনা ও রূপার পাত্রে পান করো না এবং এগুলোর বাসনে আহার করো না। [৪৪] কেননা দুনইয়াতে এগুলো কাফিরদের জন্য আর আখিরাতে তোমাদের জন্য।[৫৬৩২, ৫৬৩৩, ৫৮৩১, ৫৮৩৭; মুসলিম ৩৭/১, হাদীস ২০৬৭, আহমাদ ২৩৩৭৪] আঃপ্রঃ- ৫০২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯১৯)

[৪৪] ডাঃ ব্রাউন বলেন যে, একবার কিং এডওয়ার্ড নিজের শরীরে তীব্র তাপ ও অস্থিরতা অনুভব করিলেন এবং স্বীয় প্রকৃতিতে ক্রোধের প্রকাশ বুঝতে পারলেন। অথচ ইতোপূর্বে এ ধরণের অবস্থা তার কখনো সৃষ্টি হয়নি।

এ ব্যাপারে তিনি ডাক্তারের পরামর্শ নিলেন। ডাক্তারগণ তাকে শরীরে প্রলেপ ও সেবনের জন্য কিছু ঔষধ দিলেন। কিন্তু কোনই ফল হল না। তখন তিনি সর্বদা রেশমী পোষাক পরিধান করিতেন। একবার তিনি রেশমী পোষাক খুলতেই কিছু শান্তি অনুভব করিলেন, তিনি দুদিন যাবৎ অন্য পোষাক পরলেন, দেখিতে পেলেন অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এবার তিনি কিছুদিনের জন্য রেশমী পোষাক ছেড়ে দিলেন। এতে তিনি পূর্ণ সুস্থ্ হয়ে গেলেন।

৭০/৩০. অধ্যায়ঃ খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা

৫৪২৭

আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারী মুমিনের দৃষ্টান্ত কমলার মত, যার ঘ্রাণও চমৎকার স্বাদও মজাদার। যে মুমিন কুরআন পাঠ করে না, তার দৃষ্টান্ত খেজুরের মত, যার কোন সুঘ্রাণ নেই তবে এর স্বাদ মিষ্টি। আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে তার উদাহরন রায়হানার মত, যার সুঘ্রাণ আছে তবে স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে না, তার উদাহরণ হনযালা ফলের ন্যায়, যার সুঘ্রাণও নাই, স্বাদও তিক্ত। (আঃপ্রঃ- ৫০২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২০)

৫৪২৮

আনাস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সমস্ত খাদ্যের মধ্যে সারীদের যেমন মর্যাদা আছে, তেমনি স্ত্রীলোকের মধ্যে আয়েশা (রাদি.)-এর মর্যাদা আছে।(আঃপ্রঃ- ৫০২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২১)

৫৪২৯

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সফর হলো আযাবের একটা টুকরা, যা তোমাদের সফরকারীকে নিদ্রা ও আহার থেকে বিরত রাখে। তাই তোমাদের কারো প্রয়োজন পূরন হয়ে গেলে সে যেন শীঘ্র তার পরিবারের কাছে ফিরে আসে।(আঃপ্রঃ- ৫০২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২২)

৭০/৩১. অধ্যায়ঃ তরকারী প্রসঙ্গে

৫৪৩০

কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বারীরার ঘটনায় শরীয়াতের তিনিটি বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। আয়েশা (রাদি.) তাকে ক্রয় করে মুক্ত করিতে চাইলে তার মালিকেরা বলিল, ওলা (উত্তরাধিকার) আমাদের থাকবে। আয়েশা (রাদি.) বিষয়টি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তুমি ইচ্ছে করলে তাদের জন্য ওলীর শর্ত মেনে নাও। কারন, প্রকৃতপক্ষে ওলীর অধিকারী হল মুক্তিদাতা। তাকে আযাদ করে এখ্‌তিয়ার দেয়া হলো, ইচ্ছে হলে পূর্ব স্বামীর সংসারে তাকে থাকতে কিংবা ইচ্ছে করলে তার থেকে বিচ্ছিন্ন হইতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) একদিন আয়েশাহর গৃহে প্রবেশ করিলেন। সে সময় চুলার উপর ডেকচি ফুটছিল। তিনি সকালের খাবার আনতে বললে তাহাঁর কাছে রুটি ও ঘরের কিছু তরকারী আনা হল। তিনি বলিলেন, আমি কি গোশ্‌ত দেখিনি? তাঁরা বললেনঃ হাঁ (গোশ্‌ত রয়েছে) হে আল্লাহর রাসুল! কিন্তু তা ঐ গোশ্‌ত যা বারীরাহকে সদাকাহ করা হয়েছিল। এরপর সে তা আমাদের হাদিয়া দিয়েছে। তিনি বললেনঃ এটা তার জন্য সদাকাহ, কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়া স্বরূপ।আঃপ্রঃ- ৫০২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৩)

৭০/৩২. অধ্যায়ঃ হাল্‌ওয়া ও মধু

৫৪৩১

 আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হাল্‌ওয়া ও মধু ভালোবাসতেন। [৪৫](আঃপ্রঃ- ৫০২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৪)

[৪৫] জ্ঞান, তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও সুকৌশলের দিক দিয়ে মধুমক্ষিকা সমস্ত পতঙ্গের মধ্যে বিশেষ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। মৌমাছি বিভিন্ন প্রকার ফুল ও ফলের রস চুষে। এই রস তাদের পেটের রসে মধুতে রূপান্তরিত হয়। মধু হল মধুমক্ষিকা ও তাদের সন্তানদের খাবার এবং এটি আমাদের সকলের জন্য সুস্বাদু খাদ্য এবং রোগ নিরাময়ের ব্যবস্থাপত্র বলে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করিয়াছেন। খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রং ভিন্ন হয়। এ কারণেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ পরিলক্ষিত হয়। একটি ছোট প্রানীর পেট থেকে কেমন সুস্বাদু ও উপকারী পানীয় বের হয় অথচ প্রাণীটি স্বয়ং বিষাক্ত। বিষাক্ত প্রানীর দেহে এই রোগ প্রতিষেধক তরল খাদ্য বাস্তবিকই আল্লাহ তাআলার অপার শক্তির মহিমার নিদর্শন এবং চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য চিন্তার খোরাক। মধু বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক, আবার রোগ ব্যাধির জন্যও ফলপ্রদক ব্যবস্থাপত্র। কবিরাজ ও হেকিমগণ সালসা তৈরি করিতে এটি ব্যবহার করেন।

মধু নিজেও নষ্ট হয় না এবং অন্য বস্তুকে দীর্ঘকাল পর্যন্ত নষ্ট হইতে দেয় না। এ কারণেই হেকিম কবিরাজগণ একে এলকোহল এর স্থলে ব্যবহার করেন। মধু বিরোচক এবং পেট থেকে দূষিত পদার্থ অপসারক। অনেকেই বিষনাষক হিসেবে এর ব্যবহার করে থাকেন। মধুর নিরাময় শক্তি ব্যাপক ও স্বতন্ত্র। সাহাবীগণ (রাদি.) মধুর মাধ্যমে ফোঁড়া ও চোখের চিকিৎসা করিতেন। ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিত আছে যে, তাহাঁর শরীরে ফোঁড়া বের হলে তিনি তাতে মধুর প্রলেপ দিতেন (কুরতুবী)। নাবী মোস্তফা (সাঃআঃ) মধু খুব পছন্দ করিতেন। প্রাচীনকাল থেকে আহত স্থান ড্রেসিং করার জন্য মধু ব্যবহার হতো। গবেষকগণ বলেন যে, মধু ত্বকের ক্ষতের জন্য নিরাময়ী। গবেষকদের ধারণা মৌমাছিরা মধু তৈরি করছে আনুমানিক ১০-২০ মিলিয়ন বছর থেকে। সেই প্রাচীনকাল থেকে মানুষ যদিও দেহের ক্ষতস্থান ড্রেসিং করার জন্য এবং আরো অন্যান্য অসুখে মধু ব্যবহার করত তবুও বিজ্ঞানীরা বলেছেন মধুর নিরাময়ী ক্ষমতা এখনো সম্পূর্ণ উন্মোচিত হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা গত বছর পোড়া, ক্ষত ও আঘাতের চিকিৎসার জন্য বিশুদ্ধ মধু ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। এখন উন্নত দেশের বাজারে মধুজাত এবং মধু থেকে সংগৃহীত দ্রব্য দেদারসে আসছে।

৫৪৩২

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি পেট ভরার জন্য যা পেতাম তাতে সন্তুষ্ট হয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সবসময় লেগে থাকতাম। সে সময় রুটি খেত পেতাম না, রেশমী কাপড় পরতাম না, কোন চাকর-চাকরানীও আমার খিদমতে ছিল না। আমি পাথরের সঙ্গে পেট লাগিয়ে রাখতাম। আয়াত জানা সত্ত্বেও কাউকে তা পাঠ করার জন্য বলতাম, যাতে সে আমাকে ঘরে নিয়ে যায় এবং আহার করায়। মিসকীনদের প্রতি অত্যন্ত দরদী ব্যক্তি ছিলেন জাফর ইবনু আবু ত্বলিব (রাদি.)। তিনি আমাদের নিয়ে যেতেন এবং ঘরে যা থাকত তাই আমাদের খাওয়াতেন। এমনকি তিনি আমাদের কাছে ঘির পাত্রটিও বের করে আনতেন, জাতে ঘি থাকত না। আমরা ওটাই ফেড়ে ফেলতাম আর যা থাকত তাই চাটতাম(আঃপ্রঃ- ৫০২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৫)

৭০/৩৩. অধ্যায়ঃ কদু প্রসঙ্গে

৫৪৩৩

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর এক দর্জি গোলামের বাড়ীতে আসলেন। তাহাঁর সামনে কদু উপস্থিত করা হলে তিনি (বেছে বেছে) কদু খেতে লাগলেন। সে দিন থেকে আমিও কদু খেতে ভালোবাসি, যেদিন থেকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে তা খেতে দেখেছি।(আঃপ্রঃ- ৫০৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৬)

৭০/৩৪. অধ্যায়ঃ ভাইদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা

৫৪৩৪

আবু মাসঊদ আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনসার গোত্রের আবু শুআয়ব নামক জনৈক ব্যক্তির এক কসাই গোলাম ছিল। সে তাকে বলিল, আমার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত কর, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে দাওয়াত করিতে চাই। পাঁচজনের মধ্যে তিনি হইবেন একজন। তারপর সে নাবী (সাঃআঃ) -কে দাওয়াত করিল। তিনি ছিলেন পাঁচজনের অন্যতম। তখন এক ব্যক্তি তাদের পিছে পিছে আসতে লাগল। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তুমি তো আমাকে আমাদের পাঁচজনের পঞ্চম ব্যক্তি হিসেবে দাওয়াত দিয়েছ। এ লোকটা আমাদের পিছে চলে এসেছে। তুমি ইচ্ছে করলে তাকে অনুমতি দিতে পার, আর ইচ্ছে করলে বাদও দিতে পার। সে বলিল, আমি বরং তাকে অনুমতি দিচ্ছি।(আঃপ্রঃ- ৫০৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৭)

৭০/৩৫. অধ্যায়ঃ কাউকে খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে নিজে অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া

৫৪৩৫

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ছোট ছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে চলাফেরা করতাম। একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর এক গোলামের কাছে গেলেন, সে ছিল দর্জি। সে তাহাঁর সামনে একটি পাত্র হাযির করিল, যাতে খাবার ছিল। আর তাতে কদুও ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বেছে বেছে কদু খেতে লাগলেন। এ দেখে আমি কদুর টুকরাগুলো তাহাঁর সামনে জমা করিতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ গোলাম তার কাজে লেগে গেল। আনাস (রাদি.) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে যখন এরূপ করিতে দেখলাম যা তিনি করিলেন তারপর থেকে আমিও কদু খাওয়া পছন্দ করিতে লাগলাম।আঃপ্রঃ- ৫০৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৮)

৭০/৩৬. অধ্যায়ঃ শুরুয়া প্রসঙ্গে

৫৪৩৬

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

এক দর্জি কিছু খাবার প্রস্তুত করে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে দাওয়াত করিল। আমিও নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে গেলাম। সে যবের রুটি আর শুরুয়ায় ডুবানো কদু আর শুকনা গোশত হাজির করিল। আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) পেয়ালার চারিদিক থেকে কদু বেছে বেছে খাচ্ছেন। সে দিন থেকে আমিও কদু খেতে পছন্দ করলাম।আঃপ্রঃ- ৫০৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৯)

৭০/৩৭. অধ্যায়ঃ শুকনা গোশ্‌ত প্রসঙ্গে

৫৪৩৭

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে কিছু শুরুয়া হাজির করা হল, যাতে কদু ও শুকনো গোশ্‌ত ছিল। আমি তাঁকে কদু বেছে বেছে খেতে দেখলাম।আঃপ্রঃ- ৫০৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩০)

৫৪৩৮

 আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এ (তিন দিনের অধিক কুরবানীর গোশ্‌ত রাখার) নিষেধাজ্ঞা কেবল সে বছরের জন্যই ছিল, যে বছর লোকে দুর্ভিক্ষে পড়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন ধনীরা যেন গরীবদের খাওয়ায়। নইলে আমরা তো পরবর্তী সময় পায়াগুলো পনের দিন রেখে দিতাম। মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-এর পরিবার পরপর তিন দিন পর্যন্ত তরকারী দিয়ে যবের রুটি পেট ভরে খাননি।(আঃপ্রঃ- ৫০৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩১)

৭০/৩৮. অধ্যায়ঃ একই দস্তরখানে সাথীকে কিছু এগিয়ে দেয়া বা তার নিকট হইতে কিছু নেয়া

ইবনু মুবারক বলেনঃ একজন অপরজনকে কিছু দেয়ায় কোন দোষ নেই । তবে এক দস্তরখান থেকে অন্য দস্তরখানে দিবে না ।

৫৪৩৯

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একজন দর্জি কিছু খাবার প্রস্তুত করে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে দাওয়াত করিল। আনাস (রাদি.) বলেন, আমি সে দাওয়াতে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে গেলাম। লোকটি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সামনে যবের রুটি এবং শুরুয়ায় ডুবানো কদু ও শুকনো গোশ্‌ত পেশ করিল। আনাস (রাদি.) বলেন, আমি দেখলাম, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) পেয়ালার চারিদিক থেকে কদু খুঁজে খাচ্ছেন। সেদিন থেকে আমি কদু ভালবাসতে লাগলাম। সুমামা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আনাস (রাদি.) থেকে বর্ণনা করেনঃ আমি কদুর টুকরাগুলো তার সামনে একত্রিত করিতে লাগলাম।আঃপ্রঃ- ৫০৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩২)

৭০/৩৯. অধ্যায়ঃ তাজা খেজুর ও কাঁকুড় প্রসঙ্গে

৫৪৪০

 আবদুল্লাহ ইবনু জাফর ইবনু আবু ত্বলিব হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে তাজা খেজুর কাঁকুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে দেখেছি। [৫৪৪৭, ৫৪৪৯; মুসলিম ৩৬/২৩, হাদীস ২০৪৩, আহমাদ ১৭৪১] আঃপ্রঃ- ৫০৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩৩)

৭০/৪০. অধ্যায়ঃ রদ্দি খেজুর প্রসঙ্গে

৫৪৪১

আবু উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি সাতদিন পর্যন্ত আবু হুরাইরার মেহমান ছিলাম। (দেখলাম) তিনি, তাহাঁর স্ত্রী ও খাদিম পালাক্রমে রাতকে তিনভাগ করে নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন সলাত আদায় করে অন্যজনকে জাগিয়ে দিলেন। আর আমি তাঁকে এ কথাও বলিতে শুনিয়াছি যে, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সঙ্গীদের মাঝে কিছু খেজুর বন্টন করিলেন। আমি ভাগে সাতটি পেলাম, তার মধ্যে একটি ছিল রদ্দি। (আ. প্র. ৫০৩৮, ই. ফা. ৪৯৩৪)

৫৪৪১/১. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের মাঝে কিছু খেজুর বন্টন করিলেন। আমি ভাগে পেলাম পাঁচটি। চারটি খেজুর (উৎকৃষ্ট) আর একটি রদ্দি। এই রদ্দি খেজুরটিই আমার দাঁতে সবগুলোর চেয়ে শক্তবোধ হল। (আ. প্র. ৫০৩৯, ই. ফা. ৪৯৩৫)

৭০/৪১. অধ্যায়ঃ তাজা ও শুকনা খেজুর প্রসঙ্গে

আর মহান আল্লাহর বাণীঃ “তুমি তোমার দিকে খেজুর গাছের কান্ড নাড়া দাও, তা তোমার জন্য পাকা তাজা খেজুর ঝরাবে।” (সুরা মারইয়াম ১৯/২৫)

৫৪৪২

 আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ইন্তিকাল করেন, তখন আমরা দুটো কালো জিনিস দিয়ে তৃপ্ত হতাম– খেজুর এবং পানি।আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

৫৪৪৩

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মদিনায় এক ইয়াহূদী ছিল। সে আমাকে কর্জ দিত, আমার খেজুর পাড়ার মিয়াদ পর্যন্ত। রুমা নামক স্থানের পথের ধারে জাবির (রাদি.)-এর এক টুকরো জমি ছিল। আমি কর্জ পরিশোধে এক বছর বিলম্ব করলাম। এরপর খেজুর পাড়ার সময়ে ইয়াহূদী আমার কাছে আসল, আমি তখনো খেজুর পাড়তে পারিনি। আমি তার কাছে আগামী বছর পর্যন্ত সময় চাইলাম। সে অস্বীকার করিল। এ খবর নাবী (সাঃআঃ) -কে জানানো হল। তিনি সাহাবীদের বললেনঃ চলো জাবিরের জন্য ইয়াহূদী থেকে সময় নেই। তারপর তাঁরা আমার বাগানে আসলেন। নাবী ইয়াহূদীর সঙ্গে এ নিয়ে কথাবার্তা বলিলেন। সে বললঃ হে আবুল কাসিম! আমি তাকে আর সময় দেব না। নাবী (সাঃআঃ) তার এ কথা শুনে উঠলেন এবং বাগানটির চারিদিকে ঘুরে তার কাছে এসে আবার আলাপ করিলেন। সে এবারও অস্বীকার করিল। এরপর আমি উঠে গিয়ে সামান্য কিছু তাজা খেজুর নিয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে রাখলাম। তিনি কিছু খেলেন। তারপর বললেনঃ হে জাবির! তোমার ছাপড়াটা কোথায়? আমি তাঁকে জানিয়ে দিলাম। তিনি বললেনঃ সেখানে আমার জন্য বিছানা বিছাও। আমি বিছানা বিছিয়ে দিলে তিনি এতে ঢুকে ঘুমিয়ে গেলেন। ঘুম থেকে জাগলে আমি তাহাঁর কাছে আরেক মুষ্টি খেজুর নিয়ে আসলাম। তিনি তা থেকে খেলেন। তারপর উঠে আবার ইয়াহূদীর সঙ্গে কথা বলিলেন। সে অস্বীকার করিল। তখন তিনি দ্বিতীয়বার খেজুর বাগানে গেলেন এবং বললেনঃ হে জাবির! তুমি খেজুর পাড়তে থাকে এবং ঋণ শোধ কর। এই বলে, তিনি খেজুর পাড়ার স্থানে বসলেন। আমি খেজুর পেড়ে ইয়াহূদীর পাওনা শোধ করলাম। এরপর আরও খেজুর উদ্বৃত্ত রইল। আমি বেরিয়ে এসে নাবী (সাঃআঃ) -কে সুসংবাদ দিলাম। তিনি বললেনঃ তুমি সাক্ষী থাক যে, আমি আল্লাহর রাসুল।(আঃপ্রঃ- ৫০৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩৬)

৭০/৪২. অধ্যায়ঃ খেজুর গাছের মাথী খাওয়া প্রসঙ্গে

৫৪৪৪

 আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় তাহাঁর কাছে কিছু খেজুর গাছের মাথী আনা হলো। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এমন একটি গাছ আছে যার বারাকাত মুসলিমের বারাকাতের ন্যায়। আমি ভাবলাম, তিনি খেজুর গাছের কথা বলেছেন। আমি বলিতে চাইলামঃ হে আল্লাহর রাসুল! সেটি কি খেজুর গাছ? কিন্তু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম, আমি উপস্থিত দশ জনের দশম ব্যক্তি এবং সকলের ছোট, তাই আমি চুপচাপ থাকলাম। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ সেটা খেজুর গাছ।(আঃপ্রঃ- ৫০৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩৭)

৭০/৪৩. অধ্যায়ঃ আজওয়া খেজুর প্রসঙ্গে

৫৪৪৫

সাদ (রাদি.) তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেকদিন সকালবেলায় সাতটি আজওয়া (উৎকৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ ও যাদু তার ক্ষতি করিবে না।(আঃপ্রঃ- ৫০৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩৮)

৭০/৪৪. অধ্যায়ঃ এক সঙ্গে মিলিয়ে একাধিক খেজুর খাওয়া

৫৪৪৬

জাবাল ইবনু সুহায়ম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু যুবায়র-এর আমলে আমাদের উপর দুর্ভিক্ষ আসলো। তখন তিনি খাদ্য হিসেবে আমাদের কিছু খেজুর দিলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় আমরা খাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ একত্রে একাধিক খেজুর খেয়ো না। কেননা, নাবী (সাঃআঃ) একসাথে একের বেশি খেজুর খেতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি বলেন, তবে কেউ যদি তার ভাইকে অনুমতি দেয়, তবে তাতে কোন দোষ হইবে না। শুবাহ বলেন, অনুমতির কথাটি ইবনু উমারের নিজস্ব কথা।(আঃপ্রঃ- ৫০৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৩৯)

৭০/৪৫. অধ্যায়ঃ কাঁকুড় প্রসঙ্গে

৫৪৪৭

 আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) -কে কাঁকুড় (ক্ষীরা জাতীয় ফল)-এর সঙ্গে খেজুর খেতে দেখেছি।(আঃপ্রঃ- ৫০৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪০)

৭০/৪৬. অধ্যায়ঃ খেজুর বৃক্ষের বারাকাত

৫৪৪৮

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, গাছের মাঝে একটি গাছ আছে, যা (বারাকাতের ক্ষেত্রে) মুসলিমের ন্যায়, আর তা হল- খেজুর গাছ।(আঃপ্রঃ- ৫০৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪১)

৭০/৪৭. অধ্যায়ঃ একই সঙ্গে দুরকম খাদ্য বা সুস্বাদের খাদ্য খাওয়া

৫৪৪৯

 আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে কাঁকুড়ের সঙ্গে খেজুর খেতে দেখেছি।(আঃপ্রঃ- ৫০৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪২)

৭০/৪৮. অধ্যায়ঃ দশজন দশজন করে মেহমান ভিতরে ডাকা এবং দশজন দশজন করে খেতে বসা ।

৫৪৫০

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর মা উম্মু সুলাইম (রাদি.) এক মুঠ যব নিয়ে তা পিষলেন এবং এ দিয়ে খতীফা (দুধ ও আটা মিলানো খাদ্য) তৈরী করিলেন এবং ঘি-এর পাত্র নিংড়িয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট পাঠালেন। তিনি সহাবাদের মাঝে ছিলেন, এ সময় আমি তাহাঁর কাছে এসে তাঁকে দাওয়াত করলাম। তিনি বললেনঃ আমার সঙ্গে যারা আছে? আমি বাড়ীতে এসে বললাম। তিনি যে জিজ্ঞেস করছেন, আমার সঙ্গে যারা আছেন? তারপর আবু ত্বলহা (রাদি.) তাহাঁর কাছে গিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! অতি অল্প খাদ্য উম্মু সুলাইম তৈরী করেছে। এরপর তিনি বললেনঃ তাহাঁর কাছে সেগুলো আনা হলে তিনি বললেনঃ দশজনকে আমার কাছে প্রবেশ করিতে দাও। তাঁরা এসে তৃপ্ত হয়ে খেলেন। তিনি আবার বললেনঃ আরো দশজনকে আমার কাছে প্রবেশ করিতে দাও। তাঁরা এসে তৃপ্ত হয়ে খেলেন। তিনি আবার বললেনঃ আরো দশজনকে আমার কাছে প্রবেশ করিতে দাও। তাঁরা এসে তৃপ্ত হয়ে খেলেন। এভাবে তিনি চল্লিশ পর্যন্ত উল্লেখ করিলেন। তারপর নাবী (সাঃআঃ) খেলেন এবং চলে গেলেন। আমি দেখিতে লাগলাম, তা থেকে কিছু কমেছে কিনা? (অর্থাৎ কিছুমাত্র কমেনি)।আঃপ্রঃ- ৫০৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৩)

৭০/৪৯. অধ্যায়ঃ রসূন ও (দূর্গন্ধযুক্ত) তরকারী মাকরূহ হওয়া প্রসঙ্গে

এ সম্পর্কে ইবনু উমার (রাদি.) থেকে নাবী (সাঃআঃ)-এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

৫৪৫১

 আবদুল আযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করা হলঃ আপনি রসূন সম্পর্কে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট হইতে কী শুনেছেন? তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি তা খাবে সে যেন আমাদের মাসজিদের কাছেও না আসে (এ কথা শুনিয়াছি)।(আঃপ্রঃ- ৫০৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৪)

৫৪৫২

 আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) মনে করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রসূন বা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের হইতে দূরে থাকে। অথবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাদের মাসজিদ হইতে দূরে থাকে।আঃপ্রঃ- ৫০৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৫)

৭০/৫০. অধ্যায়ঃ কাবাছ-পিলু গাছের পাতা প্রসঙ্গে

৫৪৫৩

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা মাররুয যাহরান নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম এবং পিলু ফল তুলছিলাম। তিনি বললেনঃ কালোটা নিও। কারণ, ওটা বেশি সুস্বাদু। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলঃ আপনি কি বক্‌রী চরিয়েছেন? তিনি বললেনঃ হাঁ। বক্‌রী চরায়নি এমন কোন নাবী আছে কি?আঃপ্রঃ- ৫০৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৬)

৭০/৫১. অধ্যায়ঃ আহারের পর কুলি করা

৫৪৫৪

সুওয়ায়দ ইবনু নুমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে খাইবার অভিযানে রওয়ানা হলাম। সাহবা নামক স্থানে পৌছলে তিনি খাবার আনতে বলিলেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত আর কিছুই আনা হল না। আমরা তা-ই খেলাম। তারপর সলাতের জন্যে উঠে তিনি কুলি করিলেন, আমরাও কুলি করলাম। (আঃপ্রঃ- ৫০৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৭)

৫৪৫৫

ইয়াহইয়া বলেন, আমি বুশাইরকে সুওয়ায়েদ হইতে বর্ণিতঃ

আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে খাইবারের দিকে রওয়ানা হলাম। আমরা যখন সাহবা নামক জায়গায় পৌছলাম, ইয়াহইয়া বলেন, এ স্থানটি খাইবার থেকে এক মনযিলের পথে, তিনি খাবার নিয়ে আসতে বলিলেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত অন্য কিছু আনা হল না। আমরা তাই মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করে খেলাম। তিনি পানি আনতে বলিলেন এবং কুলি করিলেন, আমরাও কুলি করলাম। এরপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সলাত আদায় করিলেন কিন্তু অযু করিলেন না।(আঃপ্রঃ- ৫০৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৭)

৭০/৫২. অধ্যায়ঃ রুমাল দিয়ে মুছে ফেলার আগে আঙ্গুল চেটে ও চুষে খাওয়া

৫৪৫৬

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন আহার করে সে যেন তার হাত না মোছে, যতক্ষণ না সে তা চেটে খায় কিংবা অন্যের দ্বারা চাটিয়ে নেয়। [মুসলিম ৩৬/১৮, হাদীস ২০৩১, আহমাদ ১৯২৪] আঃপ্রঃ- ৫০৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৮)

৭০/৫৩. অধ্যায়ঃ রুমাল প্রসঙ্গে

৫৪৫৭

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আগুনে স্পর্শ বস্তু খাওয়ার পর অযূ করা সম্বন্ধে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ না, অযূ করিতে হইবে না। নাবী (সাঃআঃ)-এর যুগে তো আমরা এমন খাবার কমই পেতাম। যখন আমরা তা পেতাম, তখন আমাদের তো হাতের তালু, হাত ও পা ব্যতীত কোন রুমাল ছিল না (আমরা এগুলো দিয়ে মুছে নিতাম)। তারপর (আবার) অযু না করেই আমরা সলাত আদায় করতাম।(আঃপ্রঃ- ৫০৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৪৯)

৭০/৫৪. অধ্যায়ঃ খাওয়ার পর কী পড়বে?

৫৪৫৮

আবু উমামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর দস্তর খান তুলে নেয়া হলে তিনি বলিতেনঃ পবিত্র বারাকাতময় অনেক অনেক প্রশংসা আল্লাহর জন্য। হে আমাদের রব, এত্থেকে কখনো মুখ ফিরিয়ে নিতে পারব না, বিদায় নিতে পারব না এবং এ থেকে বেপরওয়া হইতেও পারব না।(আঃপ্রঃ- ৫০৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫০)

৫৪৫৯

আবু উমামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন খাদ্য গ্রহণ শেষ করিতেন, রাবী আরো বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর দস্তরখান যখন তুলে নেয়া হতো তখন তিনি বলিতেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি যথেষ্ট খাইয়েছেন এবং পরিতৃপ্ত করিয়াছেন। তা থেকে মুখ ফিরানো যায় না এবং তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যায় না। রাবী কখনো বলেনঃ হে আমাদের রব! তোমার জন্যই সকল প্রশংসা, এর থেকে মুখ ফিরানো যাবে না, একে বিদায় করাও যাবে না এবং এর থেকে বেপরওয়া হওয়া যাবে না; হে আমাদের রব!(আঃপ্রঃ- ৫০৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫১)

৭০/৫৫. অধ্যায়ঃ খাদিমের সঙ্গে আহার করা

৫৪৬০

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কারো খাদিম যখন তার খাবার নিয়ে আসে, তখন তাকে যদি সাথে না বসায় তাহলে সে যেন তাকে এক লুক্‌মা বা দু লুক্‌মা খাবার দেয়, কেননা সে তার গরম ও কষ্ট সহ্য করেছে। [২৫৫৭; মুসলিম ২৭/১০, হাদীস ১৬৬৩, আহমাদ ৭৭৩০] আঃপ্রঃ- ৫০৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫২)

৭০/৫৬. অধ্যায়ঃ কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল সিয়াম পালনকারীর মতোএ ব্যাপারে আবু হুরাইরা (রাদি.) থেকে নাবী (সাঃআঃ)-এর একটি হাদিস বর্ণিত আছে।

৭০/৫৭. অধ্যায়ঃ

কোন ব্যক্তিকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দিলে এ কথা বলা যে, এ ব্যক্তি আমার সঙ্গের।

আনাস (রাদি.) বলেন, তুমি কোন মুসলিমের কাছে গেলে তার খাদ্য থেকে খাও এবং তার পানীয় থেকে পান কর।

৫৪৬১

আবু মাসউদ আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনসার গোত্রের এক ব্যক্তি যার কুনিয়াত (ডাক নাম) ছিল আবু শুআইব তার একটি কসাই গোলাম ছিল। সে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এল, তখন তিনি সহাবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। তখন সে নাবী (সাঃআঃ)-এর চেহারায় ক্ষুধার চিহ্ন অনুভব করিল, লোকটি তার কসাই গোলামের কাছে গিয়ে বললঃ আমার জন্য কিছু খাবার তৈরি কর; যা পাঁচজনের জন্য যথেষ্ট হয়। আমি হয়তো পাঁচজন ব্যক্তিকে দাওয়াত করব, যার পঞ্চম ব্যক্তি হইবে নাবী (সাঃআঃ)। গোলামটি তার জন্য অল্প কিছু খাবার তৈরি করিল। লোকটি তাহাঁর কাছে এসে তাঁকে দাওয়াত করিল। এক ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে গেল। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে শুআইব! এক ব্যক্তি আমাদের সাথে এসেছে। তুমি ইচ্ছা করলে তাকে অনুমতি দিতে পার, আর ইচ্ছা করলে তুমি তাকে বাদ দিতেও পার। সে বললঃ না। আমি বরং তাকে অনুমতি দিলাম।আঃপ্রঃ- ৫০৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫৩)

৭০/৫৮. অধ্যায়ঃ রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে জলদি করিবে না।

৫৪৬২

 আমর ইবনু উমাইয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ) -কে নিজ হাতে বকরীর স্কন্ধ থেকে কেটে খেতে দেখেছেন। তারপর সলাতের প্রতি আহ্বান করা হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং ছুরিটিও (রেখে দিলেন) যা দিয়ে তিনি কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠলেন এবং সলাত আদায় করিলেন। তিনি (নতুন) অযূ করিলেন না।আঃপ্রঃ- ৫০৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫৪)

৫৪৬৩

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যদি রাতের খাবার পরিবেশিত হয় এবং ইকামাত দেয়া হয়, তাহলে তোমরা আগে খাবার খেয়ে নিবে। অন্য সনদে আইয়ূব, নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সূত্রে ইবনু উমার (রাদি.) থেকেও অনুরূপ হাদীস নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৫০৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫৫)

৫৪৬৪

আইয়ূব নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সূত্রে ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি একবার রাতের খাবার খাচ্ছিলেন, এ সময় ইমামের কিরাআতও শুনছিলেন। [৬৭৩; মুসলিম ৫/১৬, হাদীস ৫৫৭, ৫৫৯, আহমাদ ৪৭০৯] আঃপ্রঃ- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫৫)

৫৪৬৫

 আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন সলাতের ইকামাত দেয়া হয় এবং রাতের খাবারও হাজির হয়ে যায়, তাহলে তোমরা আগে খাবার হয়ে নেবে।

উহাইব ও ইয়াহইয়া বিন সাঈদ হিশাম হইতে বর্ণনা করেছেনঃ যখন রাতের খাবার আনা হয়।[মুসলিম ৫/১৬, হাদীস ৫৫৮, আহমাদ ২৫৬৭৮] আঃপ্রঃ- ৫০৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫৬)

৭০/৫৯. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “খাওয়া শেষ হলে তোমরা চলে যাবে।” (সুরা আল-আহযাব ৩৩: ৫৩)

৫৪৬৬

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি পর্দা (এর আয়াত অবতীর্ণ হওয়া) সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবগত। এ ব্যাপারে উবাই ইবনু কাব (রাদি.) আমাকে জিজ্ঞাসা করিতেন। যাইনাব বিনত জাহশের সঙ্গে নববিবাহিত হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর ভোর হল। তিনি মদিনায় তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। বেলা ওঠার পর তিনি লোকজনকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত করিলেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বসা ছিলেন। (খাদ্য গ্রহণ শেষে) অনেক লোক চলে যাওয়ার পরও কিছু লোক তাহাঁর সাথে বসে থাকলো। অবশেষে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) উঠে গেলেন আমিও তাহাঁর সাথে সাথে গেলাম। আমি আয়েশা (রাদি.)-এর হুজুরার দরজায় পৌঁছলেন। তারপর ভাবলেন, লোকেরা হয়ত চলে গেছে। আমিও তাহাঁর সঙ্গে ফিরে আসলাম। (এসে দেখলাম) তারা আপন জায়গায় বসেই রয়েছে। তিনি আবার ফিরে গেলাম। আমিও তাহাঁর সঙ্গে দ্বিতীয়বার ফিরে গেলাম। এমনকি তিনি আয়েশা (রাদি.)-এর গৃহের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে আবার ফিরে আসলেন। আমিও তার সঙ্গে ফিরে আসলাম। এবার তারা উঠে গেছে। তারপর তিনি আমার ও তাহাঁর মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলাম। তখন পর্দা সম্পর্কিত বিধান অবতীর্ণ হল।আঃপ্রঃ- ৫০৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৫৭)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply