নক্ষত্ররাজি, সূর্য, চন্দ্র, বায়ু এবং সাত আসমান ও জমিন
নক্ষত্ররাজি, সূর্য, চন্দ্র, বায়ু এবং সাত আসমান ও জমিন >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৫৯, সৃষ্টির সূচনা, অধ্যায়ঃ (১-৫)=৬টি
৫৯/১. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বানীঃ তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই তা পুনরায় তা সৃষ্টি করবেন এটা তার জন্য খুব সহজ। (সুরা রূম ২৭)
৫৯/২. অধ্যায়ঃ সাত যমীন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
৫৯/৩. অধ্যায়ঃ নক্ষত্ররাজি সম্পর্কে
৫৯/৪. অধ্যায়ঃ সূর্য ও চন্দ্রের অবস্থান
৫৯/৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার এ বাণী সম্বন্ধে যা বর্ণিত হয়েছেঃ তিনিই স্বীয় রাহমাতের বৃষ্টির পূর্বে বিস্তৃতরূপে বায়ুকে করেন। (আল-ফুরকান ৪৮)
৫৯/১. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বানীঃ তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই তা পুনরায় তা সৃষ্টি করবেন এটা তার জন্য খুব সহজ। (সুরা রূম ২৭)
রাবী ইবনে খুসাইম এবং হাসান বসরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সব কিছুই তাহাঁর জন্য সহজ। আর—– ও —— যার অর্থ সহজ, উচ্চারনের দিক দিয়ে যথাক্রমে ——— ও ——- ও — এবং —– ও —– এর অনুরূপ। এর অর্থ —— আমার পক্ষে কি এটা কঠিন, যখন তিনি তোমাদের পয়দা করিয়াছেন এবং তোমাদের সৃষ্টির সূচনা করিয়াছেন? —– ক্লান্তি। —– বিভিন্ন অবস্থায় ————— সে তাহাঁর মর্যাদা অতিক্রম করিল।
৩১৯০. ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনূ তামীমের একদল লোক নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এল, তখন তিনি তাদের বলিলেন, হে তামীম সম্প্রদায়! সুসংবাদ গ্রহণ কর। তখন তারা বলিল, আপনি তো সুসংবাদ জানিয়েছেন, এবার আমাদের দান করুন। এতে তাহাঁর মুখমন্ডল বিবর্ণ হয়ে গেল। এমন সময় তাহাঁর কাছে ইয়ামানের লোকজন এল। তখন তিনি বলিলেন, হে ইয়ামানবাসী! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তামীম সম্প্রদায়ের লোকেরা তা গ্রহণ করেনি। তারা বলিল, আমরা গ্রহণ করলাম। তখন নাবী (সাঃআঃ) সৃষ্টির সূচনা এবং আরশ সম্পর্কে বর্ণনা করেন। এর মধ্যে জনৈক ব্যক্তি এসে বলিল, হে ইমরান! তোমার উটনীটি পালিয়ে গেছে। হায়! আমি যদি উঠে না চলে যেতাম। [১]
৩১৯১. ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,আমি আমার উটনীটি দরজার সঙ্গে বেঁধে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তাহাঁর নিকট তামীম সম্প্রদায়ের কিছু লোক এল। তিনি বলিলেন, হে তামীম সম্প্রদায়! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। উত্তরে তারা বলিল, আপনি তো আমাদের সুসংবাদ দিয়েছেন, এবার আমাদেরকে কিছু দান করুন। একথা দুবার বলিল। অতঃপর তাহাঁর নিকট ইয়ামানের কিছু লোক আসল। তিনি তাদের বলিলেন, হে ইয়ামানবাসী! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কারণ বনূ তামীম তা গ্রহণ করেনি। তারা বলিল, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! আমরা তা গ্রহণ করলাম। তারা আরও বলিল, আমরা দ্বীন সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করার জন্য আপনার খেদমতে এসেছিলাম। তখন তিনি বলিলেন, একমাত্র আল্লাহই ছিলেন, আর তিনি ছাড়া আর কোন কিছুই ছিল না। তাহাঁর আরশ ছিল পানির উপরে। অতঃপর তিনি লাওহে মাহফুজে সব কিছু লিপিবদ্ধ করিলেন এবং আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করিলেন। এ সময় একজন ঘোষণাকারি ঘোষণা করিল, হে ইবনু হুসাইন! আপনার উটনী পালিয়ে গেছে। তখন আমি এর খোঁজে চলে গেলাম। দেখলাম তা এত দূরে চলে গেছে যে, তার এবং আমার মধ্যে মরীচিকাময় ময়দান দূরত্ব হয়ে পড়েছে। আল্লাহর কসম! আমি তখন উটনীটিকে একেবারে ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা করলাম।
৩১৯২. তারিক ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমর (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি, একদা নাবী (সাঃআঃ) আমাদের মধ্যে দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি আমাদের সৃষ্টির সূচনা সম্পর্কে জ্ঞাত করিলেন। অবশেষে তিনি জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসীর নিজ নিজ নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করার কথাও উল্লেখ করিলেন। যে ব্যক্তি এ কথাটি স্মরণ রাখতে পেরেছে, সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে।
৩১৯৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, আদম সন্তান আমাকে গালি দেয় অথচ আমাকে গালি দেয়া তার উচিত নয়। আর সে আমাকে মিথ্যা জানে অথচ তার উচিত নয়। আমাকে গালি দেয়া হচ্ছে, তার এ উক্তি যে, আমার সন্তান আছে। আর তার মিথ্যা মনে করা হচ্ছে, তার এ উক্তি, যেভাবে আল্লাহ আমাকে প্রথমে সৃষ্টি করিয়াছেন, সেভাবে কখনও তিনি আমাকে আবার সৃষ্টি করবেন না।
৩১৯৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, আল্লাহ যখন সৃষ্টির কাজ শেষ করিলেন, তখন তিনি তাহাঁর কিতাব লাওহে মাহফুজে লিখেন, যা আরশের উপর তাহাঁর নিকট আছে। নিশ্চয়ই আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রবল।
৫৯/২. অধ্যায়ঃ সাত যমীন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ সেই সত্তা, যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন সাত আসমান এবং এর অনুরূপ যমীনও। (আত-ত্বলাকঃ ১২)
———– আকাশ। ——-এর ভিত্তি —— তার সমতা ও সৌন্দর্য —— -সে শুনল ও মান্য করিল। ——- সে (যমীন) তার সকল মৃতকে বের করে দেবে এবং তা খালি হয়ে যাবে ওদের থেকে। ——– তাকে সকল দিক হইতে বিছিয়ে দিয়েছে। —– ভূপৃষ্ঠ যা সকল প্রাণীর নিদ্রা ও জাগরণের স্থান।
৩১৯৫. আবু সালামা ইবনু আবদির রাহমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেন), কয়েকজন লোকের সঙ্গে একখণ্ড ভূমি নিয়ে তাহাঁর ঝগড়া ছিল। আয়েশা (রাদি.)-এর নিকট এসে তা জানালেন। তিনি বলিলেন, হে আবু সালামা! জমা-জমির গোলমাল হইতে দূরে থাক। কেননা, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, যে লোক এক বিঘত পরিমাণ অন্যের জমি অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করেছে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের হার তার গলায় পরিয়ে দেয়া হইবে।
৩১৯৬. সালিম (রাদি.)-এর পিতা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, যে লোক অন্যায়ভাবে কারো ভূমির সামান্যতম অংশও আত্মসাৎ করিবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের নীচে তাকে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে।
৩১৯৭. আবু বাকরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, আল্লাহ যে দিন আসমান ও যমীন সৃষ্টি করিয়াছেন, সে দিন হইতে সময় যেভাবে আবর্তিত হচ্ছিল আজও তা সেভাবে আবর্তিত হচ্ছে। বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। যুল-কাদাহ, যূল-হিজ্জাহ ও মুহাররাম। তিনটি মাস পরস্পর রয়েছে। আর একটি মাস হলো রজব-ই-মুযারা [১] যা জুমাদা ও শাবান মাসের মাঝে অবস্থিত।
[১] মুযারা একটি সম্প্রদায়ের নাম। আরবের অন্যান্য সম্প্রদায় হইতে এ সম্প্রদায়টি রজব মাসের সম্মান প্রদর্শনে অতি কঠোর ছিল। তাই এ মাসটিকে তাদের দিকে সম্বন্ধ করে হাদীসে “রজব-মুযারা” বলা হয়েছে।
৩১৯৮. সাঈদ ইবনু যায়িদ ইবনে আমর ইবনে নুফাইর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আরওয়া নামক এক মহিলা এক সাহাবীর বিরুদ্ধে মারওয়ানের নিকট তার ঐ পাওনার ব্যাপারে মামলা দায়ের করিল, যা তার ধারণায় তিনি নষ্ট করিয়াছেন। ব্যাপার শুনে সাঈদ (রাদি.) বলিলেন, আমি কি তার সামান্য হকও নষ্ট করিতে পারি? আমি তো সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি যুল্ম করে অন্যের এক বিঘত যমীনও আত্মসাৎ করে, কেয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের শিকল তার গলায় পরিয়ে দেয়া হইবে। ইবনু আবিয যিনাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে, তিনি তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করিতে গিয়ে বলেছেন, তিনি (হিশামের পিতা উরওয়াহ) (রাদি.) বলেন, সাঈদ ইবনু যায়দ (রাদি.) আমাকে বলেছেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলাম (তখন তিনি এ হাদীস বর্ণনা করেন)।
৫৯/৩. অধ্যায়ঃ নক্ষত্ররাজি সম্পর্কে
কাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (আল্লাহ তাআলার বাণীঃ) আর আমি তো নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপ মালা দিয়ে শুশোভিত করেছি (মূলকঃ ৫) [এ সম্পর্কে ক্বাতাদা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] এ সব নক্ষত্ররাজি তিনটি উদ্দেশে সৃষ্টি করা হয়েছে। (১) এদেরকে আসমানের সৌন্দর্য করিয়াছেন (২) শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের জন্য (৩) এবং পথ ও দিক নির্ণয়ের আলামত হিসেবে। অতএব যে ব্যাক্তি এদের সম্পর্কে এছাড়া অন্য কোন ব্যাখ্যা দেয় সে ভুল করে, নিজ প্রাপ্য হারায় এবং সে এমন বিষয়ে কষ্ট করে যে বিষয়ে তার কোন জ্ঞান নেই।
আর ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, {——-}-অর্থ পরিবর্তন (আল-কাহাফঃ ৪৫) (আর {আরবী} অর্থ তৃণ যা চতুষ্পদ জন্তু ভক্ষণ করে, {আরবী}-অর্থ মাখলুক {আরবী} অর্থ প্রতিবন্ধক (মুমিনূনঃ ১০০)
আর মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, {আরবী} অর্থ জড়ানো (নাবাঃ ১৬) আর {আরবী} অর্থ ঘন ও সন্নিবেশিত বাগান। {আরবী} অর্থ বিছানা (বাক্বারাহঃ ২২)। যেমন মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের জন্য রয়েছে পৃথিবীতে অবস্থান স্থল- (বাক্বারাহঃ ৩৬)। {আরবী}-অর্থ অল্প (আরাফঃ ৫৮)।
৫৯/৪. অধ্যায়ঃ সূর্য ও চন্দ্রের অবস্থান
উভয়েই (সূর্য ও চন্দ্র) সুনির্দিষ্ট কক্ষে বিচরণ করে।” (আর-রহমানঃ ৫)
মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, উভয়ের আবর্তন চাকার আবর্তনের অনুরূপ। আর অন্যেরা বলেন, উভয় এমন এক নির্দিষ্ট হিসাব ও স্থানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যা তারা অর্থাৎ চন্দ্র-সূর্য লংঘন করিতে পারে না। – হল – শব্দের বহুবচন, যেমন – এর বহুবচন হল – এর অর্থ তার জ্যোতি। – চন্দ্র-সূর্যের একটির জ্যোতি অপরটির জ্যোতিকে ঢাকতে পারে না, আর তাদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। – রাত দিনকে দ্রুত অতিক্রম করে। উভয়ে দ্রুত অতিক্রম করিতে চায়। – আমি উভয়ের একটিকে অপরটি হইতে বের করে আনি আর তাদের প্রতিটি চালিত করা হয় – এবং – এর অর্থ তার বিদীর্ণ হওয়া। – তার সেই অংশ যা বিদীর্ণ হয়নি আর তারা তার উভয় পার্শ্বে থাকবে। যেমন তোমার উক্তি – কূপের তীরে অন্ধকারে ছেয়ে গেল। হাসান বসরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, – অর্থ লেপটিয়ে দেয়া হইবে, যাতে তার জ্যোতি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর বলা হয়ে থাকে – এর অর্থ আর শপথ রজনীর এবং তার যে জীবজন্তু একত্রিত করিল। – বরাবর হল। – চন্দ্র সূর্যের কক্ষ ও নির্ধারিত স্থান। -গরম বাতাস যা দিনের বেলায় সূর্যের সঙ্গে প্রবাহিত হয়। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, – রাত্রি বেলার আর – দিনের বেলার লু হাওয়া। বলা হয় -অর্থ প্রবিষ্ট করে বা করিবে – অর্থ এমন প্রতিটি বস্তু যা তুমি অন্যটির মধ্যে ঢুকিয়েছ।
৩১৯৯. আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সূর্য অস্ত যাবার সময় আবু যার (রাদি.)-কে বলিলেন, তুমি কি জান, সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বলিলেন, তা যেতে যেতে আরশের নীচে গিয়ে সিজদা পড়ে যায়। অতঃপর সে আবার উদিত হবার অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেয়া হয়। আর শীঘ্রই এমন সময় আসবে যে, সিজ্দা করিবে কিন্তু তা কবূল করা হইবে না এবং সে অনুমতি চাইবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেয়া হইবে না। তাকে বলা হইবে, যে পথ দিয়ে আসলে ঐ পথেই ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক হইতে উদিত হয়– এটাই মর্ম হল মহান আল্লাহর বাণীরঃ “আর সূর্য নিজ গন্তব্যে (অথবা) কক্ষ পথে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ।”
(ইয়াসীন ৩৮)
৩২০০. আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন সূর্য ও চন্দ্র দুটিকেই গুটিয়ে নেয়া হইবে।
৩২০১. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না, বরং এ দুটো আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন মাত্র। কাজেই তোমরা যখন তা ঘটতে দেখবে তখন সালাত আদায় করিবে।
৩২০২. আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, সূর্য এবং চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্য হইতে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই তোমরা যখন তা ঘটতে দেখবে তখন আল্লাহর যিক্র করিবে।
৩২০৩.আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যেদিন সূর্যগ্রহণ হল, সে দিন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাতে দাঁড়ালেন। অতঃপর তাকবীর বলিলেন এবং দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করিলেন। অতঃপর দীর্ঘ রুকু করিলেন অতঃপর তিনি মাথা উঠালেন এবং বলিলেন, – এবং তিনি আগের মত দাঁড়ালেন। আর দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করিলেন কিন্তু তা প্রথম কিরাআত থেকে কম ছিল। অতঃপর তিনি দীর্ঘক্ষণ রুকু করিলেন কিন্তু তা প্রথম রাকআতের চেয়ে কম ছিল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ সিজদা করিলেন। তিনি শেষ রাকআতেও ঐ রকমই করিলেন, পরে সালাম ফিরালেন। এ সময় সূর্য উজ্জ্বল হয়ে গেছে। তখন তিনি মানুষদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কে বলিলেন, অবশ্যই এ দুটি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু ও জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ-চন্দ্রগ্রহণ হয় না। অতএব যখনই তোমরা তা ঘটতে দেখবে তখনই সালাতে ভয়-ভীতি নিয়ে লিপ্ত হইবে।
৩২০৪. আবু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু ও জন্মের কারণে হয় না। উভয়টি আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে হইতে দুটি নিদর্শন। অতএব যখন তোমরা তা ঘটতে দেখবে, তখন তোমরা সালাত আদায় করিবে।
৫৯/৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার এ বাণী সম্বন্ধে যা বর্ণিত হয়েছেঃ তিনিই স্বীয় রাহমাতের বৃষ্টির পূর্বে বিস্তৃতরূপে বায়ুকে করেন। (আল-ফুরকান ৪৮)
– অর্থ যা সব কিছু ভেঙ্গে দেয়। – শব্দদ্বয় – শব্দের বহুবচন, যার অর্থ বৃষ্টি বর্ষণকারী। – ঝঞ্ঝা বায়ু যা যমীন হইতে আকাশের দিকে স্তম্ভাকারে প্রবাহিত হইতে থাকে, যাতে আগুন বিরাজ করে। – অর্থ শীতল। – অর্থ বিস্তৃত।
৩২০৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, পূর্বের বাতাস দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে, আর পশ্চিমের বাতাস দ্বারা আদ জাতিকে হালাক করা হয়েছে।
৩২০৬. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন আকাশে মেঘ দেখিতেন, তখন একবার সামনে আগাতেন, আবার পেছনে সরে যেতেন। আবার কখনও ঘরে প্রবেশ করিতেন, আবার বেরিয়ে যেতেন আর তাহাঁর মুখমণ্ডল মলিন হয়ে যেত। পরে যখন আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করত তখন তাহাঁর এ অবস্থা দূর হত। আয়েশা (রাদি.)-এর কারণ জানতে চাইলে নাবী (সাঃআঃ) বলেন, আমি জানি না, এ মেঘ এমন মেঘও হইতে পারে যা দেখে আদ জাতি বলেছিলঃ অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার দিকে উক্ত মেঘমালাকে এগোতে দেখল।
(৪৬ : ২৪)
Leave a Reply