আসমানী কিতাব, আল্লাহর বাণী, তিনি অতি সূক্ষদর্শী, ওয়াকিফহাল

আসমানী কিতাব, আল্লাহর বাণী, তিনি অতি সূক্ষদর্শী, ওয়াকিফহাল

আসমানী কিতাব, আল্লাহর বাণী, তিনি অতি সূক্ষদর্শী, ওয়াকিফহাল >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৯৭, জাহমিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ, অধ্যায়ঃ (৪০-৫৮)=১৯টি

৯৭/৪০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং জেনে শুনে কাউকেও আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করো না। (সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২২)
৯৭/৪১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ (দুনিয়ায় নিজেদের শরীরের অংশগুলোকে তোমরা) এই ভেবে গোপন করিতে না যে, না তোমাদের কান, না তোমাদের চোখ আর না তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। বরং তোমরা মনে করিতে যে, তোমরা যা কর তার অধিকাংশই আল্লাহ জানেন না। (সুরা ফুস্‌সিলাত ৪১/২২)
৯৭/৪২. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনি সর্বক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত- (সুরা আর রহমান ৫৫/২৯)।
৯৭/৪৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার উদ্দেশ্যে তুমি তোমার জিহ্বা দ্রুততার সঙ্গে সঞ্চালন করো না- (সুরা আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬)।
৯৭/৪৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তোমাদের কথা চুপেচাপেই বল আর উচ্চৈঃস্বরেই বল, তিনি (মানুষের) অন্তরের গোপন কথা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত। যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন তিনিই কি জানেন না? তিনি অতি সূক্ষদর্শী, ওয়াকিফহাল।- (সুরা আল-মূল্‌ক ৬৭/১৩-১৪)।
৯৭/৪৫. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ কুরআন দান করিয়াছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে।
৯৭/৪৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ হে রাসুল! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর, যদি না কর তাহলে তুমি তাহাঁর বার্তা পৌছানোর দায়িত্ব পালন করলে না। (সুরা আল-মায়িদাহ ৫/৬৭)
৯৭/৪৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ বল, তোমরা সত্যবাদী হলে তাওরাত আন এবং পাঠ কর। (সুরা আল্‌ ইমরান ৩/৯৩)
৯৭/৪৮. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) নামাযকে আমাল বলেছেন।
৯৭/৪৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির-মনা করে, বিপদ তাকে স্পর্শ করলে সে হয় উৎকন্ঠিত, কল্যাণ তাকে স্পর্শ করলে সে হয়ে পড়ে অতি কৃপণ। (সুরা মাআরিজ ৭০/১৯-২৯)
৯৭/৫০. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কর্তৃক তাহাঁর রবের থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা।
৯৭/৫১. অধ্যায়ঃ তাওরাত ও অন্যান্য আসমানী কিতাব আরবী ইত্যাদি ভাষায় ব্যাখ্যা করা বৈধ। কেননা, আল্লাহর বাণী: তোমরা তাওরাত নিয়ে এসো, এবং তা পাঠ কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। (সুরা আল ইমরান ৩/৯৩)
৯৭/৫২. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণী: কুরআন সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি জান্নাতে সন্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের (সুললিত) কন্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর।
৯৭/৫৩. অধ্যায়ঃ
৯৭/৫৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, উপদেশ গ্রহণের কেউ আছে কি? (সুরা আল-ক্বামার ৪৫/৩২)
৯৭/৫৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণী : বস্তুত এটি সম্মানিত কুরআন, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ- (সুরা বুরুজ ৮৫/২১-২২)। শপথ তূর পর্বতের। শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে- (সুরা আত তূর ৫২/১-২)।
৯৭/৫৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহই সৃষ্টি করিয়াছেন তোমাদেরকে আর তোমরা যা তৈরী কর সেগুলোকেও- (সুরা আস সফ্‌ফাত ৩৭/৯৬)। আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে। (সুরা আল ক্বামার ৫৪/৪৯)।
৯৭/৫৭. অধ্যায়ঃ পাপী ও মুনাফিকের কিরাআত, তাদের স্বর ও তাদের কিরাআত কন্ঠনালী অতিক্রম করে না।
৯৭/৫৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বানীঃ কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদণ্ড (২১:৪৭)।

৯৭/৪০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং জেনে শুনে কাউকেও আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করো না। (সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২২)

এবং তোমরা তাহাঁর সমকক্ষ দাঁড় করিতে চাও? তিনি তো জগতসমূহের প্রতিপালক- (সুরা আল-বাক্বারাহ ২/৯)। এবং তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না- (সুরা আল-ফুরক্বান ২৫/৬৮)। কিন্তু তোমার কাছে আর তোমাদের পূর্ববর্তীদের কাছে ওয়াহী করা হয়েছে যে, তুমি যদি (আল্লাহর) শরীক স্থির কর, তাহলে তোমার কর্ম অবশ্য অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যাবে, আর তুমি অবশ্য অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হইবে। না, বরং আল্লাহর ইবাদাত কর, আর শুক্‌রগুজারদের অন্তর্ভূক্ত হও। (সুরা আয্ যুমার ৩৯/৬৫-৬৬)।

এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইক্‌রিমাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, তাদের অধিকাংশ আল্লাহতে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাহাঁর শরীক করে- (সুরা ইউছুফ ১২/১০৬)। যদি তাদেরকে তুমি জিজ্ঞেস কর, আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে কে ? তারা বলবে, আল্লাহ! এটিই তাদের বিশ্বাস। অথচ তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদাত করছে। বান্দার কর্ম ও অর্জন সবই সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত। কারণ আল্লাহ ইরশাদ করিয়াছেন। (—)(—) তিনি সমস্ত কিছু যথার্য পরিমাণে সৃষ্টি করিয়াছেন যথাযথ অনুপাতে- (সুরা আল-ফুরক্বান ২৫/২)।

মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি ফেরেশ্‌তাগণকে পাঠাই না হক ব্যতীত …… (সুরা হিজর ১৫/৮)। এখানে হক শব্দের অর্থ রিসালাত ও আযাব। সত্যবাদীদের তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করার জন্য- (সুরা আল-আহযাব ৩৩/৮)। এখানে (—) শব্দের অর্থ মানুষের কাছে যেসব রাসুল আল্লাহর বাণী পৌছান। এবং আমিই এর সংরক্ষক- (সুরা হিজর ১৫/৯)। আমাদের কাছে আছে এর সংরক্ষণকারিগণ। (—) যারা সত্য এনেছে- (সুরা আয্‌ যুমার ৩৯/৩৩)। এখানে (—) এর অর্থ কুরআন, (—) এর অর্থ ঈমানদার। ক্বিয়ামাতের দিন ঈমানদার বলবে, আপনি আমাকে যা দিয়েছিলেন, আমি সে মোতাবেক আমাল করেছি।

৭৫২০

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী সাঃআঃ-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর কাছে কোন গুনাহ্টি সবচেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শারীক করা। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। আমি বললাম, এটি অবশ্যই বড় গুনাহ। এরপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ তোমার সন্তান তোমার সঙ্গে খাবে এ ভয়ে তাকে হত্যা করা। আমি বললাম, এরপর কোন্টি? তিনি বলিলেন, এরপর তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে যিনা করা। [৪৪৭৭] (আঃপ্রঃ- ৭০০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১২)

৯৭/৪১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ (দুনিয়ায় নিজেদের শরীরের অংশগুলোকে তোমরা) এই ভেবে গোপন করিতে না যে, না তোমাদের কান, না তোমাদের চোখ আর না তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। বরং তোমরা মনে করিতে যে, তোমরা যা কর তার অধিকাংশই আল্লাহ জানেন না। (সুরা ফুস্‌সিলাত ৪১/২২)

৭৫২১

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন বায়তুল্লাহর নিকট একত্রিত হলো দুজন সাকাফী ও একজন কুরাইশী অথবা দুজন কুরাইশী ও একজন সাকাফী। তাদের পেটে চর্বি ছিল বেশি, কিন্তু তাদের অন্তরে বুঝার ক্ষমতা ছিল কম। তাদের একজন বলিল, তোমাদের অভিমত কী? আমরা যা বলছি আল্লাহ কি সবই শুনতে পান? দ্বিতীয় ব্যক্তি বলিল, হ্যাঁ শোনেন, যদি আমরা উচ্চৈঃস্বরে বলি। আমরা চুপি চুপি বললে তিনি শোনেন না। তৃতীয় জন বলিল, যদি তিনি উচ্চৈঃস্বরে বললে শোনেন, তবে নিচু স্বরে বললেও শুনবেন। এরই প্রক্ষিতে আল্লাহ নিম্মোক্ত আয়াত নাযিল করলেনঃ “(দুনিয়ায় নিজেদের শরীরের অংশগুলোকে তোমরা) এই ভেবে গোপন করিতে না যে, না তোমাদের কান, না তোমাদের চোখ আর না তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে….”(সুরা ফুস্সিলাত ৪১/২২)। [৪৮১৬] (আঃপ্রঃ- ৭০০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৩)

৯৭/৪২. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনি সর্বক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত- (সুরা আর রহমান ৫৫/২৯)।

যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হইতে কোন নতুন নাসীহত আসে- (সুরা আশ্ শুআরা ২৬/৫)। হয়ত ‎আল্লাহ এরপর কোন উপায় করে দেবেন- (সুরা আত ত্বালাক ৬৫/১)। এভাবেই তিনি তোমাদের বংশধারা ‎বিস্তৃত করেন, কোন কিছুই তাহাঁর সদৃশ নয়, তিনি সব শোনেন, সব দেখেন। (সুরা আশ্ শুআরা ৪২/১১)।

ইবনু মাসউদ (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তাআলা নতুন কিছু নির্দেশ দানের ইচ্ছা করলে তা করেন। এ নতুন নির্দেশের মধ্যে এটিও যে, তোমরা সলাতের মধ্যে কথা বলো না।

৭৫২২

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমরা আহলে কিতাবদেরকে তাদের কিতাব সম্পর্কে কেমন করে প্রশ্ন করিতে পার? অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহর কিতাব আছে যা অন্যান্য আসমানী কিতাবের তুলনায় আল্লাহর নিকট অগ্রগণ্য, যা তোমরা (হর-হামেশা) পাঠ করছ, যা পরিপূর্ণ খাঁটি, যাতে ভেজালের লেশ মাত্র নেই।(আঃপ্রঃ- ৭০০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৪)

৭৫২৩

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হে মুসলিম সমাজ! তোমরা কী করে আহলে কিতাবদেরকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস কর? অথচ তোমাদের যে কিতাব যেটি আল্লাহ তোমাদের নাবীর ওপর নাযিল করিয়াছেন, তা আল্লাহর কিতাবগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা উপযোগী। যা সনাতন ও নির্ভেজাল। অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আহলে কিতাবগণ আল্লাহর কিতাবগুলোকে বদলে ফেলেছে, পাল্টে দিয়েছে এবং এরা নিজ হাতে লিখে দাবি করছে এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। এর দ্বারা তারা তুচ্ছ সুবিধা লুটতে চায়। তোমাদের কাছে যে ইল্‌ম আছে, তা কি তোমাদেরকে তাদের কাছে কিছু জিজ্ঞেস করা থেকে বাধা দিচ্ছে না? আল্লাহর শপথ! তাদের কাউকে তোমাদের ওপর নাযিলকৃত বিষয় সম্পর্কে কখনো জিজ্ঞেস করিতে আমি দেখি না। (আঃপ্রঃ- ৭০০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৫)

৯৭/৪৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার উদ্দেশ্যে তুমি তোমার জিহ্বা দ্রুততার সঙ্গে সঞ্চালন করো না- (সুরা আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬)।

ওহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় নাবী সাঃআঃ এমনটি করিয়াছেন। আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী সাঃআঃ থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দার সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত থাকি, যতক্ষণ সে আমাকে স্মরণ করে এবং আমার জন্য তার ঠোঁট দুটো নাড়াচাড়া করে।

৭৫২৪

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর বাণীঃ কুরআনের কারণে আপনার জিহবা নাড়াচাড়া করবেন না, এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন, ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হলে নাবী সাঃআঃ খুবই কষ্টের অবস্থার সম্মুখীন হইতেন, যে কারণে তিনি তার ঠোঁট দুটি নাড়াতেন। বর্ণনাকারী বলেন, ইবনু আববাস (রাদি.) আমাকে বলিলেন, আমি তোমাকে বোঝানোর জন্য ঠোঁট দুটি সেভাবে নাড়ছি, যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ সে দুটো নেড়েছিলেন। এরপর বর্ণনাকারী সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিলেন, আমিও ঠোঁট দুটি তেমনি নেড়ে দেখাচ্ছি, যেমনি ইবনু আববাস (রাদি.) নেড়ে আমাকে দেখিয়েছিলেন। তিনি তাহাঁর ঠোঁট দুটি নাড়লেন। এ অবস্থায় আল্লাহ নাযিল করলেনঃ তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহবা দ্রুততার সঙ্গে চালিত করো না, এর সংরক্ষণ ও পাঠ করাবার দায়িত্ব আমারই- (সুরা আল-ক্বিয়ামহ ৭৫/১৬-১৭)।

তিনি বলেন, جَمْعُهُ -এর অর্থ আপনার বুকে এভাবে সংরক্ষণ করা, যেন পরে তা পড়তে সক্ষম হন। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর- (সুরা আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৮)। এর অর্থ হচ্ছে আপনি তা শুনুন এবং চুপ থাকুন। এরপর আপনি কুরআন পাঠ করবেন সে দায়িত্ব আমাদের উপর। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নাবী সাঃআঃ-এর কাছে জিব্রীল (আঃ) যখন আসতেন, তিনি তখন মনোযোগ সহকারে তা শুনতেন। জিব্রীল (আঃ) চলে গেলে তিনি ঠিক তেমনি পাঠ করিতেন, যেমনি তাঁকে পাঠ করানো হয়েছিল। [৫] (আঃপ্রঃ- ৭০০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৬)

৯৭/৪৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তোমাদের কথা চুপেচাপেই বল আর উচ্চৈঃস্বরেই বল, তিনি (মানুষের) অন্তরের গোপন কথা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত। যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন তিনিই কি জানেন না? তিনি অতি সূক্ষদর্শী, ওয়াকিফহাল।- (সুরা আল-মূল্‌ক ৬৭/১৩-১৪)।

{يَتَخَافَتُونَ} يَتَسَارُّونَ.

يَتَخَافَتُوْنَ -এর অর্থ يَتَسَارَّوْنَ (চুপে চুপে পড়ে)।

৭৫২৫

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহর বাণীঃ তোমার সালাতে স্বর উচ্চ করো না, আর তা খুব নীচুও করো না….. (সুরা ইসরা ১৭/১১০)। এ প্রসঙ্গে বলেন, এ আদেশ যখন নাযিল হল তখন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ মক্কায় গোপনে অবস্থান করিতেন। অথচ তিনি যখন সহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করিতেন, কুরআন উচ্চৈঃস্বরে পড়তেন। মুশরিক্রা এ কুরআন শুনলে কুরআন, কুরআনের নাযিলকারী আর যিনি এনেছেন সবাইকে গালমন্দ করত। এ প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তাহাঁর নাবী সাঃআঃ-কে বলে দিলেন, وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ আপনার সালাতকে এমন উচ্চৈঃস্বরে করবেন না অর্থাৎ আপনার কিরাআতকে। তাহলে মুশরিক্রা শুনতে পেয়ে কুরআন সম্পর্কে গালমন্দ করিবে। আর এ কুরআন আপনার সহাবীদের কাছে এত ক্ষীণ শব্দেও পড়বেন না, যাতে আপনার কিরাআত তারা শুনতে না পায়। বরং এ দুয়ের মাঝামাঝি পথ অবলম্বন করুন। [৪৭২২] (আঃপ্রঃ- ৭০০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৭)

৭৫২৬

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, “তোমার সলাতে স্বর উচ্চ করো না, আর তা খুব নীচুও করো না” এ আয়াতটি দুআ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। (আঃপ্রঃ- ৭০০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৮)

৭৫২৭

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ যে লোক সুন্দর আওয়াজে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের নয়। আবু হুরাইরাহ (রাদি.) ব্যতীত অন্যরা يَجْهَرُ بِهِ উচ্চৈঃস্বরে কুরআন পড়ে না কথাটুকু বৃদ্ধি করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৭০০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৯)

৯৭/৪৫. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ কুরআন দান করিয়াছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে।

আরেক ব্যক্তি বলে, এ ব্যক্তিকে যা দেয়া হয়েছে, আমাকে যদি তা দেয়া হতো, আমিও তেমন করতাম যেমন সে করছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ স্পষ্ট করে বলেন, লোকটির কুরআনের সঙ্গে কায়িম থাকার অর্থ তার কুরআন তিলাওয়াত করা এবং তিনি বলিলেন, তাহাঁর নিদর্শনের মধ্যে হল, আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতা- (সুরা আর-রূম ৩০/২২)। নাবী (সাঃআঃ) তিলাওয়াত করিলেন (—)(—)(—) সৎকর্ম কর যাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার- (সুরা হাজ্জ ২২/৭৭)।

৭৫২৮

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ দুটি বিষয় ব্যতীত হিংসা করা যায় না। এক ব্যক্তি হচ্ছে, আল্লাহ যাকে কুরআন দান করিয়াছেন, আর সে দিনরাত তা তিলাওয়াত করে। অন্য লোকটি বলে, এ লোকটিকে যা দেয়া হয়েছে, আমাকে যদি তেমন দেয়া হতো, তাহলে আমিও তেমন করতাম, সে যেমন করছে। আরেক লোক হচ্ছে সে, যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দিয়েছেন। ফলে সে তা যথাযথভাবে ব্যয় করছে। তখন অন্য লোক বলে , একে যা দেয়া হয়েছে, আমাকেও যদি তেমন দেয়া হতো, আমিও তাই করতাম, যা সে করছে। (আঃপ্রঃ- ৭০০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২০)

৭৫২৯

সালিম তার পিতা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী সাঃআঃ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, একমাত্র দুটি বিষয়েই হিংসা করা যায়। একজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ কুরআন দান করিয়াছেন, আর সে তা রাতদিন তিলাওয়াত করে, আরেকজন হল, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন আর সে রাতদিন তা ব্যয় করে। [৫০২৫; মুসলিম ৬/৪৭, হাদীস ৮১৫, আহমাদ ৪৫৫০]

আমি সুফ্ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে কয়েকবার শুনিয়াছি কিন্তু তাকে الْخَبَرَ উল্লেখ করিতে শুনিনি। অর্থাৎ এটি তার বিশুদ্ধ হাদীসগুলোর অন্তর্ভুক্ত। (আঃপ্রঃ- ৭০১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২১)

৯৭/৪৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ হে রাসুল! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর, যদি না কর তাহলে তুমি তাহাঁর বার্তা পৌছানোর দায়িত্ব পালন করলে না। (সুরা আল-মায়িদাহ ৫/৬৭)

যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে বার্তা পাঠানো আর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর দায়িত্ব হলো পৌছে দেয়া (মানুষের কাছে) আর আমাদের দায়িত্ব হলো মেনে নেয়া। আল্লাহ বলেনঃ রাসুলগণ তাঁদের প্রতিপালকের বাণী পৌছে দিয়েছেন কিনা তা জানার জন্য- (সুরা জ্বিন ৭২/২৮)। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর বার্তাসমূহ পৌছে দিচ্ছি। কাব ইবনু মালিক (রাদি.) যখন নাবী (সাঃআঃ) -এর সঙ্গে (তাবূক যুদ্ধ) থেকে পিছনে রয়ে গেলেন, তখন আল্লাহ বলেনঃ আল্লাহ তো তোমাদের কাজকর্ম দেখবেন এবং তাহাঁর রাসুল ও মুমিনগণও- (সুরা আত তাওবাহ ৯/১০৫)। আয়েশা (রাদি.) বলেন, কারো ভালো কাজে তোমাকে আনন্দিত করলে বলো, আমাল কর, তোমার এ আমাল আল্লাহ, আল্লাহর রাসুল, সমস্ত মুমিন দেখবেন। আর তোমাকে কেউ যেন বিচলিত করিতে না পারে।

মামার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (—) এর অর্থ এ কুরআন, (—) -এর অর্থ বর্ণনা করা ও পথ দেখানো। আল্লাহর এ বাণীর মত (—) এর অর্থ এটি আল্লাহর হুকুম। (—) এর অর্থ এতে কোন সন্দেহ নেই। (—)(—) অর্থাৎ এগুলো কুরআনের নিদর্শন। এর দৃষ্টান্ত আল্লাহরই বাণীঃ যখন তোমরা নৌকায় অবস্থান করো আর চলতে থাকে সেগুলো তাদের নিয়ে। এখানে (—) এর অর্থ (—) অর্থাৎ তোমাদের নিয়ে। আনাস (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর মামা হারমকে তাহাঁর কাওমের কাছে পাঠালেন। তিনি সেখানে গিয়ে বলিলেন, তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর কি? আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এর বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। এই বলে তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলিতে লাগলেন

৭৫৩০

মুগীরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আমাদের নাবী (সাঃআঃ) আমাদেরকে আমাদের রবের বার্তা সম্পর্কে জানিয়েছেন যে আমাদের মধ্য থেকে যে, নিহত হইবে, সে জান্নাতে চলে যাবে।(আঃপ্রঃ- ৭০১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২২)

৭৫৩১

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমাকে যে বলবে, নাবী (সাঃআঃ) (ওয়াহীর) কিছু বিষয় গোপন করিয়াছেন। মুহাম্মদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ………আয়েশা (রাদি.) বলেছেন, যে লোক তোমার কাছে বলে নাবী (সাঃআঃ) ওয়াহীর কোন কিছু গোপন করিয়াছেন, তাকে তুমি সত্যবাদী মনে করো না। আল্লাহ বলেনঃ হে রাসুল! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর-(সুরা আল-মায়িদাহ ৫/৬৭)। [৩১৫৯] (আঃপ্রঃ- ৭০১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৩)

৭৫৩২

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কাছে কোন্ গুনাহটি সব চেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহর বিপরীতে কাউকে ডাকা অথচ তিনিই (আল্লাহ) তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। সে বলিল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এরপর তোমার সঙ্গে আহার করিবে এ ভয়ে (তোমার) সন্তানকে হত্যা করা। সে বলিল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এরপর তোমাদের প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে যিনা করা। এরই সমর্থনে আল্লাহ নাযিল করলেনঃ তারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডাকে না। আর যথার্থতা ব্যতীত কোন প্রাণ হত্যা করে না যা আল্লাহ নিষিদ্ধ করিয়াছেন আর তারা ব্যভিচার করে না। আর যে এগুলো করে সে শাস্তির সাক্ষাৎ লাভ করিবে। তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হইবে ……….. (সুরা আল-ফুরক্বান ২৫/৬৮)। [৪৪৭৭] (আঃপ্রঃ- ৭০১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৪)

৯৭/৪৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ বল, তোমরা সত্যবাদী হলে তাওরাত আন এবং পাঠ কর। (সুরা আল্‌ ইমরান ৩/৯৩)

নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ তাওরাত ওয়ালাদেরকে তাওরাত দেয়া হলে তারা সে মোতাবেক আমাল করিল। ইনজিল ওয়ালাদেরকে ইনজিল দেয়া হলে তারাও সে মোতাবেক আমাল করিল। তোমাদেরকে দেয়া হলো কুরআন, সুতরাং তোমরা এ মোতাবেক আমাল কর।

আবু রাযীন (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন (—) এর অর্থ তাহাঁর হুকুমকে যথাযথভাবে পালন করার মাধ্যমে অনুসরণ করা। আবু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (—) অর্থ। (—) পাঠ করা হয়। (—)(—) অর্থাৎ কুরআন সুন্দরভাবে পাঠ করা। (—)(—) -এর অর্থ কুরআনের স্বাদ ও উপাকারিতা কুরআনের বিশ্বাসীদের ছাড়া না পাওয়া। কুরআনের উপর সঠিক আস্থা স্থাপনকারী ছাড়া কেউই তা যথাযথভাবে বহন করিতে পারবে না। কেননা, আল্লাহ বলেনঃ যাদের উপর তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তা তারা বহন করেনি (অর্থাৎ তারা তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করেনি) তাদের দৃষ্টান্ত হল গাধার মত, যে বহু কিতাবের বোঝা বহন করে (কিন্তু তা বুঝে না)। যে সম্প্রদায় আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করে, তাদের দৃষ্টান্ত কতইনা নিকৃষ্ট! যালিম সম্প্রদায়কে আল্লাহ সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। (সুরা আল- জুমুআহ ৬২/৫)

নাবী (সাঃআঃ) ইসলাম, ঈমান ও সালাতকে আমাল নামে আখ্যায়িত করিয়াছেন। আবু হুরাইরা (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বিলাল (রাদি.) কে বললেনঃ ইসলামে থাকা অবস্থায় যেটি দ্বারা তুমি মুক্তির বেশী আশাবাদী, আমাকে তুমি সে আমালটি সম্পর্কে জানাও। বিলাল (রাদি.) বলিলেন, আমার মতে মুক্তির বেশী আশা রাখতে পারি যে আমাল দ্বারা, তা হচেছ আমি যখনই ওযু করেছি, তখন সালাত আদায় করেছি। নাবী (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করা হলো- কোন্ আমালটি সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা, এরপর জিহাদ, এরপর কবূল হওয়া হাজ্জ।

৭৫৩৩

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ পূর্বের উম্মাতদের তুলনায় তোমাদের অবস্থানকালের দৃষ্টান্ত হচ্ছে, আসরের সালাত এবং সূর্যাস্তের মাঝের সময়টুকু। তাওরাতধারীদেরকে তাওরাত দেয়া হলে তারা সে মোতাবেক আমাল করিল। এ ভাবে দুপুর হয়ে গেল এবং তারাও দুর্বল হয়ে পড়ল। তাদেরকে এক কীরাত করে মজুরী দেয়া হল। তারপর ইনজিল ধারীদেরকে ইনজিল দেয়া হলে তারা সে মোতাবেক আমাল করিল। এ অবস্থায় আসরের সালাত আদায় করা হল। তারাও ক্লান্ত হয়ে গেল। তারপর তাদেরকেও এক কীরাত করে দেয়া হল। শেষে তোমাদেরকে কুরআন দেয়া হয়। তোমরা সে মোতাবেক আমাল করেছ। এ অবস্থায় সূর্য ডুবে গেল। আর তোমাদেরকে দেয়া হল দুকীরাত করে। ফলে কিতাবীগণ বলিল, এরা তো আমাদের তুলনায় কাজ করিল কম, অথচ মজুরী পেল বেশী। এতে আল্লাহ বলিলেন, তোমাদের হকের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোন যুলুম করা হয়েছে কি? এরা বলবে, না। আল্লাহ বললেনঃ এটা আমার অনুগ্রহ, তা আমি যাকে চাই তাকে দিয়ে থাকি।(আঃপ্রঃ- ৭০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৫)

৯৭/৪৮. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) নামাযকে আমাল বলেছেন।

তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নামাযে সুরা ফাতিহা পড়ল না , তার সালাত আদায় হল না।

৭৫৩৪

ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

এক লোক (সহাবী) নাবী (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করিলেন, কোন্ আমালটি সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেনঃ যথা সময়ে সালাত আদায় করা, মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, অতঃপর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।(আঃপ্রঃ- ৭০১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৬)

৯৭/৪৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির-মনা করে, বিপদ তাকে স্পর্শ করলে সে হয় উৎকন্ঠিত, কল্যাণ তাকে স্পর্শ করলে সে হয়ে পড়ে অতি কৃপণ। (সুরা মাআরিজ ৭০/১৯-২৯)

৭৫৩৫

আমর ইবনু তাগলিব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে কিছু মাল এল। এ থেকে তিনি এক দলকে দিলেন। অন্য দলটিকে দিলেন না। অতঃপর তাহাঁর কাছে এ খবর পৌঁছল যে, যারা পেলো না তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে। এতে তিনি বললেনঃ আমি একজনকে দেই আবার অন্য জনকে দেই না। কিন্তু যাকে আমি দেই না, সে-ই আমার কাছে বেশী প্রিয় যাকে দেই তার থেকে। এমন কিছু কাওমকে আমি দেই, যাদের হৃদয়ে আছে অস্থিরতা ও দ্বন্দ। আর কিছু কাওমকে আমি মাল না দিয়ে তাদের হৃদয়ে আল্লাহ যে অমুখাপেক্ষিতা ও কল্যাণ রেখেছেন তার উপর সোর্পদ করি। এদেরই একজন হলেন, আমর ইবনু তাগলিব (রাদি.)। আমর (রাদি.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর এ কথার বিনিময়ে আমি একপাল লাল রং এর উটের মালিক হওয়াও অধিক পছন্দ করি না। (আঃপ্রঃ- ৭০১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৭)

৯৭/৫০. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কর্তৃক তাহাঁর রবের থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা।

৭৫৩৬

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমার বান্দা যখন আমার দিকে এক বিঘত নিকটবর্তী হয়, আমি তখন তার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হই। আর সে যখন আমার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হয়, আমি তখন তার দিকে দুহাত নিকটবর্তী হই। সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। (আঃপ্রঃ- ৭০১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৮)

৭৫৩৭

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী সাঃআঃ একাধিকবার বর্ণনা করিয়াছেন যে, (আল্লাহ বলেন) : আমার বান্দা যদি আমার দিকে এক বিঘত নিকটবর্তী হয়, আমি তার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হই। আর সে যদি আমার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হয়, আমি তার দিকে দু হাত নিকটবর্তী হই। বর্ণনাকারী এখানে بَاعًا কিংবা بُوعًا বলেছেন। মুতামির (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি আমার পিতা থেকে শুনিয়াছি, তিনি আনাস (রাদি.) থেকে শুনেছেন, তিনি আবু হুরাইরাহ (রাদি.) কর্তৃক নাবী সাঃআঃ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি তাহাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। [৭৪০৫] (আঃপ্রঃ- ৭০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৯)

৭৫৩৮

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নাবী (সাঃআঃ) তোমাদের প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন: প্রতিটি আমলের কাফ্ফারা রয়েছে, সে সব আমলের ত্রুটি দূর করার জন্য। কিন্তু সওম আমার জন্যই, এতে লোক দেখানোর কিছু নেই, তাই আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিস্‌কের চেয়েও বেশী সুগন্ধময়। (আঃপ্রঃ- ৭০১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩০)

৭৫৩৯

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর প্রতিপালকের নিকট হইতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ বলেন: কোন বান্দার জন্য এ দাবী করা শোভনীয় নয় যে, সে ইউনুস ইবনু মাত্তার চেয়ে ভাল। এখানে ইউনুস (আঃ) -কে তাহাঁর পিতার দিকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে। (আঃপ্রঃ- ৭০২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩১)

৭৫৪০

আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল আলমুযানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মাক্কাহ বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে তাহাঁর উঠনীর উপর বসা অবস্থায় সুরা ফাত্হ কিংবা সুরা ফাতহের কিছু অংশ পড়তে দেখেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তারজীসহ তা পাঠ করিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, মুআবিয়া (রাদি.) ইবনুল মুগাফ্ফালের কিরাআত নকল করে পড়ছিলেন। তিনি বলিলেন, যদি তোমাদের কাছে লোকের ভিড় করার ভয় না হত, তাহলে আমিও তারজী করে ঠিক ঐভাবে পাঠ করতাম, যেভাবে ইবনুল মুগাফ্‌ফাল (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) -এর কিরাআত নকল করে তারজীসহ পাঠ করেছিলেন। তারপর আমি মুআবীয়াহ (রাদি.) -কে বললাম, তাহাঁর তারজী কেমন ছিল? তিনি বলিলেন, আ, আ, আ, তিনবার। (আঃপ্রঃ- ৭০২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩২)

৭৫৪১

৯৭/৫১. অধ্যায়ঃ তাওরাত ও অন্যান্য আসমানী কিতাব আরবী ইত্যাদি ভাষায় ব্যাখ্যা করা বৈধ। কেননা, আল্লাহর বাণী: তোমরা তাওরাত নিয়ে এসো, এবং তা পাঠ কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। (সুরা আল ইমরান ৩/৯৩)

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু সুফ্ইয়ান ইবনু হারব (রাদি.) আমাকে এ খবর দিয়েছেন, হিরাক্লিয়াস তাহাঁর তর্জমাকারীকে ডাকলেন। তারপর তিনি নাবী সাঃআঃ-এর চিঠিখানা আনার জন্য হুকুম করিলেন এবং তা পড়লেন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম- আল্লাহর বান্দা ও রাসুল মুহাম্মাদ সাঃআঃ-এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের প্রতি এ চিঠি পাঠানো হল। তাতে আরও লেখা ছিল يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ (হে আহলে কিতাব! এমন এক কথার দিকে আসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই,)। [৭] (আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

৭৫৪২

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আহলে কিতাব তাওরাত হিব্রু ভাষায় পাঠ করত, আর মুসলিমদের জন্য আরবী ভাষায় এর ব্যাখ্যা করত। এ প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন ঃ কিতাবধারীদেরকে তোমার বিশ্বাস করো না আবার তাদেরকে মিথ্যেবাদী সাব্যস্তও করো না। বরং তোমরা আল্লাহর এ বাণীটি قُولُوا آمَنَّا بِاللهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا (তোমরা বল, আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি এবং যা আমাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে) বল। (সুরা বাকারাহ ২/১৩৬) [৪৪৮৫] (আঃপ্রঃ- ৭০২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৩)

৭৫৪৩

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, দুজন ইয়াহূদী নারী-পুরুষকে নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে আনা হলো। তারা যিনা করেছিল। এরপর নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃতোমরা ইয়াহূদীর এদের সাথে কী আচরন করে থাক? তারা বলিল, আমরা এদের মুখ কালো করি ও লাঞ্ছিত করি। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃতোমরা তাওরাত নিয়ে এসো, এবং তা পাঠ কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা তাওরাত নিয়ে আসল এবং তাদেরই ইচ্ছেমত এক লোককে ডেকে বলিল, হে আওয়ার! তুমি পাঠ কর। সে পাঠ করিতে লাগল, শেষে এক স্থানে এসে সে তাতে আপন হাত রেখে দিল। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃতোমার হাতটি উঠাও। সে হাত উঠাল। তখন যিনার শাস্তি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা আয়াতটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। তিলাওয়াতকারী বলিল, হে মুহাম্মাদ! এদের মাঝে শাস্তি আসলে রজমই, কিন্তু আমরা তা গোপন করছিলাম। নাবী (সাঃআঃ) তাদেরকে রজম করার হুকুম দিলে তাদেরকে রজম করা হল। বর্ণনাকারী বলেন, যিনাকারী পুরুষটিকে স্ত্রী লোকটির উপর ঝুঁকে পড়ে তাকে পাথর থেকে রক্ষার চেষ্টা করিতে দেখেছি। (আঃপ্রঃ- ৭০২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৪)

৯৭/৫২. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণী: কুরআন সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি জান্নাতে সন্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের (সুললিত) কন্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর।

৭৫৪৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছেন। তিনি বলেছেন: আল্লাহ উচ্চৈঃস্বরে সুমধুর কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াতকারী নাবীর প্রতি যত সন্তোষ প্রকাশ করেন, অন্য কোন কিছুর প্রতি তত সন্তোষ প্রকাশ করেন না।(আঃপ্রঃ- ৭০২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৫)

৭৫৪৫

ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাকে উরওয়াহ ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব, আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস, উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি), আয়েশাহ (রাদি.) -এর হাদীস সম্পর্কে বলেছেন। অপবাদকারীরা যখন তার উপর অপবাদ দিয়েছিল। ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, বর্ণনাকারীদের একেকজন সে সম্পর্কে আমার কাছে হাদীসের একেক অংশের বর্ণনা দিয়েছেন। আয়েশা (রাদি.) বলেন, এর ফলে আমি আমার বিছানায় শুয়ে পড়লাম। অথচ আমি তখন জানি, আমি নির্দোষ পবিত্র এবং আল্লাহ আমাকে নির্দোষ বলে প্রমান করবেন। আল্লাহর শপথ! কিন্তু আমার মর্যাদা আমার কাছে এমন যোগ্য ছিল না যে, এ ব্যাপারে ওয়াহীই অবতীর্ণ করবেন যা তিলাওয়াত করা হইবে। আমার মর্যাদা আমার কাছে এর চেয়ে তুচ্ছ ছিল যে, আল্লাহ আমার সম্পর্কে এমন কোন কালাম করবেন যা তিলাওয়াত করা হইবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ নাযিল করিলেন: যারা এমন জঘন্য অপবাদ এনেছে……..পুরো দশটি আয়াত (সুরা আন্-নূর ২৪/১১-২০)। (আঃপ্রঃ- ৭০২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৬)

৭৫৪৬

বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী সাঃআঃ-কে এশার সালাতে সুরা وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ পড়তে শুনিয়াছি। স্বর কিংবা কিরআতের দিক থেকে তার চেয়ে সুন্দর আমি আর কাউকে দেখিনি। [৭৬৭] (আঃপ্রঃ- ৭০২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৭)

৭৫৪৭

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় লুকিয়ে থাকতেন। আর তিনি উচ্চৈঃস্বরে (তিলাওয়াত) করিতেন। যখন তা মুশরিক্‌রা শুনল, তারা কুরআন ও তাহাঁর বাহককে গালমন্দ করিল। এ অবস্থায় আল্লাহ তাহাঁর নাবী (সাঃআঃ) কে জানিয়ে দিলেন, আপনি আপনার সালাতে কুরআন উচ্চৈঃস্বরেও পড়বেন না এবং খুব চুপে চুপেও পড়বেন না। (আঃপ্রঃ- ৭০২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৮)

৭৫৪৮

আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আবুসসআহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) -কে বলিলেন, আমি তোমাকে দেখেছি, তুমি বক্‌রীপাল ও ময়দানকে ভালবাস। সুতরাং তুমি যখন বক্‌রীর পাল কিংবা ময়দানে থাকবে, তখন সালাতের জন্য উচ্চৈঃস্বরে আযান দেবে। কারণ মুআয্‌যিনের আযানের স্বর যতদূর পৌছবে, তত দূরের জ্বিন, ইনসান, অন্যান্য জিনিস যারাই শুনবে, ক্বিয়ামতের দিন তারা তার স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। আবু সাঈদ (রাদি.) বলেন, আমি এটি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে শুনিয়াছি।(আঃপ্রঃ- ৭০২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৯)

৭৫৪৯

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন কুরআন পড়তেন তখন তাহাঁর মাথা থাকত আমার কোলে যদিও আমি থাকতাম ঋতুবতী।(আঃপ্রঃ- ৭০২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪০)

৯৭/৫৩. অধ্যায়ঃ

৭৫৫০

মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ও আবদুর রহমান ইবনু আবদুল ক্বারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা উভয়ে উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.) -কে বলিতে শুনেছেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর জীবিত অবস্থায় আমি হিশাম ইবনু হাকীম (রাদি.) -কে (সালাতে) সুরায়ে ফুরকান তিলাওয়াত করিতে শুনিয়াছি। আমি একাগ্রমনে তাহাঁর তিলাওয়াত শুনছিলাম। তিনি এমন অনেকগুলো শব্দ তিলাওয়াত করছিলেন, যেগুলো রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে তিলাওয়াত করাননি। এতে আমি তাঁকে সালাতের অবস্থায় ধরে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সালাম ফেরানো অবধি আমি ধৈর্য ধরলাম। তারপর আমি তাহাঁর চাদর দিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরলাম। আর বললাম, আমি তোমাকে যে সুরা পাঠ করিতে শুনলাম, তা তোমাকে কে শিখিয়েছে? তিনি বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)। আমি বললাম, তুমি মিথ্যে বলেছ, তিনি আমাকে শিখিয়েছেন, তবে তোমার কিরাআতের মত নয়। তারপর আমি তাঁকে টেনে টেনে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কাছে নিয়ে চললাম। এরপর আমি বললাম, আমি শুনলাম একে ভিন্ন শব্দ দ্বারা সুরা ফুরকান পাঠ করিতে, যা আপনি আমাকে শিখাননি। তিনি [নাবী (সাঃআঃ) ] বললেনঃ আচ্ছা তাঁকে ছেড়ে দাও। তুমি পড়, হে হিশাম! এরপর আমি যেমন কিরাআত শুনিয়াছিলাম তিনি তেমন কিরাআত পড়লেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ কুরআন এভাবেই নাযিল হয়েছে। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে উমর! তুমি পড়। আমি সেভাবে পড়লাম যেভাবে আমাকে শিখানো হয়েছিল। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ কুরআন এভাবেই নাযিল হয়েছে। এ কুরআন সাত হরফে (কিরাআতে) নাযিল করা হয়েছে। কাজেই যেভাবে সহজ হয়, সেভাবে তা পাঠ কর। (আঃপ্রঃ- ৭০৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪১)

৯৭/৫৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, উপদেশ গ্রহণের কেউ আছে কি? (সুরা আল-ক্বামার ৪৫/৩২)

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক ব্যক্তি যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ সহজ করে দেয়া হয়। (—) অর্থ প্রস্তুতকৃত। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (—) –এর অর্থ আমি কুরআন পাঠ আপনার জন্য সহজ করে দিয়েছি।

৭৫৫১

ইমরান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমলকারীরা কিসে আমল করছে? তিনি বলিলেন, যাকে যে কাজ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ করা সহজ করে দেয়া হয়। (আঃপ্রঃ- ৭০৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪২)

৭৫৫২

আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি একবার কোন জানাযায় ছিলেন। তারপর তিনি একটি কাঠের টুকরা হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটি খোঁচাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, তোমাদে র মধ্যে এমন কেউ নেই যার ঠিকানা জাহান্নাম কিংবা জান্নাতে নির্দিষ্ট করা হয়নি। সহাবীগণ বলিলেন, তা হলে আমরা কি এর উপর নির্ভর করব না? তিনি বললেনঃ তোমরা আমাল করিতে থাক। প্রত্যেকের জন্য সহজ করে দেয়া হয়। (অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ …..فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى। সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে…..। [১৩৬২] (আঃপ্রঃ- ৭০৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৩)

৯৭/৫৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণী : বস্তুত এটি সম্মানিত কুরআন, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ- (সুরা বুরুজ ৮৫/২১-২২)। শপথ তূর পর্বতের। শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে- (সুরা আত তূর ৫২/১-২)।

ক্বাতাদাহ (রহ:) বলেন, (—) অর্থ লিপিবদ্ধ (—) অর্থ তারা লিখছে (—)। অর্থাৎ কিতাবের স্তর ও মূল (—) অর্থ যা কিছু বলা হয়, তা লিপিবদ্ধ হয়। এর ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, ভালমন্দ সব লিপিবদ্ধ করা হয়। (—) এর অর্থ পরিবর্তন করা। এমন কেউ নেই, যে আল্লাহর কোন কিতাবের শব্দ পরিবর্তন করিতে পারে। তবে তারা তাহরীফ তথা অপব্যাখ্যা করিতে পারে। (—) অর্থ তাদের তিলাওয়াত, (—) অর্থ সংরক্ষণকারী, (—) অর্থ তা সংরক্ষণ করে। এবং এ কুরআন আমার কাছে পাঠানো হয়েছে, যেন তোমাদেরকে এর দ্বারা আমি সতর্ক করি- (সুরা আনআম ৬/১৯)। অর্থাৎ মক্কাবাসী এবং যাদের কাছে এ কুরআন প্রচারিত হইবে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাদের জন্যে সতর্ককারী। ( এই অধ্যায়টা লিখা ছিল না। আমি লিখে দিলাম। চেক করে নেবেন। navim )

৭৫৫৩

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ যখন তাহাঁর মাখলূকাত সৃষ্টি করিলেন, তাহাঁর কাছে একটি কিতাব লিপিবদ্ধ রাখলেন। “আমার গযবের উপর আমার রহমত অগ্রগামী হয়েছে এটি তাহাঁর কাছে আরশের ওপর আছে।(আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

৭৫৫৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি, আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করার আগে একটি লেখা লিখে রেখেছেন। তা হলো “আমার গযবের উপর আমার রহমত অগ্রগামী হয়েছে”, এটি তাহাঁরই নিকটে আরশের ওপর লেখা আছে। (আঃপ্রঃ- ৭০৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৪)

৯৭/৫৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহই সৃষ্টি করিয়াছেন তোমাদেরকে আর তোমরা যা তৈরী কর সেগুলোকেও- (সুরা আস সফ্‌ফাত ৩৭/৯৬)। আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে। (সুরা আল ক্বামার ৫৪/৪৯)।

ছবি নির্মাতাদের বলা হইবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যিনি ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন , অতঃপর আরশে সমুন্নত হয়েছেন। দিনকে তিনি রাতের পর্দা দিয়ে ঢেকে দেন, তারা একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে এবং সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি তাহাঁরই আজ্ঞাবহ। জেনে রেখ, সৃষ্টি তাহাঁর, হুকুমও (চলবে) তাহাঁর, মহীয়ান, গরীয়ান আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (সুরা আল-আরাফ ৭/৫৪)।

ইবনু উয়াইনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহ সৃষ্টিকে হুকুম থেকে পৃথক করে বর্ণনা করিয়াছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ …………………… জেনে রাখ সৃষ্টি ও হুকুম তাহাঁরই। নাবী (সাঃআঃ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করিয়াছেন। আবু যার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ও আবু হুরাইরা (রাদি.) বর্ণনা করেন, নাবী (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা, তাহাঁর পথে জিহাদ করা। মহান আল্লাহ বলেনঃ …………… এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নাবী (সাঃআঃ) এর কাছে এসে বলিলেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন , যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা,রাসুলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, সালাত কায়িম করা এবং যাকাত আদায়ের হুকুম দিলেন। এ সবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করিয়াছেন।

৭৫৫৫

যাহদাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জারমের এ কাওমটির সঙ্গে আশআরী কাওমের গভীর ভালবাসা ও ভ্রাতৃভাব ছিল। এক সময় আমরা আবু মুসা আশআরী (রাদি.) এর কাছে ছিলাম। তাহাঁর কাছে খাদ্য আনা হল। এতে মুরগীর গোশতও ছিল। এ সময় তাহাঁর নিকট বানী তায়মুল্লাহর এক লোক ছিল। সে (দেখিতে) যেন আযাদকৃত গোলাম। তাকেও আবু মুসা (রাদি.) খেতে ডাকলেন। সে বলিল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু জিনিস খেতে দেখেছি, যার ফলে এটি খেতে আমি খেতে ঘৃনা করি। এ জন্য শপথ করেছি, আমি তা খাব না। আবু মুসা (রাদি.) বলিলেন, তুমি এদিকে এসো, এ ব্যাপারে আমি তোমাকে একটি হাদীস শোনাব। আমি এক সময় আশআরী কওমের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে নাবী (সাঃআঃ) এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য গেলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের বাহন দেব না। আর তোমাদের দেয়ার মত আমার কাছে বাহন নেই। তারপর নাবী (সাঃআঃ) এর কাছে গনীমতের কিছু উট আনা হলে তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন এবং বলিলেন, আশআরীদের দলটি কোথায়? তারপর তিনি পাঁচটি মোজা তাজা ও উৎকৃষ্ট উট আমাদের দেয়ার জন্য হুকুম করিলেন। আমরা এগুলো নিয়ে রওনা দেয়ার সময় বললাম, আমরা কী কর্মটি করলাম! নাবী (সাঃআঃ) শপথ করে বলিলেন, আমাদের বাহন দেবেন না এবং তাহাঁর কাছে দেয়ার মত বাহন নেই। তারপরও তো তিনি আমাদের বাহন দিয়ে দিলেন। হয়ত আমরা তাঁকে তাহাঁর শপথ সম্পর্কে বেখেয়াল করে দিয়েছি। আল্লাহর শপথ! আমরা কক্ষনো সফলকাম হবো না। তাই আমরা তাহাঁর কাছে আবার গেলাম এবং তা তাঁকে বললাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে বাহন দেইনি, বরং দিয়েছেন আল্লাহ ! আল্লাহর শপথ! আমি কোন বিষয়ে শপথ করি আর যদি তার বিপরীতে কল্যাণ দেখিতে পাই, তবে তাতেই ফিরে আসি এবং (কাফ্ফারা আদায় করে) তা বৈধ করে নেই। (আঃপ্রঃ- ৭০৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৫)

৭৫৫৬

আবু জামরাহ দুবায়ী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.) কে বললাম। তিনি বলিলেন আবদুল কায়সের প্রতিনিধিদল রসুলূল্লাহ (সাঃআঃ) এর কাছে এসে বলিল, আমাদের এবং আপনাদের মাঝখানে মুযার গোত্রের মুশরিকরা আছে। সে কারনে আমরা সম্মানিত মাস (আশহুরে হুরুম) ব্যতীত আর কোন সময় আপনার কাছে আসতে পারি না। কাজেই আমাদেরকে সংক্ষিপ্ত কিছু বিষয়ের হুকুম দিন, যার উপর আমল করলে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করব এবং আমরা যাদের রেখে এসেছি তাদেরও এ পথে আহ্বান জানাতে পারব। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ের হুকুম করছি। আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছি। আমি তোমাদেরকে হুকুম দিচ্ছি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার। আর তোমরা জান কি, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কাকে বলে? তা হলো, সাক্ষ্য দেয়া যে আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, সালাত কায়িম করা, যাকাত দেয়া, গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ দেয়া। তোমাদের চারটি বিষয় হইতে নিষেধ করছি, লাউয়ের খোল দিয়ে তৈরী পাত্রে, খেজুর গাছের মূল খোদাই করে তৈরী পাত্রে, আলকাতরা ইত্যাদি দিয়ে প্রলেপ দেয়া পাত্রে, এবং মাটির সবুজ ঘটিতে তোমরা পান করিবে না। (আঃপ্রঃ- ৭০৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৬)

৭৫৫৭

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রসুলূল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এসব ছবি নির্মাতাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হইবে। তখন তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হইবে তোমরা যা বানিয়েছ ,তা জীবিত কর। (আঃপ্রঃ- ৭০৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৭)

৭৫৫৮

ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এসব ছবি নির্মাতাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হইবে। তাদেরকে বলা হইবে, যা তোমরা সৃষ্টি করেছ, তাকে জীবিত কর। (আঃপ্রঃ- ৭০৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৮)

৭৫৫৯

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) কে বলিতে শুনিয়াছি। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ বলেছেনঃ তাদের চেয়ে বড় যালিম আর কে আছে যে আমার সৃষ্টির মত সৃষ্টি করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে? তা হলে তারা একটা অণু কিংবা শস্যদানা কিংবা যব তৈরী করুক। (আঃপ্রঃ- ৭০৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৯)

৯৭/৫৭. অধ্যায়ঃ পাপী ও মুনাফিকের কিরাআত, তাদের স্বর ও তাদের কিরাআত কন্ঠনালী অতিক্রম করে না।

৭৫৬০

আবু মুসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কুরআন তিলাওয়াতকারী ঈমানদারের দৃষ্টান্ত উতরুজ্জার (কমলালেবু) মত। এর স্বাদও উৎকৃষ্ট এবং সুগন্ধও উৎকৃষ্ট। আর যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে না তার দৃষ্টান্ত যেন খেজুরের মত। এটি খেতে সুস্বাদু বটে, তবে তার কোন সুঘ্রাণ নেই। কুরআন তিলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তিটি সুগন্ধি ফুলের মত। এর সুগন্ধ আছে বটে, তবে স্বাদে তিক্ত। আর যে অতি পাপী হয়ে আবার কুরআনও তিলাওয়াত করে না সে মাকাল ফলের মত। এ ফল স্বাদেও তিক্ত আর এর কোন সুগন্ধ নেই।(আঃপ্রঃ- ৭০৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫০)

৭৫৬১

আয়েশা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকজন নাবী (সাঃআঃ) -কে জ্যোতিষদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিল। তিনি বলিলেন, তারা মূলত কিছুই নয়। তারা জিজ্ঞাসা করিল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কখনো কখনো তারা তো এমন কিছু কথাও বলে ফেলে যা সত্য হয়। এতে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এসব কথা সত্য। জ্বিনেরা এসব কথা প্রথম শোনে, (মনে রেখে) পরে এদের দোসরদের কানে মুরগির মত করকর রবে নিক্ষেপ করে দেয়। এরপর এসব জ্যোতিষী সামান্য সত্যের সাথে শত মিথ্যার মিশ্রণ ঘটায়। (আঃপ্রঃ- ৭০৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫১)

৭৫৬২

আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ পূর্বাঞ্চল থেকে একদল লোকের অভ্যুদয় ঘটবে। তারা কুরআন পাঠ করিবে, তবে তাদের এ পাঠ তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেভাবে শিকার (ধনুক) থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তারা আর ফিরে আসবে না, যে পর্যন্ত তীর ধনুকের ছিলায় না আসে। বলা হল, তাদের আলামত কি? তিনি বলিলেন, তাদের আলামত হল মাথা মুণ্ডন।(আঃপ্রঃ- ৭০৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫২)

৯৭/৫৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বানীঃ কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদণ্ড (২১:৪৭)।

আদম সন্তানদের আমল ও কথা পরিমাপ করা হইবে। মুজাহিদ (র.) বলেন, রুমীদের (ইটালীয়দের) ভাষায় ……. … অর্থ ন্যায় ও ইনসাফ। ……. ….. শব্দমূল হল …… … অর্থ ন্যায়পরায়ন। অপর পক্ষে ……. …. -এর অর্থ (কিন্তু) জালিম।

৭৫৬৩

আবু হুরাইরা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ দুটি কলেমা (বাণী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারনে খুবই সহজ (আমলের) পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাণী দুটি হচ্ছে), সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহান্নাল্লাহিল আযীম—আমরা আল্লাহ তাআলার প্রশংসাসহ তাহাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, মহান আল্লাহ অতীব পবিত্র।(আঃপ্রঃ- ৭০৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫৩)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply