আসওয়াদ আনসীর ও নাজরান অধিবাসীদের ঘটনা

আসওয়াদ আনসীর ও নাজরান অধিবাসীদের ঘটনা

আসওয়াদ আনসীর ও নাজরান অধিবাসীদের ঘটনা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৬৪, মাগাযী, অধ্যায়ঃ (৭২-৭৩)=২টি

৬৪/৭২. অধ্যায়ঃ আসওয়াদ আনসীর ঘটনা
৬৪/৭৩. অধ্যায়ঃ নাজরান অধিবাসীদের ঘটনা

৬৪/৭২. অধ্যায়ঃ আসওয়াদ আনসীর ঘটনা

৪৩৭৮

উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

আমাদের কাছে এ খবর পৌঁছে যে, [রাসুল (সাঃআঃ)- এর যামানায়] মিথ্যাচারী মুসাইলামাহ একবার মদিনায় এসে হারিসের কন্যার ঘরে অবস্থান করেছিল। হারিস ইবনু কুরাইয়ের কন্যা তথা আবদুল্লাহ ইবনু আমিরের মা ছিল তার (মুসাইলামাহর) স্ত্রী। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার কাছে আসলেন। তখন তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাদি.) আর তিনি হলেন সেই ব্যাক্তি যাঁকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর খতীর বলা হত। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর হাতে ছিল একটি খেজুরের ডাল। তিনি তার কাছে গিয়ে তার সঙ্গে কথাবার্তা বলিলেন। মুসাইলামাহ তাঁকে [রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- কে] বলিল, আপনি ইচ্ছা করলে আমার এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের মাঝে বাধা এভাবে তুলে দিতে পারেন যে, আপনার পরে তা আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দিবেন। নাবী (সাঃআঃ) তাকে বলিলেন, তুমি যদি এ ডালটিও আমার কাছে চাও, তাও আমি তোমাকে দেব না। আমি তোমাকে ঠিক তেমনই দেখছি যেমনটি আমাকে (স্বপ্নযোগে) দেখানো হয়েছে। এই সাবিত ইবনু কায়স আমার পক্ষ থেকে তোমার জবাব দেবে। এ কথা বলে নাবী (সাঃআঃ) চলে গেলেন। [৩৬২০] (আ.প্র. ৪০৩০, ই.ফা. ৪০৩৪)

৪৩৭৯

উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

আমি “আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.)- কে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর উল্লেখিত স্বপ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলিলেন, [আবু হুরাইরা কর্তৃক] আমাকে বলা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, আমি ঘুমাচ্ছিলাম এমতাবস্থায় আমাকে দেখানো হল যে, আমার দুহাতে দুটি সোনার কাঁকন রাখা হয়েছে। ও দুটি আমার কাছে বীভৎস ঠেকল এবং তা অপছন্দ করলাম। আমাকে (ফুঁ দিতে ) বলা হলে আমি ও দুটিকে ফুঁ দিলাম। সে দুটি উড়ে গেল। আমি এ দুটির ব্যাখ্যা করলাম যে, দুটি মিথ্যাচারী (নাবী) আবির্ভূত হইবে। উবাইদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ দুজনের একজন হল আসওয়াদ আলআনসী, যাকে ফাইরুয নামক এক ব্যাক্তি ইয়ামানে হত্যা করে আর অপরজন হল মুসাইলামাহ। [৩৬২১] (আ.প্র. ৪০৩০, ই.ফা. ৪০৩৪)

৬৪/৭৩. অধ্যায়ঃ নাজরান অধিবাসীদের ঘটনা

৪৩৮০

হুযাইফাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাজরান এলাকার দুজন সরদার আকিব এবং সাইয়িদ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর কাছে এসে তাহাঁর সঙ্গে মুবাহালা করিতে চেয়েছিল। বর্ণনাকারী হুযাইফাহ (রাদি.) বলেন, তখন তাদের একজন তার সঙ্গীকে বলিল, এরুপ করো না। কারণ আল্লাহর কসম! তিনি যদি নাবী হয়ে থাকেন আর আমরা তাহাঁর সঙ্গে মুবাহালা [৭৯] করি তাহলে আমরা এবং আমাদের পরবর্তী সন্তান-সন্ততি (কেউ) রক্ষা পাবে না। তারা উভয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- কে বলিল, আপনি আমাদের নিকট হইতে যা চাবেন আপনাকে আমরা তা-ই দেব। তবে এর জন্য আপনি আমাদের সঙ্গে একজন আমানতদার ব্যক্তিকে পাঠিয়ে দিন। আমানতদার ব্যাতীত অন্য কোন ব্যক্তিকে আমাদের সঙ্গে পাঠাবেন না। তিন বলিলেন, আমি তোমাদের সঙ্গে এমন একজন আমানতদার পাঠাবো যে প্রকৃতই আমানতদার এবং পাক্কা আমানতদার। এ পদে ভূষিত হওয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর সাহাবীগণ আগ্রহান্বিত হলেন। তখন তিনি বলিলেন, যে আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ! তুমি উঠে দাঁড়াও। তিনি যখন দাঁড়ালেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ এ হচ্ছে উম্মতের সত্যিকার আমানতদার। [৩৭৪৫] (আ.প্র. ৪০৩১, ই.ফা. ৪০৩৫)

[৭৯] পরস্পর পরস্পরকে নির্দিষ্ট পদ্বতিতে অভিসম্পাত করাকে মুবাহালা বলা হয়ে থাকে। পদ্বতিটি হলোঃ উভয় পক্ষ স্বীয় পরিবার পরিজনসহ লোকালয় ত্যাগ করে জঙ্গলে চলে যাবে এবং সেখানে এ বলে আল্লাহর নিকট দুআ করিবে যে, আমাদের মাধ্যে যে মিথ্যাবাদী তার প্রতি ধ্বংস নেমে আসুক।

৪৩৮১

হুযাইফাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাজরান অধিবাসীরা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে বলিল, আমাদের জন্য একজন আমানতদার ব্যক্তি পাঠিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ তোমাদের কাছে আমি একজন আমানতদার ব্যক্তিকেই পাঠাব যিনি সত্যিই আমানতদার। লোকেরা এ সম্মান অর্জনের জন্য আগ্রহান্বিত হল। নাবী (সাঃআঃ) তখন আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ (রাদি.)- কে পাঠালেন। [৩৭৪৫] (আ.প্র. ৪০৩২, ই.ফা. ৪০৩৬)

৪৩৮২

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন আমানতদার রয়েছে। আর এ উম্মাতের আমানতদার হল আমূ উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ। [৩৭৪৪] (আ.প্র. ৪০৩৩, ই.ফা. ৪০৩৭)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply