আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা, নিরাপত্তা বিধানকারী, অদৃশ্যের জ্ঞান কেবল তাহাঁরই আছে

আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা, নিরাপত্তা বিধানকারী, অদৃশ্যের জ্ঞান কেবল তাহাঁরই আছে

আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা, নিরাপত্তা বিধানকারী, অদৃশ্যের জ্ঞান কেবল তাহাঁরই আছে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৯৭, জাহমিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ, অধ্যায়ঃ (১-১১)=১২টি

৯৭/১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর তাওহীদের দিকে উম্মতের প্রতি নাবী (সাঃআঃ) -এর আহ্বান।
৯৭/২. অধ্যায়ঃ তুমি বলে দাও, তোমরা আল্লাহ নামে ডাকো বা রহমান নামে ডাকো। তোমরা যে নামেই ডাকো সকল সুন্দর নামই তাহাঁর। [২০৬] (সুরা ইসরা ১৭/১১০)
৯৭/৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তো রিযিক দাতা প্রবল, পরাক্রান্ত। (সুরা আয্‌ যারিয়াত ৫১/৫৮)
৯৭/৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত, তিনি তাহাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না- (সুরা জ্বিন ৭২/২৬)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে- (সুরা লুক্বমান ৩১/৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে নাযিল করিয়াছেন- (সুরা আন-নিসা ৪/১৬৬)। তাহাঁর অবগতি ব্যতীত কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না বা (তার বোঝা) হালকা করে না- (সুরা ফাতির ৩৫/১১)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল তাহাঁরই আছে- (সুরা ফুসসিলাত ৪১/৪৭)।
৯৭/৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধানকারী।
৯৭/৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ মানুষের বাদশাহ (সুরা আন-নাস ১১৪/২)
৯৭/৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়- (সুরা আল-হাশর ৫৯/২৪)। পবিত্র ও মহান তোমার প্রতিপালক, ইযযতের অধিকারী প্রতিপালক- (সুরা আস্‌-সাফফাত ৩৭/১৮০)। ইয্‌যত তা তো আল্লাহ এবং তাহাঁর রসুলেরই- (সুরা আল-মুনাফিকুন ৬৩/৮)।
৯৭/৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ এবং তিনিই সে সত্তা, যিনি যথার্থই আসমান ও যমীন সৃষ্টি করিয়াছেন। (সুরা আনআম ৬/৭৩)
৯৭/৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সুরা আন-নিসা ৪/১)
৯৭/১০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আপনি বলে দিন, তিনি শক্তির অধিকারী। (সুরা আনআম ৬/৬৫)
৯৭/১১. অধ্যায়ঃ অন্তরসমূহ পরিবর্তনকারী।

৯৭/১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর তাওহীদের দিকে উম্মতের প্রতি নাবী (সাঃআঃ) -এর আহ্বান।

৭৩৭১

ইবনে আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) মুয়ায (রাদি.) -কে ইয়ামানে প্রেরণ করেছিলেন।

তাওহীদ [১]

[১] মূলতঃ ইমাম বুখারী এই পর্বটি জাহমিয়্যাদের আক্বীদাকে খন্ডন করার উদ্দেশ্যেই উল্লেখ করিয়াছেন। কারণ জাহমিয়্যা এমন এক বিদআতী দল যারা তাওহীদকে অস্বীকার করে থাকে। মুসতামলীর বর্ণনাতে পর্বটির নাম كتاب الرد على الجهمية وغيرهم। এখানে وغيرهم এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কাদেরিয়া সম্প্রদায়।

ইতঃপূর্বেও ইমাম বুখারী খারেজীদের আক্বীদাকে খন্ডন করার জন্য كتاب الفتن এবং রাফেজাদের (শিআদের) আক্বীদাকে খন্ডন করার জন্য كتاب الاحكام নামে পর্ব উল্লেখ করিয়াছেন। বলা বাহুল্য যে, এই চারটি দলই বিদআতের চূঁড়া। জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায় আল্লাহর সিফাতকে অস্বীকার করে, কুরআন সম্পর্কে বলে, এটা আল্লাহর কালাম নয় বরং এটা তার সৃষ্টি। আল্লাহ সম্পর্কে আরো বলে, তিনি বাতাসের ন্যায় প্রত্যেক বস্ত্তর সাথে আছেন। এদের সর্দারের নাম জাহাম বিন সাফওয়ান।

৭৩৭২

ইবনু আব্বাসের মুক্ত গোলাম আবু মাবাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) -কে বলিতে শুনিয়াছি, যখন নাবী (সাঃআঃ) মুআয ইবনু জাবাল (রাদি.) -কে ইয়ামান পাঠালেন, তখন তিনি তাঁকে বলিলেন, তুমি আহলে কিতাবদের একটি কাওমের কাছে যাচ্ছ। অতএব, তাদের প্রতি তোমার প্রথম আহ্বান হইবে- তারা যেন আল্লাহর একত্ববাদ মেনে নেয়। তারা তা স্বীকার করার পর তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ দিনে রাতে তাদের প্রতি পাঁচ বার সালাত ফরয করে দিয়েছেন। যখন তারা সালাত আদায় করিবে, তখন তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের ধন-সম্পদে আল্লাহ তাদের প্রতি যাকাত ফরয করিয়াছেন। তা তাদেরই ধনশালীদের থেকে গ্রহণ করা হইবে। আবার তাদের ফকীরদেরকে তা দেয়া হইবে। যখন তারা স্বীকার করে নেবে, তখন তাদের থেকে গ্রহণ কর। তবে লোকজনের ধন-সম্পদের উত্তম অংশ গ্রহণ করা থেকে বেঁচে থাক।(আঃপ্রঃ- ৬৮৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৮)

৭৩৭৩

মুআয ইবনু জাবাল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে মুআয! তোমার কি জানা আছে, বান্দার উপর আল্লাহর হক কী? তিনি বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই ভাল জানেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ বান্দা আল্লাহর ইবাদাত করিবে, তাহাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করিবে না। (আবার তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন) আল্লাহর উপর বান্দার হক কী তা কি তুমি জান? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি [নাবী (সাঃআঃ)] বললেনঃ তা হল বান্দাদেরকে শাস্তি না দেয়া। (আঃপ্রঃ- ৬৮৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৯)

৭৩৭৪

বূ সাঈদ খুদ্রী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

এক লোক অন্য এক লোককে বারবার ইখলাস সুরা তিলাওয়াত করিতে শুনল। সকাল বেলা লোকটি নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে উপস্থিত হয়ে তাহাঁর নিকট এ বিষয়টি উল্লেখ করিল; লোকটি যেন সুরা ইখ্‌লাসের গুরুত্বকে কম করছিল। এই প্রেক্ষিতে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ যে সত্তার হাতে আমার জীবন, তাহাঁর কসম করে বলছি! এ সুরাটি অবশ্যই কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ।

ইস্মাঈল ইবনু জাফর ক্বাতাদাহ ইবনু আল-নুমান (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে (কিছুটা) বৃদ্ধি সহ বর্ণনা করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৬৮৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭০৭)

৭৩৭৫

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এক সহাবীকে একটি মুজাহিদ দলের প্রধান করে অভিযানে পাঠালেন। সলাতে তিনি যখন তাহাঁর সাথীদের নিয়ে ইমামত করিতেন, তখন ইখ্‌লাস সুরাটি দিয়ে সালাত শেষ করিতেন। তারা যখন অভিযান থেকে ফিরে আসল তখন নাবী (সাঃআঃ) -এর খেদমতে ব্যাপারটি আলোচনা করিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তাঁকেই জিজ্ঞেস করো কেন সে এ কাজটি করেছে? এরপর তারা তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিলেন, এ সুরাটির আল্লাহ তাআলার গুণাবলী রয়েছে। এ জন্য সুরাটি পড়তে আমি ভালোবাসি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহ তাঁকে ভালবাসেন। [মুসলিম ৬/৪৫, হাদীস ৮১৩] (আঃপ্রঃ- ৬৮৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭১)

৯৭/২. অধ্যায়ঃ তুমি বলে দাও, তোমরা আল্লাহ নামে ডাকো বা রহমান নামে ডাকো। তোমরা যে নামেই ডাকো সকল সুন্দর নামই তাহাঁর। [২০৬] (সুরা ইসরা ১৭/১১০)

[২০৬] মূলতঃ ইমাম বুখারী এই باب উল্লেখ করিয়াছেন আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নাম صفات কে প্রমাণ করার জন্য। সহীহ বুখারীর কোন কোন ব্যাখ্যাকারী বলেন : এ باب টি যেন মূল আর পরবর্তী ابواب গুলো শাখা-প্রশাখা। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হলো : মুশরিকরা যখন শুনতে পেল যে রাসুল (সাঃ) আল্লাহ তাআলাকে আহবান করিয়াছেন يا اللهু يارحمن বলে, তখন তারা বলিল যে, মুহাম্মাদ আমাদেরকে এক আল্লাহকে আহবান করার নির্দেশ দেয় অথচ তিনি দুজন আল্লাহকে আহবান করছেন। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।

সুতরাং বুঝা গেল যে, তিনি এক সত্তা, তিনি অদ্বিতীয়, কিন্তু তাহাঁর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী (صفات) রয়েছে। তাওহীদ তিন প্রকার : যথা : ১. তাওহীদ রুবূবিয়্যাত- (সৃষ্টি ও পালনে আল্লাহর একত্ব), তাওহীদে ইবাদাত বা উলূহিয়্যাত- (ইবাদাত বা উপাসনায় একত্ব) এবং ৩. তাওহীদে আসমা ও সিফাত- নামও গুণাবলীর একত্ব)।

এখানে তাওহীদে আসমা ওয়াস সিফাতকে স্থির করা হয়েছে যথা তার একটি নাম رحمن ফলে তিনি رحمن সিফাতটি তার জন্য স্থির করিয়াছেন। এই সিফাতটি তাহাঁর صفات ذات এর অন্তর্গত।

رحمة দ্বারা নেকী, ইচ্ছা অন্য কোন উদ্দেশ্য নেয়া যাবে না। অনুরূপ আল্লাহর রহমতের তুলনা কোন মাখলূকের রহমতের সাথে দেয়া যাবে না। সুতরাং তাওহীদে আসমা ওয়াস্সিফাত হচ্ছে আল্লাহ তাআলার ঐ সব নাম ও গুণাবলীকে যথাযথভাবে মেনে নেয়া যা আল্লাহ তাআলা নিজ সম্বন্ধে তাহাঁর কিতাবে এবং রাসুল (সাঃ) তাহাঁর সহীহ হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন। অনুরূপ আল্লাহ তাআলা যে সমস্ত নাম ও গুণাবলীকে তার নিজ সম্বন্ধে কিতাবে নিষেধ করিয়াছেন এবং রাসুল (সাঃ) তাহাঁর সহীহ হাদীসে আল্লাহ সম্বন্ধে নিষেধ করিয়াছেন তা নিষেধ করা। ঐ সমস্ত নাম ও গুণাবলীর কোন অপব্যাখ্যা, উদাহরণ, অস্বীকার, পরিবর্তন অথবা কোন স্বরূপ (নিজস্ব) কল্পনা করা যাবে না। ফলে আল্লাহ তাআলার রহমাত, আযাব, আনন্দ প্রকাশ, রাগ হওয়া, কথা বলা, দেখা, শোনা, দুনিয়ার আসমানে নেমে আসা, তিনি আরশের উপরে, তার হাত রয়েছে, পা রয়েছে, অন্তর রয়েছে ইত্যাদি কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই ঠিক যেভাবে বর্ণনায় এসেছে সেভাবেই মেনে নিতে হইবে। অনুরূপ আল্লাহ তাআলার অংশীদার নেই, পিতা-মাত নেই, সন্তান-সন্ততি নেই, তাকে তন্দ্রা ও ঘুম স্পর্শ করে না, তার মৃত্যু নেই ইত্যাদি যা নিষেধ এসেছে তা সাব্যস্ত করা যাবে না।

৭৩৭৬

জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তার প্রতি রহম করেন না, যে মানুষের প্রতি রহম করে না।(আঃপ্রঃ- ৬৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭২)

অধ্যায়: তুমি বলে দাও, তোমরা আল্লাহ নামে ডাকো বা রাহমান নামে ডাকো। তোমরা যে নামেই ডাকো সকল সুন্দর নামই তাহাঁর।[১] (সুরা ইসরা ১৭/১১০)

[১] মূলতঃ ইমাম বুখারী এই باب উল্লেখ করিয়াছেন আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নাম صفات কে প্রমাণ করার জন্য। সহীহ বুখারীর কোন কোন ব্যাখ্যাকারী বলেন : এ باب টি যেন মূল আর পরবর্তী ابواب গুলো শাখা-প্রশাখা। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হলো : মুশরিকরা যখন শুনতে পেল যে রাসুল (সাঃ) আল্লাহ তাআলাকে আহবান করিয়াছেন يا اللهু يارحمن বলে, তখন তারা বলিল যে, মুহাম্মাদ আমাদেরকে এক আল্লাহকে আহবান করার নির্দেশ দেয় অথচ তিনি দুজন আল্লাহকে আহবান করছেন। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।

সুতরাং বুঝা গেল যে, তিনি এক সত্তা, তিনি অদ্বিতীয়, কিন্তু তাহাঁর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী (صفات) রয়েছে। তাওহীদ তিন প্রকার : যথা : ১. তাওহীদ রুবূবিয়্যাত- (সৃষ্টি ও পালনে আল্লাহর একত্ব), তাওহীদে ইবাদাত বা উলূহিয়্যাত- (ইবাদাত বা উপাসনায় একত্ব) এবং ৩. তাওহীদে আসমা ও সিফাত- নামও গুণাবলীর একত্ব)।

এখানে তাওহীদে আসমা ওয়াস সিফাতকে স্থির করা হয়েছে যথা তার একটি নাম رحمن ফলে তিনি رحمن সিফাতটি তার জন্য স্থির করিয়াছেন। এই সিফাতটি তাহাঁর صفات ذات এর অন্তর্গত।

رحمة দ্বারা নেকী, ইচ্ছা অন্য কোন উদ্দেশ্য নেয়া যাবে না। অনুরূপ আল্লাহর রহমতের তুলনা কোন মাখলূকের রহমতের সাথে দেয়া যাবে না। সুতরাং তাওহীদে আসমা ওয়াস্সিফাত হচ্ছে আল্লাহ তাআলার ঐ সব নাম ও গুণাবলীকে যথাযথভাবে মেনে নেয়া যা আল্লাহ তাআলা নিজ সম্বন্ধে তাহাঁর কিতাবে এবং রাসুল (সাঃ) তাহাঁর সহীহ হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন। অনুরূপ আল্লাহ তাআলা যে সমস্ত নাম ও গুণাবলীকে তার নিজ সম্বন্ধে কিতাবে নিষেধ করিয়াছেন এবং রাসুল (সাঃ) তাহাঁর সহীহ হাদীসে আল্লাহ সম্বন্ধে নিষেধ করিয়াছেন তা নিষেধ করা। ঐ সমস্ত নাম ও গুণাবলীর কোন অপব্যাখ্যা, উদাহরণ, অস্বীকার, পরিবর্তন অথবা কোন স্বরূপ (নিজস্ব) কল্পনা করা যাবে না। ফলে আল্লাহ তাআলার রহমাত, আযাব, আনন্দ প্রকাশ, রাগ হওয়া, কথা বলা, দেখা, শোনা, দুনিয়ার আসমানে নেমে আসা, তিনি আরশের উপরে, তার হাত রয়েছে, পা রয়েছে, অন্তর রয়েছে ইত্যাদি কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই ঠিক যেভাবে বর্ণনায় এসেছে সেভাবেই মেনে নিতে হইবে। অনুরূপ আল্লাহ তাআলার অংশীদার নেই, পিতা-মাত নেই, সন্তান-সন্ততি নেই, তাকে তন্দ্রা ও ঘুম স্পর্শ করে না, তার মৃত্যু নেই ইত্যাদি যা নিষেধ এসেছে তা সাব্যস্ত করা যাবে না।

৭৩৭৭

উসামাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক সময় আমরা নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট ছিলাম। এমন সময় নাবী (সাঃআঃ) -এর কোন এক কন্যার পক্ষ থেকে একজন সংবাদবাহক এসে তাঁকে জানাল যে, তাহাঁর মেয়ের পুত্রের মৃত্যু যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। নাবী (সাঃআঃ) সংবাদবাহককে বলে দিলেন, তুমি ফিরে যাও এবং তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহ যা নিয়ে নিয়েছেন এবং তিনি যা দিয়ে রেখেছেন সবেরই তিনি মালিক। তাহাঁর কাছে প্রতিটি জিনিসের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট। কাজেই তাকে গিয়ে ধৈর্য ধরতে এবং প্রতিফল পাওয়ার আশা করিতে বল। নাবী (সাঃআঃ) -এর মেয়ে আবার সংবাদ বাহককে পাঠালেন। সে এসে বলিল, আপনাকে তাহাঁর কাছে যাবার জন্য তিনি কসম দিয়ে বলেছেন। এরপর নাবী (সাঃআঃ) যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন, তাহাঁর সঙ্গে সাদ ইবনু উবাদাহ (রাদি.), মুআয ইবনু জাবাল (রাদি.) -ও দাঁড়ালেন। এরপর শিশুটিকে নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট দেয়া হল। তখন শিশুটির শ্বাস এভাবে দুর্বল হয়ে আসছিল, যেন তা একটি মশ্কে আছে। তখন নাবী (সাঃআঃ) – এর চোখ ভিজে গেল। সাদ ইবনু উবাদাহ (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (এটা কী?) তিনি বললেনঃ এটিই রহম-দয়ামায়া, যা আল্লাহ তাহাঁর বান্দাদের অন্তরে সৃষ্টি করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাহাঁর রহম-দিল বান্দাদের উপরই দয়া করে থাকেন। (আঃপ্রঃ- ৬৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭৩)

৯৭/৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তো রিযিক দাতা প্রবল, পরাক্রান্ত। (সুরা আয্‌ যারিয়াত ৫১/৫৮)

৭৩৭৮

আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এমন কেউই নাই যে দুঃখ কষ্টদায়ক কিছু শোনার পর, সে ব্যাপারে আল্লাহর চেয়ে বেশি সবর করিতে পারে। লোকেরা আল্লাহর সন্তান আছে বলে দাবী করে, কিন্তু এর পরেও তিনি তাদেরকে শান্তিতে রাখেন এবং রিজিক দেন।(আঃপ্রঃ- ৬৮৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭৪)

৯৭/৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত, তিনি তাহাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না- (সুরা জ্বিন ৭২/২৬)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে- (সুরা লুক্বমান ৩১/৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে নাযিল করিয়াছেন- (সুরা আন-নিসা ৪/১৬৬)। তাহাঁর অবগতি ব্যতীত কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না বা (তার বোঝা) হালকা করে না- (সুরা ফাতির ৩৫/১১)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল তাহাঁরই আছে- (সুরা ফুসসিলাত ৪১/৪৭)।

قَالَ يَحْيَى الظَّاهِرُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا وَالْبَاطِنُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا

আবু আবদুল্লাহ [(বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, আল্লাহ জ্ঞানের আলোকে সমস্ত সৃষ্টির উপর প্রকাশমান, আবার তিনি জ্ঞানের আলোকেই অপ্রকাশিত।

৭৩৭৯

উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

উমার (রাদি.) সূত্রে নাবী সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ গায়িবের চাবি পাঁচটি, যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। (১) মায়ের পেটে কী লুকিয়ে আছে তা জানেন একমাত্র আল্লাহ। (২) আগামীকাল কী ঘটবে তাও জানেন একমাত্র আল্লাহ। (৩) বৃষ্টিপাত কখন হইবে তাও আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। (৪) কে কোন্ ভূমিতে মারা যাবে তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। (৫) ক্বিয়ামাত কখন ঘটবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। (আঃপ্রঃ- ৬৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭৫)

৭৩৮০

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) স্বীয় রবকে দেখেছেন, সে মিথ্যা বলিল। কেননা আল্লাহ বলেছেন, চক্ষু তাঁকে দেখিতে পায় না। আর যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) গায়েব জানেন, সেও মিথ্যা বলিল। কেননা আল্লাহ বলেন, গায়িব জানেন একমাত্র আল্লাহ।(আঃপ্রঃ- ৬৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৬)

৯৭/৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধানকারী।

৭৩৮১

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী সাঃআঃ-এর পেছনে সালাত আদায় করিতেন। তখন আমরা বলতাম, আল্লাহর উপর সালাম। তখন নাবী সাঃআঃ বললেনঃ আল্লাহ তো নিজেই সালাম। হাঁ, তোমরা বল, …….التَّحِيَّاتُ للهِ অর্থাৎ মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক সকল ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বারাকাত অবতীর্ণ হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাঃআঃ তাহাঁর বান্দা ও তাহাঁর রাসুল। [৮৩১] (আঃপ্রঃ- ৬৮৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭৭)

৯৭/৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ মানুষের বাদশাহ (সুরা আন-নাস ১১৪/২)

এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।

৭৩৮২

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন পৃথিবী আপন মুঠোয় ধারণ করবেন এবং আসমানকে তাহাঁর ডান হাতে গুটিয়ে নিয়ে বলবেনঃ আমিই একমাত্র অধিপতি। দুনিয়ার বাদশাহরা কোথায়? শুআয়ব, যুবায়দী, ইবনু মুসাফির, ইসহাক ইবনু ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি), ইমাম যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবু সালামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৬৮৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭৮)

৯৭/৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়- (সুরা আল-হাশর ৫৯/২৪)। পবিত্র ও মহান তোমার প্রতিপালক, ইযযতের অধিকারী প্রতিপালক- (সুরা আস্‌-সাফফাত ৩৭/১৮০)। ইয্‌যত তা তো আল্লাহ এবং তাহাঁর রসুলেরই- (সুরা আল-মুনাফিকুন ৬৩/৮)।

وَمَنْ حَلَفَ بِعِزَّةِ اللهِ وَصِفَاتِهِ وَقَالَ أَنَسٌ قَالَ النَّبِيُّ تَقُولُ جَهَنَّمُ قَطْ قَطْ وَعِزَّتِكَ وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ يَبْقَى رَجُلٌ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ آخِرُ أَهْلِ النَّارِ دُخُولاً الْجَنَّةَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي عَنْ النَّارِ لاَ وَعِزَّتِكَ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا قَالَ أَبُو سَعِيدٍ إِنَّ رَسُولَ اللهِ قَالَ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لَكَ ذَلِكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ وَقَالَ أَيُّوبُ وَعِزَّتِكَ لاَ غِنَى بِي عَنْ بَرَكَتِكَ

কেউ যদি আল্লাহর ইয্যত ও সিফাতের শপথ করে (তার হুকুম কী)? আনাস (রাদি.) বলেন, নাবী সাঃআঃ বলেছেনঃ জাহান্নাম বলবে, হে আল্লাহ! তোমার সম্মানের কসম, যথেষ্ট হয়েছে। আবু হুরাইরাহ (রাদি.) নাবী সাঃআঃ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী লোকটি অবস্থান করিবে জাহান্নাম ও জান্নাতের মাঝখানে। তখন সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমার চেহারাখানি জাহান্নাম থেকে ফিরিয়ে (জান্নাতের দিকে) দিন। আপনার সম্মানের কসম। আপনার কাছে এ ব্যতীত আমি আর কিছুই চাইব না। আবু সাঈদ (রাদি.) বর্ণনা করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ তখন আল্লাহ বলবেন, তোমাকে তা দেয়া হল এবং তার সাথে আরো দশগুণ বেশি দেয়া হল। আইয়ূব নাবী (আঃ) দুআ করেছেনঃ হে আল্লাহ! আপনার সম্মানের কসম! আমি আপনার বরকত থেকে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করি না

৭৩৮৩. ইবনু আব্বাস (রা) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) ঐ কথা বলে দুআ করিতেনঃ

أَعُوذُ بِعِزَّتِكَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الَّذِي لاَ يَمُوتُ وَالْجِنُّ وَالإِنْسُ يَمُوتُونَ

আউজু বি ইজ্জাতিকাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল্লাজি লা ইয়া মুতু ওয়াল জিন্নু ওয়াল ইনসান ইয়ামুতুন

আমি আপনার ইয্যতের আশ্রয় চাচ্ছি, আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আর আপনার কোন মৃত্যু নেই। অথচ জ্বিন ও মানুষ সবই মরণশীল।

[মুসলিম ৪৮/১৮, হাদীস ২৭১৭, আহমাদ ২৭৪৮] (আঃপ্রঃ- ৬৮৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৭৯)

৭৩৮৪

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আনাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ লোকদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইবে। খালীফা ও মুতামির (র.) আনাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জাহান্নামীদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইতে থাকবে। তখন জাহান্নাম বলিতে থাকবে আরো অধিক আছে কি? আর শেষে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, তাহাঁর কুদরতের কদম জাহান্নামে রাখবেন। তখন এর এক অংশ আরেক অংশের সাথে মিশ্রিত হয়ে স্থির হইতে থাকবে। আর বলবে আপনার ইয্যত ও করমের কসম! যথেষ্ট হয়েছে। জান্নাতের কিছু জায়গা শূন্য থাকবে। অবশেষে আল্লাহ সেই শূন্য জায়গার জন্য নতুন করে কিছু মাখলুক সৃষ্টি করবেন এবং এদের জন্য জান্নাতের সেই শূন্যস্থানে বসতি স্থাপন করে দেবেন। (আঃপ্রঃ- ৬৮৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮০)

৯৭/৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ এবং তিনিই সে সত্তা, যিনি যথার্থই আসমান ও যমীন সৃষ্টি করিয়াছেন। (সুরা আনআম ৬/৭৩)

৭৩৮৫

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রাত্রিকালে এ দুআ করিতেনঃ হে আল্লাহ! আপনারই জন্য সব প্রশংসা। আসমান এবং যমীনের প্রতিপালক! আপনারই সব প্রশংসা। আপনি সব আসমান ও যমীন এবং এগুলোর মধ্যকার সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। আপনারই সব প্রশংসা। আসমানসমূহ এবং যমীনের নূর আপনিই। আপনার বাণীই সত্য। আপনার প্রতিশ্রুতি সত্য। সত্য আপনার মুলাকাত। জান্নাত সত্য। জাহান্নাম সত্য। ক্বিয়ামাত সত্য। হে আল্লাহ! আপনারই প্রতি আমি নিবেদিত। আপনার প্রতিই আমি ঈমান এনেছি। একমাত্র আপনারই ওপর ভরসা করেছি। আপনার কাছে ফিরে এসেছি। আপনারই সাহায্যে দুশমনের মুকাবিলা করেছি। (হক ও বাতিলের ফায়সালা) আপনারই উপর ন্যস্ত করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে মাফ করে দিন, মাফ করে দিন আমার আগের এবং পরের গুনাহ, যা আমি গোপনে ও প্রকাশ্যে করেছি এবং আপনি আমার ইলাহ, আপনি ছাড়া আমার কোন ইলাহ নেই। (আ.প্র. ৬৮৬৯, ই.ফা. ৬৮৮১)

সুফ্ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এ রকম বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এতে বর্ণিত আছে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আপনিই সত্য এবং আপনার বাণীই সত্য। (আঃপ্রঃ- ৬৮৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮২)

৯৭/৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সুরা আন-নিসা ৪/১)

وَقَالَ الأَعْمَشُ عَنْ تَمِيمٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي وَسِعَ سَمْعُهُ الأَصْوَاتَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى عَلَى النَّبِيِّ {قَدْ سَمِعَ اللهُ قَوْلَ الَّتِي تُجَادِلُكَ فِي زَوْجِهَا}

আমাশ, তামীম, উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি), আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিত। আয়েশাহ (রাদি.) বলেছেন, সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহর, যাঁর শ্রবণশক্তি সকল শব্দকে ঘিরে রেখেছে। অতঃপর আল্লাহ নাবী সাঃআঃ-এর উপর নাযিল করেনঃ হে রাসুল! আল্লাহ শুনেছেন সেই স্ত্রীলোকের কথা, যে তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সঙ্গে বাদানুবাদ করছে। (সুরা আল-মুজাদালাহ ৫৮/১)

৭৩৮৬

আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নাবী সাঃআঃ-এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা উঁচু স্থানে উঠার সময় তাকবীর বলতাম। তখন নাবী সাঃআঃ বললেনঃ তোমরা তোমাদের নফসের উপর একটু দয়া কর। কেননা, তোমরা কোন বধির কিংবা অনুপস্থিতকে ডাকছ না। বরং তোমরা ডাকছ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা এবং ঘনিষ্ঠতমকে। এরপর তিনি আমার কাছে আসলেন। তখন আমি মনে মনে لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ বলছিলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! বল لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ কেননা এটি জান্নাতের ভান্ডারসমূহের একটি ভান্ডার। অথবা তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে সেই সম্পর্কে জানিয়ে দেব না (যা হচ্ছে জান্নাতের খাজানা)? (আঃপ্রঃ- ৬৮৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮৩)

৭৩৮৭

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু বকর সিদ্দীক (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) কে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি দুআ শিখিয়ে দিন যা দিয়ে আমি আমার সালাতে দুআ করিতে পারি। নাবী সাঃআঃ বললেনঃ তুমি বল, اللهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي…. হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের ওপর খুব বেশি যুল্ম করেছি। আপনি ব্যতীত আমার গুনাহ ক্ষমা করার কেউই নেই। কাজেই আপনার পক্ষ থেকে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনিই অতি ক্ষমাপরায়ণ ও দয়াবান। [৮৩৪; মুসলিম ৪৮/১৩, হাদীস ২৭০৫, আহমাদ ৮] (আঃপ্রঃ- ৬৮৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮৪)

৭৩৮৮

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু বকর সিদ্দীক (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) কে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি দুআ শিখিয়ে দিন যা দিয়ে আমি আমার সালাতে দুআ করিতে পারি। নাবী সাঃআঃ বললেনঃ তুমি বল, اللهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي…. হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের ওপর খুব বেশি যুল্ম করেছি। আপনি ব্যতীত আমার গুনাহ ক্ষমা করার কেউই নেই। কাজেই আপনার পক্ষ থেকে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনিই অতি ক্ষমাপরায়ণ ও দয়াবান। [৮৩৪; মুসলিম ৪৮/১৩, হাদীস ২৭০৫, আহমাদ ৮] (আঃপ্রঃ- ৬৮৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮৪)

৭৩৮৯

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ জিবরীল আমাকে ডাক দিয়ে বলিলেন, আল্লাহ আপনার কওমের লোকদের কথা শুনেছেন এবং তারা আপনাকে যে জবাব দিয়েছে তাও তিনি শুনেছেন। [২০৭](আঃপ্রঃ- ৬৮৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮৫)

[২০৭] এ হাদীসে রাসূলুল্লাহকে (সাঃআঃ) আশ্বাস বাণী শোনানো হয়েছে যে আল্লাহ তাঁকে রাসুল করে পাঠিয়েছেন। কাফিরগণ নাবী (সাঃআঃ) -এর সাথে কেমন আচরণ করছে আল্লাহ তা দেখছেন ও শুনছেন। অর্থাৎ এ অবস্থায় যা করার দরকার আল্লাহ তা করবেন।

৯৭/১০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আপনি বলে দিন, তিনি শক্তির অধিকারী। (সুরা আনআম ৬/৬৫)

৭৩৯০

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ সালামী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর সহাবাগণকে সকল কাজে এভাবে ইস্তিখারা শিক্ষা দিতেন, যেভাবে তিনি তাদের কুরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলিতেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোন কাজ করার ইচ্ছা করে, তখন সে যেন দুই রাকআত নফল সালাত আদায় করে নেয়। তারপর এ বলে দুআ করে, হে আল্লাহ! আমি আপনারই ইল্মের সাহায্যে মঙ্গল তলব করছি। আর আপনারই কুদরতের সাহায্যে আমি শক্তি অন্বেষণ করছি। আর আপনারই অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা, আপনিই শক্তি রাখেন, আমি কোন শক্তি রাখিনা। আপনিই সব কিছু জানেন, আমি কিছু জানি না। গায়িবী বিষয়াদির বিশেষজ্ঞ একমাত্র আপনি। এরপর সালাত আদায়কারী মনে মনে স্বীয় উদ্দেশ্য উল্লেখ করে বলবে, হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন যে, এ কাজটি আমার জন্য বর্তমানে ও ভবিষ্যতে মঙ্গলজনক- বর্ণনাকারী বলেন, কিংবা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এ স্থানে বলেছেনঃ আমার দ্বীন-দুনিয়া ও পরিণামের ক্ষেত্রে কল্যাণকর, তাহলে আমার জন্য তা নির্ধারণ করে নিন এবং তা আমার জন্য সহজ করে দিন, আর আমার জন্য এতে বরকত দিন। হে আল্লাহ! আর যদি আপনি জানেন যে, এটি আমার দ্বীন, দুনিয়া ও পরিণামের ক্ষেত্রে অথবা আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের ব্যাপারে অমঙ্গলজনক, তবে তা থেকে আমাকে বিরত রাখুন। আর আমার জন্যে কল্যাণ নির্ধারণ করুন যেখানেই হয় অতঃপর আমাকে সন্তুষ্ট রাখুন। [২০৮] (আঃপ্রঃ- ৬৮৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮৬)

[২০৮] যারা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলীর ক্ষেত্রে ইসতিখারার দুআ পাঠ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আল্লাহর সিদ্ধান্ত কামনা করবেন, তারা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

৯৭/১১. অধ্যায়ঃ অন্তরসমূহ পরিবর্তনকারী।

আল্লাহর বাণীঃ আমিও তাদের অন্তরসমূহ ও দৃষ্টিগুলোকে ঘুরিয়ে দেব। (সুরা আনআম ৬/১১০)

৭৩৯১

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) অধিকাংশ সময় কসম করিতেন এ কথা বলে- না, তাহাঁর কসম, যিনি অন্তরসমূহ পরিবর্তন করে দেন। (আঃপ্রঃ- ৬৮৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮৭)

Comments

Leave a Reply