আল্লাহ তাআলার সম্ভষ্টি ব্যতীত জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্ৰদৰ্শন

আল্লাহ তাআলার সম্ভষ্টি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্ৰদৰ্শনঃ

<< সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব হাদীস বই এর মুল সুচিপত্র

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তাআলার সম্ভষ্টি ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্ৰদৰ্শন

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১০৫ – আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এরশাদ করেছেনঃ “আল্লাহর সম্ভষ্টির উদ্দেশ্যে যে ইলম অর্জন করিতে হয়, তা যদি কোন মানুষ দুনিয়ার উদ্দেশ্য হাসিলের নিমিত্তে অর্জন করে, তবে সে কিয়ামত দিবসে জান্নাতের সুঘ্ৰাণও পাবে না।”

[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ ইবনি হিব্বান ও হাকেম। হাকেম বলেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তনুযায়ী সহীহ]
ইতিপূর্বে আবু হুরায়রা [রাঃআঃ]এর হাদীছ রিয়া অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে [হাদীছ নং ২২], তাতে বলা হয়ঃ

“[কিয়ামত দিবসে সর্বপ্রথম বিচার করা হইবে] সেই ব্যক্তির যে জ্ঞানার্জন করেছিল ও মানুষকে তা শিক্ষা দিয়েছিল এবং কুরআন পাঠ করেছিল। তাকে নিয়ে আসা হইবে। অতঃপর [আল্লাহ] তাকে প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের পরিচয় করবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কি আমল করেছ এই নেয়ামত দ্বারা। সে বলবে, জ্ঞানার্জন করেছি এবং মানুষকে তা শিখিয়েছি। আর আপনার সম্ভাষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, [তোমাকে] বলা হইবে আলেম বা জ্ঞানী। কুরআন পাঠ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, [তোমাকে] বলা হইবে ক্বারী বা পাঠক। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হইবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হইবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইবে।” [হাদীছটি মুসলিম প্রমূখ বর্ণনা করিয়াছেন] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১০৬ – কা`ব বিন মালেক [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে একথা বলিতে  শুনেছিঃ “যে ব্যক্তি বিদ্যান্বেষন করিবে এই উদ্দেশ্যে যে, তা দ্বারা ওলামাদের কাতারে শামিল হইবে। অথবা দুর্বল বিবেক সম্পন্ন লোকদের সাথে বিতর্ক করিবে এবং মানুষের দৃষ্টি তার দিকে ফিরাবে। তবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।”

[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন তিরমিযী, ইবনু আবী দুনিয়া [কিতাবুছ ছমত গ্রন্থে] ও বায়হাকী। হাকেম অন্য হাদীছের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিরমিযী বলেনঃ হাদীছটি গরীব। এ হাদীসের শব্দরূপ তাহাঁর কিতাব থেকেই গৃহীত হয়েছে] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১০৭ – জাবের [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমরা এই উদ্দেশ্যে জ্ঞান শিক্ষা করো না যে, তা দ্বারা আলেমদের মাঝে গর্ব করিবে, নির্বোধদের সাথে ঝগড়া করিবে, মজলিস বা মাহফিলের উত্তম স্থানে বসবে। যে এরূপ করিবে তার জন্যে রহিয়াছে আগুন, আগুন। [ইবনি মাজাহ, ইবনি হিব্বান ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন]। [১]

[১] শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি আরো বর্ণনা করিয়াছেন হাকেম, ইবনি আবদুল বারর। হাদীছটিকে হাকেম ছহীহ বলেছেন এবং যাহাবী তাতে সম্মতি দিয়েছেন। হাফেয ইরাক্বীও হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১০৮ -হুযায়ফা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

হাদীছটি অনুরূভাবে ইবনি মাজাহ হুযায়ফা [রাঃআঃ] এর বরাতে বর্ণনা করিয়াছেন।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১০৯- ইবনি ওমর [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি বিদ্যাম্বেষণ করিবে এই উদ্দেশ্যে যে, তা দ্বারা আলেমদের মাঝে গর্ব করিবে, মূর্খ লোকদের সাথে ঝগড়া করিবে অথবা তার দিকে মানুষের দৃষ্টি ফিরাবে, তবে সে জাহান্নামে যাবে।”

[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন ইবনি মাজাহ] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১১০- আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি বিদ্যা শিক্ষা করিবে এই উদ্দেশ্যে যে, তা দ্বারা আলেম সমাজে গৰ্ব-অহংকার করিবে, মূর্খ লোকদের সাথে বিতর্ক করিবে অথবা তার দিকে মানুষের দৃষ্টি ফিরাবে, তবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে দাখিল করবেন।”

[এ হাদীছটিও বর্ণনা করিয়াছেন ইবনি মাজাহ] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি

তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১১১ – ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ “তখন তোমাদের অবস্থা কেমন হইবে যখন ফিতনা তোমাদেরকে ঘিরে ধরবে। ওর মধ্যেই ছোটরা লালিত-পালিত হইবে, বড়রা বৃদ্ধ হইবে। আর ওটাকেই [ঐ ফিতনাকেই] সুন্নাত হিসেবে গ্রহণ করা হইবে। কোন দিন যদি তা পরিবর্তন [ঐ ফিতনাকে উৎখাত] করা হয়, তখন বলা হইবে এটা গৰ্হিত কাজ।

তাঁকে প্রশ্ন করা হল, কখন এরূপ হইবে?

তিনি বললেনঃ যখন তোমাদের মাঝে বিশ্বস্থ [আমানতদার] লোকের সংখ্যা কম হইবে, নেতৃবৃন্দের সংখ্যা বেশী হইবে। ফিকাহবীদের সংখ্যা কম হইবে এবং ক্বারীদের সংখ্যা বেশী হইবে। আর দ্বীনের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করা হইবে। আখেরাতের আমল দ্বারা দুনিয়ার [সম্পদ] অনুসন্ধান করা হইবে।”

[আবদুর রাজ্জাক [মুসান্নাফ গ্রন্থে] মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন] [১]
হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি মাওকুফ [১] হাদীছটি আরো বর্ণনা করিয়াছেন দারেমী, হা/১৯২।


by

Comments

One response to “আল্লাহ তাআলার সম্ভষ্টি ব্যতীত জ্ঞানার্জনের প্রতি ভীতি প্ৰদৰ্শন”

Leave a Reply