জিহাদ – আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ১২৫৯ -১৩১৮ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদ ০১. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার আবশ্যকীয়তা এবং এ ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা
১২৫৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জিহাদ না করে বা জিহাদের কামনা পোষণ না করে মারা যায় সে মুনাফিক্বী বা কপটতার অংশ বিশেষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মারা যাবে। {১৩৬৪}
{১৩৬৪} মুসলিম ১৯১০, নাসাঈ ৩০৯৭, আবু দাঊদ ২৫০২। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০২. নিজের জান, মাল, জিহবা দ্বারা জিহাদ করা আবশ্যক
১২৬০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের মাল, জান ও কথার দ্বারা মুশরিকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে থাকিবে। {১৩৬৫}
{১৩৬৫} নাসাঈ ৩১৯২, আবু দাঊদ ২৫০৪, আহম্মদ ১১৮০৭, ১২১৪৫, দারিমী ২৪৩১। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – মহিলাদের উপর জিহাদ করা ওয়াজিব নয়
১২৬১. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! মেয়েদের উপর কি জিহাদের দায়িত্ব রয়েছে? তিনি উত্তরে বললেনঃ হ্যাঁ আছে, তবে তাতে যু্দ্ধ নেই। তাহাদের জিহাদ হচ্ছে- হজ্জ ও উমরাহ পর্ব সম্পাদন করা। এর মূল রয়েছে বোখারীতে। {১৩৬৬}
{১৩৬৬} উক্ত হাদিসটি বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত হয়েছে। আয়শা [রাদি.] হইতে বর্ণীত, তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে জিহাদ করার অনুমতি চাইলাম। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন- তোমাদের জিহাদ হচ্ছে হাজ্জ। অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে, নাবী [সাঃআঃ] কে তাহাঁর স্ত্রীগণ জিহাদ সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন- তখন তিনি বললেনঃ হাজ্জই হচ্ছে জিহাদ। বোখারী ১৫২০, ১৮৬১, ২৭৮৪, ২৮৭৫, ২৮৭৬, নাসাঈ ২৬২৮, ইবনি মাজাহ ২৯০১। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৩. মাতা-পিতা জীবিতাবস্থায় জিহাদের বিধান
১২৬২. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে জিহাদে যাবার অনুমতি প্রার্থনা করিল। তখন তিনি বলিলেন, তোমার পিতামাতা জীবিত আছে কি? সে বলিল, হ্যাঁ। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তবে তাঁদের খিদমতের চেষ্টা কর। [মুত্তাফাকুন আলাইহি]। {১৩৬৭}
{১৩৬৭} বোখারী ৫৯৭২, ৩০০৪, মুসলিম ১৯৬০, ২৫৪৯, তিরমিজি ১৬৭, নাসাঈ ৩১০৩, আবু দাঊদ ২৫২৯, ইবনি মাজাহ ২৭৮২, আহম্মদ ৬৪৮৯, ৬৫০৮, ৬৭২৬। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬৩. আবু সাঈদ হইতে বর্ণীতঃ
হাদীসে আহম্মদ ও আবু দাঊদেও অনুরূপ বর্ননা আছে- তাতে আরো আছে, তুমি বাড়ি ফিরে যাও ও পিতা-মাতার কাছে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাও, তারা যদি অনুমতি দেন ভাল, অন্যথায় তাহাদের কল্যাণে নিয়োজিত থাক। {১৩৬৮}
{১৩৬৮} হাদিসের প্রথমাংশটুকু হচ্ছে [আরবী]। আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ এক ব্যক্তি ইয়ামান থেকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে হিজরত করিলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমার কি ইয়ামানে কেউ আছে? লোকটি বলিলেন, আমার মাতাপিতা আছেন। রাসূল বলিলেন, তারা কি তোমাকে অনুমতি দিয়েছেন? তিনি [লোকটি] বললেনঃ না। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উপরোক্ত হাদিসটি উল্লেখ করিলেন। আবু দাঊদ ২৫৩০, আহম্মদ ২৭৩২০। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৪. মুশরিকদের এলাকায় অবস্থান করা নিষেধ
১২৬৪.জারীর [আল-বাজালী] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি ঐসব মুসলিমের উপর অসন্তুষ্ট ও রুষ্ট যারা মুশরিকদের মধ্যে [তাহাদের হয়ে] অবস্থান করে। {১৩৬৯}
{১৩৬৯} আবু দাঊদ ২৬৪৫, তিরমিজি ১৬০৪। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৫. হিজরতের অবসান হওয়া এবং জিহাদ ও নিয়্যাতের অবশিষ্ট থাকা প্রসঙ্গে
১২৬৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরাতের প্রয়োজন নেই। এখন কেবল জিহাদ ও নিয়্যাত [জিহাদের জন্য মানসিক প্রস্তুতি] রয়েছে। {১৩৭০}
{১৩৭০} বোখারী এবং মুসলিমে আরো রয়েছে, [আরবী] যখনই তোমাদের বের হবার আহ্বান জানানো হইবে, তখনই তোমরা বেরিয়ে পড়বে। বোখারী ১৩৪৯, ১৫৮৭, ১৮৩৩, ১৮৩৪, ২০৯০, ২৭৮৩, মুসলিম ১৩৫৩, তিরমিজি ১৫৯০, নাসাঈ ২৮৭৫, ২৮৯২, আবু দাঊদ ২০১৭, ইবনি মাজাহ ২৭৭৩, আহম্মদ ১৯৯২, ২২৭৯, দারিমী ২৪১২। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৬. জিহাদের একনিষ্ঠতা আবশ্যক
১২৬৬. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র কলিমা সুউচ্চ রাখার উদ্দেশে যুদ্ধ করিল, সেই আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিল। {১৩৭১}
{১৩৭১} আবু মূসা [রাদি.] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিল, এক ব্যক্তি গনীমতের জন্য, এক ব্যক্তি প্রসিদ্ধ হওয়ার জন্য এবং এক ব্যক্তি বীরত্ব দেখানোর জন্য জিহাদে শরীক হলো। তাহাদের মধ্যে কে আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিল? তিনি বলিলেন, যে বীক্ত আল্লাহ্র কলিমা বুলন্দ রাখার উদ্দেশে যুদ্ধ করিল, সে-ই আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিল। বোখারী ১২৩, ৩১২৬, ৭৪৫৮, মুসলিম ১৯০৪, তিরমিজি ১৬৪৬, নাসাঈ ৩১৩৬, আবু দাঊদ ২৫১৭, ইবনি মাজাহ ২৭৮৩, আহম্মদ ১৮৯৯৯, ১৯৩৪৯, ১৯০৯৯। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৭. যতদিন পর্যন্ত শত্রুদের সাথে সংগ্রাম চলতে থাকিবে, ততদিন পর্যন্ত হিজরতের অবশিষ্ট থাকা প্রসঙ্গে
১২৬৭. আব্দুল্লাহ ইবনি সাদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হিজরাত বন্ধ হইবে না যতক্ষণ শত্রুর সাথে সংগ্রাম চলতে থাকিবে। {১৩৭২}
{১৩৭২} আব্দুল্লাহ বিন সাদী [রাদি.] হইতে বর্ণীত তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে একটি প্রতিনিধিদলের সাথে গেলাম। আমাদের প্রত্যেকেই কোন প্রয়োজন চাচ্ছিল। আর আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে সর্বশেষে প্রবেশ করলাম। তিনি বলিলেন, তোমার কি প্রয়োজন? আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ], নিশ্চয়ই আমি আমার পরিবারকে ছেড়ে চলে এসেছি। আর তারা বলে যে হিজরাত নাকি শেষ হয়ে গেছে। অতঃপর তিনি হাদিসটি উল্লেখ করিলেন। নাসাঈ ৪১৭২, ৪১৭৩, আহম্মদ ২১৮১৯। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৮. কোন প্রকার ঘোষণা দেওয়া ছাড়াই দুশমনদের উপর অতর্কিতভাবে আক্রমণ করা
১২৬৮. নাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বনী মুস্তালিক গোত্রের উপর হঠাৎ করে আক্রমণ করেছিলেন তখন ঐ গোত্রের লোকেরা উদাসীন ছিল। তাহাদের যুদ্ধরতদের হত্যা করিলেন ও তাহাদের সন্তানদেরকে বন্দী করিলেন। নাফি [রাদি.] বলেছেন এ সংবাদ আমাকে বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলেছেন। {১৩৭৩}
{১৩৭৩} [আরবী] শব্দের অর্থ [আরবী] অর্থাৎ উদাসীন। বোখারী ২৫৪১, মুসলিম ১৭৩০, আবু দাউদ ২৬৩৩, আহম্মদ ৪৮৪২, ৪৮৫৮, ৫০৩০। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৯. সৈন্যদেরকে সঠিকভাবে দিক নির্দেশনা এবং উপদেশ দেওয়া
১২৬৯. সুলাইমান ইবনি বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তার পিতা বুরাইদাহ [রাদি.] হতে বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন কোন ছোট বা বড় সৈন্যদলের জন্য কাউকে নেতা নির্বাচন করে দিতেন তখন বিশেষভাবে তাকে আল্লাহকে ভয় করার, মুজাহিদ মুসলিমেরদের সাথে কল্যাণ করার জন্য উপদেশ দিতেন। তারপর বলিতেন, আল্লাহ্র নামে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর, যে আল্লাহর সাথে কুফরী করছে তার সাথে যুদ্ধ কর, যুদ্ধ করিবে, গনিমাতের মালে খিয়ানাত করিবে না, প্রতারণা করিবে না, অঙ্গহানি করিবে না, বালকদের হত্যা করিবে না, যখন তুমি মুশরিক শত্রুদের সাথে মুকাবিলা করিবে তখন তাহাদেরকে তিনটি বিষয়ের দাওয়াত দিবে, তার যে-কোন একটি ক্ববুল করে নিলে তুমি তা মেনে নেবে-তাহাদের উপর হাত উঠাবে না।
ক] তাহাদেরকে ইসলাম ক্ববুল করার দাওয়াত দেবে। যদি তারা তা ক্ববুল করে তুমি তাহাদের এ স্বীকৃতি মেনে নেবে। তারপর তাহাদেরকে মুহাজিরদের কাছে হিজরাত করে আসার জন্য দাওয়াত দেবে যে, তারা সাধারণ গ্রাম্য মুসলিমদের সমশ্রেণীভুক্ত হয়ে থাকিবে আর গনিমাত এ ফাই-এর মালে তাহাদের জন্য কোন অংশ হইবে না, তবে যদি তারা মুসলিমদের সাথে জিহাদে অংশগ্রহণ করে [মাত্র তখন পাবে]।
খ] যদি তারা ইসলাম ক্ববূল করিতে রাজি না হয় তবে তাহাদের কাছে জিযইয়া [এক প্রকার ট্যাক্স] দাবি করিবে যদি তারা স্বীকার করে তবে তাহাদের এ স্বীকৃতি মেনে নেবে [আর তাহাদের দিকে আক্রমণের হাত বাড়াবে না]। আর যদি তারা জিযইয়া কর দিতে অস্বীকার করে তবে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করিবে ও তাহাদের সাথে যুদ্ধ করিবে। [বিনা যুদ্ধে শত্রুপক্ষের যে মাল হস্তগত হয় তাকে ফাই বলে]।
গ] আর যখন কোন দুর্গবাসীদের অবরোধ করিবে তখন যদি তারা আল্লাহ ও তার রাসূলের জিম্মায় আসার কোন প্রস্তাব তোমাদের কাছে পেশ করে, তবে তুমি তা স্বীকার করিবে না। বরং তুমি তোমার নিজের জিম্মায় তাহাদের নিতে পারবে। {১৩৭৪} কেননা তোমাদের জিম্মা নষ্ট করা অনেক সহজ ব্যাপার, আল্লাহর জিম্মাকে নষ্ট করার চেয়ে।
আর যদি তারা আল্লাহর ফায়সালায় উপনীত হওয়ার প্রস্তাব দেয় তবে তুমি তা করিবে না। বরং তুমি নিজের ফায়সালার অধীনে তাহাদেরকে আশ্রয় দেবে। কেননা তুমি অবগত নও যে, তুমি আল্লাহর ফায়সালা তাহাদের উপর সঠিকভাব করিতে পারবে কি, পারবে না। {১৩৭৫}
{১৩৭৪} [আরবী] শব্দের অর্থঃ [প্রতিজ্ঞা] ভঙ্গ করা।{১৩৭৫} হাফেজ ইবনি হাজার আসকালানী উক্ত হাদিসের কিছু ইবারত সংক্ষিপ্ত করিয়াছেন। মুসলিম ১৭৩১, তিরমিজি ১৪০৮, ১৬১৭, আবু দাঊদ ২৬১২, ২৬১৩, ইবনি মাজাহ ২৮৬৮, আহম্মদ ২২৪৬৯, ২২৪২১, দারিমী ২৪৩৯। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১০. যুদ্ধে তাওরিয়া [কৌশল দ্বারা গোপনীয়তা অবলম্বন করা] প্রসঙ্গে
১২৭০. আবদুল্লাহ ইব্নু কাব ইব্নু মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যখনই কোথাও যুদ্ধে যাবার ইচ্ছা করিতেন, তখন তিনি অন্য দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়ে তা গোপন রাখতেন। [কৌশলে গোপনীয়তা অবলম্বন করিতেন]। {১৩৭৬}
{১৩৭৬} [আরবী] শব্দের অর্থঃ নিজের বেশভূষা লুকিয়ে রেখে অন্যকে বিভ্রান্তিতে ফেলা। বোখারী ২৭৫৮, ২৯৪৮, ২৯৪৯, ২৯৫০, ৩০৮৮, মুসলিম ২৭৬৯, তিরমিজি ৩১০২, নাসাঈ ৩৮২৪, ৩৮২৫, ৩৮২৬, আবু দাঊদ ২২০২, আহম্মদ ১৫৩৪৩, ১৫৩৪৫, ১৫৩৪৪। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১১. যে সময়ে যুদ্ধ করা মুস্তাহাব
১২৭১. মাকিল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নুমান ইবনি মুক্বারিন [রাদি.] বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে দেখেছি তিনি যখন দিনের প্রথমাংশে যুদ্ধ না করিতেন তখন সূর্য পশ্চিমাকাশে যাওয়ার পরে [স্নিগ্ধ] হাওয়া চললে এবং আল্লাহর সাহায্য অবতরণ হলে যুদ্ধ করিতেন। -হাদিসটির মূল বোখারীতে রয়েছে। {১৩৭৭}
{১৩৭৭} বোখারীর বর্ণনায় রয়েছে, নুমান [র.] বলেন, [আরবী] আমিও আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে অনেক যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। তাহাঁর নিয়াম এ ছিল যে, যদি দিনের পূর্বাহ্ণে যুদ্ধ শুরু না করিতেন, তবে তিনি বাতাস প্রবাহিত হওয়া এবং সলাতের সময় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করিতেন। বোখারী ৭৫৩০, তিরমিজি ১৬১২, ১৬১৩, ২৬৫৪। আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন, তাহকিক আবু দাউদ। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১২. [মুসলমানদের] রাত্রিকালে কাফিরদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বৈধতা যদিও এর মাধ্যমে তাহাদের ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীলোক নিহত হয়
১২৭২. সাব ইব্নু জাস্সামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মুসলিমদের রাত্রিকালীন আক্রমণে মুশরিকদের মহিলা ও শিশুরা নিহত হয়, তবে কী হইবে? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] জবাবে বলেন, তারাও তাহাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {১৩৭৮}
{১৩৭৮} [আরবী] শব্দের অর্থঃ [আরবী] অর্থাৎ রাত্রিকালে অভিযান পরিচালনা করা। বোখারী ৩০১২, ২৩৭০, মুসলিম ৭৫৪৫, তিরমিজি ১৫১৭, আবু দাঊদ ২৬৭২, ৩০৮৩, ইবনি মাজাহ ২৮৩৯, আহম্মদ ২৭৯০২, ২৭৮০৯। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৩. যুদ্ধে মুশরিকদের মাধ্যমে সাহায্য নেওয়া প্রসঙ্গে
১২৭৩. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক [মুশরিক] লোক বদরের যুদ্ধের দিন নাবী [সাঃআঃ] এর সাথে যাচ্ছিল তিনি ঐ লোকটিকে বলেনঃ তুমি ফিরে যাও, আমি কখনোও মুশরিকের সাহায্য [এ কাজে] নেব না। {১৩৭৯}
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৪. যুদ্ধে নারী এবং বাচ্চাদেরকে হত্য করা নিষেধ
১২৭৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] কোন একটি স্ত্রীলোককে তার কোন যুদ্ধে নিহত দেখে মেয়েদের ও বালকদের নিহত হওয়াতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন [অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন]। {১৩৮০}
{১৩৮০} বোখারী এবং মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, তিনি [রসূলুল্লাহ সাঃআঃ] মহিলা এবং বাচ্চাদের হত্যা করিতে নিষেধ করিয়াছেন। বোখারী ৩০১৪, ৩০১৫, মুসলিম ১৭৪৪, তিরমিজি ১৫৬৯, আবু দাঊদ ২৬৬৮, ইবনি মাজাহ ২৮৪১, আহম্মদ ৪৭২৫, ৬০১৯, মালেক ৯৮১, দারিমী ২৪৬২। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৫. মুশরিকদের বয়োবৃদ্ধদের হত্যা করা নিষেধ
১২৭৫. সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুশরিকদের মধ্যে [যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী] বৃদ্ধদেরকে হত্যা কর এবং তাহাদের কিশোরদেরকে অব্যাহতি দাও। {১৩৮১}
{১৩৮১} আবু দাঊদ ২৬৭০, তিরমিজি ১৫৮৩। ইবনিল কাত্তান তাহাঁর আল ওয়াহম ওয়াল ঈহাম গ্রন্থে ৪/১৬৭ গ্রন্থে বলেন, এর এক বর্ণনাকারী বাকিয়্যাহ ইবনিল ওয়ালিক সম্পর্কে জেনেছি, তার হাদিস পরিত্যাগ করা হয়েছে। এর সনদে বাকিয়া ইবনিল ওয়ালিদ রয়েছেন যার অবস্থা জানা যায় ও তার থেকে মুনকার হাদিসের বর্ণনা পাওয়া যায়। আর সাঈদ বিন বাশীর এর মাধ্যমে দলীল সাব্যস্ত হয় না। ঈমাম শওকানী নাইলুল আওত্বার ৫/৩৭০ গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। আলবানী তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৮৭৯ গ্রন্থে সাঈদ বিন বাশরীকে দুর্বল বলেছেন। এছাড়া জঈফ তিরমিজি ১৫৮৩, জঈফ আবু দাঊদ ২৬৭০ গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ১৬. মল্লযুদ্ধ
১২৭৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বদরের যুদ্ধে তারা শত্রুর মুকাবিলায় [এককভাবে] সৈন্য দলের মধ্য হতে বের হয়ে লড়েছিলেন। {১৩৮২}
{১৩৮২} বোখারী ৩৯৬৭, ৪৭৪৪, ৩৯৬৫। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৭. শত্রুদের উপর সাহসী মুমিনের ঝাঁপিয়ে পড়া প্রসঙ্গে
১২৭৭. আবু আইয়ূব আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ
وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ} [البقرة: 195]
ওয়ালা তুল্কু… আয়াতটি আনসার সম্প্রদায় প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। [আয়াতটির অর্থ তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না]। আয়াতটি ঐসব আনসারী মুসলিমদের মনোভাবের প্রতিবাদে অবতীর্ণ হয়েছিল যারা-রোমক সৈন্যের উপর আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুসৈন্যের মধ্যে প্রবেশকারী মুজাহিদদের কাজকে অনুচিত কাজ বলে মন্তব্য করেছিলেন। [অর্থাৎ কুরআনের উপরোক্ত আয়াতে মুসলিমদের যুদ্ধে উৎসাহী ও নির্ভিক হওয়ার জন্য জোর তাগিদ করা হয়েছে এবং ধর্মীয় সংগ্রামকে ধ্বংসের কারণ মনে করার ঘোর প্রতিবাদ করা হয়েছে] এবং যুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করে ঘরে বসে থাকাকে ধ্বংসের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। {১৩৮৩}
{১৩৮৩} আবু দাউদ ২৫১২, তিরমিজি ২৯৭২। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৮. দুশমনের দেশে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার বিধান
১২৭৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বানু নাযীর গোত্রের খেজুরের গাছ জ্বালিয়ে দেন ও কেটে ফেলেন। {১৩৮৪}
{১৩৮৪} সে খেজুর গাছটি বুওয়াইরাহ নামক জায়গায় ছিল। এ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়ঃ [আরবী] “তোমরা যে খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলেছ অথবা যেগুলো কাণ্ডের উপর ঠিক রেখে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই অনুমতিক্রমে”। বোখারী ২৩২৬, ৩০২১, ৩০৩২, ৪৮৮৪, মুসলিম ১৭৮৬, তিরমিজি ১৫৫২, ৩৩০২, আবু দাঊদ ২৬১৫, ইবনি মাজাহ ২৮৪৪, ২৮৪৫, আহম্মদ ৪৫১৮, ৫১১৫, ৫৪৯৫, দারিমী ২৪৬০। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৯. গণীমতের মাল চুরি করা হারাম
১২৭৯. উবাদাহ ইবনি সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গাণীমতের মালে কোন খিআনাত [অন্যায়ভাবে অধিকার] করিবে না। এরূপ করার ফলে ইহকালে ও পরকালে অগ্নি ও লজ্জা উভয়ই ভোগ করিতে হইবে। {১৩৮৫}
{১৩৮৫} আহম্মদ ২২১৯১। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২০. নিহতের মাল হত্যাকারী পাওয়ার উপযুক্ত
১২৮০. আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] হত্যাকারী মুজাহিদকে [প্রতিপক্ষের নিহত ব্যক্তি] সালাব [পরিত্যক্ত সামগ্রী] দেয়ার ফায়সালা দিয়েছিলেন। {১৩৮৬}
{১৩৮৬} আবু দাঊদ ২৭১৯, ২৭২১, মুসলিম ১৭৫৩, আহম্মদ ২৩৪৬৭, ২৩৪৭৭। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮১. আউফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু জাহলের হত্যকারীদ্বয় নিজের তরবারী নিয়ে তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং তাকে আঘাত করে হত্যা করিল। অতঃপর আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]-এর দিকে ফিরে এসে তাঁকে জানালো। তখন আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে তাকে হত্যা করেছে? আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের তরবারী তোমরা মুছে ফেলনি তো? তারা উভয়ে বলিল, না। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাদের উভয়ের তরবারী দেখলেন এবং বলিলেন, তোমরা উভয়ে তাকে হত্যা করেছো। অবশ্য তার নিকট হতে প্রাপ্ত মালামাল মুআয ইব্নু আম্র ইব্নু জামূহের জন্য। {১৩৮৭}
{১৩৮৭} বোখারী ২৮৮, ৩১৪১, মুসলিম ১৭৫২, আহম্মদ ১৬৭৬। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২১. গণহত্যার বিধান
১২৮২. মাকহুল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তায়িফবাসীর উপর মিনজানিক [ক্ষেপনাস্ত্র] ব্যবহার করেছিলেন। {১৩৮৮}
{১৩৮৮} ঈমাম যাহাবী তাহাঁর মীযানুল ইতিদাল ২/৪১৩ গ্রন্থে বলেন, এতে আবদুল্লাহ বিন খাররাশ বিন হাওশাব রয়েছে যার ত্রুটি বর্ণনা করা হয়েছে। খুলাসাহ আল বাদরুল মুনীর ২/৩৪৫ গ্রন্থে একে মুরসাল বলেছেন। ইবনি হাজার তাহাঁর আত্-তালখীসুল হাবী ৪/১৪৩৯ গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি মুরসাল, উকাইল ভিন্ন সনদে আলী থেকে মুত্তাসিলরূপে বর্ণনা করিয়াছেন। শাইখ মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহ্হাব তাহাঁর আল-হাদিস কিতাবে ৩/২৪৩ গ্রন্থে বলেন, এর বর্ণনাটি মুরসাল। আলবানী তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৮৮৬ গ্রন্থে একে মুরসাল উল্লেখ করে বলেন, অন্য একটি বর্ণনায় চল্লিশ দিন কথাটি বৃদ্ধি করে বর্ণিত হয়েছে সেটিও মুরসাল তবে তা সহিহ সনদে বর্ণিত। ঈমাম আবু দাঊদ একে তার মারাসীল ৩৯২ গ্রন্থে বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি কাসীর তাহাঁর ইরশাদুল ফাকিয়্যাহ ২/৩০৬ গ্রন্থে এবং ইবনি হাজার তাহাঁর আদ দিরায়্যাহ ২/১১৫ গ্রন্থে একে মুরসাল বলেছেন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ২২. বন্দীকে ইসলামের দাওয়াত না দিয়ে হত্যা করা
১২৮৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[মাক্কাহ জয়ের বছর] নাবী [সাঃআঃ] মাথায় শিরস্ত্রাণ পরা অবস্থায় প্রবেশ করেন। যখন তিনি তা খুলে ফেললেন, এক ব্যক্তি এসে বললো, ইব্নু খাতাল্ কাবার পর্দা ধরে আছে। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেন, তাকে হত্যা কর। [মুত্তাফাকুন আলাইহি] {১৩৮৯}
{১৩৮৯} বোখারী ১৮৪৬, ৪২৮৬, ৫৮০৮, মুসলিম ১৩৫৭, তিরমিজি ১৬৯৩, নাসাঈ ২৮৬৭, আবু দাঊদ ২৬৮৫, ইবনি মাজাহ ২৮০৫, আহম্মদ ১১৬৫৭, ১২২৭০। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৩. বেঁধে হত্যা করা প্রসঙ্গে
১২৮৪. সাঈদ ইবনি যুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বদরের যুদ্ধে তিনজনকে বেঁধে হত্যা করেছিলেন। [আবু দাঊদ তাহাঁর মারাসীলে বর্ণনা করেন, এর রাবীগণ নির্ভরযোগ্য]। {১৩৯০}
{১৩৯০} ইবনি উসাইমীন শরহে বুলুগুল মারাম ৫/৪৮৬ গ্রন্থে বলেন, এর সহিহ হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। তবে এর শাহেদ হাদিস রয়েছে। নাবী [সাঃআঃ] বদরের দিন তিন ব্যক্তিকে বেঁধে হত্যা করেছিলেন, আল মুতঈম বিন আদী, আন নাযর ইবনিল হারিস ও উকবা বিন আবু মুঈত। ইবনি হাজার তাহাঁর আদ দিরায়াহ ২/১১৯ গ্রন্থে হাদিসটিকে মুরসাল বলেছেন, আলবানী ইরওয়াউল গালীলে ১২১৪ একে জঈফ বলেছেন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৪. কাফের বন্দীর বিনিময়ে মুসলমান বন্দীকে মুক্ত করা জায়েয
১২৮৫. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুজন মুসলিমকে মুক্ত করার জন্য বিনিময়ে একজন মুশরিক বন্দীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন।–তিরমিজি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। হাদিসটির মূল মুসলিমে রয়েছে। {১৩৯১}
{১৩৯১} সহীহে মুসলিমে ইমরান [রাদি.] হইতে বর্ণীত একটি লম্বা হাদীসে রয়েছে [আরবী] বানু সাকীফ গোত্র রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দুজন সাহাবাকে বন্দী করে এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহাবীগনও তাহাদের একজনকে বন্দী করে। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুজন মুসলিমকে মুক্ত করার জন্য বিনিময়ে একজন মুশরিক বন্দীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন। মুসলিম ১৬৪১, তিরমিজি ১৫৬৮, আহম্মদ ১৯৩২৬, দারিমী ২৪৬৬। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ। বন্দী হওয়ার পূর্বেই শত্রুপক্ষের কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে তার সম্পদ সুরক্ষিত
১২৮৬. সাখর ইবনি আইলাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ক্বাওম যখন ইসলাম ক্ববূল করে তখন তারা তাহাদের রক্ত ও সম্পদকে নিরাপদ করে নেয়।–হাদিসের রাবীগন মজবুত। {১৩৯২}
{১৩৯২} উক্ত হাদিসের সানাদ দুর্বল হলেও এর শাহেদ হাদিস থাকার কারণে হাদিসটি হাসান। আবু দাউদ ৩০৬৭, আহম্মদ ১৮৩০১, দারিমী ১৬৭৩। সহিহ, তাওযিহুল আহকাম ৬/৩৯৫, আলবানি সানাদ জঈফ বলেছেন, তাহকিক আবু দাউদ। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ – মুক্তিপণ ছাড়াই বন্দীকে মুক্ত করা জায়েয
১২৮৭. জুবাইর ইবনি মুতয়িম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বদরের যুদ্ধ বন্দীদের ব্যাপারে বলেন, যদি মুতয়িম ইবনি আদী [রাদি.] জীবিত থাকতেন আর আমার নিকট এ সকল নোংরা লোকের জন্য সুপারিশ করিতেন, তবে আমি তাহাঁর সন্মানার্থে এদের মুক্ত করে দিতাম। {১৩৯৩}
{১৩৯৩} বোখারী ৪০২৪, ৩১৩৯, আবু দাউদ ২৬৮৯, আহম্মদ ২৭৫০৬। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে সঙ্গম করার বৈধতা
১২৮৮. আবু সাইদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আওতাস নামক যুদ্ধে আমরা এমন কিছু যুদ্ধবন্দিনী লাভ করি যাদের স্বামী রয়েছে। ঐ বন্দিনীদের সাথে সহবাসকে মুসলিমগণ গুনাহের কাজ মনে করিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্ আয়াত নাযিল করিলেন-
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ} الآيةَ. [النساء: 24]
স্বামীওয়ালা মেয়েরা তোমাদের জন্য হারাম, বন্দিনী দাসী মেয়েদের ক্ষেত্রে তা নয়। {১৩৯৪}
{১৩৯৪} মুসলিম ১৪৫৬, তিরমিজি ১১৩২, ৩০১৬, ৩০১৭, নাসাঈ ৩৩৩৩, আবু দাউদ ২১৫৫, আহম্মদ ১১৩৮৮। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – সৈন্যদলের মাঝে গনীমতের মাল বণ্টন করা
১২৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] নাজদের দিকে একটি সেনাদল পাঠালেন, যাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। এ যুদ্ধে গনীমত হিসেবে তারা বহু উট লাভ করেন। তাঁদের প্রত্যেকের ভাগে এগারোটি কিংবা বারটি করে উট পড়েছিল এবং তাঁদেরকে পুরস্কার হিসেবে আরও একটি করে উট দেয়া হয়। {১৩৯৫}
{১৩৯৫} বোখারী ৪৩৩৮, ৩১৩৪, মুসলিম ১৭৪৯, আবু দাউদ ২৭৪১, ২৭৪৩, ২৭৪৪, আহম্মদ ৪৫৬৫, ৫১৫৮, মালেক ৯৮৭, দারিমী ২৮৮১। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – গনীমতের মাল বণ্টনের পদ্ধতি
১২৯০. হাবী ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাইবার যুদ্ধে গনীমত হতে যুদ্ধে ব্যবহৃত ঘোড়ার জন্য দুটি অংশ ও পদাতিকের জন্য ১টি অংশ দিয়েছেন।– হাদিসের শব্দ বিন্যাস বোখারীর। {১৩৯৬}
আবু দাউদে আছে, যোদ্ধা ও ঘোড়ার জন্য তিনটি অংশ দিয়েছিলেন, দুটো ভাগ তাহাঁর ঘোড়ার ও একটি ভাগ তাহাঁর নিজের। {১৩৯৭}
{১৩৯৬} বোখারীর বর্ণনায় আরও রয়েছে, বর্ণনাকারী {উবাইদুল্লাহ ইবনি উমার [রহ.]} বলেন, নাফি হাদিসটির ব্যাখ্যা করে বলেছেন, [যুদ্ধে] যার সঙ্গে ঘোড়া থাকে সে পাবে তিন অংশ এবং যার সঙ্গে ঘোড়া থাকেনা, সে পাবে এক অংশ। {১৩৯৭} বোখারী ২৮৬৩, মুসলিম ১৭৬২, তিরমিজি ১৫৫৪, আবু দাউদ ২৭৩৩, ইবনি মাজাহ ২৮৫৪, আহম্মদ ৪৪৩৪, ৪৯৮০, ৫২৬৪, দারিমী ২৪৭২। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – গনীমতের মাল এক পঞ্চমাংশ আদায় করার পর অতিরিক্ত দেয়া প্রসঙ্গে
১২৯১. মান ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতে শুনেছিঃ গনীমতের মাল [সরকারী] এক পঞ্চমাংশ আদায় করার পর নফল বা অতিরিক্ত দেয়া যাবে [তার আগে নয়]। {১৩৯৮}
{১৩৯৮} আবু দাউদ ২৭৫৩, আহম্মদ ১৫৪৩৩। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৫. – গনীমতের মাল হতে কতটুকু পরিমান অতিরিক্ত দেওয়া জায়েয-এর বর্ণনা
১২৯২. হাবীব ইবনি মাসলামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে দেখেছি, তিনি প্রথম দফায় আক্রমণের কারণে আক্রমণকারী মুসলিম মুজাহিদকে গানীমাত হতে এক চতুর্থাংশ দিয়েছিলেন আর [ঐ মুজাহিদের] পুনর্বার আক্রমণ করার জন্য এক তৃতীয়াংশ প্রদান করিয়াছেন। {১৩৯৯}
{১৩৯৯} আবু দাউদ ২৭৪৮, ২৭৫০, ইবনি মাজাহ ২৮৫১, ২৮৫৩, আহম্মদ ১৭০০৮, দারিমী ২৪৮৩। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – কোন সৈন্যদলের মাঝে গনীমতের মাল হতে নফল বা অতিরিক্ত মাল খাস করে প্রদান করার বৈধতা
১২৯৩.আবদুল্লাহ ইবনি উমার হইতে বর্ণীতঃ
আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] প্রেরিত কোন কোন সেনা দলে কোন কোন ব্যক্তিকে সাধারণ সৈন্যদের প্রাপ্য অংশের চেয়ে অতিরিক্ত দান করিতেন। {১৪০০}
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৬. – মুজাহিদদের প্রাপ্ত সম্পদ ভক্ষণের বিধান
১২৯৪. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধের সময় মধু ও আঙ্গুর লাভ করতাম। আমরা তা খেয়ে নিতাম, কিন্তু জমা রাখতাম না। আবু দাউদের বর্ণনায় আছে, তা হতে এক পঞ্চমাংশ নেয়া হতো না। {১৪০১}
{১৪০১} বোখারী ৩১৫৪, আবু দাউদ ২৭০১। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯৫. আবদুল্লাহ ইবনি আবী আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা খাইবার যুদ্ধে খাদ্যসামগ্রী লাভ করি, ফলে লোকেরা প্রয়োজন মেটানোর মত খাদ্য নিয়ে আপন আপন স্থানে চলে যেত। {১৪০২}
{১৪০২} আবু দাউদ ২৭০৪, আহম্মদ ১৮৬৪৫। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৭. গনীমত থেকে প্রাপ্ত জন্তুর উপর আরোহণ করা এবং পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিধান করার বিধান
১২৯৬. রুওয়াইফি ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মুসলিম যেন এমন না করে যে, ফাই-এর [বিনা যুদ্ধে অধিকৃত সরকারী মালের] কোন জন্তু ব্যবহার করে তাঁকে দুর্বল করে ফেলে ফেরত দেয়; আর ঐ মালের কোন কাপড় ব্যবহার করে পুরাতন করে ফেলে তা ফেরত দেয়; [অর্থাৎ সরকারী মাল শরীআত সম্মত অনুমতি ও সদিচ্ছা ছাড়া কারও ব্যবহার করা বৈধ হইবে না। {১৪০৩}
{১৪০৩} আবু দাউদ ২১৬৯, ২৭০৮। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৮. বিধর্মীকে নিরাপত্তা দান করা প্রসঙ্গে
১২৯৭. আবু উবাইদাহ ইবনিল জাররাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, কোন মুসলিম স্বীয় দায়িত্বে আশ্রয় দিলে তা অন্য মুসলিমের পক্ষেও পালনীয় হইবে। [অর্থাৎ যদি সং ও মহৎ উদ্দেশে কোন মুসলিম কোন বিধর্মীকে আশ্রয় দান করে তবে সকল মুসলিমের উপর তা পালনের দায়িত্ব অর্পিত হইবে]। {১৪০৪}
{১৪০৪} আহমদ ১৬৯৭, ১৭৩১১, আবু ইয়ালা ৮৭৬, ৮৭৭।এর সানাদে দুর্বলতা রয়েছে; আবু ইয়ালা [৮৭৬,৮৭৭] ,আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১২৯৮. তাইয়ালিসীতে আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একজন তুচ্ছ মুসলিমও মুসলিমের পক্ষ হতে আশ্রয় দানের অধিকার রাখে। {১৪০৫}
{১৪০৫} আহম্মদ ১৭৩১১ । আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুসলিমের জিম্মা দান একই, এতে একজন নগণ্য মুসলিমও সকল মুসলিমের পক্ষ থেকে যথেষ্ট। {১৪০৬}
{১৪০৬} বোখারী ১১১, ৬৭৫৫, ১৮৭০, ৩০৪৭, ১৮৭০, ৩১৭২, মুসলিম ১৩৭০, তিরমিজি ১৪১২, ২১২৭, নাসায়ী ৪৭৩৪, ৪৭৩৫, আবু দাউদ ৪৫৩০, ইবনি মাজাহ ২৬৫৮, আহম্মদ ৬১৪, দারিমী ২৩৫৬৷ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩০০. ইবনি মাজাহ হইতে বর্ণীতঃ
মুসলিমদের একজন দূরতম ব্যক্তি অর্থাৎ নগণ্য লোকও সকল মুসলিমের পক্ষ হতে আশ্রয় প্রদানের অধিকার রাখে। {১৪০৭}
[আর-বী] বোখারী মুসলিমে উম্মু হানী [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত; হাদীসে আছে, তুমি যাকে আশ্রয় দেবে তাকে আমরাও আশ্রয় দিয়েছি বলে সাব্যস্ত হইবে।
{১৪০৭} আবু দাউদ ২৭৫১, ইবনি মাজাহ ২৬৮৫. আহম্মদ ৬৭৫১, ৬৯৩১। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৯. আরব ভূখণ্ড থেকে ইয়াহুদ এবং নাসারাদের তাড়িয়ে দেয়া
১৩০১. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ অবশ্যই ইয়াহুদী ও নাসারাদেরকে আরবের মাটি হতে বের করে দেব, আর কেবল মুসলিমদেরকেই এখানে রেখে দেব। {১৪০৮}
{১৪০৮} মুসলিম ১৭৬৭, তিরমিজি ১৬০৬, ১৬০৭, আর দাউদ ৩০৩০, আহম্মদ ২০১, ২১৫। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৩০. আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করার জন্য যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুত করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান
১৩০২. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বনু নাযীরের সম্পদ আল্লাহ তাআলা তার রসূল [সাঃআঃ]-কে ফায় হিসেবে দান করেছিলেন। এতে মুসলিমগণ অশ্ব বা সাওয়ারী চালনা করেনি। এ কারণে তা নাবী [সাঃআঃ]-এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এ সম্পদ থেকে নাবী [সাঃআঃ] তার পরিবারকে এক বছরের খরচ দিয়ে দিতেন এবং বাকী আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের প্রস্তুতির জন্য হাতিয়ার ও ঘোড়া ইত্যাদিতে ব্যয় করিতেন। {১৪০৯}
{১৪০৯} [আরবী] শব্দটি [আরবী] মাসদার থেকে এসেছে। এর অর্থ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া। এর অর্থঃ কোন প্রকার যুদ্ধ ছাড়াই অর্জিত হওয়া। [আরবী] শব্দের অর্থ যুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য পশুকে যেমনঃ ঘোড়া, উট ইত্যাদি জন্তুকে [আরবী] বলা হয়। বোখারী ৩০৯৪, ৪০৩৪, ৪৮৮৫, মুসলিম ১৭৫৭, তিরমিজি ১৭১৯, নাসায়ী ৪১৪০, ৪১৪৮, আবু দাউদ ২৯৬৩, ২৯৬৫, ২৯৬৬, আহম্মদ ১৭২, ২১৫ । আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – মুজাহিদদের প্রয়োজনে গনীমতের মাল বণ্টন করা
১৩০৩. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে থেকে খাইবারে যুদ্ধ করেছি। সে যুদ্ধে আমরা গানীমতের যে মাল লাভ করেছিলাম তার কিছু অংশ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সৈনিকদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন আর অবশিষ্ট গানীমাতের মালে জমা করেছিলেন। {১৪১০}
{১৪১০} আবু দাউদ ২৭০৭। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ – অঙ্গিকার পূর্ণ করার ব্যাপারে আদেশ করা এবং দূতদেরকে আটকিয়ে রাখতে নিষেদ করা
১৩০৪. আবু রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন; রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি ওয়াদা ভঙ্গ করি না [রাষ্ট্রীয়] দূতকে বন্দীও করি না। {১৪১১}
{১৪১১} [আরবী] আবু রাফে [রাদি.] হইতে বর্ণীত, তিনি বলেন, কুরাইশরা আমাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাছে দূত হিসেবে প্রেরণ করিলেন। আমি যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখলাম, আমার অন্তরের মাঝে ইসলাম গ্রহণ করার আগ্রহ হল। তখন আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল। আল্লাহর শপথ, নিশ্চয় আমি তাহাদের কাছে কখনই ফিরে যাব না। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উপরোক্ত হাদিস বর্ণনা করে বলেন, তুমি ফিরে যাও। তোমার মনের এই অবস্থা যদি পরেও থাকে তাহলে তুমি ফিরে এসো। আবু রাফে বলেনঃ আমি ফিরে গেলাম। অতঃপর আবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করলাম। আবু দাউদ ২৭৫৮. আহম্মদ ২৩৩৪৫। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৩১. – মুসলমানদের গনীমতের জমি বণ্টনের বিধান
১৩০৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে লোকালয়ে [বস্তিতে] তোমরা আগমন করে বিনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে সেখানে অবস্থান করিবে সে ক্ষেত্রে তা তোমরা তোমাদের অংশ হিসেবে লাভ করিবে। আর যে বস্তি আল্লাহ ও তার রাসূল [সাঃআঃ] এর নাফরমানীর কারণে যুদ্ধের সম্মুখীন হইবে ও লড়াই-এর পর পরাজিত হইবে সেখানে গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ ও তার রাসূল [সাঃআঃ] এর জন্য হইবে তারপর তা তোমাদের জন্য থাকিবে। {১৪১২}
{১৪১২} মুসলিম ১৭৫৬, আবু দাউদ ৩০৩৬, আহম্মদ ২৭৪৩৮। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply