আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.]-এর ফযিলত
আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.]-এর ফযিলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৪. অধ্যায়ঃ আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.]-এর ফযিলত
৬১১১. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে বলেছেন: তুমি আমার কাছে তেমন যেমন মূসা [আঃ]-এর কাছে হারূন। তবে আমার পর আর কোন নবী আসবেন না।
সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি মনে করলাম যে, হাদীসটি প্রত্যক্ষভাবে সাদ [রাদি.] হইতে শ্রবণ করি। অতএব আমি সাদের সঙ্গে একত্রিত হলাম এবং আমির আমাকে যা বলেছে আমি তাকে বললাম। তিনি বলিলেন, আমি একথা শুনেছি। আমি বললাম, আপনি কি এ কথা শুনেছেন? তিনি দুকানে দুটো আঙ্গুল ঢুকিয়ে বলিলেন, হ্যাঁ শুনেছি, না শুনে থাকলে এ কান দুটো বধির হয়ে যাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪০]
৬১১২. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাবূকের যুদ্ধের সময় রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে মাদীনায় তাহাঁর প্রতিনিধি বানিয়ে রেখে গেলেন। আলী [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে মহিলা ও শিশুদের নিকট রেখে যাচ্ছেন? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃতুমি কি এতে খুশী হইবে না যে, তোমার মর্যাদা আমার কাছে মূসা [আঃ]-এর কাছে হারূন [আঃ]-এর মতো। এ কথা ভিন্ন যে, আমার পর আর কোন নবী আসবেন না।
[ই.ফা.৬০০০, ইসলামিক সেন্টার- নেই]
৬১১৩. উবাইদুল্লাহ ইবনি মুআয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
শুবাহ্ হইতে এ সূত্রেই রিওয়ায়াত করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০১, ইসলামিক সেন্টার- নেই]
৬১১৪. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুআবিয়াহ্ ইবনি আবু সুফ্ইয়ান [রাদি.] সাদ [রাদি.]-কে আমির [প্রতিনিধি] নিযুক্ত করিলেন এবং বলিলেন, আপনি আলী [রাদি.]-কে কেন মন্দ বলেন না? সাদ বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর সম্বন্ধে যে তিনটি কথা বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তা আমি মনে রাখবো ততক্ষণ পর্যন্ত কখনও তাঁকে খারাপ বলব না। সেসব কথার মধ্য হইতে একটিও যদি আমি লাভ করিতে পারতাম তাহলে তা আমার জন্য লাল উটের চেয়েও অধিক কল্যাণকর হত। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে আলী [রাদি.]-এর উদ্দেশে বলিতে শুনেছি- আলী [রাদি.]-কে কোন যুদ্ধের সময় প্রতিনিধি বানিয়ে রেখে গেলে তিনি বলিলেন, মহিলা ও শিশুদের মধ্যে আমাকে রেখে যাচ্ছেন, হে আল্লাহর রসূল? তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃতুমি কি এতে আনন্দবোধ করো না যে, আমার নিকট তোমার সম্মান মূসা [আঃ]-এর নিকট হারূন [আঃ]-এর মতো। এ কথা ভিন্ন যে, আমার পর আর কোন নবী নেই। খাইবারের যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে আমি বলিতে শুনেছি, আমি এমন এক লোককে পতাকা [ইসলামের ঝাণ্ডা] দেব যে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-কে ভালবাসে এবং আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলও তাঁকে ভালবাসেন। এ কথা শুনে আমরা [অধির আগ্রহে] অপেক্ষা করিতে থাকলাম। তখন তিনি বলিলেন, আলীকে ডাকো। আলী আসলেন, তাহাঁর চোখ [অসুখ হয়েছিল] উঠেছিল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর চোখে থুথু লাগিয়ে দিলেন এবং তাহাঁর হাতে পতাকা সবে দিলেন। অবশেষে আল্লাহ তাহাঁর হাতেই বিজয়মালা [পতাকা] তুলে দিলেন। আর যখন আয়াত:
فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ
চলো আমরা আমাদের এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততিকে ডাকি- [সূরাহ্ আ-লি ইমরান ৩: ৬১] অবতীর্ণ হলো, তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসায়ন [রাদি.]-কে ডাকলেন। তারপর বলিলেন, হে আল্লাহ! এরাই আমার পরিবার-পরিজন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০২, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪১]
৬১১৫. সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে বললেনঃতুমি কি এতে খুশী নও যে, তোমার সম্মান আমার নিকট মূসা [আঃ]-এর নিকট হারূন-এর ন্যায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪২]
৬১১৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] খাইবারের দিন বললেনঃনিশ্চয়ই আমি ঐ লোকের হাতে পতাকা তুলে দিবো, যে লোক আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলকে ভালবাসে। তাহাঁর হাতেই আল্লাহ তাআলা বিজয় দেবেন। উমর [রাদি.] বলেন, শুধু ঐ দিনটি ব্যতীত আমি কখনো নেতৃত্ব লাভে আশা করিনি। এ প্রত্যাশা নিয়ে আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম, হয়ত এ কাজের জন্য আমাকে ডাকা হইতে পারে। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আলী ইবনি আবু তালিবকে ডেকে তাহাঁর হাতে পতাকা দিলেন এবং বললেনঃ অগ্রসর হও, এদিক-ওদিক দৃষ্টি দিও না যতক্ষণ আল্লাহ তোমাকে বিজয় দেন। অতঃপর আলী [রাদি.] সামান্য অগ্রসর হয়ে থামলেন, এদিক-সেদিক দেখেনি। এরপর চিৎকার করে বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! কোন্ কথার উপর আমি লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করব। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃতাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাও যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃতপক্ষে আর কোন ইলাহ্ নেই, আর নিঃসন্দেহে মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] আল্লাহর রসূল। যখনই তারা এ সাক্ষ্য প্রদান করিবে তখনই তারা তাদের প্রাণ ও ধন-মাল তোমার হাত হইতে মুক্ত করে ফেলবে। তবে কোন প্রাপ্য অধিকারের প্রশ্নে মুক্ত হইবে না। আর তাদের হিসাব আল্লাহর নিকট।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৩]
৬১১৭.সাহ্ল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] খাইবারের যুদ্ধের দিন বলেছেন: অবশ্যই আমি এমন এক লোকের হাতে পতাকা তুলে দিব যার হাতে আল্লাহ তাআলা বিজয় প্রদান করবেন। সে লোক আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলকে ভালবাসে আর আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর রসূলও তাঁকে ভালবাসেন। লোকেরা রাতভর এ কথোপকথনই করিতে থাকল যে, কাকে এ পতাকা তুলে দেয়া হইবে। প্রত্যুষে সবাই রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলো। প্রত্যেকের এটাই প্রত্যাশা যে, তাঁকেই হয়ত দেয়া হইবে এ পতাকা। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃআলী ইবনি আবু তালিব কোথায়? লোকেরা বলিল, হে আল্লাহর রসূল! তাহাঁর চোখে অসুখ। তারপর তিনি তাঁকে ডেকে পাঠালেন, তাঁকে নিয়ে আসা হলো, তাহাঁর চোখে থু থু লাগালেন এবং দুআ করিলেন তাহাঁর জন্য। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেলেন এমনভাবে যেন তাহাঁর চোখে কোন রোগই ছিল না। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাঁকে পতাকা তুলে দিলেন। আলী [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব যতক্ষণ না তারা আমাদের মতো হয়ে যায়। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃতুমি তোমার পথে চলে যাও এবং ওদের মাঝে অবতীর্ণ হয়ে তাদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান কর। আর তাদের উপর বর্তিত আল্লাহর হকগুলোর ব্যাপারে সংবাদ দিয়ে দাও। কারণ, আল্লাহর কসম! তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একটা মানুষকেও হিদায়াত করেন তবে তা তোমার জন্য লাল উট থেকেও উত্তম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৪]
৬১১৮. সালামাহ্ ইবনি আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, খাইবারের দিন আলী [রাদি.] পিছনে রয়ে গেলেন। তাহাঁর চোখ উঠেছিল। তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে রেখে পিছনে পড়ে থাকব? তিনি বের হলেন এবং রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে মিলিত হলেন। বিজয় প্রভাতের আগের দিন বিকালে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃআগামীকাল এমন এক ব্যক্তির হাতে পতাকা তুলে দিব কিংবা পতাকা এমন লোক গ্রহণ করিবে, যাকে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল ভালবাসেন, কিংবা যিনি আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলকে ভালবাসেন। আল্লাহ তাহাঁর হস্তেই বিজয় দেবেন। আকস্মাৎ আমরা আলী [রাদি.]-কে লক্ষ্য করলাম। আমরা তাঁকে প্রত্যাশা করিনি। মানুষেরা বলিল, ইনি তো আলী। আর একেই রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] পতাকা দিলেন এবং তাহাঁর হাতেই আল্লাহ বিজয় প্রদান করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৫]
৬১১৯. ইয়াযীদ ইবনি হাইয়্যান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি, হুসায়ন ইবনি সাবরাহ্ এবং উমর ইবনি মুসলিম- আমরা যায়দ ইবনি আকরাম [রাদি.]-এর কাছে গেলাম। যখন আমরা তাহাঁর নিকট বসি তখন হুসায়ন [রাদি.] তাকে বলিলেন, হে যায়দ! আপনি তো অনেক কল্যাণ লক্ষ্য করিয়াছেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে দেখেছেন, তাহাঁর হাদীস শ্রবণ করিয়াছেন, তাহাঁর সাথে থেকে যুদ্ধ করিয়াছেন এবং তাহাঁর পেছনে নামাজ আদায় করিয়াছেন। আপনি অনেক কল্যাণ অর্জন করিয়াছেন, হে যায়দ! আপনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে যা শ্রবণ করিয়াছেন তা আমাদের বলুন। যায়দ [রাদি.] বলিলেন, ভাতুষ্পুত্র আমার বয়স বেড়েছে, আমি পুরনো যুগের মানুষ। অতএব রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে যা আমি সংরক্ষণ করেছিলাম এর কিয়দংশ ভুলে গেছি। তাই আমি যা বলি তা গ্রহণ করো আর আমি যা না বলি সে সম্বন্ধে আমাকে কষ্ট দিও না। এরপর তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] একদিন মাক্কাহ্ ও মাদীনার মাঝামাঝি খুম্ম নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের সামনে বক্তৃতা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও সানা বর্ণনা শেষে ওয়ায-নাসীহাত করিলেন। অতঃপর বলিলেন, হুঁশিয়ার, হে লোক সকল! আমি একজন মানুষ, অতি সত্ত্বরই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত ফেরেশ্তা আসবে, আর আমিও তাহাঁর আহ্বানে সাড়া দিব। আমি তোমাদের নিকট ভারী দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হলো আল্লাহর কিতাব। এতে হিদায়াত এবং আলোকবর্তিকা আছে। অতএব তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করো, একে শক্ত করে আঁকড়ে রাখো। তারপর তিনি কুরআনের প্রতি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিলেন। এরপর বলেন, আর দ্বিতীয়টি হলো আমার আহলে বায়ত। আর আমি আহলে বায়তের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি। আহলে বায়তের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আহলে বায়াতের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি। হুসায়ন [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর আহলে বায়ত কারা, হে যায়দ? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর বিবিগণ কি আহলে বায়তের অধিভুক্ত নন? যায়দ [রাদি.] বলিলেন, বিবিগণও আহলে বায়তের অন্তর্ভূক্ত; কিন্তু আহলে বায়ত তাঁরাই তাহাঁর [মৃত্যুর] পর যাঁদের উপর যাকাত নেয়া নিষিদ্ধ। হুসায়ন [রাদি.] বলিলেন, এসব লোক কারা? যায়দ [রাদি.] বলিলেন, এরা আলী, আকীল, জাফার ও আব্বাস [রাদি.]-এর পরিবার-পরিজনেরা। হুসায়ন [রাদি.] বলিলেন, এদের সবার জন্য যাকাত গ্রহণ নাজায়িয? যায়দ [রাদি.] বলিলেন, হ্যাঁ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৬]
৬১২০. যায়দ ইবনি আরকাম [রাদি.]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] হইতে অবিকল হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৭]
৬১২১. ইবনি হাইয়্যান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সূত্রেই ইসমাঈলের হাদীসের হুবহু রিওয়ায়াত করেন। জারীরের হাদীসে বর্ধিত বর্ণনা রয়েছে, আল্লাহর কিতাব, তাতে আছে হিদায়াত ও আলো, যে এটাকে আঁকড়ে রাখবে হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকিবে আর যে এটা ছেড়ে দেবে সে পথ হারিয়ে ফেলবে [পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৭]
৬১২২. যায়দ ইবনি আরকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা তাহাঁর নিকট গিয়ে বললাম, আপনি তো অনেক কল্যাণ লক্ষ্য করিয়াছেন, আপনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর পাশে ছিলেন, তাহাঁর পেছনে সালাত আদায় করিয়াছেন। তারপর আবু হাইয়্যানের হাদীসের অবিকল হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। কিন্তু এ হাদীসে আছে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন: সাবধান! আমি তোমাদের মাঝে দুটো ভারী জিনিস ছেড়ে যাচ্ছি। তন্মধ্য থেকে একটি আল্লাহর কিতাব এটি আল্লাহর রশি, যে এর অনুসরণ করিবে হিদায়াতের উপর থাকিবে আর যে একে ছেড়ে দেবে সে পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত হইবে। এ বর্ণনায় আরো আছে যে, আমরা বললাম, রসূলের আহলে বায়তের মাঝে কি তাহাঁর বিবিরা সংযুক্ত রয়েছেন? যায়দ [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহর কসম! স্ত্রীরা একটা সময় পুরুষদের সাথে থাকে, তারপর তাঁকে স্বামী তালাক দিলে সে তার পিতা এবং গোষ্ঠীর নিকট ফিরে যায়। আহলে বায়ত হলো রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর মূল বংশ এবং তাহাঁর স্বগোত্রীয়রা, যাঁদের জন্য নবীর ইন্তিকালের পর যাকাত গ্রহণ নিষিদ্ধ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১০, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৮]
৬১২৩. সাহ্ল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মারওয়ানের বংশের এক লোক মাদীনার শাসনকর্তা নিয়োগপ্রাপ্ত হলো, সে সাহ্লকে ডেকে এনে আলী [রাদি.]-কে গালি দিতে বলিল। সাহ্ল [রাদি.] অস্বীকৃতি জানালেন। শাসক লোকটি বলিল, তুমি যদি গালি নাই দাও তবে অন্তত এটুকু বলো যে, আবু তুরাবের উপর আল্লাহর লানত। সাহ্ল [রাদি.] বলিলেন, আলী [রাদি.]-এর নিকট কোন নামই এর চেয়ে বেশি পছন্দনীয় ছিল না। এ নামে ডাকলে তিনি আনন্দিত হইতেন। সে লোক বলিল, তাহলে আবু তুরাব নাম হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করো। তিনি বলিলেন যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ফাতিমা [রাদি.]-এর গৃহে আসলেন; কিন্তু আলী [রাদি.]-কে গৃহে পেলেন না। ফাতিমা [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিলেন, তোমার চাচাত ভাই কোথায়? ফাতিমা [রাদি.] বলিলেন, তাহাঁর আর আমার মধ্যে একটা কিছু ঘটেছিল যার ফলে তিনি রাগ করে বের হয়ে গেছেন, আর তিনি আমার নিকট ঘুমাননি। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এক লোককে বলিলেন, দেখ তো, আলী কোথায়? লোকটি এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! তিনি মাসজিদে ঘুমিয়ে আছে। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর নিকট আসলেন। আলী [রাদি.] শুয়েছিলেন। তাহাঁর এক পাশের চাদর সরে গিয়েছিল, ফলে গায়ে মাটি স্পর্শ করেছিল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মাটি ঝাড়তে শুরু করিলেন এবং বলিলেন, হে আবু তুরাব! উঠো, হে আবু তুরাব! উঠো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১১, ইসলামিক সেন্টার- ৬০৪৯]
Leave a Reply