মিনা আরাফাত ও মুযদালিফায় অবস্থান করা ও সালাত আদায়
মিনা আরাফাত ও মুযদালিফায় অবস্থান করা ও সালাত আদায় >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ২৫, হজ্জ, অধ্যায়ঃ (৮২-১০০)=১৯টি
২৫/৮২. অধ্যায়ঃ মক্কার অধিবাসী এবং হজ্জ (তামাত্তু) সম্পন্নকারীদের ইহরাম বাঁধার জায়গা বাতহা ও এ ছাড়া অন্যান্য স্থান অর্থাৎ মক্কার সমস্ত ভূমি এবং মক্কাবাসী হাজীগণ যখন মিনার দিকে রওয়ানা করিবে তখন তাঁদের করণীয় কী?
২৫/৮৩. অধ্যায়ঃ তারবিয়ার দিন (যিলহজ্জ মাসের আট তারিখে) হাজী কোন্ স্থানে যুহরের সালাত আদায় করিবে?
২৫/৮৪. অধ্যায়ঃ মিনায় সালাত আদায় করা।
২৫/৮৫. অধ্যায়ঃ আরাফার দিবসে সওম।
২৫/৮৬. অধ্যায়ঃ সকালে মিনা হইতে আরাফা যাওয়ার সময় তালবিয়া ও তাকবীর পাঠ করা।
২৫/৮৭. অধ্যায়ঃ আরাফার দিনে দুপুরে অবস্থান স্থলে গমন করা।
২৫/৮৮. অধ্যায়ঃ আরাফায় সওয়ারীর উপর অবস্থান করা।
২৫/৮৯. অধ্যায়ঃ আরাফায় দু সালাত একসঙ্গে আদায় করা।
২৫/৯০. অধ্যায়ঃ আরাফার খুতবা সংক্ষিপ্ত করা।
২৫/৯১. অধ্যায়ঃ আরাফায় অবস্থান করা।
২৫/৯২. অধ্যায়ঃ আরাফা হইতে প্রত্যাবর্তনে চলার গতি।
২৫/৯৩. অধ্যায়ঃ আরাফা ও মুযদালিফার মধ্যবর্তী স্থানে অবতরণ করা।
২৫/৯৪. অধ্যায়ঃ (আরাফাহ হইতে) ফিরে আসার সময় নাবী (সাঃআঃ) ধীরে চলার আদেশ দিতেন এবং তাদের প্রতি চাবুকের সাহায্যে ইঙ্গিত করিতেন।
২৫/৯৫. অধ্যায়ঃ মুযদালিফায় দু ওয়াক্ত সালাত এক সাথে আদায় করা।
২৫.৯৬. অধ্যায়ঃ দু ওয়াক্ত সালাত একসঙ্গে আদায় করা এবং দুয়ের মধ্যে কোন নফল সালাত আদায় না করা
২৫/৯৭. অধ্যায়ঃ মাগরিব এবং ইশা উভয় সালাতের জন্য আযান ও ইক্বামাত দেয়া
২৫/৯৮. অধ্যায়ঃ যারা পরিবারের দুর্বল লোকদের রাত্রে পূর্বে প্রেরণ করে মুযদালিফায় অবস্থান করে ও দুআ করে এবং পূর্বে প্রেরণ করিবে চন্দ্র অস্তমিত হওয়ার পর।
২৫/৯৯. অধ্যায়ঃ মুযদালিফায় ফজরের সালাত কখন আদায় করিবে?
২৫/১০০. অধ্যায়ঃ মুযদালিফা থেকে কখন যাত্রা করিবে?
২৫/৮২. অধ্যায়ঃ মক্কার অধিবাসী এবং হজ্জ (তামাত্তু) সম্পন্নকারীদের ইহরাম বাঁধার জায়গা বাতহা ও এ ছাড়া অন্যান্য স্থান অর্থাৎ মক্কার সমস্ত ভূমি এবং মক্কাবাসী হাজীগণ যখন মিনার দিকে রওয়ানা করিবে তখন তাঁদের করণীয় কী?
আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলিলেন, ইবনু উমর (রাদি.) তালবিয়ার দিন (যিলহজ্জ মাসের ৮ তারিখে) যুহরের সালাত শেষে সওয়ারীতে আরোহণ করে তালবিয়া পাঠ আরম্ভ করিতেন। আবদুল মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি), আত্বা ও জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে মক্কায় এসে যিলহজ্জ মাসের আট তারিখ পর্যন্ত বিনা ইহরামে অবস্থান করি এবং মক্কা নগরীকে পিছনে রেখে যাওয়ার সময় আমরা হজ্জের তালবিয়া পাঠ করেছিলাম। আবু যুবাইর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) জাবির (রাদি.) -এর উক্তি বর্ণনা করেন যে, আমরা বাতহায় বাঁধি। উবাইদ ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু উমর (রাদি.) কে বলিলেন, যিলহাজ্জ মাসের চাঁদ দেখেই লোকেরা ইহরাম বাঁধতেন, কিন্তু আপনাকে দেখেছি মক্কায় অবস্থান করেও যিলহজ্জ মাসের আট তারিখ পর্যন্ত ইহরাম বাঁধেননি! তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ)-কে নিয়ে যতক্ষণ না সওয়ারী উঠে দাঁড়াতো ততক্ষণ তাঁকে তালবিয়া পাঠ করিতে দেখিনি।
২৫/৮৩. অধ্যায়ঃ তারবিয়ার দিন (যিলহজ্জ মাসের আট তারিখে) হাজী কোন্ স্থানে যুহরের সালাত আদায় করিবে?
১৬৫৩. আবদুল আযীয ইবনু রুফাইয় (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী (সাঃআঃ) সম্পর্কে আপনি যা উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছেন তার কিছুটা বলুন। বলুন, যিলহজ্জ মাসের আট তারিখে যুহর ও আসরের সালাত তিনি কোথায় আদায় করিতেন? তিনি বলিলেন, মিনায়। আমি বললাম, মিনা হইতে ফিরার দিন আসরের সালাত তিনি কোথায় আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, মুহাস্সাবে। এরপর আনাস (রাদি.) বলিলেন, তোমাদের আমীরগণ যেরূপ করিবে, তোমরাও অনুরূপ কর।
(১৬৫৪, ১৭৬৩, মুসলিম ১৫/৫৮, হাদীস ১৩০৯) (আঃপ্রঃ ১৫৪১, ইঃফাঃ ১৫৪৭)
১৬৫৪. আবদুল আযী্য (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যিলহজ্জ মাসের আট তারিখে মিনার দিকে বের হলাম, তখন আনাস (রাদি.) -এর সাক্ষাৎ লাভ করি, তিনি গাধার পিঠে আরোহণ করে যাচ্ছিলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, এ দিনে নাবী (সাঃআঃ) কোথায় যুহরের সালাত আদায় করেছিলেন? তিনি বলিলেন, তুমি লক্ষ্য রাখবে যেখানে তোমার আমীরগণ সালাত আদায় করিবে, তুমিও সেখানেই সালাত আদায় করিবে। (১৬৫৩)
(আঃপ্রঃ ১৫৪২, ইঃফাঃ ১৫৪৮)
২৫/৮৪. অধ্যায়ঃ মিনায় সালাত আদায় করা।
১৬৫৫. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মিনায় দুরাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন এবং আবু বকর, উমর (রাদি.) -ও। আর উসমান (রাদি.) তাহাঁর খিলাফতের প্রথম ভাগেও দুরাকআত আদায় করিয়াছেন। (১০৮২)
(আঃপ্রঃ ১৫৪৩, ইঃফাঃ ১৫৪৯)
১৬৫৬.হারিসা ইবনু ওয়াহব খুযায় (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের নিয়ে মিনাতে দু রাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন। এ সময় আমরা আগের তুলনায় সংখ্যায় বেশি ছিলাম এবং অতি নিরাপদে ছিলাম। (১০৮৩)
(আঃপ্রঃ ১৫৪৪, ইঃফাঃ ১৫৫০)
১৬৫৭.আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি (মিনায়) নাবী (সাঃআঃ)-এর সাথে দু রাকআত সালাত আদায় করেছি। আবু বকর এর সাথে দু রাকআত এবং উমর-এর সাথেও দু রাকআত আদায় করেছি। এরপর তোমাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে [অর্থাৎ উসমান (রাদি.) -এর সময় হইতে চার রাকআত সালাত আদায় করা শুরু হয়েছে] আহা! যদি চার রাকআতের পরিবর্তে মকবূল দু রাকআতই আমার ভাগ্যে জুটত! (১০৮৪)
(আঃপ্রঃ ১৫৪৫, ইঃফাঃ ১৫৫১)
২৫/৮৫. অধ্যায়ঃ আরাফার দিবসে সওম।
১৬৫৮.উম্মু ফাযল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আরাফার দিনে নাবী (সাঃআঃ)-এর সওমের ব্যাপারে লোকজন সন্দেহ করিতে লাগলেন। তাই, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট শরবত পাঠিয়ে দিলাম। তিনি তা পান করিলেন।
(১৬৬১, ১৯৮৮, ৫২০৪, ৫২১৮, ৫২৩৬, মুসলিম ১৩/১৮, হাদীস ১১২৩, আহমাদ ২৬৯৪৬) (আঃপ্রঃ ১৫৪৬, ইঃফাঃ ১৫৫২)
২৫/৮৬. অধ্যায়ঃ সকালে মিনা হইতে আরাফা যাওয়ার সময় তালবিয়া ও তাকবীর পাঠ করা।
১৬৫৯. মুহাম্মদ ইবনু আবু বাকার সাকাফী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করিলেন, তখন তাঁরা উভয়ে সকাল বেলায় মিনা হইতে আরাফার দিকে যাচ্ছিলেন, আপনারা এ দিনে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে থেকে কিরূপ করিতেন? তিনি বলিলেন, আমাদের মধ্যে যারা তালবিয়া পড়তে চাইত তারা পড়ত, তাতে বাধা দেয়া হতো না এবং যারা তাকবীর পড়তে চাইত তারা তাকবীর পড়ত, এতেও বাধা দেওয়া হতো না। (৯৭০)
(আঃপ্রঃ ১৫৪৭, ইঃফাঃ ১৫৫৩)
২৫/৮৭. অধ্যায়ঃ আরাফার দিনে দুপুরে অবস্থান স্থলে গমন করা।
১৬৬০. সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (খলিফা) আবদুল মালিক (মক্কার গভর্নর) হাজ্জাজের নিকট লিখে পাঠালেন যে, হজ্জের ব্যাপারে ইবনু উমর-এর বিরোধিতা করিবে না। আরাফার দিনে সূর্য ঢলে যাবার পর ইবনু উমর (রাদি.) হাজ্জাজের তাঁবুর কাছে গিয়ে উচ্চঃস্বরে ডাকলেন। আমি তখন তাহাঁর (ইবনু উমারের) সাথেই ছিলাম, হাজ্জাজ হলুদ রঙের চাদর পরিহিত অবস্থায় বেরিয়ে আসলেন এবং বলিলেন, কী ব্যাপার, হে আবু আবদুর রহমান? ইবনু উমর (রাদি.) বলিলেন, যদি সুন্নাতের অনুসরণ করিতে চাও তা হলে চল। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করিলেন, এ মুহূর্তেই? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। হাজ্জাজ বলিলেন, সামান্য অবকাশ দিন, মাথায় পানি ঢেলে বের হয়ে আসি। তখন তিনি তার সওয়ারী হইতে নেমে পড়লেন। অবশেষে হাজ্জাজ বেরিয়ে এলেন। এরপর হাজ্জাজ চলতে লাগলেন, আমি ও আমার পিতার মাঝে তিনি চললেন, আমি তাকে বললাম, যদি আপনি সুন্নতের অনুসরণ করিতে চান তা হলে খুতবা সংক্ষিপ্ত করবেন এবং উকূফে দ্রুত করবেন। হাজ্জাজ আবদুল্লাহর দিকে তাকাতে লাগলেন। আবদুল্লাহ (রাদি.) যখন তাঁকে দেখলেন তখন বলিলেন, সে ঠিকই বলেছে।
(১৬৬২, ১৬৬৩) (আঃপ্রঃ ১৫৪৮, ইঃফাঃ ১৫৫৪)
২৫/৮৮. অধ্যায়ঃ আরাফায় সওয়ারীর উপর অবস্থান করা।
১৬৬১. উম্মু ফাযল বিনত হারিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
লোকজন তাহাঁর সামনে আরাফার দিনে নাবী (সাঃআঃ)-এর সওম সম্পর্কে মতভেদ করছিলেন। কেউ বলছিলেন তিনি সায়িম আবার কেউ বলছিলেন তিনি সায়িম নন। অতঃপর আমি তাহাঁর কাছে এক পিয়ালা দুধ পাঠিয়ে দিলাম, তিনি তখন উটের উপর উপবিষ্ট ছিলেন, তিনি তা পান করে নিলেন। (১৬৫৮)
(আঃপ্রঃ ১৫৪৯, ইঃফাঃ ১৫৫৫)
২৫/৮৯. অধ্যায়ঃ আরাফায় দু সালাত একসঙ্গে আদায় করা।
ইবনু উমর (রাদি.) ইমামের সাথে সালাত আদায় করিতে না পারলে উভয় সালাত একত্রে আদায় করিতেন।
১৬৬২. সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যে বছর হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ ইবনু যুবাইরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন, সে বছর তিনি আবদুল্লাহ (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করিলেন, আরাফার দিনে উকূফের সময় আমরা কিরূপে কাজ করব? সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিলেন, আপনি যদি সুন্নাতের অনুসরণ করিতে চান তাহলে আরাফার দিনে দুপুরে সালাত আদায় করবেন।। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) বলেন, সালিম ঠিক বলেছে। সুন্নাত মুতাবিক সাহাবীগণ যুহর ও আসর এক সাথেই আদায় করিতেন। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি সালিমকে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-ও কি এরূপ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, এ ব্যাপারে তোমরা কি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সুন্নাত ব্যতীত অন্য কারো অনুসরণ করিবে? (১৬৬০)
(আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ৮৮, ইঃফাঃ পরিচ্ছেদ ১০৪৯)
২৫/৯০. অধ্যায়ঃ আরাফার খুতবা সংক্ষিপ্ত করা।
১৬৬৩. সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
(খলিফা) আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান (মক্কার গভর্নর) হাজ্জাজকে লিখে পাঠালেন, তিনি যেন হজ্জের ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনু উমর(রাদি.) -কে অনুসরণ করেন। যখন আরাফার দিন হল, তখন সূর্য ঢলে যাওয়ার পর ইবনু উমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আসলেন এবং আমিও তাহাঁর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তাহাঁর তাঁবুর কাছে এসে উচ্চঃস্বরে ডাকলেন ও কোথায়? হাজ্জাজ বেরিয়ে আসলেন। ইবনু উমর (রাদি.) বলিলেন, চল। হাজ্জাজ বলিলেন, এখনই? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। হাজ্জাজ বলিলেন, আমাকে একটু অবকাশ দিন, আমি গায়ে একটু পানি ঢেলে নিই। তখন ইবনু উমর (রাদি.) তাহাঁর সওয়ারী হইতে নেমে পড়লেন। অবশেষে হাজ্জাজ বেরিয়ে এলেন। এরপর তিনি আমার ও আমার পিতার মাঝে চলতে লাগলেন। আমি বললাম, আজ আপনি যদি সঠিকভাবে সুন্নাত মুতাবিক কাজ করিতে চান তাহলে খুতবা সংক্ষিপ্ত করবেন এবং উকূফে দ্রুত করবেন। ইবনু উমর (রাদি.) বলিলেন, সে (সালিম) ঠিকই বলেছে। (১৬৬০)
(আঃপ্রঃ ১৫৫০, ইঃফাঃ ১৫৫৬)
২৫/৯১. অধ্যায়ঃ আরাফায় অবস্থান করা।
১৬৬৪. জুবাইর ইবনু মুতয়িম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার একটি উট হারিয়ে আরাফার দিনে তা তালাশ করিতে লাগলাম। তখন আমি নাবী (সাঃআঃ)- কে আরাফায় উকূফ করিতে দেখলাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম! তিনি তো কুরায়শ বংশীয় [৬০]। এখানে তিনি কী করছেন?
(মুসলিম ১৫/২১, হাদীস ১২২০) (আঃপ্রঃ ১৫৫১, ইঃফাঃ ১৫৫৭). [৬০] মক্কার অধিবাসী কতক হঠকারী উদ্ধত গোত্র অন্যান্য লোকদের সঙ্গে আরাফাতে যেত না এবং মুজদালিফায় সংক্ষিপ্ত অবস্থান করত। তাদের ঔদ্ধত্যের কারণে তাদেরকে তিরস্কার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে অন্যান্য হাজীদের ন্যায় তাদেরকেও হজ্জের সকল নিয়ম পালন করিতে হইবে। ইসলাম হচ্ছে সমতার ধর্ম। জাহিলী যুগের প্রথা অনুযায়ী যুবাইর ইবনু মুতয়িম (রাদি.) -এর ধারণা ছিল কুরাইশদের আরাফাতে আসার প্রয়োজন নেই। তাই তিনি বলে উঠেন, আল্লাহর নাবী (সাঃআঃ) তো কুরাইশ; তিনি কেন আরাফাতে এসেছেন। আল্লাহর নির্দেশে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঐ জাহিলী নিয়ম ভেঙ্গে ফেলেন এবং আরাফাতে অবস্থানসহ হজ্জের যাবতীয় নিয়মই সকলের জন্য সমানভাবে আবশ্যকীয় করেন। (সুরা আল-বাক্বারাহ ১৯৮-১৯৯)
১৬৬৫. উরওইয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
জাহিলী যুগে হুমস ব্যতীত অন্য লোকেরা উলঙ্গ অবস্থায় (বাইতুল্লাহ) তাওয়াফ করত। আর হুমস হলো কুরায়শ এবং তাদের ঔরসজাত সন্তান-সন্ততি। হুমসরা লোকেদের সেবা করে সওয়াবের আশায় পুরুষ পুরুষকে কাপড় দিত এবং সে তা পরে তাওয়াফ করত। আর স্ত্রীলোক স্ত্রীলোককে কাপড় দিত এবং এ কাপড়ে সে তাওয়াফ করত। হুমসরা যাকে কাপড় না দিত সে উলঙ্গ অবস্থায় বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করত। সব লোক আরাফা হইতে প্রত্যাবর্তন করত আর হুমসরা প্রত্যাবর্তন করত মুযদালিফা হইতে। রাবী হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমার পিতা আমার নিকট আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, এই আয়াতটি হুমস সম্পর্কে নাযিল হয়েছেঃ (আরবি) (এরপর যেখান হইতে অন্য লোকেরা প্রত্যাবর্তন করে, তোমরাও সেখান হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে) রাবী বলেন, তারা মুযদালিফা হইতে প্রত্যাবর্তন করত, এতে তাদের আরাফাহ পর্যন্ত যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল।
(৪৫২০, মুসলিম ১৫/২১, হাদীস ১২১৯) (আঃপ্রঃ ১৫৫২, ইঃফাঃ ১৫৫৮)
২৫/৯২. অধ্যায়ঃ আরাফা হইতে প্রত্যাবর্তনে চলার গতি।
১৬৬৬. উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উসামাহ (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করা হলো, তখন আমি সেখানে উপবিষ্ট ছিলাম, বিদায় হজ্জের সময় আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন আরাফা হইতে ফিরতেন তখন তাহাঁর চলার গতি কেমন ছিল? তিনি বলিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দ্রুতগতিতে চলতেন এবং যখন পথ মুক্ত পেতেন তখন তার চাইতেও দ্রুতগতিতে চলতেন।
রাবী হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (আরবি) হইতেও দ্রুতগতির ভ্রমণকে (আরবি) বলা হয়। আবু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (আরবি) অর্থ খোলা পথ, এর বহুবচন হল (আরবি) ও (আরবি) শব্দদ্বয়ও অনুরূপ। (কুরআনে বর্ণিত) (আরবি) এর অর্থ হল, “পরিত্রানের কোন উপায়-অবকাশ নেই। (সদঃ ৩০)
(২৯৯৯, ৪৪১৩, মুসলিম ১৫/৪৭, হাদীস ১২৮৬) (আঃপ্রঃ ১৫৫৩, ইঃফাঃ ১৫৫৯)
২৫/৯৩. অধ্যায়ঃ আরাফা ও মুযদালিফার মধ্যবর্তী স্থানে অবতরণ করা।
১৬৬৭. উসামাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) যখন আরাফা হইতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন তখন তিনি একটি গিরিপথের দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রাকৃতিক প্রয়োজন মিটিয়ে অযূ করিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সালাত আদায় করবেন? তিনি বললেনঃ সালাত তোমার আরো সামনে। (১৩৯)
(আঃপ্রঃ ১৫৫৪, ইঃফাঃ ১৫৬০)
১৬৬৮. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত এক সাথে আদায় করিতেন। এছাড়া তিনি সেই গিরিপথ দিয়ে অতিক্রম করিতেন যে দিকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) গিয়েছিলেন। আর সেখানে প্রবেশ করে তিনি ইসতিনজা করিতেন এবং অযূ করিতেন কিন্তু সালাত আদায় করিতেন না। অবশেষে তিনি মুযদালিফায় পৌঁছে সালাত আদায় করিতেন। (১৬৬৮, ১০৯১)
(আঃপ্রঃ ১৫৫৫, ইঃফাঃ ১৫৬১)
১৬৬৯. ঊসামাহ ইবনু যায়েদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আরাফা হইতে সওয়ারীতে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর পেছনে আরোহণ করলাম। মুযদালিফার নিকটবর্তী বামপার্শ্বের গিরিপথে পৌঁছলে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তাহাঁর উটটি বসালেন। এরপর পেশাব করে আসলেন। আমি তাঁকে অযূর পানি ঢেলে দিলাম। আর তিনি হালকাভাবে অযূ করে নিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সালাত? তিনি বললেনঃ সালাত আরো সামনে। এ কথা বলে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সওয়ারীতে আরোহণ করে মুযদালিফা আসলেন এবং সালাত আদায় করিলেন। মুযদালিফার ভোরে ফযল [ইবনু আব্বাস (রাদি.) ] আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর পিছনে আরোহণ করিলেন। (১৩৯)
(আঃপ্রঃ ১৫৫৬, ইঃফাঃ ১৫৬২)
১৬৭০. কুরাইব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) ফযল (রাদি.) হইতে আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) জামরায় পৌঁছা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করিতেন।
(১৫৪৪, মুসলিম ১৫/৪৫, হাদীস ১৬৮০, ১৬৮১, আহমাদ ২১৮০১) (আঃপ্রঃ ১৫৫৬, ইঃফাঃ ১৫৬২ শেষাংশে)
২৫/৯৪. অধ্যায়ঃ (আরাফাহ হইতে) ফিরে আসার সময় নাবী (সাঃআঃ) ধীরে চলার আদেশ দিতেন এবং তাদের প্রতি চাবুকের সাহায্যে ইঙ্গিত করিতেন।
১৬৭১. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আরাফার দিনে নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে ফিরে আসছিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) পিছনের দিকে খুব হ্যাঁকডাক ও উট পিটানোর শব্দ শুনতে পেয়ে তাদের চাবুক দিয়ে ইঙ্গিত করে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা ধীরস্থিরতা অবলম্বন কর। কেননা, উট দ্রুত হাকানোর মধ্যে কোন কল্যাণ নেই।
(আরবি) অর্থাৎ তারা দ্রুত চলত। (আরবি) তোমাদের ফাঁকে ঢুকে, (আরবি) উভয়টির মধ্যে প্রবাহিত করেছি।
(আঃপ্রঃ ১৫৫৭, ইঃফাঃ ১৫৬৩)
২৫/৯৫. অধ্যায়ঃ মুযদালিফায় দু ওয়াক্ত সালাত এক সাথে আদায় করা।
১৬৭২. উসামাহ ইবনু যায়েদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আরাফা হইতে ফেরার সময় গিরিপথে অবতরণ করে পেশাব করিলেন এবং অযূ করিলেন। তবে পূর্ণাঙ্গ অযূ করিলেন না। আমি তাঁকে বললাম, সালাত? তিনি বলিলেন, সালাত তো তোমার সামনে। অত:পর তিনি মুযদালিফায় এসে অযূ করিলেন এবং পূর্ণাঙ্গ অযূ করিলেন। অত:পর সালাতের ইক্বামাত হলে তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করিলেন। এরপর প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্থানে উট দাঁড় করিয়ে রাখার পর সালাতের ইক্বামাত দেয়া হলো। নাবী (সাঃআঃ) ইশার সালাত আদায় করিলেন। ইশা ও মাগরিবের মধ্যে তিনি আর কোন সালাত আদায় করেননি। (১৩৯)
(আঃপ্রঃ ১৫৫৮, ইঃফাঃ ১৫৬৪)
২৫.৯৬. অধ্যায়ঃ দু ওয়াক্ত সালাত একসঙ্গে আদায় করা এবং দুয়ের মধ্যে কোন নফল সালাত আদায় না করা
১৬৭৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা এক সাথে আদায় করেন। প্রত্যেকটির জন্য আলাদা ইক্বামাত দেয়া হয়। তবে উভয়ের মধ্যে বা পরে তিনি কোন নফল সালাত আদায় করেননি। (১০৯১)
(আঃপ্রঃ ১৫৫৯, ইঃফাঃ ১৫৬৫)
১৬৭৪. আবু আইয়ুব আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বিদায় হজ্জের সময় মুযদালিফায় মাগরিব এবং ইশা একত্রে আদায় করিয়াছেন।
(৪৪১৪, মুসলিম ১৫/৪৭, হাদীস ১২৮৭, আহমাদ ২৩৬২১) (আঃপ্রঃ ১৫৬০, ইঃফাঃ ১৫৬৬)
২৫/৯৭. অধ্যায়ঃ মাগরিব এবং ইশা উভয় সালাতের জন্য আযান ও ইক্বামাত দেয়া
১৬৭৫. আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (রাদি.) হজ্জ আদায় করিলেন। তখন ইশার আযানের সময় বা তার কাছাকাছি সময় আমরা মুযদালিফায় পৌঁছলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে আদেশ দিলেন। সে আযান দিল এবং ইক্বামাত বলিল। তিনি মাগরিব আদায় করিলেন এবং এরপর আরো দু রাকআত আদায় করিলেন। অত:পর তিনি রাতের খাবার আনালেন এবং তা খেয়ে নিলেন। (রাবী বলেন) অত:পর তিনি একজনকে আদেশ দিলেন। আমার মনে হয়, লোকটি আযান দিল এবং ইক্বামাত বলিল। আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমার বিশ্বাস এ সন্দেহ যুহাইর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতেই হয়েছে। অত:পর তিনি দু রাকআত ইশার সালাত আদায় করিলেন। ফজর হওয়া মাত্রই তিনি বললেনঃ এ সময়, এ দিনে, এ স্থানে, এ সালাত ব্যতীত নাবী (সাঃআঃ) আর কোন সালাত আদায় করেননি। আবদুল্লাহ (রাদি.) বলেন, এ দুটি সালাত তাদের প্রচলিত ওয়াক্ত হইতে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই লোকেরা মুযদালিফা পৌঁছার পর মাগরিব আদায় করেন এবং ফজরের সময় হওয়া মাত্র ফজরের সালাত আদায় করেন। আবদুল্লাহ (রাদি.) বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে এরূপ করিতে দেখেছি। (১৬৮২, ১৬৮৩)
(আঃপ্রঃ ১৫৬১, ইঃফাঃ ১৫৬৭)
২৫/৯৮. অধ্যায়ঃ যারা পরিবারের দুর্বল লোকদের রাত্রে পূর্বে প্রেরণ করে মুযদালিফায় অবস্থান করে ও দুআ করে এবং পূর্বে প্রেরণ করিবে চন্দ্র অস্তমিত হওয়ার পর।
১৬৭৬. সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) তাহাঁর পরিবারের দুর্বল লোকদের আগেই পাঠিয়ে দিয়ে রাতে মুযদালিফাতে মাশআরে হারামের নিকট উকূফ করিতেন এবং সাধ্যমত আল্লাহর যিকর করিতেন। অতঃপর ইমাম(মুযদালিফায়) উকূফ করার ও রওয়ানা হওয়ার আগেই তাঁরা(মিনায়) ফিরে যেতেন। তাঁদের মধ্যে কেউ মিনাতে আগমন করিতেন ফজরের সালাতের সময় আর কেউ এরপরে আসতেন, মিনাতে এসে তাঁরা কঙ্কর মারতেন। ইবনু উমর (রাদি.) বলিতেন, তাদের জন্য রাসুল (সাঃআঃ) কড়াকড়ি শিথিল করে সহজ করে দিয়েছেন।
(মুসলিম ১৫/৪৯, হাদীস ১২৯৫) (আঃপ্রঃ ১৫৬২, ইঃফাঃ ১৫৬৮)
১৬৭৭. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাকে রাতে মুযদালিফা হইতে পাঠিয়েছেন।
(১৬৭৮, ১৮৫৬, মুসলিম ১৫/৪৯, হাদীস ১২৯৩, ১২৯৪, আহমাদ ২২০৪) (আঃপ্রঃ ১৫৬৩, ইঃফাঃ ১৫৬৯)
১৬৭৮. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মুযদালিফার রাতে তাহাঁর পরিবারের যে সব লোককে এখানে পাঠিয়েছিলেন, আমি তাঁদের একজন। (১৬৭৭)
(আঃপ্রঃ ১৫৬৪, ইঃফাঃ ১৫৭০)
১৬৭৯. আসমা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি মুযদালিফার রাতে মুযদালিফার কাছাকাছি স্থানে পৌঁছে সালাতে দাঁড়ালেন এবং কিছুক্ষণ সালাত আদায় করিলেন। অত:পর বলিলেন, হে বৎস! চাঁদ কি অস্তমিত হয়েছে? আমি বললাম, না। তিনি আরো কিছুক্ষণ সালাত আদায় করিলেন। অত:পর বলিলেন, হে বৎস! চাঁদ কি ডুবেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, চল। আমরা রওয়ানা হলাম এবং চললাম। পরিশেষে তিনি জামরায় কঙ্কর মারলেন এবং ফিরে এসে নিজের অবস্থানের জায়গায় ফজরের সালাত আদায় করিলেন। অত:পর আমি তাঁকে বললাম, হে মহিলা! আমার মনে হয়, আমরা বেশি অন্ধকার থাকতেই আদায় করে ফেলেছি। তিনি বলিলেন, বৎস! আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মহিলাদের জন্য এর অনুমতি দিয়েছেন।
(মুসলিম ১৫/৪৯, হাদীস ১২৯১) (আঃপ্রঃ ১৫৬৫, ইঃফাঃ ১৫৭১)
১৬৮০. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাওদা (রাদি.) মুযদালিফার রাতে (মিনা যাওয়ার জন্য) নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট অনুমতি চাইলেন, তিনি তাঁকে অনুমতি দেন। সাওদা (রাদি.) ছিলেন ভারী ও ধীরগতিসম্পন্না নারী।
(১৬৮১, মুসলিম ১৫/৪৮, হাদীস ১২৯০) (আঃপ্রঃ ১৫৬৬, ইঃফাঃ ১৫৭২)
১৬৮১. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মুযদালিফায় অবতরণ করলাম। মানুষের ভিড়ের আগেই রওয়ানা হওয়ার জন্য সাওদা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট অনুমতি চাইলেন। আর তিনি ছিলেন ধীর গতি মহিলা। নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে অনুমতি দিলেন। তাই তিনি লোকের ভিড়ের আগেই রওয়ানা হলেন। আর আমরা সকাল পর্যন্ত সেখানেই রয়ে গেলাম। এরপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) রওয়ানা হলেন, আমরা তাহাঁর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। সওদার মত আমিও যদি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট অনুমতি চেয়ে নিতাম তাহলে তা আমার জন্য অধিক সন্তুষ্টির ব্যাপার হতো। (১৬৮০)
(আঃপ্রঃ ১৫৬৭, ইঃফাঃ ১৫৭৩)
২৫/৯৯. অধ্যায়ঃ মুযদালিফায় ফজরের সালাত কখন আদায় করিবে?
১৬৮২. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে দুটি সালাত ব্যতীত আর কোন সালাত তার নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত আদায় করিতে দেখিনি। তিনি মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করিয়াছেন এবং ফজরের সালাত তার ওয়াক্তের আগে আদায় করিয়াছেন।
(১৬৭৫, মুসলিম ১৫/৪৮, হাদীস ১২৮৯, আহমাদ ৩৬৩৭) (আঃপ্রঃ ১৫৬৮, ইঃফাঃ ১৫৭৪)
১৬৮৩. আব্দুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ (রাদি.) এর সঙ্গে মক্কা রওয়ানা হলাম। এরপর আমরা মুযদালিফায় পৌঁছলাম। তখন তিনি পৃথক পৃথক আযান ও ইক্বামতের সাথে উভয় সালাত (মাগরিব ও ইশা) আদায় করিলেন এবং এ দু সালাতের মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিলেন। অত:পর ফজর হইতেই তিনি ফজরের সালাত আদায় করিলেন। কেউ কেউ বলছিল যে, ফজরের সময় হয়ে গেছে, আবার কেউ বলছিল যে, এখনো ফজরের সময় আসেনি। এরপর আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, এ দু সালাত অর্থাৎ মাগরিব ও ইশা এ স্থানে তাদের নিজ সময় হইতে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই ইশার ওয়াক্তের আগে কেউ যেন মুযদালিফায় না আসে। আর ফজরের সালাত এই মুহূর্তে। এরপর তিনি ফর্সা হওয়া পর্যন্ত সেখানে উকূফ করেন। এরপর বলিলেন, আমীরুল মুমিনীন যদি এখন রওয়ানা হন তাহলে তিনি সুন্নাত মুতাবিক কাজ করিলেন। (রাবী বলেন) আমার জানা নেই, তাহাঁর কথা দ্রুত ছিল, না উসমান (রাদি.) -এর রওয়ানা হওয়াটা। এরপর তিনি তালবিয়া পাঠ করিতে থাকলেন, কুরবানীর দিন জামরায়ে আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত।
(মুসলিম ১৫/৪৮, হাদীস ১২৮৯, আহমাদ ৩৬৩৭) (আঃপ্রঃ ১৫৬৯, ইঃফাঃ ১৫৭৫)
২৫/১০০. অধ্যায়ঃ মুযদালিফা থেকে কখন যাত্রা করিবে?
১৬৮৪. আমর ইবনু মায়মূন (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি, উমর (রাদি.) -এর সাথে ছিলাম। তিনি মুযদালিফাতে ফজরের সালাত আদায় করে (মাশআরে হারামে) উকূফ করিলেন এবং তিনি বলিলেন, মুশরিকরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত রওয়ানা হত না। তারা বলত, হে সাবীর! আলোকিত হও। নাবী (সাঃআঃ) তাদের বিপরীত করিলেন এবং তিনি সূর্য উঠার আগেই রওয়ানা হলেন। (৩৮৩৮)
(আঃপ্রঃ ১৫৭০, ইঃফাঃ ১৫৭৬)
Leave a Reply