আযানের সময়। সালাতের জন্য আহ্বান। Bulugul Maram

আযানের সময়। সালাতের জন্য আহ্বান। Bulugul Maram

 আযানের সময়। সালাতের জন্য আহ্বান >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় ২ঃ আযান (সালাতের জন্য আহ্বান)

পরিচ্ছেদ ১৭. আযানের বিবরণ
পরিচ্ছেদ ১৮. আবু মাহজুরার আযানের পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ১৯. আযানের শব্দ দুবার করে আর ইকামাতের শব্দ একবার করে
পরিচ্ছেদ ২০. আযান অবস্থায় মুয়াজ্জিনের বৈশিষ্ট্যসমূহের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ ২১. মুয়াজ্জিন উচ্চকণ্ঠের অধিকারী হওয়া মুস্তাহাব
পরিচ্ছেদ ২২. ঈদের সালাতের জন্য আযান ও ইকামত নেই
পরিচ্ছেদ ২৩. ছুটে যাওয়া নামাজের জন্য আযান ও ইকামত শরীফত সম্মত
পরিচ্ছেদ ২৪. এক আযানে দু’সলাতকে একত্রিত করা যথেষ্ট
পরিচ্ছেদ ২৫. ফজরের পূর্বে আযানের বিধান
পরিচ্ছেদ ২৬. সময় আগমন নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে আযানের বিধান
পরিচ্ছেদ ২৭. আযানের জওয়াব দেয়া
পরিচ্ছেদ ২৮. আযান দিয়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা অপছন্দনীয়
পরিচ্ছেদ ২৯. সফরে থাকা অবস্থায় আযান দেওয়া শরীয়তসম্মত
পরিচ্ছেদ ৩০. আযান ও ইক্বামাতের মাঝে দেরী করা শরীয়তসম্মত
পরিচ্ছেদ ৩১. আযানের জন্য অযু করা শরীয়তসম্মত
পরিচ্ছেদ ৩২. যখন কোন লোক আযান আর অপরজন ইকামত দিবে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ৩৩. আযান মুয়াযযিনের দায়িত্বে আর ইক্বামত নির্ভরশীল ইমামের উপর
পরিচ্ছেদ ৩৪. আযান ও ইকামতের মাঝে দু’আ করা মুস্তাহাব
পরিচ্ছেদ ৩৫. আযানের পর নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য ওসীলা মর্যাদার দু’আ করা মুস্তাহাব

পরিচ্ছেদ ১৭. আযানের বিবরণ

১৭৮ -আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন স্বপ্নযোগে দেখলাম, কোন বাক্তি আমার নিকট এসে বলছে- তুমি বল,

اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ

আল্লাহু আক‍বার’আল্লাহু আক‍বার’

অতঃপর তিনি পূর্ণ আযান বর্ণনা করিলেন। এতেআল্লাহু আক‍বার’ চার বার ছিল কিন্তু তারজী’ ছিল না। আর ইকাময়তের সব বাক্যই একবার করে ছিল কিন্তু

قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ

ক্বাদাকামাতিস সালাহ’

বাক্যটি ছিল দু’বার। বর্ণনাকারী বলেছেন- সকাল হলে আমি আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] এর নিকট [এসে স্বপ্নটির বর্ণনা দিলাম]। তিনি এই স্বপ্ন সম্বন্ধে বলিলেন- স্বপ্নটি অবশ্যই সত্য। আহমাদ ও আবূ দাউদ, তিরমিজি ও ইবনু খুযাইমাহ একে সহিহ বলেছেন। {২০৫} আহমাদ এ হাদিসের শেষাংশে- ফাজরের সালাতের আযান সম্পর্কীয় বিলাল [রাঃআঃ] এর ঘটনাটিতেঘুম থেকে সালাত উত্তম’ অংশটি বাড়িয়েছেন। {২০৬}

{২০৫} আবূ দাউদ ৪৯৯; তিরমিজি ১৮৯; আহমাদ ৪/৪৩; ইবনু খুযাইমাহ ৩৭১ ইমাম তিরমিজি বলেন হাদিসটি হাসান সহিহ। ইবনু খুযাইমাহ বলেন [১৯৭] ঃ বর্ণনাভঙ্গির দিক থেকে হাদিসটি প্রমানিত সহিহ। {২০৬} আবূ দাউদ ৪৯৯; তিরমিজি ১৮৯; আহমাদ ৪/৪৩; ইবনু খুযাইমাহ ৩৭১ ইমাম তিরমিজি বলেন হাদিসটি হাসান সহিহ। ইবনু খুযাইমাহ বলেন[১৯৭] ঃ বর্ণনাভঙ্গির দিক থেকে হাদিসটি প্রমানিত সহিহ। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

১৭৯ – ইবনু খুযাইমাহতে আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

যখন মুয়াজ্জিন ফাজরের আজানে

حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ

হায়্ইয়া আলাল ফালাহ্’

বলেন তারপর

الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ

আস্ সালাতু খাইরুম্ মি্নান্নাওম’

বলা সুন্নাত। {২০৭}

{২০৭} ইবনু খুযাইমাহ ৩৮৬ হাদিসটিকে সহিহ সনদে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮. আবু মাহজুরার আযানের পদ্ধতি

১৮০ – আবূ মাহূযূরাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাকে আযান শিখিয়েছিলেন। তিনি সেই আযানে`তারজী’ এর উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু এ হাদিসের প্রথমে মাত্র দুবার তাকবীর {২০৮} বলার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। আর [বুখারী, মুসলিম ব্যাতীত] অন্য পাঁচ জনে বর্ণনা করে চার তাকবীর বলার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। {২০৯}

{২০৮} মুসলিম ৩৭৯।`তারজী’ অর্থঃ শাহাদাতাইনকে প্রথমবার নিম্ন আওয়াজে, দ্বিতীয়বার উচ্চ আওয়াজে বলা।
{২০৯} সাহীহ আবূ দাউদ ৫০২; নাসায়ি হাদিস ২/৪-৫; তিরমিজি ১৯২; ইবনু মাজাহ ৭০৯; আহমাদ ৩/৪০৯, ৬/৪০১ ইমাম তিরমিজি হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলে মন্তব্য করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ১৯. আযানের শব্দ দুবার করে আর ইকামাতের শব্দ একবার করে

১৮১ – আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন বিলাল [রাঃআঃ] যেন জোড়া বা্ক্যে আযান’ ও বিজোড় বা্ক্যে ইকামাত’ দেন

قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ

[কাদাকামাতিস সালাহ]

দু’বার। এভাবে [আযান- ইকামাত] দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছিল। তবে মুসলিমে ইল্লাল ইকক্বামাত তথা`ক্বাদা কামাতিস সালাত’ দু’বার বলিতে হয়- কথার উল্লেখ করেননি। {২১০}
নাসয়ীতে আছে, নাবি [সাঃআঃ] বিলাল [রাঃআঃ] কে এরূপ আদেশ করেছিলেন। {২১১}

{২১০} বুখারী ৬০৫; মুসলিম ৩৭৮. {২১১} নাসায়ি হাদিস ২/৩, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২০. আযান অবস্থায় মুয়াজ্জিনের বৈশিষ্ট্যসমূহের বর্ণনা

১৮২ – আবূ জুহাইফাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন- আমি বিলাল [রাঃআঃ] কে তার দু’কানে আঙ্গুল দিয়ে আযান দিতে এবং আযানে এধার ওধার অর্থাৎ ডানে-বামে মুখ ফেরাতে দেখেছি। {২১২}

ইবনু মাজাহতে আছে-এবং তিনি তাহাঁর আঙ্গুলদ্বয় তাহাঁর দু’কানে ঢুকিয়েছিলেন। {২১৩} আবূ দাউদে আছে- তিনিহাইয়া আলাস সালাহ্’ বলার সময়ে তাহাঁর গলাকে ডানে ও বামে ঘুরাতেন, তবে তিনি সম্পূর্ণরুপে ঘুরে যেতেন না। {২১৪} এর মূল বক্তব্য বুখারী, মুসলিমে রয়েছে। {২১৫}

{২১২} আহমাদ ৪/৩০৯-৩০৮; তিরমিজি ১৯৭। তিরমিজি হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন। {২১৩} ইবনু মাজাহ [৭১১] এ হাদিসটিও সহিহ যদিও এ হাদিসের সনদে দুর্বলতা আছে। {২১৪} আবূ দাউদ ৫২০ হাদিসটি মুনকার। {২১৫} মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি বুখারীতে ৬৩৪ নং এবং মুসলিমে ৫০৩ নং এ ইবনু আবী জুহাইফাহ থেকে তিনি তাহাঁর পিতা হতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বিলাল [রাঃআঃ] কে আযান দিতে দেখেছেন। রাবী বলেন, আমি তাহাঁর মুখমণ্ডলকে এদিক ওদিক ঘুরাতে প্রত্যক্ষ করেছি।
হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২১. মুয়াজ্জিন উচ্চকণ্ঠের অধিকারী হওয়া মুস্তাহাব

১৮৩ – আবূ মাহ্যূয়ার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তাহাঁর কণ্ঠস্বর নবী [সাঃআঃ] এর নিকট পছন্দনীয় হওয়ায় তিনি তাঁকে আযন শিখিয়ে দেন। {২১৬}

{২১৬} ইবনু খুযাইমাহ ৩৭৭. হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ২২. ঈদের সালাতের জন্য আযান ও ইকামত নেই

১৮৪ – জাবির বিন সামূরাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন- আমি নাবি [সাঃআঃ] এর সঙ্গে দু’ঈদের- [ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার] একাধিকবার সলাত আযান ও ইকামাত ছাড়াই আদায় করেছি। {২১৭}

{২১৭} মুসলিম ৮৮৭, তিরমিজি ৫৩২, আহমাদ ২০৩৩৬, ৩০৩৮৪, আবূ দাউদ ১১৪৮। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৮৫ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

এবং অনুরুপ হাদিস ইবনু “আব্বাস ও অন্যান্য সাহাবী [রাঃআঃ] হতেও বুখারী এবং মুসলিমে বিদ্যমান।

হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৩. ছুটে যাওয়া নামাজের জন্য আযান ও ইকামত শরীফত সম্মত

১৮৬ – আবূ কাতাদাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

দীর্ঘ হাদীসে সাহাবীগণের ফাজরের সালাতের সময় ঘুমিয়ে পড়া সম্বন্ধে বর্ণিত- “অতঃপর বিলাল [রাঃআঃ] আযান দিলেন ও তারপর নাবী [সাঃআঃ] সালাত আদায় করিলেন, যেভাবে প্রতিদিন আদায় করিতেন। {২১৮}

{২১৮} মুসলিম ৬৮১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৪. এক আযানে দু’সলাতকে একত্রিত করা যথেষ্ট

১৮৭ – জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

[হাজ্বের সময় আরাফাহ থেকে মিনা ফেরার পথে] নাবী [সাঃআঃ] মুযদালফায় আগমন করিলেন। অতঃপর এসে মাগরিব ও`ইশা সলাত একই আযানে ও দু’ ইকামাতে সমাধা করিলেন। {২১৯}

{২১৯} মুসলিম ২/৮৯১ আব্দুল বাকী। উল্লেখিত শব্দের পর মুসলিমে আরো আছে- এ [আরবী] এ উভয় নামাজের মাঝে আর কোন নফল সালাত আদায় করেননি। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ ঐ মুজদালিফার রাত্রির জন্য এ কথা ঠিক আছে। আর অন্যান্যরা বর্ণনা যে উল্লেখ করিয়াছেন যে, বুখারী থেকে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ সূত্রে বর্ণিত হাদিস দ্বারা কেউ কেউ মাগরিবের দু‘রাকাআত সালাতকে সুন্নাত মনে করে থাকেন যেটি ভুল। আমি`আল-আসল’ গ্রন্থে এর প্রতিবাদে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৮৮ – ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মাগরিব ও ইশার সলাত এক ইকামাতে জমা [একত্রিত] করে আদায় করিলেন।” {২২০} কিন্তু আবূ দাউদ প্রত্যেক নামাজের জন্য কথাটি বৃদ্ধি করিয়াছেন এবং আবু দাউদের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “দু’ নামাজের মধ্যে কোন একটিতে [দ্বীতীয় সলাতে] আযান দেয়া হয়নি”।

{২২০} মুসলিম ২৯০, ২৮৯, ১২৮৮৷ হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৫. ফজরের পূর্বে আযানের বিধান

১৮৯ – ইবনু ‘উমার ও আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, বিলাল তো বস্তুতঃপক্ষে রাতে [সুবহি সাদিকের পূর্বে] আযান দেয়। অতএব তোমরা পানাহার [সাহারী খাও] করিতে থাকো যতক্ষণ না ইবনু উম্মু মাকতুম্ ফাজরের নামাজের আযান দেয়। তিনি ছিলেন অন্ধ তাই আসবাহতা, আসবাহতা [সকাল করে ফেললেন, সকাল করে ফেললেন] না বলা পর্যন্ত তিনি [ফাজরের] আযান দিতেন না।” {২২১} এ হাদিসের শেষাংশে কিছু ইদরাজ বা রাবীর কিছু বক্তব্য নাবী [সাঃআঃ] -এর কথার সাথে সন্নিবেশিত হয়েছে।” {২২২}

{২২১} বুখারী ৬১৭; মুসলিম ১০৯২। শব্দবিন্যাস বুখারীর, {২২২} হাদিসের শেষে রাবী কর্তৃক বর্ধিত অংশটুকু হচ্ছেঃ [আরবী], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৯০ – ইবনু ‘উমার ও আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, বিলাল তো বস্তুতঃপক্ষে রাতে [সুবহি সাদিকের পূর্বে] আযান দেয়। অতএব তোমরা পানাহার [সাহারী খাও] করিতে থাকো যতক্ষণ না ইবনু উম্মু মাকতুম্ ফাজরের নামাজের আযান দেয়। তিনি ছিলেন অন্ধ তাই আসবাহতা, আসবাহতা [সকাল করে ফেললেন, সকাল করে ফেললেন] না বলা পর্যন্ত তিনি [ফাজরের] আযান দিতেন না।” {২২১} এ হাদিসের শেষাংশে কিছু ইদরাজ বা রাবীর কিছু বক্তব্য নাবী [সাঃআঃ] -এর কথার সাথে সন্নিবেশিত হয়েছে।” {২২২}

{২২১} বুখারী ৬১৭; মুসলিম ১০৯২। শব্দবিন্যাস বুখারীর, {২২২} হাদিসের শেষে রাবী কর্তৃক বর্ধিত অংশটুকু হচ্ছেঃ [আরবী], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৬. সময় আগমন নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে আযানের বিধান

১৯১ – ইবনুউমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

বিলাল ঐ ফজরের [সময়ের অল্প] পূর্বে আযান দিয়েছিলেন। ফলে নাবী [সাঃআঃ] তাকে-এ বান্দা অবশ্য ঘুমিয়ে গিয়েছিল বলে’ ঘোষণা দিতে নির্দেশ করিলেন। আবু দাউদ একে য’ঈফ [দুর্বল] রূপে বর্ণনা করিয়াছেন।” {২২৩}

{২২৩} আবু দাউদ ৫৩২, আবু দাউদের মতই তিরমিজিও হাদিসটিকে জঈফ বলেছেন। যেমন তিনি বলেছেন – [আরবী] এ হাদিসটি সংরক্ষিত নয়। এ কথার সমর্থনে তাদের দলীল হচ্ছে যে, হাম্মাদ বিন সালামাহ তাতে ভুল করিয়াছেন। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ নির্ভরযোগ্য রাবীর ক্রটি বিনা প্রমাণে বর্ণনা করা গ্রহণযোগ্য নয় যেমনটি তারা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৭. আযানের জওয়াব দেয়া

১৯২ – আবু সা‘ঈদ খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা যখন আযান শুনবে তখন মুয়াযযিন যা বলেন তোমরা তাই বলবে।” {২২৪}

{২২৪} বুখারী ৬১১; মুসলিম ৩৮৩, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৯৩ – মু’আবিয়াহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদিস বুখারীতে বর্ণিত আছে।” {২২৫}

{২২৫} বুখারী ৬১২ অন্য রেওয়ায়েতে [৯১৪] আবু উমামাহ বিন সাহল বিন হুনাইফ এর সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি মুয়াবিয়াহ বিন আবু সুফয়ান কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি মিম্বরের উপর বসা ছিলেন, এমতাবস্থায় মুয়াজ্জিন আযান দিলেন; মুয়াবিয়াহ বলিলেন, [আরবী] মুয়াজ্জিন বললোঃ [আরবী] মুয়াবিয়াহ বলিলেন [আরবী] মুয়াজ্জিন বললো [আরবী] মুয়াবিয়াহ বলিলেনঃ [আরবী] আর সাথে সাথে আমিও তাই বললাম। আযান শেষে বলিলেন, হে লোক সকল! আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এমন মজলিসে মুয়াজ্জিন যখন আযান দিতেন তখন এরকম বলিতে শুনিয়াছি যেরকম তোমরা আমাকে বলিতে শুনলে। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৯৪ – ইবনু উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আযানের জবাবের ফাযীলাত সম্বন্ধে বর্ণিত রহিয়াছে মুয়াযযিন যা বলবেন শ্রোতা সেসব বাক্যই বলবেন। তবে

“হায়ইআ আলাস্ সালাহ, হায়ইআ আলাল ফালাহ’

حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ , حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ

দু’টির জবাবে বলবে-

لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِاللَّهِ

`লা হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।” {২২৬}

{২২৬} মুসলিম ৩৮৫, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৮. আযান দিয়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা অপছন্দনীয়

১৯৫ – উসমান বিন আবিল`আস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] কে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আমার গোত্রের [নামাজের] ইমাম করে দিন। তিনি বলিলেন, তুমি তাদের ইমাম হলে, তাদের দুর্বল লোকের প্রতি খেয়াল রাখবে এবং এমন ব্যক্তিকে মুয়াযযিন নিয়োগ করিবে যে বিনিময়ে কোন মজুরী নেবে না। তিরমিয়ী একে হাসান বলেছেন, আর হাকিম একে সহিহ বলেছেন। {২২৭}

{২২৭} আবু দাউদ ৫৩১; তিরমিজি ২০৯; ইবনু মাজাহ ৭১৪; আহমাদ ৪/২১, ২১৭; হা, ১/১৯৯, ২০১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৯. সফরে থাকা অবস্থায় আযান দেওয়া শরীয়তসম্মত

১৯৬ – মালিক বিন হুওয়াইরিস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাকে বলেছেনঃ যখন সালাত [এর সময়] উপস্থিত হইবে তখন তোমাদের একজন আযান দিবে [এটা একটা বড় হাদিসের খণ্ডাংশ]।” {২২৮}

{২২৮} বুখারী ৬২৮; মুসলিম ৬৭৪; আবু দাউদ ৫৮৯; নাসায়ী ২/৯; তিরমিয়ী ২০৫, ইবনু মাজাহ ৯৭৯৯ আহমাদ ৩/৪৩৬, ৫/৫৩, এ হাদিসের কয়েক শব্দবিন্যাস আছে। কেউ হাদিসটিকে সংক্ষেপে কেউ বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম বুখারী তাহাঁর কতক বর্ণনায় [আরবী] “তোমরা সেভাবে সলাত আদায় করো যেভাবে আমাকে আদায় করিতে দেখ।” অংশটুকু বৃদ্ধি করিয়াছেন। আর আহমাদের বর্ণনায় বর্ধিত অংশ হচ্ছেঃ [আরবী] তোমরা যেভাবে আমাকে সলাত আদায় করতো দেখ।” বুখারী ব্যতীত প্রসিদ্ধ ছয়টি কিতাবের অন্য কোনটিতে এই বর্ধিত অংশটুকু নেই। [দেখুন বুখারী হাঃ ৩২৭], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ৩০. আযান ও ইক্বামাতের মাঝে দেরী করা শরীয়তসম্মত

১৯৭ – জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বিলাল [রাঃআঃ] -কে বলিলেন- যখন আযান দিবে থেমে থেমে দিবে আর ইকামাত অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি বলবে। আযান ও ইকামাতের মধ্যে একটা লোক খানা খেয়ে উঠতে পারে ঐ পরিমাণ সময়ের ব্যবধান রাখবে। [হাদিসটির আরো অংশ আছে।]| তিরমিয়ী একে য’ঈফ [দুর্বল] বলেছেন।” {২২৯}

{২২৯} মুনকার। তিরমিজি ১০৫৯। হাদিসের পূর্ণাঙ্গ অংশ হচ্ছেঃ [আরবী] “পানকারী যখন পান করা শেষ করে। কোন ব্যক্তি যখন পেশাব-পায়খানা থেকে প্রয়োজন শেষে বের হয়। আর তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত দাঁড়াবে না। তিরমিয়ী বলেন, জাবির [রাঃআঃ] এর এই আব্দুল মুনঈম থেকে বর্ণিত সূত্র ব্যতীত অন্য কোন সূত্র আমার জানা নেই। আর সে মাজহুল তথা অপরিচিত রাবী। আবদুল মুনঈম একজন বাসরী শায়খ। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ আব্দুল মুনঈম হচ্ছে ইবনু নুয়াইম আল-আসওয়ারী। সে মুনকারুল হাদিস। যেমনটি বলেছেন ইমাম বুখারী ও আবু হাতিম [রহঃ]। এর সনদটি মাজহুল। এর সনদে ইয়াহইয়া আল-বুকা মাজহুল রাবী। [ইবনু আদীর আল কামিল ফ্যি যুয়াফা ৯/১৩], ইমাম বায়হাকী বলেন, এ হাদীসে আব্দুল মুনঈম বিন নাঈম রহিয়াছে তাকে ইমাম বুখারী মুনকারুর হাদিস হিসেবে অভিহিত করিয়াছেন। আর ইয়াহইয়া বিন মুসলিম আল-বুকাকে ইবনে মাঈন দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। [বাইহাক্বী আল আওসাত্ব ১/৪২৮] , হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ৩১. আযানের জন্য অযু করা শরীয়তসম্মত

১৯৮ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তাতে আছে- নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন- উযু আছে এরূপ ব্যক্তি ব্যতীত যেন আযান না দেয়।” {২৩০} এটাকেও তিনি য’ঈফ [দুর্বল] বলেছেন। {২৩১}

{২৩০} জঈফ। তিরমিয়ী ২০০। যুহরী ও আবু হুরাইরা মধ্যে বিচ্ছিন্নতা থাকার কারণে তিরমিয়ী হাদিসটিকে জঈফ মন্তব্য করিয়াছেন। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুগুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ তিরমিয়ী [২০১] নং এ আবু হুরাইরা হতে মওকুফ সূত্রে আরেকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এটিও সহিহ নয়। হাদিসের শব্দ হচ্ছে [আরবী] অযুকারী ব্যক্তিই কেবল আযান দিবে। {২৩১} এর সনদে রহিয়াছে যুহরী যিনি আবু হুরায়রা থেকে শুনেননি। এর মধ্যে রহিয়াছে মুআবিয়া বিন ইয়াযিদ আস সাকাফী দুর্বল রাবী। [বায়হাকী কুবরা ১/৩৯৭], ইবনু কাসীরও অনুরূপ বলেছেন। [আল-আহকামুল কাবীর ১/১২৯], ইবনু সুয়ূতী তার জামেউস সগীরে এ হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বায়হাকী তার সুনান আল কুবরা [১/৩৯৭] গ্রন্থে, ইমাম ইবনু কাসীর তার আল আহকামুল কাবীর [১/১২৯] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে মুআবিয়া বিন ইয়াহইয়া আস সিদকী নামক দুর্বল রাবী বিদ্যমান। ইমাম সনআনী তার সুবুলুস সালাম [১/২০৫] গ্রন্থে বলেন, যুহরী আবু হুরাইরাহ থেকে হাদিসটি শুনেনি। আর যুহরী থেকে যে বর্ণনাকারী বর্ণনা করিয়াছেন তিনি দুর্বল। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তার তুহফাতুল আহওয়ায়ী [১/৪৪৫] গ্রন্থে, আহমাদ শাকের তাহাঁর শরহে সুনান আত তিরমিয়ী [১৪/৩৮৯] গ্রন্থে, বিন বায তাহাঁর মাজমু’ ফাতাওয়া [৬/৩৪৫, ১০/৩৩৯] -গ্রন্থে, শাইখ আলবানী তাহাঁর যঈফুল জামে [৬৩১৭], জঈফ তিরমিয়ী [২০০], ইরওয়াউল গালীল [২২২] গ্রন্থে, ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম [১/৪৮২] গ্রন্থে সকলেই হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ৩২. যখন কোন লোক আযান আর অপরজন ইকামত দিবে তার বিধান

১৯৯ – যিয়াদ বিন হারিস থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান দেবে সে ইকামাত দেবে। এটাকেও তিরমিয়ী য’ঈফ [দুর্বল] বলেছেন।” {২৩২}

{২৩২} যইফ। তিরমিজি ১৯৯ তিরমিজি বলেন, যিয়া়দের এ হাদিসটি ইফরীকী ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে পাইনি। আর ইফরীকী হাদিসবেত্তদের নিকট জঈফ-দুর্বল। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ দুর্বল কথিাটিই সঠিক, যদিও কেউ কেউ এ বিষয়ে মতবিরোধ করিয়াছেন। তাদের মধ্যে আছেন আল্লামাহ আহমাদ শাকির তিনি তাকে শক্তিশালী রাবী বলেছেন এবং তার বর্ণিত হাদিসকে সহিহ মন্তব্য করিয়াছেন। অনুরূপভাবে হযিমী [রহঃ] তার হাদিসকে হাসান বলেছেন।
ইমাম ইবনু কাসীর তার আল-আহকামুল কাবীর [১/৯৭] ও ইমাম শওকানী তার নাইলুল আওত্বার [২/৪১] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আবদুর রহমান বিন যিয়াদ বিন আনআম আল ইফরিক্বী রহিয়াছে, ইমাম তিরমিজি বলেন, মুহাদ্দিসগণের নিকট তিনি দুর্বল হিসেবে পরিচিত। ইয়াহইয়া আল কাত্তান সহ অনেকেই তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। [তিরমিজি বলেন] আমি ইমাম বুখারীকে দেখেছি, তিনি এ রাবীকে হাদিস বর্ণনার যোগ্য বলে মনে করিতেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাহাঁর আওনুল মা’বুদ [২/১২৬] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে দুর্বলতা রহিয়াছে। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তার তুহফাতুল আহওয়ায়ী [১/৪৪৩] গ্রন্থে, শাইখ আলবানী জঈফ ইবনু মাজাহ [১৩৬], জঈফ আবু দাউদ [৫১৪], যদফুল জামে’ [১৩৭৭], ইরওয়াউল গালীল [১/২৫৫] গ্রন্থে ইমাম নববী তার আল খুলাসা [১/২৯৭] হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০০ – আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি আযান [স্বপ্নে] দেখেছি। আর আমি তা দিতেও চাই। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমিই ইকামাত দেবে। এর সানাদেও দুর্বলতা আছে।” {২৩৩}

{২৩৩} জঈফ। আবু দাউদ ৫১২
ইমাম বুখারী তাহাঁর আত-তারীখুল কাবীর [৫/১৮৩] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসটির সমালোচনা হচ্ছে, একজন আরেকজন থেকে শোনার কথাটি উল্লেখ নেই। মুহাদ্দিস আয়ী তার আওনুল মা’বুদ [২/১২৫] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে মুহাম্মদ বিন আমর আল ওয়াকিফী আল আনসারী আল বাসারী রহিয়াছে। তাকে ইয়াহইয়া আল কাত্তান, ইবনু নুমাইর, ইয়াহইয়া বিন মুঈন সকলেই দুর্বল বলেছেন। এ হাদিসের সনদে এ রাবীর থাকার বিষয়ে মতভেদ রহিয়াছে। শাইখ আলবানী জঈফ আবু দাউদ [৫১২] এছে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। তবে ইবনুল মুলকীন খুলাস আল বাদরুল মুনীর [১/১০৬] গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি হাসান, আর এর সনদ নিয়ে বিতর্ক রহিয়াছে। ইবনু হাজার বলেন, এ হাদিসের রাবীদের মধ্যে একজন হচ্ছে মুহাম্মাদ বিন আমর আল-ওয়াকিয়ী আল আনসারী আল বাসরী সে দুর্বল। [আত-তালখীসুল হাবীর ১/৩৪৪, আওনুল মা’বুদ ২/১২৫, কাত্তান ইবনু নুসাইর, ইয়াহয়া বিন মুঈন সকলেই তাকে দুর্বল বলেছেন। [আওনুল মা’বুদ ২/১২৫]
হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ৩৩. আযান মুয়াযযিনের দায়িত্বে আর ইক্বামত নির্ভরশীল ইমামের উপর

২০১ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, আযানের অধিক কর্তৃত্ব মুআযযিনের উপর ন্যস্ত আর ইকামাত ইমাম সাহেবের কর্তৃত্বাধীন। ইবনু আদী, তিনি হাদিসটিকে য’ঈফ [দুর্বল]ও বলেছেন। {২৩৪}

{২৩৪} জঈফ। ইবনু আদী তাহাঁর কামিল গ্রন্থে [৪/১৩২৭] হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তার সনদে শারীক বিন আব্দুল্লাহ আল ক্বাযী রহিয়াছে যার স্মৃতিশক্তি খুব দুর্বল। ইবনু আলীও [রহঃ] তার ক্রটি বর্ণনা করিয়াছেন।
ইবনু হাজার বলেন, হাদিসটি শারীক বিন আব্দুল্লাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। এতে রহিয়াছে, মুআরিক বিন ইযাদ, সে দুর্বল। [আত-তালখীসুল হাবীর ১/৩৪৭, জঈফ নং ৪৬৬৯, ইমাম সওকানীও শারীকের দিকে দুর্বলতার ইঙ্গিত করিয়াছেন। [নাইলুল আওত্বার ২/৩১], ইমাম বায়হাকীও সুরক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করিয়াছেন। [সুনানুল কুবরা ২/১৯]
হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০২ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

বায়হাকীতে অনুরূপ একটি হাদিস`আলী [রাঃআঃ] -এর বচন বলে বর্ণিত। {২৩৫}

{২৩৫} মাওকূফ হিসেবে সহিহ। বায়হাকী ২/১৯; তার হাদিসের শব্দ হচ্ছে [আরবী]। মুয়াজ্জিনের হক আযান দেয়া আর ইমামের হক হলো ইকামত দেয়া।” ইমাম বায়হাকী তাহাঁর সুনান আল কুবরা [২/১৯] গ্রছে বলেন, হাদিসটি মারফূ সূত্রে বর্ণিত, আর এটি মাহফূয নয়।
হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ৩৪. আযান ও ইকামতের মাঝে দু’আ করা মুস্তাহাব

২০৩ – আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, আযানের সময় ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময়ে দু‘আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। ইবনু খুযাইমাহ একে সহিহ বলেছেন।” {২৩৬}

{২৩৬} নাসায়ী তার আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ” গ্রন্থে ৬৭, ৬৮, ৬৯ ইবনু খুযাইমাহ তাহাঁর সহিহ ইবনু খুজাইমাহ গ্রন্থে ৪২৫, ৪২৬, ৪২৭ এবং তিরমিয়ী ৩৫৯৪ বর্ণনা করিয়াছেন। তিরমিয়ী তাতে বৃদ্ধি করিয়াছেন- [আরবী] হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] আমরা তাতে কী বলবো? তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের সুস্থতা চাইবে। মুহাক্লিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ এই অতিরিক্ত অংশটুকু জঈফ, ইয়াহইয়া বিন ইয়ামান একাই বর্ণনা করেন। আর তাহাঁর স্মরণশক্তি দুর্বল।
হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ৩৫. আযানের পর নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য ওসীলা মর্যাদার দু’আ করা মুস্তাহাব

২০৪ – জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে [নিম্ন বর্ণিত দু’আটি] বলবে-

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াস সালাতিল কা’ইমাতি, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলতা, ওয়াব-আসহু মাকামাম মাহমূদা নিল্লাষী ওয়া আদতাহু।

অর্থঃ হে আল্লাহ। পরিপূর্ণ আহবান এবং আসন্ন সালাতের তুমিই প্রভু। মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] কে দান কর সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান, সুমহান মর্যাদা এবং বেহেশতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান মাকামে মাহমুদ-এ তাকে অধিষ্ঠিত কর, যার প্রতিশ্রুতি তুমিই তাকে দিয়েছ। -তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে। {২৩৭}

{২৩৭} বুখারী ৬১৪; আবু দাউদ ৫২৯, নাসায়ী ২/২৬/২৭ তিরমিজি ২১১; ইবনু মাজাহ ৭২২, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

আযানের সময় অধ্যায় শেষ


by

Comments

Leave a Reply