আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.]-এর ফযিলত]

আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.]-এর ফযিলত]

আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.]-এর ফযিলত] >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১. অধ্যায়ঃ আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.]-এর ফযিলত]

৬০৬৩. আবু বক্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মস্তিষ্কের উপর মুশরিকদের পা লক্ষ্য করলাম। তখন আমরা গুহায় ছিলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এদের কেউ যদি নিজের পায়ের দিকে তাকায় তাহলে পায়ের তলায়ই আমাদের দেখিতে পাবে। রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু বক্‌র! তুমি এ দুজন সম্বন্ধে কি মনে করো যাঁদের সঙ্গে আল্লাহ তৃতীয় জন হিসাবে রয়েছেন?

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৯৯৩]

৬০৬৪. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বারের উপর বসে বলিলেন, একজন বান্দাকে আল্লাহ তাআলা দুটি বিষয়ের মাঝে ইখতিয়ার [স্বাধীনতা] দিয়েছেন যে, [১] দুনিয়ার সম্পদ [প্রাচুর্য] দান করা, [২] এবং তাহাঁর নিজস্ব অবস্থায় বহাল থাকা। সুতরাং এ বান্দা আল্লাহর নিকট যা আছে তা বেছে নিলেন। এ কথা শুনে আবু বকর [রাদি.] কান্নাকাটি করিতে লাগলেন এবং বলিলেন, আমাদের পিতৃপুরুষ আপনার জন্য উৎসর্গকৃত হোক। ইখ্‌তিয়ারপ্রাপ্ত এ বান্দাটি ছিলেন স্বয়ং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ ব্যাপারে আবু বক্‌রই আমাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী ছিলেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উপর সর্বাধিক অনুগ্রহ আবু বাক্‌রের- সম্পদের ও সঙ্গ দানেও। আমি যদি কাউকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে গ্রহণ করতাম তাহলে আবু বক্‌রকেই করতাম। এখন তো ইসলামি ভ্রাতৃত্বই রয়েছে। মাসজিদের চতুস্পার্শে প্রবেশপথ যেন বন্ধ থাকে, শুধু আবু বাক্‌রের দ্বার উন্মুক্ত থাকিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৯৯৪]

৬০৬৫. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মানুষদের সম্মুখে বক্তৃতা দিলেন ….. তারপর মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- হাদীসের আবিকল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৯৯৫]

৬০৬৬. আব্দুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি যদি বন্ধু বানাতাম তাহলে আবু বক্‌রকেই বন্ধু হিসেবে অগ্রাধিকার দিতাম। তবে তিনি আমার ভাই এবং আমার সঙ্গী আর তোমাদের সঙ্গীকে আল্লাহ তাআলা বন্ধু বানিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৯৯৬]

৬০৬৭. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মাঝখান হইতে যদি আমি বন্ধু বানাতাম তাহলে আবু বাকারকেই বন্ধু বানাতাম।

[ই.ফা.৫৯৫৭, ই,সে ৫৯৯৭]

৬০৬৮. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি আমি কোন বন্ধু গ্রহণ করতাম তবে আবু কূহাফার পুত্রকেই গ্রহণ করতাম।

[ই.ফা.৫৯৫৮, ই,সে নেই]

৬০৬৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুনিয়ার কাউকে যদি আমি ঘনিষ্ঠ বন্ধু বানাতাম তবে আবু কুহাফার পুত্রকেই বন্ধু বানাতাম; কিন্তু তোমাদের সঙ্গী আল্লাহর বন্ধু।

[ই.ফা.৫৯৫৯, ই,সে ৫৯৯৮]

৬০৭০. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জেনে রাখো! কারো সাথে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নেই, যদি কাউকে বন্ধু বানাতাম তবে আবু বাকরকেই বানাতাম। তোমাদের সঙ্গী আল্লাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

[ই.ফা.৫৯৬০, ই,সে ৫৯৯৯]

৬০৭১. আমর ইবনি আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে যাতুস সালাসিলের সেনা বাহিনীর সঙ্গে পাঠালেন, তখন আমি রসূলের নিকট এসে বললাম, আপনার নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় ব্যক্তি কে? তিনি বলিলেন, আয়েশাহ। আমি বললাম, পুরুষদের মাঝে কে? তিনি বললেনঃ আয়েশাহর পিতা [আবু বকর]। আমি বললাম, তারপর? তিনি বললেনঃ উমর। তারপর তিনি আরো কিছু সংখ্যক ব্যক্তির নাম বর্ননা করিলেন।

[ই.ফা.৫৯৬১, ই,সে ৬০০০]

৬০৭২. ইবনি আবু মুলাইকাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশাহ [রাদি.] হইতে শুনেছি, তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যদি কাউকে খলীফা বা প্রতিনিধি বানাতেন তাহলে কাকে নিযুক্ত করিতেন? আয়িশা [রাদি.] বললেনঃ আবু বকরকে। জিজ্ঞাসা করা হল, আবু বকররের পর কাকে? বললেনঃ উমরকে। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হল, উমারের পর কাকে? তিনি বলিলেন আবু উবাইদাহ ইবনিল জাররাহকে- এটুকু বলেই তিনি সমাপ্ত করিলেন।

[ই.ফা.৫৯৬২, ই,সে ৬০০১]

৬০৭৩. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক মহিলা রাসুলের [সাঃআঃ] নিকট কিছু চাইলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে অন্য এক সময় আসার জন্য বলিলেন। মহিলাটি বলিল, যদি আমি এসে আপনাকে আর না পাই তবে রাবী বলেন, আমার পিতা বলেছেন, [মহিলাটি মৃত্যুর ব্যাপারেই বলেছিলেন] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ যদি আমাকে না পাও তবে আবু বাকর-এর নিকট এসো।

[ই.ফা.৫৯৬৩, ই,সে ৬০০২]

৬০৭৪. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তার পিতা মুতইম তাকে বলেছেন যে, একজন স্ত্রী লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে তাকে কিছু বলিলেন, তিনি মহিলাটিকে আব্বাদ ইবনি মূসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর হাদীসের হুবহু আদেশ করিলেন।

[ই.ফা.৫৯৬৪, ই,সে ৬০০৩]

৬০৭৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে তাহাঁর রোগ শয্যায় বললেনঃ তোমার আব্বা ও ভাইকে তুমি আমার কাছে ডাকো। আমি একটা পত্র লিখে দেই। কারণ আমি আশঙ্কা করছি যে, কোন উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি আকাঙ্ক্ষা পোষণ করিবে, আর কেউ দাবী করে বসবে যে, আমিই হকদার। অথচ আবু বকর ব্যতীত ভিন্ন কাউকে আল্লাহ তায়ালা মেনে নিবেন না এবং মুসলিমরাও মেনে নিবে না।

[ই.ফা.৫৯৬৫, ই,সে ৬০০৪]

৬০৭৬.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ তোমাদের মাঝে কে সিয়াম পালনকারী? আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, আমি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ তোমাদের মাঝে কে একটা জানাজাকে অনুসরণ করেছ? আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, আমি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের মাঝে কে একজন মিসকিনকে আজ খাবার দিয়েছ? আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, আমি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ তোমাদের মাঝে কে একজন অসুস্থকে দেখিতে গিয়েছ? আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, আমি। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যার মধ্যে এ কাজগুলোর সংমিশ্রন ঘটেছে সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।

[ই.ফা.৫৯৬৬, ই,সে ৬০০৫]

৬০৭৭.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জনৈক লোক পিঠে বোঝা দিয়ে একটি গাভীকে হাঁকাচ্ছিল। গাভীটি ব্যক্তিটির দিকে দৃষ্টিপাত করে বললঃ আমাকে তো এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি, আমার সৃষ্টি তো হালচাষ করার জন্য। লোকেরা বিস্ময়কর ও ভীত হয়ে বলে উঠল, সুবহানআল্লাহ! গাভী কথা বলে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এটা আমি বিশ্বাস করি এবং আবু বাকর, উমরও বিশ্বাস করে।

আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক রাখাল ছাগল চরাচ্ছিল। এমন সময় একটি নেকড়ে এসে একটা ছাগল কেড়ে নিয়ে গেলে রাখাল নেকড়ের কবল থেকে ছাগলটিকে মুক্ত করিল। সে সময় নেকড়ে এসে রাখালটির দিকে তাকিয়ে বলিল, যেদিন তুমি ব্যতীত আর কোন রাখাল থাকব না, সেদিন কে বকরীগুলোকে মুক্ত করিবে? লোকেরা বলে উঠল, সুবহানাল্লাহ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি, আবু বাকর এবং উমর এ বিষয়টি বিশ্বাস করি।

[ই.ফা.৫৯৬৭, ই,সে ৬০০৬]

৬০৭৮. আবদুল মালিক ইবনি শুআয়ব ইবনি লায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … এ সূত্রে ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

হাদীসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন, যাতে রাখাল ও ছাগলের ঘটনা রয়েছে, তবে গাভীর ব্যাপারটি তিনি বর্ণনা করেননি।

[ই.ফা.৫৯৬৮, ই,সে৬০০৭]

৬০৭৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে যূহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে ইউনুস বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। তাঁদের হাদীসে একই সঙ্গে গাভী ও ছাগলের কাহিনী আছে। তাদের উভয়ের বর্নিত হাদীসে রসূলুল্লাহ্ বলেছেনঃ এ বিষয়টি আমি, আবু বাকর এবং উমর বিশ্বাস করি। তাঁরা কেউই তখন সেখানে ছিলেন না।

[ই.ফা.৫৯৬৯, ই,সে ৬০০৮]

৬০৮০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অবিকল রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

[ই.ফা.৫৯৭০, ই,সে ৬০০৯]

Comments

One response to “আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.]-এর ফযিলত]”

Leave a Reply