আবু দাউদ শরীফ বাংলা pdf – কর, ফাই ও প্রশাসক অধ্যায়
আবু দাউদ শরীফ বাংলা pdf – কর, ফাই ও প্রশাসক অধ্যায় >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ২০, অনুচ্ছেদঃ ১০-২১=১২টি
অনুচ্ছেদ-১০ঃ সরকারী কর্মচারীদের রেশন ব্যবস্থা করা
অনুচ্ছেদ -১১ঃ সরকারী কর্মচারীদের উপটৌকন গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-১২ঃ যাকাতের মাল আত্নসাৎ করা
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ নাগরিকদের প্রয়োজনকালে ইমামের দায়িত্ব এবং তাহাদের থেকে তার বিচ্ছিন্ন থাকা
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ ফাইলব্ধ মাল বন্টন করা
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ মুসলিমদের সন্তানদের খোরাকী প্রদান করা
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ কত বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করা যায়
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ শেষ যামানায় অসৎ উদ্দেশ্যে হাদিয়া প্রদান
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ দান প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা করা
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ গনীমাতের মালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বিশেষ অংশ [সাফী]
অনুচ্ছেদ¬-২০ঃ নাবী [সাঃআঃ] গনিমতের মাল থেকে যে এক-পঞ্চমাংশ নিতেন তা কোথায় ব্যয় করিতেন এবং নিকটাত্মীয়দের অংশ সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২১ঃ গনীমাতের মালে সেনাপতির অংশ
অনুচ্ছেদ-১০ঃ সরকারী কর্মচারীদের রেশন ব্যবস্থা করা
২৯৪৩. বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী সাঃআঃ বলেনঃ আমরা কাউকে সরকারী পদে নিযুক্ত করলে তার আহার ব্যবস্থাও আমার দায়িত্বে। পরে সে অতিরিক্ত কিছু নিলে তবে তা আত্মসাৎ হিসাবে গণ্য হইবে।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৪৪. ইবনিল সাঈদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার [রাদি.] আমাকে যাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত করিলেন। আমি কাজ সমাপ্ত করলে তিনি আমাকে বেতন প্রদানের নির্দেশ দেন। আমি বলিলাম, আমি আল্লাহর জন্যই এ কাজ করেছি। তিনি বলিলেন, যা দেয়া হচ্ছে তা নাও। আমিও রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর সময়ে সরকারী দায়িত্বে ছিলাম। তিনি আমাকে পারিশ্রমিক প্রদান করেছেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৪৫. আল-মুসতাওরিদ ইবনি শাদ্দাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী সাঃআঃ-কে বলিতে শুনেছিঃ যে আমাদের কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছে সে যেন [সরকারী খরচে] একজন স্ত্রী সংগ্রহ করে। খাদেম না থাকলে সে যেন একটি খাদেম সংগ্রহ করে এবং বাসস্থান না থাকলে সে যেন একটি বাসস্থান সংগ্রহ করে। যে ব্যক্তি এর অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করিবে সে প্রতারক বা চোর গণ্য হইবে।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ -১১ঃ সরকারী কর্মচারীদের উপটৌকন গ্রহণ
২৯৪৬. আবু হুমাইদ আস-সাঈদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী সাঃআঃ আয্দ গোত্রের এক লোককে যাকাত আদায়কারী নিয়োগ করেন। তার নাম ইবনিল লুতবিয়্যাহ। তবে ইবনিস সারহ বলিয়াছেন তার নাম ইবনিল উতবিয়্যাহ। সে কর্মস্থল হইতে মাদীনাহ্তে প্রত্যাবর্তন করে রসূলুল্লাহকে বললো, এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে উপঢৌকন দেয়া হয়েছে। নাবী সাঃআঃ মিম্বারে দাঁড়িয়ে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করে বলিলেনঃ কর্মচারীর কি হলো! আমরা তাহাকে দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করি। আর সে ফিরে এসে বলে, এটা আপনাদের আর এটা আমাকে হাদিয়া দেয়া হয়েছে। সে তার পিতা-মাতার ঘরে বসে থেকে দেখুক তাহাকে কেউ উপঢৌকন দেয় কিনা? তোমাদের মধ্যকার যে-ই এভাবে কোন কিছু গ্রহণ করিবে সে তা নিয়ে ক্বিয়ামাতের দিন উপস্থিত হইবে। যদি সেটা উট, গাভী কিংবা বকরী হয়, তা চিৎকার করিবে। অতঃপর তিনি তাহাঁর দু হাত এতোটা উঁচু করেন যে, আমরা তার বগলের শুভ্রতা দেখলাম। তিনি বলিলেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২ঃ যাকাতের মাল আত্নসাৎ করা
২৯৪৭. আবু মাসউদ আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাকে যাকাত আদায়ের জন্য নিয়োগ দিলেন। তিনি বলিলেনঃ আবু মাসউদ যাও। তবে এমনটি যেন না হয় যে, ক্বিয়ামাতের দিন তুমি আত্নসাৎ করা যাকাতের উট পিঠে বহন করে উপস্হিত হইবে আর তা চিৎকার করিতে থাকিবে। এমনটি হলে আমি তোমার কোন কাজে আসবো না। আবু মাসউদ [রাদি.] বলেন, তবে আমি এ দায়িত্ব গ্রহন করবো না। তিনি বলিলেনঃ আমিও তোমাকে চাপ প্রয়োগ করবো না।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ নাগরিকদের প্রয়োজনকালে ইমামের দায়িত্ব এবং তাহাদের থেকে তার বিচ্ছিন্ন থাকা
২৯৪৮. আবু মারইয়াম আল-আযদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি মুআবিয়াহ [রাদি.] এর নিকট গেলে তিনি বলেন, হে অমুক, আমার নিকট তোমার আগমন সুস্বাগতম! এটা আরবদের বাকরীতি। আমি বলিলাম, আমি একটি হাদিস শুনিয়াছি যা আপনাকে জানাবো। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে মুসলিমদের কোন দায়িত্বে নিয়োগ করলে যদি সে তাহাদের প্রয়োজন পূরণ ও অভাবের সময় দূরে আড়ালে থাকে তখন মহান আল্লাহও তার প্রয়োজন পূরণ ও অভাব-অনটন দূর করা হইতে দূরে থাকিবেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর মুআবিয়াহ [রাদি.] জনসাধারণের প্রয়োজন পূরণের জন্য এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৪৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি তোমাদেরকে আমার ইচ্ছামত কোন জিনিস দেই না এবং আমার ইচ্ছামত তোমাদেরকে তা থেকে বঞ্চিত করি না। আমি তো কেবল কোষাধ্যক্ষ বা বন্টনকারী। আমাকে যেখানে ব্যয়ের নির্দেশ দেয়া হয় সেখানেই ব্যয় করি।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৫০. মালিক ইবনি আওস ইবনিল হাদাসান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] ফাই সম্পর্কে আলোচনা করিতে গিয়ে বলেন, ফাই প্রাপ্তির বিষয়ে আমি তোমাদের চাইতে অগ্রাধিকারী নই এবং এ বিষয়ে আমাদের কেউই কারোর চাইতে অগ্রাধিকারী নয়। বরং মহান আল্লাহর কিতাব ও তার রাসূলের পদ্ধতি মোতাবেক আমরা নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছি। সুতরাং ব্যক্তি ও তার প্রাচীনত্ব, ব্যক্তি ও তার বীরত্ব, ব্যক্তি ও তার সন্তান এবং ব্যক্তি ও তার প্রয়োজন এসব বিবেচনা করে তা বন্টন হইবে।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ হাসান মাওকুফ
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ ফাইলব্ধ মাল বন্টন করা
২৯৫১. যায়িদ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] মুআবিয়াহ [রাদি.] এর নিকট উপস্থিত হলেন। মুআবিয়াহ [রাদি.] বলিলেন, হে আবু আবদুর রহমান! আপনার প্রয়োজন বলুন। তিনি বলিলেন, আযাদকৃত গোলামদের ভাগ প্রদানের ব্যবস্থা করুন। কেননা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি, তাহাঁর কাছে ফাইলব্ধ সম্পদ এলে প্রথমে আযাদকৃত গোলামদের অংশ দিতেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৯৫২. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট একটি আংটির থলে আনা হলে তিনি দাসত্বমুক্ত নারী ও বাঁদীদের মধ্যে তা বন্টন করেন। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, আমার পিতা [রাদি.] দাসত্বমুক্ত পুরুষ লোক ও ক্রীতদাসদের মাঝে ফাই বণ্টন করে দিতেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৫৩. আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে ফাইলব্ধ সম্পদ আসতো তিনি ঐদিনই তা বন্টন করিতেন। তিনি বিবাহিতদের দুভাগ এবং অবিবাহিতদের এক ভাগ দিতেন। ইবনিল মুসাফফারের বর্ণনায় রয়েছে, আমাদেরকে ডাকা হলো, আর আমাকে আম্মারের পূর্বে ডাকা হলো। আমাকে ডেকে তিনি দুই ভাগ দিলেন। কেননা আমার পরিবার ছিল। আমার পর আম্মার ইবনি ইয়াসিরের ডাক ডাকা হলো। [অবিবাহিত বলে] তাহাকে এক ভাগ দেয়া হলো।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ মুসলিমদের সন্তানদের খোরাকী প্রদান করা
২৯৫৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ আমি মুমিনদের পক্ষে তাহাদের নিজেদের চেয়ে অধিক নিকটবর্তী। কেউ সম্পদ রেখে গেলে তা তার পরিজনের জন্য। কেউ ঋন অথবা পোষ্য রেখে গেলে তার দায়দায়িত্ব আমার উপর।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৫৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কেউ সম্পদ রেখে গেলে সেটা তার ওয়ারিসদের জন্য। আর কেউ অসহায় সন্তান রেখে গেলে তা আমার যিম্মায়।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৫৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ আমি প্রত্যেক মুমিনের পক্ষে তার নিজের চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। কেউ ঋন রেখে মারা গেলে তা পরিশোধের দায়িত্ব আমার। আর কেউ সম্পদ রেখে গেলে তা তার ওয়ারিসদের জন্য।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ কত বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করা যায়
২৯৫৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাহাকে উহুদ যুদ্ধের দিন নাবী [সাঃআঃ] এর সম্মুখে উপস্থিত করা হলো। তখন তার বয়স চৌদ্দ বছর। তিনি তাহাকে যুদ্ধে অংশ গ্রহণের অনুমতি দেননি। অতঃপর খন্দকের যুদ্ধের সময় পনের বছর বয়সে তাহাকে আবারো তাহাঁর সামনে পেশ করা হলে তিনি তাহাকে অনুমতি দিলেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ শেষ যামানায় অসৎ উদ্দেশ্যে হাদিয়া প্রদান
২৯৫৮. সুলাইম ইবনি মুতাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার কাছে আমার পিতা মুতাইর আলোচনা করেছেন যে, তিনি হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। তিনি আস-সুয়াইদাহ নামক জায়গাতে পৌছলে এক লোক ঔষধের খোঁজে তার কাছে এলো। সে বললো, আমাকে এমন এক ব্যক্তি অবহিত করেছেন, যিনি বিদায় হাজ্জে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে শুনেছেন। এ সময় তিনি লোকদের সমাবেশ নসীহত করছিলেন। তিনি তাহাদেরকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করছিলেন। তিনি বলেছিলেনঃ হে জনগণ! উপঢৌকন যদি উপঢৌকনের পর্যায়ে থাকে তবেই তা গ্রহন করো। যখন কুরাইশরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হইবে, তখন দান কর্জে পরিণত হইবে, কাজেই তোমরা তা পরিত্যাগ করিবে।
দুর্বলঃ তাখরীজ মুশকিলাতুল ফিক্বর [৫]। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৫৯. সুলাইম ইবনি মুতাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে বলিতে শুনিয়াছি, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বিদায় হাজ্জের ভাষণে বলিতে শুনেছিঃ তিনি লোকদেরকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার পর বলিলেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি? লোকেরা বলিল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ [তিনি পৌছে দিয়েছেন]। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ কুরাইশরা যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বে লিপ্ত হইবে এবং উপঢৌকন ঘুষে পরিণত হইবে তখন তোমরা এ জাতীয় উপঢৌকন গ্রহণ করিবে না। বলা হলো, কে এ ব্যক্তি? লোকেরা বললো, ইনি রাসূলুল্লাহ্র [সাঃআঃ] সাহাবী যুল-যাইয়িদ [রাদি.]।
দুর্বলঃ তাখরীজ মুশকিলাতুল ফিক্বর[৫]। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ দান প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা করা
২৯৬০. আবদুল্লাহ ইবনি কাব ইবনি মালিক আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা আনসারদের সমন্বয়ে গঠিত যোদ্ধাদল তাহাদের দলনেতার সাথে পারস্যে অবস্থান করছিলো। উমার [রাদি.] প্রতি বছর সেনাবাহিনী স্থানান্তর করিতেন। একবার তিনি কোন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে স্থানান্তরের পদক্ষেপ নিতে পারেননি। সময় অতিবাহিত হওয়ায় সীমান্তের সেনাদল ফিরে আসে। এতে উমার [রাদি.] তাহাদের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রদর্শন করে তাহাদেরকে ধমকালেন। অথচ তারা সবাই রসূলুল্লাহর সাঃআঃ সাহাবী ছিলেন। তারা বলিলেন, হে উমার! আপনি আমাদের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েছেন। আপনি আমাদের বিষয়ে রসূলুল্লাহর সাঃআঃ অনুসৃত নীতি পরিহার করেছেন। রসূলুল্লাহর সাঃআঃ নির্দেশ হলোঃ এক বাহিনীর পিছনে অপর বাহিনী প্রেরণ এবং পরবর্তী বাহিনীর তদস্থলে অবস্থান গ্রহণ।
সনদ সহিহ।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৬১. আদী আল-কিন্দীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এক পুত্রের হইতে বর্ণীতঃ
উমার ইবনি আবদুল আযীয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্মচারীদের প্রতি লিখেন, কেউ ফাই-এর খাত সম্পর্কে জানতে চাইলে তাহাকে উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] নির্দেশিত নীতি অনুসরণ করিতে বলবে। কেননা মুমিনগণ তার অনুসৃত নীতিকে সঠিক এবং নাবী [সাঃআঃ] এর বাণীর সাথে সামঞ্জাস্যপূর্ন পেয়েছে। মহান আল্লাহ উমারের [রাদি.] মুখ ও অন্তর দ্বারা সত্যের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি উপঢৌকন প্রবর্তন ও নির্ধারণ করেছেন। জিয্য়া প্রদানের বিনিময়ে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করেছেন। তিনি আরো বলিয়াছেনঃ জিয্য়াতে এক-পঞ্চমাংশ নেই বা এটা গনীমাতের মত নয়।
সনদ দুর্বল। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৬২. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ উমারের মুখে সত্যকে স্থাপন করেছেন। তিনি ন্যায়নিষ্ঠার সাথেই কথা বলিতেন।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [১০৮]। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ গনীমাতের মালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বিশেষ অংশ [সাফী]
২৯৬৩. মালিক ইবনি আওস ইবনিল হাদাসান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা দিনের কিছু অংশ অতিবাহিত হওয়ার পর উমার [রাদি.] আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি তার কাছে গিয়ে দেখি, তিনি খেজুরের ছোবরার তৈরি একটি তক্তপোষের উপর বসে আছেন। আমি তার কাছে উপস্থিত হলে তিনি বলিলেন, হে মালিক! তোমার সম্প্রদায়ের কিছু লোক আমার কাছে এসেছে। আমি কিছু জিনিস তাহাদেরকে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সেগুলো তুমি তাহাদের মধ্যে বন্টন করে দিবে। আমি বলিলাম, আপনি যদি আমি ছাড়া অন্য কাউকে বন্টনের দায়িত্ব দিতেন। তিনি বলিলেন, এটা নাও [বন্টন করো]। খাদেম ইয়ারফা এসে বললো, হে আমীরুল মুমিনীন! উসমান ইবনি আফফান [রাদি.], আব্দুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.], যুবাইর ইবনিল আওয়াম [রাদি.] এবং সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] আপনার সাক্ষাত প্রার্থী। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তাহাদেরকে আসতে বলো। সুতরাং তারা এলেন। ইয়ারফা আবার এসে বললো, হে আমীরুল মুমিনীন! আল-আব্বাস ও আলী [রাদি.] ভিতরে আসার অনুমতি প্রার্থী। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ তাহাদেরকে আসতে দাও। তারাও প্রবেশ করিলেন। আল-আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আমার ও আলীর মাঝে ফায়সালা করুন এবং তাহাদের শান্তির বিধান করুন। মালিক ইবনি আওস [রাদি.] বলেন, আমার মনে হলো; তারা দুজনে এজন্যই উসমান[রাদি.] ও তার সঙ্গীদের এখানে আগে পাঠিয়েছেন। উমার [রাদি.] বলিলেন, ধৈর্য ধরো, শান্ত হও। অতঃপর তিনি উপস্থিত লোকদের লক্ষ্য করে বলিলেন, আমি আপনাদের সেই মহান আল্লাহর শপথ দিচ্ছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন সুপ্রতিষ্ঠিত। আপনাদের কি জানা আছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “আমরা [নাবীগণ] কোন উত্তরাধিকার রেখে যাই না, আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”? তারা সকলে বলিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি আলী ও আল-আব্বাসকে বলিলেন, আপনাদের উভয়কে সেই মহান আল্লাহর শপথ করে জিজ্ঞেস করছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন অস্তিত্বমান! আপনারা কি জানেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “আমাদের [নাবীদের] কোন উত্তরাধীকার নাই, আমারা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”? উমার[রাদি.] বলেন, মহান আল্লাহ রাসূল [সাঃআঃ]-কে বিশেষ বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন, যা অন্য কাউকে দেননি। মহান আল্লাহ বলেন, “আর যা কিছু আল্লাহ তাহাদের [ইহূদীদের] থেকে তাহাঁর রাসূলের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা ঘোড়া ও উট পরিচালিত করোনি। বরং আল্লাহ তাহাঁর রাসূলদেরকে যার উপর ইচ্ছা কর্তৃত্ব দান করেন। আর আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান” [সূরাহ আল-হাশরঃ ৬]। মহান আল্লাহ তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ]-কে বনু নাযীর গোত্রের সম্পদ ফাই হিসেবে দান করেন। আল্লাহর শপথ! এ সম্পদের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কাউকে অগ্রাধিকার দেননি এবং তিনি তোমাদের বাদ দিয়ে অন্য কাউকেও দেননি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ সম্পদ থেকে তাহাঁর পরিবারের এক বছরের ভরণপোষণের পরিমাণ নিতেন এবং অবশিষ্ট সম্পদ মুসলিমদের কল্যাণে ব্যয় করিতেন। উমার [রাদি.] উপস্থিত লোকদেরকে আবার বলিলেন, আমি আপনাদেরকে সেই মহান আল্লাহর শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন সুপ্রতিষ্ঠিত! আপনারা কি এসব জানেন? তারা বলিলেন, হ্যাঁ, অতঃপর তিনি আল-আব্বাস ও আলী [রাদি.]-কে লক্ষ্য করে বলিলেন, আমি আপনাদের উভয়কে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন সুপ্রতিষ্ঠিত! আপনাদের কি এসব বিষয় জানা আছে? তারা উভয়ে বলিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইন্তেকাল করেন, আবু বকর [রাদি.] বলিলেন, এখন আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] প্রতিনিধি। আপনি এবং ইনি [আলী] আবু বাক্রের [রাদি.] নিকট আসলেন। আপনি আপনার ভ্রাতুষ্পুত্রের পরিত্যক্ত সম্পদে আপনার মীরাস দাবি করিলেন এবং ইনি তার শশুরের সম্পদের স্ত্রীর মীরাস দাবি করিলেন। আবু বকর [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “আমাদের [নাবীদের] কোন ওয়ারিস নাই, আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য”। আল্লাহ জানেন, আবু বাক্র ছিলেন সত্যবাদী, কল্যাণকামী, হেদায়াতপ্রাপ্ত ও সত্যের অনুসারী। তিনি উক্ত সম্পদের মুতাওয়াল্লী হন। পরবর্তীতে আবু বাকর [রাদি.] মারা গেলে আমি বলিলাম, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] উত্তরসুরি এবং আবু বাক্রের [রাদি.] প্রতিনিধি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমি এখন এ সম্পদের তত্ত্বাবধায়। আপনি এবং ইনি আমার নিকট এসেছেন। আপনাদেরকে উভয়ের উদ্দেশ্য ও কথা একই। আমি আপনাদের কাছে তা অর্পণ করিতে পারি। শর্ত হলো, আপনারা আল্লাহর ওয়াদা মেনে চলবেন এবং এ সম্পদের ক্ষেত্রে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] অনুসৃত নীতি অনুসরণ করবেন। উক্ত শর্তে সেগুলো আপনারা আমার কাছ থেকে নিয়েছিলেন। পরে আবার আমার নিকট এসেছেন। আপনারা চাচ্ছেন, এখন আমি পূর্বের ফায়সালার বিপরীত ফায়সালা প্রদান করি। আল্লাহর শপথ! ক্বিয়ামাত পর্যন্ত আমি এর বিপরীত করবো না। আপনারা এ দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে এর দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করুন।
আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আল-আব্বাস [রাদি.] ও আলী [রাদি.] এ সম্পত্তির দায়িত্বভার তাহাদের উভয়ের মধ্যে বন্টন করিতে উমারের [রাদি.] নিকট আবেদন করেন। নাবী [সাঃআঃ] এর বাণী, “আমরা যা রাখে যাই তাতে উত্তরাধিকার হইবে না। বরং তা সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য”। এ হাদিস তাহাদের উভয়ের অজানা ছিল না। বরং তারাও সত্যের অনুসন্ধানী ছিলেন, এজন্যই উমার [রাদি.] বলিলেন, আমি এ সম্পদ ভাগ করবো না, বরং একে এর পূর্বাবস্থায়ই রাখবো। সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল[৩৪১]। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৬৪. মালিক ইবনি আওস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বলেন, তারা উভয়ে অর্থাৎ আলী ও আব্বাস [রাদি.] খায়বারের ফাইলব্ধ সম্পদ নিয়ে বিবাদে লিপ্ত হলেন-যা বনু নাযীর গোত্রের কাছ থেকে আল্লাহ তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ]-কে দান করেছিলেন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উমারের [রাদি.] ইচ্ছা ছিল এ সম্পদের উপর বন্টনের নামও নেয়া যাবে না।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৬৫. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বনু নাযীর গোত্রের সম্পদ আল্লাহ তাহাঁর রাসূলকে দান করেন। এগুলো অর্জন করিতে মুসলিমদের ঘোড়া বা উট চালাতে হয়নি। এ সম্পদ রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এর থেকে তিনি তাহাঁর পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণের ব্যয়ভার বহন করিতেন। আর অবশিষ্ট অংশ দিয়ে ঘোড়া ও আল্লাহর পথে যুদ্ধের সরঞ্জাম সংগ্রহ করিতেন। ইবনি আবদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তা ব্যয় করা হতো ঘোড়া ও অস্ত্র সংগ্রহের জন্য।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৬৬. আয-যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার [রাদি.] বলিয়াছেন, [মহান আল্লাহর বাণী], “আর যা কিছু আল্লাহ তাহাদের [ইহুদীদের] থেকে তাহাঁর রাসূলের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা ঘোড়া ও উট পরিচালিত করোনি। বরং আল্লাহ তাহাঁর রাসূলদেরকে যার উপর ইচ্ছা কর্তৃত্ব দান করেন। আর আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান” [সূরাহ আল-হাশরঃ ৬]। আয-যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন উমার [রাদি.] বলিয়াছেন, উরাইনাহ, ফাদাক ইত্যাদি এলাকা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] জন্য নির্দিষ্ট ছিল। যেমন অন্য আয়াতে বলা হয়েছেঃ “যা কিছুই আল্লাহ এ জনপদের লোকদের থেকে তাহাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তা আল্লাহ, রাসূল এবং আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকিন ও পথিকদের জন্য। ঐসব মুহাজিরের জন্যও, যারা নিজেদের ঘর-বাড়ি ও সম্পদ থেকে বিতারিত ও বহিষ্কৃত। এবং যারা এ মুহাজিরদের আসার আগে ঈমান এনে দারুল হিজরাতেই বসবাসকারী ছিল এবং যারা তাহাদের পরে হিজরাত করে তাহাদের কাছে এসেছে [তাহাদের জন্যও]…” [সূরাহ আল-হাশরঃ ৭-১০]। এ আয়াতগুলো সকল লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এমন কোন মুসলিম নেই যার যুদ্ধলব্ধ সম্পদে অধিকার নেই। আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, অথবা বর্ণনাকারী অধিকার এর স্থলে অংশ শব্দ বলিয়াছেন। হ্যাঁ, তোমাদের কতিপয় কৃতদাস এ থেকে বাদ পড়েছে।
সহীহঃ ইরওয়া [৫/৮৩-৮৪]। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৬৭. মালিক ইবনি আওস ইবনিল হাদাসান [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার [রাদি.] নিজের বক্তব্যের অনুকূলে যুক্তি পেশ করে বলিলেন, কেবলমাত্র রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] জন্য ফাই-এর সম্পদে তিনটি বিশষ অংশ ছিলঃ বনু নাযীর, খায়বার ও ফাদাক। বনু নাযীর এলাকা থেকে প্রাপ্ত আয় দৈনন্দিনের প্রয়োজন পূরণে ব্যয় করা হতো। ফাদাক থেকে অর্জিত আয় পথিকদের জন্য ব্যয় করা হতো। খায়বার এলাকার আয়কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিন ভাগে ভাগ করেছেন। দুই অংশ মুসলিমদের সার্বিক কল্যাণে ব্যয় করা হতো এবং অপর অংশ দ্বারা তাহাঁর পরিবারের ব্যয়ভার বহন করা হতো। আর অবশিষ্ট অংশ গরীব মুহাজিরদের মাঝে বন্টন করা হতো।
সনদ হাসানঃ অনুরূপ আসছে সামনে হা/০৯৭৭।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৯৬৮. নাবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি উরওয়াহ ইবনিয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে জানান যে, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] মেয়ে ফাত্বিমাহ [রাদি.] আবু বাক্র সিদ্দীকের [রাদি.] নিকট লোক পাঠালেন। তিনি তার কাছে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] পরিত্যক্ত সম্পদে তার ওয়ারিসীস্বত্ব দাবি করিলেন। উক্ত সম্পদ আল্লাহ তাহাঁর রাসূলকে মদিনায় ও ফাদাকে ফাই হিসাবে এবং খায়বারে গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ হিসাবে দান করেন। আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “আমাদের কোন ওয়ারিস নাই, আমাদের পরিত্যক্ত জিনিস সদাক্বাহ গণ্য”। মুহাম্মদ [সাঃআঃ] এর পরিবার এ সম্পদ থেকে কেবল ভরণপোষণের পরিমাণ গ্রহন করিবে। আল্লাহর শপথ! রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] জীবদ্দশায় তাহাঁর এ সদাক্বাহর যে বৈশিষ্ট ছিল আমি তার কিছুমাত্র পরিবর্তন করবো না। এ সম্পদের ব্যাপারে আমি ঐ নীতিই অনুসরণ করবো যা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] করেছেন। আবু বাকর [রাদি.] উক্ত সম্পদের অংশ ফাত্বিমাহর [রাদি.] নিকট হস্তান্তর করিতে অসম্মতি জানান।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৬৯. উরওয়াহ ইবনিয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী আয়িশাহ [রাদি.] তাহাকে এ হাদিসটি অবহিত করেন। তিনি বলেন, ফাত্বিমাহ [রাদি.] রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] মাদীনাহয় পরিত্যক্ত সদাক্বাহ, ফাদাকের ফাই ও খায়বারের এক-পঞ্চমাংশ সম্পদের নিজের উত্তরাধিকার দাবি করেন। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “আমাদের কোন ওয়ারিস নাই, আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”। আল্লাহর দেয়া এ সম্পদ থেকে মুহাম্মদ সাঃআঃ]—এর পরিবার তাহাদের ভরণপোষণের পরিমাণ গ্রহণ করিবে।
সহীহঃ সহিহাহ [০০৩৮]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৭০. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
আয়িশাহ [রাদি.] তাহাকে এ হাদিস অবহিত করেন। উরওয়াহ এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, আবু বাকর [রাদি.] ফাত্বিমাহ [রাদি.]-কে এ সম্পদের অংশ দিতে অসম্মতি জানালেন। তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কোন নীতিই বর্জন করবো না। তিনি যেটা যেভাবে করেছেন আমি ঠিক সেভাবেই তা করবো। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, আমি তাহাঁর হুকুমের সামান্য ব্যতিক্রম করলে আমি বাঁকা পথে চলে যাবো। বর্ণনাকারী বলেন, মাদীনাহইতে অবস্থিত নাবী [সাঃআঃ] এর সদাক্বাহর সম্পত্তি উমার [রাদি.] আলী ও আব্বাসের [রাদি.] কাছে অর্পণ করিলেন। পরে আলী [রাদি.] একাই তা দখল করে নেন। খায়বার ও ফাদাকের সম্পত্তি উমার [রাদি.] নিজের তত্ত্বাবধানে রাখেন। তিনি বলিলেন, এ দুটি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সদাক্বাহর মাল। তাহাঁর প্রয়োজন পুরণের জন্য এটি খরচ হতো। তিনি এ সম্পদ রাষ্ট্রপ্রাধানের তত্ত্বাবধানে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, ঐ সময় পর্যন্ত তা এভাবেই ছিল।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৭১. আয-যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর বাণীঃ “তা অর্জনের জন্য তোমরা ঘোড়া বা উট দৌঁড়াওনি……” এ সম্পর্কে বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ফাদাক এবং আরেকটি গ্রামের লোকদের সাথে সন্ধি করেন। [যুহরী] গ্রামের নাম উল্লেখ করলেও আমি [মামার] তা স্মরণ রাখিনি। তিনি এ সময় আরেকটি জনপদ অবরোধ করেন। তারা নাবী [সাঃআঃ]-কে সন্ধির প্রস্তাব করে। মহান আল্লাহ বলিলেনঃ “তা অর্জনের জন্য তোমরা ঘোড়া বা উট হ্যাঁকাওনি”। অর্থাৎ তা বিনা যুদ্ধে অর্জিত। যুহুরী বলেন, বনু নাযীর গোত্রের এলাকাও নাবী [সাঃআঃ] এর ইচ্ছাধীন ছিল। তারা এ এলাকাটি বল প্রয়োগে জয় করেননি, বরং জয় করেছেন সন্ধির মাধ্যমে। নাবী [সাঃআঃ] এ সম্পদ মুজাহিরদের মাঝে বন্টন করেন এবং আনসারদের এ থেকে কিছুই দেননি। অব্যশ্য দুজনকে দিয়েছেন। কারণ তাহাদের খুবই প্রয়োজন ছিল।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৭২. আল-মুগীরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যখন উমার ইবনি আব্দুল আযীযকে [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] খলীফাহ নিযুক্ত করা হলে তিনি মারওয়ানের পুত্রদেরকে ডেকে একত্রে করে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফাদাকের সম্পদের অধিকারী ছিলেন। এর থেকে তিনি তাহাঁর পরিবারের ভরণপোষণ করিতেন, গরীবদের সাহায্য করিতেন, হাশিম গোত্রের নাবালক শিশুদের দান করিতেন এবং তাহাদের বিধবাদের বিবাহে খরচ করিতেন। তাহাঁর কন্যা ফাত্বিমাহ [রাদি.] তাহাঁর নিকট এ সম্পদ চাইলে তিনি তা দিতে অসম্মতি জানান। রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] জীবদ্দশায় তাহাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তা এভাবেই রয়ে যায়। পরে আবু বকর [রাদি.] খলিফাহ হলে তিনি তার জীবদ্দশায় এ সম্পদের ব্যাপারে নাবী [সাঃআঃ] এর নীতি অনুসরন করিলেন। উমারও [রাদি.] খলীফাহ হওয়ার পর মৃত্যুর পর্যন্ত উভয় পূর্বসূরীর নীতি অনুসরণ করিলেন। অতঃপর মারওয়ান এ সম্পদ জায়গীর হিসাবে দখল করেন। এখন উমার ইবনি আবদুল আযীয[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর মালিক। উমার ইবনি আবদুল আযীয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করছি, নাবী [সাঃআঃ] যে সম্পদ ফাত্বিমাহকে[রাদি.] দেননি তা আমার জন্য কীভাবে বৈধ হইবে! এতে আমার কোন অধিকার নাই। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি, আমি অবশ্যই এ সম্পদ ঐ অবস্থায় নিব যেরূপ রসূলুল্লাহর[সাঃআঃ] যুগে ছিল।
আবু দাউদ[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উমার ইবনি আবদুল আযীয[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যখন খলীফাহ নিযুক্ত হন তখন ঐ সম্পদের মূল্য ছিল চল্লিশ হাজার দীনার এবং তাহাঁর মৃত্যুর সময় এর মূল্য দাঁড়ায় চার হাজার দীনার। তিনি জীবিত থাকলে এর মূল্য আরো কমতো। দুর্বলঃ মিশকাত [৪০৬৩] আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৭৩. আবুত তুফাইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ফাত্বিমাহ [রাদি.] আবু বাকরের [রাদি.] নিকট এসে নাবী [সাঃআঃ] এর সম্পদে তার মীরাস দাবি করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ কোন নাবীকে জীবন ধারণের ব্যবস্থা করে দিলে তাহাঁর পরবর্তীতে তাহাঁর স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি এর হকদার।
হাসানঃ ইরওয়া[১২৪১]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৯৭৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার ওয়ারিসগণ আমার পরিত্যক্ত একটি দীনারও বন্টন করিবে না। আমার স্ত্রীদের ভরণপোষণ এবং শ্রমিকদের বেতন দেয়ার পর যা থাকিবে তা সদাক্বাহ গণ্য হইবে। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার কর্মচারী অর্থাৎ কৃষি শ্রমিক।
সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল[৩৪০]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৭৫. আবুল বাখতারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এক লোকের নিকট একটি হাদিস শুনি, তা আমার পছন্দ হয়। আমি বলিলাম, আমাকে তা লিখে দিন। তিনি তা পরিষ্কারভাবে লিখে নিয়ে আসলেনঃ আব্বাস [রাদি.] ও আলী [রাদি.] উমারের [রাদি.] নিকট গেলেন। তখন তার কাছে ত্বালহা [রাদি.], যুবাইর [রাদি.], সাদ [রাদি.] ও আবদুর রহমান [রাদি.] উপস্থিত ছিলেন। আব্বাস ও আলী বিবাদে লিপ্ত ছিলেন। ত্বালহা [রাদি.], যুবাইর [রাদি.], আবদুর রহমান [রাদি.] ও সাদ [রাদি.]-কে উমার [রাদি.] বলিলেন, আপনারা কি জানেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “নাবী [সাঃআঃ] এর সম্পদ সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য, কেবলমাত্র তাহাঁর পরিবারের ভরণপোষনের জন্য যতটুকু ব্যয় হয় তা ব্যতীত। আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নাই” তারা বলিলেন, হ্যাঁ জানি। উমার [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সম্পদ থেকে নিজ পরিবারের জন্য খরচ করিতেন এবং বাকী অংশ দান করিতেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] ইন্তেকাল করিলেন। আবু বাকর[রাদি.] দুই বছর তাহাঁর সম্পত্তির মোতাওয়াল্লী থাকলেন রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] ঐ সম্পত্তির আয় যেসব খাতে ব্যয় করিতেন, আবু বাকরও তাই করিলেন। আবুল বাখতারী হাদিসের অংশ বিশেষ মালিক ইবনি আওস[রাদি.] হইতে বর্ণনা করেন।
সহীহঃ সহিহাহ[২০৩৮]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৭৬. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] ইন্তেকালের পর তাহাঁর স্ত্রীগণ সিদ্ধান্ত নিলেন, উস্মান ইবনি আফফানকে [রাদি.] আবু বাকর সিদ্দীকের [রাদি.] নিকট পাঠিয়ে তার মাধ্যমে নাবী [সাঃআঃ] এর পরিত্যক্ত সম্পদে তাহাদের এক-অষ্টমাংশ ওয়ারিসী স্বত্ব দাবি করবেন। আয়িশাহ[রাদি.] তাহাদেরকে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি বলেননিঃ “আমাদের [নাবীদের] কোন ওয়ারিস নাই। আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৭৭. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তার সনদ পরম্পরায় অনুরুপ হাদিস বর্ণনা করেন। এতে রয়েছেঃ আমি [আয়িশাহ] বলি, তোমরা কি আল্লাহকে ভয় কর না? তোমরা কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনোনিঃ “আমাদের [নাবীদের] কোন ওয়ারিস নাই। আমরা যা রেখে যাই তা সাদক্বাহ হিসাবে গণ্য। এ সম্পদ মুহাম্মাদের পরিবারের খরচা ও মেহমানদের আপ্যায়নের জন্য। আমার ইন্তেকালের পর যে বেক্তি খলিফাহ হইবে, এ সম্পদ তার তত্তাবধানে থাকিবে”।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ¬-২০ঃ নাবী [সাঃআঃ] গনিমতের মাল থেকে যে এক-পঞ্চমাংশ নিতেন তা কোথায় ব্যয় করিতেন এবং নিকটাত্মীয়দের অংশ সম্পর্কে
২৯৭৮. জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা তিনি এবং উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন সম্পর্কে আলাপ করিতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে আসলেন, যা তিনি হাশিম ও মুত্তালিব বংশের মধ্যে বণ্টন করেছিলেন। আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের ভাই বনু মুত্তালিবের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন করিলেন, আর আমাদের কিছুই দিলেন না। অথচ আপনার সাথে আত্মীয়তার বন্ধনের দিক থেকে তারা এবং আমরা একই পর্যায়ভুক্ত। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিব একই। জুবাইর [রাদি.] বলেন, তিনি বনু আবদে শামস ও বনু নাওফাল বংশীয়দের তা প্রদান করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু বকরও [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর নিকটাত্মীয়দেরকে এক-পঞ্চমাংশ থেকে দেননি, যেভাবে তিনি বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবদেরকে তা দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু বকর [রাদি.]এক-পঞ্চমাংশ বিষয়ে নাবী [সাঃআঃ] এর নীতি অনুসরণ করিতেন। ব্যতিক্রম ছিল, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকটাত্মীয়দেরকে এক-পঞ্চমাংশ থেকে ভাগ দিতেন না, যদিও নাবী [সাঃআঃ] তাহাদেরকে দিতেন। কিন্তু উমার [রাদি.] এবং পরে উসমান [রাদি.] তাহাদেরকে তা থেকে দিয়েছেন।
সহীহঃ ইরওয়া [১২৪২]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৭৯. জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বর্ণিত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবকে যেভাবে গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ থেকে প্রদান করেন, বনু আবদে শামস ও বনু নাওফালকে তা থেকে দেননি। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেভাবে গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন করেছিলেন, আবু বকরও [রাদি.] ঠিক সেভাবেই বণ্টন করেছেন। তবে ব্যতিক্রম ছিল, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার নিকটাত্মীয়দেরকে যেভাবে দিয়েছেন, তিনি তাহাদেরকে [ধনী হওয়ার কারনে] সেভাবে দেননি। কিন্তু উমার [রাদি.] এবং তার পরবর্তী খলিফাহ তাহাদেরকে এক-পঞ্চমাংশ থেকে দিয়েছেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৮০. জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বার বিজয়ের দিন তাহাঁর [সাঃআঃ] বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবের আত্মীয়দের মধ্যে গনীমাত বণ্টন করেন কিন্তু নাওফাল ও আবদে শামস বংশীয়দেরকে দেননি। আমি ও উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] রওয়ানা হয়ে নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বলিলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা হাশিম বংশীয়দের মর্যাদা অস্বীকার করি না। কেননা আল্লাহ আপনাকে এ বংশে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মুত্তালিব গোত্রের ভাইদের জন্য কি করা হলো। তাহাদেরকে গনীমাতের অংশ দিলেন, অথচ আমাদেরকে বঞ্চিত করিলেন। আত্মীয়তার সম্পর্কের দিক থেকে আমরা ও তারা একই পর্যায়ের। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আমরা ও বনু মুত্তালিব না জাহিলিয়াতের যুগে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি, আর না ইসলামী যুগে। আমরা এবং তারা একই। এ বলে নাবী [সাঃআঃ] তার এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের ফাঁকে প্রবেশ করান।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৮১. আস-সুদ্দী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি যিল-কুরবা-এর ব্যখ্যায় বলেন, এখানে নিকটাত্মীয় বলিতে বনু মুত্তালিব লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মাকতু
২৯৮২. ইয়াযীদ ইবনি হুরযুম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আব্দুল্লাহ ইবনিয যুবাইর [রাদি.] বিদ্রোহের বছর হাজ্জ করিতে আসে। তিনি নিকটাত্মীয়ের অংশ জানার জন্য ইবনি আব্বাস [রাদি.]এর নিকট চিঠি বা লোক পাঠান। তিনি লিখলেন, এ বিষয়ে আপনার অভিমত জানাবেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, [আয়াতে নিকটাত্মীয় বলিতে] রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] এর নিকটাত্মীয়দের বুঝানো হয়েছে। তিনি নিজের নিকটাত্মীয়দের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন করেছেন। [খলিফাহ] উমার [রাদি.] আমাদেরকে প্রাপ্য অংশ থেকে কম দিলে আমরা লক্ষ্য করি যে, আমাদের অধিকার খর্ব হয়েছে। কাজেই আমরা তাহাকে তা ফেরত দিলাম এবং তা গ্রহন করিতে অসম্মতি জানালাম।
সহীহঃ নাসায়ী [৪১৩৩]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৮৩. আব্দুর রহমান ইবনি আবু লায়লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আলী [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে এক-পঞ্চমাংশের মোতওয়াল্লী বানান। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বাক্র [রাদি.] এবং উমারের [রাদি.] জীবদ্দশায় এ মাল তার নির্ধারিত খাতে খরচ করিতে থাকি। অতঃপর উমারের [রাদি.] নিকট কিছু সম্পদ এলে উমার আমাকে ডেকে বলিলেন, এগুলো গ্রহন করো। আমি বলিলাম, আমি এগুলো চাই না। পুনরায় তিনি বলিলেন, এগুলো গ্রহন করো, কারন তুমিই এর অধিক হকদার। আমি বলিলাম, আমি এর মুখাপেক্ষী নই। অবশেষে তিনি তা বাইতুল-মালে জমা করিলেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৮৪. আব্দুর রহমান ইবনি আবু লায়লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আলী [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমি, আব্বাস [রাদি.], ফাত্বিমাহ [রাদি.] এবং যায়িদ ইবনি হারিসাহ [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট সমবেত হই। আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসুল! মহান আল্লাহর কিতাবে আমাদের জন্য গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশে যে অংশ নির্ধারিত হয়েছে, আপনি যদি ভাল মনে করেন আপনার জীবদ্দশায়ই আমাকে তার মোতাওয়াল্লী বানান। আমি তা এমনভাবে বণ্টন করবো, আপনার মৃত্যুর পর কেউ যেন আমার সাথে ঝগড়া না করে। আলী [রাদি.] বলেন, তিনি তাই করিলেন। আলী [রাদি.] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ র [সাঃআঃ] জীবদ্দশায় তা বণ্টন করি। অতঃপর আবু বাক্রও [রাদি.] আমাকে এর মোতওয়াল্লী রাখেন এবং উমারের খিলাফতকাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। তার শাসনামলের শেষের বছর প্রচুর সম্পদ আসে। তিনি তা থেকে আমাদের অংশ আলাদা করে তা নিতে আমার নিকট সংবাদ পাঠান। আমি বলিলাম, এ বছর এ সম্পদের অংশ আমাদের দরকার নাই, বরং অন্যান্য মুসলিমদের দরকার আছে। কাজেই তাহাদেরকে দিন। তিনি সেগুলো তাহাদেরকে দিলেন। উমারের পর আর কেউই আমাকে এ সম্পদ নিতে ডাকেনি। উমারের [রাদি.] কাছ থেকে বেরিয়ে এসে আমি আব্বাসের [রাদি.] সাথে সাক্ষাত করি। তিনি বলিলেন, হে আলী! আজ তুমি আমাদেরকে এমন বস্তু থেকে বঞ্চিত করলে, যা আমাদেরকে কোন দিন দেবে না। আব্বাস [রাদি.] খুবই জ্ঞানী লোক ছিলেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৮৫. আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস ইবনি নাওফাল আল-হাশিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল মুত্তালিব ইবনি রবীআহ আল-হারিস ইবনি আবদুল মুত্তালিব তাহাকে জানান যে, তার পিতা রবীআহ ইবনিল হারিস এবং আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] আবদুল মুত্তালিব ইবনি রবীআহ ও ফাদল ইবনি আব্বাসকে বলেন, তোমরা দুজনে রসূলুল্লাহ র [সাঃআঃ] এর নিকট গিয়ে বলো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দেখিতে পাচ্ছেন যে, আমাদের বয়স হয়েছে। আমরা বিবাহ করিতে চাই। হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সকলের চেয়ে অধিক কল্যাণকামী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। আমাদের উভয়ের পিতার সামর্থ্য নেই যে, মোহরানা আদায় করে আমাদের বিবাহ করাবে। হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে সদাক্বাহর কর্মচারী নিয়োগ করুন। অপরাপর কর্মচারীরা আপনাকে যা দেয় আমরাও আপনাকে তাই দিবো এবং সদাক্বাহ থেকে আমরা নির্ধারিত অংশ [বেতন স্বরূপ] পাবো। আবদুল মুত্তালিব ইবনি রবীআহ বলেন, আমরা এ আলোচনায় করছিলাম এমন সময় আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] এসে আমাদের নিকট উপস্থিত হন। তিনি আমাদের বলিলেন, আল্লাহর শপথ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাদের মধ্য হইতে কাউকে সদাক্বাহ বিভাগে নিয়োগ দিবেন না। রবীআহ তাহাকে বলিলেন, এটা আপনি নিজের মত বলছেন। আপনি তো রসূলুল্লাহ র [সাঃআঃ] জামাতা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। আমরা আপনার প্রতি হিংসা রাখি না। একথা শুনামাত্র আলী [রাদি.] তার গায়ের চাঁদর বিছিয়ে তাতে শুয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি হাসানের পিতা যার সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। আল্লাহর শপথ! যে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের পুত্রদ্বয়কে নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট প্রেরন করছো, তারা এতে নিরাশ হয়ে তোমাদের নিকট না ফেরা পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাবো না। আবদুল মুত্তালিব বলেন, আমি ও ফাদল বের হলাম। পৌঁছে দেখি যুহরের সলাত আরম্ভ হচ্ছে। আমরা লোকদের সাথে সালাত আদায় করি। অতঃপর আমি এবং ফাদল জলদি করে নাবী [সাঃআঃ] এর হুজরার দরজার নিকট যাই। তখন তিনি যাইনাব বিনতু জাহশের ঘরে অবস্থান করেছিলেন। আমরা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। ইতিমধ্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এসে আমার ও ফাদলের কান ধরে বলিলেনঃ তোমাদের মতলবটা কি বলতো? এ বলে তিনি ঘরে ঢুকলেন এবং আমাকে ও ফাদলকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। আমরা ভিতরে ঢুকে একে অন্যকে কথা শুরু করিতে বলি। অতঃপর আমি বা ফাদল তাহাঁর কাছে বলিলাম- যেজন্য আমাদের উভয়ের পিতা আমাদের আদেশ করেছেন। আমাদের কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কিছুক্ষন নীরব থাকলেন। তিনি ঘরের ছাদের দিকে তাকালেন এবং দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। মনে হলো তিনি আমাদের কথার জবাব দিবেন না। এমন সময় দেখি, যাইনাব [রাদি.] পর্দার আড়াল থেকে হাতের ইশারায় আমাদেরকে বলিলেন, তাড়াহুড়া করো না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার মাথা নিচু করে আমাদেরকে বলিলেনঃ এ সদাক্বাহ হচ্ছে মানুষের [সম্পদের] আবর্জনা। এটা মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য হালাল নয়। নাওফাল ইবনিল হারিসকে আমার কাছে ডেকে আনো। তাহাকে ডেকে আনা হলে তিনি বলিলেনঃ হে নাওফাল! আবদুল মুত্তালিবকে বিবাহ করাও [তোমার কন্যাকে তার কাছে বিয়ে দাও]। অতঃপর নাওফাল আমাকে বিবাহ করালেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ মাহমিয়্যাহ ইবনি জাযইকে আমার কাছে ডেকে আনো। সে ছিলো যুবাইদ গোত্রীয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে এক-পঞ্চমাংশ আদায়ের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাহমিয়্যাহকে বলিলেনঃ ফাদলকে [তোমার মেয়ের সাথে] বিয়ে দাও। ফলে তিনি তাহাকে বিয়ে দিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাহমিয়্যাহকে বলিলেনঃ উঠো! উভয়ের পক্ষ হইতে এক-পঞ্চমাংশ তহবিল থেকে এতো এতো সম্পদ মোহর বাবদ দিয়ে দাও। ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস আমার নিকট মোহরের পরিমান উল্লেখ করেননি।
সহীহঃ ইরওয়া [৮৭৯]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৮৬. আলী ইবনি আবু ত্বালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন গনীমাত হিসেবে ভাগে একটি মোটাতাজা উষ্ট্রী পাই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেদিন অবশিষ্ট এক-পঞ্চমাংশ হইতে আমাকে আরেকটা মোটাতাজা উষ্ট্রী দেন। তখন আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কন্যা ফাত্বিমাহর সঙ্গে বাসর যাপনের ইচ্ছা করি। এজন্য আমি বাইনুকা গোত্রের এক স্বর্ণকারকে আমার সঙ্গে নিয়ে ইযাখার নামক সুগন্ধি ঘাস আনার মনস্থ করি। ইচ্ছা ছিল ওগুলো স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে আমার বিবাহভোজে কিছুটা সাহায্য হইবে। আমি আমার উষ্ট্রী, হাওদা, ঘাসের জাল, দড়ি ইত্যাদি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। উষ্ট্রী দুটি এক আনসারীর ঘরের পাশে শোয়া ছিল। সব কিছু সংগ্রহ করে ফিরে এসে দেখি আমার উষ্ট্রী দুটির কুঁজ কেটে ফেলা হয়েছে এবং পেট ফেঁড়ে কলিজা বের করা হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করিতে পারলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে এ নিষ্ঠুর কাজ করেছে? লোকেরা বলিল, হামযাহ ইবনি আবদুল মুত্তালিব এ অপকর্ম করেছে। সে আনসারদের কতিপয় মদ্যপায়ীর সাথে এ ঘরে রয়েছে। তাহাকে ও তাহাঁর সঙ্গীদের এক ক্রীতদাসী গান গেয়ে শুনিয়েছে। সে তার গানের মধ্যে বলেছে, সাবধান হে হামযাহ! মোটাতাজা উষ্ট্রীর দিকে লক্ষ্য করো। এতে উত্তেজিত হয়ে তিনি তার তরবারির দিকে ছুটে উষ্ট্রী দুটির কুজ কাটেন এবং পেট ফেড়ে কলিজা বের করেন। আলী [রাদি.] বলেন, আমি সেখান থেকে সোজা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট গিয়ে উপস্থিত হই। তখন তাহাঁর নিকট যায়িদ ইবনি হারিসাহ [রাদি.] উপস্থিত ছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার চেহারা দেখেই বুঝে ফেললেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কী হয়েছে? আলী [রাদি.] বলেন, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার জন্য আজকের দিনের মত দুর্দিন আর কখনো আসেনি। হামযাহ আমার উষ্ট্রী দুটিকে অত্যাচার করেছে। সে এর কুজ কেটেছে এবং পেটের দুপাশ ফেড়ে কলিজা বের করে নিয়েছে। সে এখনও একটি ঘরের মধ্যে মদ্যপায়ীদের সাথে মত্ত রয়েছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর চাঁদর চেয়ে তা গায়ে জড়িয়ে রওয়ানা হলেন। আমি এবং যায়িদ ইবনি হারিসাহ তার অনুসরন করি। হামযাহ যে ঘরে অবস্থান করছিলেন তিনি সেখানে পৌঁছলে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হলে ঘরে ঢুকে তিনি লোকদেরকে মাতাল অবস্থায় পেলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হামযাহকে তাহাঁর কৃতকর্মের জন্য র্ভৎসনা করিতে লাগলেন। তখন হামযাহ ছিলেন নেশায় বিভোর, নেশার কারনে তার চোখ লাল হয়ে ছিলো। তিনি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে তার হাটুদয়ের প্রতি তাকালেন, কিছুক্ষন পর আবার দৃষ্টি সরিয়ে তাহাঁর নাভির দিকে লক্ষ্য করিলেন; পুনরায় দৃষ্টি সরিয়ে তাহাঁর চেহারার দিকে তাকালেন; অতঃপর বলিলেন, তোমরা আমার পিতার গোলাম ছাড়া কিছু নও। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বুঝতে পারলেন, হামযাহ এখন নেশাগ্রস্থ। মাতাল অবস্থায় তার ক্রোধ আরো বাড়তে পারে আশঙ্কায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেখান থেকে ফিরে গেলেন। ফলে আমরাও তার সাথে বেরিয়ে আসি।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৮৭. আল-ফাদল ইবনিল হাসান আদ-দামরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
যুবাইর ইবনি আবদুল মুত্তালিবের [রাদি.] দুই কন্যা উম্মুল হাকাম অথবা দবাআহ [রাদি.] হইতে একজন এ বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে কিছু যুদ্ধবন্দী আসলো। আমি, আমার বোন এবং রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কন্যা ফাত্বিমাহ [রাদি.] তাহাঁর নিকট গিয়ে আমাদের দরিদ্রতার কথা জানিয়ে কিছু যুদ্ধবন্দী আমাদেরকে দেয়ার জন্য হুকুম করিতে আবেদন করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ বদর যুদ্ধে [পিতাহারা] ইয়াতীমগণ তোমাদের চেয়ে অগ্রাধিকার প্রাপ্য। বরং আমি তোমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু বলে দিচ্ছি, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর হইবে। তোমরা প্রত্যেক সলাতের পর ৩৩ বার আল্লাহু আকবার, ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ এবং ১ বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদীর এ তাসবীহ পাঠ করিবে। আইয়াশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ঐ দুই মহিলা ছিলেন নাবী [সাঃআঃ] এর চাচাতো বোন।
সহীহঃ সহিহাহ [১৮৮০]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৮৮. ইবনি আবুদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আলী [রাদি.] আমাকে বলিলেন, আমি কি তোমাকে আমার ও রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কন্যা ফাত্বিমাহর পক্ষ হইতে হাদিস বর্ণনা করবো না? আমি বলিলাম, হ্যাঁ, বলুন। তিনি বলিলেন, তাহাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ফাত্বিমাহ [রাদি.]-ই ছিল তাহাঁর নিকট সর্বাপেক্ষা আদরের। [অথচ] যাঁতা ঘুরানোর কারণে ফাত্বিমাহর হাতে ফোসকা পড়ে গেছে এবং কলসে করে পানি টানার কারণে তার কাঁধে দাগ পড়ে এবং ঘরে ঝাড়ু দেয়ার কারণে তার পরনের কাপড় নোংরা হয়ে যেতো। এক সময় নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে কিছু সংখ্যক খাদেম আসলে আমি ফাত্বিমাহকে বলি, তুমি তোমার পিতার কাছে গিয়ে একটি খাদেম চেয়ে নাও! সেখানে গিয়ে তাহাঁর কাছে লোকেরা বসে কথা বলছে দেখে ফাত্বিমাহ ফিরে আসলো। পরদিন সকালে তিনি ফাত্বিমাহর ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি আমার কাছে কি দরকারে গিয়েছিলে? ফাত্বিমাহ চুপ রইলো। আমি [আলী] বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি বলছি। যাঁতা পিষতে পিষতে তার হাতে ফোসকা পড়ে গেছে, এবং কলসে করে পানি টানার কারণে তার কাঁধে দাগ পড়ে গেছে। আপনার নিকট কিছু সংখ্যক খাদেম আসলে আমি তাহাকে নির্দেশ করি যেন, আপনার কাছে গিয়ে খাদেম চেয়ে নেয়। যাতে তার কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ হে ফাত্বিমাহ! আল্লাহকে ভয় করো, তোমার রব্বের নির্ধারিত ফরয আদায় করো এবং নিজের ঘরের কাজ নিজেই করো। আর যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করিবে। এভাবে একশো পূর্ণ হইবে। এটা তোমার জন্য খাদেমের চেয়েও উত্তম। ফাত্বিমাহ [রাদি.] বলিলেন, আমি আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের প্রতি সন্তুষ্ট।
দুর্বলঃ যঈফাহ [১৭৮৭]। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৮৯. ঈমাম যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আলী ইবনি হুসাইনের কাছ থেকে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি ফাত্বিমাহকে খাদেম দেননি।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৯০. মুজ্জাআহ হইতে বর্ণীতঃ
একদা নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে তার ভাইয়ের রক্তমূল্য চাইতে আসেন। যাকে যুহল গোত্রের সাদূস উপগোত্রের লোকেরা হত্যা করেছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আমি কোন মুশরিকের দিয়্যাত দিলে তোমার ভাইয়ের দিয়্যাত অবশ্যই দিতাম। তবে আমি তোমার জন্য এর বিনিময়ের ব্যবস্থা করছি। নাবী [সাঃআঃ] তার জন্য একশো উট দেয়ার একটা ফরমান লিখে দেন। যা থেকে সে কিছু উট গ্রহন করে। পরবর্তীতে যুহল গোত্রের মুশরিকরা ইসলাম গ্রহণ করে। অতঃপর আবু বাক্রের [রাদি.] খিলাফাতকালে মুজ্জাআহ তার নিকট অবশিষ্ট উট দাবি করে এবং সাথে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] ফরমানও নিয়ে আসে। আবু বকর [রাদি.] ইয়ামেন প্রদেশে ধার্যকৃত সদাক্বাহ থেকে তার জন্য বার হাজার সা খাদ্যশস্য প্রদানের নির্দেশ দেন। চার হাজার সা আটা, চার হাজার সা বার্লি এবং চার হাজার সা খেজুর দিয়ে তা পরিশোধ করা হইবে। মুজ্জাআহকে লিখিত নাবী [সাঃআঃ] এর ফরমানের বিবরণ ছিল এরূপঃ “বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম। এ পত্র নাবী মুহাম্মাদের [সাঃআঃ] পক্ষ হইতে বনূ সুলমাহ গোত্রের মুজ্জাআহ ইবনি মুরারাহর জন্য লিখিত। তার ভাইয়ের রক্তপণের বিনিময়ে আমি তাহাকে একশো উট দিবো। বনু যুহলের মুশরিকদের কাছ থেকে যে গনীমাত পাওয়া যাবে তার এক-পঞ্চমাংশ হইতে সর্বপ্রথম এ দাবি পূরণ করিবে।”
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২১ঃ গনীমাতের মালে সেনাপতির অংশ
২৯৯১. আমির আশ-শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এর জন্য [গনীমাতে] বিশেষ অংশ ছিল। যা সাফী নামে আখ্যায়িত। তিনি ইচ্ছা করলে তা কৃতদাস, বাঁদী, ঘোড়া যাই হোক, গনীমাত থেকে এক-পঞ্চমাংশ পৃথক করার পূর্বেই নিতেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৯২. ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি মুহাম্মাদকে নাবী [সাঃআঃ] এর সাধারণ অংশ ও বিশেষ অংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করলেও মুসলিমদের সাথে তাঁকেও একটি অংশ দেয়া হতো। তাহাঁর বিশেষ অংশ খুমুস বের করার পূর্বেই পৃথক করে রাখা হতো।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৯৩. ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করলে তাহাঁর জন্য বিশেষ অংশ নির্ধারিত থাকতো। তিনি যেখান থেকে ইচ্ছা করিতেন, সেখান থেকে পছন্দমত গ্রহণ করিতেন। সাফিয়্যাহ [রাদি.] এরূপ অংশেই ছিলেন। আর তিনি সশরীরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলে তাহাঁর জন্য সাধারণ একটি অংশ থাকতো কিন্ত সেটা তাহাঁর পছন্দ নির্ভর অংশ ছিলো না।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯৯৪. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাফিয়্যাহ [রাদি.] সাফীর [বিশেষ অংশের] অন্তর্ভুক্ত।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৯৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা খায়বারে আক্রমন করি। মহান আল্লাহ যখন এ দুর্গ জয় করালেন তখন হুয়াইয়ের কন্যা সাফিয়্যাহর [রাদি.] সৌন্দর্যের কথা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে বর্ণনা করা হয়। তিনি সদ্য বিবাহিতা ছিলেন এবং তার স্বামী এ যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে নিজের জন্য পছন্দ করিলেন। অতঃপর তাহাকে নিয়ে সেখান থেকে রওয়ানা হলেন। আমরা সাদ্দুস-সাহবা নামক জায়গাতে পৌঁছলে তিনি মাসিক ঋতু থেকে পবিত্র হন। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] তার সাথে নির্জনবাস করেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৯৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাফিয়্যাহ [রাদি.] প্রথমে দিহ্য়া আল-কালবীর [রাদি.] অংশে ছিলেন। অতঃপর তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর অধীনে আসেন।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [১৯৫৭]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৯৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, দিহ্য়া আল-কালবীর [রাদি.] অংশে একটি সুন্দরী দাসী পড়ে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে সাতটি গোলামের বিনিময়ে ক্রয় করেন। তিনি তাহাকে বধূবেশে সাজানোর জন্য উম্মু সুলাইমের [রাদি.] নিকট সোপর্দ করিলেন। হাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার মনে হয়, নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াই উম্মু সুলাইমের ঘরে অবস্থান করে ইদ্দাত পূর্ণ করিবে।
সহিহ ঃ কিন্তু তার কথা ঃ “আমার মনে হয়,… ” এতে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা ইতিপূর্বে গত হয়েছে যে, সাদ্দুস সাহবা নামক জায়গাতে পৌছলে তিনি পবিত্র হন এবং নাবী [সাঃআঃ] তার সাথে নির্জনবাস করেন। আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৯৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধ শেষে বন্দীদেরকে একত্র করা হলে দিহ্য়া আল-কালবী [রাদি.] এসে বলিলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে যুদ্ধ বন্দীদের মধ্য হইতে একটি বন্দিনী দিন। তিনি বলিলেনঃ যাও, একটি দাসী নিয়ে যাও। তিনি সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াইকে বেছে নিলেন। অপর এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] – কে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াইকে দিহ্য়াকে দিলেন। অথচ তিনি কেবল আপনারই উপযুক্ত। কেননা হুয়াই কন্যা বনু কুরাইযাহ ও বনু নাযীর গোত্রের নেতার কন্যা। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সাফিয়্যাহ সহ দিহ্য়াকে ডেকে আনো। নাবী [সাঃআঃ] সাফিয়্যার দিকে তাকিয়ে দিহ্য়াকে বলিলেনঃ এর বদলে তুমি বন্দীদের মধ্য হইতে অন্য কোন দাসী নাও। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে আযাদ করে বিয়ে করেন।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯৯৯. ইয়াযীদ ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল-মিরবাদ নামক জায়গায় ছিলাম। তখন এলোমেলো চুলবিশিষ্ট এক ব্যক্তি এলো, তার হাতে এক টুকরা লাল রংয়ের চামড়া ছিল। আমরা বলিলাম, তুমি সম্ভবত জংঙ্গলের বাসিন্দা। লোকটি বললো, হাঁ। আমরা বলিলাম, তোমার হাতের লাল চামড়ার টুকরাটি আমাদেরকে দাও। সে আমাদের তা দিলে আমরা সেটির উপরের লেখাগুলো পাঠ করি। তাতে লেখা ছিল ঃ “মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] পক্ষ হইতে বনু যুহাইর ইবনি উক্বাইস গোত্রের লোকদের প্রতি। তোমরা যদি এ সাক্ষ্য প্রদান করো, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র রাসূল, সলাত ক্বায়িম করো, যাকাত দাও এবং গনীমাতের সম্পদ হইতে এক-পঞ্চমাংশ দান করো, তা থেকে নাবী [সাঃআঃ] এর অংশ এবং নেতার অংশ [সাফী] আদায় করো, তাহলে তোমরা আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের পক্ষ হইতে নিরাপত্তা পাবে।” আমরা জিজ্ঞেস করি, এ ফরমান তোমার কাছে কে লিখে পাঠিয়েছে? সে বললো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]।
আবু দাউদ শরীফ বাংলা PDF হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply