আদাম (আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (আঃ) কে প্রদান

আদাম (আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (আঃ) কে প্রদান

আদাম (আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (আঃ) কে প্রদান >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন

অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-৯৫ঃ আদাম (আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (আঃ)  -কে প্রদান

৩৩৬৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তাআলা আদম [আঃ]-কে সৃষ্টি করে তাহাঁর মাঝে রূহ [আত্মা] সঞ্চার করেন সে সময় তাহাঁর হাঁচি আসে এবং তিনি আলহামদু লিল্লাহ বলেন। তিনি আল্লাহ তাআলার অনুমতি নিয়েই তাহাঁর প্রশংসা করেন। তারপর তাহাঁর উদ্দেশে আল্লাহ তাআলা “ইয়ারহামুকাল্লাহ” [তোমার উপর আল্লাহ তাআলায় সদয় হোন] বলেন এবং আরো বলেনঃ হে আদম! তুমি ঐসব ফেরেশতার নিকট যাও যারা সমবেত অবস্থায় ওখানে বসে আছে। অতঃপর তিনি গিয়ে আস-সালামু আলাইকুম বলিলেন। ফেরেশতাগণ জবাবে ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলিলেন। তারপর তিনি তাহাঁর প্রভুর নিকট এলে তিনি বললেনঃ এটাই তোমার ও তোমার সন্তানদের পারস্পরিক অভিবাদন। এবার আল্লাহ তাআলা তাহাঁর দুটি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তাঁকে বললেনঃ দুটি হাতের মাঝে যেটি ইচ্ছা বেছে নাও। তিনি বললেনঃ আমার রবের ডান হাত আমি বেছে নিলাম। আর আমার রবের প্রত্যেক হাতই ডান হাত এবং বারাকাতময়, অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাহাঁর মুষ্টিবদ্ধ হাত খুললে দেখা গেল যে, তাতে আদম [আঃ] এবং তাহাঁর সন্তানরা রয়েছে। আদম [আঃ] বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা! এরা কারা? আল্লাহ তাআলা বললেনঃ এরা তোমার বংশধর। তাহাদের সকলের দুই চক্ষুর মধ্যখানে তাহাদের আয়ুষ্কাল লেখা ছিল। তাহাদের মাঝে একজন অত্যুজ্জ্বল চেহারার ছিল। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! কে এই লোক? তিনি বলেনঃ সে তোমার সন্তান দাঊদ [আঃ]। আমি তার চল্লিশ বছর বয়স নির্ধারণ করেছি। আদম [আঃ] বললেনঃ হে আল্লাহ! তার আয়ুষ্কাল আপনি আরো বাড়িয়ে দিন। তিনি বললেনঃ আমি তার আয়ুষ্কাল এটাই নির্ধারণ করেছি। আদম [আঃ] বললেনঃ হে প্রভু! আমার আয়ুষ্কাল হইতে ষাট বছর আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ তাআলা বললেনঃ এটা তার প্রতি তোমার বদান্যতা। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ অতঃপর আল্লাহ তাআলা যত দিন চাইলেন তিনি জান্নাতে থাকলেন, তারপর তাঁকে সেখান হইতে [পৃথিবীতে] নামানো হল। আদম [আঃ] নিজের বয়সের গণনা করিতে থাকলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আদম [আঃ]-এর নিকট মালাকুল মাউত [মুত্যুদূত] এসে হাযির হলে তিনি তাকে বললেনঃ আমার জন্য ধার্যকৃত বয়স তো হাজার বছর, যথাসময়ের আগেই তুমি এসেছ। মৃত্যুদূত বলিলেন, হ্যাঁ, তবে আপনি আপনার বয়স হইতে ষাট বছর আপনার বংশধর দাঊদ [আঃ]-কে দান করিয়াছেন। আদম [আঃ] তা [ভুলে গিয়ে] অস্বীকার করিলেন। এজন্য তার সন্তানরাও অস্বীকার করে থাকে। আর তিনি ভুলে গিয়েছিলেন তার তার সন্তানরাও ভুলে যায়। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সেদিন হইতেই লিখে রাখা ও সাক্ষী রাখার হুকুম দেয়া হয়।

হাসান সহীহঃ মিশকাত [হাঃ ৪৬৬২], যিলালুল জান্নাহ [হাঃ ২০৪-২০৬]। আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর বরাতে নাবী [সাঃআঃ] হইতে অন্যসূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আর ঐ সূত্রে যাইদ ইবনি আসলাম আবু সালিহ হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে এভাবে উল্লেখ আছে।  এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৩৩৬৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ তাআলা যখন দুনিয়া সৃষ্টি করেন তখন তা দুলতে থাকে। তাই তিনি পর্বতমালা সৃষ্টি করে তাকে দুনিয়ার উপর স্থাপন করেন। ফলে দুনিয়া শান্ত হয়। পর্বতমালার শক্ত কাঠামোতে ফেরেশতাগণ বিস্মিত হয়ে বলেনঃ হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পর্বতমালা হইতেও কঠিন কোন কিছু আছে কি? আল্লাহ তাআলা বলেনঃ হ্যাঁ, লোহা। তাঁরা বললেনঃ হে রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে লোহা হইতেও শক্ত ও মজবুত কোন কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আগুন।তারা বললেনঃ হে প্রতিপালক! “আগুন হইতেও আপনার সৃষ্টির মধ্যে শক্তিমান ও কঠিন অন্য কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, পানি। তাঁরা বললেনঃ প্রভু হে! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পানি হইতেও শক্তিশালী কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, বায়ু। অবশেষে ফেরেশতাগণ বললেনঃ হে প্রতিপালক! বায়ু হইতেও বেশি কঠিন ও শক্তিশালী আপনার সৃষ্টির মধ্যে কিছু আছে কি? আল্লাহ তাআলা বললেনঃ হ্যাঁ, সেই আদম সন্তান, যে ডান হাতে দান-খাইরাত করলে তার বাম হাতের কাছে অজানা থাকে।

যইফ, মিশকাত [১৯২৩], তালীকুর রাগীব [২/৩১] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রে এ হাদীস মারফু হিসেবে জেনেছি।  এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “আদাম (আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (আঃ) কে প্রদান”

Leave a Reply