আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ – ভদ্র আচার ব্যাবহার
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ , এই অধ্যায়ে মোট = ৯১ টি হাদীস (১২৯ – ২১৯) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ৫: ভদ্র আচার ব্যাবহার
৭২. অনুচ্ছেদঃ সৎ-অসৎনির্বিশেষে সকলের সাথে সদাচার।
৭৩. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীমের লালন-পালনকারীর মর্যাদা।
৭৪. অনুচ্ছেদঃ নিজের ইয়াতীম পোষ্যদের লালনকারীর মর্যাদা।
৭৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তান লালন-পালন করে তার মর্যাদা।
৭৬. অনুচ্ছেদঃ যে ঘরে ইয়াতীম আছে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার করা হয় সেই ঘর সর্বোত্তম।
৭৭. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীমের জন্য দয়ার্দ্র পিতৃতুল্য হও।
৭৮. অনুচ্ছেদঃ সন্তানের কারণে যে নারী ধৈর্য ধারণ করেছে এবং পুনর্বিবাহ থেকে বিরত থেকেছে।
৭৯. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীমদের আদব-কায়দা শিক্ষাদান।
৮০. অনুচ্ছেদঃ যার সন্তান মারা গেছে তার মর্যাদা
৮১. অনুচ্ছেদঃ গর্ভপাতে যার সন্তান মারা যায়।
৮২. অনুচ্ছেদঃ [মহানাবী [সাঃআঃ]-এর অন্তিম উপদেশ] উত্তম ব্যবহার।
৮৩. অনুচ্ছেদঃ নীচ ব্যবহার।
৮৪. অনুচ্ছেদঃ বেদুইনের নিকট দাস-দাসী বিক্রয়।
৮৫. অনুচ্ছেদঃ খাদেমের সাথে ক্ষমাসুন্দর ব্যবহার।
৮৬. অনুচ্ছেদঃ ক্রীতদাস চুরির অপরাধ করলে।
৮৭. অনুচ্ছেদঃ খাদেম অপরাধ করলে।
৮৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ক্ষতির আশংকায় খাদেমের নিকট সীলমোহর করে মাল সোপর্দ করে।
৮৯. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সন্দিহান হওয়া থেকে বাঁচার জন্য নিজ খাদেমের নিকট গণনা করে দেয়।
৯০. অনুচ্ছেদঃ খাদেমকে শিষ্টাচার শিক্ষাদান।
৯১. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ তার মুখমণ্ডল বিকৃত করুন- একথা বলো না।
৯২. অনুচ্ছেদঃ মুখমণ্ডলে আঘাত দেয়া পরিহার করিবে।
৯৩. অনুচ্ছেদঃ কেউ তার গোলামকে চপেটাঘাত করলে সে যেন তাকে স্বেচ্ছায় আযাদ করে দেয়।
৯৪. অনুচ্ছেদঃ গোলামের উপর প্রতিশোধ গ্রহণ।
৯৫. অনুচ্ছেদঃ তোমরা যা পরিধান করো দাস-দাসীদেরও তাই পরিধান করাও।
৯৬. অনুচ্ছেদঃ দাস-দাসীদের গালি দেয়া নিষেধ।
৯৭. অনুচ্ছেদঃ লোকে নিজ দাসকে কি সাহায্য করিবে ?
৯৮. অনুচ্ছেদঃ দাসের উপর তার মাধ্যতীত কাজের বোঝা চাপানো নিষেধ।
৯৯. অনুচ্ছেদঃ নিজ গোলাম ও খাদেমের জন্য কোন ব্যক্তির খরচ দানরূপে গণ্য।
১০০. অনুচ্ছেদঃ কেউ তার দাসের সাথে একত্রে আহার করা অপছন্দ করলে।
১০১. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি নিজে যা খাবে তার দাসকেও তা খাওয়াবে।
১০২. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি আহারের সময় তার খাদেমকেও কি তার সাথে বসাবে?
১০৩. অনুচ্ছেদঃ গোলাম তার মালিকের কল্যাণ কামনা করলে।
১০৪. অনুচ্ছেদঃ গোলামও একজন দায়িত্বশীল।
১০৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি গোলাম হওয়া পছন্দ করে।
১০৬. অনুচ্ছেদঃ গোলামকে “আমার দাস” বলে সম্বোধন করিবে না।
১০৭. অনুচ্ছেদঃ গোলাম কি বলবে, ‘আমার মনিব’?
১০৮. অনুচ্ছেদঃ পুরুষলোক তার পরিবার বা সংসারের পৃষ্ঠপোষক।
১০৯. অনুচ্ছেদঃ স্ত্রীলোক পৃষ্ঠপোষক ও পরিচালক।
১১০. অনুচ্ছেদঃ যার সাথে ভালো ব্যবহার করা হয় সে যেন তার উত্তম বিনিময় দেয়।
১১১. অনুচ্ছেদঃ কারো ভালো ব্যবহারের প্রতিদান দেয়া সম্ভব না হলে তার জন্য দোয়া করিবে।
১১২.অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ নয়
১১৩. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তির তার ভাইকে সাহায্য করা।
৭২. অনুচ্ছেদঃ সৎ-অসৎনির্বিশেষে সকলের সাথে সদাচার।
১২৯. মুহাম্মাদ ইবনি আলী ইবনুল হানাফিয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন,
هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ [الرحمن: 60]
“সদ্ব্যবহারের প্রতিদান সদ্ব্যবহার ভিন্ন আর কি হইতে পারে”[৫৫ : ৬০]
শীর্ষক আয়াত পুণ্যবান ও পাপাচারী সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আবু আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আবু উবায়েদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তা হলো সাধারণ নীতি
[বোখারী, মুসলিম, নাসায়ী, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৭৩. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীমের লালন-পালনকারীর মর্যাদা।
১৩০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ বিধবা ও গরীবজনদের জন্য চেষ্টা-সাধনাকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদকারীর এবং যে ব্যক্তি দিনে রোযা রাখে ও রাতে [নফল] নামাযে লিপ্ত থাকে তার সমতুল্য
[বোখারী, মুসলিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ নিজের ইয়াতীম পোষ্যদের লালনকারীর মর্যাদা।
১৩১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক স্ত্রীলোক তার দু’টি কন্যা সন্তানসহ আমার নিকট এসে কিছু প্রার্থনা করে। সে আমার কাছে একটি খেজুর ভিন্ন আর কিছুই পেলো না। আমি সেটি তাকে দান করলাম। সে তা তার কন্যাদ্বয়কে ভাগ করে দিলো। অতঃপর সে উঠে চলে গেলো। নাবী [সাঃআঃ] ঘরে এসে প্রবেশ করলে আমি তাহাঁকে তা বললাম। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি এই কন্যাদের প্রতি সামান্য সদয় ব্যবহার করিবে, তারা তার জন্য দোযখ থেকে অন্তরাল হইবে
[বোখারী, মুসলিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তান লালন-পালন করে তার মর্যাদা।
১৩২. উম্মু সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি এবং ইয়াতীমের ভরণপোষণকারী বেহেশতে এই দুইটি মধ্যমা ও তর্জনী আঙ্গুলের মতো একত্রে থাকবো
[তাবারানি]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩৩. হাসান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
এক ইয়াতীম বালক ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর আহার গ্রহণকালে নিয়মিত উপস্থিত হতো। এক দিন তিনি আহার নিয়ে ডাকলেন এবং ইয়াতীমকে খোঁজ করিলেন, কিন্তু তাকে পাননি। তার আহার গ্রহণ শেষ হলে সে এসে উপস্থিত হলো। ইবনি উমার [রাঃআঃ] খাদ্য নিয়ে ডাকলেন। তখন তাহাদের নিকট খাবার অবশিষ্ট ছিলো না। তার নিকট ছাতু ও মধু আনা হলো। তিনি বলেন, এটা গ্রহণ করো। আল্লাহর শপথ! তোমাকে ধোঁকা দেয়া হচ্ছে না। হাসান [রাহিমাহুল্লাহ] এই হাদিস বর্ণনাকালে বলিতেন, আল্লাহর শপথ! ইবনি উমার [রাঃআঃ] আহার থাকতে তা লুকাননি।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৪. সাহল ইবনি সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি ও ইয়াতীমের ভরণপোষণকারী কিয়ামতের দিন এভাবে একত্রে থাকবো। একথা বলে তিনি তার তর্জনী ও মধ্যমার প্রতি ইংগিত করেন
[বোখারী, আবু দাউদ, তিরমিজী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩৫.আ বু বাকর ইবনি হাফস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] ইয়াতীমকে সঙ্গে না নিয়ে আহার করিতেন না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৬. অনুচ্ছেদঃ যে ঘরে ইয়াতীম আছে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার করা হয় সেই ঘর সর্বোত্তম।
১৩৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানদের ঘরসমূহের মধ্যে সেই ঘর সর্বোত্তম, যেখানে কোন ইয়াতীম আছে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার করা হয়। মুসলমানদের ঘরসমূহের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট সেই ঘর যেখানে কোন ইয়াতীম আছে এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়। আমি এবং ইয়াতীমের ভরণপোষণকারী বেহেশতে এই দুইটির মতো একত্রে থাকবো। এই বলে তিনি তার দুই আঙ্গুলের দিকে ইংগিত করেন
[ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৭৭. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীমের জন্য দয়ার্দ্র পিতৃতুল্য হও।
১৩৭. আবদুর রহমান ইবনি আবযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
দাউদ [আবু দাউদ] বলেছেনঃ ইয়াতীমের জন্য দয়ার্দ্র পিতৃতুল্য হও এবং জেনে রাখো! তুমি যেরূপ বপন করিবে সেইরূপ কর্তন করিবে। প্রাচুর্যের পর দরিদ্রতা কতই না মন্দ! তার চাইতেও মন্দ হলো হেদায়াত লাভের পর পথভ্রষ্টতা। তুমি কোন সঙ্গীর সাথে ওয়াদা করলে তা অবশ্যই পূর্ণ করিবে। নতুবা তাতে তোমার ও তার মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হইবে। এমন বন্ধু থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো, [বিপদে] যাকে স্মরণ করলে সে তোমাকে সাহায্য করিবে না এবং তুমি তাকে ভুলে গেলে সে তোমাকে স্মরণ করিবে না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩৮. হাসান বসরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি এমন মুসলমানদের সাক্ষাত পেয়েছি, যাদের কেউ ভোরে উপনীত হয়ে তার পরিজনকে বলিতেন,
আর-বি.
“হে আমার পরিবার, হে আমার পরিবার! তোমাদের ইয়াতীম, তোমাদের ইয়াতীম। হে আমার পরিবার, হে আমার পরিবার! তোমাদের দরিদ্রজন, তোমাদের দরিদ্রজন। হে আমার পরিবার, হে আমার পরিবার! তোমাদের প্রতিবেশী, তোমাদের প্রতিবেশী। তোমাদের সেই উৎকৃষ্টগণ [সাহাবীগণ] তো চলে গেলেন, আর তোমরা তো দিন দিন অধঃপতিত হচ্ছে । তিনি আরো বলেন, তুমি ইচ্ছা করলে দেখিতে পাবে যে, পাপাচারী তিরিশ হাজার টাকার বিনিময়ে জাহান্নামের গভীরে প্রবেশ করছে। তার কি হলো! আল্লাহ তাকে ধ্বংস করুন। সে আল্লাহর কাছে তার প্রাপ্য অংশ একটি ছাগলের মূল্যে বিকিয়ে দিলো। তুমি ইচ্ছা করলে দেখিতে পাবে যে, সে শয়তানের রাস্তার ইতর অনুসারী। সে নিজ বিবেকের উপদেশও গ্রহণ করে না এবং অন্যের উপদেশেও কর্ণপাত করে না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৯. আসমা ইবনি উবায়েদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি ইবনি সীরীন [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বললাম, আমার কাছে এক ইয়াতীম আছে। তিনি বলেন, তুমি তার সাথে তোমার সন্তানের অনুরূপ ব্যবহার করো এবং তাকে প্রহার করো যে কারণে তুমি তোমার সন্তানকে প্রহার করে থাকো [তার সাথে তোমার সন্তানের অনুরূপ ব্যবহার করিবে]।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৮. অনুচ্ছেদঃ সন্তানের কারণে যে নারী ধৈর্য ধারণ করেছে এবং পুনর্বিবাহ থেকে বিরত থেকেছে।
১৪০. আওফ ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি ও ঝলসানো [বিষন্ন] গালবিশিষ্ট নারী, যার স্বামী মারা গেছে, কিন্তু সে তার সন্তানের কারণে ধৈর্য ধারণ করেছে [পুনর্বিবাহ করেনি] জান্নাতে এই দুই [আঙ্গুল]-এর মত একত্রে বসবাস করবো
[আবু দাউদ, মুসনাদ আবু ইয়ালা]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৭৯. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীমদের আদব-কায়দা শিক্ষাদান।
১৪১. শুমায়সা আতাকিয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আয়েশা [রাঃআঃ]-এর নিকট ইয়াতীমকে আদব-কায়দা শিক্ষা দানের প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলেন, ইয়াতীমকে আমি অবশ্যই আদব-কায়দা শিখাতে প্রহার করি যাবত না সে সটান হয়
[বাযযার]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮০. অনুচ্ছেদঃ যার সন্তান মারা গেছে তার মর্যাদা
১৪২.আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে মুসলমানের তিনটি সন্তান মারা যায় তাকে দোযখের আগুন স্পর্শ করিবে না, অবশ্য শপথ পূর্ণ করার জন্য
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক মহিলা একটি শিশুসহ নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! এর জন্য দোয়া করুন। আমি ইতিমধ্যে তিনটি সন্তানকে দাফন করেছি। তিনি বলেনঃ তুমি তো দোযখের মোকাবিলায় মযবুত প্রতিবন্ধক গড়ে তুলেছো
[মুসলিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪৪. খালিদ আল-আবসী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমার একটি পুত্র সন্তান মারা গেলে আমি অত্যন্ত শোকাহত হলাম। আমি বললাম, হে আবু হুরাইরা! আপনি কি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এমন কিছু শুনেছেন যা দ্বারা আমরা আমাদের মৃতদের মৰ্মবেদনায় সান্তুনা লাভ করিতে পারি? তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের ছোট শিশুরা বেহেশতের পতঙ্গ
[মুসলিম, মুসনাদ আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪৫. জাবের ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যার তিনটি সন্তান মারা গেছে এবং সওয়াবের আশায় ধৈর্য ধারণ করেছে, সে বেহেশতে যাবে। আমরা বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আর দুটি সন্তান? তিনি বলেনঃ এবং দুটিও? আমি [মাহমূদ] জাবের [রাঃআঃ]-কে বললাম, আল্লাহর শপথ! আমার তো মনে হয় আপনারা যদি এক সন্তানের কথাও বলিতেন তবে তিনি তাই বলিতেন। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ আমার ধারণাও তাই
[আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৪৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক মহিলা একটি শিশুসহ নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! এর জন্য দোয়া করুন। আমি ইতিমধ্যে তিনটি সন্তানকে দাফন করেছি। তিনি বলেনঃ তুমি তো দোযখের মোকাবিলায় মযবুত প্রতিবন্ধক গড়ে তুলেছো
[মুসলিম]! আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক মহিলা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা আপনার মজলিসে আসতে পারি না। আপনি আমাদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিন। সেদিন আমরা আপনার নিকট হাযির হবো। তিনি বলেনঃ অমুকের ঘরে তোমরা সমবেত হইবে। তিনি প্রতিশ্রুত স্থানে তাহাদের নিকট এলেন। তিনি তাহাদেরকে যা বলিলেন তার মধ্যে এ কথাও ছিলোঃ তোমাদের মধ্যে যে নারীর তিনটি সন্তান মারা যায় এবং সে তাহাদের দ্বারা সওয়াবের আশা করে, সে জান্নাতে যাবে। এক মহিলা বলেন, আর দুটি? তিনি বলেনঃ দুটি সন্তানের মৃত্যু হলেও
[বোখারী, মুসলিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪৮. উম্মু সুলাইম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি বলেনঃ হে উম্মু সুলাইম! যে দুই মুসলমানের তিনটি সন্তান মারা যায় তাহাদের দু’জনকেই [পিতা-মাতাকে] আল্লাহ বেহেশতে প্রবেশ করাবেন, তাহাদের প্রতি তার দয়ার কল্যাণে। আমি বললাম, দুইজন মারা গেলে? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, দুইটি সন্তান মারা গেলেও।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪৯. সাসাআ ইবনি মুয়াবিয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি আবু যার [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাত করিলেন। আবু যার [রাঃআঃ] একটি মশক জড়িয়ে ধরা অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, হে আবু যার! আপনার সন্তানের কী প্রয়োজন! তিনি বলেন, আমি তোমাকে হাদিস শুনাবো না? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে মুসলমানের তিনটি সন্তান নাবালেগ অবস্থায় মারা যায়, তাহাদের প্রতি তার মায়ার কারণে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে দাসত্বমুক্ত করিবে, মহামহিম আল্লাহ তার প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের বিনিময়ে তার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মুক্তি দিবেন।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫০. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যার তিনটি সন্তান অপ্রাপ্ত বয়সে মারা গেছে আল্লাহ তার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে তাকে এবং তাহাদেরকে অবশ্যই বেহেশতে প্রবেশ করাবেন
[বোখারী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮১. অনুচ্ছেদঃ গর্ভপাতে যার সন্তান মারা যায়।
১৫১. সাহল ইবনুল হানযালিয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তার সন্তানাদি হতো না। তিনি বলেন, ইসলামী যুগে যদি আমার একটি সন্তান গর্ভপাত হয়ে মারা যেতো এবং আমি তাতে সওয়াবের আশায় ধৈর্য ধারণ করতাম, তাহলে আমি তাকে দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু আমার মালিকানাভুক্ত হওয়ার চেয়েও উত্তম বিবেচনা করতাম। ইবনুল হানযালিয়া [রাঃআঃ] ছিলেন বৃক্ষতলে [হুদায়বিয়ায়] বায়আত গ্রহণকারী সাহাবীগণের অন্তর্ভুক্ত।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫২. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যার নিকট নিজ সম্পত্তির চেয়ে তার ওয়ারিসদের সম্পত্তিই অধিক প্রিয়? সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমাদের প্রত্যেকের কাছে তার নিজের সম্পত্তি তার ওয়ারিসদের সম্পত্তির চেয়ে অধিক প্রিয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যেনে রেখো! তোমাদের মধ্য এমন কেউ নাই যার কাছে তার নিজ সম্পত্তি অপেক্ষা তার ওয়ারিসদের সম্পত্তি অধিক প্রিয় নয়। তোমার সম্পত্তি হলো যা তুমি অগ্রিম প্রেরণ করেছো। আর তোমার ওয়ারিসদের সম্পত্তি হলো যা তুমি রেখে দিয়েছে
[বোখারী, নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কাকে নিঃসন্তান বলো? সাহাবীগণ বলেন, যার সন্তান হয় না সে নিঃসন্তান। তিনি বলেনঃ নাসায়ী, বরং নিঃসন্তান হলো যে কোন সন্তান অগ্রে প্রেরণ করেনি অর্থাৎ যার কোন সন্তান মারা যায়নি
[বোখারী, মুসলিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৪.bআবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কাকে মল্লযোদ্ধা বলো? সাহাবীগণ বলেন, লোকেরা যাকে ভূপাতিত করিতে পারে না। তিনি বলেনঃ না, বরং যে ব্যক্তি ক্রোধের সময় আত্মসংবরণ করিতে পারে সে-ই হলো মল্লযোদ্ধা
[মুসলিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮২. অনুচ্ছেদঃ [মহানাবী [সাঃআঃ]-এর অন্তিম উপদেশ] উত্তম ব্যবহার।
১৫৫. আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ]-এর অন্তিম সময় ঘনিয়ে এলে তিনি বলেনঃ হে আলী! আমার নিকট একখানা ফলক নিয়ে আসো। আমি তাতে এমন কিছু লিখে দিবো যাতে আমার উম্মাত পথভ্রষ্ট না হয়। আমার আশঙ্কা যে, হয়তো সে সময় আমি পাবো না। আমি বললাম, নিশ্চয় আমি আমার কাঁধের পাণ্ডুলিপিতে এটা সংরক্ষণ করবো। তখন তাহাঁর মাথা তার কনুই ও আমার দুই বাহুর মাঝখানে ছিল। তিনি নামায, যাকাত এবং তোমাদের দাসদাসী সম্পর্কে ওসিয়াত করেন। তিনি এরূপ বলিতে বলিতে ইন্তেকাল করেন। তিনি তাকে আদেশ দেন এই সাক্ষ্য দেওয়ার জন্যঃ
আর-বি. “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ তাহাঁর বান্দা ও রাসূল” এবং বলেনঃ যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য দিবে, দোযখের জন্য তাকে হারাম করা হইবে
[আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫৬. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা দাওয়াত দানকারীর ডাকে সাড়া দিও, উপহারাদি ফেরত দিও না এবং মুসলমানদেরকে প্রহার করো না
[মুসনাদ আহমাদ, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৭. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ]-এর অন্তিম কথা ছিলঃ নামায! নামায! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করো
[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, মুসনাদ আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৩. অনুচ্ছেদঃ নীচ ব্যবহার।
১৫৮. আবু দারদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি লোকদেরকে বলিতেন, পশু চিকিৎসকগণ পশুদেরকে যেরূপ চিনতে পারে, আমি তোমাদেরকে তার চেয়েও উত্তমরূপে চিনি। আমি তোমাদের মধ্যকার উত্তম ও নিকৃষ্ট লোকদের চিনি। অতএব তোমাদের মধ্যকার উত্তম লোক হলো, যাদের নিকট কল্যাণ আশা করা যায় এবং যাদের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ বোধ করা যায়। আর তোমাদের মধ্যকার মন্দ লোক হলো, যাদের নিকট কল্যাণ আশা করা যায় নাসায়ী, যাদের অনিষ্ট থেকেও নিরাপদ বোধ করা যায় না এবং যাদের প্রতিশ্রুত দাসের মুক্তি দেয়া হয় না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৫৯. আবু উমামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
‘কানুদ’ [অকৃতজ্ঞ] সেই ব্যক্তি যে তার দান-খয়রাত বন্ধ রাখে, জনবিচ্ছিন্ন থাকে এবং নিজের দাসকে মারধর করে।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৬০. হাসান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি তার উটে করে তার গোলামকে কূপ থেকে পানি তুলে আনতে নির্দেশ দিলো। কিন্তু গোলামটি ঘুমিয়ে গেলো। তার মনিব অগ্নিশিখাসহ এসে তা তার মুখের উপর নিক্ষেপ করলো। গোলামটি কূপের মধ্যে ঝাপিয়ে পড়লো। পরদিন সকালে সে উমার [রাঃআঃ]-র নিকট উপস্থিত হলো। তিনি তার মুখে পোড়া দাগ দেখে তৎক্ষণাৎ তাকে দাসত্বমুক্ত ঘোষণা করেন।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৪. অনুচ্ছেদঃ বেদুইনের নিকট দাস-দাসী বিক্রয়।
১৬১. আমরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আয়েশা [রাঃআঃ] তার এক বাঁদীকে তার মৃত্যুর পর মুক্তি প্রদানের কথা ঘোষণা করেন। পরে আয়েশা [রাঃআঃ] অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার ভ্রাতুষ্পুত্ৰগণ যুক্ত [জাঠ] সম্প্রদায়ের এক চিকিৎসকের সাথে তার ব্যাপারে পরামর্শ করেন। সে বললো, আপনারা আমাকে এমন এক মহিলা সম্পর্কে অবিহত করিয়াছেন যাকে তার দাসী যাদু করেছে। আয়েশা [রাঃআঃ]-কে তা অবহিত করা হলো। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তুই কি আমাকে যাদু করেছিস? সে বললো, হাঁ। তিনি বলেন, কেন? কখনও তুই মুক্তি পাবি না। তিনি বলেন, তোমরা তাকে উগ্র মেজাজের অসদাচারী বেদুইনের কাছে বিক্রি করো
[আবু দাউদ, হাকিম]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৫. অনুচ্ছেদঃ খাদেমের সাথে ক্ষমাসুন্দর ব্যবহার।
১৬২. আবু উমামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] দুইটি গোলামসহ আসলেন। এদের একটি আলী [রাঃআঃ]-কে দিয়ে তিনি বলেনঃ তাকে মারধর করো না। কেননা নামাযীকে নির্যাতন করিতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। সে আমাদের নিকট আসার পর থেকে আমি তাকে নামায পড়তে দেখেছি। অপর গোলামটি তিনি আবু যার [রাঃআঃ]-কে দিয়ে বলেনঃ তার সাথে সদয় ব্যবহার করো। তিনি তাকে মুক্ত করে দিলেন। নাবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করলেনঃ সে কি করছে? আবু যার [রাঃআঃ] বলেন, আপনি আমাকে তার সাথে সদয় ব্যবহার করিতে বলেছেন। তাই আমি তাকে দাসত্বমুক্ত করে দিয়েছি
[আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৬৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] মদীনায় আসলেন। তাহাঁর কোন খাদেম ছিলো না। আবু তালহা [রাঃআঃ] আমার হাত ধরে আমাকে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী! আনাস বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান বালক। সে আপনার খেদমত করিবে। আনাস [রাঃআঃ] বলেন, আমি তার মদীনায় আসার সময় থেকে তাহাঁর ইনতিকাল পর্যন্ত সফরে ও আবাসে তার সেবা করেছি। তিনি আমার কোন কাজের জন্য বলেননিঃ তুমি এটা এভাবে করলে কেন? আবার আমার কোন কাজ না করায় তিনি বলেননিঃ তুমি এটা এভাবে করলে না কেন
[বোখারী, মুসলিম, মুসনাদ আহমাদ]? আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৬. অনুচ্ছেদঃ ক্রীতদাস চুরির অপরাধ করলে।
১৬৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্রীতদাস চুরি করলে একটি ‘নাশ’-এর বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রয় করে ফেলো। ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, ‘নাশ’ হলো বিশ দিরহাম ‘নাওয়াত’ হলো পাঁচ দিরহাম এবং ‘উঁকিয়া’ হলো চল্লিশ দিরহাম
[নাসায়ী, ইবনি মাজাহ, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৭. অনুচ্ছেদঃ খাদেম অপরাধ করলে।
১৬৫. আসেম ইবনি লাকীত ইবনি সাবুরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি [বনু মুনতাফিকের প্রতিনিধি হয়ে] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে পৌছলাম। রাখাল খোঁয়াড়ে একটি ছাগল ছানা নিয়ে যাচ্ছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি ধারণা করো না যে, আমরা এটা তোমার জন্য যবেহ করছি। আমাদের এক শত বকরী আছে। এই সংখ্যা বৰ্দ্ধিত হওয়া আমরা কামনা করি না। অতএব ছাগল ছানাটি নিয়ে এলে আমরা তৎপরিবর্তে একটি বকরী যবেহ করলাম। নাবী [সা] তখন যা বলেছেন, তার মধ্যে ছিলঃ তোমার স্ত্রীকে তোমার দাসীর মত মারধর করো না এবং যখন নাক পরিষ্কার করো উত্তমরূপে পরিষ্কার করো, যদি তুমি রোযাদার না হও
[আবু দাউদ, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ক্ষতির আশংকায় খাদেমের নিকট সীলমোহর করে মাল সোপর্দ করে।
১৬৬. আবুল আলিয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমাদের নির্দেশ দেয়া হতো যে, আমরা যেন কোন বস্তু খাদেমের নিকট দেয়ার সময় সীলমোহর করে, ওজন করে বা গুণে দেইবনি মাজাহ, যাতে তার অভ্যাস খারাপ না হইতে পারে বা আমাদের কেউ কুধারণার শিকার না হয়।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৯. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সন্দিহান হওয়া থেকে বাঁচার জন্য নিজ খাদেমের নিকট গণনা করে দেয়।
১৬৭. সালমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি খাদেমের কাছে কোন বস্তু দেওয়ার সময় গণনা করে দেইবনি মাজাহ, যাতে কুধারণা থেকে বেঁচে থাকতে পারি।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৮. হারিসা ইবনি মুদাররিব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি সালমান [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমি সন্দেহমুক্ত থাকার জন্য খাদেমের কাছে কোন বস্তু দেওয়ার সময় গণনা করে দেই।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯০. অনুচ্ছেদঃ খাদেমকে শিষ্টাচার শিক্ষাদান।
১৬৯. ইয়াযীদ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি কুসাইত [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] তার এক গোলামকে সোনা বা রূপার মুদ্রাসহ পাঠালেন। সে মুদ্রা বিনিময় করে অপর পক্ষকে [তার মুদ্ৰা আনার জন্য] সময় দেয়। সে ফিরে এলে তিনি তাকে বেদম প্রহার করেন এবং বলেন, যাও আমার মুদ্রা ফেরত নিয়ে এসো, তা বিনিময় করো না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৭০. আবু মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি আমার এক গোলামকে প্রহার করছিলাম। আমি আমার পিছন থেকে ডাক শুনলামঃ হে আবু মাসউদ! নিশ্চয় আল্লাহ তোমার উপর, গোলামের উপর তোমার ক্ষমতার চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান। আমি ফিরে তাকিয়ে দেখি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আল্লাহর ওয়াস্তে সে আযাদ। তিনি বলেনঃ তুমি যদি তা না করিতে তবে দোযখ তোমাকে অবশ্যই স্পর্শ করতো অথবা দোযখ তোমাকে অবশ্যই গ্রাস করতো
[মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯১. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ তার মুখমণ্ডল বিকৃত করুন- একথা বলো না।
১৭১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা বলো নাসায়ী,
لَا تَقُولُوا: قَبَّحَ اللَّهُ وَجْهَهُ
“আল্লাহ তার মুখমণ্ডল বিকৃত করুন”
[ইবনি খুযাইমাহ, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৭২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
অবশ্যই তুমি বলো নাসায়ী,
لَا تَقُولَنَّ: قَبَّحَ اللَّهُ وَجْهَكَ وَوَجْهَ مَنْ أَشْبَهَ وَجْهَكَ
“আল্লাহ তোমার মুখমণ্ডল এবং তোমার সদৃশ ব্যক্তির মুখমণ্ডল বিকৃত করুন”।
আল্লাহ আদম [আবু দাউদ]-কে তাহাঁর নিজ অবয়বে সৃষ্টি করিয়াছেন
[মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৯২. অনুচ্ছেদঃ মুখমণ্ডলে আঘাত দেয়া পরিহার করিবে।
১৭৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ তার খাদেমকে মারধর করলে সে যেন মুখমণ্ডল পরিহার করে
[বোখারী, আবু দাউদ, নাসায়ী, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৪. জাবের [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] একটি পশুকে অতিক্রম করিলেন। এর দুই চিবুকে গরম লোহার দাগ ছিল । নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে এই কাজ করেছে, আল্লাহ তাকে অভিসম্পাত করুন। কেউ যেন মুখমণ্ডলে দাগ না দেয় এবং তাতে আঘাত না করে
[মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৩. অনুচ্ছেদঃ কেউ তার গোলামকে চপেটাঘাত করলে সে যেন তাকে স্বেচ্ছায় আযাদ করে দেয়।
১৭৫. হেলাল ইবনি ইয়াসাফ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমরা সুয়াইদ ইবনি মুকাররিন [রাঃআঃ]-এর বাড়ির সামনে কাপড় বিক্রি করতাম। এক দাসী বের হয়ে এসে এক ব্যক্তিকে কটু কথা বললো। লোকটি তাকে চপেটাঘাত করলো। সুয়াইদ ইবনি মুকাররিন [রাঃআঃ] বলেন, তুমি কি তার গালে চপেটাঘাত করছো? আমি ছিলাম সাতজনের মধ্যে একজন। আমাদের সাতজনের একজন মাত্র খাদেম ছিল। আমাদের একজন তাকে চপেটাঘাত করলো। নাবী [সাঃআঃ] খাদেমটিকে আযাদ করে দিতে তাকে নির্দেশ দিলেন
[মুসলিম, তিরমিজী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি নিজ গোলামকে চপেটাঘাত করলো অথবা বিনা অপরাধে হদ্দ-এর শাস্তি দিলো, তার কাফফারা হলো তাকে আযাদ করে দেয়া
[মুসলিম, আহমাদ, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৭. মুয়াবিয়া ইবনি সুয়াইদ ইবনি মুকাররিন [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আমাদের এক গোলামকে চপেটাঘাত করলে সে পালিয়ে গেলো। আমার পিতা আমাকে ডেকে বলেন, আমি একটা ঘটনা শুনাই। আমরা মুকাররিন [রাঃআঃ]-এর সাত সন্তান ছিলাম। আমাদের একজন মাত্র খাদেম ছিল। আমাদের একজন তাকে চপেটাঘাত করলো। বিষয়টি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বলেনঃ তাহাদেরকে বলো, তারা যেন তাকে আযাদ করে দেয়। নাবী [সাঃআঃ]-কে বলা হলো, সে ছাড়া তাহাদের কোন খাদেম নাই। তিনি বলেনঃ তাহলে আপাতত তারা তাকে তাহাদের কাজে রাখুক, তারপর তারা আত্মনির্ভরশীল হলে তাকে আযাদ করে দিবে
[মুসলিম, আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৮. সুয়াইদ ইবনি মুকাররিন আল-মুযানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
সুয়াইদ ইবনি মুকাররিন আল-মুযানী [রাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে তার গোলামকে চপেটাঘাত করিতে দেখলেন। তিনি বলেন, তুমি কি জানো না, মুখমণ্ডল সম্মানিত স্থান? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে আমি ছিলাম সাত ভাইয়ের মধ্যে সপ্তম। আমাদের একজন মাত্র খাদেম ছিল। আমাদের একজন তাকে চপেটাঘাত করলো। নাবী [সাঃআঃ] গোলামটিকে আযাদ করে দিতে আমাদের নির্দেশ দিলেন
[মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯. যাযান আবু উমার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমরা ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি তার এক গোলামকে ডাকলেন। তাকে তিনি প্রহার করেছিলেন। তিনি তার পিঠ উদলা করিলেন এবং বলিলেন, তুমি কি ব্যথা অনুভব করছো? সে বললো, না। তিনি তাকে আযাদ করে দিলেন। অতঃপর তিনি মাটি থেকে এক খণ্ড কাঠ তুলে নিয়ে বলেন, এর দ্বারা এই কাষ্ঠ খণ্ডের ওজনের পরিমাণ সওয়াবও আমি পাবো না। আমি বললাম, হে আবদুর রহমানের পিতা! আপনি একথা বলেন কেন? তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি নিজ গোলামকে বিনা অপরাধে প্রহার করলো অথবা তার মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত করলো, তার কাফফারা হলো তাকে আযাদ করে দেয়া
[মুসলিম, আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৪. অনুচ্ছেদঃ গোলামের উপর প্রতিশোধ গ্রহণ।
১৮০. আম্মার ইবনি ইয়াসার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে কেউ নিজ গোলামকে নির্যাতকরূপে প্রহার করিবে, তাকে কিয়ামতের দিন শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হইবে।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮১. আবু লায়লা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
সালমান [রাঃআঃ] একদা সফরে বের হলেন। তার পশুর ঘাস হাওদা থেকে নিচে পড়ছিল। তিনি গোলামকে বলেন, যদি আমার কিসাসের [প্রতিশোধ গ্রহণের] ভয় না থাকতো, তবে আমি অবশ্যই তোকে শাস্তি দিতাম
[মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ]।আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রাপ্যসমূহ অবশ্যই তার প্রাপককে পৌঁছাতে হইবে, এমনকি শিংবিহীন ছাগীকেও শিংওয়ালা ছাগীর নিকট থেকে প্রতিশোধ আদায় করে দেয়া হইবে
[মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৩. উম্মু সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] তার ঘরে ছিলেন। তিনি তাহাঁর বা উম্মু সালামার দাসীকে ডাকলেন। সে আসতে বিলম্ব করলো। তাতে নাবী [সাঃআঃ]-এর মুখমণ্ডলে অসন্তুষ্টির ভাব দেখা গেলো। উম্মু সালামা [রাঃআঃ] উঠে পর্দার ওপাশে গেলেন এবং তাকে খেলায় রত দেখলেন। তাহাঁর হাতে ছিল মিসওয়াক। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন প্রতিশোধ গ্রহণের আশংকা না থাকলে অবশ্যই আমি এই মিসওয়াক দিয়ে তোকে প্রহার করতাম। মুহাম্মাদ ইবনুল হায়সামের বর্ণনায় আরো আছেঃ সে একটি ছাগলের বাচ্চা নিয়ে খেলছিল। উম্মু সালামা [রাঃআঃ] বলেন, আমি তাকে-সহ নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! সে তো শপথ করে বলছে যে, সে আপনার ডাক শুনতে পায়নি। তিনি আরো বলেন, তার হাতে ছিল একটি মিসওয়াক [তাবাকাত ইবনি সাদ]
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপরকে প্রহার করলে, কিয়ামতের দিন তার থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করা হইবে
[বাযযার, তাবারানি]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রহার করলে, কিয়ামতের দিন তার থেকে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হইবে
[বাযযার, তাবারানি]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৫. অনুচ্ছেদঃ তোমরা যা পরিধান করো দাস-দাসীদেরও তাই পরিধান করাও।
১৮৬. উবাদা ইবনুল ওলীদ ইবনুস সামিত [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি এবং আমার পিতা জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে আনসারদের জীবদ্দশায় তাহাদের এই জনপদে রওয়ানা হলাম। সর্বপ্রথম এই মহল্লায় আমাদের সাথে সাক্ষাত হলো নাবী [সাঃআঃ]-এর সহচর আবুল ইয়াসার [রাঃআঃ]-র সাথে। তার সাথে তার একটি গোলামও ছিল। তাহাদের দু’জনের পরনে ছিলো দামী চাদর ও খাকী সাধারণ চাদর। আমি তাকে বললাম, চাচাজান! আপনি যদি গোলামের চাদরটি নিতেন এবং আপনার খাকী চাদরটি গোলামকে দিতেন অথবা আপনি খাকী চাদর গায়ে দিয়ে তাকে দামী চাদরের সম্পূর্ণটা দিতেন, তবে আপনাদের দু’জনেরই তো একটা করে চাদর হতো। তিনি আমার মাথায় তার হাত বুলিয়ে বলেন, হে আল্লাহ! একে বরকত দান করুন। হে ভাতিজা! আমার এই দু’চোখ দেখেছে, আমার এই দুই কান শুনেছে, আমার এই অন্তর তা সংরক্ষণ করেছে এবং তিনি তার অন্তরের দিকে ইংগিত করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমরা যা খাও তাহাদেরকেও তাই খাওয়াবে এবং তোমরা যা পরিধান করো, তাহাদেরকেও তাই পরাবে”। তাকে আমার দুনিয়ার সামগ্ৰী প্রদান করা কিয়ামতের দিন আমার সওয়াবসমূহের অংশবিশেষ তার গ্রহণ করার চাইতে আমার নিকট সহজতর
[মুসলিম, ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৭. জাবের ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] ক্রীতদাসদের সাথে সদয় ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন এবং বলিতেনঃ তোমরা যা খাও তাহাদেরকেও তাই খাওয়াও, তোমরা যা পরিধান করো তাহাদেরকেও তা পরিধান করাও এবং মহামহিম আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিও না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৬. অনুচ্ছেদঃ দাস-দাসীদের গালি দেয়া নিষেধ।
১৮৮. মারূর ইবনি সুয়াইদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আবু যার [রাঃআঃ]-এর পরনে একটি লাল বর্ণের চাদর এবং তার গোলামের পরনেও একই রকম চাদর দেখলাম। আমরা তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে গালি দিয়েছিলাম। সে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে নাবী [সাঃআঃ] আমাকে বলেনঃ তুমি কি তার মাকে তুলে গালি দিয়েছো? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ তোমাদের দাসগণ তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাহাদেরকে তোমাদের অধীন করিয়াছেন। সুতরাং যার অধীনে তার ভাই আছে সে যা খায়, তাকেও যেন তা খাওয়ায়, সে যা পরে তাকেও তাই পরায় এবং তাহাদের উপর তাহাদের সাধ্যাতীত কাজ চাপাবে না। এরূপ কোন কাজ তাহাদের করিতে দিলে সে যেন তাহাদের সেই কাজে সাহায্য করে
[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৭. অনুচ্ছেদঃ লোকে নিজ দাসকে কি সাহায্য করিবে ?
১৮৯. নাবী [সাঃআঃ]-এর এক সাহাবী হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের দাসগণ তোমাদের ভাই। অতএব তোমরা তাহাদের সাথে সদয় ব্যবহার করো, যে কাজ তোমাদের পরাভূত করে তাতে তাহাদের সাহায্য গ্রহণ করো এবং যে কাজ তাহাদের পরাভূত করে, তাতে তোমরাও তাহাদের সাহায্য করো
[আবু দাউদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৯০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তোমরা কর্মচারীকে তার কর্ম সম্পাদনে সাহায্য করো। কেননা আল্লাহর কর্মচারী [খাদেম] ব্যর্থ হয় না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৮. অনুচ্ছেদঃ দাসের উপর তার মাধ্যতীত কাজের বোঝা চাপানো নিষেধ।
১৯১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দাস তার আহারাদি ও পরিধেয় পাবে এবং তার উপর তার সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপানো যাবে না
[মুসলিম, মুয়াত্তা মালিক, আবু দাউদ, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দাস তার আহারাদি ও পরিধেয় পাবে এবং তার উপর তার সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপানো যাবে না
[পূর্বোক্ত হাদিসের বরাত]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৩. মারূর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমরা আবু যার [রাঃআঃ]-র সাক্ষাত পেলাম। তার পরনে ছিল একটি সূতিবস্ত্র এবং তার গোলামের পরনে ছিল একটি রেশমী চাদর। আমরা বললাম, আপনি যদি এটা গ্রহণ করিতেন এবং তাকে যদি এই রেশমী চাদর ছাড়া অন্যটি দিতেন। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের এসব ভাইবনি মাজাহ, আল্লাহ তাহাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করিয়াছেন। অতএব তোমাদের কারো অধীনে তার ভাই থাকলে সে যা খায় তাকেও যেন তা খাওয়ায়, সে যা পরিধান করে, তাকেও যেন তাই পরিধান করায় এবং তার সামর্থ্যের অতিরিক্ত কাজের বোঝা যেন তার উপর না চাপায়। যদি সে তার সামর্থ্যের অতিরিক্ত কাজের বোঝা তার উপর অর্পণ করে, তাহলে সে যেন তাকে সহায়তা করে।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯৯. অনুচ্ছেদঃ নিজ গোলাম ও খাদেমের জন্য কোন ব্যক্তির খরচ দানরূপে গণ্য।
১৯৪. মিকদাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ তুমি নিজে যা খাও তাও সদাকা, তুমি তোমার স্ত্রী, পুত্র ও খাদেমকে যা খাওয়াও তাও সদাকা
[নাসায়ী, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ উত্তম সদাকা হলো সচ্ছলতা বজায় রেখে যা করা হয়। উপরের [দাতার] হাত নিচের [গ্রহীতার] হাতের চেয়ে উত্তম। পোষ্যদের থেকে [দান-খয়রাত] শুরু করো। অন্যথায় তোমার স্ত্রী বলবে, আমার ভরণপোষণ দাও নতুবা আমাকে তালাক দাও। তোমার দাস বলবে, আমাকে ভরণপোষণ দাও অন্যথায় আমাকে বিক্রয় করো। তোমার সন্তান বলবে, আমাকে কার দায়িত্বে ছেড়ে যাচ্ছেন
[বোখারী, মুসনাদ আবু আওয়া নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] দান-খয়রাত করার নির্দেশ দিলেন। এক ব্যক্তি বললো, আমার কাছে একটি দীনার আছে। তিনি বলেনঃ তা তুমি নিজের জন্য ব্যয় করো। সে বললো, আমার কাছে আরো একটি দীনার আছে। তিনি বলেনঃ তা তোমার স্ত্রীর জন্য ব্যয় করো। সে বললো, আমার কাছে আরো একটি দীনার আছে। তিনি বলেনঃ তা তোমার খাদেমের জন্য ব্যয় করো। তারপর তোমার বিবেক-বুদ্ধি খাটাও
[নাসায়ী, আবু দাউদ, হাকিম, ইবনি হিব্বান, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০০. অনুচ্ছেদঃ কেউ তার দাসের সাথে একত্রে আহার করা অপছন্দ করলে।
১৯৭. ইবনুয যুবাইর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি জাবির [রাঃআঃ]-কে তার খাদেম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। সে তার [জন্য আহার তৈরি করিতে] পরিশ্রম ও তাপ সহ্য করেছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি আহারের সময় তাকে ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বলেন, হাঁ, তোমাদের কেউ যদি তার সাথে আহার করিতে অনিচ্ছুক হয়, তবে সে যেন নিজ হাতে তার মুখে এক গ্রাস খাবার তুলে দেয়
[মুসনাদ আহমাদ, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০১. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি নিজে যা খাবে তার দাসকেও তা খাওয়াবে।
১৯৮. জাবের ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] দাসদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন এবং বলিতেনঃ তোমরা যা খাও তাহাদেরকেও তা খাওয়াও, তোমরা যা পরিধান করো তাহাদেরকেও তা পরিধান করাও এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিও না।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০২. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি আহারের সময় তার খাদেমকেও কি তার সাথে বসাবে?
১৯৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কারো খাদেম তার আহারাদি নিয়ে তার কাছে আসলে সে যেন তাকেও সাথে বসায়। সে যদি তাতে সম্মত না হয়, তবে তাকে [তার মুখে] তা থেকে কিছু তুলে দেয়
[বোখারী, মুসলিম, দারিমি]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০০. আবু মাহযূরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত.
আমি উমার [রাঃআঃ]-এর দরবারে বসা ছিলাম। তখন সাফওয়ান ইবনি উমাইয়া [রাঃআঃ] একটি বিরাট পাত্রসহ সেখানে আসেন। পাত্রটি একটি পশমী আবায় করে কয়েক ব্যক্তি বহন করে আনে। তারা তা উমার [রাঃআঃ]-এর সামনে রাখে। উমার [রাঃআঃ] দরিদ্র লোকজনকে এবং তার নিকট উপস্থিত লোকজনের দাসদেরকে ডাকলেন। তারা তার সাথে একত্রে আহার করলো। তিনি বলেন, আল্লাহ এমন একটি সম্প্রদায়কে ধ্বংস করিয়াছেন অথবা আল্লাহ এমন সম্প্রদায়কে অপদস্থ করিয়াছেন, যারা নিজেদের দাসদের সাথে আহার করিতে অপছন্দ করতো। সাফওয়ান [রাঃআঃ] বলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা তাহাদের ঘৃণা করি নাসায়ী, বরং আমরা তাহাদেরকে আমাদের উপর অগ্রাধিকার দেই। আল্লাহর শপথ! আমরা উত্তম খাবার পেলেই তা নিজেরাও খাই এবং তাহাদেরকেও খাওয়াই।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৩. অনুচ্ছেদঃ গোলাম তার মালিকের কল্যাণ কামনা করলে।
২০১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে গোলাম তার মনিবের কল্যাণ কামনা করে এবং উত্তমরূপে তার প্রতিপালকের ইবাদত করে, তার জন্য দ্বিগুণ পুরস্কার রহিয়াছে
[বোখারী, মুসলিম, দারিমি]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০২. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি আমের আশ-শাবী [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বললো, হে আমরের পিতা! আমরা পরস্পর বলাবলি করি যে, কোন ব্যক্তি তার সন্তানদাত্রী দাসীকে দাসত্বমুক্ত করার পর বিবাহ করলে সে যেন তার কোরবানীর পশুকে বাহনরূপে ব্যবহার করলো। আমের [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আবু বুরদা [রাহিমাহুল্লাহ] তার পিতার সূত্রে আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের বলেছেনঃ তিন ব্যক্তির জন্য দুটি করে পুরস্কার রহিয়াছে। [১] আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের যে ব্যক্তি তার নাবীর উপর ঈমান এনেছে এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর উপরও ঈমান এনেছে তার জন্য দুইটি পুরস্কার। [২] যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক এবং তার মনিবের হক আদায় করে [৩] যে ব্যক্তির কাছে একটি দাসী ছিল, সে তাকে শয্যাসঙ্গিনী করেছে, তাকে উত্তমরূপে শিষ্টাচার শিখিয়েছে এবং উত্তমরূপে শিক্ষাদীক্ষা দিয়েছে, অতঃপর তাকে দাসত্বমুক্ত করে বিবাহ করেছে, তার জন্য দুইটি পুরস্কার রহিয়াছে। আমের [রাঃআঃ] বলেন, আমি তোমাকে তা [জ্ঞান] বিনিময় ছাড়াই দান করলাম। এর চাইতে ক্ষুদ্র কথা শেখার জন্যও মানুষকে ইতিপূর্বে মদীনা পর্যন্ত সফর করিতে হতো
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ], আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০৩. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ক্রীতদাস উত্তমরূপে তার প্রভুর ইবাদত করে এবং তার মনিবের আনুগত্য ও কল্যাণ কামনার যে কর্তব্য তার উপর রহিয়াছে তাও পালন করে, তার জন্য রহিয়াছে দুটি পুরস্কার
[বোখারী]।আ বুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০৪.আবু বুরদা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ক্রীতদাসের জন্য রহিয়াছে দু’টি পুরস্কার। সে যখন উত্তমরূপে আল্লাহর ইবাদতের হক আদায় করে এবং মনিবের প্রতি তার কর্তব্যও পালন করে
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৪. অনুচ্ছেদঃ গোলামও একজন দায়িত্বশীল।
২০৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই রাখাল বা দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। শাসক জনগণের রাখাল, তাকে তার জনগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। যে কোন ব্যক্তি তার পরিবারের রাখাল। তাকে তাহাঁর পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। দাস তার মনিবের সম্পদরাজির রাখাল, তাকে এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। সাবধান! তোমাদের প্রত্যেকেই রাখাল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে
[বোখারী, মুসলিম, দারিমি]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
দাস তার মনিবের আনুগত্য করলে সে মহামহিম আল্লাহরই আনুগত্য করলো এবং সে মনিবের অবাধ্যাচারী হলে মহামহিমান্বিত আল্লাহরই অবাধ্যতা করলো।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি গোলাম হওয়া পছন্দ করে।
২০৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন মুসলিম গোলাম যখন আল্লাহর হক ও তার মনিবের হক আদায় করে, তখন সে দু’টি পুরস্কার পাবার অধিকারী হয়। আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেন, সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আবু হুরাইরার জীবন! যদি আল্লাহর পথে জিহাদ ও হজ্জ না থাকতো এবং আমার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ না থাকতো তাহলে আমি গোলামী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা অধিক পছন্দ করতাম
[বোখারী, মুসলিম, আহমাদ, মুসনাদ আবু আওয়া নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৬. অনুচ্ছেদঃ গোলামকে “আমার দাস” বলে সম্বোধন করিবে না।
২০৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ ‘আমার বান্দা’ ‘আমার বান্দী’ বলবে না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা এবং তোমাদের সব মহিলা আল্লাহর বান্দী। বরং সে যেন বলে, আমার ছেলে, আমার মেয়ে, আমার যুবক, আমার যুবতী
[বোখারী, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৭. অনুচ্ছেদঃ গোলাম কি বলবে, ‘আমার মনিব’?
২০৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন আমার দাস, আমার দাসী না বলে। ক্রীতদাসও যেন আমার প্রভু না বলে। সে বলবে, আমার যুবক, আমার যুবতী, আমার নেতা। তোমাদের প্রত্যেকেই দাস, কেবল মহামহিম আল্লাহই হচ্ছেন রব [প্রভু]
[আবু দাউদ, নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১০. মুতাররিফ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমার পিতা বলিলেন, আমি আমের গোত্রের প্রতিনিধি দলের সাথে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে গেলাম। লোকেরা [রাসূলকে] বললো, আপনি আমাদের সাইয়েদ [নেতাবারানি]। তিনি বললেনঃ সাইয়েদ তো হচ্ছেন আল্লাহ। লোকেরা বললো, আপনি আমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বড়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা নিজেদের কথা বলো এবং শয়তান যেন তোমাদের মধ্যে অনুপ্রবেশ না করিতে পারে
[আবু দাউদ, নাসায়ী, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৮. অনুচ্ছেদঃ পুরুষলোক তার পরিবার বা সংসারের পৃষ্ঠপোষক।
২১১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সকলেই অভিভাবক এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। আমীর [শাসক, অধিনায়ক] একজন পৃষ্ঠপোষক। তাকেও জবাবদিহি করিতে হইবে। পুরুষলোক তার পরিবারের অভিভাবক। তাকেও জবাবদিহি করিতে হইবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসারের পৃষ্ঠপোষক, তাকেও জবাবদিহি করিতে হইবে। সাবধান! তোমাদের প্রত্যেকেই অভিভাবক ও পৃষ্ঠপোষক এবং প্রত্যেককেই তার অভিভাবকত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করিতে হইবে
[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১২. আবু সুলায়মান মালেক ইবনুল হুয়াইরিস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে হাযির হলাম। আমরা ছিলাম সমবয়স্ক যুবক। আমরা একাধারে বিশ রাত তাহাঁর কাছে অবস্থান করলাম। তিনি অনুভব করিলেন, আমরা আমাদের পরিবারে ফিরে যেতে আগ্রহী। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন যে, আমরা বাড়িতে কাকে কাকে রেখে এসেছি। আমরা এ সম্পর্কে তাহাঁকে অবহিত করলাম। তিনি বাস্তবিকই অত্যন্ত সদয় এবং দয়াশীল ছিলেন। তিনি বলেনঃ তোমরা নিজেদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাও, তাহাদের দ্বীনের জ্ঞান দান করো এবং ভালো কাজ করার নির্দেশ দাও। আর তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখেছো ঠিক সেভাবে নামায পড়ো। নামাযের ওয়াক্ত হলে তোমাদের মধ্যে একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে বয়জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি তোমাদের নামাযে ঈমামতি করিবে
[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ] আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৯. অনুচ্ছেদঃ স্ত্রীলোক পৃষ্ঠপোষক ও পরিচালক।
২১৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ তোমাদের সবাই রাখাল [অভিভাবক, পৃষ্ঠপোষক, পরিচালক, দায়িত্বশীল] এবং তোমাদের সবাইকে নিজ নিজ রাখালী সম্পর্কে জবাবদিহি করিতে হইবে। ঈমাম একজন রাখাল এবং তাকে নিজের রাখালী সম্পর্কে জবাবদিহি করিতে হইবে। ব্যক্তি তার পরিবারবর্গের রাখাল, স্ত্রী তার স্বামীর ঘর-সংসারের রাখাল এবং খাদেম তার মনিবের সম্পদের রাখাল। আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছ থেকে এ কথাগুলো শুনিয়াছি। আমার অনুমান নাবী [সাঃআঃ] আরো বলেছেনঃ ব্যক্তি তার পিতার সম্পদের রাখাল
[বোখারী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১০. অনুচ্ছেদঃ যার সাথে ভালো ব্যবহার করা হয় সে যেন তার উত্তম বিনিময় দেয়।
২১৪. জাবের ইবনি আবদুল্লাহ আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যার সাথে ভালো ব্যবহার করা হয় সে যেন তাকে তার অনুরূপ বিনিময় দান করে। যদি বিনিময় দান করার সামথ্য না থাকে তাহলে সে তার প্রশংসা করিবে। কেননা সে যখন তার প্রশংসা করলো তখন সে যেন তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো। যে ব্যক্তি তা [ভালো ব্যবহার] গোপন রাখলে সে যেন তার প্রতি অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করলো। যে ব্যক্তি কোন কিছু না পেয়েও বলে, পেয়েছি, সে দ্বিগুণ মিথ্যাবাদী
[তিরমিজী, আবু দাউদ, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে আশ্রয় প্রার্থনা করে তাকে আশ্রয় দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে কিছু প্রার্থনা করে তাকে দান করো। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে ভালো ব্যবহার করে তোমরা তার প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেয়ার মত কিছু না থাকলে তার জন্য দোয়া করো, যাতে সে অনুভব করিতে পারে যে, তোমরা তার ভালো কাজের প্রতিদান দিয়েছে
[আবু দাউদ, নাসায়ী, আহমাদ]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১১. অনুচ্ছেদঃ কারো ভালো ব্যবহারের প্রতিদান দেয়া সম্ভব না হলে তার জন্য দোয়া করিবে।
২১৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
মুহাজির সাহাবীগণ বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! সমস্ত সওয়াব তো আনসারগণ নিয়ে গেলো। তিনি বলেনঃ নাসায়ী, যতক্ষণ তোমরা তাহাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করিতে থাকিবে এবং তাহাদের ভালো ব্যবহারের বা উপকারের প্রশংসা করিতে থাকিবে তোমরাও তাহাদের সাথে সমান সওয়াব পাবে
[আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১২.অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ নয়
২১৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ নয়
[আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ তাআলা রূহকে বলিলেন, বের হয়ে আসো। রূহ বললো, আমি অনিচ্ছায় বের হয়ে আসবো।
আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৩. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তির তার ভাইকে সাহায্য করা।
২১৯. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ]-কে বলা হলো, সর্বোত্তম আমল কি? তিনি বলেনঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান এবং তাহাঁর পথে জিহাদ। বলা হলো, আযাদ করার জন্য সর্বোত্তম গোলাম কে? তিনি বলেনঃ যার মূল্য সর্বাধিক এবং যে নিজ পরিবারের নিকট অধিক প্রিয়। প্রশ্নকারী বললো, আপনার কি মত, আমি যদি কোন কোন কাজ করিতে সক্ষম না হই? তিনি বলেনঃ তাহলে কোন কারিগরের কাজে সাহায্য করো অথবা অনভিজ্ঞ লোকের কাজ করে দাও। সে বললো, আপনি কি মনে করেন, যদি তা করিতে আমি অপরাগ হই? তিনি বলেনঃ তোমার অনিষ্ট থেকে লোকজনকে নিরাপদ থাকতে দাও। কেননা তা সদাকা যা তোমার নিজের জন্য তুমি করিতে পারো
[বোখারী, মুসলিম, নাসায়ী, আহমাদ, দারিমি, ইবনি হিব্বান]। আদাবুল মুফরাদ পিডিএফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply