আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download – ওযু করা
<< সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব হাদীস বই এর মুল সুচিপত্র << আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download – ওযু করা
পরিচ্ছেদঃ ওযু করা এবং তা পরিপূর্ণ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করণঃ
১৭৫ -আবদুল্লাহ ইবনি ওমার হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি ওমার তাহাঁর পিতা ওমার বিন খাত্তাব [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ ইসলাম সম্পর্কে জিবরাল [আঃ] এর প্রশ্নের জবাবে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “ইসলাম হল- তুমি এ কথার সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল। নামায কায়েম করিবে, যাকাত প্রদান করিবে, হজ্জ ও ওমরাহ আদায় করিবে, জানাবাত [নাপাকী] থেকে গোসল করিবে, পরিপূর্ণরূপে ওযু করিবে এবং রামাযান মাসে সিয়াম পালন করিবে।” তিনি [জিবৱীল আঃ] বলিলেন, তা যদি বাস্তবায়ন করি তবে আমি মুসলিম? তিনি বললেনঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ আপনি সত্য বলেছেন।
[ইবনি খুযায়মা স্বীয় {সহিহ} গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহায়ন তথা বোখারী ও মুসলিম ও অন্যান্য গ্রন্থে হাদীসটির বর্ণনারূপ অন্যভাবে এসেছে।] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬ -আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে একথা বলিতে শুনেছিঃ “নিশ্চয় কিয়ামত দিবসে ওযুর প্রভাবের কারণে মুখমন্ডল ও হস্ত-পদদ্বয় উজ্জল ও সুন্দর অবস্থায় আমার উম্মতকে আহবান করা হইবে।” সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বীয় উজ্জলতা বাড়াতে পারে সে যেন তা করে।
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন বোখারী ও মুসলিম] শায়খ আলবানী [রঃ] বলেন, ঈমাম ইবনি তাইমিয়া, ইবনিল কাইয়েম, হাফেয ইবনি হাজার ও তাহাঁর ছাত্র নাজী বলেনঃ “সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি…” বাক্যটি আবু হুরায়রা [রাদি.] এর নিজস্ব কথা তথা মাওকূফ।
আবু হাযেমের রেওয়ায়াতে সহিহ মুসলিমে রহিয়াছে, তিনি বলেনঃ আমি একদা আবু হুরায়রার পিছনে ছিলাম। তিনি সে সময় নামাযের জন্য ওযু করছিলেন। তিনি হাত ধোয়ার সময় [নির্দিষ্ট স্থান থেকে] বাড়িয়ে বগল পর্যন্ত ধৌত করিলেন। আমি তাঁকে লক্ষ্য করে বললামঃ কেমন এ ওযু হে আবু হুরায়রা? তিনি বললেনঃ হে বানু ফাররুখ তোমরা এখানে? তোমরা এখানে আছ জানলে আমি এরূপ ওযু করতাম না। আমি শুনিয়াছি আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “মুমিন ব্যক্তির ওযু যে পর্যন্ত পৌঁছবে সে পর্যন্ত তার উজ্জলতা ও সৌন্দর্য পৌঁছাবে।”
ইবনি খুযায়মা স্বীয় [সহিহ] গ্রন্থে এরূপই হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাহাঁর বর্ণনায় রহিয়াছে, তিনি [আবু হুরায়রা] বলেনঃ আমি শুনিয়াছি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ إن الحلية تبلغ مواضع الطهور
“পবিত্রতা অর্জনের স্থান সমূহ পর্যন্ত উজ্জলতা ও সৌন্দর্য পৌঁছবে।” আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭ – আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদা কবরস্থানে এলেন, অতঃপর বললেনঃ [আরবি] হে কবরবাসী মুমিন কওম! তোমাদের উপর সালাম-শান্তি নাযিল হোক। আল্লাহ চাহে তো অচিরেই আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হব।” আমার হৃদয়ের একান্ত ইচ্ছে, আমরা যদি আমাদের ভাইদেরকে দেখিতে পেতাম! তাঁরা [সাহাবীগণ] বললেনঃ আমরা কি আপনার ভাই নই হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেনঃ “তোমরা আমার সাহাবী তথা সাথী। আমাদের ভাই যারা তারা এখনও আসেনি।”
তারা বললেনঃ আপনার উম্মতের মধ্যে যারা এখনও আসেনি, তাহাদেরকে আপনি কিভাবে চিনবেন? তিনি বললেনঃ তুমি কি মনে কর এক ব্যক্তির কাল মিশমিশে একপাল ঘোড়ার মধ্যে যদি সাদা কপাল ও সাদা পা বিশিষ্ট একটি ঘোড়া থাকে, তবে উক্ত ঘোড়াটি চিনতে পারবে না?” তাঁরা বললেনঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল।
তিনি বললেনঃ “তারা [কিয়ামত দিবসে] ওযুর কারণে মুখমন্ডল ও হাত-পা উজ্জল ও চমকিত অবস্থায় আসবে। আর হাওযে কাওছারে আমি হব তাহাদের অগ্রগামী।”
[হাদীসটি ঈমাম মুসলিম ও অন্যরা বর্ণনা করেন] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮ -যিরর হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি
বলেনঃ তাঁরা [সাহাবীগণ] বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উম্মতের মধ্যে যাদেরকে আপনি দেখেননি তাহাদেরকে কিভাবে চিনবেন? তিনি বললেনঃ “ওযুর প্রভাবে তাহাদের মুখমন্ডল ও হস্ত-পদদ্বয় উজ্জল হইবে, তাহাদেরকে সাদা-কাল অবস্থায় দেখা যাবে।”
[ইবনি মাজাহ ও ইবনি হিব্বান হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৭৯ -আবু উমামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উল্লেখিত হাদীসটি প্রায় একই ভাবে আহম্মদ ও ত্বাবরানী উত্তম সনদে আবু উমামা [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৮০ -আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “কিয়ামত দিবসে আমিই হব প্রথম ব্যক্তি, যাকে সেজদার জন্য অনুমতি দেয়া হইবে। আমিই প্রথম ব্যক্তি যে সেজদা থেকে মাথা উঠাবে। অতঃপর আমি আমার সম্মুখে দৃষ্টিপাত করব, তখন সমস্ত জাতির মধ্যে আমার উম্মতকে চিনে নিতে পারব। এমনিভাবে আমার পিছন দিকে ঐরূপ হইবে, ডান দিকে ঐরূপ হইবে, বাম দিকেও ঐরূপ হইবে। তখন এক ব্যক্তি বললঃ নূহ [আঃ] থেকে আপনার উম্মত পর্যন্ত সমস্ত জাতির মধ্যে থেকে কিভাবে আপনি আপনার উম্মতকে চিনবেন হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেনঃ “তারা হইবে ওযুর প্রভাবে মুখমন্ডল ও হস্ত-পদদ্বয় সাদা উজ্জলতা বিশিষ্ট। অন্য কোন জাতির এ বৈশিষ্ট হইবে না। তাহাদেরকে আরো আমি চিনতে পারব এইভাবে যে, আমল নামা তাহাদের ডান হাতে দেয়া হইবে এবং তাহাদের সন্তানগণ তাহাদের সম্মুখে দৌড়াদৌড়ি করিবে।” শায়খ আলবানী বলেন, সঠিক রেওয়ায়াত হল, “আলো তাহাদের সামনে ও ডানে-বামে খেলা করিতে দেখে আমি তাহাদেরকে চিনতে পারব।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন আহম্মদ] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৮১ -আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিম বা মুমিন বান্দা ওযু করার সময় যখন মুখমন্ডল ধৌত করে, তখন পানির সাথে বা পানির শেষ ফোটার সাথে তার মুখমন্ডল থেকে সমস্ত পাপ বের হয়ে যায়, যা সে চোখের দৃষ্টির মাধ্যমে করেছিল। যখন সে হস্তদ্বয় ধৌত করে, তখন পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে হস্তদ্বয় থেকে সমস্ত পাপ বের হয়ে যায়, যা সে হস্তদ্বয় দ্বারা ধরার মাধ্যমে করেছিল। যখন সে পদদ্বয় ধৌত করে, তখন পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার পদদ্বয় থেকে সমস্ত পাপ বের হয়ে যায়, যা তার পদদ্বয় চলার মাধ্যমে করেছিল। শেষ পর্যন্ত সে পাপ থেকে স্বচ্ছ ও পরিস্কার হয়ে বের হয়ে যায়।
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন মুয়াত্বা মালেক, মুসলিম ও তিরমিজি। তবে মালেক ও তিরমিজির রেওয়ায়াতে পা ধোয়ার কথা উল্লেখ নেই] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮২ -উছমান বিন আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [(সাঃআঃ)] বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি ওযু করে এবং সুন্দরভাবে তা সম্পন্ন করে, তার পাপ সমূহ তার শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এমনকি তার নখের নীচে থেকেও বের হয়।”
অন্য এক বর্ণনায় আছে- উছমান [রাদি.] একদা ওযু করিলেন, অতঃপর বললেনঃ আমি দেখেছি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার এই ওযুর মতই ওযু করিয়াছেন, অতঃপর বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি এইভাবে ওযু সম্পাদন করিবে, তার পূর্বকৃত পাপরাশি ক্ষমা করা হইবে এবং তার সালাত ও মসজিদে গমণ নফল বা অতিরিক্ত হইবে।” [হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন মুসলিম এবং সংক্ষিপ্তভাবে নাসাঈ] তবে নাসাঈর শব্দরূপ এইভাবে- তিনি [উছমান [রাদি.] বলেনঃ আমি শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ
যে ব্যক্তি ওযু করে এবং সুন্দরভাবে তা সম্পন্ন করে, তবে উক্ত সালাত এবং পরবর্তী সালাত আদায় করা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের পাপ তাকে ক্ষমা করা হয়।”
[হাদীসটির সনদ শাইখাইন তথা বোখারী ও মুসলিমের শর্তনুযায়ী। আর নাসাঈর বর্ণনার ন্যায় সংক্ষিপ্তভাবে ইবনি খুযায়মা স্বীয় [সহিহ] গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি মাজাহও সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করে শেষে উল্লেখ করেনঃ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “এবং এতে যেন কেউ ধোকা না খায়।” নাসাঈর আর এক বর্ণনায় আছে- তিনি বলেনঃ
“আল্লাহ যেভাবে আদেশ করিয়াছেন সেভাবে যে ব্যক্তি ওযু সম্পাদন করিবে, তার পাঁচ ওয়াক্ত সালাত তার মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা স্বরূপ হইবে।” {১}
[শায়খ আলবানী বলেনঃ হাদীসটি এ শব্দে ঈমাম মুসলিমও রেওয়ায়েত করেন।]
{১} অর্থাৎ যে ব্যক্তি পরিপূর্ণরূপে ওয়ু সম্পন্ন করে তার এক নামায আদায় করার পর যে পাপ হইবে তা পরবতী নামায আদায় করলেই ক্ষমা হয়ে যাবে। আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৩ -উছমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তথা উছমান [রাদি.] থেকে আরো বর্ণিত। তিনি মসজিদে নববীর পার্শ্বে এক স্থানে বসেছিলেন, তার কাছে পানি নিয়ে আসা হল। তিনি ওযু করিলেন, এবং সুন্দরভাবে তা সম্পাদন করিলেন। অতঃপর বললেনঃ আমি দেখেছি, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এই স্থানে বসে ওযু করিয়াছেন, এবং সুন্দরভাবে ওযুকে সম্পন্ন করিয়াছেন। অতঃপর বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আমার এই ওযুর মত করে ওযু সম্পাদন করে, অতঃপর মসজিদে এসে দুরাকাআত সালাত আদায় করে, তারপর বসে, তবে পূর্বের পাপরাশি তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়।” তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরো বলেনঃ “তোমরা ধোকায় পড় না।” {১}
[বোখারী ও অন্যরা হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] {১} অর্থাৎ পাপরাশী ক্ষমা হয়ে যাবে এই আশায় বেশি বেশি অন্যায়ে জড়াবে না। কেননা যে নামায আল্লাহর কাছে কবুল হয় তার মাধ্যমেই পাপরাশী ক্ষমা হয়। আর বান্দা কি জানে তার নামায আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে গেছে? {দ্রঃ ফাতহুল বারী হাদিস নং/১৫৫} আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৪ -উছমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তথা উছমান [রাদি.] থেকেই বর্ণিত। তিনি পানি নিয়ে আসতে বলিলেন। অতঃপর ওযু করিলেন আবার হাসলেন। অতঃপর তার সাথীদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা আমাকে প্রশ্ন করিবে না কেন আমি হাসলাম? তাঁরা বললেনঃ কোন বিষয় আপনাকে হাসাল হে আমীরুল মুমেনীন? তিনি বললেনঃ আমি যেভাবে ওযু করলাম সেভাবে ওযু করিতে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে দেখেছি। অতঃপর তিনি হেসেছেন। বলেছেনঃ তোমরা আমাকে প্রশ্ন করিবে না কেন আমি হাসলাম। তাঁরা বললেনঃ কোন বিষয় আপনাকে হাসাল হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেনঃ “নিশ্চয় বান্দা যখন ওযুর পানি আনতে বলে, অতঃপর স্বীয় মুখমন্ডল ধৌত করে, তখন আল্লাহ তাআলা মুখমন্ডলের মাধ্যমে কৃত প্রতিটি পাপ মোচন করে দেন। যখন কনুই পর্যন্ত উভয় হাত ধৌত করে, তখন ঐরূপ হয়। যখন তার পদদ্বয় ধৌত করে, তখনও ঐরূপ হয়।”
[আহম্মদ উত্তম সনদে বর্ণনা করেন। আরো বর্ণনা করেন আবু ইয়ালা। সহিহ সনদে বাযযার বর্ণনা করার পর তিনি আরো বেশী উল্লেখ করেনঃ “যখন মাথা মাসেহ করে তখন ঐরূপ হয়।” হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৮৫ -আবদুল্লাহ সুনাবেহী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নিশ্চয় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
“বান্দা ওযু করিতে গিয়ে যখন কুলি করে, তখন তার মুখের মধ্যে থেকে পাপসমূহ বের হয়ে যায়। যখন নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়ে, তখন তার নাক থেকে পাপরাশি ঝরে পড়ে। যখন মুখমন্ডল ধৌত করে, তখন তার মুখমন্ডল থেকে পাপসমূহ বের হয়ে যায়, এমনকি চোখের পাতার প্রান্তদেশ থেকেও। যখন হস্তদ্বয় ধৌত করে, তখন তার উভয় হাতের পাপরাশি ঝরে পড়ে, এমনকি তার উভয় হাতের নখের নীচ থেকেও। যখন মাথা মাসেহ করে, তখন তার মাথা থেকে পাপসমূহ বেরিয়ে যায়, এমনকি তার উভয় কান থেকেও। যখন পদদ্বয় ধৌত করে, তখন তার উভয় পা থেকে পাপসমূহ ঝরে পড়ে, এমনকি তার উভয় পায়ের নখের নীচ থেকেও। অতঃপর মসজিদে গমন ও সালাত আদায় তার জন্য নফল বা অতিরিক্ত হয়।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন মুয়াত্বা মালেক, নাসাঈ, ইবনি মাজহ ও হাকেম। হাকেম বলেন, বোখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীসটি সহিহ] হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৮৬ -আমর ইবনি আনবাসা আসসুলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি জাহেলী যুগে যখন ছিলাম, ধারণা করতাম- সব মানুষই প্রথভ্ৰষ্টতায় নিমজ্জিত। তারা কোন হেদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। সে সময় মানুষ মুর্তি পুজা করত। অতঃপর মক্কার এক ব্যক্তি সম্পর্কে শুনতে পেলাম, তিনি বিভিন্ন ধরণের সংবাদ দিচ্ছেন। [তাহাঁর সাক্ষাতের উদ্দেশ্য] আমি বাহনে আরোহন করলাম এবং তাহাঁর কাছে আগমণ করলাম। দেখলাম তিনি আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]। [এ ভাবে তিনি হাদীস উল্লেখ করে বলিলেন] অতঃপর আমি বললামঃ হে আল্লাহর নাবী! ওযু সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন? তিনি বললেনঃ “তোমাদের কোন ব্যক্তি ওযুর পানি নিকটে নিয়ে আসে, অতঃপর যখন কুলি করে, নাকে পানি দেয় ও নাক ঝাড়ে, তখন তার মুখের ভিতর থেকে ও নাকের ছিদ্র থেকে সকল পাপ ঝরে পড়ে যায়। অতঃপর আল্লাহ যেভাবে আদেশ করিয়াছেন সেভাবে যখন মুখমন্ডল ধৌত করে, তখন পানির সাথে তার মুখমন্ডলের দাড়ির শেষ প্রান্ত থেকে পাপ সমূহ ঝরে পড়ে যায়। অতঃপর যখন হস্তদ্বয় কনুই পর্যন্ত ধৌত করে, তখন পানির সাথে তার উভয় হাতের আঙ্গুল সমূহের শেষ প্রান্ত থেকে পাপ সমূহ পড়ে যায়। অতঃপর মাথা মাসেহ করে, তখন পানির সাথে তার মাথার চুলের শেষ ভাগ থেকে পাপ সমূহ খসে পড়ে। অতঃপর পদদ্বয় টাখনুসহ ধৌত করে, তখন পানির সাথে তার উভয় পায়ের আঙ্গুল সমূহের শেষ প্রান্ত থেকে পাপরাশি ঝরে পড়ে। অতঃপর সে ব্যক্তি যদি দন্ডায়মান হয়ে ছালাত আদায় করে, আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে ও গুণকীর্তন করে, তিনি যে সকল গুণের অধিকারী তা দ্বারা তার গুণগান বর্ণনা করে এবং একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য তার অন্তরকে অন্য চিন্তা মুক্ত করে। তবে সে তার গুণাহ থেকে এমন দিনের ন্যায় নিস্পাপ হয়ে প্রত্যাবর্তন করে, যে দিন তার মা তাকে নিষ্পাপ অবস্থায় জন্ম দিয়েছিল।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন ঈমাম মুসলিম] হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৭ -আবু উমামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “যে কোন ব্যক্তি সালাতের ইচ্ছায় ওযুর পানি নেয়, অতঃপর উভয় হাতের কজি ধৌত করে, তখন পানির প্রথম বিন্দুর সাথে তার উভয় কব্জির প্রতিটি পাপ নেমে যায়। অতঃপর যখন কুলি করে, নাকে পানি দেয় ও নাক ঝাড়ে তখন পানির প্রথম ফোঁটার সাথে তার জিহ্বা ও উভয় ঠোঁটের পাপ ঝরে পড়ে যায়। যখন মুখমন্ডল ধৌত করে, তখন পানির প্রথম ফোঁটার সাথে তার কান ও চোখের প্রতিটি পাপ ঝরে পড়ে যায়। যখন উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ও উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করে, তখন সে সকল পাপ থেকে মুক্ত হয়ে এমন দিনের ন্যায় পবিত্র হয়, যে দিন তার মাতা তাকে [নিস্পাপাবস্থায়] ভূমিষ্ট করেছিল। তিনি বলেনঃ যখন সে সালাতে দন্ডায়মান হয়, আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।যখন সে নামায শেষ করে বসে তখন পাপ মুক্ত অবস্থায় বসে।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন ঈমাম আহম্মদ] [সহিহ লি গাইরিহী] ঈমাম আহম্মদ অন্য একটি সহিহ সনদে হাদীসটি এরূপই বর্ণনা করেন। তবে সেখানে আরো বেশী উল্লেখ রহিয়াছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ الوضوء يُكفر ما قبله ثم تصير الصلاة نافلة “ওযু পূর্বের পাপরাশি মোচন করে দেয়। অতঃপর নামায হয়ে যায় নফল বা অতিরিক্ত।” [সহিহ লি গাইরিহী]
ঈমাম আহম্মদ অন্য সনদে বর্ণনা করেন। রসূলুল্লাহ [(সাঃআঃ)] বলেনঃ “যখন মুসলিম ব্যক্তি ওযু করে, তখন তার চোখ, কান, উভয় হাত ও উভয় পায়ের পাপসমূহ বের হয়ে যায়। যখন সে [সালাত শেষ করে] বসে, তখন তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়।” [হাদীসটির সনদ হাসান] [সহিহ লি গাইরিহী]
আহমাদের অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “যখন মুসলিম ব্যক্তি ওযু করে, অতঃপর তার হস্তদ্বয় ধৌত করে, তখন তার উভয় হাত দ্বারা কৃত কর্মের কাফফারা হয়ে যায়। যখন সে মুখমন্ডল ধৌত করে, তখন উভয় চোখ দিয়ে সে যে দিকে দৃষ্টিপাত করেছে তার কাফফারা হয়ে যায়। যখন সে মাথা মাসেহ করে, তখন তার উভয় কান যা শুনেছে তার কাফফারা হয়ে যায়। যখন সে পদদ্বয় ধৌত করে, তখন তার উভয় পা যে দিকে চলেছে তার কাফফারা হয়ে যায়। অতঃপর সে ছালাতে দন্ডায়মান হয়, তখন তার ছালাত হয় অতিরিক্ত।” [এ হাদীসটির সনদও হাসান] ত্বাবরানীর {কাবীর} গ্রন্থে একটি রেওয়ায়াতে রহিয়াছে। আবু উমামা [রাদি.] বলেনঃ আমি যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হাদীসটি সাতবার না শুনতাম, তবে তা বর্ণনা করতাম না। তিনি বলেনঃ “যেভাবে আদেশ করা হয়েছে সেভাবে যদি কোন ব্যক্তি ওযু করে, তবে তার কান, চোখ, উভয় হাত ও উভয় পায়ের পাপসমূহ দূর হয়ে যাবে।” [এ হাদীসটির সনদও হাসান] হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৮৮ -ছালাবা বিন আব্বাদ হইতে বর্ণীতঃ
ছালাবা বিন আব্বাদ তাহাঁর পিতা আব্বাদ [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমি জানি না কয়বার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এককভাবে বা অন্যের উপস্থিতিতে হাদীসটি আমার সামনে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেনঃ “যখনই কোন বান্দা ওযু করে এবং সুন্দরভাবে তা সম্পাদন করে [ওযু অবস্থায়] চিবুকে পানি বইয়ে মুখমন্ডল ধৌত করে, অতঃপর কনুইর উপর পানি বইয়ে উভয় হাত ধৌত করে, টাখনুর উপর পানি বইয়ে উভয় পা ধৌত করে। অতঃপর দন্ডায়মান হয়ে সালাত আদায় করে, তবে তার পূর্বের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হইবে।”
[ত্বাবরানী {কাবীর গ্রন্থে} হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৮৯ -আবু মালিক আলি আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। {১} আলহামদু লিল্লাহ মীযান বা [হিসাবের] পাল্লাকে ভারী করে দিবে। সুবহানাল্লা ও আলহামদু লিল্লাহ আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থান পরিপূর্ণ করে দেয়। {২} সালাত নূর বা আলোকবর্তিকা। {৩} দান-সাদকা দলীল। {৪} ধৈর্য উজ্জলতা। {৫} কুরআন তোমার পক্ষে বা বিপক্ষে দলীল। {৬} প্রতিটি মানুষ সকাল করে, অতঃপর সে নিজেকে বিক্রয় করে, তাতে সে মুক্তিপ্রাপ্ত হয় অথবা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। {৭}”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন মুসলিম, তিরমিজি ও ইবনি মাজাহ] তবে ইবনি মাজাহর রেওয়ায়াতে বলা হয়েছেঃ “পরিপূর্ণরূপে ওযু করা ঈমানের অর্ধেক।” ঈমাম নাসাঈও হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাহাঁর বর্ণনায়, প্রতিটি মানুষ সকাল করে… কথাটি নেই।
{১} ঈমাম নভুভী বলেন, কোন কোন বিদ্বান বলেছেন, এখানে ঈমান বলিতে উদ্দেশ্য হচ্ছে সালাত। যেমনটি আল্লাহ বলেন, “আর আল্লাহ তোমাদের ঈমান তথা সালাত নষ্ট করে দিবেন না।” [সূরা বাকারাদি.১৪৩] পবিত্রতা সালাত বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্ব শর্ত। অতএব উহা নামাযের অর্ধেক। অথবা এ অর্থও হতে পারে যে, ঈমান হচ্ছে অন্তরের সত্যায়ন এবং বাহ্যিকভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা বাস্তবায়নের নাম। এ দুটি বিষয় ঈমানের দুটি অংশ। পবিত্রতা নামাযকেও শামিল করে। অতএব উহা ঈমানের বাহ্যিক বিষয় হওয়ার কারণে ঈমানের অর্ধেক। অথবা এ অর্থও হতে পারে, এখানে ওষুকে পরিপূর্ণরূপে সম্পাদন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং উহা বিরাট ছোয়াব অর্জন করার প্রতি উৎসাহ সৃষ্টি করা হয়েছে। এমনকি উহা ঈমানের অর্ধেক ছোয়াবের বরাবর পৌঁছে গেছে। [আল্লাহই অধিক জানেন] {দ্রঃ তোহফাতুল আহওয়াযী হাদিস নং/৩৪৩৯}
{২} অর্থাৎ- এ দুটির ছোয়াবের পরিমাণকে যদি একটি অবয়বে রূপান্তরিত করা হয়, তবে তা এত বিশাল হইবে যে, তা দ্বারা ভূপৃষ্ঠ থেকে উর্ধাকাশ পর্যন্ত স্থানকে ঢেকে ফেলবে। কালেমা দুটির ছোয়াবের বিশালত্বের কারণ হচ্ছে, প্রথমটিতে [সুবহানাল্লাহর মাধ্যমে] আল্লাহকে যাবতীয় শির্ক ও দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে আর দ্বিতীয় কালেমা [আল হামদুলিল্লাহ] দ্বারা আল্লাহর কাছে বান্দার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ ও তাহাঁর মুখাপেক্ষী হওয়ার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। {দ্রঃ তোহফাতুল আহওয়াযী হাদিস নং/৩৪৩৯}
{৩} অর্থাৎ নামায মানুষকে গুনাহের কাজে লিপ্ত হতে বাধা দেয়, অশ্লীলতা ও গৰ্হিত কাজ থেকে বান্দাকে দূরে রাখে এবং সত্য ও সঠিক পথের দিশা দেয়। অথবা এর অর্থ হচ্ছে- কিয়ামত দিবসে নামায বান্দার জন্য নূর বা আলো হইবে। {দ্রঃ তোহফাতুল আহওয়ায়ী হাদিস নং/৩৪৩৯}
{৪} অর্থাৎ— দান-সাদকা বান্দার ঈমানের দাবীর বাহ্যিক দলীল। কেননা একনিষ্ট হৃদয়ে আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় ঈমানের সত্যতার কারণেই হয়ে থাকে। কিন্তু কপট ঈমানের অধিকারী মুনাফেক অর্থ ব্যয় করলে মানুষকে দেখানো ও তাহাদের বাহাবা কুড়ানোর উদ্দেশ্যেই করে থাকে। ফলে তার দান তার ঈমানের বাহ্যিক দলীল হতে পারে না। {দ্রঃ হাশিয়া সিন্দী আলা সুনানে ইবনি মাজাহ হাদিস নং/২৭৬}
{৫} অর্থাৎ- প্ৰশংসিত ধৈর্য বান্দার জন্য আলোকবর্তিকা স্বরূপ, তাকে হেদায়াত ও সৎ পথের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে সহযোগিতা করে। ইবরাহীম খাওয়াস বলেন, প্রকৃত সবর হচ্ছে, কুরআন ও সুন্নাতের উপর দৃঢ় ও অটল থাকা। {দ্রঃ তোহফাতুল আহওয়াযী হাদিস নং/৩৪৩৯}
{৬} অর্থাৎ তুমি যদি কুরআন তেলাওয়াত কর এবং তদানুযায়ী আমল কর, তবে উহা তোমার পক্ষে স্বাক্ষ্য দিবে এবং তোমার জন্যে সুপারিশ করিবে। অন্যথা তোমার বিপক্ষে স্বাক্ষ্য দিবে।
{৭} অর্থাৎ প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ কর্মে লিপ্ত থাকে। তাহাদের মধ্যে কেউ আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে নিজেকে তাহাঁর কাছে বিক্রি করে দেয়, ফলে নিজেকে শাস্তি ও জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে নেয়। আবার কেউ শয়তান ও প্রবৃত্তির কাছে নিজেকে বিক্রি করে, তার তাবেদারী করে। ফলে নিজের ধ্বংস ডেকে নিয়ে আসে। {দ্রঃ তোহফাতুল আহওয়াযী হাদিস নং/৩৪৩৯} হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯০ -উক্ববাহ বিন আমের [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ “যে কোন মুসলিম ব্যক্তি ওযু করে এবং পরিপূর্ণরূপে তা সম্পাদন করে, অতঃপর সালাতে দন্ডায়মান হয়। সে জানে কি সে বলছে স্বীয় সালাতে, তবে সালাত থেকে সে ফিরে আসে এমন নিস্পাপ অবস্থায় যে দিন তার মাতা তাকে ভূমিষ্ট করেছিল।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনি মাজাহ, ইবনি খুযায়মা ও হাকেম, হাদীছের বাক্য হাকেমের। তিনি বলেন, সনদ সহিহ] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯১ -আলী বিন আবী তালেব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “প্রচন্ড ঠান্ডার কষ্ট স্বীকার করে পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, পদযুগলকে মসজিদের দিকে ব্যবহার করা এবং এক সালাতের পর অপর সালাতের জন্য অপেক্ষা করা— [এসব কাজ] পাপ সমূহকে ধুয়ে পরিস্কার করে দেয়।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন আবু ইয়ালা, বাযযার ও হাকেম। হাকেম বলেন, মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীসটি সহিহ] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯২ -আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না, কোন কাজ পাপসমূহ মিটিয়ে দেয় ও মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়?” তারা বলিলেন, হ্যাঁ বলুন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ “প্রচন্ড ঠান্ডার কষ্ট স্বীকার করে পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, মসজিদের দিকে বেশী বেশী পদচারণা করা এবং এক সালাতের পর অপর সালাতের জন্য অপেক্ষা করা {১} – এগুলোই হলো তোমাদের জন্য সীমান্ত পাহারা দেয়ার সমতুল্য, এটিই হলো তোমাদের জন্য সীমান্ত পাহারা দেয়ার সমতুল্য, এগুলোই হলো তোমাদের জন্য সীমান্ত পাহারা দেয়ার সমতুল্য।” {২}
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন মুআত্বা মালেক, মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ ও একই অর্থে ইবনি মাজাহ] {১} অর্থাৎ পরবতী নামাযের সময় ও জামাআতে উপস্থিত হওয়ার অপেক্ষা করা। {২} [আরবী] এর অর্থ হলো- নিজেকে কোন সৎ আমলের উপর সর্বদা নিয়োজিত রাখা। আকাঙ্খিত বিষয়। সীমান্ত পাহারা দেয়া। আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯৩ -আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত হাদীসটি ইবনি মাজাহ ও ইবনি হিব্বানও বর্ণনা করিয়াছেন আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] থেকে। তবে তাহাদের বর্ণনাভঙ্গি এইভাবেঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না, কোন কাজ দ্বারা আল্লাহ পাপসমূহকে মোচন করেন, নেকীর পাল্লা ভারী করেন ও গুণাহ সমুহের কাফফারা করেন?”
তাঁরা বলিলেন, হ্যাঁ বলুন, হে আল্লাহর রাসূল!
তিনি বললেনঃ “কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, মসজিদের দিকে বেশী বেশী পদচারণা করা এবং এক
সালাতের পর অপর সালাতের জন্য অপেক্ষা করা- এগুলোই হলো তোমাদের শত্রুর বিরুদ্ধে সীমান্তে জিহাদে লিপ্ত থাকার সমতুল্য।”
[ইবনি হিব্ববান স্বীয় সহিহ গ্রন্থে হাদীসটি শুরাহবীল বিন সাদ এর বরাতে আবু সাঈদ থেকে বর্ণনা করেন] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৯৪ -ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “আজ রাতে স্বপ্নযোগে আমার পালনকর্তা সবেত্তম আকৃতিতে আমার কাছে এসে আমাকে বলিলেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ কি বিষয় নিয়ে পরস্পর বির্তক করছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তা হচ্ছে মর্যাদা উন্নীত করণ, পাপ মোচন, জামাআতে নামায আদায় করার জন্য পা উঠিয়ে মসজিদে যাওয়া, কঠিন ঠান্ডার সময় পরিপূর্ণরূপে ওযু করা, এক নামায আদায় করার পর পরবর্তী নামাযের জন্য অপেক্ষা করা। যে ব্যক্তি এগুলোর প্রতি যত্নবান হইবে সে কল্যাণের সাথে জীবন-যাপন করিবে এবং কল্যাণের মাঝে তার মৃত্যু হইবে। আর সে তার পাপ থেকে এমনভাবে মুক্ত হইবে যেমন তার মাতা তাকে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ট করেছিল।”
[ঈমাম তিরমিজি হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] {১} {১} হাদীসটি অচিরেই পরিপূর্ণরূপে বৰ্ণিত হইবে দ্রঃ ৪৫১ নং হাদীস। আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৯৫ -উছমান বিন আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ “আল্লাহ যেভাবে আদেশ করিয়াছেন সেভাবে যে ব্যক্তি ওযু করিবে, তার ফরয সালাত সমূহ একটি অপরটির মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা স্বরূপ হইবে।”
[নাসাঈ ও ইবনি মাজাহ সহিহ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯৬ -আবু আইয়ুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি শুনিয়াছি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “যেভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে যে ব্যক্তি ওযু সম্পাদন করিবে, যেভাবে আদেশ করা হয়েছে সেভাবে সালাত আদায় করিবে, তার পূর্বকৃত আমলের পাপ ক্ষমা করা হইবে।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন নাসাঈ, ইবনি মাজাহ, দারিমী, আহম্মদ ও ইবনি হিব্বান] {১} তবে ইবনি হিব্বান বলেনঃ “তার পূর্বের পাপসমূহ ক্ষমা করা হইবে।” {১} শায়খ আলবানী বলেন, হাদীসটি আরো বর্ণনা করিয়াছেন ঈমাম দারিমী। আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১ম খন্ড pdf download হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
Leave a Reply