আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং শত্রুতা করা হারাম
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তা বিচ্ছিন্ন করা হারাম >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৬. অধ্যায়ঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তা বিচ্ছিন্ন করা হারাম
৭. অধ্যায়: একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ও পশ্চাতে শত্রুতা হারাম
৮. অধ্যায়: শারঈ ওযর ব্যতিরেকে কোন মুসলিমের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্কচ্ছেদ করা হারাম
৯. অধ্যায়: খারাপ ধারণা, দোষ খোঁজা, লিপ্সা, ধোঁকাবাজি ইত্যাদি হারাম
১০. অধ্যায়: মুসলিমের উপর যুল্ম করা, তাকে অপদস্ত করা, হেয় জ্ঞান করা হারাম এবং তার খুন, ইযযত-আবরু ও সম্পদও হারাম
১১. অধ্যায়: শত্রুতা ও পরস্পরকে পরিত্যাগ করা নিষিদ্ধ হওয়ার বিবরণ
৬. অধ্যায়ঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তা বিচ্ছিন্ন করা হারাম
৬৪১২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন সৃষ্টিকুল সৃষ্টি করে তা সমাপ্ত করিলেন, তখন রাহিম দন্ডায়মান হলো এবং বলিল, এ হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা থেকে আশ্রয় প্রার্থনাকারীর স্থান। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, যে তোমাকে সংযুক্ত রাখবে আমিও তাহাঁর সাথে সম্পর্ক রাখব, আর যে তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে আমিও তাকে পৃথক করে দিব? তখন সে বলিল, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, তোমার জন্য তাই হইবে। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি তোমরা চাও তাহলে তিলাওয়াত করিতে পার, “তোমরা কি অস্বীকার করিতে পারবে যে, তাদের উপর দায়িত্ব অর্পণ করলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ফাসাদ সৃষ্টি করিবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দিবে, এরাই তারা-যাদের উপর আল্লাহ অভিসম্পাত করিয়াছেন। এরপর তিনি তাদের বধির করে দিয়েছেন ও তাদের চক্ষুসমূহ দৃষ্টিহীন করে দিয়েছেন। তারা কি কুরআন সম্পর্কে অভিনিবেশ সহকারে চিন্তা করে না, না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?” [সুরা মুহাম্মাদ ৩৭ঃ২২-২৪]
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৩৬]
৬৪১৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ রহিম অর্থাৎ আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক আল্লাহর আর্শের সাথে ঝুলন্ত রয়েছে। সে বলে, যে ব্যক্তি আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখবেন। আর যে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করিবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করবেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৩৭]
৬৪১৪. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [আত্মীয়তা] ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।
ইবনি আবু উমর [রাদি.] সুফ্ইয়ান থেকে বর্ণনা করেন, অর্থাৎ- আত্মীয়তা ছিন্নকারী।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৩৮]
৬৪১৫. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বিছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৩৯]
৬৪১৬. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে তাহাঁর মতোই বর্ণিত আছে। আর তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪০]
৬৪১৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার জীবিকার প্রশস্ততা কিংবা দীর্ঘায়ু পছন্দ করে, সে যেন তার আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪১]
৬৪১৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার জীবিকার প্রশস্ততা চায় ও দীর্ঘায়ু কামনা করে, সে যেন তার আত্মীয়দের সাথে সদাচরণ করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪২]
৬৪১৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমার আত্মীয়-স্বজন আছেন। আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি; কিন্তু তারা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি তাদের উপকার করে থাকি; কিন্তু তারা আমার অপকার করে। আমি তাদের সহনশীলতা প্রদর্শন করে থাকি আর তারা আমার সঙ্গে মূর্খসুলভ আচরণ করে। তখন তিনি বলিলেন, তুমি যা বললে, তাহলে যদি প্রকৃত অবস্থা তাই হয় তুমি যেন তাদের উপর জ্বলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করছ। আর সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী [ফেরেশ্তা] থাকিবে, যতক্ষণ তুমি এ অবস্থায় বহাল থাকিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৪, ইসলামিক সেন্টার-৬৩৪৩]
৭. অধ্যায়ঃ একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ও পশ্চাতে শত্রুতা হারাম
৬৪২০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা প্রতিহিংসা করিবে না, পরস্পর বিদ্বেষ করিবে না এবং একে অপরের পশ্চাতে শত্রুতা করিবে না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও। আর কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য তার ভাই এর সাথে তিন দিনের বেশি সময় কথা-বার্তা পরিত্যাগ করা বৈধ নয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪৪]
৬৪২১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] থেকে মালিক-এর বর্ণিত হাদীসের সদৃশ বর্ণিত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪৫]
৬৪২২. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। তবে ইবনি উয়াইনাহ্ [আরবী] [এবং তোমরা পরস্পর সম্পর্ক বিছিন্ন করো না] বাড়িয়ে বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪৬]
৬৪২৩. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে উক্ত সানাদে বর্ণনা করেন।
তবে যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে ইয়াযীদ-এর বর্ণনা, যুহরীর থেকে সুফ্ইয়ান-এর বর্ণনার অনুরূপ। তিনি চারটি বৈশিষ্ট্য একত্রে উল্লেখ করিয়াছেন। আর আবদুর রায্যাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, [আরবী] [তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করিবে না অথবা সম্পর্ক ছিন্ন করিবে না কিংবা পশ্চাতে শত্রুতা করিবে না]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪৭]
৬৪২৪. আনাস [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তোমরা একে অপরের সাথে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করিবে না এবং পরস্পর শত্রুতা করিবে না, পারস্পরিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করিবে না এবং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪৮]
৬৪২৫. শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
শুবাহ্ [রাদি.] উক্ত সানাদের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি অতিরিক্ত বলেছেন, [আরবী][যেভাবে আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪৯]
৮. অধ্যায়ঃ শারঈ ওযর ব্যতিরেকে কোন মুসলিমের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্কচ্ছেদ করা হারাম
৬৪২৬. আবু আইয়ূব আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য তার ভাই এর সঙ্গে তিন দিনের অধিক সময় সম্পর্ক ছিন্ন রাখা বৈধ নয়। দুজনের সাক্ষাৎ ঘটলে একজন এদিকে মুখ ফিরিয়ে, অন্যজন ঐদিকে ঘাড় বাঁকিয়ে থাকে। তবে তাদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে প্রথমে সালাম করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫০]
৬৪২৭. যুহরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যুহরী [রাদি.] থেকে সকলেই মালিক-এর সানাদে ও তাহাঁর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে তাহাঁর বক্তব্য [আরবী] [সেও মুখ ফিরিয়ে নিল এবং তিনিও মুখ ফিরিয়ে নিলেন] এর পরিবর্তে মালিক ব্যতীত তাঁদের সকলেই বর্ণনা করেন [আরবী] [তিনিও বিরত থাকলেন, সেও বিরত থাকল]
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫১]
৬৪২৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ঈমানদারের জন্য তার ভাইকে তিন দিনের বেশি পরিত্যাগ করা জায়িয নয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫১{ক}]
৬৪২৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিন দিনের পরও হিজরত [কথাবার্তা পরিত্যাগ] বৈধ নয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫২]
৯. অধ্যায়ঃ খারাপ ধারণা , দোষ খোঁজা, লিপ্সা, ধোঁকাবাজি ইত্যাদি হারাম
৬৪৩০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা খারাপ ধারণা করা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, খারাপ ধারণা প্রসূত বিষয় সর্বাপেক্ষা মিথ্যা। আর তোমরা ছিদ্রান্বেষণ করো না, গোয়েন্দাগিরি করো না, সুপ্তদোষ অনুসন্ধান করো না, তোমরা পরস্পর লিপ্সা করো না, পরস্পর পরস্পরের প্রতি শত্রুতা করো না, হিংসা করো না; একে অন্যের পিছনে লেগে থেকো না বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৩]
৬৪৩১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করো না। একে অন্যের পেছনে শত্রুতা করো না, একে অন্যের ছিদ্রান্বেষণ করো না, অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর তুমি ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করো না; বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে বসবাস করিতে থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৪]
৬৪৩২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা পরস্পরকে হিংসা করিবে না, একে অপরের সাথে শত্রুতা পোষণ করিবে না, সুপ্তদোষ সন্ধান করিবে না, গুপ্ত ভুল-ভ্রান্তি অনুসন্ধান করো না এবং পরস্পরকে ধোঁকায় ফেলবে না। আর তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভ্রাতৃ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৫]
৬৪৩৩. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সানাদে বর্ণিত যে, তোমরা একে অপরের সাথে আত্মীয়তা সম্পর্কচ্ছেদ করো না, একে অপরের পেছনে দুশমনি করো না, পরস্পরে বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পরে হিংসা করো না। আর তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই পরিণত হয়ে যাও, যেমন আল্লাহ তাআলা তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৬]
৬৪৩৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা পরস্পরে বিদ্বেষ করিবে না, একে অন্যের পেছনে শত্রুতায় আবদ্ধ হয়ো না, পরস্পরে লিপ্সা করিবে না বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৭]
১০. অধ্যায়ঃ মুসলিমের উপর যুলম করা , তাকে অপদস্ত করা, হেয় জ্ঞান করা হারাম এবং তার খুন, ইযযত-আবরু ও সম্পদও হারাম
৬৪৩৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর হিংসা করো না, পরস্পর ধোঁকাবাজি করো না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের ক্ষতি করার উদ্দেশে আগোচরে শত্রুতা করো না এবং একে অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করিবে না। তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো। এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার উপর অত্যাচার করিবে না, তাকে অপদস্ত করিবে না এবং হেয় প্রতিপন্ন করিবে না। তাক্ওয়া এখানে, এ কথা বলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিনবার তাহাঁর বক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করিলেন। একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় জ্ঞান করে। কোন মুসলিমের উপর প্রত্যেক মুসলিমের জান-মাল ও ইয্যত-আবরু হারাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৮]
৬৪৩৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ……. এরপর উসামাহ্ ইবনি যায়দ দাউদ-এর হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করিয়াছেন। তবে এ বর্ণনায় তিনি সামান্য কম-বেশি করিয়াছেন। তারা উভয়ে যতটুকু বাড়িয়ে বলেছেন, তা হচ্ছে “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের দেহকায় ও বাহ্যিক আকৃতির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তরসমূহের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন।” [এ বলে] তিনি তাহাঁর আঙ্গুলের মাধ্যমে স্বীয় বক্ষের দিকে ইঙ্গিত করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫৯]
৬৪৩৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক চাল-চলন ও বিত্ত-বৈভবের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৬০]
১১. অধ্যায়ঃ শত্রুতা ও পরস্পরকে পরিত্যাগ করা নিষিদ্ধ হওয়ার বিবরণ
৬৪৩৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। এরপর এমন সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়, যারা আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে না। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে শত্রুতা বিদ্যমান। এরপর বলা হইবে, এ দুজনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য অবকাশ দাও, এ দুজনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও, এ দুজনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৬১]
৬৪৩৯. সুহায়ল [রাদি.]-এর পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
মালিক-এর সানাদে তার হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে দারাওয়ার্দী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসে ইবনি আবদাহ্-এর বর্ণনায় [আরবী] “কিন্তু সম্পর্কচ্ছেদকারী দুব্যক্তিকে ক্ষমা করা হইবে না” উল্লেখ আছে। আর কুতাইবাহ্ [রাদি.] বলেছেন, [আরবী] [তবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী দুজনকে ক্ষমা করা হইবে না]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৬২]
৬৪৪০. মারফূ সানাদে আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার ও সোমবার আমাল পেশ করা হয়। তখন আল্লাহ তাআলা সেদিন প্রত্যেক এমন বান্দাকে ক্ষমা করেন, যারা তাহাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করে না। তবে এমন ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে শত্রুতা আছে। তখন বলা হইবে, এ দুজনকে অবকাশ দাও যতক্ষণ না তারা সংশোধনের দিকে ফিরে আসে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৬৩]
৬৪৪১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.]-এর সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মানুষের আমাল [সপ্তাহে দুবার] সোমবার ও বৃহস্পতিবার [আল্লাহর দরবারে] উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রত্যেক মুমিন বান্দাকে ক্ষমা করা হয়। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই-এর সাথে তার দুশমনি রয়েছে। তখন বলা হইবে, এ দুজনকে বর্জন করো অথবা অবকাশ দাও যতক্ষণ না তারা মীমাংসার প্রতি প্রত্যাবর্তন করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৬৪]
Leave a Reply