আত্মহত্যা করা মহাপাপ ও গনীমাতের মাল আত্মসাৎ করা
আত্মহত্যা করা মহাপাপ , যে ব্যক্তি যে বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৪৭. অধ্যায়ঃ আত্মহত্যা করা মহাপাপ , যে ব্যক্তি যে বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করিবে জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হইবে এবং মুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।
৪৮. অধ্যায়ঃ গনীমাতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম, ঈমানদার ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।
৪৯. অধ্যায়ঃ আত্মহত্যাকারী কাফির হইবে না তার প্রমাণ
৪৭. অধ্যায়ঃ আত্মহত্যা করা মহাপাপ , যে ব্যক্তি যে বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করিবে জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হইবে এবং মুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।
২০০. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করিবে জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা সে নিজের পেটে আঘাত করিতে থাকিবে, এভাবে তথায় সে চিরকাল অবস্থান করিবে। আর যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করিবে সে জাহান্নামে আগুনের মধ্যে অবস্থান করে উক্ত বিষপান করিতে থাকিবে, এভাবে তথায় সে চিরকাল অবস্থান করিবে। আর যে ব্যক্তি নিজে পাহাড় থেকে পড়ে আত্মহত্যা করিবে, সে ব্যক্তি সর্বদা পাহাড় থেকে নীচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পড়তে থাকিবে, এভাবে সে ব্যক্তি তথায় চিরকাল অবস্থান করিবে।
[ই.ফা. ২০১; ই.সে. ২০৮]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০১. যুহায়র ইবনি হার্ব, সাঈদ ইবনি আম্র আল আশআসী এবং ইয়াহ্ইয়া ইবনি হাবীব আল হারিসী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তাঁরা সকলে উপরোল্লিখিত সানাদে অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। শুবার বর্ণনায় সুলাইমানের সূত্রে বর্ণিত আছে, “আমি যাক্ওয়ানকে বলিতে শুনিয়াছি”।
[ই.ফা. ২০২; ই.সে. ২০৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২. সাবিত ইবনি যাহ্হাক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি [হুদাইবিয়াহ্ প্রান্তরে] গাছের নীচে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] এর হাতে বাইআত করিয়াছেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের উপর মিথ্যা কসম করে, সে সে দলেরই। আর যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করিবে, কিয়ামাত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হইবে। যে ব্যক্তি এমন বস্তুর মানৎ করে যার মালিক সে নয়, এরূপ মানৎ কার্যকরী নয়।
[ই.ফা. ২০৩; ই.সে. ২১০]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৩. সাবিত ইবনি যাহ্হাক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেছেন, সে বস্তুর মানৎ কার্যকরী নয়, যার মালিক সে নয়। মুমিনকে অভিশাপ করা তাকে হত্যা করার সমান। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করিবে কিয়ামাত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হইবে। যে ব্যক্তি সম্পদ বৃদ্ধির জন্য মিথ্যা দাবী করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য স্বল্পতাই বৃদ্ধি করবেন। আর যে ব্যক্তি বিচারকের সামনে দৃঢ়তার সাথে মিথ্যা শপথ করিবে [তাহাঁর অবস্থাও মিথ্যা দাবীদারের অনুরূপ হইবে]।
[ই.ফা. ২০৪; ই.সে. ২১১]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৪. সাবিত ইবনি যাহ্হাক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মের নামে মিথ্যা শপথ করিবে সে যেরূপ বলেছে সেরূপ হইবে। আর যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করিবে তাকে আল্লাহ তাআলা জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা শাস্তি দিবেন। এ হলো রাবী সুফ্ইয়ানের বর্ণনা। আর রাবী শুবার বর্ণনা হলো, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের নামে মিথ্যা শপথ করিবে সে যেরূপ বলেছে সেরূপই হইবে। যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা নিজেকে যাবাহ করিবে, কিয়ামাত দিবসে উক্ত জিনিস দ্বারা তাকে যাবাহ করা হইবে।
[ই.ফা. ২০৫; ই.সে. ২১২]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৫. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুনায়নের যুদ্ধে আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] এর সাথে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে দোযখী বলে চিহ্নিত করিলেন, যে আমাদের মাঝে মুসলিম হিসেবে পরিচিত ছিল। যখন আমরা যুদ্ধে লিপ্ত হলাম, ঐ লোকটি ভীষণভাবে যুদ্ধ করলো, সে আহত হয়ে গেলো। এ সময় কেউ এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! কিছুক্ষণ আগে আপনি যার সম্পর্কে বলেছিলেন যে, সে জাহান্নামী আজ সে ভীষণভাবে জিহাদ করে মারা গেছে। এ কথা শুনে নবি [সাঃআ:] বলিলেন, সে জাহান্নামে চলে গেছে। কিন্তু এতে কোন কোন মুসলিম সন্দেহে পতিত হলো। ইত্যবসরে কেউ এসে বলিল, লোকটি এখনও মরেনি, তবে সে মারাত্মকভাবে আহত। পরে যখন রাত হলো, সে জখমের যন্ত্রণা সহ্য করিতে না পেরে আত্মহত্যা করলো। নবি [সাঃআ:] কে এ সংবাদ জানানো হলো। তিনি বলিলেন, আল্লাহু আকবার, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিশ্চিত আল্লাহর বান্দা ও তাহাঁর রসূল। অতঃপর তিনি বিলাল [রাঃআ:]-কে নির্দেশ দিলেন তখন তিনি লোকদের মাঝে ঘোষণা করিলেন, মুসলিম ব্যতীত কোন ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না। অবশ্য আল্লাহ তাআলা পাপী ব্যক্তির দ্বারাও ও দ্বীনের সাহায্য ও শক্তি প্রদান করবেন।
[ই.ফা. ২০৬; ই.সে. ২১৩]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৬. সাহ্ল ইবনি সাদ আস্ সাইদী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
একবার রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] তাহাঁর সেনাবাহিনীর দিকে অগ্রসর হলে অপরপক্ষও তাহাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হলো। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-এর সঙ্গীদের মধ্যে সে সময় এমন এক ব্যক্তি ছিল যে, সেদিন বীরত্বের সাথে লড়েছিল। কোন কাফিরকে দেখামাত্র সে তার পিছনে লেগে যেতো এবং তরবারি দ্বারা খতম করে দিত। লোকেরা তার বীরত্ব দেখে বলাবলি করছিল যে, অমুক ব্যক্তি আজ যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে আমাদের কেউ তা পারেনি। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেন, মনে রেখো। সে ব্যক্তি জাহান্নামী। উপস্থিত লোকদের একজন বলিল, আমি সর্বক্ষণ তার সাথে থাকবো। তারপর সে ব্যক্তি তার পিছনে থাকলো। যেখানে সে থামত সেও তথায় থেমে যেতো। তখন সে দ্রুতবেগে কোথাও যেতো সেও তার সাথে দ্রুতবেগে তথায় গমন করতো। শেষ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মারাত্মকভাবে জখম হলো। তারপর ক্ষতের জ্বালার তীব্রতা সহ্য করিতে না পেরে ত্বরায় মৃত্যু কামনা করলো। সে তার তরবারি জমিনে রেখে এর অগ্রভাগ তার উভয় স্তনের মাঝামাঝি ঠেকিয়ে তার উপর ঝুঁকে পড়লো এবং নিজেকে হত্যা করলো। তাকে অনুসরণকারী লোকটি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-এর কাছে গেলো এবং সাক্ষ্য প্রদান করলো, নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রসূল। তিনি বলেন, ব্যাপার কি? সে বলিল, আপনি একটু আগে যে ব্যক্তিকে জাহান্নামী বলেছিলেন এবং লোকেরা এতে আশ্চর্যান্বিত হয়েছিল; আমি বলেছিলাম, আমি তার সাথে সাথে থেকে তোমাদেরকে খবর দিব। আমি অপেক্ষায় থাকলাম। অবশেষে সে মারাত্মকভাবে আহত হলো এবং ত্বরায় মৃত্যুর জন্য নিজের তরবারি জমিনে রেখে এর অগ্রভাগ তার উভয় স্তনের মাঝামাঝি ঠেকিয়ে দিল। তারপর এর উপর ঝুঁকে পড়লো এবং নিজেকে হত্যা করলো। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলিলেন, লোকের দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তি জান্নাতের কাজ করছে অথচ সে জাহান্নামী হয় আবার লোকের দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তি জাহান্নামের কাজ করছে অথচ সে জান্নাতবাসী।
[ই.ফা. ২০৭; ই.সে. ২১৪]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৭. শাইবান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আমি হাসান [রাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি, পূর্বের যুগে এক ব্যক্তির ফোঁড়া হয়েছিল, ফোঁড়ার যন্ত্রণা সহ্য করিতে না পেরে তার তূণ তেকে একটি তীর বের করলো। আর তা দিয়ে আঘাত করে করে ফোঁড়াটি চিরে ফেলল। তখন তা থেকে সজোরে রক্তক্ষরণ শুরু হলো, অবশেষে সে মারা গেল। তোমাদের প্রতিপালক বলেন, আমি তার উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। তারপর হাসান আপন হাত মাসজিদের দিকে প্রসারিত করে বলিলেন, আল্লাহর কসম! জুনদাব [ইবনি আবদুল্লাহ বাজালী] এ মাসজিদেই রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] থেকে এ হাদীসটি আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন।
[ই.ফা. ২০৮; ই.সে. ২১৫]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৮. হাসান [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
জুনদাব ইবনি আবদুল্লাহ আল বাজালী এ মাসজিদে বসেই আমাদেরকে নাসীহাত করিয়াছেন। তারপর আমরা তা ভুলে যাইনি। আর আমরা আশঙ্কা করি না যে, জুনদাব রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]–এর প্রতি মিথ্যারোপ করিয়াছেন। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের মধ্যে এক ব্যক্তির ফোঁড়া হয়েছিল ….. তার পরের অংশ উপরের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
[ই.ফা. ২০৯; ই.সে. ২১৬]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮. অধ্যায়ঃ গনীমাতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম, ঈমানদার ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।
২০৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআ:] বলেন, খাইবারে অমুক অমুক শাহীদ হয়েছেন। অবশেষে এক ব্যক্তি প্রসঙ্গে তাঁরা বলিলেন যে, সেও শাহীদ হয়েছে। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলিলেন, কখনই না। গনীমাতের মাল থেকে চাদর আত্মসাৎ করার কারণে আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি। তারপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলিলেন, হে খাত্তাবের পুত্র! যাও লোকেদের মাঝে ঘোষণা করে দাও যে, জান্নাতে কেবলমাত্র প্রকৃত মুমিন ব্যক্তিরাই প্রবেশ করিবে। উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআ:] বলেন, তারপর আমি বের হলাম এবং ঘোষণা করে দিলাম, “সাবধান! শুধুমাত্র প্রকৃত মুমিনরাই জান্নাতে প্রবেশ করিবে।”
[ই.ফা. ২১০; ই.সে. ২১৭]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২১০. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবি [সাঃআ:]-এর সাথে খাইবারের অভিযানে বের হলাম। আল্লাহ আমাদেরকে জয়যুক্ত করিলেন। গনীমাত হিসেবে আমরা স্বর্ণ বা রৌপ্য লাভ করিনি। বরং যা পেলাম তা ছিল আসবাবপত্র, খাদ্যদ্রব্য, কাপড়-চোপড় ইত্যাদি। অতঃপর আমরা ওখান থেকে এক সমভূমির দিকে রওয়ানা হলাম। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] এর সাথে তাহাঁর একটি গোলাম ছিল। জুযাম গোত্রের জনৈক ব্যক্তি গোলামটি তাঁকে উপহার দিয়েছিল। তাকে রিফাআহ্ ইবনি যায়দ নামে ডাকা হত। সে যুবায়ব গোত্রের লোক ছিল। যখন আমরা সমতল ভূমিতে অবতরণ করলাম, গোলামটি উঠে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-এর হাওদা খুলছিল। এমন সময় হঠাৎ একটি তীর এসে তার শরীরে বিদ্ধ হলো। আর তাতেই সে তৎক্ষণাৎ মারা গেলো। এ দেখে আমরা বলে উঠলাম : খুশীর বিষয় তার, মুবারক হোক! সে শাহাদাত লাভ করলো। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ কখনো নয়। সে মহান সত্তার কসম যাঁহার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! বণ্টন করা ছাড়াই খাইবার যুদ্ধের গণীমাত থেকে সে যে চাদর নিয়েছে তা আগুন হয়ে অবশ্যই তাকে দগ্ধ করিবে। তাহাঁর এ কথা শুনে সমস্ত লোক ভীত হয়ে পড়লো। এক ব্যক্তি জুতার একটি কিংবা দুটি ফিতা নিয়ে এসে বলিল হে আল্লাহর রসূল! আমি এটি খাইবারের দিন তুলে নিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলিলেন, এই একটি অথবা দুটি জুতার ফিতা আগুনের ফিতায় রূপান্তরিত হতো।
[ই.ফা. ২১১; ই.সে. ২১৮]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯. অধ্যায়ঃ আত্মহত্যাকারী কাফির হইবে না তার প্রমাণ
২১১. জাবির [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তুফায়ল ইবনি আম্র দাওসী [রাঃআ:] নবি [সাঃআ:]-এর সামনে উপস্থিত হয়ে প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি চান যে, আপনার জন্য একটি মাযবূত দুর্গ ও সেনাবাহিনী হোক? রাবী বলেন, দাওস গোত্রে জাহিলী যুগের একটি দূর্গ ছিল [তিনি এদিকে ইঙ্গিত করেন]। নবি [সাঃআ:] তা কবূল করিলেন না। কারণ, আল্লাহ তাআলা আনসারদের জন্য এ সৌভাগ্য নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। যখন নবি [সাঃআ:] মাদীনায় হিজরত করিলেন, তখন তুফায়ল ইবনি আমর [রাঃআ:] এবং তাহাঁর গোত্রের একজন লোকও তাহাঁর সঙ্গে মাদীনায় হিজরত করেন। কিন্তু মাদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল হয়নি। তুফায়ল ইবনি আমর [রাঃআ:]-এর সাথে আগত লোকটি অসুস্থ হয়ে পড়লো। সে রোগ যন্ত্রণা সহ্য করিতে না পেরে তীর নিয়ে তার হাতের আঙ্গুলগুলো কেটে ফেললো। এতে উভয় হাত থেকে রক্ত নির্গত হতে থাকে। অবশেষে সে মারা যায়। তুফায়ল ইবনি আম্র দাওসী [রাঃআ:] স্বপ্নে তাকে ভাল অবস্থায় দেখিতে পেলেন, কিন্তু তিনি তার উভয় হাত আবৃত দেখে তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার রব তোমার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছে? সে বলিল, আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নবি [সাঃআ:] এর কাছে হিজরত করার কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তুফায়ল [রাঃআ:] তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কি হয়েছে যে, আমি তোমার হাত দুটো আবৃত দেখছি? সে বলিল, আমাকে বলা হয়েছে যে, তুমি স্বেচ্ছায় যে অংশ নষ্ট করেছো তা আমরা কখনো ঠিক করব না। তুফায়ল [রাঃআ:] নবি [সাঃআ:]-এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করিলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] দুআ করিলেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি তার হাত দুটোকেও ক্ষমা করে দিন।
[ই.ফা. ২১২; ই.সে. ২১৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply