আত্নীয়তার হক আদায় ও কল্যাণ সাধন করা
আত্নীয়তার হক >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় -২ঃ আত্নীয়তার হক আদায় ও কল্যাণ সাধন করা
১৪৫৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক তার জীবিকা প্রশস্ত করিতে এবং আয়ু বৃদ্ধি করিতে চায়, সে যেন আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। {১৫৬৫}
{১৫৬৫} বোখারী ৫৯৮৫, তিরমিজি ১৯৭৯, আহম্মদ ৮৬৫১। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৫৫. যুবায়ের ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নাবী রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করিবে না। {১৫৬৬}
{১৫৬৬} বোখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ২৫৫৬, তিরমিজি ২৫০৯, আবু দাউদ ১৬৯৬, আহম্মদ ১৬২৯১, ১৬৩২২ । আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৫৬. মুগীরাহ বিন সাঈদ হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হারাম করিয়াছেন, মা-বাপের নাফরমানী করা, কন্যা সন্তানকে জীবিত ক্ববর দেয়া, সৎ পথে দান বন্ধ করা এবং দাও দাও বলাকে [বেশি বেশি চাওয়া]। আর তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করিয়াছেন যে, বলা হয়েছে, বলেছে, [এইরূপ বলা] এবং অতিরিক্ত প্রশ্ন করা ও সম্পদ অপচয় করা। {১৫৬৭}
{১৫৬৭} বোখারী ৫৯৭৫, ৮৪৪, ১৪৭৭, ২৪০৮, মুসলিম ৫৯৩, নাসাঈ ১৩৪১, ১৩৪২, ১৩৪৫, আবু দাউদ ১৫০৫, ৩০৭৯, আহম্মদ ১৭৬৭৩, ১৭৬৮১, দারিমী ১৩৪৯, ২৭৫১। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৫৭. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, মাতা-পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুটি [লাভ হয়], তাঁদের অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি রয়েছে। {১৫৬৮}
{১৫৬৮} তিরমিজি ১৯০০, ইবনি মাজাহ ২০৮৯, ৩৬৬৩, আহম্মদ ২১২১০, ২৬৯৮০। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৫৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সেই সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার প্রতিবেশী বা ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করিবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে। {১৫৬৯}
{১৫৬৯} বোখারী ১৩, মুসলিম ৪৫, তিরমিজি ২৫১৫, নাসাঈ ৫০১৬, ৫০১৭, ইবনি মাজাহ ৬৬, আহম্মদ ১১৫৯১, ১২৩৮৮, দারিমী ২৭৪০। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৫৯. আবদুল্লাহ [ইবনি মাসঊদ] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, কোন্গুনাহ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড়? তিনি বলিলেন, আল্লাহর জন্য অংশীদার দাঁড় করান। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। আমি বললাম, এতো সত্যিই বড় গুনাহ। আমি বললাম, তারপর কোন গুনাহ? তিনি উত্তর দিলেন, তুমি তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করিবে যে, সে তোমার সঙ্গে আহার করিবে। আমি আরয করলাম, এরপর কোন্টি? তিনি উত্তর দিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমার ব্যভিচার করা। {১৫৭০}
{১৫৭০} বোখারী ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, মুসলিম ৮৬, তিরমিজি ৩১৮২, ৩১৮৩, নাসাঈ ৪০১৩, ৪০১৪, ৪০১৫, আবু দাঊদ ২৩১০, আহম্মদ ৩৬০১, ৪০৯১। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬০. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের পিতা-মাতাকে গাল-মন্দ করা। জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহ রসূল! আপন পিতা-মাতাকে কোন লোক কিভাবে গাল-মন্দ করিতে পারে? তিনি বললেনঃ অন্যের পিতাকে গালি দেয়, তখন সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তখন সে তার মাকে গালি দেয়। {১৫৭১}
{১৫৭১} বোখারী ৫৯৭৩, মুসলিম ৯০, তিরমিজি ১৯২, আবু দাঊদ ৫১৪১, আহম্মদ ৬৪৯৩, ৬৮০১। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬১. আবু আইউব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোকের জন্য বৈধ নয় যে, সে তাই ভাই-এর সাথে তিন দিনের অধিক এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখবে যে, দুজনে দেখা হলেও একজন এদিকে আরেকজন ওদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখবে। তাহাদের মধ্যে যে আগে সালাম দিবে, সেই উত্তম লোক। {১৫৭২}
{১৫৭২} বোখারী ৬২৩৭, ৬০৭৭ মুসলিম ২৫৬০, তিরমিজি ১৯৩২, আবু দাঊদ ৪৯১১, আহম্মদ ২৩০১৭, মালেক ১৬৮২। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক সৎকর্ম সাদাক্বাহ সমতুল্য পূণ্য কাজ। {১৫৭৩}
{১৫৭৩} বোখারী ৬০২১, তিরমিজি ১৯৭০, আহম্মদ ১৪২৯৯, ১৪৪৬৩। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬৩. আবু যার্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন সৎ কাজকে কখনও তুচ্ছ মনে করিবে না, যদিও সো তোমার কোন [মুসলিম] ভাই-এর সাথে আনন্দের সাথে সাক্ষাৎকার হয়। [এটাকেও সৎকর্মের দিক থেকে তুচ্ছ মনে করা উচিৎ নয়।] {১৫৭৪}
{১৫৭৪} মুসলিম ২৬২৬, তিরমিজি ১৮৩৩, ইবনি মাজাহ ৩৬৬২, দারিমী ২০৭৯। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬৪. আবু যার্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোন তরকারী রান্না করিবে তখন তাতে পানি বেশি দিয়ে প্রতিবেশীর খবরগিরি করিবে। [অর্থাৎ প্রতিবেশীকে দিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে সর্বদা সচেতন ও সচেষ্ট থাকিবে। {১৫৭৫}
{১৫৭৫} বোখারী ৬০১৫, মুসলিম ২৬২৫, আহম্মদ ৫৫৫২। মুসলিমের বর্ণনায়, হাদিসের প্রথমে হে আবু যার! কথাটির উল্লেখ আছে। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের কোন পার্থিব বিপদ দূর করিবে আল্লাহ তাআলা তার পরকালের বিপদ হতে কোন বিপদ দূর করবেন। কেউ যদি কোন অভাবগ্রস্তকে সহযোগিতা দান করে তবে আল্লাহ তার ইহ ও পরকালের উভয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা দান করিবে। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাই-এর দোষ-ত্রুটি গোপন করিবে আল্লাহ তাআলা ইহকালে ও পরকালে তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ বান্দা তার মুসলিম ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে। {১৫৭৬}
{১৫৭৬} মুসলিম ২৬৯৯, ২৭০০, তিরমিজি ১৪২৫, ১৯৩০, ২৬৪৬, আবু দাঊদ ১৪৫৫, ৪৯৪৬, ইবনি মাজাহ ২২৫, আহম্মদ ৭৩৭৯, ৭৮৮২ দারিমী ৩৪৪। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬৬. আবু মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন কল্যাণকর বস্তুর সন্ধান দান করে, তার জন্য এ কল্যাণ সম্পাদনকারীর অনুরূপ পূণ্য রয়েছে। {১৫৭৭}
{১৫৭৭} মুসলিম ১৮৯৩, তিরমিজি ২৬৭১, আবু দাঊদ ৫১১৯, আহম্মদ ২৭৫৮৫, ২১৮৩৪, ২১৮৪৬। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৬৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি তোমাদের কাছে [আল্লাহর নামে] আশ্রয়প্রার্থী হয় তাকে আশ্রয় প্রদান কর। আর যে আল্লাহর নাম নিয়ে [শারীআত সম্মতভাবে] তোমাদের কাছে সাহায্য চায় তাকে সাহায্য কর। আর যে ব্যক্তি তোমার প্রতি কোন কল্যাণ করে তাকে তুমি তার প্রতিদান যথারীতি দাও আর তাতে সক্ষম না হলে তার জন্য নেক দুআ কর। {১৫৭৮}
{১৫৭৮} নাসাঈ ২৫৬৭, আবু দাঊদ ১৬৭২, ৫১০৯, আহম্মদ ৫৩৪২, বাইহাকী ৪র্থ খণ্ড ১৯৯ পৃষ্ঠা। আত্নীয়তার হক হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply