হার, মালা, কানের দুল এবং আংটি পরার বিধান

হার, মালা, কানের দুল এবং আংটি পরার বিধান

হার, মালা, কানের দুল এবং আংটি পরার বিধান >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৭৭, পোশাক-পরিচ্ছদ, অধ্যায়ঃ (৪৪-৬২)=১৯টি

৭৭/৪৪. অধ্যায়ঃ স্বর্ণখচিত গুটি
৭৭/৪৫. অধ্যায়ঃ স্বর্ণের আংটি
৭৭/৪৬. অধ্যায়ঃ রূপার আংটি প্রসঙ্গে।
৭৭/৪৭. অধ্যায়ঃ আংটি খুলে ফেলা
৭৭/৪৮. অধ্যায়ঃ আংটির মোহর প্রসঙ্গে।
৭৭/৪৯. অধ্যায়ঃ লোহার আংটি প্রসঙ্গে।
৭৭/৫০. অধ্যায়ঃ আংটিতে নক্‌শা অঙ্কণ করা।
৭৭/৫১. অধ্যায়ঃ কনিষ্ঠ আঙ্গুলে আংটি পরিধান।
৭৭/৫২. অধ্যায়ঃ কোন কিছুর উপর সীলমোহর করার উদ্দেশ্য অথবা আহলে কিতাব বা অন্য কারও নিকট পত্র লেখার উদ্দেশে আংটি তৈরী করা।
৭৭/৫৩. অধ্যায়ঃ যে লোক আংটির নাগিনা হাতের তালুর দিকে রাখে।
৭৭/৫৪. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ তাহাঁর আংটির নক্‌শার মত কেউ নক্‌শা বানাতে পারবে না।
৭৭/৫৫. অধ্যায়ঃ আংটির নক্‌শা কি তিন লাইনে অঙ্কণ করা যায়?
৭৭/৫৬. অধ্যায়ঃ মহিলাদের আংটি পরিধান করা।
৭৭/৫৭. অধ্যায়ঃ মহিলাদের হার পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার ও ফুলের মালা পরিধান করা।
৭৭/৫৮. অধ্যায়ঃ হার ধার নেয়া প্রসঙ্গে।
৭৭/৫৯. অধ্যায়ঃ মহিলাদের কানের দুল।
৭৭/৬০. অধ্যায়ঃ শিশুদের মালা পরিধান করানো।
৭৭/৬১. অধ্যায়ঃ পুরুষের নারীর বেশ ধারণ এবং নারীর পুরুষের বেশ ধারণ প্রসঙ্গে।
৭৭/৬২. অধ্যায়ঃ নারীর বেশধারী পুরুষদের ঘর থেকে বের করে দেয়া প্রসঙ্গে

৭৭/৪৪. অধ্যায়ঃ স্বর্ণখচিত গুটি

৫৮৬২

মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, তার পিতা মাখরামা (একদা) তাকে বললেনঃ হে প্রিয় বৎস! আমার কাছে খবর এসেছে যে, নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট কিছু কাবা এসেছে। তিনি সেগুলো বণ্টন করিয়াছেন। চলো, আমরা তাহাঁর কাছে যাই। আমরা গেলাম এবং নাবী (সাঃআঃ) -কে তাহাঁর বাসগৃহে পেলাম। আমাকে (আমার পিতা) বললেনঃ বৎস! নাবী (সাঃআঃ) -কে আমার কাছে ডাক। আমার নিকট কাজটি অতি কঠিন বলে মনে হল। আমি বললামঃ আপনার কাছে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে ডাকবো? তিনি বললেনঃ বৎস, তিনি তো কঠোর স্বভাবের লোক নন। যা হোক, আমি তাঁকে ডাকলাম। তিনি বেরিয়ে এলেন। তাহাঁর গায়ে তখন স্বর্ণের বোতাম লাগান মিহি রেশমী কাপড়ের কাবা ছিল। তিনি বললেনঃ হে মাখরামা! এটা আমি তোমার জন্যে সংরক্ষণ করেছিলাম। এরপর তিনি ওটা তাকে দিয়ে দিলেন। [৬](আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

[৬] সম্ভবতঃ এটি পুরুষের জন্য রেশম হারাম হওয়ার পূর্বের ঘটনা।

৭৭/৪৫. অধ্যায়ঃ স্বর্ণের আংটি

৫৮৬৩

বারাআ ইবনু আযিব (রাযিঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করেছেনঃ স্বর্ণের আংটি বা তিনি বলেছেন, স্বর্ণের বলয়, মিহি রেশম, মোটা রেশম ও রেশম মিশ্রিত কাপড়, রেশম এর তৈরী লাল রঙের হাওদা, রেশম মিশ্রিত কিস্‌সী কাপড় ও রৌপ্য পাত্র। আর তিনি আমাদের সাতটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেনঃ রোগীর শুশ্রূষা, জানাযার অনুসরণ করা, হাঁচির উত্তর দেয়া, সালামের জবাব দেয়া, দাওয়াত গ্রহণ করা, শপথকারীর শপথ পূরণে সাহায্য করা এবং মাযলূম ব্যক্তির সাহায্য করা।(আঃপ্রঃ- ৫৪২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩২)

৫৮৬৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বাশীর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) -কে রকমই বর্ণনা করিতে শুনেছেন। [মুসলিম ৩৭/১১, হাদীস ২০৮৯] আঃপ্রঃ- ৫৪২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৩)

৫৮৬৫

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) স্বর্ণের একটি আংটি ব্যবহার করেন। আংটির মোহর হাতের তালুর দিকে ঘুরিয়ে রাখেন। লোকেরা ঐ রকমই (আংটি) ব্যবহার করা শুরু করিল। নাবী (সাঃআঃ) স্বর্ণের আংটিটি ফেলে দিয়ে রৌপ্যের আংটি বানিয়ে নিলেন। [৫৮৬৬, ৫৮৬৭, ৫৮৭৩, ৫৮৭৬, ৬৬৫১, ৭২৯৮; মুসলিম ৩৭/১১, হাদীস ২০৯১, আহমাদ ৫৮৫৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৪)

৭৭/৪৬. অধ্যায়ঃ রূপার আংটি প্রসঙ্গে।

৫৮৬৬

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ স্বর্ণের একটি আংটি পরেন। আংটিটির মোহর হাতের তালুর ভিতরের দিকে ঘুরিয়ে রাখেন। তাতে তিনি مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ খোদাই করেছিলেন। লোকেরাও এ রকম আংটি ব্যবহার করিতে শুরু করেন। যখন তিনি দেখলেন যে, তারাও ঐ রকম আংটি ব্যবহার করছে, তখন তিনি তা ছুঁড়ে ফেলে দেন এবং বলেনঃ আমি আর কখনও এটা ব্যবহার করব না। এরপর তিনি একটি রূপার আংটি ব্যবহার করেন। লোকেরাও রূপার আংটি পরা শুরু করে। ইবনু উমার বলেনঃ নাবী সাঃআঃ -এর পরে আবু বাকর , তারপর উমার ও তারপর উসমান তা ব্যবহার করিয়াছেন। শেষে উসমান -এর হাত) থেকে আংটিটি আরীস নামক কূপের মধ্যে পড়ে যায়। [৫৮৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৫)

৭৭/৪৭. অধ্যায়ঃ আংটি খুলে ফেলা

৫৮৬৭

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) স্বর্ণের একটি আংটি ব্যবহার করিতেন। এরপর তা বাদ দেন এবং বলেনঃ আমি আর কখনো সেটা ব্যবহার করব না। লোকেরাও তাদের আংটি খুলে ফেলে দেয়।(আঃপ্রঃ- ৫৪৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৬)

৫৮৬৮

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, তিনি একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর হাতে রৌপ্যের একটি আংটি দেখেছেন। তারপর লোকেরাও রৌপ্যের আংটি তৈরি করে এবং ব্যবহার করে। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) পরে তাহাঁর আংটি বর্জন করেন। লোকেরাও তাদের আংটি বর্জন করেন।

যুহরীর সূত্রে ইবরাহীম ইবনু সাদ, যিয়াদ ও শুআয়ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) -ও এ রকম বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৭)

৭৭/৪৮. অধ্যায়ঃ আংটির মোহর প্রসঙ্গে।

৫৮৬৯

হুমাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস (রাদি.) -এর নিকট জিজ্ঞেস করা হয় যে, নাবী (সাঃআঃ) আংটি পরেছেন কিনা? তিনি বললেনঃ নাবী (সাঃআঃ) এক রাতে এশার সলাত আদায় করিতে অর্ধরাত পর্যন্ত দেরী করেন। এরপর তিনি আমাদের মাঝে আসলেন। আমি যেন তাহাঁর আংটির ঔজ্জ্বল্য দেখিতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ লোকজন সলাত আদায় করে শুয়ে গেছে। আর যতক্ষণ থেকে তোমরা সলাতের জন্য অপেক্ষারত আছ; ততক্ষণ তোমরা সলাতের ভিতরেই আছ। [৫৭২; মুসলিম ৫/৩৯, হাদীস ৬৪০, আহমাদ ১৩৮২০] আঃপ্রঃ- ৫৪৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৮)

৫৮৭০

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, আল্লাহর নাবী (সাঃআঃ) -এর আংটি ছিল রৌপ্যের। আর তাহাঁর নাগিনাটিও ছিল রৌপ্যের।

ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, হুমায়দ, আনাস (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকেও বর্ণনা করিয়াছেন। [৬৫; মুসলিম ৩৭/১১, হাদীস ২০৯২] আঃপ্রঃ- ৫৪৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৯)

৭৭/৪৯. অধ্যায়ঃ লোহার আংটি প্রসঙ্গে।

৫৮৭১

সাহল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট এসে বললঃ আমি নিজেকে হিবা করে দেয়ার জন্য এসেছি। এ কথা বলে সে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। তিনি তাকালেন ও মাথা নীচু করে রাখলেন। মহিলাটির দাঁড়িয়ে থাকা দীর্ঘ হলে এক ব্যক্তি বললঃ আপনার যদি প্রয়োজন না থাকে, তবে একে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ তোমার কাছে মাহর দেয়ার মত কিছু আছে কি? সে বললঃ না। তিনি বললেনঃ খুঁজে দেখ। সে চলে গেল। কিছু সময় পর ফিরে এসে বললঃ আল্লাহর কসম! আমি কিছুই পেলাম না। তিনি বললেনঃ আবার যাও এবং খোঁজ করো, একটি লোহার আংটি হলেও (আন)। সে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বললঃ কসম আল্লাহর! কিছুই পেলাম না, একটি লোহার আংটিও না। তার পরনে ছিল একটি মাত্র লুঙ্গি, তার উপর চাদর ছিল না। সে আরয করলঃ আমি এ লুঙ্গিটি তাকে দান করে দেব। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমার লুঙ্গি যদি সে পরে তবে তোমার পরনে কিছু থাকে না। আর যদি তুমি পর, তবে তার গায়ে এর কিছুই থাকে না। এরপর লোকটি একটু দূরে সরে গিয়ে বসে পড়ল। এরপর নাবী (সাঃআঃ) দেখলেন যে, সে পিঠ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে। তখন তিনি তাকে ডাকার জন্যে হুকুম দিলেন। তাকে ডেকে আনা হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কি কুরআনের কিছু মুখস্থ আছে? সে বললঃ অমুক অমুক সুরা। সে সুরাগুলোকে গণনা করে শুনাল। তিনি বললেনঃ তোমার কাছে কুরআনের যা কিছু মুখস্থ আছে, তার পরিবর্তে মেয়ে লোকটিকে তোমার অধীনে দিয়ে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৫৪৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪০)

৭৭/৫০. অধ্যায়ঃ আংটিতে নক্‌শা অঙ্কণ করা।

৫৮৭২

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর নাবী (সাঃআঃ) অনারব একটি দলের কাছে বা কিছু লোকের কাছে পত্র লিখতে চাইলেন। তখন তাঁকে বলা হল যে, তারা এমন পত্র গ্রহণ করে না যার উপর মোহরাঙ্কিত থাকে না। তখন নাবী সাঃআঃ রৌপ্যের একটি আংটি তৈরী করেন। তাতে অঙ্কিত ছিল مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ [বর্ণনাকারী আনাস বলেনঃ] আমি যেন এখনও (নাবী সাঃআঃ) -এর আঙ্গুলে বা তাহাঁর হাতে সে আংটির ঔজ্জ্বল্য প্রত্যক্ষ করছি। [৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪১)

৫৮৭৩

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ রৌপ্যের একটি আংটি তৈরী করেন। সেটি তাহাঁর হাতে ছিল। এরপর তা আবু বাকর -এর হাতে আসে। অতঃপর তা উমার -এর হাতে আসে। অতঃপর তা উসমান -এর হাতে আসে। শেষ পর্যন্ত তা আরীস নামক এক কূপের মধ্যে পড়ে যায়। তাতে অঙ্কিত ছিল محَمَّدٌ رَسُوْل اللهِ। [৫৮৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪২)

৭৭/৫১. অধ্যায়ঃ কনিষ্ঠ আঙ্গুলে আংটি পরিধান।

৫৮৭৪

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) একটি আংটি তৈরী করেন। তারপর তিনি বলেনঃ আমি একটি আংটি তৈরী করেছি এবং তাতে একটি নকশা করেছি। সুতরাং কেউ যেন নিজের আংটিতে নকশা না করে। তিনি (আনাস) বলেনঃ আমি যেন তাহাঁর কনিষ্ঠ আঙ্গুলে আংটিটির ঔজ্জ্বল্য প্রত্যক্ষ করছি।(আঃপ্রঃ- ৫৪৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৩)

৭৭/৫২. অধ্যায়ঃ কোন কিছুর উপর সীলমোহর করার উদ্দেশ্য অথবা আহলে কিতাব বা অন্য কারও নিকট পত্র লেখার উদ্দেশে আংটি তৈরী করা।

৫৮৭৫

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী সাঃআঃ যখন রোম সম্রাটের নিকট পত্র লিখতে মনস্থ করেন, তখন তাঁকে বলা হল, আপনার পত্র যদি মোহরাঙ্কিত না হয়, তবে তারা তা পাঠ করে না। এরপর তিনি রৌপ্যের একটি আংটি বানান এবং তাতে محَمَّدٌ رَسُوْل اللهِ খোদাই করা ছিল। [আনাস বলেন] আমি যেন এখনও) তাহাঁর হাতে সে আংটির শুভ্রতা প্রত্যক্ষ করছি। [৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৪)

৭৭/৫৩. অধ্যায়ঃ যে লোক আংটির নাগিনা হাতের তালুর দিকে রাখে।

৫৮৭৬

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) স্বর্ণের একটি আংটি তৈরী করেন। যখন তিনি তা পরিধান করিতেন, তখন তার নাগিনা হাতের তালুর দিকে রাখতেন। লোকেরাও স্বর্ণের আংটি তৈরী শুরু করিল। এরপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলী প্রকাশ করার পর বলেনঃ আমি এ আংটি তৈরী করেছিলাম। কিন্তু তা আর পরিধান করব না। এরপর তিনি তা ছুঁড়ে ফেলেন। লোকেরাও (তাদের আংটি) ছুঁড়ে ফেলল।

জুওয়ায়রিয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ আমার ধারণা যে, বর্ণনাকারী (নাফি) এ কথাও বলেছেন যে, আংটিটি তাহাঁর ডান হাতে ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৫)

৭৭/৫৪. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ তাহাঁর আংটির নক্‌শার মত কেউ নক্‌শা বানাতে পারবে না।

৫৮৭৭

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ রৌপ্যের একটি আংটি তৈরী করেন। তাতে محَمَّدٌ رَسُوْل اللهِ এর নকশা অঙ্কন করেন। এরপর তিনি বলেনঃ আমি একটি রৌপ্যের আংটি বানিয়েছি এবং তাতে محَمَّدٌ رَسُوْل اللهِ এর নকশা অঙ্কন করেছি। সুতরাং কেউ যেন তার আংটিতে এ নকশা অঙ্কণ না করে। [৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৬)

৭৭/৫৫. অধ্যায়ঃ আংটির নক্‌শা কি তিন লাইনে অঙ্কণ করা যায়?

৫৮৭৮

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু বাকর যখন খলীফা নির্বাচিত হন, তখন তিনি তাহাঁর [আনাস -এর] কাছে যাকাতের পরিমাণ সম্পর্কে) একটি পত্র লেখেন। আংটিটির নক্শা তিন লাইনে ছিল। এক লাইনে ছিল مُحَمَّدُ এক লাইনে ছিল,رَسُوْلআর এক লাইনে ছিল اللهِ। [১৪৪৮] আঃপ্রঃ- ৫৪৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৭)

৫৮৭৯

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বলেনঃ আহমাদের সূত্রে আনাস (রাদি.) থেকে এ কথা অতিরিক্ত বর্ণিত আছে। তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর আংটি (তাহাঁর জীবদ্দশায়) তাহাঁর হাতেই ছিল। তাহাঁর (মৃত্যুর) পরে তা আবু বকর (রাদি.) -এর হাতে থাকে। আবু বকর (রাদি.) -এর (ইন্তিকালের) পরে তা উমর (রাদি.) -এর হাতে থাকে। যখন উসমান (রাদি.) -এর কাল আসল, তখন (একবার) তিনি ঐ আংটি হাতে নিয়ে আরীস নামক কূপের উপর বসেন। আংটিটি বের করে নাড়াচাড়া করছিলেন। হঠাৎ তা (কূপের মধ্যে) পড়ে যায়। আনাস (রাদি.) বলেন, আমরা তিনদিন যাবৎ উসমান (রাদি.) -এর সাথে তালাশ করলাম, কূপের পানি ফেলে দেয়া হলো, কিন্তু আংটিটি আর পেলাম না।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৭)

৭৭/৫৬. অধ্যায়ঃ মহিলাদের আংটি পরিধান করা।

আয়েশা (রাদি.) -এর স্বর্ণের কয়েকটি আংটি ছিল।

৫৮৮০

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি নাবী (সাঃআঃ) -এর সঙ্গে এক ঈদে হাজির ছিলাম। তিনি খুতবার আগেই সলাত আদায় করিলেন।

আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বলেনঃ ইবনু ওয়াহব, ইবনু জুরায়জ থেকে এতটুকু অধিক বর্ণনা করিয়াছেন যে, এরপর তিনি স্ত্রীলোকদের নিকট আসেন। তাঁরা (সদাকাহ হিসেবে) বিলাল (রাদি.) –এর কাপড়ে মালা ও আংটি ফেলতে লাগল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৮)

৭৭/৫৭. অধ্যায়ঃ মহিলাদের হার পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার ও ফুলের মালা পরিধান করা।

৫৮৮১

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) ঈদের দিনে বের হলেন এবং (ঈদের) দুরাকাত সলাত আদায় করিলেন। তার পূর্বে এবং পরে আর কোন নফল সলাত আদায় করেননি। তারপর তিনি মহিলাদের নিকট আসেন এবং তাদের সদাকাহ করার জন্যে নির্দেশ দেন। মহিলারা তাদের হার ও মালা সদাকাহ করিতে থাকল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৪৯)

৭৭/৫৮. অধ্যায়ঃ হার ধার নেয়া প্রসঙ্গে।

৫৮৮২

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (একবার কোন এক সফরে) আসমার একটি হার (আমার নিকট থেকে) হারিয়ে যায়। নাবী (সাঃআঃ) কয়েকজন পুরুষ লোককে তার খোঁজে পাঠান। এমন সময় সলাতের সময় উপস্থিত হয়। তাদের কারও অযু ছিল না এবং তারা পানিও পেল না। কাজেই অযু ছাড়াই তাঁরা সলাত আদায় করে নিলেন। (ফিরে এসে) তাঁরা নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট বিষয়টি উল্লেখ করিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করিলেন। [৩৩৪]

ইবনু নুমায়র হিশামের সূত্রে এ কথা অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন যে, ঐ হার আয়েশা (রাদি.) আসমা (রাদি.) থেকে ধার নিয়েছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫০)

৭৭/৫৯. অধ্যায়ঃ মহিলাদের কানের দুল।

ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) (একবার) মহিলাদের সদাকাহ করার নির্দেশ দেন। তখন আমি দেখলাম, তারা তাদের নিজ নিজ কান ও গলার দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

৫৮৮৩

ইবনু আবাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) (একবার) ঈদের দিনে দুরাকআত সলাত আদায় করেন। না এর আগে তিনি কোন সলাত আদায় করেন, না এর পরে। অতঃপর তিনি মহিলাদের কাছে আসেন, তখন তাহাঁর সাথে ছিলেন বিলাল (রাদি.) তিনি মহিলাদেরকে সদাকাহ করার নির্দেশ প্রদান করেন। তারা নিজেদের কানের দুল নিক্ষেপ করিতে লাগল। (আঃপ্রঃ- ৫৪৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫১)

৭৭/৬০. অধ্যায়ঃ শিশুদের মালা পরিধান করানো।

৫৮৮৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সঙ্গে মাদীনাহর কোন এক বাজারে ছিলাম। তিনি (বাজার থেকে) ফিরলেন। আমিও ফিরলাম। তিনি বললেনঃ ছোট শিশুটি কোথায়? এ কথা তিনবার বলিলেন। হাসান ইবনু আলীকে ডাক। দেখা গেল হাসান ইবনু আলী হেঁটে চলেছে। তাহাঁর গলায় ছিল মালা। নাবী (সাঃআঃ) এভাবে তাহাঁর হাত উঠালেন। হাসানও এভাবে নিজের হাত উঠালো। তারপর তিনি তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহ! আমি একে ভালবাসি, আপনিও তাকে ভালবাসুন এবং যে ব্যক্তি তাকে ভালবাসে, তাকেও আপনি ভালবাসুন। আবু হুরাইরা (রাদি.) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর এ কথা বলার পর থেকে হাসান ইবনু আলীর চেয়ে অন্য কেউ আমার কাছে অধিকতর প্রিয় হয়নি।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫২)

৭৭/৬১. অধ্যায়ঃ পুরুষের নারীর বেশ ধারণ এবং নারীর পুরুষের বেশ ধারণ প্রসঙ্গে।

৫৮৮৫

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ঐ সব পুরুষকে লানত করিয়াছেন যারা নারীর বেশ ধরে এবং ঐসব নারীকে যারা পুরুষের বেশ ধরে। (আ.প্র. ৫৪৫৭, ই.ফা. ৫৩৫৩)

আমরও এরকমই বর্ণনা করিয়াছেন। আমাদের কাছে শুয়বা এ সংবাদ দিয়েছেন।

৭৭/৬২. অধ্যায়ঃ নারীর বেশধারী পুরুষদের ঘর থেকে বের করে দেয়া প্রসঙ্গে

৫৮৮৬

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) পুরুষ হিজড়াদের উপর এবং পুরুষের বেশধারী মহিলাদের উপর লানত করিয়াছেন। তিনি বলেছেনঃ ওদেরকে ঘর থেকে বের করে দাও। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেনঃ নাবী (সাঃআঃ) অমুককে বের করিয়াছেন এবং উমার (রাদি.) অমুককে বের করে দিয়েছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫৪)

৫৮৮৭

উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) একদা তাহাঁর ঘরে ছিলেন। তখন ঐ ঘরে এক হিজড়া ছিল। সে উম্মু সালামাহর ভাই আবদুল্লাহকে বললঃ হে আবদুল্লাহ! আগামীকাল তায়েফের উপর যদি তোমরা জয়ী হও, তবে আমি তোমাকে বিনত গাইলানকে দেখাব। সে সামনের দিকে আসলে, (তার পেটে) চার ভাঁজ দেখা যায়। আর যখন সে পিছনের দিকে যায়, তখন (তার পিঠে) আট ভাঁজ দেখা যায়। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ ওরা যেন তোমাদের কাছে কক্ষনো না আসে।(আঃপ্রঃ- ৫৪৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫৫)

Comments

Leave a Reply