অযু ভঙ্গের কারন সমূহ এবং যেসব কারনে ওজু ভঙ্গ হয় না
অযু ভঙ্গের কারন সমূহ এবং যেসব কারনে ওজু ভঙ্গ হয় না >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ১, পবিত্রতা, হাদীস (১৫২-১৮৭)
১০৯.পরিচ্ছেদঃ মযী কখন উযূ নষ্ট করে এবং কখন করে না
১১০.পরিচ্ছেদঃ পায়খানা-পেশাবান্তে উযূ
১১১.পরিচ্ছেদঃ পায়খানার পর উযূ
১১২.পরিচ্ছেদঃ বাতাস নির্গমনে উযূ
১১৩.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রার কারণে উযূ
১১৪.পরিচ্ছেদ ঃতন্দ্রার বর্ণনা
১১৫.পরিচ্ছেদঃ পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করার কারনে উযূ
১১৬.পরিচ্ছেদ ঃপুরুষাঙ্গ স্পর্শ করায় উযূ না করা
১১৭.পরিচ্ছেদঃ কামভাব ব্যতীত কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীকে স্পর্শ করলে উযূ না করা
১১৮.পরিচ্ছেদ ঃ চুম্বনের পরে উযূ না করা
১১৯.পরিচ্ছেদঃ আগুনে জ্বাল দেয়া বস্তু আহার করাতে উযূ করা
১২০.পরিচ্ছেদ ঃ আগুনে সিদ্ধ বস্তু খাওয়ার পর উযূ না করা
১২১.পরিচ্ছেদঃ ছাতু খাওয়ার পর কুলি করা
১২২.পরিচ্ছেদ ঃ দুধ পান করার পর কুলি করা
১০৯.পরিচ্ছেদঃ মযী কখন উযূ নষ্ট করে এবং কখন করে না
১৫২. আবু আবদূর রহমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আলী [রাঃআঃ] বলেছেন,আমি এমন ছিলাম যে,প্রায় আমার মযী {১} নির্গত হতো, আর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কন্যা আমার সহধর্মিণী হওয়ায় আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করতাম। অতএব আমি আমার পার্শ্বে উপবিষ্ট এক ব্যক্তিকে এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করিতে বললাম। সে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ এতে উযূ করিতে হইবে।
{১} পেশাবের আগে বা পরে এবং সামান্য কামোত্তেজনার ফলে যে পাতলা সামান্য আঠাল পানি পুরুষাঙ্গ থেকে বের হয়,তাকে মযী বা বীর্যরস বলে। তা বের হলে উযূ ভঙ্গ হয়।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৫৩. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন,আমি মিকদাদকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করুন যে, যদি কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীর সাথে আমোদ করে এবং তদ্দরূন তার মযী নির্গত হয় অথচ সে সহবাস করেনি, তাহলে সে কি করিবে? কেননা তাহাঁর কন্যা আমার সহধর্মিণী হওয়ায় আমি জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করি। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সে ব্যক্তি তার লজ্জাস্থান ধৌত করিবে এবং নামাজের ন্যায় উযূর ন্যায় উযূ করিবে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৪. আয়িশ ইবনি আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আলী [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার প্রায়ই মযী নির্গত হতো। রাসূললুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কন্যা আমার সহধর্মিণী হওয়ায় আম্মার ইবনি ইয়াসিরকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর নিকট জিজ্ঞাসা করিতে অনুরোধ করলাম। তিনি উত্তরে বলিলেন, এর জন্য উযূ করলেই চলবে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৫৫. রাফি ইবনি খাদীজ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আলী [রাঃআঃ] আম্মারকে আনুরোধ করিলেন, তিনি যেন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে মযীর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ সে ব্যক্তি তার লজ্জাস্থান ধৌত করিবে ও উযূ করিবে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৫৬. মিকদাদ ইবনি আসওয়াদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আলী [রাঃআঃ] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করার জন্য অনুরোধ করিলেন যে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর নিকটবর্তী হলে যদি তদ্দরূন মযী নির্গত হয়,তাহলে তার কি করিতে হইবে? কারণ তাহাঁর কন্যা আমার সহধর্মিণী থাকায় আমি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করি। তারপর আমি এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তোমাদের কারও এরূপ হয় তাহলে সে যেন স্বীয় লজ্জাস্থান ধৌত করে আর নামাজের উযূর ন্যায় উযূ করে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৭. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ ফাতিমা [রাঃআঃ] আমার বিবাহাধীন থাকায় মযী সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করতাম। অতএব আমি মিকদাদ ইবনি আসওয়াদকে অনুরোধ করলাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এতে উযূ করিতে হইবে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১০.পরিচ্ছেদঃ পায়খানা-পেশাবান্তে উযূ
১৫৮. আসিম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি যির ইবন হুবায়শকে বর্ণনা করিতে শুনেছেন, তিনি বলেনঃ আমি সাফওয়ান ইবন আস্সাল নামক এক ব্যক্তির নিকট আসলাম এবং তার দরজায় বসে রইলাম। তিনি বের হয়ে বলিলেন, তোমার খবর কি ? আমি বললাম, ইল্মের সন্ধানে এসেছি। তিনি বলিলেন, ইল্ম অন্বেষণকারীর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ফেরেশতাগণ ডানা বিছিয়ে দেন। তারপর তিনি বলিলেন, কোন বিষয় তুমি জিজ্ঞাসা করিতে চাও? আমি বললাম, মোজা পরিধান সম্বন্ধে। তিনি বলিলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সফরে আসতাম, তিনি আমাদের আদেশ করিতেন, আমরা যেন একমাত্র জানাবাত ব্যতীত, পায়খানা-পেশাব এবং নিদ্রার কারণে তিন দিন পর্যন্ত তা না খুলি।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১১১.পরিচ্ছেদঃ পায়খানার পর উযূ
১৫৯. যির্ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ সাফওয়ান ইব্ন আস্সাল [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমরা যখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সফরে বের হতাম তখন তিনি আমাদের আদেশ করিতেন আমরা যেন একমাত্র জানাবাত ব্যতীত পায়খানা-পেশাব এবং নিদ্রার কারণে তিন দিন পর্যন্ত তা না খুলি।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১১২.পরিচ্ছেদঃ বাতাস নির্গমনে উযূ
১৬০. আব্দুল্লাহ ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট অভিযোগ করিল, সে নামাজে কিছু অনুভব করে। {১} তিনি বললেনঃ সে নামাজ পরিত্যাগ করিবে না যতক্ষন না গন্ধ বা শব্দ শুনতে পায়। {২}
{১} বায়ু নির্গমন হয়েছে বলে সন্দেহ করে। {২} বায়ু নির্গমন হয়েছে বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস হয়। নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৩.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রার কারণে উযূ
১৬১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যখন নিদ্রা হইতে জাগ্রত হয় তখন সে যেন তার হাত পানির পাত্রে প্রবিষ্ট না করায় যতক্ষণ না তার উপর তিনবার পানি ঢালে, কেননা সে জানে না তার হাত রাত্রে কোথায় ছিল।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৪.পরিচ্ছেদ ঃতন্দ্রার বর্ণনা
১৬২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তির নামাজে তন্দ্রা আসে, তবে সে যেন হালকাভাবে নামাজ শেষ করে চলে যায়। কেননা অজ্ঞাতসারে সে হয়ত নিজের উপরেই বদদোয়া করে বসবে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৫.পরিচ্ছেদঃ পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করার কারনে উযূ
১৬৩. আবদুল্লাহ ইব্ন আবু বকর ইব্ন আমর ইবস হাযম হইতে বর্ণীত
তিনি উরাওয়া ইবন যুবায়রকে বলিতে শুনেছেন যে, আমি মারওয়ান ইবন হাকাম-এর নিকট এসে কোন কোন কারণে উযূ করিতে হয় তা জিজ্ঞাসা করলাম। মারওয়ান বললেনঃ পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে উযূ করিতে হইবে। উরওয়া বলিলেন, আমি তা অবগত নই। মারওয়ান বললেনঃ বুসরা বিন্তে সাফওয়ান [রাঃআঃ] আমাকে বলেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ স্বীয় পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করে তখন তার উযূ করা উচিত।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪. যুহ্রী [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি আবু বকর ইব্ন আমর ইব্ন হায্ম [রহঃ] আমাকে বলেছেন, তিনি উরওয়া ইব্ন যুবায়রকে বলিতে শুনেছেন যে, মারওয়ান তার মদীনায় শাসনকালে উল্লেখ করিয়াছেন, কোন ব্যক্তি স্বীয় হস্ত দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে সে উযূ করিবে। আমি অস্বীকার করলাম এবং বললাম, যে ব্যক্তি তা স্পর্শ করে, তার উযূ করিতে হইবে না। তখন মারওয়ান বলিলেন, বুসরা বিন্তে সাফওয়ান আমাকে বলেছেন যে, তিনি যে যে কারণে উযূ করিতে হয় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে তা উল্লেখ করিতে শুনেছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন যে, আর পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে উযূ করিতে হইবে। উরওয়া বলেনঃ অতএব আমি এ ব্যাপারে মারওয়ানের সাথে বিতর্কে লিপ্ত রইলাম। অবশেষে তিনি তার দেহরক্ষীদের একজনকে ডেকে বুস্রার নিকট প্রেরন করিলেন। সে বুস্রাকে মারওয়ানের নিকট তিনি যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন সে সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিল। বুসরা তার নিকট ঐরূপই বলে পাঠালেন যেরূপ মারওয়ান আমার নিকট বুস্রা থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৬.পরিচ্ছেদ ঃপুরুষাঙ্গ স্পর্শ করায় উযূ না করা
১৬৫. তালক ইব্ন আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমরা আমাদের গোত্রের প্রতিনিধি হিসাবে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম, তারপর তার নিকট বায়আত গ্রহণ করলাম এবং তাহাঁর সঙ্গে নামাজ আদায় করলাম। নামাজ শেষ হলে এক ব্যক্তি আসলো, মনে হলো যেন সে একজন গ্রাম্য লোক। সে বলিল, ইয়া রসূলুল্লাহ! কোন ব্যক্তি নামাজে পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে তার সম্বন্ধে আপনার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ এটা তোমার শরীরের এক টুকরা গোশত বৈ আর কি? অথবা তিনি বললেনঃ তা তোমাদের শরীরের একটি অংশ। {১}
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৭.পরিচ্ছেদঃ কামভাব ব্যতীত কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীকে স্পর্শ করলে উযূ না করা
১৬৬. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিতেন আর আমি জানাযার ন্যায় তাহাঁর সামনে শায়িত থাকতাম। এমনকি তিনি যখন সিজদা দিতে ইচ্ছা করিতেন তখন আমাকে তাহাঁর পা দ্বারা স্পর্শ করিতেন।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি দেখেছি, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে আড়াআড়ি শুয়ে আছি আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিতেন। যখন তিনি সিজদা করিতে মনস্থ করিতেন আমার পা স্পর্শ করিতেন। আমি তা আমার দিকে টেনে নিতাম। তারপর তিনি সিজদা করিতেন।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে শায়িত থাকতাম আর আমার পদদ্বয় তার কিবলার দিকে থাকত। যখন তিনি সিজদা করিতেন আমাকে স্পর্শ করিতেন আর আমি আমার পদদ্বয় টেনে নিতাম আর যখন তিনি দাঁড়াতেন তখন আমি তা মেলে দিতাম। আর ঘরে তখন কোন বাতি থাকত না।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ এক রাতে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বিছানায় পাচ্ছিলাম না। তখন আমি আমার হাত দ্বারা তাঁকে খুঁজতে লাগলাম। তখন আমার হাত তার পদযুগলের উপর পতিত হলো। তখন তাহাঁর পা খাড়া ছিল আর তিনি ছিলেন সিজদারত। তিনি বলছিলেনঃ
أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ، وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
আউযূ বিরিযা-কা মিন সাখাত্বিকা ওয়া বিমু’আ-ফা-তিকা মিন ‘উকূবাতিকা ওয়া আ’ঊযুবিকা মিনকা লা- আহসী সানা-য়ান ‘আলায়কা আনতা কামা- আসনায়তা ‘আলা-নাফসিকা
“[হে আল্লাহ!] আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি তোমার ক্রোধ হইতে তোমার সন্তুষ্টির, তোমার শাস্তি থেকে তোমার ক্ষমার আর আমি তোমার আশ্রয় গ্রহণ করছি তোমা হইতে। তোমার প্রশংসা করে আমি শেষ করিতে পারব না, তুমি নিজে ঐরূপ, যেরূপ তুমি নিজের প্রশংসা করেছ। ”
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৮.পরিচ্ছেদ ঃ চুম্বনের পরে উযূ না করা
১৭০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জনৈক স্ত্রীকে চুম্বন করিতেন, পরে নামাজ আদায় করিতেন কিন্তু তিনি উযূ করিতেন না।
আবু আবদুর রহমান বলেনঃএ অধ্যায়ে এর চেয়ে উত্তম হাদিস আর নেই যদিও হাদিসটি মুরসাল। এ হাদিসটি আ’মাশ-হাবীব ইবনি আবু সাবিত থেকে এবং তিবি উরওয়া থেকে এবং তিনি আয়িশাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াহইয়া কাত্তান বলেনঃহাবীবের এ হাদিসটি, যা তিনি উরওয়া থেকে এবং উরওয়া আয়িশাহ [রাঃআঃ] এবং হাবীবের থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। অন্য একটি হাদিস,যা তিনি উরওয়া থেকে এবং উরওয়া আয়িশাহ[রাঃআঃ] থেকে এই মর্মে বর্ণনা করিয়াছেন যে, “মুস্তাহাযা মহিলা নামাজ আদায় করিবে যদিও রক্তের ফোঁটা বিছানায় টপকায়”-এর কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। {১}
{১} সম্ভবত এজন্য যে, হাবীব ও উরওয়া-এর মধ্যে ইনকিতা’ রয়েছে। ঈমাম তিরমিযী [রহঃ] ঈমাম বুখারী [রহঃ] সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ঈমাম আবু দাউদ [রহঃ] হাবীব-এর বর্ণনা উরওয়া থেকে, তিনি আয়িশাহ [রাঃআঃ] থেকে এ সনদ দু’টি বিশুদ্ধ বলে মত ব্যক্ত করিয়াছেন এবং সনদের সমালোচনার উত্তর দিয়েছেন। ঈমাম শাওকানী [রহঃ] বলেছেন, এ হাদিসের সনদ প্রমাণিত। –অনুবাদক নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১৯.পরিচ্ছেদঃ আগুনে জ্বাল দেয়া বস্তু আহার করাতে উযূ করা
১৭১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আগুনে জ্বাল দেয়া বস্তু আহার করলে উযূ করিবে। {২}
{২} এখানে উযূ করার অর্থ হচ্ছে হাত মুখ ধৌত করা।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭২. আবু হুরাইরা[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা আগুনে জ্বাল দেয়া বস্তু আহার করলে উযূ করিবে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৩. আবদুল্লাহ ইবনি ইবরাহীম ইবনি ক্বারিয [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-কে মসজিদের ছাদে উযূ করিতে দেখেছি। তিনি বলিলেন,আমি কয়েক টুকরা পণীর খেয়েছি,তাই আমি উযূ করলাম। কেননা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আগুনে জ্বাল দেয়া বস্তু আহার করাতে উযূ করার নির্দেশ দিতে শুনিয়াছি।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৪. আবদুর রহমান ইবনি আমর আল-আওযাঈ[রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি মুত্তালিব ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি হানতাব [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আগুন স্পর্শ করার কারণে আমাকে কি ঐ খাদ্যের জন্য উযূ করিতে হইবে যাকে আমি আল্লাহর কিতাবে [কুরআনে] হালাল পেয়েছি? এতদশ্রবণে আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] কতকগুলো পাথর টুকরা একত্র করিলেন এবং বললেনঃ আমি এই কংকর পরিমাণ সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা উযূ করিবে ঐ সকল বস্তু হইতে যা আগুন স্পর্শ করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৫. আবু হুরাইরা[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা উযূ করিবে ঐ সকল বস্তু আহার করলে যা আগুন স্পর্শ করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৬. আবু আইয়্যূব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী[সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা উযূ করিবে ঐ সকল বস্তু আহার করলে যা আগুন পরিবর্তন করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৭. আবু তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা উযূ করিবে ঐ সকল বস্তু আহার করলে যা আগুন পরিবর্তন করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৮. আবু তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা উযূ কর ঐ সকল বস্তু আহার করার জন্য যা আগুন দ্বারা রান্না করা হয়েছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯. যায়দ ইবনি সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে,তোমরা উযূ করিবে ঐ সকল বস্তু আহার করলে যা আগুন স্পর্শ করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮০. আবু সুফয়ান ইবনি সাঈদ ইবনি আখনাস ইবনি শারীক [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি একবার তাহাঁর খালা নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী উম্মে হাবীবা [রাঃআঃ]-এর নিকট গেলেন। তিনি [উম্মে হাবীবা] তাঁকে ছাতু খাওয়ালেন। পরে তাকে বললেনঃ হে ভাগ্নে! উযূ করে নাও। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা উযূ কর ঐ সকল বস্তু আহার করলে যা আগুন স্পর্শ করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮১. আবু সুফয়ান ইবনি সাঈদ ইবনি আখনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন যে,রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী উম্মে হাবীবা [রাঃআঃ] তাকে ছাতু খাওয়ার পর বলেছিলেন, হে ভাগ্নে,তুমি উযূ করে নাও। কারণ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃতোমরা উযূ কর ঐ সকল বস্তু আহার করলে যা আগুন স্পর্শ করেছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২০.পরিচ্ছেদ ঃ আগুনে সিদ্ধ বস্তু খাওয়ার পর উযূ না করা
১৮২. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [বকরির] কাঁধের গোশত আহার করিলেন, তারপর বিলাল [রাঃআঃ] এলে তিনি নামাজ আদায় করিতে গেলেন। অথচ তিনি পানি স্পর্শ করিলেন না।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৩. সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি উম্মে সালামার নিকট গেলাম। তিনি আমার নিকট বর্ণনা করিলেন যে,রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্বপ্নদোষ ব্যতীত [সহবাস জনিত কারণে] জানাবাত অবস্থায় ভোর করিতেন এবং সিয়ামও পালন করিতেন। বর্ণনাকারী রাবীদের মধ্যে খালিদ বলেন যে, এ হাদিসের সাথে এ-ও বর্ণনা করিয়াছেন যে, একদা উম্মে সালামা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট ভূনা গোশত রাখলেন। তিনি তা হইতে কিছু খেলেন। পরে নামাজের জন্য প্রস্তুত হলেন কিন্তু উযূ করিলেন না।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম। তিনি রুটি ও গোশত খেলেন। পরে নামাজের জন্য গেলেন কিন্তু উযূ করিলেন না।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৫. মুহাম্মদ ইবনি মুনকাদির [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, যে সকল বস্তুকে আগুনে স্পর্শ করেছে তা আহার করার পরে উযূ করা ও না করার মধ্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর শেষ কাজটি ছিল উযূ না করা।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২১.পরিচ্ছেদঃ ছাতু খাওয়ার পর কুলি করা
১৮৬. বুশারয় ইবনি ইয়াসার [রহঃ] হইতে বর্ণীত
সুয়ায়দ ইবনি নুমান [রাঃআঃ] তাঁকে সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি খায়বার যুদ্ধের বৎসর একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বের হলেন। যখন তাঁরা সাহবা নামক স্থানে পৌঁছলেন-আর তা খায়বারের শেষ সীমায় অবস্থিত, তখন তিনি আসরের নামাজ আদায় করিলেন। পরে তিনি কিছু খাদ্যদ্রব্য চাইলে তাহাঁর নিকট কেবল ছাতু পরিবেশন করা হলো। তাহাঁর আদেশক্রমে তা পানির সাথে মিশানো হলো,তারপর তিনি তা খেলেন আর আমরাও তা খেলাম। তারপর তিনি মাগরিবের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত হলেন এবং কুলি করিলেন আর আমরাও কুলি করলাম। পরে নামাজ আদায় করিলেন অথচ আর উযূ করিলেন না।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২২.পরিচ্ছেদ ঃ দুধ পান করার পর কুলি করা
১৮৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ দুধ পান করার পর পানি চাইলেন এবং তা দ্বারা কুলি করিলেন এবং বললেনঃ ওতে চর্বি আছে।
নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply