অংশীদারিত্ব – খাদ্য, পশু, জমি, স্বর্ণ-রৌপ্য, লটারি করা

অংশীদারিত্ব – খাদ্য, পশু, জমি, স্বর্ণ-রৌপ্য, লটারি করা

অংশীদারিত্ব – খাদ্য, পশু, জমি, স্বর্ণ-রৌপ্য, লটারি করা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৪৭, অংশীদারিত্ব, অধ্যায়ঃ (১-১৬)=১৬টি

৪৭/১. অধ্যায়ঃ খাদ্য, পাথেয় এবং দ্রব্য সামগ্রীতে অংশ গ্রহণ।
৪৭/২. অধ্যায়ঃ কোন জিনিসের দুই জন অংশীদার থাকলে তারা যাকাত দানের পর তা আনুপাতিক হারে ভাগ করে নিবে।
৪৭/৩. অধ্যায়ঃ ছাগল ও ভেড়া ভাগ করা
৪৭/৪. অধ্যায়ঃ এক সাথে খেতে বসলে সাথীর অনুমতি ছাড়া এক সাথে দুটো করে খেজুর ভক্ষণ করা (নিষিদ্ধ)।
৪৭/৫. অধ্যায়ঃ শরীকদের মাঝে এজমালি দ্রব্যে উচিত দাম নির্ধারণ সম্পর্কে।
৪৭/৬. অধ্যায়ঃ লটারির মাধ্যমে অংশ নিরূপণ ও ভাগ করা যাবে কিনা?
৪৭/৭. অধ্যায়ঃ ইয়াতিম ও উত্তরাধিকারীদের অংশীদারিত্ব।
৪৭/৮. অধ্যায়ঃ জমি (বাড়ী বাগান) ইত্যাদিতে অংশীদারিত্ব।
৪৭/৯. অধ্যায়ঃ যদি অংশীদাররা ঘর, বাগান ইত্যাদি ভাগ করে নেয় তবে পুনরায় একত্রিত করার এবং শুফআ দাবি করার হক তাদের থাকে না।
৪৭/১০. অধ্যায়ঃ স্বর্ণ-রৌপ্য ও নগদ আদান প্রদানের বস্তুতে অংশীদারিত্ব।
৪৭/১১. অধ্যায়ঃ ভাগচাষে যিম্মী ও মুশরিকদের অংশীদার করা।
৪৭/১২. অধ্যায়ঃ ছাগল ভেড়ার ইনসাফের ভিত্তিতে ভাগ করা।
৪৭/১৩. অধ্যায়ঃ খাদ্য-দ্রব্য প্রভৃতিতে অংশীদারিত্ব।
৪৭/১৪. অধ্যায়ঃ কৃতদাস দাসীতে অংশীদারিত্ব।
৪৭/১৫. অধ্যায়ঃ কুরবানীর জানোয়ার ও উটে অংশগ্রহন
৪৭/১৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি ভাগ করার সময় দশটি বকরীকে একটা উটের সমান মনে করে।

৪৭/১. অধ্যায়ঃ খাদ্য, পাথেয় এবং দ্রব্য সামগ্রীতে অংশ গ্রহণ।

মাপ ও ওজনের দ্রব্য কিরূপে বিতরণ করা হইবে। অনুমানের ভিত্তিতে নাকি মুঠো মুঠো করে? যেহেতু মুসলমানেরা সফরের জিনিসপত্রে এটা কোন দূষণীয় মনে করেন না যে, কোন দ্রব্য সে খাবে, (অর্থাৎ যার যেটা পছন্দ সে তা ভক্ষণ করিবে এতে দোষের কিছু নেই। তেমনিভাবে স্বর্ণ রৌপ্য অনুমানের ভিত্তিতে বন্টন ও এক সাথে জোড়া খেজুর ভক্ষণ করা)।

২৪৮৩. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সমুদ্র তীর অভিমুখে বাহিনী প্রেরণ করেন এবং আবু উবায়দা ইবনু জাররাহ (রাদি.)-কে তাদের সেনাপতি নিয়োগ করিলেন। এ বাহিনীতে তিনশ লোক ছিলেন। আমি তাদের মধ্যে ছিলাম। আমরা রওয়ানা হলাম। কিন্তু মাঝপথেই আমাদের পাথেয় শেষ হয়ে গেল। তখন আবু উবায়দা (রাদি.) দলের সকলকে নিজ নিজ খাদ্যদ্রব্য এক জায়গায় জমা করার নির্দেশ দিলেন। তাই সমস্ত খাদ্যদ্রব্য জমা করা হল। এতে মোট দুথলে খেজুর জমা হল। আবু উবায়দা (রাদি.) প্রতিদিন আমাদের এই খেজুর হইতে কিছু কিছু করে খেতে দিলেন। অবশেষে তাও শেষ হওয়ার উপক্রম হল এবং জনপ্রতি একটা করে খেজুর ভাগে পড়তে লাগল। (রাবী বলেন) আমি [জাবির (রাদি.)-কে] বললাম, একটা খেজুর কি যথেষ্ট হত। তিনি বলিলেন, তার মূল্য তখন বুঝতে পারলাম যখন তাও শেষ হয়ে গেল। তিনি বলেন, এরপর আমরা সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। হঠাৎ ছোট পাহাড়ের ন্যায় একটা মাছ আমরা পেয়ে গেলাম এবং এ বাহিনী আঠারো দিন পর্যন্ত এই মাছ হইতে খেল। তারপর আবু উবায়দা (রাদি.)-এর আদেশে সে মাছের পাঁজর হইতে দুটো কাঁটা দাঁড় করানো হল। তারপর তিনি হাওদা লাগাতে বলিলেন। হাওদা লাগানো হল। এরপর উট তার পাঁজরের নীচ দিয়ে চলে গেল কিন্তু উটের দেহ সে দুটো কাঁটা স্পর্শ করিল না।

২৪৮৪.সালামা ইবনু আকওয়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সফরে লোকেদের পাথেয় কমে গিয়েছিল এবং তারা অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তখন তারা নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট তাদের উট যবেহ করার অনুমতি নেয়ার জন্য এলেন। নাবী (সাঃআঃ) তাদের অনুমতি দিলেন। তারপর তাদের সঙ্গে উমর (রাদি.)-এর সাক্ষাৎ হলে তারা তাঁকে এ খবর দিলেন। তিনি বলিলেন, উট শেষ হয়ে যাবার পর তোমাদের বাঁচার কি উপায় থাকবে? তারপর উমর (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! উট শেষ হয়ে যাবার পর তাদের বাঁচার কী উপায় হইবে? তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, লোকেদের কাছে ঘোষণা করে দাও যে, যাদের কাছে অতিরিক্ত যে খাদ্য সামগ্রী আছে, তা যেন আমার কাছে নিয়ে আসে। এর জন্য একটা চামড়া বিছিয়ে দেয়া হল। তারা সেই চামড়ার উপর তা রাখলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) দাঁড়িয়ে তাতে বরকতের জন্য দুআ করিলেন। এরপর তিনি তাদেরকে তাদের পাত্রগুলো নিয়ে আসতে বলিলেন, লোকেরা দুহাত ভর্তি করে করে নিল। সবার নেয়া শেষ হলে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর রাসুল।

২৪৮৫.রাফি ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সাথে আসরের সালাত আদায় করে উট যবেহ করতাম। তারপর সে গোশত দশ ভাগে ভাগ করা হত এবং সূর্যাস্তের পূর্বেই আমরা রান্না করা গোশত আহার করতাম।

২৪৮৬. আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, আশআরী গোত্রের লোকেরা যখন জিহাদে গিয়ে অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ে বা মদীনাতেই তাদের পরিবার পরিজনদের খাবার কম হয়ে যায়, তখন তারা তাদের যা কিছু সম্বল থাকে, তা একটা কাপড়ে জমা করে। তারপর একটা পাত্র দিয়ে মেপে তা নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে নেয়। কাজেই তারা আমার এবং আমি তাদের।

৪৭/২. অধ্যায়ঃ কোন জিনিসের দুই জন অংশীদার থাকলে তারা যাকাত দানের পর তা আনুপাতিক হারে ভাগ করে নিবে।

২৪৮৭.আনাস (ইবনু মালিক) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যাকাতের বিধান হিসাবে যা নির্দিষ্ট করেছিলেন, আবু বকর (রাদি.) তা আমাকে লিখে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, যেখানে দুজন অংশীদার থাকে (যাকাত প্রদানের পর) তারা দুজনে নিজ নিজ অংশ আদান-প্রদান করে নেবে।

৪৭/৩. অধ্যায়ঃ ছাগল ও ভেড়া ভাগ করা

২৪৮৮. রাফি ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে যুল-হুলায়ফাতে ছিলাম। সাহাবীগণ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন, তারা কিছু উট ও বকরী পেলেন। রাফী (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) দলের পিছনে ছিলেন। তারা তাড়াহুড়া করে গনীমতের মাল বণ্টনের পূর্বে সেগুলোকে যবেহ করে পাত্রে চড়িয়ে দিলেন। তারপর নাবী (সাঃআঃ)-এর নির্দেশে পাত্র উলটিয়ে ফেলা হল। তারপর তিনি (গনীমতের মাল ) বণ্টন শুরু করিলেন। তিনি একটি উটের সমান দশটি বকরী নির্ধারণ করেন। হঠাৎ একটি উট পালিয়ে গেল। সাহাবীগণ উটকে ধরার জন্য ছুটলেন, কিন্তু উটটি তাঁদেরকে ক্লান্ত করে ছাড়ল। সে সময় তাঁদের নিকট অল্প সংখ্যক ঘোড়া ছিল। অবশেষে তাঁদের মধ্যে একজন সেটির প্রতি তীর ছুড়লেন। তখন আল্লাহ উটটাকে থামিয়ে দিলেন। তারপর নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, নিশ্চয়ই পলায়নপর বন্য জন্তুদের মতো এ সকল চতুস্পদ জন্তুর মধ্যে কতক পলায়নপর হয়ে থাকে। কাজেই যদি এসব জন্তুর কোনটা তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠে তবে তার সাথে এরূপ করিবে। (রাবী বলেন), তখন আমার দাদা [রাফি (রাদি.)] বলিলেন, আমরা আশঙ্কা করছি যে, কাল শত্রুর সাথে মুকাবিলা হইবে। আর আমাদের নিকট কোন ছুরি নেই। তাই আমরা ধারাল বাঁশ দিয়ে যবেহ করিতে পারব কি? নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, যে বস্তু রক্ত প্রবাহিত করে এবং যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়, সেটা তোমরা আহার করিতে পার। কিন্তু দাঁত বা নখ দিয়ে যেন যবেহ না করা হয়। আমি তোমাদেরকে এর কারন বলে দিচ্ছি। দাঁত তো হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।

৪৭/৪. অধ্যায়ঃ এক সাথে খেতে বসলে সাথীর অনুমতি ছাড়া এক সাথে দুটো করে খেজুর ভক্ষণ করা (নিষিদ্ধ)।

২৪৮৯. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) (এক সাথে খেতে বসে) সঙ্গীদের অনুমতি ব্যতীত কাউকে এক সঙ্গে দুটো করে খেজুর খেতে নিষেধ করিয়াছেন।

২৪৯০. জাবালা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা মদীনায় ছিলাম। একবার আমরা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ি। তখন ইবনু যুবাইর (রাদি.) আমাদেরকে (প্রত্যহ) খেজুর খেতে দিতেন। একদিন ইবনু উমর (রাদি.) আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। (আমাদের খেজুর খেতে দেখে) তিনি বলিলেন, তোমরা এক সাথে দুটো করে খেজুর খেও না। কেননা, নাবী (সাঃআঃ) কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ব্যতীত দুটো করে খেজুর খেতে নিষেধ করিয়াছেন।

৪৭/৫. অধ্যায়ঃ শরীকদের মাঝে এজমালি দ্রব্যে উচিত দাম নির্ধারণ সম্পর্কে।

২৪৯১.ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, (শরীকী) গোলাম হইতে কেউ নিজের অংশ আযাদ করে দিলে এবং তার কাছে গোলামের ন্যায্য মূল্য পরিমাণ অর্থ থাকলে সে গোলাম (সম্পূর্ণ) আযাদ হয়ে যাবে (তবে আযাদকারী ন্যায্য মূল্যে শরীকদের ক্ষতিপূরণ দিবে) আর সে পরিমাণ অর্থ না থাকলে যতটুকু সে মুক্ত করিবে ততটুকুই মুক্ত হইবে।

২৪৯২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, কেউ তার (শরীক) গোলাম হইতে অংশ আযাদ করে দিলে তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে নিজস্ব অর্থে সেই গোলামকে পূর্ণ আযাদ করা। যদি তার প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকে, তাহলে গোলামের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করিতে হইবে। তারপর (অন্য শরীকদের অংশ পরিশোধের জন্য) তাকে উপার্জনে যেতে হইবে, তবে তার উপর অতিরিক্ত কষ্ট চাপানো যাবে না।

৪৭/৬. অধ্যায়ঃ লটারির মাধ্যমে অংশ নিরূপণ ও ভাগ করা যাবে কিনা?

২৪৯৩. নুমান ইবনু বাশীর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, যে মহান আল্লাহর নির্ধারিত সীমার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং যে সীমা লঙ্ঘন করে, তাদের দৃষ্টান্ত সেই যাত্রীদলের মতো, যারা কুরাআর মাধ্যমে এক নৌযানে নিজেদের স্থান নির্ধারণ করে নিল। তাদের কেউ স্থান পেল উপর তলায় আর কেউ নীচ তলায় (পানির ব্যবস্থা ছিল উপর তলায়) কাজেই নীচের তলার লোকেরা পানি সংগ্রহ কালে উপর তলার লোকদের ডিঙ্গিয়ে যেত। তখন নীচ তলার লোকেরা বলিল, উপর তলার লোকদের কষ্ট না দিয়ে আমরা যদি নিজেদের অংশে একটি ছিদ্র করে নেই (তবে ভাল হয়) এমতাবস্থায় তারা যদি এদেরকে আপন মর্জির উপর ছেড়ে দেয় তাহলে সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি তারা এদের হাত ধরে রাখে (বিরত রাখে) তবে তারা এবং সকলেই রক্ষা পাবে।

৪৭/৭. অধ্যায়ঃ ইয়াতিম ও উত্তরাধিকারীদের অংশীদারিত্ব।

২৪৯৪. উরওয়াহ ইবনু যুবাইর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি একবার আয়েশা (রাদি.)-কে আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি সুবিচার করিতে পারবে না তাহলে অন্য মহিলাদের মধ্য হইতে তোমাদের পছন্দ মতো দুজন বা তিনজন কিংবা চারজনকে বিয়ে করিতে পার”- (আন-নিসা : ৩)। এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, আমার ভাগিনা! এ হচ্ছে, সেই ইয়াতীম মেয়ের কথা, যে অভিভাবকের আশ্রয়ে থাকে এবং তার সম্পদে অংশীদার হয়। এদিকে মেয়ের ধন-রূপে মুগ্ধ হয়ে তার অভিভাবক মোহরানার ব্যাপারে সুবিচার না করে অর্থাৎ অন্য কেউ যে পরিণাম মোহরানা দিতে রাজী হত, তা না দিয়েই তাকে বিয়ে করিতে চাইত। তাই প্রাপ্য মোহরানা আদায়ের মাধ্যমে সুবিচার না করা পর্যন্ত তাদেরকে আশ্রিতা ইয়াতীম বালিকাদের বিয়ে করিতে নিষেধ করা হয়েছে এবং পছন্দমত অন্য মহিলাদেরকে বিয়ে করিতে বলা হয়েছে। উরওয়াহ (রাদি.) বলেন, আয়েশা (রাদি.) বলেছেন, পরে সাহাবীগণ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট (মহিলাদের সম্পর্কে) ফতোয়া জিজ্ঞেস করিলেন তখন আল্লাহ তাআলা আয়াত নাযিল করেন- “ তারা আপনার নিকট মহিলাদের সম্পর্কে ফতোয়া জিজ্ঞেস করে, আপনি বলুন, আল্লাহই তাদের সম্পর্কে তোমাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আর ইয়াতীম মেয়েদের সম্পর্কে কিতাব হইতে তোমাদেরকে পাঠ করে শোনানো হয়, তাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ রয়েছে, তা তোমরা তাদের দাও না অথচ তাদের তোমরা বিয়ে করিতে চাও” – (আন-নিসা : ১২৭) (আরবী) বলে আল্লাহ তাআলা পূর্বোক্ত আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করিয়াছেন; যেখানে বলা হয়েছে- (আরবী) “আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করিতে পারবে না, তাহলে অন্য নারীদের মধ্যে হইতে তোমাদের পছন্দ মতো দুজন বা তিনজন কিংবা চারজন বিয়ে করিতে পারবে”। আয়েশা (রাদি.) বলেন, আর অপর আয়াতে আল্লাহ তাআলার ইরশাদ এর মর্ম হল, “ধন ও রূপের সল্পতা হেতু তোমাদের আশ্রিতা ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি তোমাদের অনাগ্রহ”। তাই ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি অনাগ্রহ সত্তেও শুধু ধন–রূপের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাদের বিয়ে করিতে নিষেধ করা হয়েছে। অবশ্য ন্যায়সঙ্গত মোহরানা আদায় করে বিয়ে করিতে পারে।

৪৭/৮. অধ্যায়ঃ জমি (বাড়ী বাগান) ইত্যাদিতে অংশীদারিত্ব।

২৪৯৫. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে সব (স্থাবর) সম্পত্তি এখনো ভাগ করা হয়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে নাবী (সাঃআঃ) শুফআ এর (তথা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার) বিধান দিয়েছেন। এরপর সীমানা ঠিক করা হলে এবং পথ আলাদা করে নেয়া হলে শুফআর অধিকার থাকে না।

৪৭/৯. অধ্যায়ঃ যদি অংশীদাররা ঘর, বাগান ইত্যাদি ভাগ করে নেয় তবে পুনরায় একত্রিত করার এবং শুফআ দাবি করার হক তাদের থাকে না।

২৪৯৬. জাবীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সব ধরনের অবণ্টিত স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে শুফআর ফায়সালা দিয়েছেন। এরপর সীমানা নির্ধারণ করে পথ আলাদা করে নেয়া হলে শুফআর অধিকার থাকে না।

৪৭/১০. অধ্যায়ঃ স্বর্ণ-রৌপ্য ও নগদ আদান প্রদানের বস্তুতে অংশীদারিত্ব।

২৪৯৭. আবু মুসলিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবুল মিনহাল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে মুদ্রার নগদ বিনিময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমি এবং আমার এক অংশীদার একবার কিছু মুদ্রা নগদে ও বাকিতে বিনিময় করেছিলাম। এরপর বারা ইবনু আযিব (রাদি.) আমাদের কাছে এলে আমরা তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমি এবং আমার অংশীদার যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) এরূপ করেছিলাম। পরে নাবী (সাঃআঃ)-কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলিলেন, নগদে যা বিনিময় করেছ, তা বহাল রাখ, আর বাকীতে যা বিনিময় করেছ, তা ফিরিয়ে নাও।

২৪৯৮. আবু মুসলিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবুল মিনহাল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে মুদ্রার নগদ বিনিময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমি এবং আমার এক অংশীদার একবার কিছু মুদ্রা নগদে ও বাকিতে বিনিময় করেছিলাম। এরপর বারা ইবনু আযিব (রাদি.) আমাদের কাছে এলে আমরা তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমি এবং আমার অংশীদার যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) এরূপ করেছিলাম। পরে নাবী (সাঃআঃ)-কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলিলেন, নগদে যা বিনিময় করেছ, তা বহাল রাখ, আর বাকীতে যা বিনিময় করেছ, তা ফিরিয়ে নাও।

৪৭/১১. অধ্যায়ঃ ভাগচাষে যিম্মী ও মুশরিকদের অংশীদার করা।

২৪৯৯. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) খায়বারের জমি এ শর্তে ইয়াহুদীদের দিয়েছিলেন যে, তারা নিজেদের শ্রমে তাতে চাষাবাদ করিবে, তার বিনিময়ে উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক তাদের হইবে।

৪৭/১২. অধ্যায়ঃ ছাগল ভেড়ার ইনসাফের ভিত্তিতে ভাগ করা।

২৫০০. উকবাহ ইবনু আমির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কুরবানীর কিছু বকরী সাহাবীদের মাঝে ভাগ করার জন্য তাকে (দায়িত্ব) দিয়েছিলেন। ভাগ করা শেষে এক বছর বয়সী একটা ছাগল রয়ে গেল। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে সে কথা জানালে তিনি ইরশাদ করিলেন, ওটা তুমিই কুরবানী কর।

৪৭/১৩. অধ্যায়ঃ খাদ্য-দ্রব্য প্রভৃতিতে অংশীদারিত্ব।

যুলুম

বর্ণিত আছে যে, জনৈক ব্যক্তি কোন জিনিসের দাম করছিল এমন সময় এক ব্যক্তি তাকে চোখের ইশারায় (অংশীদারিত্বের প্রস্তাব) করিল। এ ঘটনায় উমর (রাদি.) দ্বিতীয় ব্যক্তির অনুকূলে অংশীদারিত্বের রায় দিলেন।

২৫০১. আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন। তার মা যায়নাব বিনতে হুমাইদ (রাদি.) একবার তাকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! একে বায়আত করে নিন। তিনি বলিলেন, সে তো ছোট। তখন তিনি তার মাথায় হাত বুলালেন এবং তার জন্য দুআ করিলেন। (একই সনদে) যুহরা ইবনু মাবাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে আরো বর্ণিত আছে যে, তার দাদা আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাদি.) তাকে নিয়ে বাজারে যেতেন, খাদ্য সামগ্রী খরিদ করিতেন। পথে ইবনু উমর (রাদি.) ও ইবনু যুবাইর (রাদি.)-এর সাথে দেখা হলে তারা তাকে বলিতেন (আপনার সাথে ব্যবসায়ে) আমাদেরও শরীক করে নিন। কেননা, নাবী (সাঃআঃ) আপনার জন্য বরকতের দুআ করিয়াছেন। এ কথায় তিনি তাদের শরীক করে নিতেন। অনেক সময় (লভ্যাংশ হিসাবে) এক উট বোঝাই মাল তিনি ভাগে পেতেন আর তা বাড়ীতে পাঠিয়ে দিতেন।

২৫০২.আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন। তার মা যায়নাব বিনতে হুমাইদ (রাদি.) একবার তাকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! একে বায়আত করে নিন। তিনি বলিলেন, সে তো ছোট। তখন তিনি তার মাথায় হাত বুলালেন এবং তার জন্য দুআ করিলেন। (একই সনদে) যুহরা ইবনু মাবাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে আরো বর্ণিত আছে যে, তার দাদা আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাদি.) তাকে নিয়ে বাজারে যেতেন, খাদ্য সামগ্রী খরিদ করিতেন। পথে ইবনু উমর (রাদি.) ও ইবনু যুবাইর (রাদি.)-এর সাথে দেখা হলে তারা তাকে বলিতেন (আপনার সাথে ব্যবসায়ে) আমাদেরও শরীক করে নিন। কেননা, নাবী (সাঃআঃ) আপনার জন্য বরকতের দুআ করিয়াছেন। এ কথায় তিনি তাদের শরীক করে নিতেন। অনেক সময় (লভ্যাংশ হিসাবে) এক উট বোঝাই মাল তিনি ভাগে পেতেন আর তা বাড়ীতে পাঠিয়ে দিতেন।

৪৭/১৪. অধ্যায়ঃ কৃতদাস দাসীতে অংশীদারিত্ব।

২৫০৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, (শরীকী) গোলাম হইতে কেউ নিজের অংশ আযাদ করে দিলে সেই গোলামের সম্পূর্ণটা আযাদ করা তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে। যদি তার কাছে সেই গোলামের মূল্য পরিশোধ পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে অংশীদারদের তাদের প্রাপ্য অংশ পরিশোধ করা হইবে এবং আযাদ কৃত গোলামের পথ ছেড়ে দেয়া হইবে।

২৫০৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, কেউ (শরীকী) গোলাম হইতে একটা অংশ আযাদ করে দিলে সম্পূর্ণ গোলামটাই আযাদ হয়ে যাবে। যদি তার কাছে (প্রয়োজনীয়) অর্থ থাকে (তাহলে সেখান হইতে অন্য অংশীদারদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হইবে) অন্যথায় অতিরিক্ত কষ্ট না চাপিয়ে তাকে উপার্জন করিতে বলা হইবে।

৪৭/১৫. অধ্যায়ঃ কুরবানীর জানোয়ার ও উটে অংশগ্রহন

যুলুম.

কুরবানীর জানোয়ার (জবাই করার স্থানে) রওনা করার পর কেউ কোন ব্যক্তিকে তার কুরবানীর জানোয়ারের শরীক করলে তার বিধান।

২৫০৫. জাবির ও ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) এবং তাহাঁর সাহাবীগন ৪ঠা যিলহজ্জ ভোরে শুধু হজ্জের ইহরাম বেঁধে মক্কায় এসে পৌছলেন। কিন্তু আমরা মক্কায় এসে পৌছলে তিনি আমাদেরকে হজ্জের ইহরামকে উমরা-তে পরিবর্তিত করার আদেশ দিলেন। তখন আমরা হজ্জকে উমরা-তে পরিবর্তিত করলাম। তিনি আমাদেরকে স্ত্রীদের সাথে সহবাসেরও অনুমতি দিলেন। এ বিষয়ে কেউ কথা ছড়ালো (অধস্তন রাবী) আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, জাবির (রাদি.) বলেছেন, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে মিনায় যাবে। এ কথা বলে জাবির (রাদি.) নিজের হাত লজ্জাস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন। এ খবর নাবী (সাঃআঃ)-এর কানে পৌছলে তিনি দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। আমি শুনতে পেয়েছি যে, লোকেরা এটা সেটা বলছে। আল্লাহর কসম! আমি তাদের চেয়ে অধিক পরহেযগার এবং অধিক আল্লাহ ভীরু। পরে যা জেনেছি তা আগে ভাগে জানতে পারলে হাদী (হজ্জের কুরবানীর জন্তু) সাথে নিয়ে আসতাম না। আর সাথে হাদী না থাকলে আমিও ইহরাম হইতে হালাল হয়ে যেতাম। তখন সুরাকা ইবনু মালিক ইবনু জুসুম (রাদি.) দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ হুকুম শুধু আমাদের জন্য, না এটা সর্বকালের জন্য। তিনি বলিলেন, না, বরং সর্বকালের জন্য [রাবী আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, পরে আলী ইবনু আবু তালিব (রাদি.) (ইয়ামান থেকে) মক্কায় এলেন। দুই রাবীর একজন বলেন যে, আলী (রাদি.) বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর অনুরূপ হজ্জ করব। অপরজনের মতে তিনি বলিলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর অনুরূপ ইহরাম বাঁধলাম। ফলে নাবী (সাঃআঃ) তাকে ইহরাম অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিলেন এবং তাকেও হাদী এর মধ্যে শরীক করে দিলেন।

২৫০৬. জাবির ও ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) এবং তাহাঁর সাহাবীগন ৪ঠা যিলহজ্জ ভোরে শুধু হজ্জের ইহরাম বেঁধে মক্কায় এসে পৌছলেন। কিন্তু আমরা মক্কায় এসে পৌছলে তিনি আমাদেরকে হজ্জের ইহরামকে উমরা-তে পরিবর্তিত করার আদেশ দিলেন। তখন আমরা হজ্জকে উমরা-তে পরিবর্তিত করলাম। তিনি আমাদেরকে স্ত্রীদের সাথে সহবাসেরও অনুমতি দিলেন। এ বিষয়ে কেউ কথা ছড়ালো (অধস্তন রাবী) আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, জাবির (রাদি.) বলেছেন, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে মিনায় যাবে। এ কথা বলে জাবির (রাদি.) নিজের হাত লজ্জাস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন। এ খবর নাবী (সাঃআঃ)-এর কানে পৌছলে তিনি দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। আমি শুনতে পেয়েছি যে, লোকেরা এটা সেটা বলছে। আল্লাহর কসম! আমি তাদের চেয়ে অধিক পরহেযগার এবং অধিক আল্লাহ ভীরু। পরে যা জেনেছি তা আগে ভাগে জানতে পারলে হাদী (হজ্জের কুরবানীর জন্তু) সাথে নিয়ে আসতাম না। আর সাথে হাদী না থাকলে আমিও ইহরাম হইতে হালাল হয়ে যেতাম। তখন সুরাকা ইবনু মালিক ইবনু জুসুম (রাদি.) দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ হুকুম শুধু আমাদের জন্য, না এটা সর্বকালের জন্য। তিনি বলিলেন, না, বরং সর্বকালের জন্য [রাবী আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, পরে আলী ইবনু আবু তালিব (রাদি.) (ইয়ামান থেকে) মক্কায় এলেন। দুই রাবীর একজন বলেন যে, আলী (রাদি.) বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর অনুরূপ হজ্জ করব। অপরজনের মতে তিনি বলিলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর অনুরূপ ইহরাম বাঁধলাম। ফলে নাবী (সাঃআঃ) তাকে ইহরাম অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিলেন এবং তাকেও হাদী এর মধ্যে শরীক করে দিলেন।

৪৭/১৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি ভাগ করার সময় দশটি বকরীকে একটা উটের সমান মনে করে।

২৫০৭.রাফি ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তিহামার অন্তর্গত যুলহুলায়ফা নামক স্থানে আমারা নাবী (সাঃআঃ)-এর সাথে অবস্থান করছিলাম। সে সময় আমরা (গনীমতের অংশ হিসাবে) কিছু বকরী কিংবা উট পেয়ে গেলাম। সাহাবীগণ (অনুমতির অপেক্ষা না করেই) তাড়াহুড়া করে পাত্রে গোশত চড়িয়ে দিলেন। পরে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এসে পাত্রগুলো উল্টিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন। (বন্টনকালে) প্রতি দশটি বকরীকে তিনি একটি উটের সমান ধার্য করিলেন। ইতিমধ্যে একটি উট পালিয়ে গেল। সে সময় দলে ঘোড়ার সংখ্যাও ছিল খুব অল্প। তাই একজন তীর ছুঁড়ে সেটাকে আটকালেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, দেখ পলায়নপর বন্য জন্তুদের মতো এই গৃহপালিত পশুগুলোর মধ্যেও কোন কোনটা পলায়নপর স্বভাব বিশিষ্ট। কাজেই সেগুলোর মধ্যে যেটা তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠবে তার সাথে এরূপই করিবে। [রাবী আবায়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, আমার দাদা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আশংকা করি; আগামীকাল হয়ত আমরা শক্রর মুখোমুখী হব। আমাদের সাথে তো কোন ছুরি নেই। এমতাবস্থায় আমরা কি বাঁশের ধারালো কঞ্চি দিয়ে যবেহ করিতে পারি? তিনি বলিলেন, যে রক্ত বের করে দেয় তা দিয়ে দ্রুত কর। যা আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ হয়, তা তোমরা খেতে পার। তবে তা যেন দাঁত বা নখ না হয়। তোমাদের আমি এর কারণ বলছি, দাঁততো হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।

Comments

Leave a Reply