জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হওয়া
জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হওয়া >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিচে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায় পড়ুন
৯১. অধ্যায়ঃ জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হওয়া
৯২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কুফ্রী অবস্থায় মারা যায় তার কোন আমাল তার উপকারে আসবে না
৯৩. অধ্যায়ঃ মুমিনদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করা ও অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ও তাহাদেরকে এড়িয়ে চলা
৯৪. অধ্যায়ঃ হিসাব ও শাস্তি ছাড়াই মুসলিমদের একাধিক দল জান্নাতে প্রবেশ করার প্রমাণ
৯৫. অধ্যায়ঃ জান্নাতীদের অর্ধাংশ এ উম্মাতের [মুহাম্মাদীর] অন্তর্ভুক্ত
৯৬. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহ আদাম [আ:]-কে বলবেন : “যারা জাহান্নামে প্রেরিত হয়েছে তাহাদের প্রত্যেক এক হাজারের মধ্যে নয়শত নিরানব্বই জনকে বের করে আনো”
৯১. অধ্যায়ঃ জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হওয়া
৪০২. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, জাহান্নামের সবচেয়ে কম আযাব সে ব্যক্তির হইবে, যাকে আগুনের দুটি জুতা পরানো হইবে, ফলে এ দুটির উত্তাপের কারণে তার মগজ উথলাতে থাকিবে।
[ই.ফা. ৪০৭; ই.সে. ৪২১]
৪০৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, [চির] জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হইবে আবু তালিব-এর। তাকে দুটি [আগুনের] জুতা পরিয়ে দেয়া হইবে, ফলে এ দুটির কারণে তার মগজ পর্যন্ত উথলাতে থাকিবে।
[ই.ফা. ৪০৮; ই.সে. ৪২২]
৪০৪. নুমান ইবনি বাশীর [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বক্তৃতায় বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, কিয়ামাত দিবসে জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি হইবে ঐ ব্যক্তির যার দু পায়ের তলায় দুটি জ্বলন্ত কয়লা রাখা হইবে, যার কারণে তার মগজ উথলাতে থাকিবে।
[ই.ফা. ৪০৯; ই.সে. ৪২৩]
৪০৫. নুমান ইবনি বাশীর [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেনঃ জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা আযাব ঐ ব্যক্তির হইবে, যার দুটি জুতার ফিতা হইবে আগুনের। ফলে তার দহনে [চুলা উপরে রাখা] পাতিলের ন্যায় তার মগজ উথলাতে থাকিবে। আর তার অনুভব হইবে যে, সে বুঝি সর্বাপেক্ষা বেশী শাস্তি ভোগ করছে অথচ এটি হচ্ছে সবচেয়ে হালকা আযাব।
[ই.ফা. ৪১০; ই.সে. ৪২৪]
৯২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কুফ্রী অবস্থায় মারা যায় তার কোন আমাল তার উপকারে আসবে না
৪০৬. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআ:]! ইবনি জুদআন জাহিলী যুগে আত্মীয়-স্বজনের হাক্ আদায় করত এবং দরিদ্রদের আহার দিত। [আখিরাতে] এসব কর্ম তার উপকারে আসবে কি? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলিলেন, কোন উপকারে আসবে না। সে তো কোন দিন এ কথা বলেনি যে, হে আমার রব! কিয়ামাতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দিও।
[ই.ফা. ৪১১; ই.সে. ৪২৫]
৯৩. অধ্যায়ঃ মুমিনদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করা ও অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ও তাহাদেরকে এড়িয়ে চলা
৪০৭. আম্র ইবনি আস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-কে চুপে চুপে নয় স্পষ্ট বলিতে শুনিয়াছি যে, জেনে রেখ! অমুক বংশ [আত্মীয়তার কারণে] আমার বন্ধু নয়, বরং আল্লাহর এবং নেককার মুমিনগণই হলেন আমার বন্ধু।
[ই.ফা. ৪১২; ই.সে. ৪২৬]
৯৪. অধ্যায়ঃ হিসাব ও শাস্তি ছাড়াই মুসলিমদের একাধিক দল জান্নাতে প্রবেশ করার প্রমাণ
৪০৮. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেছেন, আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। জনৈক সহাবা [উক্কাশাহ্] বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন, আমাকে যেন তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] দুআ করিলেন, ইয়া আল্লাহ! ওকে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। তারপর আরেকজন সহাবা দাঁড়িয়ে বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আমার জন্যও আল্লাহর কাছে দুআ করুন, আমাকেও যেন তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ এ সুযোগ লাভে উক্কাশাহ্ তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে।
[ই.ফা. ৪১৩ ই.সে ৪২৭]
৪০৯. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি ….. পরবর্তী অংশ উপরোল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ।
[ই.ফা. ৪১৪ ই.সে ৪২৮]
৪১০. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার উম্মাতের একটি দল জান্নাতে প্রবেশ করিবে। তাহাদের সংখ্যা হইবে সত্তর হাজার। তাহাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় চমকাতে থাকিবে।
আবু হুরাইরা [রাঃআ:] বলেন, তখন উক্কাশাহ্ ইবনি মিহসান আসাদী দাঁড়ালেন। তাহাঁর গায়ে একটি চাদর ছিল। বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন তিনি যেন আমাকেও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! একে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। এরপর আরেকজন আনসারী দাঁড়িয়ে বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন তিনি যেন আমাকেও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ এ সুযোগ লাভে উক্কাশাহ্ তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে।
[ই.ফা. ৪১৫; ই.সে. ৪২৯]
৪১১. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আর তাহাদের একটি দলের চেহারা হইবে চাঁদের মত [উজ্জ্বল]।
[ই.ফা. ৪১৬; ই.সে. ৪৩০]
৪১২. ইমরান [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর নবি [সাঃআ:] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, তারা কারা, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআ:]? তিনি বললেনঃ যারা ক্ষতস্থানে লোহা পুড়ে লাগায় না এবং [জাহিলী যুগের ন্যায়] ঝাড়ফুঁক বা মন্ত্রের দ্বারা চিকিৎসা কামনা করে না বরং তারা আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করে। এ সময় উক্কাশাহ্ [রাঃআ:] উঠে দাঁড়িয়ে বলিলেন, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন, তিনি যেন আমাকে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নবি [সাঃআ:] বলিলেন, তুমিও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর নবি! আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, তিনি আমাকেও যেন তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। উত্তরে নবি [সাঃআ:] বললেনঃ উক্কাশাহ্ তোমার আগেই সে দলভুক্ত হয়ে গেছে।
[ই.ফা. ৪১৭; ই.সে. ৪৩১]
৪১৩. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। সহাবাগণ জিজ্ঞেস করিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! এরা কারা? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ যারা ঝাড়ফুঁক করায় না, পাখি উড়িয়ে শুভাশুভের লক্ষণ মেনে চলে না, অগ্নি দাগ গ্রহণ করে না, বরং সর্বদাই আল্লাহর ওপর নির্ভর করে [তারাই]।
[ই.ফা. ৪১৮; ই.সে. ৪৩২]
৪১৪. সাহ্ল ইবনি সাদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার বা সাত লক্ষ [এখানে রাবী আবু হাযিম কোন সংখ্যাই নিশ্চিত করে বলিতে পারেননি] লোক পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একে অন্যের হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। তাহাদের প্রথম ব্যক্তি শেষ ব্যক্তির প্রবেশের আগে প্রবেশ করিবে না, বরং সবাই একত্রে প্রবেশ করিবে। তাহাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মত চমকাতে থাকিবে।
[ই.ফা. ৪১৯; ই.সে. ৪৩৩]
৪১৫. হুসায়ন ইবনি আবদুর রহমান [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাঈদ ইবনি যুবায়র-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি প্রশ্ন করিলেন, তোমাদের মধ্য হতে কেউ রাতে যে তারকাটি বিচ্যুত হয়েছিল তা দেখেছ কি? আমি বললাম, আমি দেখেছি। অবশ্য আমি রাতের সলাতে রত ছিলাম না; আমাকে বিচ্ছু দংশন করেছিল। সাঈদ বলিলেন, দংশন করার পর তুমি কী করেছিলে? আমি বললাম, ঝাড়ফুঁক করিয়েছি। তিনি বলিলেন, তোমাকে এ ঝাঁড়ফুক গ্রহণে কিসে উদ্বুদ্ধ করিল? আমি বললাম, সে হাদীস যা আমাদেরকে শাবী বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলিলেন, শাবী কী হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন? আমি বললাম, শাবী বুরাইদাহ্ ইবনি হুসায়ন আল আসলামী [রাঃআ:]-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, কুদৃষ্টি বা বিচ্ছু দংশন ব্যতীত অন্য বিষয়ে ঝাড়ফুঁক করানো উচিত নয়।
তিনি বলিলেন, ভাল বলেছেন। ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] নবি [সাঃআ:] হতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, স্বপ্নে আমার সামনে সকল নবিদের উপস্থিত করা হয়। অতঃপর তখন কোন কোন নবিকে দেখলাম যে, তাহাঁর সঙ্গে ছোট্ট একটি দল রয়েছে; আর কাউকে দেখলাম, তাহাঁর সঙ্গে একজন কিংবা দুজন লোক আবার কেউ এমনও ছিলেন যে, তাহাঁর সাথে কেউ নেই। হঠাৎ আমার সামনে এক বিরাট দল দেখা গেল। মনে হলো, এরা আমার উম্মাত। তখন আমাকে বলা হলো, ইনি মূসা [আ:] ও তাহাঁর উম্মাত; তবে আপনি ওপর দিগন্তে তাকিয়ে দেখুন। আমি ওদিকে তাকালাম, দেখি বিরাট একদল, আবার বলা হলো, আপনি ওপর দিগন্তে তাকিয়ে দেখুন, [আমি ওদিকে তাকিয়ে দেখলাম] এক বিরাট দল। বলা হলো, এরা আপনার উম্মাত। এদের মধ্যে সত্তর হাজার এমন লোক আছে যারা শাস্তি ব্যতীত ও হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। এ বলে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] দাঁড়ালেন, অতঃপর তাহাঁর ঘরে চলে গেলেন। তারা উপস্থিত সহাবাগণ তখন এ হিসাব ও আযাববিহীন জান্নাতে প্রবেশকারী কারা হইবেন? এ নিয়ে আলোচনা শুরু করিলেন। কেউ বলিলেন, তাঁরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-এর সহাবা। কেউ বলিলেন, তারা সে সব লোক যারা ইসলামের উপর জন্মলাভ করেছে এবং আল্লাহর সঙ্গে কোন প্রকার শির্ক করেনি এবং তাঁরা বহু জিনিসের উল্লেখ করিলেন। তারপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] তাঁদের কাছে বেরিয়ে এলেন এবং বললেনঃ তোমরা কী নিয়ে আলোচনা করছিলে? সবাই বিষয়টি [খুলে] বলিলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] তাঁদের বললেনঃ এরা সে সব লোক যারা ঝাড়ফুঁক করে না বা তা গ্রহণও করে না, পাখি উড়িয়ে শুভাশুভের লক্ষণ মানে না বরং সর্বদাই আল্লাহর উপর নির্ভর করে। তখন উক্কাশাহ্ ইবনি মিহসান [রাঃআ:] দাঁড়িয়ে বলিলেন, আমার জন্যে দুআ করুন, আল্লাহ যেন আমাকে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ তুমি তাহাদেরই একজন থাকিবে। তারপর আরেক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমার জন্যও দুআ করুন, আল্লাহ যেন আমাকেও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] উত্তর : এ সুযোগ লাভ উক্কাশাহ্ তোমার চাইতে অগ্রগামী হয়ে গেছে।
[ই.ফা. ৪২০; ই.সে. ৪৩৪]
৪১৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেনঃ স্বপ্নে আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয় ….. এভাবে বর্ণনাকারী হুসায়ন বর্ণিত হাদীসের অনুরূপই বর্ণনা করেন। কিন্তু হাদীসটির প্রথমাংশ উল্লেখ করেনি।
[ই.ফা. ৪২১; ই.সে. ৪৩৫]
৯৫. অধ্যায়ঃ জান্নাতীদের অর্ধাংশ এ উম্মাতের [মুহাম্মাদীর] অন্তর্ভুক্ত
৪১৭. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] আমাদের জিজ্ঞেস করিলেন যে, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরাই জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হইবে? [আবদুল্লাহ বলেন] এ শুনে আমরা [খুশিতে] আল্ল-হু আকবার ধ্বনি দিলাম। অতঃপর রসূল [সাঃআ:] বললেনঃ তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরাই জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হইবে? সহাবা বলেন, আমরা আবার আল্ল-হু আকবার ধ্বনি দিলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ তবে আমি আশা করি তোমরাই জান্নাতবাসীদের অর্ধেক হইবে। আর এ সম্পর্কে তোমাদের অচিরেই বলছি : কাফিরদের ভীড়ে তোমাদের অবস্থান এমনই স্পষ্ট হইবে, যেমন কালো ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশম অথবা একটি শ্বেত ষাঁড়ের গায়ে কালো পশম।
[ই.ফা. ৪২২; ই.সে. ৪৩৬]
৪১৮. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশজনের মতো রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:]-এর সাথে একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেনঃ তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হইবে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বললেনঃ তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট যে, তোমরা জান্নাতীদের এক তৃতীয়াংশ হইবে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি [সাঃআ:] বলিলেন, কসম তাহাঁর যাঁহার হাতে আমার প্রাণ! আমি আশা করি যে, অবশ্যই তোমরা জান্নাতীদের অর্ধেক হইবে। কেননা, কেবল মুসলিমই সেখানে প্রবেশের অনুমতি লাভ করিবে। আর মুশরিকদের মধ্যে তোমাদের অবস্থান হইবে, যেমন কাল ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশম অথবা লাল ষাঁড়ের গায়ে একটি কালো পশমের মতো।
[ই.ফা. ৪২৩; ই.সে. ৪৩৭]
৪১৯. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি তাহাঁর পৃষ্ঠদেশের সাহায্যে চামড়ার তাঁবুর সাথে হেলান দেয়া ছিলেন। তিনি বললেনঃ সাবধান, মুসলিম ব্যতীত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না। অতঃপর তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! আমি কি [অর্পিত দায়িত্ব] পৌছিয়েছি? হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো, তোমরা কি এটা পছন্দ করিবে যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হইবে? আমরা বললাম, হ্যাঁ! হে আল্লাহর রসূল! অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা কি এটা পছন্দ করিবে যে, তোমরা জান্নাতীদের এক তৃতীয়াংশ হইবে? তারা বলিল, হ্যাঁ; হে আল্লাহর রসূল! তিনি [সাঃআ:] বললেনঃ হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি আশা রাখি যে, তোমরা হইবে জান্নাতীদের অর্ধেক। বস্তুতঃ অন্যান্য উম্মাতের তুলনায় তোমাদের সংখ্যা হইবে সাদা বলদের মধ্যে একটি কালো পশমের মতো অথবা তিনি বলেছেনঃ কালো বলদের মধ্যে একটি সাদা পশমের মতো।
[ই.ফা. ৪২৪; ই.সে. ৪৩৮]
৯৬. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহ আদাম [আ:]-কে বলবেন : “যারা জাহান্নামে প্রেরিত হয়েছে তাহাদের প্রত্যেক এক হাজারের মধ্যে নয়শত নিরানব্বই জনকে বের করে আনো”
৪২০. আবু সাঈদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ [কিয়ামাত দিবসে] আহ্বান করবেন, হে আদাম! তিনি উত্তরে বলবেন, আমি আপনার সামনে উপস্থিত, আপনার কাছে শুভ কামনা করি এবং সকল কল্যাণ আপনারই হাতে। মহান আল্লাহ বলবেন : জাহান্নামী দলকে বের কর। আদাম [আ:] জিজ্ঞেস করবেন : জাহান্নামী দল কতজনে? মহান আল্লাহ বলবেন : প্রতি হাজার থেকে নয়শ নিরানব্বই। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেনঃ এটাই সে মুহূর্ত যখন বালক হয়ে যাবে বৃদ্ধ, সকল গর্ভবতী তাহাদের গর্ভপাত করে ফেলবে আর মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়, বস্তুতঃ আল্লাহর আযাব বড়ই কঠিন। রাবী বলেন, কথাগুলো সহাবাগণের কঠিন মনে হলো। তাঁরা বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ [সাঃআ:]! আমাদের মধ্যে কে সে ব্যক্তি? তিনি [সাঃআ:] বললেনঃ আনন্দিত হও। ইয়াজূয ও মাজূযের সংখ্যা এক হাজার হলে তোমাদের সংখ্যা হইবে একজন। তারপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ কসম সে সত্তার যাঁহার হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আশা রাখি যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হইবে। [সহাবা বলেন,] আমরা আল্লাহর প্রশংসা করলাম এবং আল্ল-হু আকবার ধ্বনি দিলাম। তারপর আবার তিনি বলিলেন, শপথ সে সত্তার, যাঁহার হাতে আমার জীবন! অবশ্যই আমি আশা রাখি, জান্নাতীদের মধ্যে তোমরা তাহাদের এক তৃতীয়াংশ হইবে। সহাবা বলেন, আমরা বললাম আলহাম্দু লিল্লাহ এবং আল্ল-হু আকবার ধ্বনি দিলাম। তারপর আবার রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বললেনঃ কসম সে সত্তার, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ! আমি আশা রাখি যে, তোমরা জান্নাতীদের অর্ধেক হইবে এবং তোমরা অন্যান্য উম্মাতের মধ্যে কালো ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশমের ন্যায় অথবা গাধার পায়ের চিহ্নের সদৃশ।
[ই.ফা. ৪২৫; ই.সে. ৪৩৯]
৪২১. আমাশ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
উক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁরা উভয়ে বর্ণনা করেন, “তোমরা সকল মানুষের মধ্যে কালো ষাঁড়ের গায়ে একটি সাদা পশমের মতো হইবে অথবা সাদা ষাঁড়ের গায়ে কালো পশমের মতো হইবে।” তাঁরা “গাধার পায়ের চিহ্নের মতো” এmusli কথা উল্লেখ করেননি।
[ই.ফা. ৪২৬; ই.সে. ৪৪০]
Leave a Reply