নবী (সাঃ) কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে

নবী [সাঃআঃ] কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে

নবী [সাঃআঃ] কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে  >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৫০ অধ্যায়ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর বংশ পরিবারের জন্য সদাক্বাহ্ যাকাত খাওয়া হারাম, এরা হচ্ছে বনূ হাশিম ও বানী মুত্ত্বালিব; এরা ছাড়া অন্য কারো জন্য যাকাত-সদাক্বাহ্ খাওয়া হারাম নয়
৫১. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর বংশধরকে সদাক্বাহ্‌ উসূলকারী নিযুক্ত না করা প্রসঙ্গে
৫২. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ], বানী হাশিম ও বানী মুত্ত্বালিবের জন্য হাদিয়্যাহ্‌ উপঢৌকন গ্রহণ করা জায়িয যদিও হাদিয়্যাহ্‌ দাতা তা সদাক্বাহ্‌ সরূপ পেয়ে থাকে, সদাক্বাহ্‌ যখন গ্রহীতার হস্তগত হয় তখন তা থেকে সদাক্বার বৈশিষ্ট্য দূরীভূত হয়ে যায় এমনকি যাদের জন্য সদাক্বাহ্‌ ভক্ষণ করা হারাম তাদের জন্যও তা হালাল হয়ে যায়
৫৩. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে
৫৪. অধ্যায়ঃ সদাক্বাহ্‌ প্রদানকারীর জন্য দুআ করার বর্ণনা
৫৫. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারীর সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করার বর্ণনা

৫০ অধ্যায়ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর বংশ পরিবারের জন্য সাদকাহ যাকাত খাওয়া হারাম, এরা হচ্ছে বনূ হাশিম ও বানী মুত্ত্বালিব; এরা ছাড়া অন্য কারো জন্য যাকাত-সাদকাহ খাওয়া হারাম নয়

২৩৬৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হাসান ইবনি আলী [রাদি.] যাকাতের খেজুর থেকে একটি খেজুর তুলে মুখে দিলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ “তুমি থু থু করে ফেলে দাও। তুমি কি জান না আমারা সাদকাহ বা যাকাত খাই না”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪১ ইসলামিক সেন্টার-২৩৪১]

২৩৬৪. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এতে আছে, “আমাদের জন্য সাদকাহ-যাকাতের মাল হালাল নয়”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪২ ইসলামিক সেন্টার-২৩৪২]

২৩৬৫. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রেও ইবনি মুআয বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছেঃ “আমরা যাকাত-সাদকাহ ইত্যাদি খাই না”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৩ ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৩]

২৩৬৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি ঘরে ফিরে গিয়ে [কোন কোন সময়] আমার বিছানার উপর খেজুর পড়ে থাকতে দেখি। আমি তা খাওয়ার জন্য তুলে নেই। কিন্তু পরক্ষণেই সদাক্বার খেজুর হইতে পারে এ আশঙ্কায় তা ফেলে দেই [এবং খাওয়া থেকে বিরত থাকি]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৪ ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৪]

২৩৬৭. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর কিছু সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেন। তার মধ্যে একটি হাদীস নিম্নরূপঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “আল্লাহর শপথ! আমি ঘরে ফিরে আমার বিছানায় অথবা [তিনি বলেছেন] আমার ঘরের মধ্যে খেজুর পড়ে থাকতে পাই। আমি তা খাওয়ার জন্য হাতে তুলে নেই। পরক্ষণেই আমার সন্দেহ হয়, এটা সদাক্বার খেজুর হইতে পারে। তাই আমি তা ফেলে দেই।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৫, ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৫]

২৩৬৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] রাস্তায় একটি খেজুর পেয়ে বলিলেন, যদি এটা সদাক্বার খেজুর হওয়ার সম্ভাবনা না থাকত তাহলে আমি এটা খেয়ে নিতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৬, ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৬]

২৩৬৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাস্তায় একটি খেজুর দেখিতে পেলেন। তিনি বলেন, এটি যদি সদাক্বার খেজুর হওয়ার সম্বাবনা না থাকত তাহলে আমি এটা তুলে খেয়ে নিতাম [নষ্ট হইতে দিতাম না]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৭, ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৭]

২৩৭০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] একটি খেজুর দেখিতে পেয়ে বলিলেন, এটা যদি সদাক্বার খেজুর হওয়ার সম্ভাবনা না থাকত তাহলে আমি এটা তুলে খেয়ে নিতাম। [এভাবে নষ্ট হইতে দিতাম না]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৮, ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৮]

নিযুক্ত না করা প্রসঙ্গে

২৩৭১. আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনি রবীআহ্‌ ইবনি হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রবীআহ্‌ ইবনি হারিস ও আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] সম্মিলিতভাবে বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা এ ছেলে দুটিকে অর্থাৎ আমি ও ফায্‌ল ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে যদি পাঠিয়ে দিতাম এবং তারা উভয়ে তার কাছে গিয়ে তাদেরকে যাকাত আদায়কারী হিসেবে নিয়োগের জন্য আবেদন করত। অতঃপর তারা অন্যান্য আদায়কারীদের ন্যায় যাকাত আদায় করে এনে দিতে এবং অন্যান্যরা যেভাবে পারিশ্রামিক পায় তারাও সেভাবে পারিশ্রামিক পেত। রাবী বলেন, তাঁরা এ ব্যাপার নিয়ে আলাপ করছিলেন, এমন সময় আলী ইবনি আবু ত্বলিব [রাদি.] এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন। তাঁরা এ প্রস্তাবটি তাহাঁর কাছে উত্থাপন করিলেন। আলী [রাদি.] বলিলেন, তোমরা এ কাজ করো না। আল্লাহর শপথ! তিনি এটা করবেন না [কারণ আমাদের জন্য যাকাত হারাম]। তখন রাবীআহ্‌ ইবনি হারিস [রাদি.] তাহাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে বলিলেন, আল্লাহর শপথ! “তুমি শুধু বিদ্বেষের বশীভূত হয়েই আমাদের সাথে এরূপ করছো। অথচ তুমি যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জামাতা হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছো এজন্যে তো তোমার প্রতি আমরা কোন প্রকার বিদ্বেষ পোষণ করছি না!” তখন আলী [রাদি.] বলিলেন, এদের দুজনকে পাঠিয়ে দাও। অতঃপর তারা উভয়ে চলে গেল এবং আলী [রাদি.] বিছানায় শুয়ে থাকলেন। আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনি রাবীআহ্‌ বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহরের নামাজ আদায় করিলেন। আমরা তাড়াতাড়ি করে তাহাঁর প্রত্যাবর্তন করার পূর্বেই তাহাঁর কামরার কাছে গিয়ে তাহাঁর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। তিনি এসে আমাদের দুজনের কান ধরে [স্নেহসিক্ত কন্ঠে] বলিলেন, “কোন মতলবে এসেছো, আসল কথাটা সাহস করে বলে ফেলো।” তারপর তিনি ও আমরা হুজরার মধ্যে প্রবেশ করলাম। এ সময় তিনি যায়নাব বিনতু জাহ্‌শ [রাদি.]-এর ঘরে অবস্থান করছিলেন। রাবী বলেন, এবার আমরা পরস্পরকে কথাটি তোলার জন্য বলছিলাম। অবশেষে আমাদের একজনে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! “আপনি সর্বশ্রেষ্ট অনুগ্রহকারী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। আমাদের এখন বিয়ের বয়স হয়েছে, অথচ আমরা বেকার। তাই আপনার শরনাপন্ন হয়েছি, অন্যান্য যাকাত আদায়কারীদের মত আপনি আমাদেরকেও যাকাত আদায়কারী হিসেবে নিয়োগ করুন; অন্যান্যরা যেভাবে যাকাত আদায় করে এনে দেয় আমরা তাই করব এবং তাতে আমরাও কিছু পারিশ্রামিক পাব।” এ কথার পর তিনি দীর্ঘ সময় ধরে চুপ করে থাকলেন। এমনকি আমরা পুনর্বার কথা বলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। পর্দার আড়াল থেকে যায়নাব [রাদি.] কথা না বলার জন্য আমাদেরকে ইঙ্গিত করিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর পরিবার-পরিজন তথা বংশধরদের জন্য যাকাত গ্রহণ করা সমীচীন নয়। কেননা যাকাত হলো মানুষের [সম্পদের] ময়লা। বরং তোমরা গিয়ে খুমুসের কোষাধ্যক্ষ মাহ্‌মিয়্যাহ্‌ এবং নাওফাল ইবনি হারিস ইবনি আবদুল মুত্ত্বালিবকে আমার কাছে ডেকে আনো। রাবী বলেন, তারা দুজনে উপস্থিত হলে প্রথমে তিনি [সাঃআঃ] মাহ্‌মিয়্যাহ্‌ বললেনঃ “তুমি তোমার কন্যাকে এ ছেলে অর্থাৎ ফায্‌ল ইবনি আব্বাসের সাথে বিয়ে দাও। তিনি তাই করিলেন। অতঃপর তিনি নাওফাল ইবনি হারিসকে বললেনঃ তুমি এ ছেলের [অর্থাৎ আমার] সাথে তোমার কন্যার বিয়ে দাও। তিনি আমাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি মাহ্‌মিয়্যাকে বলিলেন, এ দুজনের পক্ষ থেকে এত এত পরিমাণ মুহরানা খুমুসের তহবিল থেকে আদায় করে দাও।

যুহরী বলেন, আমার শায়খ আবদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ আমার কাছে মুহরের নির্দিষ্ট কোন পরিমাণ উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৪৯, ইসলামিক সেন্টার-২৩৪৯]

২৩৭২. আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনি রবীআহ্‌ ইবনি হারিস ইবনি আবদুল মুত্ত্বালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনি রাবীআহ্‌ ইবনি হারিস ও আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্ত্বালিব উভয়ে নিজ নিজ পুত্র আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনি রাবীআহ্‌ ও ফায্‌ল ইবনি আব্বাসকে বলিলেন, তোমরা দুজন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে যাও। হাদীসের বাকী অংশ মালিক কর্তৃক বর্ণিত উপরের হাদীসের অনুরূপ। এ বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে- তারপর আলী [রাদি.] নিজের চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়লেনে এবং বলিলেন, “আমি হাসানের পিতা এবং সাইয়্যিদ। আল্লাহর শপথ! তোমরা যে কথা বলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে তোমার ছেলেদের পাঠিয়েছো তারা তার জবাব নিয়ে না আসা পর্যন্ত আমি এখান থেকে নড়ব না।

এ হাদীসে আরো আছে, তিনি আমাদের উদ্দেশে বললেনঃ “যাকাতের এ অর্থ হলো মানুষের [সম্পদের] আবর্জনা। তাই এ অর্থ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর বংশধরদের জন্য হালাল নয়।” অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ মাহ্‌মিয়্যাহ্‌ ইবনি জায-কে আমার কাছে ডেকে আনো। তিনি বানী আসাদ গোত্রের লোক ছিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে খুমুসের [গনীমাতের মালের] কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ করেছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫০, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫০]

৫২. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ], বানী হাশিম ও বানী মুত্ত্বালিবের জন্য হাদিয়্যাহ্‌ উপঢৌকন গ্রহণ করা জায়িয যদিও হাদিয়্যাহ্‌ দাতা তা সাদকাহ সরূপ পেয়ে থাকে, সাদকাহ যখন গ্রহীতার হস্তগত হয় তখন তা থেকে সদাক্বার বৈশিষ্ট্য দূরীভূত হয়ে যায় এমনকি যাদের জন্য সাদকাহ ভক্ষণ করা হারাম তাদের জন্যও তা হালাল হয়ে যায়

২৩৭৩. নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী জুওয়াইরিয়্যাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাকে এ হাদীস অবহিত করিয়াছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর ঘরে এসে বললেনঃ খাওয়ার কিছু আছে কি? তিনি [উত্তরে] বলিলেন, আল্লাহর শপথ! হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের খাওয়ার কিছু নেই। তবে বকরীর কয়েকটি হাড় আছে। এটা আমার মুক্ত দাসীকে সাদকাহ হিসেবে দেয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ তা আমার কাছে নিয়ে এসো, কেননা সাদকাহ তার নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে গেছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫১, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫১]

২৩৭৪. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রেও উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫২, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫২]

২৩৭৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, বারীয়াহ [রাদি.] নবী [সাঃআঃ]-কে কিছু গোশ্‌ত উপহার দিলেন। এটা তাকে সাদকাহ হিসেবে দেয়া হয়েছিল। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ এ গোশ্‌ত তার [বারীরার] জন্য সাদকাহ কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্‌ বা উপঢৌকন হিসেবে গণ্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৩, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৩]

২৩৭৬. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে কিছু গরুর গোশ্‌ত আনা হলো। অতঃপর বলা হলো এ গোশ্‌ত বারীরাকে সাদকাহ হিসেবে দান করা হয়েছে। তখন নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এটা তার জন্য সাদকাহ কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্‌ বা উপঢৌকন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৪, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৪]

২৩৭৭. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, বারীরাহ্‌ [রাদি.]-কে মুক্বদ্দামার প্রেক্ষিতে শারীআতের তিনটি হুকুম প্রবর্তিত হয়। লোকজন তাকে সাদকাহ দিত এবং তিনি তা আমাদেরকে উপহার হিসেবে দান করিতেন। এ ব্যাপারে আমি নবী [সাঃআঃ]-কে জানালাম। তিনি বলিলেন, এটা তার জন্য সাদকাহ এবং তোমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্‌। সুতরাং তোমরা তা খাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৫, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৫]

২৩৭৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] থেকে আর একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, “এ তো আমাদের জন্য তার পক্ষ থেকে হাদিয়্যাহ্।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৬, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৬]

২৩৭৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ আর একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, “এ তো আমাদের জন্য তার পক্ষ থেকে হাদিয়্যাহ্।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৭, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৭]

২৩৮০. উম্মু আতিয়্যাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার জন্য সদাক্বার একটি বকরী পাঠালেন। অতঃপর আমি এ থেকে কিছু গোশ্‌ত আয়িশা [রাদি.]-এর জন্য পাঠালাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আয়িশা [রাদি.]-এর কাছে এসে বলিলেন, তোমাদের কাছে খাওয়ার কিছু আছে কি? তিনি [উত্তরে] বলিলেন, না; তবে আপনি নুসায়বার [উম্মু আতিয়্যাহ্‌] কাছে [সদাক্বার] বকরী পাঠিয়ে ছিলেন। এ থেকে সে আমার জন্য কিছু গোশ্‌ত পাঠিয়েছে। তিনি বলিলেন, এ [সাদকাহ] তো তাহাঁর যথাযথ স্থানে পৌঁছে গেছে [অর্থাৎ উম্মু আত্বিয়ার জন্য সাদকাহ ছিল। সে তা হস্তান্তর করার পর এখন তোমার জন্য এটা হাদীয়্যাহ। কাজেই তুমি খাও, আমাকে দাও]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৮, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৮]

৫৩. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে

২৩৮১. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে কোন প্রকার খাদ্যদ্রব্য আসলে তিনি এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে নিতেন। যদি বলা হত, এটা হাদিয়্যাহ্‌ হিসেবে দেয়া হয়েছে, তাহলে তিনি এটা খেতেন, আর যদি বলা হত এটা সাদকাহ তাহলে তিনি তা খেতেন না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৫৯, ইসলামিক সেন্টার-২৩৫৯]

৫৪. অধ্যায়ঃ সাদকাহ প্রদানকারীর জন্য দুআ করার বর্ণনা

২৩৮২. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে কোন গোত্র সাদকাহ নিয়ে আসলে তিনি তাদের জন্য দুআ করিতেন, হে আল্লাহ! আপনি তাদের উপর সদয় হোন।” একবার আমার পিতা আবু আওফা তার সদ্বাকাহ্‌ নিয়ে তাহাঁর কাছে আসলে তিনি দুআ করিলেন, “হে আল্লাহ! আবু আওফার পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৬০, ইসলামিক সেন্টার-২৩৬০]

২৩৮৩. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনায় আছেঃ [হে আল্লাহ]! তাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৬১, ইসলামিক সেন্টার-২৩৬১]

৫৫. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারীর সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করার বর্ণনা

২৩৮৪. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কাছে যাকাত আদায়কারী আসলে তার সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার কর, যাতে সে তোমাদের উপর সন্তুষ্ট অবস্থায় ফিরে যেতে পারে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৩৬২, ইসলামিক সেন্টার-২৩৬২]


Posted

in

by

Comments

One response to “নবী (সাঃ) কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে”

Leave a Reply