সওম পালনে হালাল, মাকরুহ ও হারাম সময় ও দিন

সওম পালনে হালাল, মাকরুহ ও হারাম সময় ও দিন

সওমে বিসাল বা বিরতিহীনভাবে সওম পালন করা নিষিদ্ধ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১১. অধ্যায়ঃ সওমে বিসাল বা বিরতিহীনভাবে সওম পালন করা নিষিদ্ধ
১২. অধ্যায়ঃ কামোদ্দীপনা যাকে নাড়া দেয় না, সওমের অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেয়া তার জন্য হারাম নয়
১৩. অধ্যায: জানাবাত অবস্থায় কারো প্রভাত হলে তার সওম শুদ্ধ হইবে
১৪. অধ্যায়ঃ রমাযানের দিনে সওমরত অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা কঠোর হারাম, কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে তবে তার উপর বড় ধরনের কাফ্‌ফারাহ্‌ ওয়াজিব- সে বিত্তশালী হোক বা বিত্তহীন, তবে বিত্তহীন ব্যক্তির পক্ষে যখন সম্ভব হয়, তখন এ কাফ্‌ফারাহ আদায় করিতে হইবে
১৫. অধ্যায়ঃ অবৈধ নয় এমন কাজে রমাযান মাসে সফরকারী ব্যক্তির জন্য সওম পালন করা এবং ইফত্বার করা উভয়ই জায়িয যদি দু বা ততোধিক মঞ্জিলের উদ্দেশ্যে সফর করা হয়, অবশ্য ক্ষমতাবান ব্যক্তির জন্য সওম পালন করা উত্তম এবং অক্ষম ব্যক্তির জন্য সওম ভঙ্গ করা উত্তম
১৬. অধ্যায়ঃ সফরের কোন কাজের দায়িত্ব পেলে সিয়াম ভঙ্গকারীর প্রতিদান প্রসঙ্গে
১৭. অধ্যায়ঃ ভ্রমণকালে সিয়াম রাখা ও না রাখার ইখতিয়ার প্রসঙ্গে
১৮. অধ্যায়ঃ হাজীদের জন্য আরাফার দিন আরাফার ময়দানে সিয়াম পালন না করা মুস্তাহাব
১৯. অধ্যায়ঃ আশুরা দিবসে সিয়াম পালন করা
২০. অধ্যায়ঃ আশুরা উপলক্ষে কোন দিন সিয়াম রাখা হইবে
২১ অধ্যায়ঃ যে আশুরার দিন কিছু খেয়ে ফেলল সে যেন দিনের বাকী অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকে
২২ অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে সিয়াম পালন করা হারাম
২৩. অধ্যায়ঃ আইয়্যামে তাশরীক্বে সিয়াম পালন করা হারাম
২৪. অধ্যায়ঃ কেবলমাত্র জুমুআর দিন সিয়াম পালন করা মাকরূহ

১১. অধ্যায়ঃ সওমে বিসাল বা বিরতিহীনভাবে সওম পালন করা নিষিদ্ধ

২৪৫৩. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] সওমে বিসাল করিতে নিষেধ করিয়াছেন। এতে সাহাবীগণ বলিলেন, আপনি তো সওমে বিসাল করে থাকেন। তিন বলিলেন, আমার অবস্থা তোমাদের মতো নয়। আমাকে খাওয়ানো ও পান করানো হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪২৯]

২৪৫৪. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রমজান মাসে সওমে বিসাল আরম্ভ করিলেন। তা দেখে সাহাবীগণও সওমে বিসাল আরম্ভ করিলেন। এরপর তিনি তাদেরকে সওমে বিসাল করিতে নিষেধ করিলেন। এতে তাঁকে প্রশ্ন করা হল, আপনি তো সওমে বিসাল করছেন। উত্তরে তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের মতো নই। আমাকে তো খাওয়ানো হয় এবং পান করানো হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩০]

২৪৫৫. ইবনি উমর [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এতে রমজান মাসের কথা উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩১]

২৪৫৬. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওমে বিসাল করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তখন মুসলিমদের এক ব্যক্তি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো সওমে বিসাল করে থাকেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের মধ্যে আমার মতো কে আছে? আমি রাত্রি যাপন করি এমতাবস্থায় যে, আমার প্রতিপালক আমাকে খাওয়ান এবং আমাকে পান করান। সাহাবীগণ সওমে বিসাল থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করলে তিনি তাদের সাথে একদিন এবং পরে আরেক দিন সওমে বিসাল করিলেন। এরপর তারা চাঁদ দেখলেন, তখন তিনি বলিলেন, চাঁর আরো দেরীতে দেখা দিলে আমিও সওমে বিসাল দির্ঘায়িত করতাম। তাঁরা সওমে বিসাল থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করলে তিনি শাস্তি স্বরূপ এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩২]

২৪৫৭. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সওমে বিসাল থেকে বিরত থাক। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তো সওমে বিসাল করে থাকেন? তিনি বলিলেন, এ ব্যাপারে তোমরা তো আমার মত নও। আমি এমতাবস্থায় রাত্রি যাপন করি যে, আমার প্রতিপালক আমাকে পানাহার করান। তাই তোমরা তোমাদের সামর্থ্যে যতটুকু কুলায়, ততটুকু আমাল কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৩]

২৪৫৮. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.]- এর সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। [হাদীসের শেষে কয়েকটি শব্দ পরিবর্তন হলেও অর্থ একই]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৪]

২৪৫৯. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.]- এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি সওমে বিসাল করিতে নিষেধ করিয়াছেন। এরপর বর্ণনাকারী আবু যুরআহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৫]

২৪৬০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমজান মাসে একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সালাত আদায় করছিলেন। আমি তাহাঁর পাশে এসে দাঁড়ালাম। এরপর অন্য এক ব্যক্তি এসেও তাহাঁর পাশে দাঁড়ালেন। এভাবে আমরা এক দল লোক হয়ে গেলাম। এরপর নবী [সাঃআঃ] যখন বুঝতে পারলেন যে, আমরা তাহাঁর পেছনে আছি, তখন তিনি সালাত সংক্ষেপ করে ফেললেন। তারপর তিনি আপন গৃহে চলে গেলেন এবং এমন [দীর্ঘ] সালাত আদায় করিলেন যে, এভাবে তিনি আমাদের সাথে সালাত আদায় করিতেন না। সকালে আমরা তাঁকে বললাম, রাত্রে আপনি আমাদের সম্পর্কে বুঝতে পেরেছিলেন কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তাই তো আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে ঐ কাজের, যা আমি করেছি। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রমাযানের শেষভাগে আবার সওমে বিসাল করিতে আরম্ভ করিলেন। এ দেখে কতিপয় সহাবীও সওমে বিসাল শুরু করিলেন। তখন নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, লোকদের কী হল, তারা যে সওমে বিসাল আরম্ভ করেছে! তোমরা আমার মত নও। আল্লাহর শপথ! যদি মাস দীর্ঘায়িত হতো, তবে আমি এমনভাবে সওমে বিসাল করতাম যার ফরে সীমালঙ্ঘনকারীগণ সওমে বিসাল করা ছেড়ে দিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৬]

২৪৬১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমজান মাসের প্রথমাংশে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওমে বিসাল আরম্ভ করিলেন। এ দেখে মুসলিমদের কতিপয় লোক সওমে বিসাল আরম্ভ করে দিলেন। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছার পর তিনি বলিলেন, যদি আমাদের জন্য মাস দীর্ঘায়িত করে দেয়া হতো তবে আমি এমনভাবে সওমে বিসাল করতাম যাতে সীমালঙ্ঘনকারীরা সীমালংঘন করা ছেড়ে দিত। এরপর তিনি বলিলেন, তোমরা তো আমার মতো নও অথবা বলিলেন, আমি তো তোমাদের মতো নই। কারণ আমার প্রতিপালক তো আমাকে পানাহার করান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৭]

২৪৬২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দয়াবশতঃ সবাইকে সওমে বিসাল করিতে নিষেধ করিয়াছেন। সাহাবীগণ বলিলেন, আপনি তো সওমে বিসাল করেন। তিনি বলিলেন, আমি তো তোমাদের মতো নই। আমাকে তো আমার প্রতিপালক পানাহার করান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৮]

১২. অধ্যায়ঃ কামোদ্দীপনা যাকে নাড়া দেয় না, রোজার অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেয়া তার জন্য হারাম নয়

২৪৬৩. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় তাহাঁর কোন কোন স্ত্রীকে চুমু দিতেন। তারপর তিনি হেসে দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৩৯]

২৪৬৪. সুফ্‌ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুর রহমান ইবনিল ক্বাসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি তোমার আব্বাকে আয়িশা [রাদি.] থেকে এ কথা বর্ণনা করিতে শুনেছ যে, নবী [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় তাঁকে চুমু দিতেন? তিনি কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলিলেন, হ্যাঁ, শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪০]

২৪৬৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় আমাকে চুমু দিতেন। তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে যে, নিজের কামোদ্দীপনাকে আয়ত্বে রাখতে পারে, যেমন আয়ত্বে রাখতে সক্ষম ছিলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কামোদ্দীপনাকে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪১]

২৪৬৬. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় [স্ত্রীদেরকে] চুম্বন ও স্পর্শ করিতেন। তবে প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ রাখায় তোমাদের সবার চেয়ে তিনি অধিকরত শক্তিশালী ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪২]

২৪৬৭. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় চুমু দিতেন। তিনি তাহাঁর প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে তোমাদের সকলের চেয়ে অধিকতর ক্ষমতাবান ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৩]

২৪৬৮. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় [স্ত্রীদেরকে] স্পর্শ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৪]

২৪৬৯. আসওয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ও মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট গেলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম যে, রোজার অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি তাহাঁর স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করিতেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, করিতেন। তবে তিনি তাহাঁর প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে তোমাদের সকলের চেয়ে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ছিলেন অথবা বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে, যে তার প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করিতে সক্ষম? এ ব্যাপারে আবু আসিম সন্দেহ প্রকাশ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৫]

২৪৭০. আসওয়াদ এবং মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একদা তাঁরা দুজন এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করার জন্য আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট গমন করিলেন। এরপর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৬]

২৪৭১. উম্মুল মুমিনীন আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় তাঁকে চুমু দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৭]

২৪৭২. ইয়াহ্ইয়া ইবনি কাসীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৮]

২৪৭৩. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সিয়ামের মাসেও [স্ত্রীদেরকে] চুমু দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৪৯]

২৪৭৪. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমজান মাসে রোজার অবস্থায় নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর স্ত্রীদেরকে চুমু দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫০]

২৪৭৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় [স্ত্রীদেরকে] চুমু দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫১]

২৪৭৬. হাফসাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজার অবস্থায় চুমু দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫২]

২৪৭৭. হাফসাহ্‌ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৩]

২৪৭৮. উমর ইবনি আবু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিলেন, সওম পালনকারী ব্যক্তি চুম্বন করিতে পারে কি? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, কথাটি উম্মু সালামাকে জিজ্ঞেস কর। [তাঁকে জিজ্ঞেস করার পর] তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ করেন। এরপর তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ তো আপনার পূর্বাপর সমূদয় গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, শোন, আল্লাহর শপথ! আমি আল্লাহ তাআলাকে তোমাদের সকলের চেয়ে অধিক ভয় করি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৪]

১৩. অধ্যায: জানাবাত অবস্থায় কারো প্রভাত হলে তার সওম শুদ্ধ হইবে

২৪৭৯. আবু বাক্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] তাহাঁর আলোচনায় বলিলেন, জানাবাত অবস্থায় কারো ভোর হলে তার সওম হইবে না। এরপর এ কথাটি আমি আবদুর রহমান ইবনি হারিস [রাদি.]-এর নিকট বর্ণনা করলাম। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করিলেন। তরপর আবদুর রহমান চললেন। আমিও তাহাঁর সাথে সাথে চললাম। আমরা আয়েশাহ এবং উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.]-এর নিকট গেলাম। এরপর আবদুর রহমান তাঁদের উভয়কে এ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করিলেন। তাঁরা বলিলেন, নবী [সাঃআঃ] ইহতিলাম ব্যতিরেকে জানাবাতের অবস্থায় ভোর করিতেন এবং সওম পালন করিতেন। তারপর আমরা মারওয়ানের নিকট আসলাম এবং আবদুর রহমান তার সাথে এ নিয়ে আলোচনা করিলেন। এরপর মারওয়ান বলিলেন, আমি তোমাকে কসম দিয়ে বলছি, তুমি আবু হুরায়রার নিকট যাও এবং তার কথাটি রদ করে দাও। এরপর আমি আবু হুরায়রার নিকট গেলাম। এ সময় আবু বকর [রাদি.] আবদুর রহমানের সাথে ছিলেন। আবদুর রহমান এ নিয়ে আবু হুরায়রার সঙ্গে আলোচনা করিলেন। আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] বলিলেন, তোমার নিকট তাঁরা উভয়েই কি এ কথা বলেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তাঁরা উভয়েই এ কথা বলেছেন। তখন আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] বলিলেন, বস্তুত তাঁরাই সর্বাধিক অবগত। তারপর আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] তাহাঁর এ কথাটিকে ফায্‌ল ইবনি আব্বাসের প্রতি সম্পর্কিত করে বলিলেন, আমি এ কথাটি ফায্‌লের [ইবনি আব্বাস] থেকে শুনেছিলাম, নবী [সাঃআঃ] থেকে শুনিনি। রাবী বলেন, এরপর আবু হুরায়রাহ [রাদি.] এ বিষয়ে তাহাঁর মত পরিবর্তন করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবদুল মালিককে জিজ্ঞেস করলাম, তারা রমাযানের কথা বলেছে কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ অনুরূপই নবী [সাঃআঃ] ইহতিলাম ব্যতিরেকেও জানাবাত অবস্থায় ভোর করিতেন। এরপর সওম পালন করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৫]

২৪৮০. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমজান মাসে ইহতিলাম ছাড়াই নবী [সাঃআঃ]-এর জানাবাত অবস্থায় ফাজ্‌রের নামাজের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করিতেন এবং সওম পালন করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৬]

২৪৮১. আবু বাক্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা মারওয়ান তাকে উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.]-এর নিকট পাঠালেন ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য যার জানাবাতের অবস্থায় ভোর হলো, সে সওম পালন করিতে পারবে কি? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ইহতিলাম ব্যতিরেকে স্ত্রী সহবাসের কারণে গোসল ফরয হওয়া অবস্থায় ভোর হতো। এরপর তিনি সওম ভঙ্গও করিতেন না এবং রোজার কাযাও করিতেন না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৭]

২৪৮২. নবী [সাঃআঃ] এর সহধর্মিণী আয়িশাহ্ এবং উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাঁরা উভয়ই বলেন, রমজান মাসে ইহ্তিলাম ছাড়াই স্ত্রী সহবাসের কারণে জানাবাতের অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর ভোর হতো, এরপর তিনি সওম পালন করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৮]

২৪৮৩. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ফাতাওয়া জিজ্ঞেস করার জন্য এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এলো। এ সময় তিনি দরজার পেছন থেকে কথাগুলো শুনছিলেন। লোকটি বলিল, ইয়া রসূলুল্লাহ! জানাবাতের অবস্থায় আমার ফাজরের সময় হয়ে যায়, এমতাবস্থায় আমি সওম পালন করিতে পারি কি? উত্তরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, জানাবাতের অবস্থায় আমারও ফাজরের নামাজের সময় হয়ে যায়, আমি তো সওম পালন করি। এরপর লোকটি বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো আমাদের মতো নন। আল্লাহ তাআলা আপনার পূর্বাপর সমূদয় গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমার আশা, আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে সর্বাধিক ভয় করি এবং আমি সর্বাধিক অবগত ঐ বিষয় সম্পর্কে, যা থেকে আমার বিরত থাকা আবশ্যক।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৫৯]

২৪৮৪. সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিলেন, জানাবাতের অবস্থায় যার ভোর হয়, সে সওম পালন করিবে কি? তিনি বলিলেন, ইহতিলাম ছাড়াই জানাবাতের অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ভোর হতো এবং তিনি সওম পালন করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬০]

১৪. অধ্যায়ঃ রমাযানের দিনে সওমরত অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা কঠোর হারাম, কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে তবে তার উপর বড় ধরনের কাফ্‌ফারাহ্‌ ওয়াজিব- সে বিত্তশালী হোক বা বিত্তহীন, তবে বিত্তহীন ব্যক্তির পক্ষে যখন সম্ভব হয়, তখন এ কাফ্‌ফারাহ আদায় করিতে হইবে

২৪৮৫. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি। তিনি বলরেন, কিসে তোমাকে ধ্বংস করেছে? সে বলিল, আমি রমাযানে সওমরত অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বলিলেন, তোমার কোন ক্রীতদাস আছে কি যাকে তুমি আযাদ করে দিতে পার? সে বলিল, না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি ক্রমাগত দুমাস সওম পালন করিতে পারবে? সে বলিল, না। পুনরায় নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াতে পারবে কি? সে বলিল, না। তারপর সে বসে গেল। এরপর নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এক টুকরি খেজুর আনা হল। তিনি লোকটিকে বলিলেন, এগুলো সদাক্বাহ করে দাও। তখন সে বলিল, আমার চেয়েও অভাবী লোককে সদাক্বাহ করে দিব? [মাদীনার] দুটি কংকরময় ভূমির মধ্যস্থিত স্থানে আমার পরিবারের চেয়ে অভাবী আর একটিও নেই। এ কথা শুনে নবী [সাঃআঃ] হেসে দিলেন। এমনকি তাহাঁর সামনের দাঁতগুলো প্রকাশ হয়ে পড়ল। তখন তিনি বলিলেন, তাহলে যাও এবং তোমার পরিবারকে খেতে দাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬১]

২৪৮৬. মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম আয্ যুহরী [রাদি.]-এর সানাদে ইবনি উয়ায়নাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ হাদীসের মধ্যে [আরবী] এরপর [আরবী] শব্দটি উল্লেখ রয়েছে এবং এতে নবী [সাঃআঃ]-এর হাসির কথা উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬২]

২৪৮৭. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বর্ণিত। এক ব্যক্তি রমজান মাসে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে এবং এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট প্রশ্ন করিল। তখন তিনি বলিলেন, তোমার কোন ক্রীতদাস আছে কি? সে বলিল, না। তিনি আবার বলিলেন, তুমি দুমাস সওম পালন করিতে পারবে কি? সে বলিল, না। তখন তিনি বলিলেন, তাহলে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৩]

২৪৮৮. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি রমাযানের সওম ভেঙ্গে ফেলার কারণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে এর কাফ্ফারাহ হিসেবে একটি গোলাম আযাদ করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি ইবনি উয়ায়নার অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৪]

২৪৮৯. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রমাযানের সওম ভেঙ্গে ফেলার কারণে নবী [সাঃআঃ] তাকে নির্দেশ দিলেন, হয় তো সে একটি গোলাম আযাদ করিবে অথবা দুমাস সওম পালন করিবে অথবা ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৫]

২৪৯০. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে ইবনি উয়ায়নার অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৬]

২৪৯১. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আমি জ্বলে গিয়েছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, কেন? সে বলিল, রমাযানের দিনে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বলিলেন, তাহলে সদাক্বাহ দাও, সদাক্বাহ দাও। সে বলিল, আমার নিকট কিছুই নেই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বসার জন্য নির্দেশ দিলেন। এমতাবস্থায় দু টুকরি ভর্তি খাদ্য আসল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে এগুলো সদাক্বাহ করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৭]

২৪৯২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী হাদীসটি বর্ণনা করিলেন। তবে এ হাদীসের প্রথমে “সদাক্বাহ করো, সদাক্বাহ করে” শব্দ দুটো উল্লেখ নেই এবং এতে “দিনের বেলায়” কথাটিও উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৮]

২৪৯৩. নবী [সাঃআঃ] এর সহধর্মিণী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রমাযানের মাসে মসজিদের মধ্য রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি তো জ্বলে গিয়েছি, আমি তো জ্বলে গিয়েছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, কি ব্যাপার, কী হয়েছে তার? সে বলিল, আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বলিলেন, তাহলে সদাক্বাহ কর। সে বলিল, আল্লাহর শপথ! হে আল্লাহর নবী! আমার কিছুই নেই এবং এ ব্যাপারে আমি সক্ষম নই। তিনি বলিলেন, বসো। সে বসল, লোকটি বসা থাকতেই এক ব্যক্তি গাধা হাঁকিয়ে আসল। এর উপর ছিল খাদ্য। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, ঐ অগ্নিদদ্ধ লোকটি কোথায়, যে কিছুক্ষণ পূর্বে এসেছিল? লোকটি দাঁড়াল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এগুলো সদাক্বাহ্‌ করে দাও। সে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের ছাড়া অন্য লোকদের সদাক্বাহ করে দিব? আল্লাহর শপথ আমরা অত্যন্ত ক্ষুধার্ত, আমাদের কিছুই নেই। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে ওগুলো তোমরা খেয়ে ফেল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৬৯]

১৫. অধ্যায়ঃ অবৈধ নয় এমন কাজে রমজান মাসে সফরকারী ব্যক্তির জন্য সওম পালন করা এবং ইফত্বার করা উভয়ই জায়িয যদি দু বা ততোধিক মঞ্জিলের উদ্দেশ্যে সফর করা হয়, অবশ্য ক্ষমতাবান ব্যক্তির জন্য সওম পালন করা উত্তম এবং অক্ষম ব্যক্তির জন্য সওম ভঙ্গ করা উত্তম

২৪৯৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

১১১৩] ইয়াহ্‌ইয়া ইবনি ইয়াহ্‌ইয়া, মুহাম্মাদ ইবনি রুম্‌হ ও কুতায়বাহ্‌ ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীত। তিনি বলেছেন, [মাক্কাহ] বিজয়ের বছর রমজান মাসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওমরত অবস্থায় সফরে বের হলেন। অতঃপর কাদীদ নামক স্থানে পৌঁছাবার পর তিনি সওম ভেঙ্গে ফেললেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে যখনই কোন নতুন বিষয় প্রকাশ পেত, তাহাঁর সাহাবীগণ তা অনুসরণ করিতেন। {৬}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭০]

{৬} রমজান মাসে সফর তথা ভ্রমণ করা অবস্থায় সওম পালন করা বিষয়ে বিভিন্নভাবে রিওয়ায়াতে আছে এবং ঈমামদের মাঝেও মতবিরোধ আছে। তবে সঠিক কথা হলো- কোন অসুবিধার আশংকা না থাকলে সওম পালন উত্তম এবং সমস্যা হলে সওম না রাখাই উত্তম। কেননা সওম পালনের দ্বারা বান্দার উপর যে দায়িত্বের বোঝা চেপেছিল তা দূর হয়ে যায়।

২৪৯৫. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াহ্ইয়া বলেন, সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন যে, আমি জানি না এ কার কথা অর্থাৎ তারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর শেষোক্ত কথাটি গ্রহণ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭১]

২৪৯৬. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদের সাথে বর্ণনা করিয়াছেন। যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সওম পালন না করা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সর্বশেষ কাজ। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর শেষোক্ত কাজকেই গ্রহণ করা হতো। তিনি বলেন, রমাযানের তের দিন অতিবাহিত হবার পর ভোরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাক্কাহ্ প্রবেশ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭২]

২৪৯৭. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে লায়স-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সাহাবীগণ প্রত্যেক নতুন বিষয়ের অনুসরণ করিতেন। যে বিষয়টি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছ থেকে পেতেন সাহাবীগণ একে রহিতকারী ও অধিকতর বলিষ্ঠ মনে করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৩]

২৪৯৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক সময় রমজান মাসে সওমরত অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে বের হলেন। যখন তিনি উসফান নামক স্থানে পৌঁছলেন তখন তিনি পানি ভর্তি পাত্র আনার জন্য বলিলেন এবং লোকদেরকে দেখাবার জন্য দিনেই তা পান করে সওম ভেঙ্গে ফেললেন এবং এ অবস্থায় তিনি মক্কা প্রবেশ করিলেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, যেহেতু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [সফরে কখনো] সওম পালন করিয়াছেন আবার কখনো ইফত্বার করিয়াছেন, তাই কেউ ইচ্ছা করলে সওম পালন করিতে পারে আবার কেউ ইচ্ছা করলে সওম ছেড়ে দিতে পারে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৪]

২৪৯৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সওম পালন করে তার প্রতি দোষারোপ করো না এবং তার প্রতিও না যে সওম ছেড়ে দেয়। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরের অবস্থায় [কখনো] সিয়াম পালন করিয়াছেন [আবার কখনও] সওম ছেড়ে দিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৫]

২৫০০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বর্ণিত। মাক্কাহ বিজয়ের বছর রমজান মাসে সওমরত অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাক্কার উদ্দেশে বের হলেন। এরপর যখন তিনি “কুরাউল গামীম” নামক স্থান পৌঁছলেন, তখন লোকেরাও সওমরত ছিল। এরপর তিনি একটি পানির পাত্র চাইলেন। এমনকি লোকেরা তাহাঁর দিকে তাকাতে লাগল। এরপর তিনি পানি পান করিলেন। তখন তাঁকে বলা হল, কতিপয় লোক সওমরত রয়েছে। তিনি বলিলেন, তারা অবাধ্য, তারা অবাধ্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৬]

২৫০১. জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন যে, অতঃপর তাঁকে বলা হল, মানুষের সওম পালন করা কষ্টাতীত হয়ে পড়েছে। আপনি কী করেন, তারা সেদিকে তাকিয়ে আছে। এ কথা শুনে তিনি আসরের পর এক পাত্র পানি চাইলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৭]

২৫০২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক সফরে ছিলেন। এ সময় তিনি এক ব্যক্তিকে দেখিতে পেলেন, লোকেরা তার কাছে জটলা করে আছে এবং তাকে ছায়া করে আছে। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তার কী হয়েছে? তারা বলিলেন, লোকটি সিয়াম পালনকারী। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সফরে তোমাদের সওম পালন করা কোন নেকীর কাজ নয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৮]

২৫০৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে দেখলেন। এরপর তিনি অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৮০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৭৯]

২৫০৪. শুবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। শুবাহ্ বলেন, এ সানাদে ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু কাসীরের মাধ্যমে অতিরিক্ত এ কথাও আমার নিকট পৌঁছেছে যে, তিনি বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যে সুবিধা দিয়েছেন তা গ্রহণ করা তোমাদের জন্য অপরিহার্য। আমি যখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তখন সে মুখস্থ বলিতে পারেনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৮১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮০]

২৫০৫. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমাযানের ষোল দিন অতিবাহিত হবার পর আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এ সময় আমাদের কেউ সিয়াম পালন করছিলেন, আবার কেউ তা ছেড়ে দিচ্ছিলন। কিন্তু এতে সওম পালনকারী সওম ভঙ্গকারীকে কোন দোষারোপ করেনি এবং সওম ভঙ্গকারীও সওম পালনকারীকে কোন প্রকার দোষারোপ করেনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৮২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮১]

২৫০৬. ক্বাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হাম্মামের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

তবে আত্ তায়মী, উমর উবনু আমির ও হিশামের বর্ণনায় রমাযানের আঠার দিন অতিবাহিত হয়েছে কথাটি বর্ণিত আছে। সাঈদের বর্ণনায় বারোই রমজান এবং শুবার বর্ণনায় সতের অথবা ঊনিশ রমাযানের কথা উল্লেখ রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮২]

২৫০৭. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রমজান মাসে সফর করতাম কিন্ত সওম পালনকারীকে তার রোজার কারণে দোষারোপ করা হতো না এবং সওম ভঙ্গকারীকেও তার সওম ভঙ্গের কারণে দোষারোপ করা হতো না।

[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৩]

২৫০৮. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমজান মাসে আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহন করতাম। এ সময় আমাদের কেউ সওম পালন করিয়াছেন, আবার কেউ সওম ছেড়েও দিয়েছেন। কিন্ত সওম পালনকারী সওম ভঙ্গকারীকে খারাপ মনে করিতেন না এবং সওম ভঙ্গকারীও সওম পালনকারীকে খারাপ মনে করিতেন না। তারা মনে করিতেন যার সামর্থ্য আছে সে-ই সওম পালন করছে, এটা তার জন্য উত্তম। আর যে দুর্বল সে সওম ছেড়ে দিয়েছে, এটা তার জন্য উত্তম।

[ই. ফা.২৪৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৪]

২৫০৯. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] ও জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাঁরা উভয়ই বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সফর করেছি। এমতাবস্থায় সওম পালনকারী সওম পালন করিয়াছেন এবং সওম যারা ছাড়তে চেয়েছেন, তারা ছেড়ে দিয়েছেন কিন্ত এতে কেউ একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করেননি।

[ই.ফা.২৪৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৫]

২৫১০. হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমজান মাসে সফরকালে রোজার বিধান কী? এ সম্বন্ধে আনাস [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বলিলেন, রমজান মাসে আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সফর করেছি। এ সময় সওম পালনকারী ব্যক্তি সওম ভঙ্গকারী ব্যক্তির কোন নিন্দা করেনি এবং সওম ভঙ্গকারী ব্যক্তিও সওম পালনকারীর কোন নিন্দা করেনি।

[ই. ফা.২৪৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৬]

২৫১১. হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি সফরের উদ্দেশে বের হলাম এবং সিয়াম পালন করলাম। লোকেরা আমাকে বলিল, তুমি পুনরায় সওম পালন কর। তখন আমি বললাম, আনাস [রাদি.] আমাকে বলেছেন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহাবীগন সফরকালে সওম পালনকারী সওম ভঙ্গকারীকে কোন দোষারোপ করেনি। অনুরূপভাবে সওম ভঙ্গকারীও সওম পালনকারীকে কোন প্রকার দোষারোপ করেনি। অতঃপর আমি ইবনি আবু মুলায়কাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি আয়িশাহ্ [রাদি.] থেকে আমাকে অনুরূপ হাদীস শুনালেন।

[ই. ফা.২৪৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৭]

১৬. অধ্যায়ঃ সফরের কোন কাজের দায়িত্ব পেলে সিয়াম ভঙ্গকারী র প্রতিদান প্রসঙ্গে

২৫১২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] এর সাথে আমরা সফরে ছিলাম। আমাদের কেউ সওম পালন করিয়াছেন, আবার কেউ ছেড়ে দিয়েছেন। এরপর প্রচন্ড গরমের সময় আমরা এক প্রান্তরে অবতরণ করলাম। চাদর বিশিষ্ট লোকেরাই আমাদের মধ্যে সর্বাধিক ছায়া লাভ করিতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের কেউ কেউ নিজ হাত দ্বারা সূর্যের কিরণ থেকে নিজেকে রক্ষা করছিলেন। অবশেষে সওম পালনকারীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ল এবং সওম ত্যাগকারীরা সুস্থ থাকল। এবপর তারা তাঁবু খাটালো এবং উটকে পানি পান করালো তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ সওম পরিত্যাগকারীরা সওয়াব অর্জন করে নিল।

[ই. ফা.২৪৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৮]

২৫১৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক সফরে ছিলেন। তখন কেউ কেউ সওম পালন করিলেন, আবার কেউ কেউ সওম ছেড়ে দিলেন। এরপর যারা সওম ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা শক্তিমত্তার সাথে কাজ করিলেন এবং সওম পালনকারী ব্যক্তিগন কাজে দুর্বল হয়ে পড়লেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ সওম পরিত্যাগকারীরা নেকী অর্জন করে নিল।

[ই. ফা.২৪৯০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৮৯]

২৫১৪. কাযাআহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] এর নিকট গেলাম। তাহাঁর নিকট মানুষের খুব ভীড় ছিল। যখন লোকজন পৃথক হয়ে এদিক ওদিক চলে গেল, তখন আমি বললাম, আমি আপনার নিকট ঐসব কথা জিজ্ঞেস করব না যা লোকেরা জিজ্ঞেস করেছে। আমি তাঁকে সফরের অবস্থায় সওম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সওমরত অবস্থায় মক্কার দিকে রওনা করলাম। এরপর একস্থানে আমরা অবতরণ করলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন এখন তোমরা শত্রুদের নিকটবর্তী হয়ে গিয়েছ। এখন সওম ভঙ্গ করাই তোমাদের জন্য শক্তিশালী থাকার উপায় এবং এটা তোমাদের জন্য বিশেষ এক অবকাশ। তখন আমাদের কতক লোক সওম পালন করিল, আবার কতক লোক ইফত্বার কলল। এরপর আমরা অন্য এক স্থানে অবতরণ করলাম। তখন তিনি বলিলেন, ভোরেই তোমরা শত্রুর মুকাবিলা করব। সুতরাং ইফত্বারই তোমাদের জন্য শক্তি বর্ধক। তাই তোমরা ইফত্বার কর। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর এ নির্দেশ অবশ্য পালনীয় ছিল। তাই আমরা সকলেই সওম ভঙ্গ করলাম। এরপর আমরা দেখেছি, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সফরের অবস্থায় সওম পালন করতাম।

[ই. ফা.২৪৯১, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯০]

১৭. অধ্যায়ঃ ভ্রমণকালে রোজা রাখা ও না রাখার ইখতিয়ার প্রসঙ্গে

২৫১৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হামযাহ্ ইবনি আমর আল আসলামী [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে সফরের অবস্থায় সওম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সওম পালন কর, আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সওম ছেড়ে দাও।

[ই. ফা.২৪৯২, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯১]

২৫১৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হামযাহ্ ইবনি আম্‌র আল আসলামী [রাদি.] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি তো অনবরত সওম পালন করি। সফরের অবস্থায়ও সওম পলন করব কি? তিনি বলিলেন, যদি তোমার ইচ্ছা হয়, তবে সওম পালন কর, আর যদি ইচ্ছা হয়, তবে সওম ছেড়ে দাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯২]

২৫১৭. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হাম্মাদ ইবনি যায়দের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, [তিনি বলেন] আমি সর্বদা সওম পালন করি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৩]

২৫১৮. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। হামযাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি সর্বদা সওম পালন করি। সুতরাং সফরে আমি কি সওম পালন করব?

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৪]

২৫১৯. হামযাহ্ ইবনি আমর আল আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! সফরের অবস্থায় রোজা পালনের ক্ষমতা আমার রয়েছে। এ সময় রোজা পালন করলে আমার কোন গুনাহ হইবে কি? তিনি বলিলেন, এটা আল্লাহর পক্ষ হইতে এক বিশেষ অবকাশ, যে তা গ্রহন করিবে, তা তার জন্য উত্তম। আর যদি কেউ রোজা পালন করিতে চায়, তবে তার কোন গুনাহ হইবে না। হারূন তার হাদীসের মধ্যে [আরবি] [এটা ছাড়] কথাটি উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্ত [আরবি] [আল্লাহর পক্ষ থেকে] কথাটি উল্লেখ করেননি।

[ই. ফা.২৪৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৫]

২৫২০. আবু দারদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক প্রচন্ড গরমের দিনে রমজান মাসে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সফরে বের হলাম। গরম এত প্রচন্ড ছিল যে, আমাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিল। আর মাত্র রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও আব্দুল্লাহ ইবনি রওয়াহাহ্ [রাদি.] ব্যতীত আমাদের মাঝে কেউই সওম পালনকারী ছিল না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৬]

২৫২১. উম্মু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু দারদা [রাদি.] বলেছেন যে প্রচন্ড গরমের দিনে কোন এক সফরে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। গরম এতো প্রচন্ড ছিল যে, লোকেরা নিজ নিজ হাত মাথার উপরে রেখে দিয়েছিল। আর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও আব্দুল্লাহ ইবনি রওয়াহাহ্ [রাদি.] ব্যতীত আমাদের মাঝে কেউই সওম পালনকারী ছিল না।

[ই. ফা.২৪৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৭]

১৮. অধ্যায়ঃ হাজীদের জন্য আরাফার দিন আরাফার ময়দানে রোজা পালন না করা মুস্তাহাব

২৫২২. উম্মুল ফায্‌ল বিনতু হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

লোকেরা আরাফার দিন তার নিকট রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর রোজা পালন [করা না করা] সম্পর্কে আলোচনা করছিল। তাদের কেউ কেউ বলিল তিনি সওমরত নন। এরপর আমি তাহাঁর নিকট এক পেয়ালা দুধ পাঠালাম, তিনি আরাফাতে উটের উপর বসা অবস্থায় ছিলেন। দুধটুকু তিনি তখনি পান করে নিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৪৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৮]

২৫২৩. আবু নাযর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি [আরবী] [অর্থাৎ তিনি উটের উড়রে বসা অবস্থায় ছিলেন] বাক্যটি উল্লেখ করেননি। অধিকন্ত এতে তিনি উম্মুল ফায্লের আযাদকৃত গোলাম উমায়র হইতে বর্ণীত বলে উল্লেখ করেন।

[ই.ফা.২৫০০, ইসলামিক সেন্টার- ২৪৯৯]

২৫২৪. সালিম আবু আন্ নাযর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে ইবনি উয়ায়নার অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এখানেও উম্মুল ফাযলের আযাদকৃত গোলাম উমায়র হইতে বর্ণীত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০১, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০০]

২৫২৫. উম্মুল ফায্‌ল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কতিপয় সাহাবী আরাফার দিন তাহাঁর রোজা পালনের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করিলেন। উম্মুল ফায্‌ল [রাদি.] বলেন আমরাও সেখানে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। এ সময়ে আমি তাহাঁর নিকট এক পেয়ালা দুধ পাঠিয়ে দিলাম। তখন তিনি আরাফার ময়দানে ছিলেন। এরপর তিনি তা পান করে নিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০২, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০১]

২৫২৬. নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সহধর্মিণী মায়মূনাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা আরাফার দিন নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সওম পালন করার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করিলেন। এরপর মায়মূনাহ্ [রাদি.] তাহাঁর নিকট এক পেয়ালা দুধ পাঠিয়ে দিলেন, এ সময় তিনি মাওকাফ এর মধ্যে অবস্থান করছিলেন। তখন তিনি তা পান করে নিলেন। আর লোকেরা তাহাঁর দিকে তাকিয়ে রইল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০২]

১৯. অধ্যায়ঃ আশুরা দিবসে রোজা পালন করা

২৫২৭. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কুরায়শরা জাহিলী যুগে আশূরার দিন রোজা পালন করত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও এ দিন সওম পালন করিতেন। এরপর যখন তিনি মাদীনায় হিজরত করিলেন, তখনও তিনি আশূরার সওম পালন করিয়াছেন এবং লোকদেরকেও তা পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর যখন রমাযানের রোজাকে ফরয করা হলো, তখন যার ইচ্ছা, সে আশূরা সওম পালন করত আর যার ইচ্ছা, সে তা ছেড়ে দিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৩]

২৫২৮. হিশাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ হাদীসে প্রথমাংশে “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও এ সওম পালন করিতেন” এ কথাটির উল্লেখ করেন। অবশ্য এ হাদীসে শেষাংশে রয়েছেঃ “এরপর আশূরার দিন সওম পালন করা ছেড়ে দেয়া হল” সুতরাং যার ইচ্ছা সে এ দিন সওম পালন করত এবং যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিত এবং বর্ণনাকারী জারীরের বর্ণনামতে এ কথাটিকে নবী [সাঃআঃ]-এর বাণীর অন্তর্ভুক্ত করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৪]

২৫২৯. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জাহিলী যুগে আশূরার দিন সওম পালন করা হত। এরপর যখন ইসলামের আবির্ভাব হল, তখন যার ইচ্ছা সে এদিন সওম পালন করত, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৫]

২৫৩০. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রমাযানের রোজা ফরয হওয়ার পূর্বে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আশূরার দিনে রোজা পালন করার নির্দেশ দিতেন। যখন রমাযানের রোজা ফরয করা হল তখন যার ইচ্ছা সে আশূরার দিনে সওম পালন করত, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৬]

২৫৩১. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কুরায়শরা জাহিলী যুগে, আশূরার দিন সওম পালন করত। রমাযানের রোজা ফরয হওয়ার পূর্বে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যার ইচ্ছা সে এদিন সওম পালন করিবে, আর যার ইচ্ছা, সে তা ছেড়ে দিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৭]

২৫৩২. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জাহিলী যুগে লোকেরা আশূরার দিন রোজা পালন করত। রমাযানের রোজা ফরয হওয়ার পূর্বে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও এদিন রোজা পালন করিয়াছেন এবং মুসলিমগণও। যখন রমাযানের রোজা ফরয হল তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আশূরার দিন আল্লাহর দিনসমূহের একটি দিন। সুতরাং যার ইচ্ছা সে এ দিন রোজা পালন করিবে, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫০৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৮]

২৫৩৩. উবায়দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১০, ইসলামিক সেন্টার- ২৫০৯]

২৫৩৪. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আশূরার দিন সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আলোচনা করা হলে তিনি বলিলেন, এ দিনে জাহিলী যুগে লোকেরা রোজা পালন করত। তোমাদের মধ্যে যে এ দিনে রোজা পালন করিতে আগ্রহী, সে এ দিনে রোজা পালন করিতে পারে। আর যে অপছন্দ করে, সে ছেড়ে দিতে পারে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১১, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১০]

২৫৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আশূরার দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ কথা বলিতে শুনেছেন যে, জাহিলী যুগে এ দিনে লোকেরা রোজা সাধনা করত। যদি কেউ এদিনে সওম পালন করিতে চায়, সে এদিনে রোজা পালন করিবে। আর কেউ যদি এদিনে সওম পালন করিতে না চায়, সে সওম পালন করিবে না। আবদুল্লাহ [রাদি.] তাহাঁর অভ্যস্ত দিনে না হলে আশূরার সওম পালন করিতেন না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১২, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১১]

২৫৩৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আশূরার দিনের রোজা সম্পর্কে কথা তোলা হল। তারপর তিনি লায়স ইবনি সাদ [রাদি.]-এর অনুরূপই বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১২]

২৫৩৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আশূরার দিবস সম্পর্কে কথা তোলা হলে তিনি বলিলেন, এ দিনে জাহিলী যুগে লোকেরা রোজা পালন করত। যার ইচ্ছা সে এ দিনে সওম পালন করিবে, আর যার ইচ্ছা সে এ দিনে সওম পালন করিবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৩]

২৫৩৮. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আশআস ইবনি ক্বায়স [রাদি.] আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর নিকট গেলেন। তখন তিনি দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তিনি বলিলেন, হে আবু মুহাম্মাদ! তুমি খাওয়ার জন্য কাছে এসো। তিনি বলিলেন, আজ কি আশূরার দিন নয়? তিনি বলিলেন, তুমি কি জান আশূরা দিন কী? আশআস [রাদি.] বলিলেন, সে আবার কী? তিনি বলিলেন, রমাযানের রোজা ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোজা পালন করিতেন। যখন রমাযানের রোজা ফরয হল তখন তা ছেড়ে দেয়া হল। রাবী আবু কুরায়ব [রাদি.] [আরবী] এর স্থলে [আরবী] বলেছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৪]

২৫৩৯. আমাশ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাঁরা বলেছেন, [আরবী] “যখন রমাযানের বিধান নাযিল হল তখন তা ছেড়ে দেয়া হয়।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৫]

২৫৪০. ক্বায়স ইবনি সাকান হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আশূরার দিন আশআস ইবনি ক্বায়স [রাদি.] আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর কাছে এলেন। এ সময় তিনি আহার করছিলেন। তিনি আশআসকে লক্ষ্য করে বলিলেন, হে আবু মুহাম্মাদ! নিকটে এসো্, খানা খাও। তিনি বলিলেন, আমি তো সওম পালন করছি। এ কথা শুনে আবদুল্লাহ [রাদি.] বলিলেন, আমরা এ সওম পালন করতাম। পরে তা ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৭,ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৬]

২৫৪১. আলক্বামাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আশআস ইবনি ক্বায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি মাসঊদ [রাদি.]-এর নিকট গেলেন। সেটা আশূরার দিন ছিল। তখন তিনি খানা খাচ্ছিলেন। এ দেখে আশআস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, হে আবদুর রহমানের পিতা! আজ তো আশূরার দিন। তিনি বলিলেন, রমাযানের রোজা ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনে রোজা পালন করা হতো। কিন্ত রমাযানের রোজা ফরয হলে এ দিনের রোজা পালন ছেড়ে দেয়া হয়। এখন তুমি যদি সওম না রেখে থাক তবে খাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৮,ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৭]

২৫৪২. জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] আশূরার দিন আমাদেরকে রোজা পালনের নির্দেশ দিতেন। তিনি এ ব্যাপারে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করিতেন এবং এ বিষয়ে তিনি আমাদের খোঁজ-খবর নিতেন। কিন্ত যখন রমাযানের রোজা ফরয হল তখন তিনি আমাদেরকে আদেশও করেননি, বাধ্যও করেননি এবং কোন খোঁজ-খবর আর নেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫১৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৮]

২৫৪৩. হুমায়দ ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি একদিন মুআবিয়াহ্‌ ইবনি আবু সুফ্‌ইয়ান [রাদি.]-কে মাদীনায় খুত্‌বায় বলিতে শুনলেন অর্থাৎ যখন তিনি মাদীনায় এসেছিলেন, তখন আশূরার দিবসে তিনি তাদের উদ্দেশে খুতবাহ্‌ দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, হে মাদীনাবাসী! তোমাদের আলিমগণ কোথায়? আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ দিন সম্পর্কে বলিতে শুনেছি যে, এ হল আশূরা দিবস। আল্লাহ তোমাদের উপর এ দিনের সওম ফরয করেননি। তবে আমি সওম পালন করছি। তাই তোমাদের মধ্যে যে সওম পালন করিতে পছন্দ করে, সে পালন করিবে আর যে পছন্দ করেনি, সে করিবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২০, ইসলামিক সেন্টার- ২৫১৯]

২৫৪৪. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২১, ইসলামিক সেন্টার-২৫২০]

২৫৪৫. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী [সাঃআঃ]-কে এ দিন সম্পর্কে বলিতে শুনেছেন যে, আমি সওম পালনকারী। যে সওম পালনের ইচ্ছা করে, সে যেন সওম পালন করে, অতঃপর তিনি মালিক এবং ইউনুস বর্ণিত হাদীসের অবশিষ্ট অংশ উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২২, ইসলামিক সেন্টার-২৫২১]

২৫৪৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [হিজরত করে] মাদীনায় এলেন এবং তিনি ইয়াহূদীদেরকে আশূরার দিন রোজা পালন করিতে দেখিতে পেলেন। এরপর তাদেরকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তারা বলিল, এ সে দিন যে দিন আল্লাহ মূসা [আঃ] ও বাণী ইসরাঈলকে ফিরআওনের উপর বিজয়ী করিয়াছেন। তাহাঁর সম্মানার্থে আমরা সওম পালন করে থাকি। তখন নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমরা তোমাদের চেয়েও মূসা [আঃ]-এর অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিনে সওম পালন করার নির্দেশ দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৫২২]

২৫৪৭. আবু বিশর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে হাদীসে [আরবী] [তারা এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করিল] এ স্থলে [আরবী] [তিনি তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করিলেন] বাক্যটি বর্ণিত আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৪, ইসলামিক সেন্টার-২৫২৩]

২৫৪৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদীনায় হিজরত করে ইয়াহূদীদেরকে আশূরার দিন সওম পালনরত দেখিতে পেলেন। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন, তোমারা কোন দিনের সওম পালন করছ, তারা বলিল, মহান দিনে আল্লাহ তাআলা মূসা [আঃ] ও তাহাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি দিয়েছেন এবং ফিরআওন ও তার কওমকে ডুবিয়ে দিয়েছেন। এরপর মূসা [আঃ] কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে এ দিনে সওম পালন করিয়াছেন। তাই আমরাও এ দিনে সওম পালন করছি। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমরা তো তোমাদের থেকে মূসা [আঃ]- এর অধিক নিকটবর্তী এবং হাক্বদার। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওম পালন করিলেন এবং সওম পালন করার জন্য সকলকে নির্দেশ দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৫, ইসলামিক সেন্টার-২৫২৪]

২৫৪৯. আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদের সাথে বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি বলেছেন, ইবনি সাঈদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ হাদীস  নবী [সাঃআঃ] থেকে শুনেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৬, ইসলামিক সেন্টার-২৫২৫]

২৫৫০. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইয়াহূদী সম্প্রদায় আশূরা দিবসের সম্মান প্রদর্শন করত এবং তারা এ দিনকে ঈদ বলে গন্য করত। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরাও এ দিনে সওম পালন কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৭, ইসলামিক সেন্টার-২৫২৬]

২৫৫১. ক্বায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এতে অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন যে, আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীত। তিনি বলেন, খায়বারের ইয়াহূদীরা আশূরার দিন সওম পালন করত, তারা এ দিনকে ঈদরূপে বরণ করত এবং তারা তাদের মহিলাদেরকে অলংকার ও উত্তম পোশাকে সুসজ্জিত করত। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরাও এ দিনে সওম পালন কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৮ ইসলামিক সেন্টার-২৫২৭]

২৫৫২. উবায়দুল্লাহ ইবনি আবু ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে আশূরার দিনে রোজা পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বলিলেন, এ দিন ব্যতীত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন মাসকে অন্য মাসের তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করে রোজা পালন করিয়াছেন করেও আমার জানা নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫২৯, ইসলামিক সেন্টার-২৫২৮]

২৫৫৩. উবায়দুল্লাহ ইবনি আবু ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩০, ইসলামিক সেন্টার-২৫২৯]

২০. অধ্যায়ঃ আশুরা উপলক্ষে রোজা  কোন দিন রাখা হইবে

২৫৫৪. হাকাম ইবনি আরাজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]- এর কাছে পৌছলাম। এ সময় তিনি যমযমের কাছে চাদর বিছানো অবস্থায় বসা ছিলেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, আমাকে আশূরা দিবসের রোজা পালন সম্পর্কে সংবাদ দিন। উত্তরে তিনি বলিলেন, মুহাররম মাসের চাঁদ দেখার পর তুমি এর তারিখগুলো গুণে রাখবে। এরপর নবম তারিখে সওম অবস্থায় তোমার যেন ভোর হয়। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি সেদিন রোজা পালন করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যা, করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩১, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৩০]

২৫৫৫. হাকাম ইবনি আরাজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যমযমের কাছে ইবনি আব্বাস [রাদি.] চাদর বিছিয়ে বসে থাকা অবস্থায় আমি তাঁকে আশূরার দিবসে সওম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। এরপর তিনি হাজিব ইবনি উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ই ফা ২৫৩২, ই সে ২৫৩১]

২৫৫৬. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন আশূরার দিন রোজা পালন করেন এবং লোকদের রোজা পালনের নির্দেশ দেন, তখন সাহাবীগণ বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়াহুদ এবং নাসারা এই দিনের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে থাকে। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, ইনশাআল্লাহ আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও রোজা পালন করব। বর্ণনাকারী বলিলেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এমতাবস্হায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ইন্তেকাল হয়ে যায়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৩ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩২]

২৫৫৭. আবদল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তবে মুহাররমের নবম তারিখেও রোজা পালন করব। আবু বাক্‍র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, নবম তারিখই হচ্ছে আশূরার দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৪ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৩]

২১ অধ্যায়ঃ যে আশুরার দিন কিছু খেয়ে ফেলল সে যেন দিনের বাকী অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকে

২৫৫৮. সালামাহ্ ইবনি আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আশুরার দিন আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তিকে নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন লোকদের মধ্যে এ কথা ঘোষণা করে যে, যে রোজা পালন করেনি, সে যেন রোজা পালন করে এবং যে আহার করেছে, সে যেন রাত পর্যন্ত তার সওম পূর্ণ করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৫ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৪]

২৫৫৯. রুবায়ই বিনতু মুআব্‌বিয ইবনি আফরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আশুরার দিন ভোরে এক ব্যাক্তিকে মাদীনার পার্শ্ববর্তী আনসারী সাহাবীগণের জনপদে এ নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন করে ঘোষনা করে দেয় যে, রোজারত অবস্হায় যার ভোর হয়েছে, সে যেন তার সওমকে পূর্ণ করে। আর যার ইফত্বার অবস্হায় ভোর হয়েছে, সে যেন তার দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার থেকে বিরত অবস্হায় পূর্ণ করে। এরপর আমরা এ দিন সাওম পালন করতাম এবং আমাদের ছোট ছোট সন্তানদেরকেও আল্লাহ চাহে তো সওম পালনে অভ্যস্ত করে তুলতাম। আমরা তাদেরকে মাসজিদে নিয়ে যেতাম এবং তাদের জন্য পশমের খেলনা বানিয়ে দিতাম। যখন তারা খাওয়ার জন্য কাঁদত, তখন আমরা তাদেরকে সে খেলনা প্রদান করতাম। এমনি করে ইফত্বারের সময় হয়ে যেত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৬ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৫]

২৫৬০. খালিদ ইবনি যাক্ওয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, আমি রুবায়ই বিনতু মুআব্‍বিয [রাদি.]-কে আশুরার দিন সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর বার্তাবাহককে আনসারদের গ্রামে পাঠালেন …. হাদিসের বাকী অংশ বিশ্‍র বর্ণিত হাদিসের অনুরুপ। শুধু এতটুকু ব্যতিক্রম রয়েছে, আমরা এদের জন্য পশম দিয়ে খেলনা তৈরি করতাম, এবং এগুলো আমাদের সাথেই নিয়ে যেতাম। এরা আমাদের কাছে খাবার চাইলে আমরা এ খেলনা এদের হাতে দিতাম। এটা তাদেরকে রোজা পূর্ণ করা পর্যন্ত ভুলিয়ে রাখত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৭ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৬]

২২ অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে রোজা পালন করা হারাম

২৫৬১. ইবনি আযহারের মুক্ত গোলাম আবু উবায়দ হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ঈদের দিন উমর ইবনি খাত্ত্বাব [রাদি.]–এর সাথে উপস্থিত ছিলাম। তিনি সালাত আদায় সমাপ্ত করে লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলেন। এতে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ দুদিন রোজা পালন করিতে নিষেধ করিয়াছেন। ঈদুল ফিতরের দিন, আর দ্বিতীয় হলো যেদিল তোমরা কুরবানীর গোশ্‍ত খেয়ে থাক। {৭}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৮ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৭]

{৭} ঈদুল ফিত্‍র এবং ঈদুল আযহার দিন সওম পালন করা হারাম। চাই তা মানসা করা বা নযর মানার সওম বা নাফ্‍ল সওমই হোক অথবা কাফ্‍ফারার সওম বা অন্যান্য সওম হোক। আর যদি বিশেষ করে ইচ্ছাকৃতভাবে ঐ দিনসমূহে মানসা করে তবে ঈমাম শাফিঈ এবং অধিকাংশ উলামার মতে তার ঐ মানসা সাব্যাস্তই হইবে না। সওম পালন করা না করা পরের কথা, ফলে তার উপর কাযা করাও আবশ্যক নয়। অন্য পক্ষে ঈমাম আবু হানীফার মতে মানসা কার্যকর হইবে এবং তার কাযা আদায় ওয়াজিব। ফলে অন্য কোন দিন সওম পালনে তা পূর্ণ হইবে। কিন্তু এ কথা সকল ইমামের ব্যতিক্রম, ঈমাম নাবাবীও এমনই বলেছেন ।

২৫৬২. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুদিন রোজা পালন করিতে নিষেধ করিয়াছেন – কুরবানীর ঈদের দিন আর ঈদুল ফিত্‍রের দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৩৯ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৮]

২৫৬৩. ক্বাযাআহ্ থেকে আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলিলেন, আমি তাহাঁর [আবু সাঈদ] কাছে একটি হাদীস শুনলাম যা আমার অত্যন্ত পছন্দ হলো। আমি তাঁকে বললাম, আপনি এ হাদীস রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে শুনেছেন। তিনি বলিলেন, আমি যা শুনিনি এমন কথা তাহাঁর নামে চালিয়ে দিতে পারি? এবার তিনি বলিলেন, আমি তাঁকে বলিতে শুনেছিঃ দুদিন রোজা পালন করা সমীচীন নয়। কুরবানীর ঈদের দিন আর রমযানের ঈদুল ফিতরের দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪০ ইসলামিক সেন্টার-২৫৩৯]

২৫৬৪. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুটি দিন রোজা পালন করিতে নিষেধ করেছেনঃ ঈদুল ফিত্‍রের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪১ ইসলামিক সেন্টার-২৫৪০]

২৫৬৫. যিয়াদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনি উমর [রাদি.]-এর কাছে এসে বলিল, আমি একদিন রোজা পালন করব বলে মানৎ করেছি। ঘটনাক্রমে ঐ দিনই ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিত্‍রের দিন পড়েছে। ইবনি উমর [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ তাআলা মানৎ পূর্ণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ দিন রোজা পালন করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪২ ইসলামিক সেন্টার-২৫৪১]

২৫৬৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুটি দিন রোজা পালন করিতে নিষেধ করিয়াছেন। ঈদুল ফিত্‍রের দিন এবং ঈদুল আযহার দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৩ ইসলামিক সেন্টার-২৫৪২]

২৩. অধ্যায়ঃ আইয়্যামে তাশরীক্বে রোজা পালন করা হারাম

২৫৬৭. নুবায়শাহ্ আল হুযালী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আইয়্যামে তাশরীক্ব হচ্ছে পানাহার করার দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৩]

২৫৬৮. নুবায়শাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, খালিদ বলেছেন, আমি আবুল মালীহি এর সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করি, তিনি আমাকে নবী [সাঃআঃ] থেকে হুশায়মের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ হাদীসের মধ্যে অতিরিক্ত রয়েছে যে, “এ দিন আল্লাহ্কে স্মরণ করার দিন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৪]

২৫৬৯. ইবনি কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে এবং আওস ইবনি হাদাসান [রাদি.] –কে আইয়্যানে তাশরীক্বে একটি ঘোষণা দেয়ার জন্য পাঠালেন। অতঃপর তারা রসূলের বাণী ঘোষনা করে শুনিয়ে দিলেনঃ “মুমিন ব্যক্তি ছাড়া কেউই জান্নাতে প্রবেশ করিবে না, আর মিনায় অবস্থানের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার করার দিন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৫]

২৫৭০. ইব্রাহীম ইবনি ত্বহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সূত্রে উল্লেখ আছে তারা উভয়ে ঘোষণা করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৬]

২৪. অধ্যায়ঃ কেবলমাত্র জুমুআর দিন রোজা পালন করা মাকরূহ

২৫৭১. মুহাম্মাদ ইবনি আব্বাস ইবনি জাফার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] যখন কাবাহ্ ঘর প্রদক্ষিণ করছিলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি জুমুআর দিন রোজা পালন করিতে নিষেধ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, কাবাহ্ ঘরের প্রভুর শপথ! হ্যাঁ, তিনি নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৭]

২৫৭২. জাবির [রাদি.] থেকেও এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]-এর একই হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৮]

২৫৭৩. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, “জুমুআর দিন কেউ যেন রোজা পালন না করে। কিন্তু যদি কেউ জুমুআর দিনের আগে বা পরে একদিন রোজা পালন করে তাহলে সে জুমুআর দিন রোজা পালন করিতে পারে।”

[ই.ফা, ২৫৫০, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৪৯]

২৫৭৪. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, “তোমরা রাতগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র জুমুআর রাতকে জাগরণের [নৈশ ইবাদাতের] জন্য নির্দিষ্ট করে নিও না, আর দিনগুলোর মধ্যে শুধু জুমুআর দিনকে সিয়ামের জন্য নির্দিষ্ট করে নিও না। তবে যদি তোমাদের কেউ সর্বদা [নাফ্‌ল] রোজা পালন করে আর এ সিয়ামের [ধারাবাহিকতার] মধ্যে জুমুআর দিন এসে যায় তাহলে ভিন্ন কথা। অর্থাৎ সে ঐদিন [নাফ্‌ল] রোজা পালন করিতে পারে।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৫৫১, ইসলামিক সেন্টার- ২৫৫০]


Posted

in

by

Comments

One response to “সওম পালনে হালাল, মাকরুহ ও হারাম সময় ও দিন”

Leave a Reply