জিহাদ, মুজাহিদ ও শহীদদের রূহ জান্নাতে জীবিত
শহীদদের রূহ জান্নাতে আর তাঁরা জীবিত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২৮. অধ্যায়ঃ জিহাদে ও আল্লাহর পথে বের হওয়ার মাহাত্ম্য
২৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর পথে শাহাদাতের মাহাত্ম্য
৩০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর রাহে সকাল-সন্ধ্যায় বের হওয়ার মাহাত্ম্য
৩১. অধ্যায়ঃ জান্নাতে মুজাহিদদের জন্যে আল্লাহ যে সম্মান প্রস্তুত রেখেছেন
৩২. অধ্যায়ঃ ঋণ ব্যতীত শহীদদের সকল গুনাহ্ ক্ষমা
৩৩. অধ্যায়ঃ শহীদদের রূহ জান্নাতে আর তাঁরা জীবিত, তাঁরা তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে জীবিকাপ্রাপ্ত হন
৩৪. অধ্যায়ঃ জিহাদ ও রিবাত [শত্রুর মুকাবিলায় বিনিদ্র প্রহরা]- এর ফযীলাত
৩৫. অধ্যায়ঃ পরস্পর একজন অন্যজনকে হত্যা করে উভয় ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করিবে
৩৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন কাফিরকে হত্যা করে নিজেও সঠিক পথে চলল
২৮. অধ্যায়ঃ জিহাদে ও আল্লাহর পথে বের হওয়ার মাহাত্ম্য
৪৭৫৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: আল্লাহ তাআলা সে ব্যক্তির দায়িত্ব স্বহস্তে তুলে নিয়েছেন যে ব্যক্তি তাহাঁরই রাস্তায় ঘর থেকে বের হয়। আমারই রাস্তায় জিহাদ, আমার প্রতি ঈমান এবং আমার রাসূলের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসই তাকে ঘর থেকে বের করে তখন আমারই যিম্মায় বর্তায় যে, আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেবো নতুবা সে তার যে বাসস্থান থেকে বেরিয়েছিল, তার প্রাপ্য সাওয়াব গনীমাতসহ তাকে সেখানে ফিরিয়ে আনবো। কসম সে পবিত্র সত্তার যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আল্লাহ তাআলার পথে যে ব্যক্তি যে পরিমাণই যখম হয় না কেন, কিয়ামাতের দিন সে ঠিক যখম অবস্থায়ই আসবে; তার বর্ণ হইবে রক্ত বর্ণ আর ঘ্রাণ হইবে কস্তুরীর। কসম সে পবিত্র সত্তার যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! যদি মুসলিমদের জন্য কষ্টকর না হতো তবে আমি কখনো আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের অভিযানে লিপ্ত দলে যোগদান না করে ঘরে বসে থাকতাম না। কিন্তু আমার কাছে এমন সামর্থ্য নেই যে, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেন তাঁদের সকলকে বাহন দান করবো, আর তাঁদের নিজেদেরও সে সঙ্গতি নেই [যে, নিজেরাই নিজেদের বাহন নিয়ে বের হইবে]। আর তাদের জন্যে এটা খুবই কষ্টকর হইবে যে, [আমি যুদ্ধে বেরোবার পর আমার সঙ্গে না গিয়ে] তারা পিছনে পড়ে থাকিবে। কসম সে পবিত্র সত্তার যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আমার একান্ত ইচ্ছা হয় আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করি আর তাতে শহীদ হই, তারপর আবার জিহাদ করি, আবারও শহীদ হই, আবার জিহাদ করি, আবারও শহীদ হই
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭০৭]
৪৭৫৪. উমারাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে উক্ত হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭০৮]
৪৭৫৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন: আল্লাহ সে ব্যক্তির দায়িত্ব নিয়েছেন, যে তাহাঁরই পথে জিহাদ করে, তাকে ঘর থেকে বের করে কেবল তাহাঁরই রাস্তায় জিহাদ আর তাহাঁরই কালিমায় বিশ্বাস। সে দায়িত্বটি হচ্ছে, হয় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, না হয় তার প্রাপ্য সাওয়াব ও গণীমাতসহ সে স্থানে ফিরিয়ে আনবেন যেখান থেকে সে [জিহাদে] বেরিয়েছিল
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭০৯]
৪৭৫৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন: এমন কেউ নেই যে আল্লাহর পথে আঘাত পায় আর আল্লাহই সম্যক জানেন, যে কেউ তাহাঁর পথে যখম হইবে সে কিয়ামতের দিন এরূপ অবস্থায় আসবে যে, তার আঘাতপ্রাপ্ত স্থান দিয়ে রক্ত বের হইবে, তার রং হইবে রক্তের; কিন্তু সুবাস হইবে কস্তুরীর।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১০]
৪৭৫৭. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু হুরায়রা্ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে যেসব হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, তন্মধ্যে একটি হলো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর পথে মুসলিম যে যখমেই আক্রান্ত হয়, কিয়ামাতের দিন তা ঠিক যখন আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল সেরূপ হইবে; রক্ত প্রবাহিত হইতে থাকিবে যার রং রক্তেরই রং হইবে আর সুবাস হইবে কস্তুরীর। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ সে পবিত্র সত্তার কসম! যদি মুমিনদের জন্য কষ্টকর না হতো তবে আমি কোন সেনাদলের যারা আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয় তাদের পিছনে বসে থাকতাম না। কিন্তু আমার সে সামর্থ্য নেই যা দিয়ে আমি তাদের সকলকে বাহন দিতে পারি, আর না তাদেরই সে সামর্থ্য আছে যে, [নিজ থেকে বাহন নিয়ে যুদ্ধযাত্রাকালে] আমার অনুসরণ করিবে, আর আমার [যুদ্ধ অভিযানে বের হয়ে যাওয়ার] পর ঘরে বসে থাকতে তাদের মনে ভাল লাগবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১০, ইসলামিক সেন্টার-৪৭১১]
৪৭৫৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনেছি, যদি মুমিনের জন্যে কষ্টকর না হতো, তবে [যুদ্ধে অংশগ্রহন না করে] আমি কোন সেনাদলের পিছনে বসে থাকতাম না। পরবর্তী অংশ উপরোক্ত বর্ণনাকারীদের অনুরূপ আর এ সানাদে বর্ণিত আছে যে, কসম সে পবিত্র সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ। আমি মনে প্রাণে কামনা করি আমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হই, তারপর জীবন লাভ করি। আবু যুরআহ্ কর্তৃক আবু হুরায়রা্ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১২]
৪৭৫৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্যে কষ্টকর মনে না করতাম, তবে আমি পছন্দ করতাম যেন কোন সেনাদলের পিছনে থেকে না যাই। পরবর্তী অংশ পূর্ববর্তীদের হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৩]
৪৭৬০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় বের হয় আল্লাহ তার দায়িত্ব নিয়ে নেন। এ উক্তি পর্যন্ত; কোন সেনাদলের যে দল আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে বের হয়েছে তার পিছনে থাকতাম না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৪]
২৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর পথে শাহাদাতের মাহাত্ম্য
৪৭৬১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন কেউ নেই যে মৃত্যুবরণ করেছে, আল্লাহর কাছে তার সাওয়াব রয়েছে আর সে দুনিয়ায় ফিরে আসতে প্রসন্ন বোধ করে যদিও বা গোটা দুনিয়া ও তার মধ্যকার সব কিছু তারই হয় তবুও। শহীদ ছাড়া; সে কামনা করিবে ফিরে আসতে যেন আবার দুনিয়ায় শহীদ হইতে পারে। তা এজন্যে যে, সে শাহাদাতের ফযিলত প্রত্যক্ষ করেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৫]
৪৭৬২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ এমন কেউ নেউ যে জান্নাতে প্রবেশ করিবে অথচ দুনিয়ায় ফিরে আসাটা পছন্দ করিবে যদিও বা গোটা দুনিয়ার সবকিছু তারই হয়, কেবল শহীদ ছাড়া; কেননা সে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা করে যেন আরও দশবার শহীদ হয়, তা এজন্যে যে, সে মর্যাদা প্রত্যক্ষ করেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৬]
৪৭৬৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী [সাঃআঃ]- কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর পথে জিহাদের তুল্য আর কী আছে? তিনি বলিলেন, তোমরা তা করিতে পারবে না। রাবী বলেন, প্রশ্নকারীরা কথাটা দুবার বা তিনবার করে ফিরিয়ে বলিলেন। প্রত্যেকবারই তিনি বলিলেন, তোমরা তা পারবে না। তৃতীয়বার তিনি বলিলেন, আল্লাহর পথে জিহাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন ব্যক্তির মতো, যে সর্বদা সিয়াম পালনকারী, সলাতে দণ্ডায়মান, আল্লাহর আয়াতের প্রতি পূর্ণ অনুগত, সিয়ামে বা কিয়ামে যে ক্লান্তিবোধ করে না, যতক্ষণ না আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদ প্রত্যাবর্তন করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৭]
৪৭৬৪. সুহায়ল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৮]
৪৭৬৫. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর মিম্বারের নিকটেই ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠলো- ইসলাম গ্রহণের পর যদি আমি আর কোন সৎ কাজই না করি তাতে আমার কোন পরওয়া নেই; তবে আমি হাজীদেরকে পানি পান করাব। অপর একজন বলে উঠলো, মুসলিম হওয়ার পর যদি আমি আর কোন সৎ কাজই না করি তাতে আমার কোন পরোয়া নেই, তবে আমি মাসজিদুল হারামের মেরামত প্রভৃতি করে যাব। অপর একজন বলে উঠল, আল্লাহর পথে লড়াই তোমরা যা যা বলেছো তার চাইতে উত্তম। তখন উমর [রাদি.] তাদেরকে ধমক দিয়ে বলে উঠলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর মিম্মারের নিকটে তোমরা চিৎকার করো না। সেটা ছিল জুমুআর দিন। বরং যখন জুমুআর নামাজ হয়ে যাবে, তখন আমি তাহাঁর নিকটে গিয়ে তোমরা যে ব্যাপারে বিতর্ক করছো তা জিজ্ঞেস করে নেবো, তখন আল্লাহ তাআলা [সে প্রেক্ষিতে] নাযিল করলেনঃ “যারা হাজীদের পানি সরবরাহ করে এবং মাসজিদুল হারামের রক্ষণাবেক্ষণ করে তোমরা কি তাদেরকে ওদের সমান করো, যারা আল্লাহ ও পরকালে ঈমান আনে ……”- [সূরা আত্-তাওবাহ্ ৯ : ১৯]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭১৯]
৪৭৬৬. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর মিম্বারের কাছে ছিলাম। বাকী হাদীস আবু তাওবাহ্-এর হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২০]
৩০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর রাহে সকাল-সন্ধ্যায় বের হওয়ার মাহাত্ম্য
৪৭৬৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর পথে একটি সকাল অথবা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে, সে সব কিছুর চেয়ে উত্তম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২১]
৪৭৬৮. সাহ্ল ইবনি সাদ সাইদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর পথে যে বান্দা একটি সকাল ব্যয় করে, তা দুনিয়া এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে যে সব কিছুর চেয়েও উত্তম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২২]
৪৭৬৯. সাহ্ল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর পথে একটি সকাল কিংবা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তার মধ্যকার যাবতীয় সম্পদ থেকে অধিক কল্যাণকর।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২৩]
৪৭৭০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি না আমার উম্মাতের কপিতয় লোক হতো …… এরপর পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন, তাতে তিনি আরও বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর পথে একটি সকাল অথবা একটি বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে সে সবের চাইতেও উত্তম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২৪]
৪৭৭১. আবু আইয়ূব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ একটি সকাল অথবা একটি বিকাল আল্লাহর পথে অতিবাহিত করা ঐসব বস্তুর চাইতে উত্তম যেগুলোর উপর সূর্য উদিত হয়ে অস্ত যায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২৫]
৪৭৭২. আবু আইয়ূব আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ …… সম্পূর্ণ অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২৬]
৩১. অধ্যায়ঃ জান্নাতে মুজাহিদ দের জন্যে আল্লাহ যে সম্মান প্রস্তুত রেখেছেন
৪৭৭৩. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু সাঈদ! যে ব্যক্তি আল্লাহকে রব [প্রতিপালক] রূপে, ইসলামকে দ্বীনরূপে এবং মুহাম্মদ [সাঃআঃ]-কে নবীরূপে গ্রহণ করে সন্তুষ্ট, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে গেল। আবু সাঈদ [রাদি.] তাতে অবাক হয়ে গেলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার জন্য কথাটি আবার বলুন। তিনি তাই করিলেন, তারপর বলিলেন, আর একটি আমাল এমন রয়েছে, যার দ্বারা বান্দা জান্নাতে এমন একশটি মর্যাদার স্তর লাভ করিবে যার দুটো স্তরের মধ্যে ব্যবধান হইবে আসমান ও যমীন ব্যবধান তুল্য। তখন তিনি বলিলেন, ঐ আমালটি কী, হে আল্লাহর রসূল? তিনি বলিলেন, আল্লাহর পথে জিহাদ! আল্লাহর পথে জিহাদ!!
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭২৭]
৩৩. অধ্যায়ঃ শহীদদের রূহ জান্নাতে আর তাঁরা জীবিত, তাঁরা তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে জীবিকাপ্রাপ্ত হন
৪৭৭৯. মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবদুল্লাহ [ইবনি মাসঊদ] [রাদি.]-কে এ আয়াতটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যাতে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনো তোমরা মৃত মনে করো না বরং তাঁরা জীবিত, তাঁদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত” – [সূরা আ-লি ইমরান ৩ : ১৬৯]। আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আমি এ আয়াত সম্পর্কে [রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে] জিজ্ঞেস করেছিলাম তখন তিনি বলিলেন, তাদের রূহসমূহ সবুজ পাখীর উদরে রক্ষিত থাকে, যা আরশের সাথে ঝুলন্ত দীপাধারে বাস করে। জান্নাতের সর্বত্র তারা যেখানে চায় সেখানে বিচরণ করে। অবশেষে সে দীপাধারগুলোতে ফিরে আসে। একবার তাদের প্রভু তাদের দিকে পরিপূর্ণভাবে তাকালেন এবং জিজ্ঞেস করিলেন, তোমাদের কি কোন আকাঙ্ক্ষা আছে? জবাবে তারা বলিল, আমাদের আর কি আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে, আমরা তো যেভাবে ইচ্ছা জান্নাতে ঘোরাফেরা করছি। আল্লাহ তাআলা তাদের সাথে এরূপ তিন তিনবার করিলেন। যখন তারা দেখলো জবাব না দিয়ে প্রশ্ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না তখন তারা বলিল, “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের আকাঙ্ক্ষা হয় যদি আমাদের রূহগুলোকে আমাদের দেহসমূহে ফিরিয়ে দিতেন আর পুনরায় আমরা আপনারই পথে নিহত হইতে পারতাম। অতঃপর মহান আল্লাহ যখন দেখলেন, তাদের আর কোন প্রয়োজনই নেই, তখন তদেরকে ছেড়ে দেয়া হলো [আর প্রশ্ন করা হলো না]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৩]
৩৪. অধ্যায়ঃ জিহাদ ও রিবাত [শত্রুর মুকাবিলায় বিনিদ্র প্রহরা]- এর ফযীলাত
৪৭৮০. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে এসে বলিল, সর্বোত্তম ব্যক্তি কে? তিনি বলিলেন, সে মুমিন যে তার জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে। সে ব্যক্তি বলিল, তারপর কে? তিনি বলিলেন, যে মুমিন কোন পাহাড়ী উপত্যকায় নির্জনে বসে তার প্রতিপালকের ইবাদাত করে এবং স্বীয় অনিষ্ট থেকে লোকজনকে রক্ষা করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৪]
৪৭৮১. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলিল, হে আল্লাহর রসূল! সর্বোত্তম ব্যক্তি কে? তিনি বলিলেন, ঐ ব্যক্তি যে তার জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে। সে ব্যক্তি বলিল, তারপর কে? তিনি বলিলেন, তারপর হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোন নিভৃত উপত্যকায় তার প্রতিপালকের ইবাদাতে মনোনিবেশ করে থাকে এবং লোকজনকে তার নিজ ক্ষতিকারক বিষয়াদি থেকে বাঁচায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৫]
৪৭৮২. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ উপত্যকায় অবস্থানকারী লোক, তারপর ঐ ব্যক্তি তিনি বলেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৬]
৪৭৮৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেনঃ সর্বোত্তম জীবন হলো সে ব্যক্তির জীবন যে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্যে ঘোড়ার লাগাম ধরে থাকে। শত্রুর উপস্থিতি ও শত্রুর দিকে ধাবমান হওয়ার শব্দ শুনামাত্র ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়ে যথাস্থানে সে শত্রুকে হত্যা এবং নিজ শাহাদাতের সন্ধান করে। অথবা ঐ লোকের জীবনই উত্তম যে ছাগপাল নিয়ে কোন পাহাড় চূড়ায় বা [নির্জন] উপত্যকায় বসবাস করে আর যথারীতি নামাজ আদায় করে, যাকাত দান করে এবং আমৃত্যু তার প্রভুর ইবাদাতে নিমগ্ন থাকে। লোকটি কেবল মঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৭]
৪৭৮৪. আবু হাযিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি [কুতাইবাহ] বলেছেন, বাজাহ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি বাদর [আরবী] এ শব্দের পরিবর্তে [আরবী] শব্দে ইয়াহইয়া থেকে ভিন্ন শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৮]
৪৭৮৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। এতে রয়েছে, [আরবী]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৩৯]
৩৫. অধ্যায়ঃ পরস্পর একজন অন্যজনকে হত্যা করে উভয় ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করিবে
৪৭৮৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেনঃ আল্লাহ তাআলা ঐ দুব্যক্তির দিকে তাকিয়ে হাসেন যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করিবে অথচ উভয়েই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। সাহাবীগন বলিলেন, তা কেমন করে হইবে হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]? তিনি বলিলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করে শহীদ হয়ে যাবে। তারপর আল্লাহ তাআলা হত্যাকারীর প্রতি সদয় দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন এবং সে ইসলাম গ্রহণ করে ফেলবে এবং সেও আল্লাহর পথে জিহাদ করে শাহাদাত বরণ করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৪০]
৪৭৮৭. আবুয যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৪১]
৪৭৮৮. হাম্মাদ ইবনি মুনাব্বিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু হুরায়রা [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে অনেকগুলো হাদীস বর্ণনা করেন, তন্মধ্যে এটিও ছিল যে, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এমন দুব্যক্তির জন্য হাসবেন যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করিবে অথচ তাদের উভয়েই জান্নাতে প্রবেশ করিবে। সাহাবীগণ আরয করিলেন, তা কেমন করে হইবে হে আল্লাহর রসূল? তিনি বলিলেন, একজন নিহত হইবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করিবে, তারপর আল্লাহ অপরজনের প্রতিও সদয় হইবেন এবং তাকেও ইসলামের হিদায়াত দান করবেন। তারপর সেও আল্লাহর পথে জিহাদ করিবে এবং শহীদ হয়ে যাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৪২]
৩৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন কাফিরকে হত্যা করে নিজেও সঠিক পথে চলল
৪৭৮৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ কাফির এবং তার হত্যাকারী [মুমিন] কখনও জাহান্নামে একত্রিত হইবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৪৩]
৪৭৯০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ এমন দুব্যক্তি জাহান্নামে একত্রিত হইবে না যে, একের উপস্থিতি অন্যকে বিব্রত করে। তখন জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! কারা এ দুব্যক্তি? তিনি বলিলেন, সে মুমিন ব্যক্তি যে কোন কাফিরকে হত্যা করেছে তারপর নিজে ন্যায় পথে চলেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৭৪৪]
Leave a Reply