রুকু সিজদার দোয়া ও নিয়মাবলী

রুকু সিজদার দোয়া ও নিয়মাবলী

রুকু সিজদার দোয়া ও নিয়মাবলী >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পরিচ্ছেদ ১০২. রুকূ’ ও সাজদাতে কুরআন পাঠ করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ ১০৩. রুকূ’ ও সাজদার দু’আসমূহ
পরিচ্ছেদ ১০৪. নামাজে তাকবীর বলা ও তাকবীর বলার স্থানসমূহের বিধান
পরিচ্ছেদ ১০৫. রুকূ’ থেকে উঠার পর যা বলিতে হইবে
পরিচ্ছেদ ১০৬. যে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর সিজদা করিতে হইবে
পরিচ্ছেদ ১০৭. সাজদার সময় দু’ হাত যেভাবে রাখতে হইবে
পরিচ্ছেদ ১০৯. বসে সালাত আদায়ের বিবরণ
পরিচ্ছেদ ১১০. মুসল্লী দু’সাজদার মাঝে যা পড়বে
পরিচ্ছেদ ১১১. দ্বিতীয় অথবা চতূর্থ রাকায়াতে দাঁড়ানোর পূর্বে সিজদার পরে বসার বিধান

পরিচ্ছেদ ১০২. রুকূ’ ও সাজদাতে কুরআন পাঠ করা নিষেধ

২৯৩ – ইবনু “আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা এ ব্যাপারে সজাগ হয়ে যাও যে, আমাকে রুকূ’ ও সাজদাহর অবস্থায় কুরআন পাঠ করিতে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব তোমরা রুকু’তে তোমাদের প্রভুর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা কর এবং সাজদাহতে গিয়ে আকুল প্রার্থনা কর, তাতে তোমাদের দু’আ যথার্থ কবুল করা হইবে।” {৩৩০}

{৩৩০} মুসলিম ৪৭৯, ৪৮১, নাসায়ী ১০৪৫, ১১২০, আবু দাউদ ৮৭৬, ইবনু মাজাহ ৩৮৯৯, আহমাদ ১৯০৩, দারেমী ১৩২৫, ১৩২৬, হনামাজ পড়ার নিয়ম কানুনা দিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৩. রুকূ’ ও সাজদার দু’আসমূহ

২৯৪ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] তার রুকূ’ ও সাজদাহয়

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِ

সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লা-হুম্মাগফির লী, “হে আল্লাহ! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসা সহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি আপনি আমাকে ক্ষমা করুন” পাঠ করিতেন। {৩৩১}

{৩৩১} বুখারী ৮১৭, ৭৯৪, ৪২৯৩, ৪৯৬৭, ৪৯৬৮, মুসলিম ৮৮৪, নাসায়ী ১০৪৭, ১১২২, ১১২৩, দারেমী ৮৭৭, ইবনু মাজাহ ৮৮৯, আহমাদ ২৩৬৪৩, ২৩৭০৩, ২৪১৬৪, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৪. নামাজে তাকবীর বলা ও তাকবীর বলার স্থানসমূহের বিধান

২৯৫ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] নামাজ আরম্ভ করার সময় দাড়িয়ে় তাকবীর বলিতেন। অতঃপর রুকূ’তে যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন, আবার যখন রুকূ’ হতে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন [আরবী] বলিতেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

উচ্চারণঃ সামিআল্ল-হ লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করেন আল্লাহ তার কথা শুনে থাকেন

বলিতেন। অতঃপর সাজদাহয় যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবার [দ্বিতীয়] সাজদাহয় যেতে তাকবীর বলিতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। এভাবেই তিনি পুরো নামাজ শেষ করিতেন। আর দ্বিতীয় রাকাআতের বৈঠক শেষে যখন [তৃতীয় রাকাআতের জন্য] দাড়াতেন তখনও তাকবীর বলিতেন।” {৩৩২}

{৩২২} বুখারী ৭৮৯, ৭৯৫, ৮০৩, মুসলিম ৩৯২, নাসায়ী ১০২৩, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৫. রুকূ’ থেকে উঠার পর যা বলিতে হইবে

২৯৬ – আবু সা‘ঈদ খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে বলিতেন-

اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ (1) مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الْأَرْضِ، وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ، أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ، أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ، وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدٌ، اللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রাব্বনা লাকাল হামদু মিলআস সামাওয়াতি ওয়া মিলআল আরযি ওয়া মিলআ মা শি‘তা মিন শাইয়িম বা’দু। আহলাস সানা‘য়ী ওয়ালমাজদি, আহাক্কু মা ক’লাল`আবদু, ওয়া কুলুনা লাকা আবদুন। আল্লাহুম্মা লা মানি‘ আ লিমা আ‘তায়তা, ওয়ালা ম‘তিয়া লিমা মানা‘তা, ওয়া লা ইয়ানফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু। হে আল্লাহ! তোমার জন্য আসমান যমীন পরিপূর্ণ প্রশংসা আর এর ব্যতীত আরো অন্য বস্তু পরিপূর্ণ প্রশংসাও-যা তুমি চাও। তুমি প্রশংসা ও মর্যাদার একমাত্র অধিকারী, এটা বড়ই ন্যায্য কথা যা তোমার বান্দা বলিল, আমরা সকলেই তোমারই বান্দা। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের যা দেবে তাতে বাধা দেবার কেউ নেই এবং তুমি যা দেবে না তা দেবারও কেউ নেই। কোন শক্তিমানই সাহায্য করিতে পারে না কারণ সকল শক্তিই তোমারই করায়ত্তে। {৩৩৩}

{৩৩৩} নাসায়ি হাদিস ১০৬৮, আবূ দাউদ ৮৪৭, আহমাদ ১১৪১৮, দারেমী ১৩১৩, নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৬. যে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর সিজদা করিতে হইবে

২৯৭ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ আমি সাতটি অঙ্গের দ্বারা সাজদাহ করিতে নির্দেশিত হয়েছি। কপাল দ্বারা এবং তিনি হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে এর অর্ন্তভূক্ত করেন, আর দু’ হাত, দু’ হাটু এবং দু‘ পায়ের আঙ্গুল সমূহ দ্বারা। {৩৩৪}

{৩৩৪} বুখারী ৮০৯, ৮১০, ৮১২, ৮১৫, ৮১৬, মুসলিম ৪৯০, তিরমিজি ২৭৩, নাসায়ি হাদিস ১০৯৩, ১০৯৬, ১০৯৭, ১০৯৮, ১১১৩, ১১১৫, আবূ দাউদ ৮৮৯, ৮৯০, ৮৮৩, ৮৮, ১০৪০, আহমাদ ১৯২৮, ২৩০০, ২৪৩২, ২৫২৩, ২৫৭৯, দারেমী ১৩১৮, ১৩১, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৭. সাজদার সময় দু’ হাত যেভাবে রাখতে হইবে

২৯৮ – ইবনু বুহাইনা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যখন সালাত আদায় করিতেন, তখন উভয় হাত এমন ফাঁক করিতেন যে, তাহাঁর উভয় বগলের শুভ্রতা প্রকাশ হয়ে পড়ত। বুখারী-মুসলিম {৩৩৫}

{৩৩৫} বুখারী ৮০৭, ৩৯০, ৩৫৫৫, মুসলিম ৪৯৫, নাসায়ি হাদিস ১১০৬, আহমাদ ২২৪১৫. হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৯৯ – বারাআ বিন আযিব [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তুমি যখন সাজদাহ করিবে তখন তোমার দু-হাতের তালু মাটিতে রাখবে ও কনুইদ্বয় উঁচু করে রাখবে। {৩৩৬}

{৩৩৬} মুসলিম ৪৯৪, নাসায়ি হাদিস ১১০৪, আবূ দাউদ ৮৯৬, আহমাদ ১৮০২২, ১৮১২৫, ১৮২২৬

হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস, পরিচ্ছেদ ১০৮. রুকু‘ ও সাজদায় দু’হাতের আঙ্গুল সমূহের অবস্হা

৩০০ – ওয়ায়িল বিন হুজর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] রুকু’ করার সময় আঙ্গুলগুলো [হাঁটুর ঊপর] ফাঁক-ফাঁক করে রাখতেন, আর যখন সাজদাহতে যেতেন তখন তাহাঁর আঙ্গুলগুলোকে মিলিয়ে রাখতেন। {৩৩৭}

{৩৩৭} হাকিম ১ম খন্ড ২২৪ পৃঃ, ২২৭, মুসলিম এই শর্তে সহিহ বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৯. বসে সালাত আদায়ের বিবরণ

৩০১ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] -কে চার জানুর উপর বসে [অসুস্হাবস্হায়] সালাত আদায় করিতে দেখেছি। ইবনু খুযাইমাহ একে সহিহ বলেছেন। {৩৩৮}

{৩৩৮} নাসায়ি হাদিস ১৬৬১, সহিহ ইবনু খুযাইমাহ ১২৩৮। ইমাম নাসায়ি হাদিস উক্ত হাদিসটিকে দূর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, আবূ দাউদ আল হায়সামী ব্যতীত অন্য কেউ এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমার জানা নেই, যদিও তিনি বিশ্বস্ত। আর আমি এ হাদিসটিকে সহিহ মনে করছি না। আর আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন। প্রকৃতপক্ষে এটা ইমাম নাসায়ি হাদিসর ধারণা বৈ কিছুই নয়। আর প্রকৃত সত্যের মুকাবালায় অনুমান কোন কাজে আসে না। তাই হাদিসটি সঠিকটার উপরই বহাল থাকিবে যতক্ষণ এর দূর্বলতার কারণ না জানা যায়। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১০. মুসল্লী দু’সাজদার মাঝে যা পড়বে

৩০২ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] দু’সাজদার মাঝখানে [বসে] বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِ

আল্লাহুম্মাগফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া আফিনী, ওয়ারযুকনী। [হে প্রভু! আমায় ক্ষমা করুন, আমাকে দয়া করুন, আমাকে পথ প্রদর্শন করুন, আমাকে সুখী করুন এবং আমাকে রিযিক দান করুন।] হাকিম একে সহিহ বলেছেন। {৩৩৯}

{৩৩৯} আবূ দাউদ ৮৫০, তিরমিজি ২৮৪, ইবনু মাজাহ ৮৯৮, হাকিম ১ম খন্ড ২৬২, ২৭১ পৃঃ, হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১১১. দ্বিতীয় অথবা চতূর্থ রাকায়াতে দাঁড়ানোর পূর্বে সিজদার পরে বসার বিধান

৩০৩ – মালিক ইবনু হুয়াইরিস লাইসী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] -কে সালাত আদায় করিতে দেখেছেন। তিনি তাহাঁর সালাতের বেজোড় রাক’আতে [সিজদাহ হতে] উঠে না বসে দাঁড়াতেন না। {৩৪০}

{৩৪০} বুখারী ৮২৩, তিরমীযী ২৮৭, নাসায়ি হাদিস ১১৫২, আবূ দাউদ ৮৪৪, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস


by

Comments

One response to “রুকু সিজদার দোয়া ও নিয়মাবলী”

Leave a Reply